কাকতাড়ুয়া পর্ব-০৪

0
925

#কাকতাড়ুয়া
#পর্ব_৪
#লেখিকা_নূরজাহান_ফাতেমা
_____
হসপিটাল থেকে ফিরতে মাঝরাত হয়ে গেল।নিশান ভাইয়ের ডান হাত ভেঙে গিয়েছে।ডান পাশের পায়েও ইনজুরি হয়েছে।মাথায় হেলমেট থাকায় মারাত্মক ক্ষতি হয় নি।মামা-মামি ও আমার সৎ বাবা খবর শোনার সাথে সাথে চলে গিয়েছিলো।এতো সময় ব্যস্ততা ও চিন্তায় তারা আমাকে ঘাটতে আসে নি।কিন্তু বাড়ি পৌঁছেই মামি শুরু করে দিলেন বক্তৃতা।মামাও সাথে সায় দিলেন।আমাকে ডেকে নিয়ে প্রশ্ন করলেন,

“আমার ছেলেরই শুধু ইনজুরি হল।তোর কিছু হয়নি কেন?কোথায় ছিলি তুই?”

“সাথেই ছিলাম মামা।ভাইয়া তো পিচ ঢালা রাস্তায় পড়েছে।তাই অত ইনজুরি হয়েছে।সিটকে পাশের ধানক্ষেতে পড়েছিলাম আমি।একারণেই শামুকে একটু পা কাটা ছাড়া আর কিছু হয়নি।”

“শামুকে পা কেটেছে তা এত আহ্লাদী কন্ঠে বলার কিছু নেই।এমন কাজ উদ্ধার করনি তুমি।পারোই তো শুধু আমাদের জালিয়ে মারতে।”

নিসা মুখ ভেঙিয়ে বলল আমাকে।মামিও ঝেড়ে দিচ্ছেন তার সব আক্রোশ।

“আমাদের শান্তির সংসারটা কি ছাড়খার করে দিতে চাস তুই?প্রথম তোর নানাকে শেষ করলি,তোর নানিকে শেষ করলি।এখন আমার ছেলেকে টার্গেট হিসেবে নিয়েছিস।আর কয়টা প্রান গেলে শান্তি পাবি তুই?…”

মাথা নিচু করে আছি আমি।চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে নোনাপানি।সবাই দোষ আমার উপরেই চাপাচ্ছে।আকাশ দাঁড়িয়ে এসব দেখছে।আমার কষ্টে তার খারাপ লাগলেও বহিঃপ্রকাশ করতে পারছে না।এমন পরিস্থিতিতে কিছু বলে নিজের পায়ে কুড়াল মারবেই বা কে।আকাশ একবার নিশান ভাইয়ের দিকে তাকালো।ইশারায় কিছু একটা বুঝিয়ে দিলো হয়তো।নিশান ভাই এতো সময় নিশ্চুপ থাকলেও এবার মুখ খুললেন,

“এইগুলা সব নাটক ওর আম্মু।ও ইচ্ছে করে করেছে এসব।পূর্ব প্ল্যান ছিলো নিশ্চয়ই।ওই সি. এন. জি. ওয়ালার সাতে হাত করেছিলি নাকি?”

নিশান ভাইয়ের এমন কথায় থমকে গেলাম আমি।সব পরিস্থিতিতে যেই মানুষটা আমার পাশে থেকেছে সেই আমার প্রতিকুলে চলে গেল।অটোমেটিক চোখের পানি থেমে গেল আমার।অল্প শোকে কাতর বেশি শোকে পাথর বলতে প্রচলিত একটা বাক্য আছে।আমারও তাই হল।ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলাম শুধু।নিশান ভাই আবারও বললেন,

“আম্মু ও আমাদের জন্য বিপদজনক।তুমি নিসার কাছে ওকে রেখোনা।কখন নিসার কোন ক্ষতি করার প্ল্যান করবে বুঝতেও পারবে না।আমি কি ওকে কম সাপোর্ট করেছি।তাও আমাকে ছেড়ে দিলো না।”

কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে রইলাম আমি।মাথার উপরের ছাদটা যখন সড়ে যায় তখন মাথা শূন্য হওয়াই স্বাভাবিক।নির্বাক হয়ে শুনতে লাগলাম এদের সব অভিযোগ,অপবাদ।
______________
খাওয়ার ঘরে একটা চৌকি পেতে রাখা আছে।তাতে পুরোনো তোষক পাতা।নিসা একটা পুরোনো কাথা ও তুলে রাখা সিঙ্গেল বিছানার চাদর দিয়ে গিয়েছে।
ওগুলো নিশান ভাইয়ের হোস্টেল থেকে নিয়ে আসা।চাদরের রঙ জলে গেলেই সেগুলো বাতিল করেন তিনি।নিশান ভাইয়ের ভাষ্যমতে আমার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে এই ঘর।তাচ্ছিল্যের হাসি দিলাম আমি।যাকে বেশি বিশ্বাস করি কিছু দিন পর সেই আমাকে আঘাত দেয়।বসে বসে ভাবতে লাগলাম সেই সময়ের কথা।পুরো শরীর কাঁদায় ভিজে ছিলো আমার।নিশান ভাইকে কোন মতো একটা গাড়ির ব্যবস্থা করে আমি নিজেই হসপিটালে নিয়ে গিয়েছিলাম।পচা শামুকে পা কেটেছে আমার।রক্ত গড়িয়ে পড়ছিলো।সেদিকে মাথাই ঘামাইনি।নিশান ভাইয়ের চিন্তায়ই অস্থির ছিলাম।নিশান ভাইয়ের ফোন ফেটে খান খান হয়ে গিয়েছিল।ওখান থেকে একটা লোকের ফোন কালেক্ট করে মামাকে কল দিয়েছিলাম।আমি জানি না হসপিটালের কোথায় কি করতে হয়।আমার কাছে ছিলো না কোন টাকা।জীবনের প্রথম একটা মেয়ে হয়ে এসব সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলাম।একটা লোক এগিয়ে এসে সাহায্য করেছিলো আমাকে।অনেক লোকের সহানুভুতির পাশাপাশি নোংরা দৃষ্টিও পড়েছিলো আমার কর্দমাক্ত শরীরে।সেদিকে কোন খেয়ালই করিনি।আমি শুধু জানতাম যেকোন মুল্যে নিশান ভাইকে বাঁচাতে হবে।যার জন্য এতো ব্যস্ততা সেই কিনা শেষমেশ এমন করল আমার সাথে।
চাদর পেতে টান টান করে মাত্রই গা এলাতে যাব তখন দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ পেলাম।দরজা খুলে দেখতে পেলাম আকাশ দাঁড়িয়ে আছে।আমি উৎসুক দৃষ্টি মেলে তাকিয়ে রইলাম।এর অর্থ কেন এসেছিস বল।আকাশ মুচকি হেসে বলল,

“নিশান ভাই তোমাকে দেখা করতে বলেছে আপু।সে এখনো জেগে আছে শুধু তোমার সাথে কথা বলবে বলে।”

“আমি তো ওনার ভালো চাই না।না জানি আবার কোন ক্ষতি করে বসি।আমার সাথে আবার কি কথা?”

অভিমানি সুরে বললাম আমি।নিচের ঠোঁট কামড়ে হাসল আকাশ।ফিসফিস করে বলল,

“সেটা না হয় যেয়েই শোনো।না গেলে কিন্তু তুলে নিয়ে যাওয়ার হুকুম আছে হুম।”

কন্ঠে ওর স্পষ্ট সয়তানি।পিছন ঘুরে দাড়ালাম আমি।

“যেই মানুষটা আমাকে ভুল ব্যাখা দিয়েছে তার সাথে আমার কোন কথা নেই।”

“যে সারাজীবন তোমাকে আগলে রেখেছে তার একদিনের ব্যবহারেই ইগনোর করবে?সে তো আর সুস্থ নয় যে পায়ে হেঁটে আসবে?”

আকাশের কথা বুকের ভিতর বিঁধে গেল।সত্যিই তো।আমিও স্বার্থপর হয়ে যাচ্ছি।একদিনের ব্যবহারকে হাজারটা দিনের চেয়ে প্রাধান্য দিচ্ছি।মাথায় ঘোমটা আরও একটু টেনে পা বাড়ালাম নিশান ভাইয়ের কক্ষে।নিথর দেহে শুয়ে আছেন বিছানায়।আমাকে দেখে একটু বিচলিত হলেন,

“তখন ওভাবে কথা বলেছি জন্য মন খারাপ করেছিস?”

“মন গহীনে গাঢ় মেঘ জমিয়ে জানতে চাচ্ছেন বৃষ্টি হবে কিনা?”

“যাক আলহামদুলিল্লাহ।আমার তখনের করা আচরণটা সার্থক হয়েছে।তখন ওভাবে কথা না বললে এমন সাহিত্যিকের মতো কথা বলতে পারতি না।”

“আপনি কি এসব বলতেই ডেকেছেন আমাকে?”

“একদমই নাহ।আমি তো তোর সাথে প্রেমালাপ করতে ডেকেছি।”

এমনিতেই মেজাজ বিগড়ে রয়েছে।তার উপর ওনার এই ফাইজলামিতে চড়ম বিরক্ত হচ্ছি।মানুষটা এমন কেন?সব সময় আমার পিছে পড়ে থাকেন।আমার প্রত্যেকটা কথা নিয়ে মজা করেন।

“দয়া করে দরকারী কিছু হলে বলুন।আমি তো আর দিনে বিশ্রাম নিতে পারব না।বাড়ির সব কাজ আমাকেই করতে হবে।ঘুমাব আমি।”

“বাহ খুব ভালো বিচার করলি।একজনের ঘুমের বারোটা বাজিয়ে নিজের ঘুমের চিন্তা করছিস।”

প্রতিউত্তরে নিশ্চুপ আমি।নিশান ভাই বুঝলেন কষ্টটা একটু বেশিই পেয়েছি।বা হাতের তালুতে ভর দিয়ে উঠে বসলেন তিনি।সাইডে রাখা টেবিলে ফার্স্ট এইড বক্সটা চাইলেন আমার কাছে।এগিয়ে দিতেই সেখানে থেকে একটা কা’টা-ছেড়া’র অয়েন্টমেন্ট ও একটা পেইন কিলার আমাকে দিয়ে বললেন,

“এটা তিনবেলা পায়ে লাগাবি।আর এই পেইন কিলারটা খেয়ে নে।ব্যাথা কমবে।”

চোখের কোনা ভিজে গেল আমার।এমন অসুস্থ থেকেও তিনি আমার খেয়াল রাখছেন ভেবেই অবাক হচ্ছি।

“কি হল?কাঁদছিস কেন?”

“মানুষ দুইটা আবেগে কাঁদে।একটা হল কষ্ট আরেকটা সুখানুভূতি।যার দুইটাই আজকে আমাকে দিলেন।”

“একটু মাথায় বুদ্ধি থাকলে আর কষ্ট পেতি না।তোর একটা আলাদা ঘর লাগত।একটা নিজস্ব ঘর থাকলে কাল ফোনটা হারাতে হত না।তাছাড়া তুই ওই ঘরে থাকাকালীন যখন তখন আমার কাছেও আসতে পারতি না।সামনে তোর পরীক্ষা।সারাদিন কাজ করতেই যায়।পড়াশোনা তো কিচ্ছু করিস নি।বাড়িতে যতদিন আছি সবাই ঘুমিয়ে গেলে তাও আমার কাছে পড়তে পারবি।তোর প্রতি সদয় হয়ে কখনোই আলাদা ঘরের ব্যবস্থা হত না।”

অন্যরকম এক সুখানুভূতি অনুভব করলাম।এভাবে খারাপ ব্যবহার করেও আমার ফায়দা লুটিয়ে দিলো সে কেউ বুঝতেও পারল না।অথচ আমিই কিনা একবুক অভিমান জমিয়েছিলাম।মানুষটা কত ইউনিক।এমন ইউনিক মানুষ পার্টনার হিসেবে ইউনিক কাওকেই ডিজার্ভ করেন।হালকা হেসে বললাম,

“আপনার বউ খুব লাকি নিশান ভাই।এমন জামাই যার প্রত্যেকটা মেয়ে তার ভাগ্যকে হিংসা করবে।”

“এইজন্যই সবাই তোকে হিংসা করে বুঝলাম।”

ভাবলেশহীন ভঙ্গিতে বললেন নিশান ভাই।আমি হেসে দিলাম।

“আমার মতো পোড়া কপালের মেয়েকে মানুষ কেন হিংসা করবে?”

“এইযে আমার মতো একটা নিশান তোর জীবনে ছিলো,আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে এই জন্য।”

“ছিলো এবং আছে পর্যন্ত ঠিক আছে।থাকবে বলেন না।বিয়ের পর বউ পেলে কেউ নিজের বোনকেই মনে রাখে না।আর তো আমি আপনার ফুপাতো বোন।”

“তুই আমার ফুপাতো বোন এইটা কে বলছে।তোকে আমি কোনদিনও ফুপাতো বোন ভাবিনি।ফুপুর সাথেই যার সম্পর্ক নেই তাকে ফুপাতো বোন ভাবব কেন!”

“তাহলে কি ভাবেন আমাকে?”

“একটা নাদানমার্কা মানুষ ভাবি।এখন জানতে চাইবি নাদান কি?”

“আপনাকে ফালতু প্রশ্ন করার সময় নেই আমার। থাকেন যাই।”

বলেই হনহন করে বেড়িয়ে আসলাম আমি।নিশান ভাই স্মিত হাসলো।আমার যাত্রা পথে তাকিয়ে বলল,

“আমারও ঠেকা পড়েছে তোর ফালতু প্রশ্নের জবাব দেয়ার।”

শুনেও নিরুত্তর থেকে চলে এলাম।ঘুমানো জরুরি।কাল সকালে উঠতে হবে।রান্না চড়াতে হবে।পায়ে অয়েন্টমেন্ট লাগিয়ে শুয়ে পড়লাম।এই বিছানায় ঘুমাতে দিব্বি লাগছে।ডিটারজেন্ট দিয়ে ধোয়া হলেও নিশান ভাইয়ের ঘ্রাণ লেগে আছে এতে।ঘ্রাণটা অবশ্য পারফিউমের।নিশান ভাইকে সারাজীবন নির্দিষ্ট এক ব্র্যান্ডের পারফিউম ইউজ করতে দেখলাম।কখনো চেঞ্জ করেন না এটা।ওনার রুচিই একঘেয়েমি।যেমন সবসময় কালো জিন্স পড়েন।শার্ট ও বেশিরভাগ সময় কালো রঙাই পড়েন।একটা মানুষ একই টাইপের প্লেইন কালো শার্ট এতো কেনে কীভাবে আমি ভেবেই পাই না।নিশান ভাইয়ের এমন হাজারো বৈশিষ্ট্য ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম।

_______
বাড়ির উঠোনে একটা শিউলি গাছ রয়েছে।শক্ত মাটির উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে শিশির ভেজা শিউলি গুলো।এক এক করে একশোটা ফুল কুড়ালাম আমি।নিশান ভাই স্ট্রেচারে ভর দিয়ে এগিয়ে এসে বললেন,

“এই ফুল কুড়ানোর সময় মনে মনে কি বিড় বিড় করছিস?যাদু করবি নাতো আবার!”

“যাদু কাকে করতে যাব!আমি তো ফুল গুনছি।একশোটা ফুল হলেই চলে যাব।ওগুলো দিয়ে মালা গাঁথব।একশো ফুলের মালা।ব্যপারটা ইউনিক না?”

“যাদু করার মানুষের কি অভাব আছে?ফুপির এতো হ্যান্ডসাম একটা ছেলে আছে এ বাড়িতে।তাকেই তো সবার আগে টার্গেট করবি।তাছাড়া তোর হাব ভাবও তো ভালো না।সেদিন ওটা বলার পর থেকে ইদানিং ইউনিক হতে চাচ্ছিস।ব্যপার কি?”

“হ্যা আমার তো কাজ নেই আপনার মতো অকর্মাকে যাদু করব।তখন আমার সাথে সারাক্ষন ঝগড়া বাধিয়ে রাখবেন।আর বলবেন আমি যাদুকর।প্রতিউত্তর করলেই বলবেন ঝগড়ুটে।সারাদিন ঝগড়া করি।”

কথাগুলো একদমে বলে শ্বাস ফেললাম।নিশান ভাইয়ের কোন রেসপোন্স পেলাম না।কয়েক মিনিট পর তাকিয়ে দেখি তিনি আমার দিকে বিবশ নয়নে চেয়ে আছেন।চোখ দুটোতে মারাত্মক নেশা মিশ্রিত।দৃষ্টি নামিয়ে ফেললাম আমি।ওই চোখে তাকানোর সাহস নেই আমার।সর্বনাশ হয়ে যাবে।জীবনটা অন্যদের মতো হলে ইচ্ছেকৃত ভাবে এই সর্বনাশে হাজারবার জড়াতাম আমি।জীবন অনুকুলে না হলেও এতো সাপোর্ট পেয়েছি ওনার যা বলার অপেক্ষা রাখে না।জানি না কি ভেবে যেন চোখের কার্নিশ ভিজে গেল আমার।ইদানিং খুব মুড সুয়িং হয়।এই ভালো লাগে তো পরক্ষনেই বিষাদে ডুবে যাই।হটাৎ উনি আমার কানের কাছে মুখ এনে ঘোরলাগা কন্ঠে বললেন,

“কাঁদছিস কেন?আমি তো চাইই তুই ঝগড়ুটে হবি।সারাক্ষন পাখির মতো কিচিরমিচির করবি।আমার সাথে নির্দ্বিধায় ক্যাউ ম্যাউ করবি।কপট রাগ দেখাবি।অভিমানে গাল ফুলাবি।কিন্তু এসব না করে তুই বিষাদে ডুবে থাকিস।হরিণ চোখদুটি প্রায় অশ্রুসিক্ত রাখিস।কেন এরিন কেন?ফুপির নিষ্পাপ ভাতিজাকে কি পাপমুক্ত থাকতে দিবি না তুই?তোর চোখের পানি দেখলে যে আমার দুনিয়া উল্টে দিতে ইচ্ছে করে।সব নিষিদ্ধ অমান্য করে তোকে আগলে ধরতে ইচ্ছে করে।কিছুই কি বুঝিস না তুই?”

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে