#এমনই_শ্রাবণ_ছিল_সেদিন
#ইসরাত_জাহান_দ্যুতি
৩.
গতকাল শ্যুটিং শেষ হয়েছে সন্ধ্যার পর। সেদিন মেহফুজের বদলে শট নিয়েছে আমিন। কিন্তু বিপত্তি হয় খেয়ামের ক্ষেত্রে। সন্ধ্যার পর সে জানতে পারে পরেরদিনের শট নেওয়া হবে খুব ভোরে। কারণ, পরেরদিন ভোরের আবহাওয়া থাকবে খুব বিশুদ্ধ, বৃষ্টি নামার আশঙ্কা নেই। আর যদি বৃষ্টি পড়েও তবে সেক্ষেত্রেও স্ক্রিপ্ট রাইটার নতুন একটি পদক্ষেপ ভেবে রেখেছে তার গল্পে। আর এ কারণে খেয়ামকে গতকালের রাতটা স্টুডিয়োতেই থাকতে হয়েছে। খুব ভোরেই সেট রেডি করতে শুরু করেছে সে সকলের সাথে। আজকের শটও আমিন নেবে বলে জানত খেয়াম। কিন্তু হঠাৎ করেই সেটে এসে হাজির হলো মেহফুজও। নয়ন তার জন্য কফির ব্যবস্থা করতে পাঠাল ইব্রাহীমকে। কিন্তু ইব্রাহীম এসে হুকুম করল খেয়ামকে। এমনিতেই রাতটা জেগে পার করেছে সে। একটু কফি বা চা তার নিজের জন্য হলেও ভালো হতো। এই ভেবে খেয়াম মেহফুজের জন্য কফি তৈরি করে নিজের জন্যও একটু চা তৈরি করল।
ভোরের শীতল মেঘলা আবহাওয়া সত্যিই ভীষণ নির্মল। মেহফুজ আমিনকে বলল, ‘ভোরে তো আরও একটা শট নিতে হবে, তাই না? আজকের আবহাওয়াটা কিন্তু বেশ। এক সাথে দুটো শট নিয়ে নিলে কেমন হয়?’
-‘মন্দ হয় না। এখন তারিন রাজি হলেই হয়। অবশ্য আপনি বললে রাজি হয়েও যেতে পারে।’ বলেই আমিন মিটিমিটি হাসল। মেহফুজ বাঁকা চোখে তার হাসিটা একবার দেখল, কিছু বলল না।
আজকের শ্যুটিং হবে ছাদে। তারা দাঁড়িয়ে আছে ছাদের চিলেকোঠার ঘরটার কাছে। খেয়াম একটু দেরি করেই ছাদে এল। নয়ন তাকে দেখে বলল, ‘এত সময় নাও কাজে? চটপটে না হলে তো থাকতে পারবে না।’
জবাবে খেয়াম কিছু বলল না। নিজের চায়ের জন্যই যে দেরি হয়েছে তা তো আর বলা যায় না। রাতে স্টুডিয়োতে থাকতে হয়েছে বলে খেয়াম তেমন পরিপাটি হওয়ার সুযোগ পায়নি। রাতটা সে ভীষণ ভয়ে মুখের হিজাব ওড়নাটাও খুলেনি। ভোর হতে সবাই জেগে উঠতেই খেয়াম ওয়াশরুমে গিয়ে বোরখা আর হিজাব খুুলে ফেলে। পুরো একটা রাত এভাবে থাকতে যেন দম বন্ধ হয়ে আসছিল তার। বোরখার নিচে অবশ্য সে সব সময়ই ভালো পরিচ্ছদে থাকে। এই অভ্যাসটা ছিল বিধায় তেমন ঝামেলাতে পড়তে হয়নি পোশাক নিয়ে। খোঁপা করা চুলটা আঁচড়ে বেঁধে মাথায় হালকাভাবে ওড়নাটা রেখে কাজে নেমেছে সে। শুধু মেহফুজের জন্য কফি করতে বললেও সে কফি দুজনের জন্য করে এনেছে। তা দেখে নয়ন তাকে বলল, ‘ভালোই করেছ। ইমরান স্যারের কথা বলতে তো ভুলেই গিয়েছিলাম।’
খেয়াম চুপচাপ কফি নিয়ে ইমরান আর মেহফুজের হাতে তুলে দিলো। তখন হঠাৎ করে নতুন কাউকে দেখে মেহফুজ একবার ক্ষণিকের জন্য তাকিয়েছিল তার দিকে। তারপর বোধ হয় তার পরিচয় আন্দাজ করতে পেরে আর তেমন দৃষ্টি দেয়নি তার ওপর। এর মাঝেই রোহান তৈরি হয়ে চলে এল। সে অনেকটা পুরোনোই এই অভিনয়ের মাঠে। কিন্তু কাজের প্রতি সে শুরুতেও যেমন কর্মঠ আর এখনও তেমনই। খেয়াম ফিরে যাওয়ার মুহূর্তে তার সাথে বেখেয়ালেই ধাক্কা খেলো। ‘ওহ! স্যরি স্যার।’ বলে পাশ কাটল সে। রোহান এর আগেও মেহফুজের সাথে কাজ করেছে। তাই এখানের লোকেদের চেহারা তার মোটামুটি ভালোই চেনা। নতুনও কিছু এসেছে কিছুদিনে। যার মধ্যে খেয়ামও একজন। কিন্তু ঠিক কারও প্রতিই সে একবারের জায়গায় দু’বার নজর ফিরিয়ে তাকিয়ে দেখেনি। তবে খেয়ামকে দেখে বেশ সময় নিয়েই সে চেয়ে ছিল তার দিকে। খেয়ামকে আপাদমস্তক দেখে রোহানের যেন মনে হলো, মেয়েটা হয়তো অনেকটা ভালো অবস্থাপূর্ণ কোনো পরিবারের মেয়ে। কারণ, খেয়াম নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এলেও পোশাকের ব্যাপারে সে বেশ রুচিসম্মত। আর নিজের প্রতিও সে বেশ যত্নশীল, চেহারার মাঝেও বেশ লাবণ্যতা তার। তাই তার চেহারা বা পোশাকে কোনো সাধারণ কর্মচারীর ছাপটা সহজেই ফুটে ওঠেনি অন্যদের মতো। এ কারণে রোহানের এক মুহূর্তের জন্যও সন্দেহ হয়েছিল এই ভেবে, ‘সে কি আদৌ এখানের কোনো ছোটো কর্মচারী?’
ঘণ্টাখানিক পরই শ্যুটিং শুরু হয়ে গেছে। শট দিচ্ছে তারিন আর রোহান।
-‘তুমি কি এভাবেই আমার ওপর অভিমান করে থাকবে?’
তারিন দাঁড়িয়ে আছে কার্নিশের গা ঘেঁষে। রোহানের প্রশ্নে তার দিকে ফিরে চেয়ে রইল কেমন নিষ্পলক চাউনিতে। রোহান তাকে জিজ্ঞেস করল, ‘আর কি ফিরে পাবো না তোমাকে আমি?’
তারিন কিঞ্চিৎ হাসল, ‘আমি তো চাইলেও আর কখনো তোমার থেকে দূরে থাকতে পারব না। ভালোবাসি তোমায়।’
রোহান খুব শক্ত করে তারিনকে জড়িয়ে ধরল তখন। চেহারাতে তার এক তৃপ্তির হাসি। তারিন তার কানে কানে বলল, ‘সুসংবাদ শুনলে মিষ্টিমুখ করতে হয়। একটা সুসংবাদ জানাব তোমাকে।’
রোহান তাকে ছেড়ে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘কী সুসংবাদ?’
তারিন একটু লজ্জা পেয়ে দৃষ্টি ঝুঁকিয়ে ফেলল, ‘আমরা দুই থেকে তিন হতে চলেছি।’ এ কথা শুনে রোহান আরও একবার জড়িয়ে ধরল তাকে। তারিন হাসিমাখা মুখে বলল, ‘মিষ্টিমুখ করবে না?’
-‘অবশ্যই। একটা মিনিট দাঁড়াও। আমি এক্ষুনি ঘর থেকে মিষ্টি আনছি।’
মিষ্টির পাত্রটা নিয়ে খেয়াম একটু দূরেই দাঁড়িয়ে ছিল। আমিন ইশারা করল তাকে পাত্রটা নিয়ে এগিয়ে আসতে। রোহানও তখন এগিয়ে আসছিল তার দিকে। দ্বিতীয়বারের মতো আবারও দুজন একে অপরের সাথে ধাক্কা খেয়ে বসল। মিষ্টির পাত্রটা খেয়ামের হাত থেকে পড়ে যেতেই মেহফুজ আর আমিন দুজনেরই সাংঘাতিক রাগ চড়ে গেল। একটা পারফেক্ট শট চলছিল। তার মাঝে এমন অসাবধানবশত কাজগুলোর জন্য শটের দেরি হয়ে গেল বিধায় মেহফুজ ধমক দিয়ে উঠল খেয়ামের ওপর, ‘এই মেয়ে! তুমি কি চোখে দেখে কাজ করো না? প্রতিটা শটেই একটা না একটা ঝামেলা করো!’
-‘এসব আসে কীভাবে এখানে? কাজকর্ম জানা লাগে না? একদম বের করে দেবো!’ আমিন চেঁচিয়ে উঠল।
খেয়াম আজও চুপ রইল। ভাঙা পাত্র আর পড়ে যাওয়া মিষ্টি তুলে চলে এল সে। নিচে আসার পর আর ছাদে যায়নি। এদিকে ক্ষুধায় তার পেটের অবস্থা করুণ। শুধু শ্যুটিং শেষ হওয়ার অপেক্ষাতে আছে সে।
প্রথম শটের পর আরও একটা শট নিয়ে নিলো মেহফুজ। শট নেওয়া শেষ হতেই খেয়াম সবার সাথে হাত লাগিয়ে সেটের কাজ শেষ করে বেরিয়ে পড়ার জন্য প্রস্তুতি নিলো। সকাল তখন ন’টা বাজে। আর শ্যুটিং শুরু হয়েছিল ভোর পাঁচটায়।
শ্রাবণ মাসের বৃষ্টির থামার কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই। কাজ শেষে স্টুডিয়ো থেকে যে যার মতো বেরিয়ে পড়ল। খেয়ামও আর দাঁড়িয়ে থাকল না। স্টুডিয়ো থেকে বের হতেই দেখল গাড়ির কাছে মেহফুজ এগিয়ে আসছে। আর তার মাথায় ছাতা ধরে নয়ন পিছু পিছু দৌড়াচ্ছে। খেয়ামের কাছে কোনো ছাতা ছিল না। সে বৃষ্টিতে ভিজেপুরেই যাবে ভেবেছিল। বৃষ্টিতে যেহেতু ভিজতেই হবে তাই মেহফুজের গাড়ির সামনে এসে একটু সময় অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিলো। গাড়ির সামনে এসে দাঁড়াতেই সেই প্রথম দিনের ঝামেলা করা ড্রাইভারকে সে গাড়িতে আবিষ্কার করল। তাকে দেখে খেয়ামের রাগ আরও বেশি করে জেগে উঠল যেন। আজকের পর তার এখানে কাজ থাকবে কি থাকবে না তা সে জানে না। তবে সে যা ভেবে রেখেছে তা সে এ মুহূর্তে করবেই।
মেহফুজ একটু দূর থেকেই খেয়াল করল খেয়ামকে। তার গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ভিজছে মেয়েটা। নয়নকে জিজ্ঞেস করল, ‘মেয়েটি কি আমার গাড়িতে লিফ্ট চাওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছে?’
নয়ন সেদিকে দেখে একটু ভ্রু কুঁচকাল, ‘আপনার পরিচিত বলে হয়তো তা চাইতেও পারে। যেভাবে দাঁড়িয়ে আছে মনে তো হচ্ছে আপনার জন্যই অপেক্ষা করছে।’
মেহফুজ তার গম্ভীর অভিব্যক্তি নিয়ে গাড়ির সামনে এসে দাঁড়াল। খেয়ামের দিকে তাকাল পরিপূর্ণ নজরে। নয়ন খেয়ামকে জিজ্ঞেস করল, ‘কোনো প্রয়োজন তোমার?’
বেশ ভালোভাবেই ভিজে গেছে খেয়াম। মেহফুজ খেয়াল করল ঠান্ডাতে হালকা কাঁপছেও সে। খেয়াম জবাব দিলো, ‘প্রয়োজন। তবে আপনার সাথে নয়।’ বলেই সে মেহফুজের দিকে তাকাল। আজ আবারও সে আবিষ্কার করল, মেহফুজ তার থেকে বেকায়দা লম্বা। বোধ হয় তার সামনে ঠিকঠাক দাঁড়ালে মেহফুজের বুকে গিয়ে তার মাথা ঠেকবে। এই ব্যাপারটা ভাবতেই তার কেন যেন প্রচণ্ড বিরক্ত বোধ হলো। আর বিরক্তির সাথে তার চাপা রাগটাও মিশে গেল। মেহফুজকে কোনো সম্বোধন ছাড়াই সে বলল, ‘ক্যামেরাম্যান হলে তো ভুল ঠিক সব চোখে পড়ার কথা। তাহলে সেদিন যে তারিন ম্যাম খাবারের পাত্র এগিয়ে আনার সময় ভুলবশত মাখনের পাত্রটা নিজেই এগিয়ে এনে রেখেছিল হাতের কাছে, সেটা চোখে পড়েনি? তারপর মাখনের পাত্রটা নাকের ডগায় থাকার পরও তার উদাসীনতার কারণে চোখে দেখল না, চায়ের ট্রেতে যে সে নিজেই ভুল করে নুনের পাত্র রেখে দিয়েছিল, এসব কিছুই আপনার ক্যামেরাতে ধরা পড়েনি? আমরা ছোটোখাটো কর্মী বলেই সব ভুল আর দোষের দায়ভার আমাদের ঘাড়ে চাপাতে হবে? তাদের ওপরের রাগ আমাদের ওপর ঝারতে হবে? আর আজও যে রোহান স্যার নিজেই এগিয়ে এসে ধাক্কা খেল তার জন্যও আমাকেই কথা শুনিয়ে দিলেন। ছোটো কাজ করি বলে কি সেল্ফ রেসপেক্ট আমাদের নেই? হ্যাঁ, জানি। এর পরের দিন এলে কাজ হয়তো এখানে আর জুটবে না আমার। কিন্তু এমন কুকুরদের মতো করে কর্মচারীদের ট্রিট করাটা একেবারেই ভালো নয়, বুঝলেন?’
কথাগুলো শেষ করে মেহফুজকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই খেয়াম চলে যায়। মেহফুজ তার যাওয়ার দিকে হয়তো মিনিটখানিকের মতো কপাল কুঁচকে চেয়ে স্থির দাঁড়িয়েছিল। তারপর সে গাড়িতে উঠে বসলেও নয়ন হাঁ হয়েই খেয়ামের যাওয়ার দিকে চেয়ে ছিল। এমন ছোটোখাটো কর্মচারীদের এমন অভাবনীয় ব্যবহার সে আজও অবধি দেখেনি। কাজটা ছেড়ে দেবে বলেই মেয়েটা এমন স্পর্ধাজনক কথা শুনিয়ে বিদায় নিলো! বেশ অবাক হলো নয়ন, খেয়ামের এই আচরণে।
***
চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরে লোক নিয়োগ নিচ্ছে। পত্রিকাতে চাকরির এই বিজ্ঞপ্তি দেখে খেয়ামের মুহূর্তেই মেজাজ চড়ে গেল। এসএসসি, এইচএসসি, সকল যোগ্যতারই পদ রয়েছে সেখানে। মেহফুজ চাইলেই সেখানে একটা কাজের ব্যবস্থা করে দিতে পারত তাকে। কিন্তু সমস্যাও আছে আবার এসব কাজে। প্রথমত, তার কম্পিটার কোর্সের কোনো সার্টিফিকেট নেই। ভেবেছিল পরীক্ষার পর শিখে নেবে কম্পিউটার কোর্সটা। কিন্তু তার আগেই তো পরিবারের ওপর ঝড় নেমে এল। কিছু কিছু পদ আবার ছেলেদের জন্যই। এসব পদে মেয়েদের একেবারেই যায় না। তবুও খেয়ামের রাগ চড়ে থাকল মেহফুজের ওপর। সেদিন মুখের ওপর বলে বসেছিল তার কাছে এইচএসসি পাসে কোনো চাকরি নেই নাকি। তাহলে এসব কী? সে মেয়ে বলেই এমন তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছে লোকটা! কাজটা সে মোটেও ভালো করেনি। নিজে অনেক উঁচু পর্যায়ে আছে বলে স্বজনপ্রীতি থাকবে না তার মাঝে একটুও? এত বেশি অহংকার নিয়ে চলে সে? বাবার মুখে শুনেছিল, লোকটার বাবা আশহাব মানুষটা খুবই নরম মনের। কিন্তু তার ছেলের এমন হামবড়া স্বভাব কেন হয়েছে? বড্ড ভুল করে এসেছে সে। সেদিন সুযোগ বুঝে আরও দুচারটা কথা শুনিয়ে দিয়ে আসলে বেশ হতো।
শ্যুটিঙের পরবর্তী তারিখগুলোতে সে আর যায়নি কাজে। প্রায় দুদিন কাজ বাদ দিয়েছে সে। ওই জায়গায় প্রতিনিয়ত এমন ছোটো হয়ে কাজ করা তার পক্ষে একদমই অসম্ভব লাগছিল। সহ্য করতে না পেরে কখন কার মুখের ওপর আবার কথা শুনিয়ে দেবে তার কোনো ঠিক ঠিকানা নেই। এ কারণেই কাজ ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তই ভেতরে পুষে রেখেছিল। কিন্তু হঠাৎ তার খেয়াল হলো, সে তো এসেছেই এই শহরে কাজের জন্য। নয়তো সে চলবে কী করে? তার বাবার হাতের অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে তাকে ঢাকায় রেখে পড়ানোর সামর্থ্যটুকু তার নেই। এদিকে বাবার স্বপ্নও ছিল, মেয়ে ভালো কোনো পাবলিক ভার্সিটিতে পড়বে।
খেয়াম ছাত্রী হিসেবে খুবই ভালো। বাবা আশা রাখেন, তার মেয়ে নিশ্চয়ই কোনো ভালো ভার্সিটিতে চান্স পেয়ে যাবে। এ আশাতেই তো তাকে ঢাকা রেখে যাওয়ার সাহস করেছেন তিনি। আর এও ভেবেছেন খেয়ামের কথা শোনার পর থেকে, একটা কোনো কাজের পাশাপাশিই মেয়েটা তার পড়াশোনা সচল রাখবে। পড়াশোনার অর্ধেক খরচটা অন্তত সে বহন করতে পারবে তাতে। কিন্তু এই মুহূর্তে কাজটা হাতছাড়া হয়ে গেলে কী করবে সে? আর হাতছাড়া তো প্রায় হয়েই গেছে। এখন তার ফরিদপুর ফিরে যাওয়া ছাড়া আর তো কোনো উপায় রইল না। পড়াশোনার স্বপ্ন তো সেও দেখে। পরিবারটাকে আর্থিক সহযোগিতা করার জন্যই তো এখানে আসা। তবে কি সেখানেই তার ফিরে যাওয়া উচিত? আর ফিরে গেলেই কি সে কাজটা আর ফিরে পাবে? উফ্! রাগের মাথায় কী ভুলটাই না করে এসেছে সে! এখন এই বিপদ থেকে কে-ই বা তাকে উদ্ধার করবে?
চলবে।
***