এক শহর প্রেম_২ পর্ব-২০+২১+২২

0
57

#copyrightalert❌🚫
#এক_শহর_প্রেম_২
লেখিকা: #নুরুন্নাহার_তিথী
#পর্ব_২০
বাইক এসে আদিরার হোস্টেল থেকে কিছুটা দূরে থামলো। মূলত আদিরার বলাতেই এখানে বাইক থামানো। বাকি রাস্তা আদিরা হেঁটেই যাবে। তারপর আদিরা বাইক থেকে নেমে মারসাদকে বলে,

“ধন্যবাদ, ভাইয়া।”

অতঃপর ঘুরে চলে যেতে নিলে মারসাদ আদিরাকে ডাকে।
“শুনো,”

আদিরা দাঁড়িয়ে পেছনে ঘুরে তাকালো। তারপর বলল,
“জি বলুন।”

মারসাদ কেমন যেন থমকে গেলো! যা বলতে চেয়েছিল সেটা আর সে বলতে পারছে না! আদিরার এহনো চাহনিতে মারসাদের কাছে অন্যরকম ঠেকলো। তার মস্তিষ্ক শুধু সামনে দাঁড়ানো রমণীটির দিকেই নিবদ্ধ। তার কাছে আজ আদিরাকে এক মায়াবী পরীর মতো লাগছে। তবে পরীর মায়া থেকে কী নজর সরানো যায়? কিন্তু মারসাদ এভাবে তাকিয়ে থাকাতে অপ্রস্তুত হয় আদিরা। সর মারসাদের এমন দৃষ্টির দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারলো না। সে দ্রুত দৃষ্টি নিচু করে প্রশ্ন ছুঁড়ে,

“কিছু বলবেন, ভাইয়া?”

তৎক্ষণাৎ হুঁশ ফিরে মারসাদের। সে এদিক সেদিকে কয়েকবার নজর ঘুরিয়ে ফের আদিরার দিকে তাকিয়ে কিছু বলবে তখনি দেখে আদিরা আবার চলে যাচ্ছে। মারসাদ ফের ডাকে,

“আদিরা, শুনো।”

আবারও পেছনে ঘুরে তাকায় আদিরা। এবার মুখে নয়, ইশারায় জানতে চায় সে। মারসাদ এবার বলে,
“কালকে সকালে আমি তোমাকে ভার্সিটিতে নিয়ে যেতে আসব।”

এহেনো প্রস্তাব শুনে আদিরার বিষয়টা মোটেও ভালো লাগলো না। সে সাথে সাথে প্রতিবাদ করে উঠলো,
“কেন? আপনি আমাকে কেন নিয়ে যেতে আসবেন? আমি একাই যেতে পারবো। আপনাকে আসতে হবে না।”

মারসাদ এবার রাগলো না। শান্ত কণ্ঠে বলল,
“অপেক্ষা করো এসে নিয়ে যাব।”

এটা বলে সে আবার বাইকে উঠে বাইক স্টার্ট দিবে তখন আদিরা আবার বলে ওঠে,
“বললাম তো আপনাকে আসতে হবে না। আমি একাই যেতে পারব।”

“বললাম তো নিতে আসব!”

আদিরা মারসাদের এরকম ত্যাড়ামো কথা শুনে রেগে গেলো। ঝাঁঝালো স্বরে এবার বলল,
“কেন নিতে আসবেন? আমি নিষেধ করা সত্ত্বেও কেন আসবেন? আপনি কে হন আমার?”

“বয়ফ্রেন্ড!”

মারসাদের সহজ, সাবলীল, ভাবলেশহীন উত্তর শুনে আদিরা থমকে যায়। বড়ো বড়ো চোখ করে এসে মারসাদের দিকে চেয়ে আছে। আদিরার এরকম প্রতিক্রিয়া দেখে বিষয়টা মারসাদের কাছে খুব মজার লাগলো। সে বাঁকা হেসে বাইক স্টার্ট দেয়। তারপর মারসাদ চলে যাচ্ছে, আদিরা তখন বাস্তবে ফিরে। তারপর কণ্ঠে বিদ্রোহ এনে কিছুটা জোড়েই বলে উঠে,

“আমি আপনার গার্লফ্রেন্ড না। ওসব নাটক আপনি অন্য কাউকে দিয়ে করান।”

মারসাদ বাইক থামায়নি। সে যেতে যেতে জোড়ে বলে যায়,
“নাটক না করে আসল গার্লফ্রেন্ডই হয়ে যাও!”

তারপর মারসাদ বাইক নিয়ে দূরে চোখের আড়াল তো হলো ঠিকি কিন্তু আদিরা সেখানেই হতবাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। প্রায় মিনিট খানেক পর রিকশাওয়ালার হর্ণের শব্দে সরে দাঁড়ায়। তারপর হোস্টেলের দিকে পা বাড়ায়।

——–

পরেরদিন আদিরা সময়ের অনেক আগেই ভার্সিটিতে চলে এসেছে। তারপর একটা গাছতলায় একা একা বসে পড়ছে। পড়ছে কম ভাবছে বেশি! ইদানীং তার পড়াশোনায় মনোযোগ আসতে চায় না। একজনের কথাই সারাদিন তার ঘুরেফিরে মন ও মস্তিষ্কে ঘুরে বেড়ায়। হঠাৎ আদিরার ফোন বেজে উঠে। আদিরা ব্যাগ থেকে ফোনটক বের করে স্ক্রিণে দেখে মারসাদের নাম। তাই সে কল কেটে আবারও বইতে মুখ গুঁজে বসে থাকে। তদ্রুপ একে একে তিনবার কল বেজে উঠে আদিরার। তিনবারই সে ফোন কেটেছে। চতুর্থবার ফোন না কেটে সাউন্ড কমিয়ে হাঁটুতে মাথা গুঁজে বসে ছিলো। কিন্তু পঞ্চমবার আর নিজেকে আটকে রাখতে পারলো না। হাঁটুতে মাথা গোঁজা অবস্থাতেই না দেখে ব্যাগের ভেতর থেকে ফোন রিসিভ করে। তারপর ঝাঁঝালো স্বরে বিরক্তি নিয়ে বলে উঠে,

“বারবার কেটে দিচ্ছি তাও কেন কল করছেন? আমি ভার্সিটিতে চলে এসেছি।”

আদিরা কথাটা বলার পর ফোনের অপর পাশ থেকে একটা বাচ্চা ছেলের কণ্ঠ ভেসে আসলো,
“আপু, আমি আমি আহাদ। তুমি কল কেটে দিছিলা কেন?”

হঠাৎ ছোটো ভাইয়ের কণ্ঠস্বরে থতমত খেয়ে যায় আদিরা। ফোনটা কান থেকে নামিয়ে সামনে এনে দেখে সত্যি তার মায়ের নাম্বার থেকে কল করেছে। আদিরা আবার কোন কানের কাছে নিয়ে তারপর বলে,

“সরি, সোনা। পড়ছিলাম।”

“পড়তেই থাকো! তুমি শুধু পড়া পড়া করো! আজকে যে আমার জন্মদিন তা কি তুমি ভুলে গেছো?”

ভাইয়ের মুখে জন্মদিনের কথাটা শুনে আদিরা টনক নরে। তখনি তার আজকের তারিখটা মনে পড়ে। অতঃপর চোখ মুখ খিঁচে নিজের মা*থা নিজে মা*থা চা-প*ড়ায়! ভাইয়ের জন্মদিন সে ভুলে গেলো?

“না না সোনা, আপু ভুলিনি তোর জন্মদিন। আসলে আপুর ফোনে না ব্যালেন্স ছিল না। ব্যালেন্স ভরবো আজকে। আজকে সকালে তাড়াতাড়ি ভার্সিটিতে চলে আসার কারণে সকালে ফোনে ব্যালেন্স ভরতে পারিনি। তার আগেই তুই কল করলি। হ্যাপি বার্থডে, আমার সোনা ভাইটা।”

আহাদের মনটা একটু নরম হয়। সে জিজ্ঞাসা করে,
“আপু, এবার আমার জন্মদিনে কেক কে বানাবে? প্রতিবার তো তুই বানাস। এবার তো তুইও নেই। আসবি না আমার কাছে?”

ভাইয়ের মুখে এমন আকুল আকুতি শুনে চোখ ভরে এলো আদিরার। ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে চট্টগ্রামের চলে আসার পর এটাই তার ছোটো ভাইটার প্রথম জন্মদিন। আর সে তার ভাইয়ের সাথে এই প্রথমবার জন্মদিনের দিন নেই। আদিরা মন খারাপ করে জবাব দেয়,

“আমি তো আসতে চাই রে, ভাই। কিন্তু কী করবো বল? আসতে পারছি না। তবে শোন তুই খারাপ করিস না। আমি এইবার বাড়িতে যখনই আসবো, তোকে কেক বানিয়ে খাওয়াবো।”

“যখনই আসবা তখন কেক বানিয়ে কী লাভ? তখন তো আমার জন্মদিন থাকবে না। এবারের জন্মদিনটা আমার তোমার হাতের কেক ছাড়াই শেষ হবে।”

আদিরার খারাপ লাগছে। কিন্তু কী করবে? সে তে যেতে পারছে না। কিছু একটা চিন্তা করে আদিরা তার ভাইকে বলে,

“মাকে ফোনটা দে তো। আর তুই গিয়ে চটপট খাতা কলম নিয়ে আয়।”

“কেন আপু? খাতা কলম দিয়ে কি করব?”

“তোকে আনতে বলেছি আন। আর মাকে ফোনটা দিয়ে যা।”

তারপর আহাদ তাই করলো মায়ের কাছে ফোনটা দিয়ে ছুটে গেল খাতা কলম আনতে। আদিরা তার মাকে জিজ্ঞাসা করে,

“কেমন আছো মা? বাবা কেমন আছে?”

“আমরা তো আলহামদুলিল্লাহ ভালঁই আছি। তুই কেমন আছিস?”

“আমিও খুব ভালো আছি, মা। শোনো তোমাকে যে জন্য ফোন দিতে বলা।”

“বল।”

“আহাদ খাতা কলম আনলে আমি যা যা যেই পরিমাণে বলব, সব খাতার মধ্যে আহাদকে বলবে লিখে নিতে। তারপর তুমি সেই অনুসারে আহাদের জন্য কেক বানাবে।”

আদিরার কথা শুনে আদিরের মা বেশ অবাক হন। তিনি বলেন,
“আমি কখনো কেক বানাইছি নাকি? আমি কেক বানাতে পারি না তো!”

“তোমাকে পারতে হবে না, মা। আমি যেভাবে বলবো শুধু সেভাবেই সব পরিমান করে নিয়ে স্টেপ ফলো করে যাবে।”

“আচ্ছা বল।”

ইতোমধ্যে আহাদ খাতা কলম নিয়ে হাজির। আহাদ যখন এসে কেক বানানোর কথা শুনলো, আহদ তো খুশিতে নেচে উঠেছে পুরো! আহাদের এত খুশি শুনে ও দেখে আদিরা ও আদিরার মাও বেশ খুশি। তারপর আদিরা তার মাকে আস্তে আস্তে সবগুলো উপকরণের পরিমাণ ও কেক বানানোর রেসিপিটা বলে দিলো।

মা ও ভাইয়ের সাথে কথা বলার শেষ করে সামনের দিকে তাকিয়ে আদিরা তার থেকে দুই হাত দূরত্বে দাঁড়ানো মারাসাদকে দেখতে পায়। মারসাদ বুকে আড়াআড়ি ভাবে হাত গুঁজে তার দিকে কপাল কুঁচকে তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আচমকা নিজের সামনে মারসাদকে দেখে চমকে উঠে আদিরা। যার দরুন হাত থেকে তার ফোনটা পড়ে যায়। শুকনো ঢোক গিলে দুইটা। ভয়ে তাে মধ্যে আবারও জড়োসড়ো ভাব। সে ঘাসের উপর থেকে ফোনটা ও বইটা ব্যাগে ঢুকিয়ে আস্তে আস্তে ব্যাগ নিয়ে উঠে দাঁড়ায়। তারপর এক পা, দুই পা করে পিছনের দিকে পিছতে থাকে। যা দেখে মারসাদের দৃষ্টি আরো সরু হয়। অতঃপর আদিরা এরকম পেছাতে পেছাতে হঠাৎই এক প্রকার দৌড়ে স্থান ত্যাগ করে! আর মারসাদ বোকার মতো সেদিকে তাকিয়ে থাকে!

চলবে ইন শা আল্লাহ

#copyrightalert❌🚫
#এক_শহর_প্রেম_২
লেখিকা: #নুরুন্নাহার_তিথী
#পর্ব_২১
আদিরা হাঁপাতে হাঁপাতে মাহি ও আহনাফ যেখানে দাঁড়িয়ে কথা বলছিল, সেখানে গেল। মাহি বাদাম খাচ্ছিলো আর আহনাফের সাথে গল্প করছিল। হঠাৎ আদিরাকে এভাবে ছুটে আসতে দেখে মাহি প্রশ্ন ছুঁড়ে,

“কী রে? তোর আবার কী হলো? এভাবে হাঁপাচ্ছিস কেন? আর কোথা থেকে দৌঁড়ে এলি?”

আদিরা নিজের ব্যাগ থেকে পানির বোতল বের করে খানিকটা পানি পান করলো। তারপর বলল,
“তোর দাভাইকে বল এসব যেন বন্ধ করে।”

আদিরার কথা শুনে মাহি ও আহনাফ একে অপরের দিকে চেয়ে আদিরার বলা কথার তাৎপর্য বোঝার চেষ্টা করে। মাহি পুনরায় আদিরাকে জিজ্ঞাসা করে,

“কী করেছে দাভাই?”

“আমি তো উনাকে বলেই দিয়েছি, আমি উনার সাথে নাটক করতে পারবো না। তারপরও উনি কেন এরকম করছে? উনি কেন বুঝতে চাইছেন না, আমি সামিরা আপুর সাথে ঝামেলায় জড়াতে চাই না। তাছাড়া কয়েকদিন পর যখন সামিরা আপু সত্যিটা জানতে পারবে তখন তো সামিরা আপু আমাকে আরও সহ্য করতে পারবে না। তোর দাভাই তো আর এক-দুই বছর পর ভার্সিটি ছেড়ে দিবে! কিন্তু আমার কী হবে? আমাকে তো এখানেই পড়তে হবে। তাই না? আর সামিরা আপু তো আমাদের মাত্র এক ব্যাচ সিনিয়র!”

এবার আহনাফ বলে,
“তুমি অযথাই চিন্তা করছো। মারসাদ থাকতে সামিরা তোমার কিছু করতে পারবে না। তাছাড়া….”

আহনাফকে তার কথা সম্পূর্ণ করতে দিলো না আদিরা। আদিরা ফের বলে উঠে,
“উনি থাকতে সামির আপু কি করতে পারবেন না পারবেন সেটা আমার দেখার বিষয় না। আমি কোন মিথ্যা নাটকে জড়াতে চাই না। কেন বুঝতে পারছেন না আপনারা?”

মাহি ও আহনাফ ফের একে অপরের দিকে তাকায়। মাহি ইশারায় আহনাফকে কিছু বুঝালে আহনাফ বাঁকা হেসে আদিরাকে উদ্দেশ্য করে বলে,
“মিথ্যা নাটক করার কী দরকার? সত্যি সত্যি করো!”

আহনাফের এহেনো কথায় আদিরা বোকা বনে যায়। গতকাল মারসাদও তাকে এভাবেই বলেছিল। আদিরা আহনাফের দিকে তীক্ষ্ম দৃষ্টি ফেলে শুধায়,

“আপনি কী বলতে চাইছেন? আপনার বন্ধুও কালকে এমন ধরণের কথা বলেছিল।”

কথাটা শুনে আহনাফ মাহির দিকে তাকায়। সেইসাথে মাহিও। দুজনের চোখে-মুখে আনন্দের ছাঁপ। আদিরা এদের দুজনকে এতো খুশি দেখে বোঝার চেষ্টা করে যে এদের মনে কী চলছে। তদ্রুপ প্রশ্নও করে,

“আপনারা এতো খুশি কেন?”

মাহি তাড়াহুড়ো করে নিজের হাসি চেপে জবাব দেয়,
“কই না তো!”

আদিরা সন্দিগ্ধ দৃষ্টিতে কয়েক সেকেন্ড মাহির দিকে চেয়ে থেকে ফের বলে,
“যাইহোক। তুই তোর দাভাইকে বলে দিবি সে যেন আমাকে ফলো না করে। আমার রাস্তাঘাটে এসব ভালো লাগে না। আমি আগেও বলেছি।”

আদিরা এই কথাটা বলে শেষ করা মাত্রই হঠাৎই মারসাদের কণ্ঠস্বর শোনা যায়। সে আদিরার পেছনে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয়,

“আমি তোমাকে রাস্তাঘাটে ফলো করি?”

হঠাৎ এই চমকে উঠে আদিরা। অতঃপর পেছন ঘুরে মারসাদকে দেখে দু পা পিছিয়ে যায়। মারসাদ ফের প্রশ্ন ছুঁড়ে,

“তোমাকে আমি ফলো করি?”

কথাটা বলতে বলতে মারসাদ আদিরার দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। আদিরা ভয়ে তাড়াতাড়ি মাথা দুই দিকে নাড়ায়। তারপর থামে মারসাদ। কেমন গম্ভীর হয়ে যায় তার মুখশ্রী। সে আদিরাকে জিজ্ঞাসা করে,

“তুমি কি চাও? আমি তোমার সামনে না আসি?”

মারসাদের হঠাৎ এরকম প্রশ্নের মাহি ও আহনাফ অবাক হয়। মাহি আহানাফকে ফিসফিসিয়ে শুধায়,
“আপনার বন্ধু কী করতে চাইছে বলেন তো?”

আহনাফও ফিসফিস করে চিন্তিত হয়ে বলে,
“আমি কীভাবে জানব? তোমার ভাই, তুমি বলো? তোমার ভাই কি করতে চাইছে? আর তোমার ভাইয়ের মুড তো তুমি বোঝই!”

আহনাফের থেকে এরকম উত্তর পেয়ে মাহি বেশ বিরক্ত হয়। সে বিরক্তি নিয়ে বলে,
“দাভাইয়ের মুড তো আমার থেকে ভালো আপনি বোঝেন।”

আহনাফ অসহায়তা প্রকাশ করে। মাহি তা দেখে মুখ বাঁকিয়ে সামনের দিকে মনোনিবেশ করে।

মারসাদ আবার শুধায়,
“কী হলো? বলো! আমি তোমার সামনে না আসলে তুমি খুশি হবে?”

আদিরা জবাব দিতে পারছে না। তার মন কেমন যেন হাঁসফাস করছে। একবার চাইছে না বলতে আরেকবার চাইছে হ্যাঁ বলতে। নিজের মনের দোটানায় ঝু*লন্ত সে! অস্থির লাগছে তার। মুখ দিয়ে একটা কথাও বের করতে পারছে না। আদিরা কিছু চিন্তা করতে না পেরে এক পা দু পা করে আবার পেছোতে লাগলো। কিন্তু মারসাদ স্থির। সে একদৃষ্টিতে আদিরার পেছানো দেখছে। অতঃপর আদিরা আবারও সেখান থেকে একপ্রকার পালিয়ে গেলো। আদিরা যেতেই মারসাদ হতাশ নিঃশ্বাস ছাড়লো। মাহি এগিয়ে এসে রুষ্ট স্বরে মারসাদকে শুধালো,

“তুই কি করতে চাইছিস, দাভাই? হুট করে এগুলো বলছিস।”

মারসাদ কাটকাট জবাব দেয়,
‘আমি তো কিছুই করতে চাইছি না। ও কী চাইছে তাই জানতে চাইলাম।”

মাহি আবার কিছু বলতে নিলে আহনাফ এসে মাহির হাত ধরে ইশারায় থামতে বলে। তারপর সে মারসাদকে বলে,
“আদিরা চাইছে না সামিরার সামনে অভিনয় করতে। তাছাড়া আমারও মনে হয় আর অভিনয়ের তো দরকার নেই। তুই আদিরাকে সরাসরি বলে দে যে তুই ও-কে ভালবাসিস। তাহলেই তো….”

আহনাফ এবারও তার বক্তব্য শেষ করতে পারলো না! মারসাদ বলে উঠে,
“আমি একটু কুমিল্লা যাব। দুই-তিন দিন থাকব। গুরুত্বপূর্ণ কাজ আছে। মেয়েদের হোস্টেলে সুমি, মৌমিদের সাথে মাহিকে রাখার ব্যবস্থা করে যাব। এখানকার যা যা দরকার তুই তো সামলে নিতেই পারবি। সামলে নিস প্লিজ।”

আহনাফ ও মাহি বুঝতে পারে না হুট করে মারসাদ এসব কেন বলছে! মাহি জিজ্ঞাসা করে,
“হঠাৎ কী হয়েছে, দাভাই? তুই কুমিল্লা কেন যাবি?”

“হ্যাঁ কী হয়েছে? আমাকে তো বলিসনি কিছু।”

মারসাদ ওদের প্রশ্নের জবাবে বলে,
“হঠাৎ করেই যাওয়ার প্রয়োজন পড়লো। তাই যাচ্ছি। এখন তো বলছি। আর আমি জানি, আমার অনুপুস্থিতিতে তুই সব সামলে নিবি।”

আহনাফের কাঁধ চাঁ*প*ড়ে মারসাদ চলে যায়। মারসাদ যেতেই আহনাফ মাহিকে বলে,
“তোমার ভাই খুব মুখচোরা বুঝেছ! আমার কেন যেন মনে হচ্ছে ওর তেমন কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ নেই। কারণ গুরুত্বপূর্ণ কিছু হলে ও আমাকে বলে। আমার কেন যেন মনে হচ্ছে ও আদিরার উপর রাগ করে যাচ্ছে।”

“আদুর উপর রাগ করার কী আছে? দোষ আমার ভাইয়ের। সে আদুকে সরাসরি মনের কথা না বলে তাকে কী না অভিনয় করতে বলে! তাহলে এটা আদুর মতো মেয়ে মানবে? আপনার বন্ধুকে বোঝান!”

তারপর মাহিও চলে যায়। আহনাফ যত্র দাঁড়িয়ে দীর্ঘ হতাশ নিঃশ্বাস ছাড়ে।

——-

লাইব্রেরিতে বসে টেবিলে মাথা নুইয়ে আদিরা মারসাদের গম্ভীর মুখশ্রী ও কথাগুলো ভাবছে। সে কেন উত্তর দিতে পারলো না তাও ভাবছে। তার মন এখনও অস্থির হয়ে আছে। এই অস্থিরতা কেন হচ্ছে সেটাও সে বুঝতে পারছে না। সে তো মারসাদের থেকে দূরত্ব মেনে চলতে চায়। মারসাদের কারণেই সে সামিরার ক্রোধের শি-কার হয়। কিন্তু সে তো এসব চায় না। শান্তিতে ভার্সিটিতে পড়াশোনা করতে চায়। আদিরার চিন্তার জগতে বিচরণের সময় মাহি, রিন্তি ও সাবিহা সেখানে আসে। মাহি এসেই বলে উঠে,

“আমার মনে হয় দাভাই তোকে ভালবাসে!”

নিজের পাশ থেকে এই কথাটা শুনে একপ্রকার চমকে উঠে আদিরা। টেবিল থেকে মাথা উঠিয়ে দেখে পাশে মাহি, সাবিহা ও রিন্তি বসা। আদিরা অবিশ্বাস্য দৃষ্টিতে তাকালে সাবিহা বলে,
“শুধু মাহির না। আমার ও রিন্তির দুজনেরই মনে হয়। এই দেখ তুই ভাইয়াকে দেখতে চাস না বলে ভাইয়া কয়েকদিনের জন্য কুমিল্লা চলে যাচ্ছে!”

আদিরা যেন আরও অবাক হয়। সে অবাক স্বরে শুধায়,
“উনি কুমিল্লা যাচ্ছেন?”

“হ্যাঁ। কাজের বাহানায় যাচ্ছে। কিন্তু আমি জানি তার এখন তেমন কোন দরকার নেই কুমিল্লায়। হলে তো আমি বা তার বন্ধুরা জানতো। এখন তুই যদি গিয়ে দাভাইয়ের সাথে কথা বলিস তাহলে হয়তো দাভাই যাবে না।”

আদিরা থতমত খেয়ে যায়। সে বলে,
“কাজ থাকতে পারে। তোদের বলেনি। এটাকে এতো সিরিয়াস ভাবে নেওয়ার কী আছে? উনার কাজ আছে তাই যাচ্ছে। আর তুইও এতো চিন্তা করিস না। চল ক্লাস আছে, ক্লাসে যেতে হবে।”

তারপর আদিরা ব্যাগ নিয়ে উঠে গেল। মাহি, সাবিহা ও রিন্তি হতাশ হয়ে ওরাও উঠে গেল।

চলবে ইন শা আল্লাহ,
ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন। কপি নিষিদ্ধ। রিচেক হয়নি।

#copyrightalert❌🚫
#এক_শহর_প্রেম_২
লেখিকা: #নুরুন্নাহার_তিথী
#পর্ব_২২
তিন দিন পেরিয়ে গেছে আদিরা একটিবারের জন্যও মারসাদকে দেখেনি। এমনকি ক্যাম্পাসেও দেখা যায়নি। তা নিয়ে ক্যাম্পাসে কানাঘুষাও চলছে। ক্লাস শেষে হাঁটতে হাঁটতে আদিরা ও মাহি ওরা মিনারের কাছে আসে। মাহির চেহারায় চিন্তার ছাঁপ দেখে সাবিহা জিজ্ঞাসা করে,

“কী হয়েছে তোর? কেমন চিন্তিত লাগছে তোকে।”

মাহি হতাশ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলে,
“পরশু সন্ধ্যায় মাকে ফোন করেছিলাম, মা বলেছিল, দাভাই নাকি বিকেলেই কুমিল্লা থেকে রওনা হয়ে গেছে। জিজ্ঞাসা করলো ফিরেছে কী না? আমি বলেছি তখনও ফিরেনি। কিন্তু দাভাই কালও এলো না। আজও এখনও না। মা কালকেও জিজ্ঞাসা করেছিল। আমি আহনাফের বুদ্ধিতে মিথ্যা বলেছি যে, ফিরেছে কিন্তু তার ছেলে এখন আমার ধারেকাছে নেই। যেন তার ছেলেকে কল করে জেনে নেয়। মা বলল, দাভাইয়ের নাম্বারে কল ঢুকে না। এখন আমি কীভাবে বলি যে আমিও দাভাইয়ের নাম্বার বন্ধ পাচ্ছি! কোথায় যে গেছে?”

কথাগুলো শুনে আদিরার মন খুব খারাপ হলো। সে চুপচাপ মাথা নিচু করে রইলো। রিন্তি বলে,
“হঠাৎ করে ভাইয়া যাবে কই? কেউ জানে না?”

মাহি তখন নিজের দৃষ্টি তীক্ষ্ম করে সামনের দিকে চেয়ে বলে,
“কে যে জানে না এমন তো না! আমার তো মনে হয় দাভাইয়ের বন্ধুরা সব জানে। আর ঐ আহনাফের বা*চ্চা তো সবচেয়ে বেশি জানে!”

“আহনাফ ভাইয়ের আবার বাচ্চা হলো কবে? আমি তো তোকে কখনো প্রেগন্যান্ট দেখিনি!”

কথাটা বলেই সাবিহা হেসে ফেলল। সাথে রিন্তিও। মাহি রেগে ওদের কয়েকটা কি/ল ঘু*ষি দিয়েই তবে ক্ষান্ত হলো। তারপর মাহি বলে,
“আমাদের এখন আহনাফের ফোন হাই*জ্যা/ক করতে হবে!”

“কিন্তু কীভাবে?”

“আমার মনে হয় মৃদুল ভাই বা রাফিন ভাইয়ের ফোন হাই*জ্যা/ক করলে ভালো হবে। আহনাফ ভাইয়ের ফোন নেওয়া অত সহজ হবে না।”

“আরে আহনাফের ফোনই লাগবে। তোর কী মনে হয়? আমার দাভাই সবার সাথে এক এক করে কল করে কথা বলবে? যেহেতু ওরা খুব শান্ত আছে, রিল্যাক্সে আছে। তার মানে দাভাই যোগাযোগ করে ওদের সাথে। আর যোগাযোগটা সেই এক ব্যক্তির সাথেই করবে। আর সেটা আহনাফ!”

“কিন্তু উনার ফোন তো নেওয়া খুব টাফ হবে না? ভাইয়া খুব চ*তুর।”

“রবিন ভাই ছাড়া দাভাইয়ের কোন বন্ধু চ*তুর না? হাহ্! আমরা এখন আহনাফের কাছে যাব। তারপর বলব…. কী বলব?”

“কী বলব?”

মাহি হতাশ হয়ে বলে,
“কী বলব সেটাই তো বুঝতে পারছি না! তারউপর যা ধু*রন্ধ*র লোক! বুঝে না ফেলে!”

মাহি, সাবিহা, রিন্তি তিন জনেই চিন্তায় পড়ে গেলো। কিছুক্ষণ পর আদিরা খুব শান্ত স্বরে বলে,
“বলিস, আদিরাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের সাথেই ছিল। হঠাৎ তার হোস্টেলের এক বান্ধবী কল করাতে ভার্সিটির প্রধান ফটকের কাছে গেছিলো। কিন্তু অনেকক্ষণ হলো এখনও আসেনি। আর ফোন বন্ধ বলছে।”

আদিরার মুখ থেকে এমন কথা শুনে মাহি, সাবিহা ও রিন্তি তো অবাক! ওরা তিন জনে আদিরার মুখের দিকে হা করে চেয়ে আছে। তিন জনকে নিজের দিকে এভাবে তাকাতে দেখে আদিরা দৃষ্টি নত করে বলে,

“এতো অবাক হওয়ার কিছু নেই। আমার জন্যই তো এসব হচ্ছে। তাই না? তাই আমাকেই সব ঠিক করতে হবে।”

আদিরার মুখ থেকে হঠাৎ এইরকম কথা শুনে মাহি সাবিহা ও রিন্তি যারপরনাই অবাক হয়। মাহি বলে,
“তোর জন্য কেন হবে? তোর দোষটা কোথায়? সবসময় নিজেকে দোষ দিবি না তো!”

“আমারই দোষ। উনি…”

“চুপ! আরেকবার মুখ দিয়ে এসব উল্টাপাল্টা কথা বলে দেখিস! আসলে কী জানিস, তোরা দুইটাই পা*গল! আর পা-গলের সাথে পা/গলকেই মানায়!”

আদিরা বিপরীতে কিছু বলল না। সে মনে মনে নিজেকেই বারংবার দোষী করতে লাগলো। কিছুক্ষণ পর সাবিহা বলে উঠে,
“মাহি, আদুর আইডিয়াটা কিন্তু খারাপ না। ও কিন্তু বেশ ভালো একটা বুদ্ধি দিয়েছে। তুই চিন্তা করে দেখ, আমরা যদি এখন আহনাফ ভাই, মৃদুল ভাইয়াদের কাছে গিয়ে বলি যে আদিরাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তাহলে উনারা বেশ চিন্তিত হবেন। আর মারসাদ ভাইয়ের অনুপুস্থিতিতে উনারাই কিছু একটা করার চেষ্টা করবেন। আর নয়তো চেষ্টা করবে মারসাদ ভাইয়াকে খবরটা জানাতে। তখনই হাত থেকে ফোনটা নিয়ে নিতে হবে।”

মাহিও ভাবে। অতঃপর বলে,
“মন্দ না। কিন্তু রিস্কি। আমরা তিনজনে পারব না। সুমি আপু, রাত্রি আপু, মৌমি আপুকেও বললে কেমন হয়? আর আদুকে ওদের কাছেই হোস্টেলের রুমে লুকিয়ে রাখি?”

“ঠিক বলেছিস। এটা করলে আরও ভালো হবে। কারণ ছেলেরা গার্লস হোস্টেলে ঢুকতে পারবে না। তাই আদিরা সেখানে সেফলি লুকাতে পারবে। আবার কাজ হয়ে গেলে আমরা আপুদের মধ্যে কাউকে ফোন করে জানিয়ে দিব।”

“একদম তাই। তাহলে চল প্ল্যানে লেগে পড়ি।”

“তা তো লাগবোই কিন্তু রিন্তিকেও একটা কাজ করতে হবে।”

প্ল্যানের মাঝে হুট করে রিন্তির কথা উঠাতে রিন্তি অবাক হয়ে শুধায়,
“আমি? আমাকে কী করতে হবে?”

সাবিহা দুষ্ট হেসে বলে,
“মাহি তো আহনাফ ভাইয়াকে ডিল করবে। আর তুই রাফিন ভাইয়াকে ডি*ল করবি। রাফিন ভাই কিন্তু কম চ*তুর না। এর মা*থা থেকে বেশ প্যা*চালো বুদ্ধি আসে। আর আমি আমার সাথে সুমি আপু বা মৌমি আপুকে নিব। রবিন ভাই তো এমনেই বোকাসোকা। মৃদুল ভাইকে হ্যান্ডেল করা তেমন টাফ হবে না। তবে টার্গেট আহনাফ ভাইয়ের ফোন! ওটা ছি*নিয়ে নিতেই হবে। তবে চারজনেে ফোনই আমরা নিব। গট ইট?”

অতঃপর সাবিহা হাত বাড়িয়ে দিলে মাহি ও রিন্তি হেসে হাতে হাত মিলায়।

——
“সুমি আপু, তোমরা আদিরাকে দুই ঘণ্টার জন্য এখানে রাখবে। আর ওর ফোন কিন্তু সুইচড অফ। আমরা গিয়ে আহনাফ, মৃদুল ভাইয়া, রাফিন ভাইয়া ও রবিন ভাইয়াকে বলব, আদিরাকে প্রায় এক ঘন্টা যাবত খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। হঠাৎ ওর একটা হোস্টেলের ফ্রেন্ড আর্জেন্ট দেখা করতে বলেছিল। তাই ও ভার্সিটির গেটের কাছে গিয়েছিল। তারপর থেকে ওর কোনো খবর নেই। হুট করে ওর ফোনও বন্ধ। বুঝতে পেরেছো?”

সুমি বোকার মতো চেয়ে বলে,
“এতে কী হবে? তোমাদের কি মনে হচ্ছে মারসাদ আশেপাশে কোথাও লুকিয়ে আছে?”

মাহি নিজের কপাল চাঁ*পড়ে বলে,
“আরে আপু, সেটা না। ভাইয়া যেখানেই থাকুক আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে ভাইয়াকে ট্রেস করা। হয় ভাইয়াকে ট্রেস করতে পারব যদি লুকিয়ে থাকে। মানে তুমি যেভাবে বললে। আর যদি না থাকে তাহলে আমরা ওই চার বন্ধুর ফোন আ-ত্ম*সাৎ করব। বুঝতে পেরেছো?”

রাত্রি এসে বলে,
“সব না হয় বুঝলাম কিন্তু যদি ধরা পড়ে যাই? তোমরা ওদের বুদ্ধিকে আন্ডারস্টিমেট করো না।”

রাত্রির কথা শুনে রিন্তি কিছুটা ভীত হলো। কারণ রাফিনকে সে ভুলিয়ে আদিরার হোস্টেলের দিকে একা নিয়ে যাবে। যদি সে ধরা পড়ে? ঢোক গিলল রিন্তি। সাবিহা কিছু একটা আইডিয়া করে মৌমির হাত খ*প করে ধরে। এতে মৌমি আঁতকে উঠে। সাবিহা কিছু একটা আবিষ্কার করে ফেলেছে এমন উত্তেজনা নিয়ে বলে উঠে,

“এই মৌমি আপু, আমাদের সাথে আমরা আশিক ভাইয়াকেও সামিল করব।”

“এ্যাঁ!”

মৌমি যেন বোকা বনে যায়।
“আরে হ্যাঁ আপু। তুমি এখনই আশিক ভাইয়াকে কল করো। তোমাকে কথা বলতে হবে না, আমি সবটা বুঝিয়ে বলব।”

মৌমি ইতস্তত করে।
“কিন্তু ও তো….”

এবার মাহিও সাবিহার সাথে তাল মেলায়।
“কোনো কিন্তু না, আপু। আশিক ভাইয়া সবটা বুঝবেন। আমি জানি। তোমার ফোনটা খালি দাও। আমি কল করছি।”

ওরা মৌমিকে বাধ্য করে আশিকের নাম্বারটা বের করে দিতে। কিন্তু এদিকে মৌমি আশিকের সাথে প্রায় এক দিন যাবত কথা বলছে না। তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছে আশিক বারবার মানানোর চেষ্টা করলেও মৌমি তাকে সুযোগই দিচ্ছে না। কিন্তু এখন মাহি ও সাবিহাকে সেটা কীভাবে বুঝাবে!
এদিকে মৌমিকে দাঁ*ত দিয়ে আঙুলের নখ কা*-টতে দেখে সুমি ও রাত্রি মিটিমিটি হাসছে। রাত্রি সুমির কানে কানে বলে,

“একেই বলে এক তীরে দশ শি*কার!”

সুমিও মিটিমিটি হাসে।

—-
সবাই নিজেদের কাজ বুঝে নিয়েছে। মৌমি আদিরার সাথে হোস্টেলে রয়ে গেছে। সুমি ও রাত্রি আগের থেকেই আহানাফ ও মৃদুলদের সাথে গিয়ে আড্ডা দিচ্ছিল। তখনই সেখানে হন্তদন্ত হয়ে মাহি, সাবিহা ও রিন্তি হাজির হয়। ওদেরকে এভাবে ছুটে আসতে দেখে সবাই কৌতুহলী ও উৎকণ্ঠা নিয়ে তাকায়। সুমি খানিক উৎকণ্ঠিত হয়ে শুধায়,

“কী হয়েছে? তোমরা এভাবে ছুটে আসলে কেন?”

সাবিহা হাঁপাতে হাঁপাতে বলে,

“আদুকে অনেকক্ষণ যাবত খুঁজে পাচ্ছি না। ওর এক ফ্রেন্ড প্রায় ঘণ্টা খানেক আগে ও-কে কল করে আর্জেন্ট ভার্সিটির গেটের সামনে যেতে বলেছিল। ও গেল। তারপর থেকে ওর কোনো খবর নেই। আর ফোনও বন্ধ!”

সাবিহার কথা শুনে আহনাফ, মৃদুল রাফিন ও রবিন ওদের সবার চোখে-মুখে একটা চিন্তার রেখা ফুটে উঠলো।

চলবে ইন শা আল্লাহ,
ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন। কপি নিষিদ্ধ। রিচেক হয়নি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে