#copyrightalert❌🚫
#এক_শহর_প্রেম_২
লেখিকা: #নুরুন্নাহার_তিথী
#পর্ব_৩৫
“আমারে খালি এইডা ক, তুই আমারে বিয়া করতে রাজি হইলি না কেন? তুই জানোস, তোর সাথে এহন কী হইব?”
আদিরা নিরব। ভেতরে ভেতরে দোয়াদুরুদ পড়ছে অনবরত। দেলোয়ার কয়েক সেকেন্ড অপেক্ষা করে উত্তর না পেয়ে আবার বলে,
“ওই মারসাদরে তো কিছু কইতা না। আমারে দেখলেই তোমার গাত্রে আ*গু*ন ধইরা উঠে! কেন? ওয়ও তো তোমারে পথেঘাটে পিছে পিছে ঘুরে। ওরে তো কিছু কও না। সব খালি আমার সময় কেন? ওই মারসাদ বড়োলোক আর শিক্ষিত দেইখা? আর আমি গরীব, বকলম দেইখা? তোমার বাপের অবস্থাও শুনছি তেমন ভালা না। তাইলে কি তুমি লোভে পইরা ওই মারসাদরে পটানোর চেষ্টা করতেছ? তুমি তো একটা লো*ভী! ”
আদিরা এবারও চুপ। দেলোয়ার ঘর কাঁপিয়ে হেসে ব্যা*ঙ্গ করে বলে,
“মাইনষে ঠিকই কয়, পয়সা থাকলে মাইয়ারা ভালোবাসা দেখে না।”
আদিরা দাঁতে দাঁত চেপে এতক্ষণ শুনেছে। এবার সে চিৎকার করে বলে উঠে,
“তোর ওই নোং*রা মুখে আর একটা কথাও বলবি না। মারসাদ তোর মতো ব*খাটে না। সে আমার ব্যাপারে কখোনো খারাপ ইনটেনশন রাখেনি। এটাই পার্থক্য আমি তোকে ঘৃণা করি আর মারসাদকে ভালোবাসি।”
দেলোয়ার এবার আদিরার কাছে এসে আবার ওর গা*ল চে*পে ধরে। তারপর বলে,
“তুই মারসাদরে ভালোবাসোস? আমার ফুলকলি তুই। তুই আরেকজনরে কেমনে ভালোবাসতে পারোস? আমারে ভালোবাসবি তুই। আমারে।”
আদিরা তৎক্ষণাৎ একদলা থুথু আবার দেলোয়ারের দিকে ছুঁ*ড়ে ফেলল। দেলোয়ারকে রাগে আদিরাকে আরও একবার জোড়ে থা*প্প*র মা*র-লো। তারপর আদিরার পায়ের বাঁধন খুলতে শুরু করে।
——–
কাজি রাস্তা দেখিয়ে দিয়ে চলে গেছে। এখানে দুইটা পরিত্যাক্ত গুদাম ঘর। ওরা পু*লিশকে লোকেশন পাঠিয়ে দিয়েছে। তারপর দুই ভাগে দুটোতে যায়। আহনাফ ও মৃদুলকে সামনেরটাতে পাঠায়। আর মারসাদ ও রাফিন পেছনেরটাতে যায়। রবিন আগে থেকেই ভয়ে কাঁপছে বলে ও-কে পু*লিশের জন্য অপেক্ষা করতে বাইরে থাকতে বলে। সামনের গুদাম ঘরে আদিরা নেই তবে কয়েকজন ছেলে এখানে বসে ম*দ খেয়ে টাল হয়ে আছে। আহনাফ মৃদুলকে বলে,
“এদেরকে কিছু করার দরকার নেই। এগুলো এমনিই সেন্সে নেই। চল পেছনেরটাতে যাই।”
“চল। পেছনেরটাতেই থাকবে।”
মারসাদ ও রাফিন পেছনের গুদাম ঘরের কাছে যেতেই ভেতর থেকে নারী কণ্ঠের চিৎকার ও আকুতি শুনতে পায়। এটা যে আদিরা সেটা বুঝতে তাদের বাকি নেই। ওরা দুজন দ্রুত গুদাম ঘরটাতে ঢুকতে নিতেই ওদের উপর আ*ক্রমণ হলো। তিন জন আ-ক্র*মণ করলো। তিন জনের হাতেই ধা*রালো ছুঁ*ড়ি! তিনজনের আ*ক্রমণ থেকে বেঁচে কয়েটা লা*-থি, ঘু/ষি দিয়েছে। কিন্তু তাতে তো তারা কাবু হয়নি। তখনি আহনাফ ও মৃদুল এসে যোগ দেয়। আরও দুইজন এসে ওদেরকে আ*ক্রমণ করে। মারসাদ কোনোমতে আগে ভেতরে ঢুকে। দেলোয়ার মারসাদকে দেখে আদিরার হাত ছেড়ে দেয়। আদিরা তার জামার ছেঁ*ড়া হাতা দুই হাত দিয়ে চেপে ধরে কাঁদতে কাঁদতে পিছিয়ে যায়। দেলোয়ারের গো*প:না/-ঙ্গে ইচ্ছে মতো লা-:থি দিয়ে দেলোয়ারকে একদম প্রায় নিস্তেজ করে ফেলেছে। তারপর মারসাদ দ্রত ফ্লোর থেকে ওড়না উঠিয়ে আদিরার কাছে যায়। আদিরাকে ভালো করে ওড়না দিয়ে মু-ড়িয়ে দেয়। আদিরা অনবরত কাঁদছে। মারসাদ ওর সামনে বসে অস্থির হয়ে দেখছে কিন্তু তার গলা দিয়ে কোনো শব্দ বের হচ্ছে না। শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি তার স্বাভাবিকের তুলনায় দ্বিগুণ। আর একটু পর এলে কী হতো? এটা চিন্তা করতে গেলেই তার চিন্তাশক্তি সেখানেই থেমে যাচ্ছে। মারসাদ তার কাঁপা কাঁপা হাত বাড়ালে আদিরা আরও পেছানোর চেষ্টা করে দেয়ালের সাথে লেগে যায়। আরও জড়োসড়ো হয়ে বসে। মারসাদ হাত গুটিয়ে নেয়। সে বুঝতে পারছে আদিরার মানসিক অবস্থা।
তখনি দেলোয়ার আস্তে আস্তে উঠে। তারপর একটু আগে আদিরাকে যেই কাঠের চেয়ারটাতে বেঁধে রেখেছিল, সেটা উঠিয়ে মারসাদের মাথা ও পিঠে সজো*রে বা*ড়ি দেয়। মূহুর্তেই মাথায় হাত দিয়ে পেছনে ঘুরে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়ে মারসাদ। আদিরা তা দেখে মারসাদের নাম ধরে আর্তচিৎকার করে উঠে। এতক্ষণে পু*লিশও এসে পড়েছে। পু*লিশ গুদামের ভেতরে ঢুকছে। দেলোয়ার আদিরার দিকে এগুতে নিতেই পু*লিশ ভেতরে ঢুকে পড়ে। পু*লিশ দেলোয়ারকে আ*টক করে আর আদিরার অবস্থা দেখে লেডি কন*স্টবলকে ভেতরে ডাকে। মারসাদকে ধরে বাহিরে নিয়ে আসে।
—–
হসপিটালের করিডোরে পায়চারি করছে মারসাদের বন্ধুরা। মারসাদের মা*থা ফে*টেছে। আরেকটা কেবিনে মাহি, সাবিহা ও রিন্তি আদিরার পাশে বসে আছে। আদিরা খুব প্যানিক করছিল বলে ঘু*মের ই-নজেক*শন দিয়েছে, সাথে স্যালাইন চলছে। মাহি আদিরার বাম হাত ধরে নিষ্পলক চেয়ে আছে ওর মলিন মুখটার দিকে। তার দাভাইয়ের মা*থা ফে*টেছে, ব্লা*ড লস হয়েছে সেসব সে জানে। সেটা নিয়েও খুব দুশ্চিন্তা ও অস্থিরতায় আছে। তবে ডাক্তার বলেছে মা*থার আ*ঘা*ত তেমন গুরুতর না। ফে*টেছে কিছুটা। যদি লো*হার কোনো বস্তু দিয়ে আ*ঘা*ত করতো তবে আরও খারাপ অবস্থা হতো। দুই দিকের চিন্তায় মাহি এবার শব্দ করে কেঁদে ফেলল। সাবিহা ও রিন্তি ও-কে স্বান্ত্বনা দিচ্ছে কিন্তু ও শান্ত হতে পারছে না। আদিরার সাথে কী হতে চলেছিল তা আহনাফ তাকে বলেছে। একটা মেয়ের জন্য এটা কতো বড়ো মানসিক আ*ঘা*ত সেটা ভু*ক্তভুগীই ভালো বলতে পারবে।
ডাক্তার মারসাদের ট্রিটমেন্ট করে করিডোরে এসে বলেন,
“উনার আ*ঘা*ত গুরুতর না। হি ইজ লাকি। আমরা উনাকে রেস্টের জন্য সি*ডে*টিভ দিয়েছি। ঘুমাচ্ছে এখন। তবে উনাকে সাবধানে চলাফেরা করতে বলবেন। একই জায়গায় যেন আ*ঘা*ন না পায়।”
তারপে ডাক্তার চলে যায়। আহনাফ, মৃদুলরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়ে মাহিদের কাছে গিয়ে বলে। মাহিকে কাঁদতে দেখে আহনাফ ও-কে কেবিন থেকে বাহিরে নিয়ে আসে। তারপর ফ্রেশ এয়ারের জন্য হসপিটাল থেকে বাহিরে নিয়ে আসে।
——–
“এবারও ফ্লপ! শিট! মারসাদ কি আদিরার পেছনে গার্ড ঠিক করে রেখেছে নাকি? আর দেলোয়ার ওর মা*থায় বা*ড়ি দিলো তো দিলো কোনো লো*হার ভারী কিছু দিয়ে দিতো। তাহলেই না মারসাদের চাপ্টার ক্লোজ হয়ে যেত।”
“কিন্তু সাগর, এবার যে দেলোয়ারকে পু*লিশে ধরে নিয়ে গেছে। ও যদি পু*লিশকে বলে দেয়? তবে? তখন….”
সাগরও এই ভয়টা পাচ্ছে। সে নিলয়কে থামিয়ে বলে,
“চুপ কর! চুপ কর। দেলোয়ারের কাছে কোনো প্রুভ নেই। আর আমাদের কেউ তো ওখানে ছিল না। আমরা কাউকে হায়ারও করিনি। তাহলে আমরা ফাঁ*সব কীভাবে। কিছু করতে পারবে না আমাদের।”
“না হলেই তো ভালো। তারও সাবধানে থাকতে হবে।”
নিলয় সাগরের সাথে কথা বলতে বলতে তার নতুন নাম্বারে কল আসে। নিলয় ফোনের স্ক্রিণে রাত্রির নাম দেখে অবাক হয়। হঠাৎ রাত্রি তাকে কল করছে কেন? কাল তো সে রাত্রির নাম্বারে কতো কল করেছে কিন্তু কল ঢুকেনি। ব্লক করেছিল। তাহলে আজ রাত্রি নিজেই কল করছে? ব্যাপারটা ভাবাচ্ছে নিলয়কে। ভাবতে ভাবতেই কল কেটে যায়। সাগর বলে,
“ফোন ধরিস না কেন? কে ফোন করেছ?”
“কল সেন্টার থেকে।”
“ওহ।”
নিলয় রিংটোন সাইলেন্ট করতে না করতেই আবার কল আসে। নিলয় এবার বাইরে এসে কল রিসিভ করে।
চলবে ইন শা আল্লাহ,
ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন। কপি নিষিদ্ধ। রিচেক হয়নি।
#copyrightalert❌🚫
#এক_শহর_প্রেম_২
লেখিকা: #নুরুন্নাহার_তিথী
#পর্ব_৩৬
“তুমি কী বলেছিলে? তুমি আমাকে ভালোবাসো আর তোমার আমার ভালবাসার মাঝে আমাদের ফ্রেন্ডদের শত্রুতা আসবে না? সিরিয়াসলি? তোমরাই দেলোয়ারকে সেদিন সেভ করেছিলে না? আর তোমরা কাউকে সেভ করো, তাও কোনো ইনটেনশন ছাড়া! এটা আমাকে মানতে হবে?”
“রাত্রি, তুমি যা ভাবছো তা না। তুমি….”
রাত্রি নিলয়কে থামিয়ে দিলো। আর বলল,
“কী? আমি ভুল ভাবছি? তাও তোমাকে ও তোমাদের গ্রুপকে? পাঁচ বছর যাবৎ তোমাদের চিনি। ভুল ভাবার কোনো প্রশ্নই আসে না। তোমরাই দেলোয়ারকে দিয়ে এসব করিয়েছ। এখন মারসাদ ও আদিরা হসপিটালে ভর্তি। তোমাদের জন্য আমার ফ্রেন্ড হসপিটালে ভর্তি।”
“আমার কথা তো শোনো…”
“না। পুলিশ নিয়ে গেছে তো দেলোয়ারকে। তারপর সব বের হবে। ওয়েট এন্ড ওয়াচ।”
রাত্রি কল কেটে দিতেই নিলয় কল লাগায়। ফোন রিং হয় কিন্তু রিসিভ হয় না। এরপর আবার কল করলে কল ঢুকে না। তার মানে ব্লক করে দিয়েছে। নিলয় নিজের রাগ প্রকাশ করতে দেয়ালে ঘুষি দিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।
——-
পু*লিশ হসপিটালে এসে পরের দিন আদিরার বয়ান নিয়েছে। তারপর আহনাফ, মৃদুলদেরও বয়ান নিয়েছে। মারসাদের জ্ঞান ফিরেছে কিন্তু তাকে অভজার্ভেশনে রাখা হয়েছে। আদিরাকে রিলিজ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন সে সুমি, মৌমিদের সাথে হোস্টেলে আছে। এদিকে হসপিটালে মিসেস মীরা, মিস্টার আরশাদ খান, মিলি ও রাকিব এসেছে মারসাদকে দেখতে। মিসেস মীরা ছেলের কেবিনের বাইরে বসে কাঁদছেন। মিলি ও মাহি উনাকে স্বাত্বনা দিচ্ছে। মিস্টার আরশাদ পাশেই চিন্তিত হয়ে বসে আছেন।
কিছুক্ষণ পর হসপিটালে সামিরা আসলো। এসেই মাহিকে সরিয়ে মিসেস মীরাকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করলো। মাহি বোকার মতো সামিরাকে দেখছে। সামিরা বলতে শুরু করলো,
“এসব ওই মেয়েটার জন্য হয়েছে, আন্টি। ওই মেয়েটাকে বাঁচাতে গিয়ে মারসাদ আজকে হসপিটালে। এর আগেও ওই মেয়ের জন্যই মারসাদ অনেক চোট পেয়েছে।”
মিসেস মীরা ও মিস্টার আরশাদ খান সামিরার কথা শুনে চুপ করে রইলেন। কিন্তু মাহি চুপ করে থাকতে পারলো না। সে বলে উঠলো,
“ননসেন্স কথাবার্তা বলবে না, সামিরা আপু। আদিরা কিছু করেনি।”
“আমি মোটেও ননসেন্স কথাবার্তা বলছি না, মাহি। তোমার ভাইয়া আদিরাকে বাঁচাতে গিয়েই তো আজ এই হাল।”
“একটা মেয়েকে গু*ন্ডারা তুলে নিয়ে গিয়েছে, সেটা জানার পরও দাভাই চুপ করে থাকবে? আর তুমি এখন এসব বলে কি প্রমাণ করতে চাইছ?”
“তুমি সবসময় বেশি বুঝো, মাহি! নিজের ভাইয়ের থেকে তোমার কাছে আদিরা ইম্পরট্যান্ট?”
“অফকোর্স নট। বাট অ্যাই অ্যাম নট ব্লা*ইন্ড!”
সামিরা কিছু বলতে নিবে, তার আগেই মিলি বলে,
“থামো তোমরা। এটা হসপিটাল। এখানে অহেতুক ঝ*গড়া করো না। ডাক্তার বলেছে ভাই ঠিক হয়ে যাবে।”
মিস্টার আরশাদ খান চেয়াে ছেড়ে উঠতে উঠতে বলেন,
“সে ঠিক হলে এর একটা পার্মানেন্ট সলিউশন করতে হবে।”
মিস্টার আরশাদ এরপর অন্যদিকে যান। সামিরা মাহির দিকে চেয়ে বিজয়ী হাসে। মাহি বুঝতে পারছে না, তার বাবা কী করতে চলেছেন। চিন্তায় সে কিছুটা দূরে গিয়ে আহনাফকে কল লাগায়। আহনাফ কল রিসিভ করতেই মাহি বলে,
“সামিরা আপু এসে ভে*জাল লাগিয়ে দিয়েছে।”
“কী করেছে?”
“আদিরার এগেইনস্টে উ*সকে দিচ্ছে। ভাল্লাগে এসব আর! দাভাই তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে গেলে বুঝা যাবে।”
আহনাফও চিন্তায় পড়ে গেছে। এতো কিছুর মধ্যে এই সামিরাকে আবার কেন হাজির হতে হলো! এমনিতে ঝামেলা কি কম ছিল? আহনাফ লম্বা করে একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে,
“মারসাদ সুস্থ না হওয়া অবধি আমরা কিছু বলতে পারছি না।”
মাহি এবার কিছুটা ইতস্তত করে বলে,
“কালকে আদু স্বিকার করেছে। ও দাভাইকে ভালোবাসে। এতোদিন পর সব ঠিক হওয়ার পথে আর এখনি এসব! মা-বাবা যে কিভাবে জানলো দাভাই হসপিটালে! আমার কেন যেন সন্দেহ হচ্ছে, সামিরা আপুই জানিয়েছে।”
“আমারও তাই মনে হচ্ছে। তবে আঙ্কেল-আন্টিকে আমরা বিষয়টা না জানিয়েও থাকতে পারতাম না।”
“ভার্সিটির মিটিং শেষ হয়েছে? সাগর ভাইয়াদের গ্রুপ কোনো ঝামেলা করেছে আবার?”
“ওরা মারসাদের পদত্যাগ চাচ্ছে। ওরা বলছে মারসাদ ভিপি হওয়ার যোগ্য না। ক্যাম্পাসে মারসাদকে এখন খুব একটা দেখাও যায় না।”
“আপনি সব সামলে নিয়েছেন না?”
“হু। হসপিটালে আসছি আমি।”
“আচ্ছা।”
আদিরা জানালার ধার ঘেষে বসে আছে। সুমি ওর পাশে বসে কাঁধে হাত রাখলো। চমকে উঠে ঘুরে তাকালো আদিরা। সুমিকে দেখে আবার জানালা দিয়ে বাইরে তাকালো।
“খেয়ে নাও কিছু। সকালেও খাওনি। এখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল।”
“খিদে নেই।”
“না খেলে উইক হয়ে পড়বে।”
“কিছু হবে না আমার।”
সুমি হতাশ হয়ে উঠে যায়। তারপর মৌমিকে গিয়ে বলে,
“মারসাদের খবর কী? ডাক্তার বলেছে অভজার্ভেশনে রাখবে। আরও দুই দিন রাখতে পারে।”
“ওই দেলোয়ারের থেকে কিছু জানতে পেরেছে?”
“আশিক তো বলল, কাল রি*মা*ন্ডে নিবে।”
“এবার সাগর পার পাবে না।”
দেলোয়ারের নামে এটেম্পট টু মা*র্ডার কে*স, কি*ডন্যা*পিং ও এটেম্পট টু রে*প কে*স হয়েছে।
দেলোয়ারকে রিমা*ন্ডে নেওয়া হয়েছে। সে মা*রের চো*টে সব উগলে দিয়েছে। সেখানে সাগর, রুহুল আমিনের নাম এসেছে। রুহুল আমিন যে দেলোয়ারকে গাড়ি ও নিজের লোক দিয়ে সাহায্য করেছে সেটাও বলে। সাগরকে পু*লিশ খুঁজছে। এদিকে সাগর ভয়ে চট্টগ্রাম ছেড়ে তার বাড়িতে চলে গেছে। সাগরকে না পেয়ে পু*লিশ ওর বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গেছে।
নিলয় ও বাকিদের থেকে রুহুল আমিনের ব্যাপারে ডিটেইলসে জানে। এটাও জানতে পারে, রুহুল আমিন আসলে মারসাদের পেছনে। তাই মারসাদকে পথ থেকে সরাতে সে দেলোয়ারকে আদিরার কি*ডন্যাপিংয়ে সাহায্য করেছে। নিলয় এটাও বলেছে, রুহুল আমিন তাদের গ্রুপের সাথে মারসাদদের গ্রুপের শ*ত্রুতা জেনে তাদেরকে এপ্রোচ করেছে।
এবার পুলিশ রুহুল আমিনকে খুঁজতে কুমিল্লার থানাতে যোগাযোগ করে।
——-
দুই দিন পর মারসাদকে হসপিটাল থেকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে। তারপর মারসাদকে ওর বাবা ও বন্ধুরা মিলে চট্টগ্রামের ফ্লাটে নিয়ে আসে। মিসেস মীরা ছেলের জন্য স্যুপ বানিয়ে রেখেছেন। মারসাদ ফ্রেশ হয়ে বিছানায় গা এলিয়ে বসতেই মিসেস মীরা ছেলেকে খাওয়াচ্ছেন। তখন মিস্টার আরশাদ খান এসে বলেন,
“সামনের মাসে তোমার ও সামিরার এনগেজমেন্ট।”
খাওয়া থেমে যায় মারসাদের। মাহি, আহনাফ, মৃদুল, রাফিন ও রবিন সবাই অবাক হয়ে মিস্টার আরশাদের দিকে চেয়ে আছে। মিস্টার আরশাদ আরও বলেন,
“আমি চেয়েছিলাম নেক্সট উইকে এনগেজমেন্ট করতে। কিন্তু সামিরার বাবাকে নেক্সট উইকে দেশের বাহিরে যেতে হবে। আমারও পরবর্তী দুই উইকে ব্যস্ততা আছে।”
“আমাকে না জানিয়ে তুমি এনগেজমেন্ট কীভাবে ঠিক করতে পারো, বাবা?”
“তোমার বাবা তাই। তোমার ভালো খারাপ দেখার দায়িত্ব আমার।”
মারসাদ হাতের মুঠ ক্রমশ শক্ত করছে। মৃদুল ও রাফিন মারসাদের দুই পাশে বসে ক্ষীণ স্বরে ও-কে শান্ত হতে বলছে। মারসাদ শক্ত কণ্ঠে বলে উঠে,
“আমি সামিরার সাথে এনগেজমেন্ট করব না।”
“কেন করবে না? কারণ কী?”
মিস্টার আরশাদের কণ্ঠে রাগের আভাস। মারসাদ উত্তরে বলে,
“আমি সামিরাকে ভালোবাসি না।”
“বিয়ের পর ভালোবাসা হয়ে যাবে।”
“না।”
“কেন? ওই আদিরা মেয়েটার জন্য?”
মারসাদ এবার তার বাবার দিকে তীক্ষ্ম দৃষ্টি নিক্ষেপ করে। মিস্টার আরশাদও ছেলের চোখের দিকে চেয়ে আছেন। মারসাদ নিজের দৃষ্টি সরিয়ে কাটকাট শব্দে বলে,
“না। আদিরা আমার জীবনে না আসলেও আমি সামিরাকে বিয়ে করব না।”
“তুমি বিয়ে করবে। ওই আদিরার জন্য নিজের জীবন আর কতো রি*স্কে ফেলবে? আমার একমাত্র ছেলে তুমি। তুমি যা চেয়েছ সব তোমাকে দেওয়া হয়েছে। এখন তোমারও উচিত বাবা-মাকে বৃদ্ধ বয়সে শান্তি দেওয়া।”
কথাগুলো বলে মিস্টার আরশাদ ছেলের রুম থেকে বেরিয়ে যায়। মিসেস মীরা মারসাদের হাত ধরে আকুল কণ্ঠে বলেন,
“দেখ বাবা, তোর বাবা ভুল কিছু বলেনি। ওই মেয়ের জন্য তুই কম ঝামেলাতে পড়িসনি।”
“তোমার কী মনে হয়, মা? যারা আদিরাকে কি*ডন্যাপ করেছে ওদের কেবল আদিরাই উদ্দেশ্য ছিল? পুলিশ রুহুল আমিনের জন্য কুমিল্লা থানাতে পাঠিয়েছে। রুহুল আমিন কি আদিরাকে চিনতো?”
“আমি অতোকিছু জানিনা। সামিরার বাবা অনেক পাওয়ারফুল। উনার কাছে রুহুল আমিনও কিছু না। তোর বাবার কথায় রাজি হয়ে যা।”
মিসেস মীরা কাঁদতে কাঁদতে বললেন। মারসাদ মাথায় হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করলো। বেশি কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে তার। মাহি তার মাকে জোর করে সেখান থেকে উঠিয়ে নিয়ে গেলো।
চলবে ইন শা আল্লাহ,
ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন। কপি নিষিদ্ধ। রিচেক হয়নি।
#copyrightalert❌🚫
#এক_শহর_প্রেম_২
লেখিকা: #নুরুন্নাহার_তিথী
#পর্ব_৩৭
মারসাদ বাহিরে যাওয়ার জন্য তৈরি হয়ে নিজের রুম থেকে বের হতেই ডাইনিং টেবিলে নাস্তা খেতে বসা মিস্টার আরশাদ খান ডাক দেন,
“কোথায় যাচ্ছো?”
“ক্যাম্পাসে।”
মিস্টার আরশাদ খান অসন্তুষ্ট হলেন। তিনি বললেন,
“তুমি অফিস থেকে কয়েকদিনের ছুটি নিয়েছ রেস্ট করতে। আর তুমি এখন ক্যাম্পাসে যাচ্ছো?”
মারসাদ কেডসের ফিতা বাঁধতে বাঁধতে বলে,
“আমি কাল থেকে অফিসেও যাচ্ছি। তাছাড়া আমি ভার্সিটির ভিপি। তোমাকে এটাও মনে রাখতে হবে।”
“ভিপি হলে চাকরি নিয়েছ কেন? এমন তো না, তোমার চাকরির খুব দরকার ছিল!”
“ছিল। এতো কষ্ট করে বিফার্ম করলাম, এখন এমফার্ম করছি নিশ্চয়ই চুপচাপ বসে থাকতে না! একজন ফার্মাসিস্ট হিসেবে আমারও কিছু দায়িত্ব আছে।”
“তোমাকে বুঝিয়ে লাভ নেই। আমি তোমাকে এই সাবজেক্টটা নিতেই না করেছিলাম। বিবিএ নিয়ে পড়তে।”
মারসাদ কোনো প্রত্যুত্তর করে না। সে বেরিয়ে যায়।
——
আদিরা ক্লাসে বসে আছে। মাহি আহনাফের সাথে মারসাদের বিষয়ে কথা বলতে গেছে। সাবিহা ও রিন্তি এখনও এসে পৌঁছায়নি। ক্লাসে আদিরাকে নিয়ে কানাঘুষা হচ্ছে। আদিরা বসে বসে সব দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করছে। এক মেয়ে তো ও-কে জিজ্ঞাসা করেই বসে,
“গু*ন্ডাটা কি তোমাকে রে* করেছে?”
আদিরার প্রচণ্ড অস্থির লাগছে। সে দ্রুত ব্যাগ উঠিয়ে ক্লাস থেকে বেরিয়ে যায়। সাবিহা ও রিন্তি সিঁড়ি দিয়ে উঠছিল। ওরা আদিরাকে ছুটে আসতে দেখে কারণ জিজ্ঞাসা করার আগেই আদিরা সিঁড়ি দিয়ে নামতে থাকে। সাবিহা ও রিন্তি বুঝতে পারে না হঠাৎ কী হলো? তখন দুইটা মেয়ে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে বলছে,
“আদিরাকে নাকি গু*ন্ডারা উঠিয়ে নিয়ে গেছিলো। তারপর…”
রিন্তি ও সাবিহার এবার সন্দেহ হয়, ক্লাসেও কেউ হয়তো এসব নিয়ে চর্চা করছিল। ওরাও তাড়াতাড়ি করে আদিরার পিছু নেয়। আদিরা ভবন থেকে বেরিয়ে এখন চলে যাচ্ছে। এদিকে মারসাদ বাইকে করে আসতে আসতে সামনে আদিরাকে কাঁদতে কাঁদতে এদিকে আসতে দেখে। মারসাদ ডাকে,
“আদিরা, কোথায় যাচ্ছো?”
কিন্তু আদিরা শোনে না। সে মারসাদকে ক্রস করে চলে যায়। মারসাদ দ্রুত বাইক ঘুরিয়ে আদিরার সামনে নিয়ে ব্রেক করে। যার দরুন আদিরা আচমকা পড়ে যেতে নিলে মারসাদ ধরে ফেলে। মারসাদ আদিরাকে সোজা করে দাঁড়া করিয়ে বাইক থেকে নামে। তারপর জিজ্ঞাসা করে,
“কী হয়েছে? কোথায় যাচ্ছো? আর কাঁদছো কেন?”
“কিছু হয়নি।”
“কিছু না হলে কাঁদছো কেন? আর কোথায় যাচ্ছো?”
“আমার ভালো লাগছে না বলে হোস্টেলে যাচ্ছি।”
তখন সেখানে সাবিহা ও রিন্তি এসে হাজির হয়। রিন্তি হাঁপাতে হাঁপাতে বলে,
“ক্লাসে তোকে কেউ কিছু বলেছে তাই না?”
মারসাদ ভ্রুঁ কুঁচকে শুধায়,
“কী বলেছে?”
“ভাইয়া, আমরা তো একটু আগেই এলাম। ক্লাসে ঢুকিনি পর্যন্ত।”
মারসাদ এবার আদিরাকে জিজ্ঞাসা করে,
“কী হয়েছে?”
আদিরা নিরব। মারসাদ এবার খানিক ধমকে জিজ্ঞাসা করে। তৎক্ষণাৎ মাথায় ব্যাথার সূক্ষ্ম চিলিক দিয়ে উঠে। মারসাদ মাথায় হাত চেপে ‘আহ’ করে বাইকে হেলান দিলে আদিরা, সাবিহা ও রিন্তি ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে। আদিরা চিন্তিত স্বরে শুধায়,
“আপনি ঠিক আছেন?”
মারসাদ ধিমি স্বরে জবাব দেয়,
“হুম। তুমি বলো, কে তোমাকে কী বলেছে?”
“কেউ কিছু বলেনি। আপনি এতো চিন্তা করবেন না। আর ভার্সিটিতে এসেছেন কেন? ডাক্তার আপনাকে রেস্ট করতে বলেছেন না? আপনি ডাক্তারের কথা শুনছেন না কেন? কী সমস্যা আপনার? এতো কেয়ারলেস কেন আপনি?”
আদিরার মারসাদকে এভাবে উঁচু স্বরে বকছে দেখে সাবিহা ও রিন্তি দুজনেই ঠোঁট টিপে হাসছে। মারসাদ কিছুটা অবাক তো হচ্ছেই তবে তার ভালো লাগছে। মুচকি হাসলো সে। আদিরা আবার বলল,
“হাসছেন কেন? বাসায় যান। গিয়ে রেস্ট করুন।”
মারসাদ আদিরার হাত ধরলো। তারপর বলল,
“চলো, তোমাকে ক্লাসে দিয়ে আসি।”
“না। আমি এখন ক্লাসে যাব না।”
আদিরা মারসাদের হাত ছাড়াতে ছাড়াতে বলল। মারসাদ জিজ্ঞাসা করে,
“কেন?”
“ভালো লাগছে না।”
“তাহলে আমার সাথে এক জায়গায় যাবে?”
আদিরা ভ্রুঁকুঞ্চন করে তাকিয়ে বলল,
“আপনি অসুস্থ।”
“আমি ঠিক আছি। চলো তুমি।”
তারপর আদিরাকে বাইকে বসতে বলে বাইক স্টার্ট দেয়।
———
পু*লিশ রুহুল আমিনকেও গ্রেফতার করেছে। সাগরকেও তার বাসা থেকে ধরেছে। কে*স কোর্টে উঠেছে অলরেডি। কোর্ট থেকে সাগরকে রি*মান্ডে নিতে বলা হয়েছে। রুহুল আমিনকে গ্রুফতার করাতে পু*লিশ মিস্টার আরশাদ খানকে আজই কুমিল্লা যেতে হচ্ছে। তিনি মিসেস মীরাকে বললেন,
“তোমরা থাকো। তোমার ছেলেকে সাবধান করো। রুহুল আমিনকে পু*লিশে ধরলেও সে কিন্তু দমে যাওয়ার না। আর ওই মেয়ের থেকে দূরে থাকতে বলবে।”
মিসেস মীরা স্বামীকে আশ্বাস দিলেন। এদিকে রাকিব মিলিকে কল করেছে।
“তোমার ভাইকে বলো কে*স তুলে নিতে। আমার মামা ও তোমার ভাইয়ের মধ্যে না মিলতেই পারে। কিন্তু আমার মামা তোমার ভাইকে মা*রতে চাইবে কেন? তাদের মধ্যে ব্যবসা নিয়ে ঝামেলা। সেটার জেরে পু*লিশ কেস!”
মিলি বলে,
“আমার ভাই তোমার মামার নামে কোনো ক*মপ্লেন করেনি। পু*লিশ সেটা খুঁজে বের করেছে। তিনি যদি নির্দোষ হন তাহলে তো পু*লিশ উনাকে ছেড়েই দিবে।”
“দেখো, আমার মামার যেন কিছু না হয়। আমি তোমার ভাই ও তোমার কথা শুনে মামার প্রপোজাল রিজেক্ট করেছি। দাঁড়াইনি নির্বাচনে।”
“রাকিব, তুমি আমাদের ভুল বুঝছো। আমার ভাই তোমার মামার নামে কোন কম*প্লেনই করেনি। আমার ভাই শুধু ওই দেলোয়ারের বিরুদ্ধে ক*মপ্লেন করেছে। এখন দেলোয়ার জবানবন্দিতে কী বলেছে সেটা তো আমরা জানিনা। তোমরা পুলিশের সাথে কোঅপারেট করো। উনি নির্দোষ হলে ছাড়া পেয়েই যাবেন। এটা নিয়ে চিন্তা করছো কেন?”
“মিলি, তুমি বুঝতে পারছো না…”
“আমি বুঝতে চাইছি না, রাকিব। ছেলের কান্না শুনতে পাচ্ছো না? ছেলেকে খাওয়াতে হবে। কল রাখো। ”
এই বলে নিলি রাকিবের কল কে*টে দিলো। তারপর ছেলের দিকে মনোযোগ দেয়।
—–
পতেঙ্গা সমুদ্রতটে বাইক রেখে দাঁড়িয়ে আছে আদিরা ও মারসাদ। আদিরা সমুদ্রের দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে। এখানে আসার পর বাইক থেকে নামার আগে ও পরে আদিরা আর একটা কথাও বলেনি। মারসাদও ওর নিরবতা মেয়েটার মনের উপর দিয়ে যা গেছে তা এখনও ঠিক হয়নি সেটা মারসাদও বুঝতে পারছে। সাগরের ঢেউয়ের কলতান কানে এক সুমধুর ধ্বনির মতো বাজছে। মারসাদ তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা নিস্তব্ধ রমণীটির দিকে অপলক চেয়ে আছে। প্রায় দশ-পনেরো মিনিট এভাবেই কে*টে গেলো। অতঃপর আদিরা তার নিরবতা ভাঙলো। সে বলল,
“মারসাদ…”
মারসাদ জবাব দিলো,
“হু?”
“আমি আপনাকে ভালোবাসি।”
থমকে গেলো মারসাদ। সম্মুখে সাগরের ঢেউয়ের শব্দও এখন তার কর্ণকুহরে পৌঁছাচ্ছে না। তার মনে হচ্ছে সে ভুল শুনেছে। সে প্রশ্ন ছুঁড়লো,
“কী বললে?”
আদিরা এবার মারসাদের দিকে তাকালো। চোখে চোখ রেখে প্রাণহীন স্বরে বলল,
“আমি আপনাকে ভালোবাসি কিন্তু আমি আপনার জন্য ঠিক নই। আমার জন্য আপনার জীবনে শুধু দুঃখই আসে। আপনি বারবার বিপদে পড়েন। আজ আমি আপনাকে ভালোবাসার কথাটা এই কারণে জানালাম, যাতে আপনার মনে না হয়, আপনার ভালোবাসা ব্যর্থ! আপনার ভালোবাসা ব্যর্থ না। বরং আমি আপনার জন্য অশুভ। সামিরা আপুকে বিয়ে করে নিন।”
মারসাদ হতবাক হয়ে আদিরার দিকে চেয়ে আছে। আদিরা কথাগুলো বলে আবার সামনের দিকে ফিরে। মারসাদ ওর বাহু ধরে আবার নিজের দিকে ঘুরিয়ে শুধায়,
“তোমাকে এসব কে বলেছে? আর সামিরাকে বিয়ে করব মানে? বলো, এসব কে বলেছে?”
আদিরা নিজের হাত ছাড়িয়ে নেয়। তারপর শান্ত কণ্ঠে বলে,
“উত্তেজিত হবেন না। আপনার জন্য এখন উত্তেজিত হওয়া ক্ষতিকর।”
“তুমি বলো, কে বলেছে এসব? সামিরা? সামিরা বলেছে তাই না?”
“যেই বলুক। সত্য সত্যই। বিগত এক বছরে আপনি যতো বিপদে পড়েছেন, তার অর্ধেক বিপদও আপনার বিগত পাঁচ বছরে হয়নি। তাহলে কী দাঁড়ায়?”
মারসাদ আদিরাকে দেখছে। মেয়েটার চোখ ভাষাহীন। যেন নিজেকে খুব শক্ত করে কথাগুলো বলছে। মারসাদ বলে….
চলবে ইন শা আল্লাহ,!