#কনে_দেখা_আলো
#উপন্যাস
#পর্ব_ছাব্বিশ
জামান শিকদার আর রেজা বাঁকটা পার হয়েই তিনজন মানুষের মুখোমুখি হলো। তাদের মধ্যে একজন ধোপদুরস্ত পোশাক আশাকে। তার মুখ দেখা যাচ্ছে না। মুখটা তাদের থেকে পেছন ফিরে রয়েছে। কিন্তু যে দুজনের সঙ্গে সে ধস্তাধস্তি করছে তাদের মধ্যে একজনকে জামান শিকদার চেনে। চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফের একান্ত সহকারী বাবুল। সে এখানে কেন বোঝা যাচ্ছে না! আরেকজনকে জামান শিকদার আগে কখনো দেখেনি। চুল জামাকাপড় উসকোখুসকো। চোখমুখ ভালো বোঝা না গেলেও তাকে একেবারে রাস্তার ছেলে বলে মনে হয় না।
তারা দুজনেই অন্যজনের হাত থেকে পিস্তলটা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। যেকোনো মুহূর্তেই একটা দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে! মুখ আড়ালে থাকা মানুষটি সাপের মতো হিসহিস করে বলছে, ‘বাবুইল্যা তর এত বড় সাহস! যেই পাত্রে খাস সেই পাত্রেই থুতু দিস! তর কইলজা ছিড়া ফেলুম টান মাইরা! হারামজাদা শুয়োর!’
একটু দূরে সুফিয়া বসে আছে। তার বেশবাস একটু অসংলগ্ন। চোখেমুখে ক্লান্তি আর ভীতির ছাপ স্পষ্ট। সাহসী মেয়েটা একদিনের আধা বেলাতেই কেমন চুপসে গেছে! বিস্ফোরিত চোখে সে এখন এসব কাণ্ডকারখানা দেখছে। আচমকা ভোজবাজির মতো শমসের আর অপরিচিত একজন মানুষ গুদামে ঢুকে পড়েছে। তারা দুজন জানালা গলে ঢুকল নাকি ছাদ ভেঙে মাটিতে পড়ল সুফিয়া জানে না। শুধু মনে হলো তারা যেন সাঁই করে ছুটে এসে তার সামনের ঐ খারাপ মানুষটার ঘাড়ের ওপরে একেবারে ঝাঁপিয়ে পড়ল!
জামান শিকদার শূন্যে গুলি ছুঁড়ে আওয়াজ তোলে, ‘হাতে থাকা অস্ত্র মাটিতে ফেলে দাও নইলে পায়ে গুলি খাবা! কুইক!’ পাশ থেকে রেজা বলে ফিসফিস করে বলে ওঠে, ‘স্যার আগে সুফিয়াকে সরাতে হতো না?’
‘না! এখন সুফিয়ার কাছে গেলে হামলাকারী আরো মরিয়া হয়ে উঠবে। গুলিও করে বসতে পারে! তুমি ওর দিকে না তাকিয়ে সামনে দেখো!’ জামান শিকদারও ফিসফিস করে বলল। রেজার অপটু আচার আচরণে তাকে বেশ ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে।
জামান শিকদার গুনতে শুরু করে। ‘ওয়ান টু থ্রি …’ তিন গোণার পরপরই অস্ত্রধারী অস্ত্র ফেলে দিয়ে হাত ওপরে তুলে সোজা হয়ে দাঁড়ায়। তারপর ধীরে ধীরে পেছনে ঘোরে, একেবারে জামান শিকদারের মুখোমুখি!
অন্তরালে থাকা মানুষটার মুখ দেখেই চমকে ওঠে জামান শিকদার! হাতে ধরে রাখা পিস্তলটা পড়েই যাচ্ছিল আরেকটু হলে!
এ কী! এ যে চেয়ারম্যানের ছোটছেলে রুবেল! এই এতসব কারবার….. সুফিয়া অপহরণ, জঙ্গলের আগরগাছ কেটে ফেলা, বাইরে পাচার করা সব তাহলে রুবেলের কাজ? কিন্তু বাবুল তাহলে কী করছে এখানে? সে দেখা যাচ্ছে রুবেলকে আটকানোর চেষ্টা করছে। তাহলে কি চেয়ারম্যান সাহেব সব আগে থেকেই জানত এবং তিনিই বাবুলকে পাঠিয়ে দিয়েছেন রুবেলকে আটকানোর জন্য? তাহলে তিনি সেটা জামান শিকদারদের কাছে স্বীকার করলেন না কেন? হয়ত সম্মান হারানোর ভয়ে স্বীকার করেননি!
‘রুবেল! আপনি? এই আড়ত আপনার দখলে? ওহ হ্যাঁ… মনে পড়েছে… তাই তো বলেছিলেন একদিন! আড়ত আপনে সামলান। তা এই আড়তে কাপড় কই? আপনার চাচার না কাপড়ের ব্যবসা ছিল? কাপড়ের ব্যবসা তুলে দিয়ে এখন কি তাহলে আগরকাঠের ব্যবসা শুরু করেছেন?’
রুবেল অগ্নিদৃষ্টিতে জামান শিকদারের দিকে তাকিয়ে আছে। তার চোখ দিয়ে আগুন ঠিকরে বেরুচ্ছে। সাপের মতো হিসহিসে গলায় বলল, ‘কাজটা ঠিক করলেন না আপনে ওসি সাব! আমার হাত কত দূর পর্যন্ত যাইতে পারে, আপনি এখনো টের পাননি! চাকরি তো খোয়াবেনই, মান সম্মান নিয়ে আর বাড়ি ফিরতে পারবেন না!’
‘ওহ হ্যাঁ একটু আগে আরেকজনও এই কথা মনে করিয়ে দিচ্ছিলেন। আপনার একজন মাসতুতো ভাই। আমার চাকরি আর মান সম্মান নিয়ে কত চিন্তা আপনাদের! মনের মধ্যে নানারকম কৌতূহল হচ্ছে। আপনার বাবার এই খাস খেদমতদার বাবুল আপনাকে আটকাচ্ছিল কেন? আর বাবুলের সঙ্গে এইটা কে? একে তো আগে দেখেছি বলে মনে পড়ছে না!’
‘আগে দেখবেন কীভাবে? আসল কাজ না করে এদিক ওদিকের কাজ করে বেড়ালে যা হয়! এই শালা বাবুলই তো হারামিটা করেছে! এই হারামির জন্যই আমার এতদিনের এত সূক্ষ্ণ হিসাবনিকাশ সব বানচাল হওয়ার দশা! বাবার চাকরি করে তার চোখে ধুলা দিয়ে এটা মীরজাফরগিরি করেছে! আর এই ছেলেকে চিনতে কষ্ট হচ্ছে আপনার? হবেই তো! এই হচ্ছে আমরা চাচার খুনি শমসের! নেন এ্যারেস্ট করেন। এ খোলা হাওয়ায় ঘুরে বেড়াবে আর আমি আটক হব, এতটা আশা করলেন কীভাবে?’
রুবেলের একদম শেষ কথাগুলো জামান শিকদার শুনতে পায়নি। শমসেরের নাম শুনেই চমকে উঠেছে। এই সেই খুনি শমসের! এ এতদিন কোথায় লুকিয়ে ছিল? এখন এখানে কোথা থেকে এসে হাজির হলো? উফ সব জট পাকায়ে যাচ্ছে! জামান শিকদার আর চিন্তা করার দিকে গেল না। রেজাকে নির্দেশ দিলো, ‘সব কয়টাকে ধরে গাড়িতে তোলো। সবাইকে! এই গুদামের একজন বান্দাও যেন কোথাও লুকিয়ে না থাকে। বাবুল আর শমসেরকেও গাড়িতে ওঠাও। পুলিশস্টেশনে গিয়ে তাদের বক্তব্য শুনব। গুদাম সিল করে দাও। দ্রুত সবাইকে কাজে নামতে বলো! কুইক!’
সবাইকে গাড়িতে ওঠানোর পরে জামান শিকদার সুফিয়ার কাছে গেল। সস্নেহে কোমল গলায় বলল, ‘সুফিয়া, ভয় পাওনি তো? আমাদের একটু দেরি হয়ে গেছিল। তোমার কোনো ক্ষতি হয়নি তো সুফিয়া?’
সুফিয়া আচমকা স্থানকাল ভুলে ভ্যা করে কেঁদে দিলো। তার কান্না দেখে জামান শিকদার একটু ভয় পেয়ে গেল। তবে কি তারা পৌঁছাতে বেশিই দেরি করে ফেলেছে? সুফিয়ার কি ক্ষতি করেছে কোনো?’
‘সুফিয়া কী হলো কাঁদছ কেন? আরে বলো আমাকে! সবকিছু খুলে বলো!’
‘না সাব আমার কিছু করতে পারেনি। কিন্তু আর বেশি দেরি হইলে কী হইত জানি না…’
‘ওহ তাই বলো!’ জামান শিকদার স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল।
পুলিশষ্টেশনে পৌছার পরে সুফিয়াকে রেখে আসার জন্য কয়েকজন পুলিশকে নির্দেশ দিতে গিয়েও জামান শিকদার থামল। কারো ভরসাতেই সুফিয়াকে পাঠানো ঠিক হবে না। সে নিজে গিয়েই তাকে রেখে আসবে। এই আমানত আগে ঠিকমত যথাস্থানে পৌঁছে দিতে হবে। তারপর অন্য কাজ।
গুদামে যাদেরকে পাওয়া গিয়েছিল সবাইকেই হাজতে ঢোকানো হলো। শমশের আর বাবুলকে আলাদা একটা ছোট কামরার হাজতে ঢোকানো হলো। রুবেল যেরকম বিষ নজরে বাবুল আর শমসেরের দিকে তাকাচ্ছিল, তাতে জামান শিকদার আশংকা করল রাতেই কিছু না একটা অঘটন ঘটে যায়।
রুবেল আর তার সাঙ্গপাঙ্গদের সঙ্গে একই কামরার হাজতে কনস্টেবল শরফুদ্দিনেরও ঠাই হলো। তাকে হাজতে ঢুকিয়ে রেজা একটু ভয়ে ভয়ে টিপ্পনী কাটল। ‘স্যার কী কামডা করলেন যে নিজেগো হাজতে নিজেরই ঢুকতে হইল!’
শরফুদ্দিন খেঁকিয়ে উঠল, ‘ঐ হারামজাদা নিজের কাম কর চুপচাপ! বেশি পিন মারলে এইখান থেইকাই তর গলা চাইপা ধরুম! তর বাপে আইসাও ছুটাইতে পারব না!’
রেজা সত্যি সত্যিই ভয় পেয়ে চুপ মেরে গেল। যেরকম বেপরোয়া লোক কিছুই বলা যায় না! একে না ঘাঁটানোই ভালো!
জামান শিকদার সুফিয়াকে রেখে আসার জন্য রওয়ানা দেওয়ার আগে বলল, ‘রেজা, কাউকে দিয়ে চেয়ারম্যান সাহেবকে আজ আমাদের গরীবালয়ে ডেকে পাঠাও। বলো তার সুপুত্র আজ আমাদের অতিথিশালায় রাত কাটাবেন। তিনিও চাইলে ছেলেকে সঙ্গ দিতে পারেন!’
সুফিয়াকে তার বাড়িতে নামিয়ে দিতেই সেখানে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশের অবতারণা হলো। সুফিয়ার মা-বাবা ছুটে এসে মেয়েকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কান্নাকাটি জুড়ে দিলো। সেই সঙ্গে বিলাপ আর প্রলাপের মাতম চলল কিছুক্ষণ। আশেপাশে কে দাঁড়িয়ে আছে না আছে সেটা নিয়ে তার কিছুমাত্র মাথাব্যথা নেই। অবিশ্রান্ত মুখের কথা তার শেষ হতে চায় না, ‘ওহ আল্লাহ্! আল্লাহ্ গো না জানি আমার মাইয়াটার ওপর দিয়া কত ঝড় গ্যাছে গো আল্লাহ্! কুন হারামজাদা আভাগীর পুত আমার মাইয়ার এমুন সর্বনাশ করল গো আল্লাহ তারে তুমি ছাইড়া দিয়ো না আল্লাহ্! তার চৌদ্দ গুষ্ঠিরে তুমি বিনাশ কইরা দিয়ো!…’
নেয়ামত উল্লাহ বউকে এই অবস্থাতেও তিরস্কার করে, ‘চুপ করো হনুফা! মুখ দিয়া কি কুনো ভালা কথা আসে না তুমার? সবসময় মাইনষেরে গালাগালি আর অভিশাপ দেওয়া!’
হনুফা বেগম এবারে আর স্বামীর কথায় চুপ করে না। উল্টা ঝাঁঝের সঙ্গে বলে, ‘হ আপনে তো কইবেনই এই কথা! আমার মাইয়ার কিছু হইলে আপনের কী! আপনের বড় মাইয়া ঠিক থাকলেই আপনে ঠিক! ছুডো মাইয়ার যদি ভালা চাইতেন, তাইলে আইজ এই দিন আমার দেখোন লাগত না! আমার মাইয়াডার উপর দিয়া না জানি কী ঝড় গ্যাছে!…’
জামান শিকদার পুলিশ হয়েও এমন পরিস্থিতিগুলো সাধারণত এড়িয়ে চলেন। ভিক্টিমের পরিবার আবেগের কারণে এমন এমন কাজ করে ফেলে যে, তাদের থামানো যায় না। পুলিশ কেন আগে কিছু করতে পারল না, এমন অভিযোগও প্রায়ই শুনতে হয়।
সুফিয়া বিরক্ত হয়ে মাকে বলল, ‘আহ মা থামো তো! না জাইনা শুইনা কী না কী কইতাছ! আমি ঠিক আছি। আমার কুনো ক্ষতি হয়নি!’
এই কথাতেও হনুফা বেগম থামতে পারেন না। বাইরের মানুষের সামনেই সুফিয়ার শরীরে হাত দিতে দিতে বলেন, ‘তুই হাছা কইতাছ আমার কিরা কাইটা ক! মায়েরে বুঝ দেওয়নের চেষ্টা করবি না!’
এবারে সুফিয়াও বিব্রত। ‘মা, কী করতাছ? ওসি সাব আইছেন। খাড়াইয়া আছেন। একটু বইতে দাও। আইজ তেনারা না থাকলে জানি না কী হইত! বুবু কই বুবু?’
শেষের কথাতে হনুফা বেগমের মুখে যেন কালি লেপে দেয় কেউ! এত কিছু ঘটে যাওয়ার পরেও বুবুর নামটা মাথা থেকে সরে না! চিবিয়ে চিবিয়ে বলে, ‘হ ওখনো তোমার বুবু বুবু করোন লাগে! এত কিছু হইয়া গ্যালো তোমার বুবু কী করছে তোমার লাইগা? বইসা বইসা মজা দ্যাখছে আর কান্দনের নাটক করছে! আর তুমি আইসাই বুবু কই… বুবু কই! রামগাধি হইছে একটা!’
জুলেখা ঘরের এক কোণে গুটিসুটি মেরে বসে ছিল। সুফিয়া আসার কথা জানতে পেরেই সে তার ঘর থেকে ছুটে এসেছে। দূর থেকে সুফিয়াকে দেখতে পেয়ে তার চোখের পানি আর বাঁধ মানেনি। নতুন করে তাতে যেন বান ডেকেছে। সুফিয়ার কোনো ক্ষতি হয়নি শুনে সে মনে মনে বারবার আল্লাহ্র শোকরিয়া আদায় করছে। কিন্তু এখন যেন সুফিয়ার সঙ্গে তার যোজন যোজন দূরত্ব। ঐটুকু পথ সে কীভাবে অতিক্রম করে বোনের সামনে গিয়ে দাঁড়াবে, জানে না। তার ওপরে সৎ মায়ের অকথা কুকথা তো আছেই! বোনের মুখের নিজের নাম শুনে ইচ্ছে করছে ছুটে গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে। অনেক কষ্টে নিজেকে সংবরণ করে ঘরের কোণে লুকিয়ে থাকে জুলেখা।
জামান শিকদার সুফিয়ার মায়ের কথাবার্তা শুনে বুঝতে পারে, এখানে একটা ‘গল্প’ আছে। কিন্তু সেই গল্পের মধ্যে বাহিরের একজন হয়ে সে ঢুকতে পারে না। সম্ভবত সুফিয়া আর তার বোন দুই মায়ের মেয়ে। সেই জন্যই বড় মেয়ের প্রতি এত বিতৃষ্ণা সুফিয়ার মায়ের। আবার ওদিকে বোনের প্রতি সুফিয়ার ভালোবাসা সজীব। সেই বোনের সঙ্গে ঘুরতে গিয়েই সুফিয়াকে অপহরণ করা হয়েছে। সৎ বোনের প্রতি সুফিয়ার এই ভালোবাসায় হনুফা বেগমের সেজন্যই এত তীব্র বিরাগ!
জামান শিকদার পুলিশস্টেশনে ফেরার তাগিদ অনুভব করে। সেখানে আজ কী সার্কাস অপেক্ষা করে আছে কে জানে! কিন্তু এখানেও মনে হচ্ছে পারিবারিক সংঘাত আসন্ন। জামান শিকদার একটু গলা খাঁকারি দিয়ে বলল, ‘দেখুন আমি এর মধ্যে কথা বলতে চাচ্ছি না। এটা আপনাদের পারিবারিক ব্যাপার। তবে সুফিয়ার ব্যাপারে আমরা হয়ত জানতে জানতে অনেক দেরি হয়ে যেত যদি সুফিয়ার বড় বোন আমাদের পুলিশ স্টেশনে না আসতেন। আর আজকের দিনটা পার হয়ে গেলে কী হতো, বলা মুশকিল। হয়ত সুফিয়ার অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেত। তাই না জেনে… ’
হনুফা বেগমের কথা আজ যেন থামবেই না। সে এই কথার মাঝখানেই বলে উঠল, ‘হ গ্যাছে ভালা করছে। আকাম নিজে করাইয়া নিজেই গ্যাছে পুলিশে খবর দিতে!’
‘এত নিশ্চিত হয়ে আপনি কীভাবে বলছেন এসব? যাই হোক… আমি আর কথা না বাড়াই। নেয়ামত সাহেব, মেয়েদের যত্ন নিবেন। তাদের খোঁজখবর রাখবেন। আশাকরি এমন ঘটনা আর কখনো ঘটবে না। আর সুফিয়া এরপর থেকে সাবধানে চলাফেরা করবে। মন দিয়ে পড়াশুনা করবে, আর শোনো বনে জঙ্গলে কম ঘুরাঘুরি করবে!’ বলেই জামান শিকদার একটু ঘরের দিকে চোখ তুলে তাকায়। তার দৃষ্টি যেন কাউকে খুঁজে ফেরে। সুফিয়া সেটা বুঝতে পেরে জোরে ডাক দেয়, ‘জুলেখাবু, ওসি সাব তোমারে বুলায়!’
জামান শিকদার ভ্রু কুঞ্চিত করে সুফিয়ার দিকে তাকায়। এই মেয়েটা একেবারে দিনদুনিয়ার নিয়ম মানে না। এইমাত্র কী ঘোর বিপদ কাটিয়ে এলো সেটা সে একেবারেই ভুলে বসে আছে!
কিন্তু তার ডাকাডাকিতেও কেউ আসে না। একটু যেন নিরাশ হয়েই জামান শিকদার নিজের পথ দেখে। (ক্রমশ)
#ফাহ্মিদা_বারী