#এমনই_শ্রাবণ_ছিল_সেদিন
#ইসরাত_জাহান_দ্যুতি
১১.
টিএসসির মোড়ে রাজু ভাস্কর্যের আশপাশে সব জায়গায় লোকে লোকারণ্য। সবাই শ্যুটিং দেখতে দাঁড়িয়ে পড়েছে। বামপাশের বটতলায় ভাপা পিঠা বিক্রি হয়। সেখানেই আজকের শ্যুটিংটা চলছে। আজকে শট আমিন নিচ্ছে। মেহফুজ চুপচাপ পাশে বসে আছে শুধু। আর মাত্র পাঁচটা মিনিট বাকি শট শেষ হতে।
গাড়ি থেকে কফির ওয়ানটাইম ইউজ মগগুলোতে খেয়াম প্রায় দশজনের জন্য কফি ঢালল। দায়িত্বটি ইব্রাহীমের ছিল। বেচারা শীতের মধ্যে জ্বর লাগিয়ে কাজ করতে এসেছে। তাই দায়িত্বটা খেয়াম নিয়ে কফির মগটা আগে তার হাতেই দিলো। এরপর চলল মেহফুজ আর অন্যান্য সহকারীর কাছে। মেহফুজ সামনে কলাকারদের অভিনয় দেখতে ব্যস্ত ছিল। খেয়াম হঠাৎ করেই কফির মগটা তার সামনে ধরতে সে বেশ তির্যক দৃষ্টিতে তাকাল আর বলল, ‘ডাক না দিয়ে মুখের ওপর মগ ধরা কী ধরনের কাজ?’
-‘মগটা দেওয়ার সময়ই তো ডেকেছিলাম।’ একটু অপরাধীর মতো মুখ করে বলল খেয়াম।
মেহফুজ কথা বাড়াল না। মগটা হাত থেকে নিয়ে নিলো চুপচাপ। খেয়াম বাকিদের কফি দেওয়া শেষ করে গাড়ির কাছে চলে এল। ততক্ষণে শট নেওয়া শেষ। আজ তরঙ্গের কোনো শিডিউল ছিল না। তাই আজ সেটে সে নেই। শট শেষ করে সবাই ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর মাঝে খেয়াম একটু ফ্রি। তাই সে হাঁটতে হাঁটতে একজন ভাপা পিঠা বিক্রেতার কাছে এল। এবার শীতে আর বাড়ি যাওয়া হয়নি। তাই আর মায়ের হাতের পিঠা খাওয়ার সুযোগও হয়নি। তবে কেনার সময় পড়ল এক মসিবতে। সেটের কয়েকজন তাকে পিঠা কিনতে দেখে মজা করে বলে উঠে পিঠা তাদেরও খাওয়াতে। তারা মজা করে বললেও খেয়াম প্রায় সবার জন্যই পিঠা কিনে আনে। গরম গরম ধোঁয়া তোলা ভাপা পিঠার লোভ আর কেউ সামলাতে পারে না। ইমরান দুটো নিয়ে একটি মেহফুজকে দেয়। মেহফুজ অনাগ্রহ দেখায়, ‘আমার ভালো লাগে না এগুলো। তোরা খা।’
ইমরান পিঠাতে কামড় বসাতে বসাতে বলে, ‘আরে ব্যাটা খাইয়া দ্যাখ। ভালোই লাগে।’
বলেই আবার মেহফুজের দিকে এগিয়ে ধরে। মেহফুজ অনাগ্রহের সাথেই হাতে নেয়। পাশেই দাঁড়িয়ে আছে খেয়াম। সে অবশ্য নিয়ে যাওয়ার জন্য কিনতে চেয়েছিল। কিন্তু তা আর সম্ভব হয়নি বলে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়েই সবার সঙ্গে খাচ্ছে। মেহফুজের ভাপা পিঠা মোটেও পছন্দের নয়। শেষ কবে খেয়েছে তাও তার মনে নেই। ইমরানকে দেখে একবার পাশে খেয়ামের দিকে তাকাল। কী মজার সঙ্গে খাচ্ছে তারা! প্রায় সবার কাছেই এই পিঠা খুব প্রিয়। তার কেন ভালো লাগে না সেটা সেও জানে না। সবার এই মজা নিয়ে খাওয়া দেখেই সেও এক কামড় দেয়। কিন্তু তা মুখে ঢোকা পর্যন্তই। গলা দিয়ে আর নামল না যেন। মুখের মধ্যে নিয়ে মুখটা বুঁজে গোল করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে সে। এটা খাওয়া তার পক্ষে জীবনেও সম্ভব নয়। মুখের অংশটুকু ফেলে দেওয়ার মুহূর্তেই সে দেখল দুটো বাচ্চা ছেলে খেয়ামের কাছে টাকা চাইছে খাওয়ার জন্য। খেয়াম পিঠা খেতে খেতে তাদের জিজ্ঞেস করে, ‘টাকা দিয়ে কী করবি?’
একজন উত্তর দেয়, ‘পিডা খামু।’
খেয়াম কথার মধ্যেই হঠাৎ মেহফুজের দিকে তাকাল। তার দিকেই তাকিয়ে আছে সে। পিঠাটা সে এমনভাবে ধরে দাঁড়িয়ে আছে যেন ফেলেই দেবে সে। খেয়াম তা বুঝতে পারল। আর সাথে সাথেই জিজ্ঞেস করল, ‘আপনি ওটা ফেলে দিচ্ছেন?’
মেহফুজ হ্যাঁ বলতে পারল না। বেশ লজ্জা লাগছে হঠাৎ। খেয়াম ইতোমধ্যে নিচে তাকিয়ে দেখে নিয়েছে মেহফুজের ফেলে দেওয়া অংশটুকু। তাই সে নিশ্চিত হয়েই জিজ্ঞেস করেছে। মেহফুজের চুপ থাকার বিষয়টাও খেয়াম বুঝতে পারল।
-‘ওটা আমাকে দিন। ফেলার প্রয়োজন নেই।’ তার মিষ্টি হাসিটা হেসে বলল।
মেহফুজ সেই হাসি মুখটা এক ঝলক দেখল। তারপর পিঠা তার হাতে তুলে দিয়ে নিজের গাড়ির কাছে এসে দাঁড়িয়ে নয়নের কাছে পানি চাইল। নয়নের পানি নিয়ে আসার সময়টুকুতে মেহফুজ ফিরে দেখল আবার খেয়ামকে।
বাচ্চাদুটো বলছে, ‘আফনে ট্যাহা দ্যান। কিইন্না খামু। খাওয়াতা খামু না।’
খেয়াম চোখ পাকিয়ে তাকাল ওদের দিকে, ‘আমি বলেছি তোদের এঁটো পিঠা দেবো? আর তোরা তো রাস্তায় ফেলে দেওয়া খাবারও খাস। এখন খুব শুচিবাইগিরি দেখাচ্ছিস, না? তোদের তো দরকার টাকা। সেটা তো জানি। আর টাকাটা তো তোদের কাছে রাখবি না। আমি তোদের টাকা দেবো না। পিঠা খাবি বলেছিস পিঠা খাওয়াব। খেলে খা, না খেলে ভাগ।’
-‘আইচ্ছা পিডা দ্যান। পিডা খামু।’
সেটা শুনে খেয়াম নিজের পিঠা দুটো দিয়ে দিলো ওদের। আর মেহফুজের একটু খাওয়া পিঠাটা সে ফেলল না। মেহফুজ পানির বোতলটা হাতে ধরে রেখে দেখল সেই অচিন্ত্য দৃশ্য। খেয়াম তার এঁটো করা পিঠাতে কামড় বসাচ্ছে আর খেতে খেতে গল্প করছে বাচ্চা দুটোর সাথে।
***
আষাঢ় শ্রাবণ মানে না তো মন,
ঝর ঝর ঝর ঝর ঝরেছে,
তোমাকে আমার মনে পড়েছে।
তোমাকে আমার মনে পড়েছে।।
সহসা বৃষ্টির ছাটে ঘুমটা ভেঙে গেল খেয়ামের। আর তারপর কানে পৌঁছল লতা মঙ্গেশকরের মিষ্টি গান ‘আষাঢ় শ্রাবণ মানে না তো মন।’ রাহি গাইছিল। গানটা মেয়েটা বরাবরই দারুণ করে। শ্রাবণের সকালটা এমন গানে শুরু হওয়াই মনটা আনন্দে হয়ে নাচতে চাইল তার।
শিয়রের জানালাটা খোলা। এ জন্যই বৃষ্টি বিন্দু বুঝি তার সঙ্গে দুষ্টুমিতে মত্ত হয়েছে। দুষ্টুমির বাহানায় যেন সে বলছে, “আলসে মেয়ে! দেখ পৃথিবীটা জেগে গেছে। তুই কেন পড়ে পড়ে ঘুমোচ্ছিস?”
ছাই রঙে ঢেকে গেছে আকাশের নীল সীমানা। মাঝে মাঝে জানালার পাশ দিয়ে শোনা যাচ্ছে রিকশার টুংটাং শব্দ। ঝুম বৃষ্টি চারপাশে। বৃষ্টির ঝমঝম আওয়াজ বিনা আর কোনো শব্দ নেই। বৃষ্টিতে চারপাশ নিশ্চুপ। ব্যস্ত শহরের কোলাহল নিশ্চুপ।
বিছানা গুছিয়ে নতুন বাসার ছোট্ট ব্যালকনিতে এসে দাঁড়াল খেয়াম। এই বর্ষণেও কর্মজীবী মানুষগুলো থেমে নেই। স্কুলব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে শিশুরাও নেমে গেছে পথে। মাথার ওপর নানা ঢঙের ছাতা মেলে চলছে তারা। পাশ থেকে গান গাওয়া সেই মিষ্টকণ্ঠী বলল, ‘শুভ শ্রাবণ সকাল।’ খেয়াম তা শুনে মিষ্টি করে হাসল, ‘বেশ বললি তো। শুভ শ্রাবণ সকাল।’
-‘নে, চা’টা ধর। আবার গরম করে নিয়ে এলাম।’
-‘এত কষ্ট করতে গেলি কেন?’ চায়ের কাপটা সে রাহির হাত থেকে তুলে নিতে নিতে শুধাল।
রাহি সেই প্রশ্নকে অবজ্ঞা করে বলল, ‘খিচুড়ি আর ইলিশ মাছ ভাজাও তৈরি। চটপট হাত-মুখ ধুয়ে নে।’
খুশিতে খেয়াম আত্মহারা, ‘কী বলিস দোস্ত! আজকের সকালটা এত এত দারুণ কেন? সকাল সকাল বর্ষণ, তোর গান, এরপর খিচুড়ি আর ইলিশ। উফ! আমি তো পাগল হয়ে যাব।’ রাহি হাসতে হাসতে ঘরে চলে গেল। ঘর থেকে বলল, ‘আচ্ছা শোন, আঙ্কেল ফোন করছিলেন আমাকে। বললেন তোর মেহফুজ সাহেবের বাসায় যাচ্ছেন। ওখান থেকে ফিরে এসে নাশতা করবেন আমাদের সঙ্গে।’ খেয়ামও ঘরে ফিরে এল, ‘ওহ্, আমাকে নিশ্চয়ই ফোন করছিল বাবা। না পেয়ে তাই তোকে করছে। কিন্তু এত সকাল সকাল গেল কেন?’
-‘আমি জিজ্ঞেস করছিলাম এ কথা। বললেন তোর গুরুগম্ভীর সাহেব সকালেই যেতে বলছেন।’
চা’টা শেষ করে খেয়াম ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ল। পরীক্ষা শেষে দেশের বাড়ি চলে গিয়েছিল সে। মাস দুই পর ফিরে রাহিকে সঙ্গে করে মিরপুর দশের দিকে এসে এক রুমের একটি বাসা খুঁজে নিয়েছে। জায়গাটা যানজটপূর্ণ হলেও রাহির বুদ্ধিতেই এদিকে আসা।
-‘এত সকাল সকাল এমন নামিদামি মানুষদের ঘুম ভাঙে?’
খেয়ামের প্রশ্নটা শুনে রাহি ফোনের স্ক্রিন থেকে নজর উঠাল। তারপর বলল, ‘হেলথ কনশিয়াস হলে অবশ্যই সকাল সকাল ঘুম থেকে জাগবে। আর তোর সাহেবকে দেখে তো মনে হলো তিনি খুবই স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ। ওনার ফিটনেস দেখিসনি?’
-‘তুই তখন থেকে আমার সাহেব আমার সাহেব করতেছিস ক্যান? ব্যাটার স্বাস্থ্যের দিকে জীবনে একবারই ভুল করে তাকাইছিলাম। এরপর আর সাধ জাগে নাই। তোর মতো অত বেহায়া নজরে দেখি নাই।’
কাটকাটভাবে বলল খেয়াম। এরপর রান্নাঘরের দিকে এগোলো সে। রাহি হাসল ভীষণ। তাকে হাসতে দেখে খেয়াম আবার কটমট চোখে তাকায়।
***
প্রথমবার আরিফ বন্ধুর বাড়িতে এসে উপরের ঘরটাতে এলেন। মেহফুজ তাকে আজ নিজের ঘরের ব্যালকনিতে বসতে দিয়েছে। সামনের টি-টেবিলটাতে এক মগ ধোঁয়া তোলা কফি। পাশেই গোছানো ভাঁজে পড়ে আছে ‘প্রথমআলো’ পত্রিকা। আর আকাশজুড়ে এখন কালো মেঘের ঘনঘটা। গুচ্ছ গুচ্ছ মেঘ ঘুরে বেড়াচ্ছে। মৃদুমন্দ বাতাসের মাঝে টিপটিপ করে গুঁড়ি পড়ছে।
বেশ মুগ্ধ হলেন আরিফ। সামান্য ব্যালকনিটাও কী সুন্দর যত্নে সাজানো। মেহফুজের সাথে যতবার ফোনে কথা বলেছেন ততবারই মুগ্ধ হয়েছেন তিনি। ভয় বুকে নিয়ে ফোনটা করতেন। ভাবতেন এত বড়ো মাপের মানুষ তার ফোনটা কি রিসিভ করবে? আর রিসিভ করলেও নিশ্চয়ই বিরক্ত হবে! কিন্তু সে সব ভাবনা বারবারই বদলেছে তার। কী অমায়িক সুরে কথা বলে ছেলেটা! ফোন করলে সালামটাও দিতে ভোলে না। আর কাল রাতে ফোন করতেই সে খুব সকালে এসে দেখা করতে বলল নিজের বাড়িতে। আসার পর তিনি ভাবেননি এভাবে মেহফুজের থেকে আতিথেয়তা পাবেন। প্রাণভরে দোয়া করলেন তার জন্য। কফির দিকে খেয়ালই নেই আরিফের। ব্যালকনির সৌন্দর্য আর সামনে লনের সৌন্দর্যটুকু দেখছেন বিমোহিত নয়নে। কত যত্নে গড়া সবটা!
-‘আঙ্কেল দাঁড়িয়েছেন যে? কফিটা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে তো।’
-‘আমি দেখছিলাম তোমাদের এত সুন্দর সাজানো-গোছানো বাড়িটা।’
আরিফ যখন আসেন তখন মেহফুজ বাথরুমে ছিল। গোসল শেষ হওয়া মাত্রই এসে দাঁড়াল সে। মৃদু হেসে আরিফকে প্রস্তাব জানাল, ‘নিচে চলুন নাস্তা করে নিই। তারপর ধীরে-সুস্থে কথা বলা যাবে।’ এ প্রস্তাবে আরিফ একটু বিব্রত হয়ে পড়লেন, ‘আরে না না। তুমি করে এসো। আমি অপেক্ষা করছি, সমস্যা নেই।’
-‘আমি নাশতা করব আর আপনি বসে থাকবেন? এটা কী করে হয়? আসুন প্লিজ। আর না করবেন না। মা অপেক্ষা করছেন আমাদের জন্য।’
নীহার ছেলের আবদারে খিচুড়ি রান্না করেছেন। সঙ্গে ইলিশ মাছ ভাজা, বেগুন ভাজা, ডিমের অমলেট আর জলপাইয়ের চাটনি। নাশতা টেবিলে সাজিয়ে তিনি মুনকে ডাকতে গেছেন। মেহফুজ নিচে আসতেই কাজের মেয়েটি চেয়ার টেনে দিলো। আরিফ বসলেন তার সঙ্গে। তার মধ্যেই নীহার নেমে এলেন।
-‘অনেক খুশি হলাম ভাই। আমিই আপনাকে ডাকতে চেয়েছিলাম। আসার পর তো তেমন করে আপনার যত্ন নিতে পারিনি। আজ একটু মুখে তুলুন আমাদের বাড়ির অন্ন।’ বলে নীহার মেহফুজের সামনের চেয়ারটা টেনে বসলেন।
আরিফ হালকা হাসলেন, ‘মেহফুজের কথায় আর না বসে পারলাম না।’
-‘বেশ করেছেন। সত্যিই অনেক খুশি হয়েছি।’
নাশতা শেষে মেহফুজ আরিফকে নিয়ে বেরিয়ে গেলেন। গাড়িতে যেতে যেতে কথা আরম্ভ করল তারা।
-‘আসলে আজকের শট ঢাকার বাইরে হবে তো তাই দ্রুতই আসতে বলেছি আপনাকে। আমি আপনাকে পৌঁছে দিয়ে তারপর স্টুডিয়োতে যাব।’
-‘এত কষ্ট করতে হবে না বাবা। আমাকে সামনেই নামিয়ে দিয়ো।’
-‘এই বৃষ্টিতে আর কষ্ট করতে হবে না আঙ্কেল। কী যেন বলতে চেয়েছিলেন?’
-‘হ্যাঁ, খেয়ামের কাজের ব্যাপারেই কথা বলার ছিল।’
-‘আচ্ছা। আপনার সঙ্গে লাস্ট যখন কথা হয়েছিল তখন বলেছিলেন সামনে ওর পরীক্ষা। এর জন্য আপাতত কাজ করতে পারবে না ও।’
-‘হ্যাঁ। পরীক্ষার পর তো বাড়িতে গিয়ে থেকেছে দুমাস। এরপর ঢাকায় ফিরেছে। কিন্তু তোমার কাজের কোনো শিডিউল ছিল না বলে আর যোগাযোগ করেনি তোমার সাথে।’
-‘এক সপ্তাহ হলো আমার কাজ শুরু হয়েছে আবার। ও কি এখন কাজে আসতে চায়?’
-‘আসলে ও একটু খামখেয়ালি ধরনের। এ জন্য তোমার সাথে যোগাযোগ করেনি। তোমার যদি আপত্তি না থাকে তাহলে ওকে কি কাজে নেওয়া সম্ভব?’
-‘এই ব্যাপারটা ও নিজেই যোগাযোগ করে আমাকে কিংবা আমার ব্যক্তিগত সহকারীকে জানাতে পারত। আপনাকে এত কষ্ট করে কেন পাঠিয়েছে? আপনারা আমার পূর্ব পরিচিত মানুষ। আপনাদের একটু সাহায্য করতে পারলে আমার ভালোই লাগে। এতে আপত্তি থাকার কিছু নেই।’
-‘ও ভেবেছিল এভাবে কাজ করাটা কেউ মেনে নেবে না। তুমি হয়তো রাজি হবে না। তাই যোগাযোগ করেনি।’
এ পর্যায়ে মেহফুজ খানিকটা বিরক্ত হলো খেয়ামের ওপর। সে চেয়েছিল পরীক্ষা শেষ করেই খেয়াম কাজে ফিরুক। বলতে নেই, সে একাকী সময়গুলোতে কখনো কখনো ভেবেছে তাকে নিয়ে। অপেক্ষা করেছে তার ফোন আসার। যখন দুমাস, তিনমাস করে চার-পাঁচ মাস কেটে গেল সে ধরেই নিয়েছিল খেয়াম আর ফিরবে না। অথচ, সে খেয়ামকে আশ্বস্ত করেছিল তার পড়াশোনার জন্য যখন প্রয়োজন আর যতদিন প্রয়োজন ছুটি নিতে পারবে। এরপরও মেয়েটির এমন চিন্তাভাবনা জন্য তার প্রতি ধীরে ধীরে মেজাজ খারাপের সৃষ্টি হলো মেহফুজের।
-‘আপনি ওকে বলবেন নয়নকে কল করে যেন আমার শিডিউলগুলো জেনে নেয়।’
***
‘অন্তিম পর্ব’
অনলাইনের জন্য এটাই অন্তিম পর্ব। এই উপন্যাসের আর কোনো পর্ব প্রকাশিত হবে না পেইজে৷ কোনো ই-বইও করা হবে না। পড়তে চাইলে বই সংগ্রহ করে পড়তে হবে পাঠককে। বইটি স্বপ্নবাড়ি বুকশপ সহ অনলাইন যে কোনো বুকশপ থেকে নিতে পারেন।
***