#ওপারে_আকাশ
বিসমার্ক প্লাজার দোতলায় কসমেটিকসের দোকানে দাঁড়িয়ে আছে সুবহা। ব্যাগে রাখার প্রিয় ছোটো আয়নাটা গতকাল সন্ধ্যায় ভেঙে ছয় টুকরো হয়েছে। তাছাড়া কিছু শীতের প্রসাধনী কেনারও প্রয়োজন ছিল। ইশতিকে পাশের টি-শার্টের দোকানে রেখেই কসমেটিকসের দোকানে ঢুকে পড়ল সুবহা। দোকানটিতে এক জোড়া দম্পতি কেনাকাটা করছিল। লিপস্টিকের কালার দেখতে পুরুষলোকটা নিজ হাতে বউয়ের ঠোঁটে এই সেই কালার লাগিয়ে দিচ্ছে আবার টিস্যু দিয়ে মুছে নিচ্ছে। বউকে কোন কালারে সবচেয়ে সুন্দর লাগে সেটাই পরখ করে দেখছে খুঁতিয়ে খুঁতিয়ে। কয়েক মিনিট এক দৃষ্টিতে বিষয়টা তাকিয়ে দেখল সুবহা। মনে মনে বলল, নারীরা আসলে বিবাহিত জীবনে তেমন কিছুই চায় না- যদি এমন একটু ভালোলাগা মাঝে মাঝে তাদেরকে ছুঁয়ে দিতে পারে।
আড়চোখে ওই দম্পতিকে দেখতে দেখতে সুবহা কেনাকাটা করে চলেছে। গ্লিসারিন, লোশন আর ক্রিম প্যাকেট করতে বলে মিনি আয়না বের করতে বলল দোকানিকে। ইশতি ততক্ষণে টি-শার্টের কর্ণার থেকে কসমেটিকস এর কর্ণারে চলে এসেছে।
“এই সুবহা, তোমার হোলো? একটু পর এই রাস্তায় জ্যাম পড়ে যাবে। জ্যামের আগেই কিন্তু বাসায় ফিরতে হবে। দ্রুত শেষ করো…”
“এই শোনো এদিকে আসবে একটু? দেখো না এই তিনটা আয়নার মধ্যে কোনটা বেশি সুন্দর?”
“নাও তোমার যেটা ভালো লাগে। ওসব আমি বুঝি না। একটু দ্রুত করো, ফিরতে হবে।”
“এসেছি আধাঘন্টাও হয়নি। আসার সাথেই যদি এমন করো তবে সাথে আনলে কেন?”
“আচ্ছা তোমার যতো সময় লাগে কেনাকাটা করো। ফিরতে কষ্ট হবে সেজন্যই বলছিলাম।”
“এই দুই জোড়া চুড়ির মধ্যে কোনটা সুন্দর একটু বোলো না।”
“আচ্ছা বারবার একই কথা বলছ কেন? মেয়েদের জিনিসপত্র মোটেও চিনি না আমি। যেটা ভালো মনে হয় নাও…”
হঠাৎ সুবহার চোখে পানি এল। কোনোরকমে নিজেকে সামলে নিয়ে হাত থেকে চুড়ি রেখে দিয়ে আড়চোখে ওই দম্পতির দিকে তাকাল।
দুজন মিলে কানের দুল পছন্দ করে চলেছে তারা। পুরুষ লোকটি বউয়ের কানের সামনে একটা একটা করে দুল ধরে ট্রায়াল আয়নায় বউকে দেখছে…
সুবাহ ওদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে হনহন করে হাঁটতে লাগল। ইশতিকে ক্রস করতেই ইশতি বলল, “সব নিয়েছ?”
“লাগবে না। দোকানদারকে ওগুলো রেখে দিতে বল। নামি চলো। জ্যাম পড়ে যাচ্ছে…”
ইশতি দ্রুত গিয়ে সেলসম্যানকে জিজ্ঞেস করল, “কত টাকা হয়েছে?”
দোকান থেকে টাকার অ্যামাউন্ট বললে ইশতি মূল্য শোধ করে দ্রুত বের হলো দোকান থেকে।
সুবাহ ততক্ষণে চলন্ত সিঁড়িতে। ইশতিও পা চালিয়ে দ্রুত সিঁড়িতে উঠে পড়ল। সারা রাস্তা সুবাহ দম আটকে বসে রইল। কোনো কথা নেই। ইশতির ফোন আসছে একের পর এক, বায়াররা কল করছে। কখনও আবার হোয়াটসঅ্যাপে কাস্টমারদের সাথে কানেক্ট হচ্ছে। সুবাহ যে রাগ করে বসে আছে ইশতি সেটা খেয়ালই করল না সারা রাস্তায়। যে যার মতো করেই সময় পার করল।
সুবাহকে বাসা অবধি পৌঁছে দিয়েই ইশতি আবার ছুটল অফিসে। বিদেশ থেকে কাস্টমারদের সাথে মিটিং হবে রাত আটটায়। ইশতি সেখানেই ছুটছে।
বাসায় ফিরে ড্রেস চেঞ্জ করে অনেকক্ষণ ধরে ঠান্ডা পানির ঝাঁপটা নেয় সুবাহ। মন খারাপের জের তবুও কাটে না। রাতের রান্না করতে রান্নাঘরে ঢোকে। দুইপিস মাছ বের করে দ্রুত রান্না শেষ করে এসে বিছানায় চলে আসে।
ইশতির সাথে দেড় বছর হয় বিয়ে হয়েছে সুবহার। টানা দুই বছর প্রেমের পর অনেক কষ্টে পরিবারকে রাজি করাতে পেরেছিল দুজন। ইশতিকে পাওয়ার জন্য কী না করেছিল সুবাহ্। পাতা পাতা ঘুমের ওষুধ খেয়ে হাসপাতালে পর্যন্ত গিয়েছিল। সুবাহ মনে মনে বলে, “বিয়ের আগেও ইশতির মধ্যে কি এই ছাড়া ছাড়া ভাবটা ছিল? কি জানি কিছুই মনে নেই এখন। বিষয়গুলো কিন্তু তখন পরখ করে নেওয়া দরকার ছিল। প্রেমের আবেগে এতটা ডুবে ছিলাম। আবেগের বশে খুব বেশি ভুল করে ফেললাম না তো জীবনে!”
ইফতি বাসায় ফেরে রাত এগারোটায়। এসেই হাত মুখ ধুয়ে এসে বলে খাবার দাও। ক্ষুধা পেয়েছে।
সুবাহ ভাত মাছ আর আগের রান্না করা ডাল সামনে দেয় ইশতির। “ঢেলে নিও। পুরোটা তোমার জন্যই বেড়েছি।”
ইশতি ‘খেয়েছ’ জিজ্ঞেস করলে সুবহা মাথা নেড়ে বলে,
” এত রাত পর্যন্ত না খেয়ে থাকতে পারি না। রান্নার পরপরই খেয়ে নিয়েছি।”
ভালো করেছ, বলে ডানে বামে আর তাকায় না ইশতি। চটপট খাবার খেতে থাকে। খেতে খেতে বলে, “রান্নার সময় অন্যমনস্ক ছিলে? খাবার খেতে পারছি না। স্বাদ লাগছে না।”
সঙ্গে সঙ্গে ভ্রু কুঁচকে প্লেট থেকে একটা মাছ উঠিয়ে বাটিতে রাখে। দ্রুতই খাবার শেষ করে উঠে পড়ে ইশতি। সুবহার মন খারাপের মাত্রা আরো বেড়েছে।
“প্রচণ্ড খিদেয় পেটও জ্বলছে। তার চেয়েও বেশি জ্বলছে চোখ। তার স্বামী একা একা খেয়ে উঠে গেল। একটা লোকমা মুখের সামনেও ধরল না। শেষমেশ আবার রান্নার বদনাম করতেও ছাড়ল না। এই মানুষটাকে এতো ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম আমি!”
ঘুমোনোর সময় ইশতি জানায়, আগামীকাল বিকেলে তার এক বন্ধুর অ্যানিভার্সারির অনুষ্ঠান। ফোনে নিমন্ত্রণ করেছে তাদেরকে। পাঁচটার মধ্যে রেডি থেকো।
দুই
ইশতির বন্ধু জায়ান আর তার বউ মিতা বর-কনে সেজে স্টেজে ফটোসেশন করছে। ইশতির আরো বন্ধুরাও এসেছে অনুষ্ঠানে। কেউ বউ নিয়ে এসেছে। কেউ কেউ সিঙ্গেল। ইশতি, বউকে বন্ধুমহলে পরিচয় করিয়ে দিয়েই যথারীতি কাস্টমারদের ফোনকলে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এদিকে সবার মাঝে আনইজি বোধ করতে থাকে সুবাহ। অনুষ্ঠানে যে কাপলগুলো এসেছে তারা সবাই ফ্যামিলি ছবি তুলতে ব্যস্ত। কেউ কেউ ব্যস্ত বউয়ের ছবি তুলতে। জায়ান আর মিতার সাথে গ্রুপ ছবি তুলতেও মরিয়া কয়েকজন। সুবহা বিরক্তমুখে একপাশে দাঁড়িয়ে আছে…
এমন সময় জায়ানের বন্ধু চয়ন সামনে এসে বলল, “পোজ দিয়ে দাঁড়ান তো ভাবী। সুন্দরী মানুষটার কিছু ছবি তুলে দিয়ে ধন্য হই।”
সুবহা ছবি তুলবে না বলে জানায়। কিন্তু চয়ন নানানভাবে দুষ্টুমীর স্বরে কথা বলতে থাকে। এক পর্যায়ে সুবাহ কিছুটা ইজি হয়ে পোজ নিয়ে ছবি তুলতে দাঁড়ায়। ওদিকে ফোনের ঝামেলা শেষ করে ইশতিও এগিয়ে আসে। ইশতি এলে চয়ন তাকেও দাঁড়াতে বলে পাশে। বন্ধু আর বন্ধুর বউয়ের রোমান্টিক কিছু ছবি তোলে মধ্যস্থতা করে।
শেষ পর্যন্ত চয়নের দুষ্টুমী আর আন্তরিকতাপূর্ণ ব্যবহারে সময়টা খুব একটা মন্দ কাটে না সুবহা’র। মন খারাপ ভাবটাও বেশ হালকা মনে হয়।
অনুষ্ঠান শেষ হলে ফেরার জন্য উবারের খোঁজ করে ইশতি। রাস্তার ওপারে উবার দাঁড়ানো বললে রাস্তা পার হতে থাকে দুজন। প্রায় কাছে চলে এসেছে এমন সময় এক রিকসার হুডে শাড়ির সুতা প্যাঁচিয়ে আঁচলের বেশ খানিকটা ছিঁড়ে যায়। যা দেখামাত্রই ক্ষেপে ওঠে ইশতি।
“রাস্তাঘাটে ডানে-বামে তাকিয়ে তো চলবে না! সবকিছুতে গা-ছাড়া ভাব…”
ঝাঁড়ি দিয়ে কথা বলতে থাকে। মাথা নিচু করে শান্ত হয়ে যায় সুবহা। চুপচাপ উবারে উঠে।
ঝাঁড়ির পর কেউ কাছে টেনে নিলে বিষয়টা আরো মিষ্টি হয়ে ওঠে। কিন্তু ইশতির মধ্যে সেসব নেই। উবারে উঠেই সিটে গা এলিয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলেছে সে। সুবহা কতক্ষণ বাইরের দিকে তাকিয়ে ছিল। একটা সময় ইশতির দিকে তাকাল। নাক ডাকার মতো গভীর ঘুমের পর্যায়ে চলে গেছে সে। সুবহা মুখ ঘুরিয়ে আবার গাড়ির কাঁচের দিকে তাকায়।
তিন
একটা কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষক সুবহা। সারাদিন বাসায় ভালো লাগে না বলে চাকরিটা নিয়েছিল সে। স্কুলটা বেশ নামকরা। বেতনও ভালোই দেয়। ইশতি অনেকবার নিষেধ করেছে চাকরি-বাকরির মতো বাড়তি ঝামেলায় না জড়ানোর জন্য। মেয়েদের জন্য ঘরে বাইরে সামলানো বেশ কঠিন এটা সবসময়ই বলে ইশতি। কিন্তু সুবহা যখন নিজের ইচ্ছের কথা জানিয়ে বলে, কিছু না করলে এত কষ্টের লেখাপড়ার কোনো মূল্য থাকে না। এরপর আর এ সম্পর্কে হ্যাঁ অথবা না কিছু বলে না ইশতি।
গতরাতের মন খারাপ ভাবটা তেমন একটা নেই এখন। গা ছাড়া মানুষটা রাতে বেশ শক্ত বাঁধনে জড়িয়েছিল তাকে। রাতের অন্তরঙ্গতার পর ইশতির উপর থেকে রাগও পড়ে গেছে অনেকটাই।
বাসা থেকে বেরিয়ে সুবহা স্কুলের উদ্দেশে রিকসা নিল। স্কুলে যেতে রিকসায় পনেরো মিনিটের মতো সময় লাগে। অর্ধেক পথ আসতেই কে যেন ভাবী বলে একটা চিল্লানী দিয়ে ডাকল পেছন থেকে। সুবহা রিকসাকে থামতে বলে পেছনে তাকাল। ইশতির বন্ধু চয়নকে দেখা গেল। চয়ন ছুটে আসছে।
“ভাবী কেমন আছেন? অফিসে দেরি হয়ে যাচ্ছে। এদিকে রিকসা পাচ্ছি না। আপনি কতদূর যাবেন?”
এইতো আর মিনিট দশেক লাগবে। আপনি এদিকে যে? আমি পপুলারের পাশেই নামব।
“আমি এদিকেই ভাড়া থাকি। কলাবাগান আমার অফিস। প্লিজ লিফট দেন আমাকে।”
এভাবে কাউকে লিফট দেওয়াটা পছন্দ নয় সুবহার। কিন্তু ইশতির বন্ধু এবং বেশ ভালো বন্ধু বলেই মনে হয়েছে দুজনকে। আমার কথায় যদি মাইন্ড করে! এই-সেই ভেবে সুবহা অনুমতি দিয়েই দেয়।
ঝট করে রিকসায় উঠে এই সেই বলে একইভাবে মুখ চালিয়ে যায় চয়ন।
“ভাবী আপনি এতো সুন্দর কেন বলুন তো? আপনার মতো দেখতে একটা মেয়ে খুঁজে দেন না। বিয়ের ঝামেলা টা মিটিয়ে ফেলি। বাড়ি থেকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে। কিন্তু মেয়ে তো পছন্দ হয় না আমার…”
“খুঁজতে থাকুন, যে ভাগ্যে আছে তাকে খুঁজে পেয়ে গেলেই হবে।”
“আপনার বোনটোন নেই? থাকলে এই সপ্তাহেই শুভ কাজ সেরে ফেলব, প্রমিস…”
“আপন বোন নেই আমার। ছোটো দুই ভাই আছে শুধু। চাচাতো আর খালাতোদের মধ্যে যে কজন বোন আছে হয় তাদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে অথবা অনেক ছোটো। বিয়ে দেবার মতো কেউ নেই।”
“ধ্যাত, এইটা কোনো কথা! এই জীবনে মনে হচ্ছে আমার আর বিয়েই হবে না।”
কথাটা শুনে সুবহা হাসি আটকে রাখতে পারল না। কিছুটা শব্দ করে হেসে ফেলল। চয়ন কয়েক সেকেন্ড নীরব হয়ে রইল। তারপর বলল, “এই প্রথম আপনাকে এভাবে হাসতে দেখলাম ভাবী। আপনাকে দেখে মনে হয় আপনি সবসময় কেমন এক বিষন্নতায় ডুবে থাকেন। আচ্ছা আপনার ফোন নম্বরটা দেন তো। মাঝে মাঝে ফোন করব। বলতে গেলে সম্পর্কটা কিন্তু দেবর-ভাবীর। গল্প করার অধিকার আছে ষোলোআনা। আমি হাসতে পছন্দ করি তার চেয়েও পছন্দ করি হাসাতে। আপনার ভালো লাগবে।”
সুবহা তার পারসোনাল নাম্বারটি চয়নকে দিয়ে পপুলারের সামনে নেমে পড়ল।
চার
ইদানীং সুবহার সময়টা আগের মতো বোরিংফুল হয়ে ঝিমিয়ে থাকে না। চয়নের সাথে ফেসবুকে এড হবার পর থেকে কিছুক্ষণ পর পর এই-সেই ম্যাসেজ বেশ আনন্দ দেয় সুবহাকে। ইশতির প্রতিও প্রত্যাশার পরিমাণ আগের মতো মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে নেই।
আজ অনেকটা সারপ্রাইজড হয়েছে সুবহা। ঠিক সন্ধ্যাবেলা চয়নকে নিয়ে ইশতি হাজির। সুবহা আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করল-
“কী ব্যাপার দুই বন্ধু একেবারে একসাথে! তো আপনারা আসছেন এটা আমাকে একবারও জানাবেন না? অন্তত কিছু রান্না করে তো রাখতে পারতাম…”
কথাটা শেষ না হতেই চয়ন বলে ওঠে , কোনো সমস্যা নেই। রান্নাবান্না শুরু করে দিন ভাবী। আপনার হাতের খাবার না খেয়ে আমি যাবো না। খাবো-দাবো, আড্ডা দেব… ওকে?
একটু সরে গিয়ে ইশতি বলল, “ফেরার পথে চয়নের সাথে দেখা। বলল বাসায় আসবে। তাই নিয়ে এলাম। তুমি খিচুড়ি আর গরুর মাংস রান্না করো। তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে।”
ইশতি, চয়নকে ড্রয়িং রুমে বসতে বলে ফ্রেশ হতে চলে গেল…
চয়নের জন্য শরবত করছিল সুবহা। চয়ন বসে না থেকে সরাসরি রান্নার রুমে ঢুকে গেল। বলল, কী কী কাটতে হবে আমাকে বলে দিন ভাবী। চাকু আর চপিং বোর্ড পেলে আমি কিন্তু রকেটের গতিতে সবজি কাটতে পারি।
সুবহার নিষেধ সত্ত্বেও রান্নায় অনেক সাহায্য করল চয়ন। তারপর খাওয়া-দাওয়া শেষ করে তিনজন মিলে মুভি দেখতে বসল। ইশতির কাজের তাড়া ছিল। সে সাড়ে এগারোটার দিকে চয়নকে স্যরি বলে রুমে এসে ল্যাপটপ নিয়ে পড়ল। চয়ন ঠাঁয় বসে মুভি দেখতে লাগল। ঠিক রাত বারোটা এক বাজল যখন, তখন একটা গোলাপ পকেট থেকে বের করে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাল সুবহাকে। সুবহা অবাক! কিভাবে জানল সে জন্মদিনের কথা! চয়ন জানাল ফেসবুক ঘেঁটে জেনেছে। শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে চয়ন যখন নিজের বাসায় পৌঁছাল তখন রাত সাড়ে বারোটা।
এরপর থেকে সময় পেলেই চয়ন এসে ঢুঁ মেরে যায় ইশতি আর সুবহার বাসায়। এসে চা পান করতে করতে সুবহার সাথে দুষ্টুমিতে মাতে। তারপর চলে যায়। প্রথম দিনের পর ইশতির সাথে বাসায়ও দেখা হয় না চয়নের।
পাঁচ
রাতে ইশতির সাথে বেশ ঝামেলা চলল সুবহার…
চলবে…