কখনো কুর্চি (পর্ব ১৪)
এরপর দুই সপ্তাহের মতো পার হয়ে গেছে। কুর্চি আর ফিরে যায়নি অফিসে। সেদি্নের ডিজাস্টারের পর অফিসের নীচে গিয়ে ডোরম্যানের হাতে রেজিগনেশান লেটার দিয়ে বলেছে
ড্রিমজ রেডিওতে পৌঁছে দিতে। আরিয়ানকে উদ্দেশ্য করে লেখা ওর রেজিগনেশান লেটার।
সেরাতে আরিয়ান ওকে টেক্সট করেছিল, উত্তর দেয়নি কুর্চি। তারপর আরো দুইবার মেসেজ দিয়েছিল জরুরী কথা আছে বলে। সেগুলি পড়ে কোনো জবাব না দিয়ে কুর্চি অনলাইনে যাওয়াই বন্ধ করে দিয়েছে।
দরকার নাই আরিয়ানের সাথে যোগাযোগ রাখার।
দরকার নাই আরিয়ানের কথা ভাবার।
দরকার নাই একসাথে কাজ করার স্মৃতি মনে করে কাঁদাকাটা করার।
ভুলে যাবার চেষ্টা করবে ও জীবনের এই অধ্যায়কে।
সামনে পড়ার চাপ বাড়ছে, মন দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে।
শিউলি ওকে প্রশ্ন করেছেন কিছু হয়েছে কিনা, উত্তরে বলেছে পড়াশোনায় অসুবিধা হচ্ছিল, এজন্য চাকরি ছেড়ে দিয়েছে ও।
তাতে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকালেও কিছু বলেননি শিউলি।
আজ একমাস পার হবার পর শিউলি নতুনভাবে প্রসঙ্গটা ওঠালেন
— কুর্চি, আপাকে তো নানা কিছু বলে এতদিন ঠেকিয়ে রেখেছিলাম। কিন্তু এখন উনি ছেলেকে নিয়ে আসতে চাইছেন। আমি অজুহাত দেবার মতন কিছু খুঁজে পাচ্ছি না। কী বলব?
ক্লান্ত গলায় কুর্চি উত্তর দিল
— আসতে বল।
— সত্যি বলব?
নিঃস্পৃহ গলায় কুর্চি বলল
— বলো। তবে শর্ত থাকবে পড়া শেষ করা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। একসাথে বিয়ে আর পড়ার ঝামেলা আমি নিতে পারব না।
শিউলি দৌড়ালেন আদিবাকে ফোন করতে। মেয়েটা কেমন শুকনা মুখে ঘুরে বেড়ায় ইদানিং। কিছু একটা হয়েছে তো বটেই যেটা ও নিজের মা’কেও বলতে পারছে না বা চাইছে না। এখন ওর মন অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেয়া দরকার। হয়ত বিয়ের তালগোলে পড়ে মন ভালো হয়ে যাবে।
ফোন কেটে দিয়ে উৎফুল্ল গলায় আরিয়ানকে ডাকলেন আদিবা। নিজের রুম থেকে বের হল আরিয়ান
— ডাকছিলে, মা?
— হ্যাঁ, সেট হয়ে গেছে।
— কী সেট হয়ে গেছে?
— তোর বিয়ে। আপা দেখা করবার জন্য সামনের শুক্রবারে যেতে বলেছেন।
— এ আবার কোন মেয়ে?
— কোন মেয়ে আবার কী? একটাই তো মেয়ে। সেই যে চাঁদনি চকে দেখেছিলাম।
— কুর্চি?
— হ্যাঁ, কুর্চি।
তারপরেই সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকালেন ছেলের দিকে
— তুই ওর নাম জানলি কিভাবে? তোকে নাম বলেছি বলে তো মনে পড়ছে না।
— বলোনি। আমি কুর্চিকে চিনি, মা।
— চিনিস! এতদিন বলিসনি কেন?
কাঁধ ঝাকাল আরিয়ান, উত্তর দিল না।
— কিভাবে চিনিস। বল না!
— শোনো মা, এসবের দরকার নাই। কুর্চি আমাকে বিয়ে করবে না। ও আমাকে দেখতে পারে না দুচোখে।
ওমনি গরম হয়ে গেলেন আদিবা।
— কেন বিয়ে করবে না? এত তেজ কিসের? আমার ছেলেকে রিজেক্ট করে! এত সাহস!
— তুমিই তো সেদিন বলেছিলে তেজি মেয়ে, আমাকে বিয়ে নাও করতে পারে। বলোনি?
— বলেছি। কিন্তু সেটা তো কথার কথা। সত্যি সত্যি কি আর বলেছি নাকি?
— ওয়েল! তোমার কথার কথাই এখন ফলে গেল। ও আমাকে বিশ্বাস করে না। বিয়ে তো করবেই না।
চিন্তিত দেখাল আদিবাকে
— ব্যপারটা কী খুলে বল দেখি। এই মেয়ের সাথে পরিচয় হলই বা কেমন করে, এতটুকু সময়ের মধ্যে রিজেক্ট হলিই বা কেমন করে খুলে বল দেখি। আমার ছেলেকে রিজেক্ট করে, মেয়ের বুকের পাটা দেখি কম না!
আরিয়ান বাধ্য হয়ে খুলে বলল মা’কে। সব শুনে আদিবা দ্বিগুণ উৎসাহে লাফিয়ে উঠলেন
— এ মেয়েকে আমি বৌ করে এনেই ছাড়ব।
আরিয়ান কিছুতেই মায়ের উৎসাহ দমিয়ে রাখতে পারল না। শেষে হাল ছেড়ে দিল
— যা ভালো বোঝো করো। তবে কুর্চি ছাড়া অন্য কোনো মেয়ের কথা ভুলেও ভাববে না, মা।
কুর্চিদের বাসায় দুপুরের পর থেকেই সাজসাজ রব পড়ে গেছে। শিউলি ছোটাছুটি করছেন নাস্তার ব্যবস্থা নিয়ে, ড্রয়িং রুমের ডেকোর নিয়ে। উল্টে পাল্টে ইতিমধ্যে ড্রয়িংরুম রিডেকোরেট করে ফেলা হয়েছে। নাসিম সাহেব পড়েছেন মহা মুশকিলে। পেপার পড়বেন বলে সোফায় বসতে গিয়েই ধমক খেলেন। বসলে নাকি সোফা ব্যাকের ভাঁজ নষ্ট হবে, তাই মেহমান না আসা পর্যন্ত সোফায় বসা চলবে না!
শুধু ড্রয়িংরুম না, আরো নানান ঘর থেকে বিতাড়িত হয়ে অবশেষে কন্যার ঘরেই আশ্রয় নিলেন। করুণ মুখে কুর্চির ঘরের পর্দা সরিয়ে প্রশ্ন করলেন
— তোর রুমের পড়ার টেবিলে বসলে কোনোকিছুর ভাঁজ নষ্ট হবে না তো?
মায়ের ছোটাছুটি আর হাঁকডাক সবই কুর্চির কানে যাচ্ছিল। উপেক্ষা করার নিস্ফল চেষ্টায় বিছানায় আধশোয়া হয়ে সে শুচির “প্রেম নেই জীবনে” পড়বার বৃথা চেষ্টা করছিল।
বাবার কথায় সোজা হয়ে বসল
— বাবা, তুমি আমার বিছানায় শুয়ে আরাম করে পেপার পড়ো। আমি ওপাশে সরে যাচ্ছি।
বিছানার কোণে সরে গিয়ে নাসিম সাহেবকে জায়গা করে দিল।
বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে আরামের নিঃশ্বাস ফেলে পেপার মুখের ওপরে ধরলেন তিনি
— তোর মা এত এক্সাইটেড কেন?
কুর্চির কিছুই ভালো লাগছিল না। জেদের বশে মা’কে তো হ্যাঁ বলে দিয়েছে কিন্তু যতোই ওদের আসবার সময় এগিয়ে আসছে, ততোই কুর্চীর মুখ শুকিয়ে যাচ্ছে। যদি পছন্দ করে ফেলে তো কী হবে। কুর্চির পক্ষে কি সম্ভব হবে অচেনা আজানা লোককে বিয়ে করতে?
— বাবা, এই ভদ্রমহিলা আমাকে চাঁদনী চকে দেখে পছন্দ করেছিলেন। তারপর থেকেই ছেলের সাথে বিয়ে দেবার জন্য পাগল হয়ে গেছেন।
— আচ্ছা বুঝলাম। তিনি নাহয় পাগল হয়েছেন, তোর মাও আধাপাগল হয়েছে। কিন্তু তোর কী অবস্থা? তুই রাজি?
— জানি না, বাবা। মা বলল ভালো ছেলে, ভালো ফ্যামিলি, ধনী ফ্যামিলি। আজ এলে সামনাসামনি দেখা হবে, কথা হবে।
— হুম। নাকের ওপর থেকে পেপারটা নামিয়ে একপলক কুর্চিকে দেখে নিয়ে আবার চোখের সামনে মেলে ধরলেন নাসিম সাহেব।— দেখ মা। বিয়েটা কোনো হেলাফেলার ব্যপার না যে জামাকাপড় বাছাবাছি করতে করতেই বিয়ের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তোর গলার স্বরে, চেহারায় আমি এতটুকু উৎসাহ বা আগ্রহ খুঁজে পাচ্ছি না। তোকে এমনভাবে মানুষ করাও হয়নি। যথেষ্ট স্বাধীনতা দিয়ে বড় করা হয়েছে। তোর কোনো পছন্দ থাকলে বল। আমরা কথা বলি। এসব কাপড়ের দোকানদারের সাথে বিয়ে বসার দরকার নাই। ধনী হলেই সব হয়ে গেল নাকি?
কুর্চি হাসতে বাধ্য হল
— কাপড়ের দোকানদার না, বাবা! কাপড়ের দোকানে ছেলের মা আমাকে দেখে পছন্দ করেছেন।
নাসিম সাহেব নির্বিকার
— ওই একই কথা। খারা বড়ি থোর আর থোর বড়ি খাড়া। টাকা দিয়ে সবকিছুর বিচার হয় না। আসল কথা হচ্ছে ছেলে কেমন, কী করে। আদৌ কাজকর্ম কিছু করে নাকি বাবার হোটেলের ভরসায় আছে? যাক গে সেসব কথা। এখন বল, আছে পছন্দ?
কুর্চি নিশ্চুপ।
— বল মা। তোর মা খুব চেষ্টা করছে এটা একটা ফ্রেন্ডলি ভিজিট দেখাতে। তেমন কিছু না, জাস্ট পাঁচ মিনিটের জন্য আসবে, তোর সাথে দেখা সাক্ষাত হবে টাইপ। কিন্তু তার এক্সাইটমেন্ট এমন আকাশচুম্বী হয়েছে যে আমি এখন নিজের ঘরেই জায়গা পাচ্ছি না। তারমানে সে যথেষ্ট সিরিয়াস। কিন্তু আমি সিরিয়াস না। এ ব্যাপারে তোর মতামতটা সবার আগে প্রাধান্য পাবে। এখন তোর কথাটা শুনি।
কুর্চি হাউমাউ করে কেঁদে ফেলল
— আছে, বাবা। কিন্তু সে আমাকে চায় না।
নাসিম সাহেব পেপার টেপার ফেলে তড়াক করে উঠে বসে মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে আগুন হলেন
— এত বড় সাহস! আমার মেয়েকে চায় না! কুলাঙ্গার একটা!
কথা ছিল সন্ধ্যার পরপরই তারা এসে পড়বেন। কথার এতটুকু এদিক ওদিক করলেন না আদিবা।
সন্ধ্যা পার হতেই ইমরান সাহেবকে বগলদাবা করে চলে এলেন কুর্চিদের বাসায়। দুই মহিলা পরস্পরকে এমনভাবে জড়িয়ে ধরলেন যেন কতদিনের পরিচিত। নাসিম সাহেব অবশ্য ইমরান সাহেবকে জড়িয়ে ধরলেন না, শুধু ইমরান সাহেবের হাতে ধরা বড় মিষ্টির প্যাকেটটার দিকে আড়চোখে তাকিয়ে দেখলেন।
সবাই বসবার পরে শিউলি প্রশ্ন করলেন
— কই আপা, ছেলেকে দেখছি না।
— আসছে, আপা। গাড়ি পার্ক করছে। এসে পড়বে। কই, কুর্চি মা’কে দেখছি না তো।
শিউলি যথেষ্ট পরিমাণে ব্যস্ত হলেন
— কুর্চি! কুর্চি! রুমেই আছে, আপা। আমি যাই, নিয়ে আসি।
রুমে ঢুকে ডাকলেন
— কুর্চি।
আয়নার সামনে রেডি হচ্ছিল কুর্চি। মায়ের ডাকে ঘুরে দাঁড়াল। ওরদিকে এক পলক তাকালেন শিউলি। তারপর তাকিয়েই রইলেন
— তুই এ ছেলেকে বিয়ে করবি না, তাই না?
কুর্চি কেঁদে ফেলল
— না, মা। পারব না।
রুষ্ট ভঙ্গিমায় খানিক দাঁড়িয়ে রইলেন শিউলি। তারপর সহজভাবেই বললেন
— আচ্ছা, না পারলে না পারবি। পারতেই হবে, এমন জোরাজুরি তো নাই। কিন্তু একথাটা আমাকে আগে বললি না কেন? আমি কি তোর শত্রু?
শিউলিকে জড়িয়ে ধরল কুর্চি। মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে শিউলি প্রশ্ন করলেন
— কাকে পছন্দ তোর?
— কাউকে না।
— কাউকে তো বটেই। নাহলে চোখমুখের এমন অবস্থা হয়! বল কাকে পছন্দ, আমরা কথা বলি।
কুর্চি কাঁদতে কাঁদতে বলল
— বলে লাভ নাই, মা। সে আমাকে পছন্দ করে না।
বারুদের মতো জ্বলে উঠলেন শিউলিও
— এত বড় সাহস! কে সে? নিয়ে চল আমাকে ওর কাছে।
কুর্চি হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে
— আচ্ছা আচ্ছা, এখন আপাতত চল তো। উনাদের সামনে এক দেখা দিয়েই তুই ফিরে আসিস। আমি কিছু একটা ছুতা বের করে বলব যে ছেলে আমাদের পছন্দ হয়নি বা অন্যকিছু।
— মা! কিন্তু তুমি তো ছেলেকে পছন্দ করেছ!
— আমি পছন্দ করলে কী এসে যায়। সংসার তো করবি তুই। নে, মুখ ধুয়ে নে, একটু পাউডার দে। সব মুছে গিয়ে কী অবস্থা হয়েছে।
কুর্চিকে সাথে নিয়ে শিউলি ড্রয়িং রুমে ফিরে এলেন। সালাম বিনিময় হবার পর সবাই ঠাণ্ডা হয়ে বসতে না বসতেই দরজা দিয়ে ঢুকল এক যুবক। তাকে প্রথমে দেখলেন শিউলি। একটু কনফিউশানের সাথে বললেন
— আপা, এই আপনার ছেলে বুঝি?
এতদিন ধরে আদিবার সাথে কথা চলছে কিন্তু শিউলি মেয়ের বেঁকে বসা দেখে ছেলের ছবি বা সিভি কোনোদিন সাহস করে চাইতে পারেননি। চাইলে যদি আদিবা সেটাকে আগ্রহ বলে ধরে নেন! এখন তার আফসোস হচ্ছে। ছেলের একটা ফটো অন্তত দেখে রাখলে ভালো হত।
কিন্তু আপা জবাবও দিতে পারলেন না, তার আগেই কুর্চি লাফ দিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল
— রুবেল!
রুবেল কুর্চির দিকে তাকিয়ে রইল, কিছু বলবার চেষ্টা করল কিন্তু চান্স পেল না!
— রুবেল! তুমি জেনেবুঝে আমাকে দেখতে এসেছ! ছোটলোক, ইতর কোথাকার।
— আহ, গালি দিও না তো, কুর্চি! কথা শোনো।
— গালি তো অনেক কমই দিলাম। যেসব গালি দিতে ইচ্ছা করছে, সেগুলির কিছুই দিতে পারছি না। কোন সাহসে আমাকে দেখতে আসো? মাথা খারাপ হয়ে গেছে তোমার? অসম্ভব! মা এ ছেলেকে বিয়ে করা অসম্ভব।
— ট্রাস্ট মি, কুর্চি। আমি তোমাকে দেখতে আসিনি। আন্টিকে জিজ্ঞেস করো।
কুর্চি তখন এতোই উত্তেজিত যে ভালোমতো শুনলও না
— আন্টি! মা’কে আন্টি বলো তুমি?
কুর্চির কান্ড দেখে শিউলি আর নাসিম সাহেব স্তম্ভিত হয়ে বসে ছিলেন। শিউলি আবার জিজ্ঞেস করলেন
— আপা, এ আপনার ছেলে?
কুর্চি আদিবাকে কথাই বলতে দিল না
— যার ছেলেই হোক, এ ছেলেকে বিয়ে করা অসম্ভব। পৃথিবীর শেষ ছেলে হলেও সম্ভব না।
রুবেল একটা কথা বলতে চাইছিল। কুর্চির কথা শুনে সেও তেরিয়া হয়ে গেল
— আমিই বা তোমাকে কোন বিয়ে করার জন্য নাচছি? আমার পক্ষেও অসম্ভব। তুমি পৃথিবীর শেষ মেয়ে হলেও সম্ভব না।
নাসিম সাহেব এতক্ষণে মুখ খুললেন
— তাহলে ত সমস্যার সমাধান হয়েই গেল। মানবজাতি বিলুপ্ত হলেও এরা বিয়ে করবে না!
রুবেল কপালে হাত দিয়ে অসহিষ্ণু ভঙ্গী করল
— কুর্চি, তোমার ড্রামা কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ করবে? জরুরী কথা ছিল। আলাদাভাবে বলতে হবে, সবার সামনে না।
শিউলি পুরা ব্যাপারটাই ভুল বুঝলেন। তিনি রুবেলকেই কুর্চির ভালোবাসার জন ভেবে তাড়াতাড়ি বলে উঠলেন
— গেস্টরুমে গিয়ে কথা বলতে পারো তোমরা।
কুর্চি তখনো হাঁপাচ্ছিল
— না! ওখানে কথা বলি আর তোমরা সবাই আড়িপেতে শোনো আরকি।
— বিশেষ করে আড়িপাতার অভ্যাস যখন তোমার খুবি আছে!
রুবেল খোঁচা মারতে ছাড়ল না।
কুর্চি কোনো কথা না বলে দরজার দিকে এগিয়ে গেল
— চলো ছাদে।
রুবেলের চেহারায় হুট করে হাসি দেখা গেল
— সেই ভালো। চল।
দুজনে বের হয়ে যাবার পর আদিবা কথা বলার চান্স পেলেন
— কিন্তু আপা, এ তো আমার ছেলে না।
— অ্যাঁয়! তাহলে কার ছেলে?
— জানি না, আপা। আমার না, এতটুকুই জানি। ভয়ের কিছু নাই। আপনার মেয়ে তাকে চেনে বলেই মনে হল।
( আগামী পর্বে সমাপ্য)