#copyrightalert❌🚫
#এক_শহর_প্রেম_২
লেখিকা: #নুরুন্নাহার_তিথী
#পর্ব_২৩
সবকিছি পরিকল্পনা মোতাবেক আগাচ্ছে। মাহি আহনাফের সাথে আদিরার দুইটা স্টুডেন্টের বাড়িতে খুঁজতে গেছে। রিন্তি রাফিনের সাথে আদিরার হোস্টেলের দিকে গেছে। আর মৃদুল ও রবিনকে নিয়ে ক্যাম্পাসের ভেতরেই সাবিহা, সুমি ও রাত্রিরা আদিরাকে খুঁজছে। বেশ খানিকটা সময় ধরে ওরা খুঁজছে কিন্তু পাচ্ছে না! রবিন ভয়ে দুইটা ঢোক গি*লে মৃদুলকে ফিসফিস করে বলে,
“আমরা মারসাদকে কী বলব? ও যদি জানতে পারে, আদিরা মিসিং তাহলে?”
“চুপ কর! চুপ কর! পজেটিভ ভাব। রাফিনরা বা আহনাফরা পেয়ে যাবে ঠিক। মেয়েগুলোর ওভার প্যা*নিক দেখে তুইও অযথা টেনশন দিস না আমাকে। কোথায় আর যাবে? আশেপাশেই পাব।”
রবিন চিন্তিত ভঙ্গীতেই মাথা নাড়ায়। এদিকে সাবিহা রবিনের কিছু কথা শুনে মিটিমিটি হেসে সুমির কাছে গিয়ে কানে কানে বলে,
“আপু, মনে তো হচ্ছে এরা টো*প গি-লে নিয়েছে। এইবার আরো তন্ন তন্ন করে খোঁজার বাহানায় অস্থিরতা বুঝাতে হবে। আর ওই যে একটা ছেলে ছিল না, যে আদিরাকে ফলো করতো? সেটারও কিছু কিছু ভয় দেখালে কেমন হয়?”
শেষের কথাটা শুনে রাত্রি দ্রুত বলে উঠে,
“এই না না। এসব বলো না। পরে যখন সত্য জানতে পারবে তখন হিতে বিপরীত হতে পারে। তারপর যদি সত্যি সত্যি আদিরা বিপদে পড়ে তখন তো সাহায্য করতে আসবে না। তাই এসব বলো না।”
সুমি রাত্রির কথার প্রত্তুত্তরে বলে,
“আমরা তো আমাদের সন্দেহের কথা বলব। তুই এতো বেশি ভাবিস না তো!”
কথাটা বলে সুমি নিজেই মৃদুলের কাছে গিয়ে কিছুটা সংশয়ের স্বরে বলে,
“এই মৃদুল, আমার না ভয় হচ্ছে! আদিরাকে আবার ওই ছেলেটা ধরে নিয়ে গেল না তো?”
মৃদুল ও রবিন অবাক হয়ে সুমির দিকে তাকায়। তারপর মৃদুল সুমিকে জিজ্ঞাসা করে,
“কোন ছেলেটা?”
“আরে ওই ছেলেটা, যাকে মারসাদ বে*ধরক পি*টিয়েছিল। ওই ছেলেটা তো সাগরের সাথে হাত মিলিয়েছে মনে হয়। সেদিন তো পু*লিশ স্টেশনে সাগররা ওই ছেলের হয়ে কম*প্লেন লেখাতে পর্যন্ত এসেছিল।”
এবার মৃদুলও চিন্তায় পড়ে যায়। সে ভাবছে এবার মারসাদকে জানানো দরকার কি না?
———
ওদিকে মাহি ও আহনাফ আদিরার দুইটা টিউশনির বাড়িতে গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে এখন রাস্তা ধরে হতাশ হয়ে হাঁটছে। যদিও মাহি হতাশ না! মাহি চো*রা হেসে চোখে মুখে হতাশ ও ভীত ভাব এনে বলে,
“আমার না খুব ভয় করছে! খুব ভয় করছে! কোথায় যে গেল?”
আহনাফ চিন্তিত হয়ে ভাবছে সে মারসাদকে জানানো উচিত কী না? অতঃপর জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফোন বের করতেই মাহি চটজলদি হাত থেকে ছি*নিয়ে নেয়! উপস্থিত কাণ্ডে আহানাফ বোকা বনে যায়! ফোনটা ছিনিয়ে নিয়ে মাহি কিছুটা দূরে গিয়ে খুশিতে লাফিয়ে উঠে। আর বলে,
“ইয়েস! এখন তাড়াতাড়ি করে ফোনের পাসওয়ার্ডটা বলে দিন।”
আহনাফ হঠাৎ বুঝতে পারে না মাহি এই ধরনের কথা কেন বলছে! সে কিছুটা অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করে,
“তোমার কি আমাকে সন্দেহ হয়?”
“অফকোর্স সন্দেহ হয়!”
মাহির এত স্বাভাবিক ভঙ্গীতে উত্তর শুনে আহনাফ কী রকম প্রতিক্রিয়া করবে সেটাই বুঝে উঠতে পারছে না।
“রিয়েলি, মাহি! তোমার সত্যিই সন্দেহ হয় আমি তোমাকে ছাড়া অন্য কারো সাথে…..!”
কথার মাঝখানে আহানাফকে থামিয়ে দিয়ে মাহি হতভম্বি স্বরে বলে উঠে,
“ওয়েট! ওয়েট” আমি আপনাকে সন্দেহ করি বলেছি। কিন্তু কী কারণে সন্দেহ করি, সেটা তো বলিনি! আপনি আগেই এতো কিছু ভেবে নিলেন।”
“তাহলে তুমিই বলে দাও, তুমি কী কারণে সন্দেহ করো? আর ফোনটা কেন নিয়েছো? আর পাসওয়ার্ড কেন চাচ্ছো?”
মাহি এবার কিছুটা ভাব নিয়ে বলে,
“দাভাই কোথায় আছে তা জানতে। আপনাকে জিজ্ঞাসা করলে তো আপনি বলবেন না! তাই আপনার ফোনটা ছিনিয়ে নেওয়ার চিন্তা করেছি। আর এখন আপনাকে অবশ্যই ফোনের পাসওয়ার্ডটা বলতে হবে। নয়তো…. নয়তো…. ব্রেকআপ!”
আহনাফ বোকার মতো মাহির দিকে চেয়ে আছে।
——
রিন্তি রাফিনের সাথে রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে চিন্তা করছে রাফিনের থেকে ফোনটা কিভাবে নিবে। অনেক কিছু চিন্তা-ভাবনা করে রিন্তি রাফিনকে বলল,
“ভাইয়া, আপনার ফোনটা একটু দেওয়া যাবে?”
“কেন?”
“আসলে ভাইয়া, আমার ফোনে তো ব্যালেন্স নেই। আমি একটু সাবিহাকে কল করতাম।”
“ওহ ওইদিক র খবর জানতে? দাঁড়াও আমি মৃদুলকে কল করছি।”
রাফিন মৃদুলকে কল লাগাচ্ছে, আর রিন্তি অন্যদিকে ঘুরে নিজের কপালে নিজেই দুইটা থা-প্প*ড় মে*রে মনে মনে বলে,
“সাবিয়ার কথাটাই আমি কেন বলতে গেলাম! উফ! এখন কী করব!”
রিন্তি চিন্তা-ভাবনা করতে করতে রাফিন মৃদুলের সাথে কথা বলেছে। তারপর রাফিন রিন্তিকে জানায়,
“ওরাও এখনো খুঁজে পায়নি।”
রিন্তি এবার পুনরায় বুদ্ধি খাটিয়ে বলে,
“এখনো পেলো না! আচ্ছা ভাইয়া, আপনার ফোনটা একটু দেন না আমাকে। আমার একটু স্টুডেন্টের মাকে কল করতে হবে। আসলে কি বলুন তো, এই চিন্তায় আমি ও*কে পড়াতে যেতে পারব না। তাই ফোন করে জানিয়ে রাখি।”
তারপর রাফিন সরল মনে রিন্তির হাতে ফোন দেয়। রিন্তি খানিক দূরে গিয়ে রাফিনের কল লগ চেক করে। কল লগের তৃতীয় নাম্বারটাই মারসাদের নামের ইনিশিয়ালে সেভ করা। রিন্তি নাম্বারটা নিজের ফোন বের করে টুকে নিলো সেই সাথে স্টুডেন্টের মাকেও রাফিনের ফোন থেকে কল করলো। তারপে নিজের ফোন থেকে আশিক ভাইকে নাম্বারটা সেন্ড করে দিলো।
—–
সাবিহা সুমি ও রাত্রিকে বলে,
“মৌমি আপু আমার নাম্বারে মেসেজ করেছে। আমাদেরকে মৃদুল ভাইয়া ও রবিন ভাইয়ার থেকে ফোন নিতে হবে না। রিন্তি কাজ করে ফেলেছে।”
“তাহলে ভালোই হলো।”
ওদিকে আহনাফ মাহিকে বলে,
“তোমার দাভাই এবার আমার সাথে যোগাযোগ করেনি।”
মাহি তেড়ে এসে আঙুল উঁচিয়ে বলে,
“একদম মিথ্যা বলবেন না। দাভাই কোথায় গেছে সব আপনি জানেন। আর একটু আগে ফোনটা বের করেছিলেন দাভাইকে জানানোর জন্যই। আমি কি বুঝিনা মনে করেছেন?”
“আমি ফোন বের করেছি রাফিনকে কল করতে। কারণ তোমার দাভাই এবার আমার সাথে যোগাযোগ করেনি। কারন সে জানে, তুমি যেকোনো উপায়ে আমার থেকে জেনে নিবে। তাই সে আমার ফোনে যোগাযোগ করেনি।”
মাহি ভ্রুকুটি করে আহনাফের দিকে চেয়ে আছে। তা দেখে আহনাফ হতাশ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে,
“তবে আমি জানি ও কোথায় আছে।”
মাহির চোখ-মুখ খুশিতে চকচক করে উঠে। সে উল্লাসী হয়ে বলে,
“তাহলে চলুন, সেখানে যাই আমরা। কোথায় আছে?”
“মাহি, তোমার দাভাই যেখানেই আছে ভালো আছে। কিন্তু এখন আমাদেরকে আদিরাকে খুঁজতে হবে।”
“আপনি আগে বলুন না, দাভাই কোথায় আছে?”
“কক্সবাজার! খুশি? এবার আদিরাকে খুঁজতে হবে।”
মারসাদের খবর পেয়ে মাহির মনে স্বস্তি ফিরলো। এবার আর সে নিজেকে আটকে রাখতে পারল না। সে সত্য কথা বলেই ফেলল,
“আদুরর কিছু হয়নি। ও গার্লস হোস্টেলে আছে। আমরা তো এসব নাটক করেছি যাতে দাভাইয়ের লোকেশন জানতে পারি তাই!”
আহনাফ যেন হতবাক! সে উত্তর দিতে ভুলে গেলো! মাহি চমৎকার হেসে আহনাফের বাহু জড়িয়ে একপ্রকার টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে আর বলছে,
“আমরা এবার সবাই মিলে গিয়ে দাভাইকে একটা সারপ্রাইজ দিব। কেমন হবে বলুন তো? একটা ট্যুরও হয়ে যাবে তাই না? ভিষণ মজা হবে। বলুন?”
আহনাফ এখনও নাটকের ঘোরেই আটকা। সে কী উত্তর দিবে বুঝতেই পারছে না।
চলবে ইন শা আল্লাহ,
#copyrightalert❌🚫
#এক_শহর_প্রেম_২
লেখিকা: #নুরুন্নাহার_তিথী
#পর্ব_২৪
সবাই এখন একত্রে হয়েছে। আহনাফ, মৃদুল, রাফিন ও রবিন তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে বাকিদের দিকে চেয়ে আছে। মাহি, সুমিদের সবার মুখে চো*রা হাসি। মৃদুল বলে উঠে,
“আমাকে তো প্ল্যানে শামিল করতে পারতে। শুধু শুধু কয়েক ঘণ্টা চিন্তার মধ্যে রাখলে!”
রবিনও বলে,
“আমাকেও বলতে পারতে।”
দুইজনের কথা শুনে রাফিন ও আহনাফ ওদের দিকে একটা ধা*রালো দৃষ্টি ছুঁ*ড়ে। রাফিন বলে,
“তোরা মারসাদের ফ্রেন্ড নাকি ওদের? মারসাদ তার পারসোনাল রিজনে যোগাযোগ বন্ধ করেছে। ফ্রেন্ড হিসেবে ও-কে আমরা সাপোর্ট করব।”
“আমি কি না করেছি? আমি জাস্ট বলেছি….”
মৃদুলের কথার মাঝে মৃদুলকে থামিয়ে আশিক বলে উঠে,
“তাহলে কী এখন আমরা মারসাদকে ফিরে আসতে বলব?”
মাহি তৎক্ষণাৎ হড়বড়িয়ে বলে,
“না! দাভাইকে তোমরা কেউ কিছু বলবে না। আমরা দাভাইকে সারপ্রাইজ দিব।”
কথাটা বলে মাহপ আহনাফের দিকে তাকায় কিন্তু আহনাফ সেটাকে ইগনোর করে পকেটে হাত দিয়ে অন্যদিকে নজর ঘুরায়। তারপর রাত্রি জিজ্ঞাসা করে,
“কীভাবে?”
মাহি হঠাৎ আহনাফের এভাবে তাকে ইগনোর করা দেখে ভ্রুঁ কুঁচকে ফেলল। সে আহনাফের দিকে এগিয়ে যায়। অতঃপর এক হাতে গা*ল চে*পে আহনাফকে নিজের দিকে ফিরিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে,
“এভাবে মুখ ঘুরিয়ে নিলেন কেন?”
মাহির আকস্মিক কাণ্ডে সবাই অবাক হলেও মিটিমিটি হাসছে। আহনাফ চোখ বড়ো বড়ো করে মাহির দিকে কয়েক সেকেন্ড চেয়ে থেকে দ্রুত নিজেকে ছাড়িয়ে বলে,
“আমি আবার কী করলাম?”
“কিছু করেননি?”
“না তো!”
মাহি ক*টমট দৃষ্টিতে আহনাফের দিকে চাইলে আহনাফ দ্রুত অন্যদিকে চলে যায়।
মৃদুল জিজ্ঞাসা করে,
“তুমি কি কক্সবাজার যেতে চাইছো?”
মৃদুলের কথা শুনে মাহি খুশিতে এক প্রকার লা*ফিয়ে উঠে বলে,
“ইয়েস! আমাদের গন্তব্য এখন কক্সবাজার! সবাই জলদি প্যাকিং করে ফেলো। আমরা বিকেলেই রওনা হবো।”
মাহির কথা শুনে সবাই হা করে অবাক হয়ে চেয়ে আছে। মাহি তা দেখে বলে,
“কী হলো? সবাই এভাবে চেয়ে আছো কেন? সময় কম। হাতে মাত্র ২ ঘণ্টার মতো আছে। দ্রুত প্যাকিং করো। গো ফার্স্ট!”
সাবিহা প্রত্যুত্তরে বলে,
“এতো শর্ট সময়ে ট্যুর প্ল্যান হয় নাকি! কাল যাই?”
“নো নো। আজকেই যাব। দাভাইয়ের এই চার বন্ধুর পেটে কাল পর্যন্ত কথা লুকানো থাকবে না। তাই আমরা আজকেই যাব। তাড়াতাড়ি সবাই হোস্টেলে গিয়ে ব্যাগ গুছিয়ে ফেলো।”
আশিক বলে,
“তাহলে আমি সবার জন্য হোটেল রুম আর বাসের টিকেট কে*টে ফেলি। নাকি হাইয়েস নিব?”
“হাইয়েস নিলেই ভালো হয়। নিজেদের মতো যাব।”
“তবে তাই রইলো।”
মাহি খানিক ভেবে আহনাফ, মৃদুলদের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। তারপর চোখ ছোটো ছোটো করে বলে,
“যদি কোনোভাবে দাভাই আমাদের যাওয়ার কথা জানতে পারে! তাহলে…..”
রবিন ভয় পেয়ে ঢোক গিলে বলে,
“পারবে না। পারবে না।”
রবিনের কথা শুনে ওর তিন বন্ধু সরাসরি ওর দিকে তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকায়। এটা দেখে মাহি ফের বলে,
“রবিন ভাইয়ার দিকে এভাবে তাকিয়ে লাভ নাই। যদি দাভাই কিছু জানতে পারে, তাহলে আপনাদের তিনজনকে সমুদ্রের পানিতে চু*বানো হবে! হুহ্!”
এরপর মাহেই মুখে ভে*ঙচি কে*টে চলে আসে। সে আদিরা ও সাবিহাদের কাছে আসতেই আদিরা কিছুটা ইতস্তত করে বলে,
“আমি না যাই?”
“কী বলিস! তুই না গেলে তো হবেই না। তুই তো মেইন। তোকে মাস্ট যেতে হবে। এন্ড এবার তোর মনের কথা বলতে হবে।”
মাহির শেষের কথাটা শুনে আদিরা চমকে উঠে। অতঃপর শুধায়,
“মানে?”
মাহি, সাবিহা ও রিন্তি একে অপরের দিকে চেয়ে মুচকি হাসে। তারপর মাহি বলে,
“সেটা আমরা কীভাবে বলব? তোর মনের কথা, তুই জানিস!”
আদিরা নিজের দৃষ্টি নিচু করে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। তা দেখে সাবিহা বলে,
“সারা রাস্তা ভাবার সময় পাবি। সময় নিয়ে ভাবিস। এখন হোস্টেলে গিয়ে ব্যাগ গুছিয়ে ফেল।”
আদিরার কেমন অস্থির অস্থির লাগছে। মন শান্ত হচ্ছে না। কী সময় নিবে, কী বলবে সব ভাবতে ভাবতে মাথাও ঘুরাচ্ছে। রিন্তি কিছুটা আন্দাজ করতে পেরে বলে,
“চল, তোর সাথে তোর হোস্টেলে আমিও যাব। আর সাবু, তোকে ভিডিওকলে বলে দিব আমার ব্যাগে কী কী রাখতে হবে। তুই আমার ব্যাগটা গুছিয়ে দিস।”
“আচ্ছা।”
অতঃপর রিন্তি আদিরাকে নিয়ে আদিরার হোস্টেলের দিকে গেলো।
——–
বিকেল ৪টা। ওরা সবাই ভার্সিটির গেইটের সামনে জড়ো হয়েছে। একটা হাইয়েস ভা*ড়া করেছে। সবাই সবার ছোটো ছোটো ব্যাগগ গুলো গাড়ির পেছনে উঠিয়ে দিয়েছে। তারপর আশিক বলে,
“আমি ফ্রন্টে বসছি। তোমরা বাকিরা এডজাস্ট করে বসো।”
তারপর সবাই গাড়িতে উঠে বসলো।
সন্ধ্যা প্রায় ৮টার দিকে ওরা সবাই কক্সবাজার সুগন্ধা বিচের কাছে মারসাদ যে হোটেলে আছে, সেখানে গিয়ে পৌঁছালো। গাড়ি থেকে একে একে ব্যাগ নামিয়ে হোটেলের ভেতরে যায়। আশিক রিসেপশন থেকে তিনটা রুমের চাবি এনে বলে,
“দুইটা মেয়েদের। আর একটা ছেলেদের। প্রতিটা রুম আবার দুই রুম করে। সো আরামসে থাকতে পারবে।”
চাবি নিতে সুমি ধা*ক্কা দিয়ে মৌমিকে পাঠায়। মৌমি আকস্মিক ধা*ক্কায় তাল সামলাতে না পেরে প্রায় আশিকের গায়ের উপরই পড়ে যাচ্ছিল! আশিক অতিসাবধানে মৌমিকে আগলে নেয়। দুজন দুজনের চোখের দিকে চেয়ে আছে। এই দৃশ্য দেখে আহনাফ, মাহি, সুমিরা সবাই ঠোঁট চেপে হাসছে। প্রায় মিনিট খানেক পেরিয়ে গেলে মৃদুল হালকা কে*শে বলে উঠে,
“ভাই, আমরা কিন্তু ট্যুরে এসেছি। হানিমুন ট্যুরে না!”
মৃদুলের কথা শুনে তৎক্ষণাৎ মৌমি ও আশিক একে অপরের থেকে দূরে সরে এলো। এই কাণ্ডে কেউ আর নিজের হাসি চেপে রাখতে পারল না। একটা হাসির রোল পড়ে গেল সবার মধ্যে। মৌমি চাবি নিয়ে দ্রুত সিঁড়ির দিকে এগুতে লাগলো। সিঁড়ি দিয়ে উঠতে নিতেই সুমি ডেকে বলল,
“আরে মৌমি, লিফট আছে তো! তুই সিঁড়ি দিয়ে কেন উঠতে যাচ্ছিস?”
মৌমি চোখমুখ খিঁচে এরপর লিফটের দিকে যায়।
এরপর সবাই লিফটের কাছে গেলে মাহি রাফিনকে বলে,
“ভাইয়া, আপনি একটু দাভাইকে কল করে জিজ্ঞাসা করুন তো, সে এখন কোথায় আছে?”
রাফিন বলে,
“বিচেই থাকবে।”
“তাও কল করে দেখুন না। আর বিচে কী করছে সেটাও জানতে চাইবেন। নাহলে সারপ্রাইজ কীভাবে দিব?”
“আচ্ছা কল করছি।”
এরপর রাফিন মারসাদকে কল করে। মারসাদ কল রিসিভ করে হ্যালো বলতেই রাফিন সুন্দর করে জিজ্ঞাসা করে,
“কী করছিস তুই?”
মারসাদ বিচের ধারে হাঁটছে। সে উত্তর দেয়,
“এই তো হাঁটছি।”
মাহি রাফিনকে কল মিউট করতে ইশারা করে। রাফিন কল মিউট করলে মাহি বলে,
“দাভাই যদি এখন বিচে হাঁটতে থাকে তাহলে তো আমরা দাভাইকে খুঁজে পাবো না। তাই দাভাইয়াকে বলুন যে আপনার এটা ওটা লাগবে। বিচের পাশে মার্কেট থেকে কিনতে।”
রাফিন সন্দিহান হয়ে শুধায়,
“কিন্তু কী লাগবে?”
মাহি কোনো চিন্তাভাবনা না করেই বলে ফেলে,
“বলুন, ঝিনুকের মালা লাগবে।”
“মালা! আমি মালা দিয়ে কী করব?”
“উফ! বলেন না।”
রাফিন কল আনমিউট করে কিছু বলবে তখনি মারসাদের কণ্ঠে শুনতে পায়,
“তোরে কি বোবায় ধরছে? কল করে চুপ করে আছিস কেন?”
রাফিন বোকার মতো বলে,
“আসলে দোস্ত, শোন না। আমার জন্য ঝিনুকের মালা আনতে পারবি?”
“ঝিনুকের মালা! তুই মালা দিয়ে কী করবি?”
“সেটাই তো আমিও ভাবছি!”
কথাটা বলে রাফিন তাড়াতাড়ি নিজের মুখ নিজেই চেপে ধরে। ফোনের অপর পাশ থেকে মারসাদ বলে,
“ভাবছিস মানে?”
রাফিনের এই বোকামো দেখে সবাই ইশারায় রাফিনকে ঝাড়ছে একপ্রকার! তখন পাশ থেকে মৃদুল বলে উঠে,
“আরে রাফিন ঝিনুকের মালা ওর গার্লফ্রেন্ডকে দিবে। এটাই বলতে লজ্জা পাচ্ছিল এতক্ষণ।”
মৃদুলের কথা শুনে রাফিন বড়ো বড়ো চোখ করে মৃদুলের দিকে তাকায়। আর এদিকে রিন্তি বুকটা ধক করে উঠে। রিন্তি আদিরার হাত চেপে ধরে। তবে কী রিন্তির মন ভাঙতে চলেছে?
চলবে ইন শা আল্লাহ,
#copyrightalert❌🚫
#এক_শহর_প্রেম_২
লেখিকা: #নুরুন্নাহার_তিথী
#পর্ব_২৫
“তোর আবার গার্লফ্রেন্ড হলো কবে?”
এবার রাফিন সহ মৃদুলরা সবাই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে যায়। মুহূর্তেই কিছু না ভেবেই রাফিন মাথা চুলকে জোরপূর্বক হেসে বলে,
“আসলে প্রপোজ করব। তুই একটা ঝিনুকের মালা কিনে আন না। ওর খুব পছন্দ ঝিনুকের মালা।”
ফোনের অপরপাশে মারসাদ হাসে। তার এই হাসি অন্ধকারাচ্ছন্ন রাতের আড়ালে আড়াল রয়ে গেলো। অতঃপর বলল,
“আচ্ছা। আসার সময় নিয়ে আসব।”
এই কথা শুনে রাফিন প্রায় চিৎকার করে বলে,
“না! তুই এখনি কিনবি। পরে ভুলে যাবি।”
“ভুলব না। মনে থাকবে আমার।”
“বললাম তো এখন কিনবি। আমি ০% রিস্কও নিব না। সাথে আরও কিছু কিনতে হবে। ঝিনুকে নাম লেখানো। তারপর ওই যে চুলে লাগায় ওগুলো। সাথে….আর মনে পড়ছে না। তুই দোকানে কী কী আছে ছবি তুলে পাঠা তো।”
মারসাদ মৃদু হেসে বলে,
“আচ্ছা ঠিক আছে। আমি পাঠাচ্ছি।”
“কখন পাঠাবি?”
“তুই ফোন রাখলেই পাঠাব। যাচ্ছি ওইদিকে।”
“ওকে। জলদি পাঠা।”
এরপর রাফিন কল কে*টে তাড়াতাড়ি করে সবাইকে বলে,
“এখন রুমে যাওয়া লাগবে না সবাই লাগেজ গুলো রিসিপশনে রেখে তাড়াতাড়ি চলো। মারসাদ সাগর পাড়ে কেনাকাটা করতে যাচ্ছে।”
আশিক বলে,
“তাই চলো। রাফিনকে ছবি পাঠাতে পাঠাতে আমরা আগাই।”
ওরা সবাই নিজেদের লাগেজ গুলো রিসিপশনে রেখে তারপর সাগর পাড়ে যাওয়ার জন্য বের হয়।
____
মারসাদ দোকান ঘুরে ঘুরে ঝিনুকের মালা দেখছে। ঝিনুক দিয়ে তৈরি অনেক কিছু এখানে। মারসাদ চট করে ছবি তুলে নিয়ে রাফিনকে পাঠায়। রাফিন ছবি দেখে সবাইকে ডেকে বলে,
“এই দেখ, ও ছবি পাঠিয়েছে। মনে হচ্ছে সামনের দোকানগুলোতেই গেছে। তাড়াতাড়ি চল। আর সবার আগে আদিরা ঢুকবে।”
শেষের কথাটা শুনে আদিরা চমকে উঠে। সে তোঁতলানো স্বরে বলে,
“আ..আমি? আমি কে..ন?”
“তুমিই তো ঢুকবে। সারপ্রাইজ দিতে হবে না?”
হাত-পা কাঁপছে আদিরার। সে করুণ স্বরে বলে,
“কিন্তু ভাইয়া, আপনারাও তো সারপ্রাইজ দিতে এসেছেন। তাহলে আমি কেন ঢুকব? ভাইয়া, প্লিজ আমি ঢুকব না আগে।”
এবার মাহি খানিক ধ*মকে উঠে বলে,
“আবার ভয় পাচ্ছিস তুই? আমার দাভাই কি বা-ঘ না ভা*ল্লুক? এত ভয় পাস কেন তুই? তুই আগে যাবি। তারপর তোর পেছনে তো আমরাও যাব। কিন্তু আমরা লুকিয়ে লুকিয়ে যাব।”
“কিন্তু..!”
এবার সুমিও বলে,
“কোন কিন্তু না। তুমি আগে যাবে। এমনভাবে যাবে যে তুমি কেনাকাটা করতে এসেছ। আর যদি মারসাদ তোমাকে দেখে ফেলে, তাহলে এমন একটা ভাব করবে যেন তুমি ও-কে দেখোইনি। আর তুমি ও-কে চেনোও না। বুঝতে পেরেছ?”
আদিরা মেকি হেসে এক পা দুই পা করে পেছোতে লাগলো। সবাই এটা লক্ষ্য করে ওর দিকে তীক্ষ্ম দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে আদিরা পেছন ঘুরে পালাতে চায়। তৎক্ষণাৎ পেছন থেকে সাবিহা আদিরাকে ধরে ফেলে বলে,
“পালালে তো চলবে না। যা না বাবু। প্লিজ। ভাইয়া যদি তোকে মা*রতে আসে তবে আমি তোকে বাঁচাব। প্রমিস।”
সাবিহা কথাটা বলে খুব কিউট ফেস করে তাকায়। তা দেখে বাকিরা হেসে ফেলে। আহনাফ বলে,
“যাও আদিরা। মারসাদ কিছু বলবে না। অবাক হবে জাস্ট এটুকুই।”
আদিরা মাথা নিচু করে ভাবছে। কিন্তু ও-কে ভাবার জন্য কয়েক সেকেন্ডের বেশি সময় দিলো না। এক প্রকার জোড় করেই ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে গেলো। দোকানগুলোর কাছে এনে মাহি, সাবিহা ও রিন্তি একত্রে বলে,
“বেস্ট অফ লাক।”
আদিরা জোরপূর্বক হেসে সবার দিকে তাকায়। সবাই বিপরীতে মৃদু হেসে সামনে যেতে ইশারা করে। আদিরা আকাশের দিকে একবার তাকিয়ে বড়ো একপা ঢোক গিলে মৃদু পায়ে দোকানগুলোর ভেতরে যায়। সবগুলো দোকান সারিবদ্ধ ভাবে ঝিনুক, শামুক, প্রবাল বিক্রি করছে। কতো সুন্দর সুন্দর ঝিনুকের মালা, ঘর সাঁজানোর জিনিসপাতি। আদিরা দুরুদুরু মন নিয়ে ঘুরে ঘুরে দেখছে প্রতিটা দোকান। ঝিনুকের তৈরি জিনিসপত্র দেখতে ভালো লাগলেও মনের মধ্যে একটা ভয় তো রয়েই গেছে। সেই ভয়টাই সে কাটিয়ে উঠতে পারছে না।
এদিকে রাফিন মারসাদের পাঠানো ছবি থেকে কিছু জিনিসপত্র বেছে দিয়ে বলে কিনে আনতে। মারসাদও সেই মোতাবেক কিনে নেয়। কেনাকাটা শেষ করে মারসাদ যখন বাহিরের দিকে আসবে তখন একজনের হাতের সাথে তার হাত লেগে যায়। মারসাদ হুট করে থেমে যায়। এদিকে আদিরাও থেমে যায়। মারসাদ আদিরার চেহারা না দেখলেও আদিরা দেখেছে। আদিরার হাতের সাথেই মারসাদের হাত লেগেছে। আদিরা সেখানেই স্টাচু হয়ে দাঁড়িয়ে। একবার মন চাচ্ছে ছুটে পালাতে, আবার মনে খনিক সাহসের সঞ্চার হচ্ছে। আদিরা খুব ধীর পায়ে পাশের দোকানটার দিকে ঘুরলো। অমনি মারসাদ আদিরার মুখের এক পাশ দেখতে পেলো। মারসাদ অবাক ও কনফিউজড দুটোই হয়ে চেয়ে আছে। সে একবার ভাবছে তার চোখের ভুল, তো আবার ভাবছে হঠাৎ সে আদিরাকেই কেন দেখবে? মারসাদ নিজের চোখ ভালো করে ক*চলে নিয়ে ফের তাকালো। কিন্তু ততক্ষণে আদিরা বিপরীত পাশের দোকানে ঘুরে গেছে। মারসাদ আগের দোকানে আদিরাকে না দেখে এগিয়ে গিয়ে খুঁজলো। তারপর বিপরীত পাশের দোকানের দিকে ঘুরতেই দেখে আদিরা ঝিনুকের জিনিসপত্র ধরে ধরে দেখছে। মারসাদ বলে উঠে,
“আদিরা!”
সঙ্গে সঙ্গে আদিরা চমকে উঠে। হাত যত্রই থেমে যায়। গলা শুকিয়ে আসছে তার। মারসাদের দিকে আস্তে আস্তে ঘুরে। আদিরা সম্পূর্ণ মারসাদের দিকে ঘুরতেই মারসাদের চোখ যেন বড়ো বড়ো হয়ে গেছে। অবাক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে সে। মারসাদ ফের বলে উঠে,
“তুমি! তুমি এখানে?”
আদিরা মাথা নিচু করে চুপ করে আছে। গ*লা দিয়ে তার একটা কথাও বের হচ্ছে না। মারসাদ কী রেগে গেলো? এই চিন্তাতে তার হাত-পা অসাড় হয়ে আসার দশা!
এদিকে আহনাফ, রাফিন, সুমি, মাহিরা সবাই সুযোগ বুঝে নিজেদের লুকিয়ে থাকা জায়গা থেকে উঠে একত্রে বলে উঠে,
“সারপ্রাইজ!”
আচমকা এতোগুলো কণ্ঠস্বরে ‘সারপ্রাইজ’ শব্দটা শুনে ভড়কে উঠে মারসাদ। আশেপাশে তাকিয়ে তার চিরচেনা মুখগুলো দেখে আরও অবাক হয়ে যায়। সবাই মারসাদের অবস্থা দেখে হাসছে। মারসাদ আবারও নিজের দুই চোখ ভালো করে মুছে নিয়ে তাকায়। নাহ্ সে ভুল দেখছে না।
মাহি বলে উঠে,
“কী দাভাই, কেমন দিলাম সারপ্রাইজ?”
“তোরা সবাই এখানে?”
“তো কি তুই শুধু আদিরাকে এখানে চাইছিলি? কেন, দাভাই? আমরা আসাতে খুশি হসনি?”
মাহির বলা কথাটাতে তৎক্ষনাৎ মারসাদের ভ্রুঁ কুঁচকে আসে। চট করে মাহির হাতে দু ঘা লাগিয়ে বসে। আদিরা লজ্জায় সাবিহার কাছে গিয়ে সাবিহার পেছনে নিজেকে আড়াল করতে চাইছে। মাহি মা*ইর খে*য়ে কপাল কুঁচকে বিরক্তির স্বরে বলে,
“কথায় কথায় হাত চলে কেন? এমন করলে জীবনেও বউ পাবি না বলে দিলাম!”
মারসাদ প্রত্যুত্তরে বলে,
“সেটা নিয়ে তোকে চিন্তা করতে হবে না। তুই তোর নিজের চিন্তা কর।”
কথাটা বলেই মারসাদ আহনাফের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে। তা দেখে আহনাফ বলে উঠে,
“আমার দিকে এভাবে তাকাচ্ছিস কেন? আমি এবার কিছু করিনি। তুই তো আমার সাথে যোগাযোগ করিসনি।”
মারসাদ এবার রাফিনের দিকে তাকায়। রাফিন আমতা আমতা করে বলে,
“আমার কোন দোষ নেইরে, দোস্ত। আমি সম্পূর্ণ পরিস্থিতির শি*কার! এই মেয়েগুলো (মাহি,সুমি, রিন্তিদের দিকে আঙুল তাক করে) আমাকে ফাঁ*সিয়েছে! বিশ্বাস কর, আমার কোন দোষ নেই। ওরা প্ল্যান করে এই সব কিছু করেছে। না হলে আমি কখনো তোর বিশ্বাস ভাঙ্গি? বল?”
মারসাদ এবার সুমি, রাত্রি, মৌমিদের দিকে তাকায়। এবার আশিক বলে উঠে,
“মারসাদ, ওদের কাউকে ভুল বুঝ না। ওরা তোমার জন্য চিন্তিত ছিল, তাই মাহিদের সাথে তাল মিলিয়েছে। তুমি না বলে হুট করে গায়েব হয়ে গেলে, সবাই তো চিন্তা করবেই তাই না? তার উপর তোমার বন্ধুরা মুখে যেন কুলুপ এঁটে বসে ছিল!”
মারসাদ হতাশ নিঃশ্বাস ছাড়ে। তারপর বলে,
“আমি একটু একা থাকতে চেয়েছিলাম।”
অতঃপর মারসাদ আদিরার দিকে তাকায়। আদিরা তা দেখে নিজেকে সাবিহার পেছনে আরো আড়াল করে নেয়।
চলবে ইন শা আল্লাহ,
ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন। কপি নিষিদ্ধ। রিচেক হয়নি।