#copyrightalert❌🚫
#এক_শহর_প্রেম_২
লেখিকা: #নুরুন্নাহার_তিথী
#পর্ব_৮
মারসাদকে যখন পু*লিশ সাথে করে নিয়ে যাচ্ছে তখন মাহি আদিরাকে ফিসফিস করে বলে,
“দেখ আদু, আমার দাভাইকে এবার পু*লিশ নিয়ে যাচ্ছে। তোকে এবার কিছু বলতেই হবে।”
আদিরা ঢোক গিলে বলে,
“বলব তো। কিন্তু পু*লিশ কি আমার কথা বিশ্বাস করবে? আমার কাছে কোনো প্রমাণ নেই। আমি এজন্যই কাউকে কিছু বলতে চাইনি।”
“প্রমাণ থাক বা না থাক। তুই এখন পু*লিশকে বলবি, ওই ছেলেটা তোকে বিরক্ত করতো, তার জন্য তুই দাভাইকে বলেছিস। তারপর দাভাই ছেলেটাকে শায়েস্তা করেছে।”
“হু।”
তারপর আদিরা পু*লিশকে ডাক দেয়।
“স্যার, আমি কিছু বলতে চাই।”
পু*লিশ অফিসার থামেন। তারপর বলেন,
“আপনার যা বলার থানায় গিয়ে বলবেন। এখন আমাদেরকে আমাদের ডিউটি করতে দেন।”
তারপর পুলিশ মারসাদকে নিয়ে চলে যায়। পুলিশ যাওয়ার পর আহনাফ এসে আদিরাকে বলে,
“ওই ছেলেটা তোমাকে ঠিক কবে থেকে ফলো করে তুমি বলতে পারো?”
আদিরা বলে,
“যেদিন আমরা মাহির সাথে রাতে থেকেছিলাম, তার পরদিন যখন আমি সকাল সকাল চলে এসে স্টুডেন্টের বাসায় পড়াতে যাচ্ছিলাম, তখন ওই ছেলেটা আমাকে ফলো করা শুরু করে। এর আগে আমি ছেলেটাকে কখনো দেখিনি।”
“ওকে। এটাই তুমি পু*লিশকে বলবে।”
আদিরা হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়ায়। তারপর ওরা পু*লিশ স্টেশনে যায়।
____
এদিকে সাগরের কানে যখন পু*লিশের খবরটা আসে, তখন সাগর অট্টহাসিতে ফে*টে পড়ে! সাগর বলে,
“পু*লিশ তো মারসাদকে নিয়ে গেছে। কিন্তু এখন ওই ছেলেটার খোঁজ পেলেই হলো। ওই ছেলেই পারবে মারসাদের অহংকার শেষ করতে। এই স্বপন, খোঁজ কি পেয়েছিস?”
স্বপন বলে,
“দাঁড়ান ভাই, নীলয় ভাই তো গেছে। সাথে রাকিব, মনিরও গেছে। কল কইরা দেখি।”
স্বপন কল করতে নিবে তার আগেই একটা কণ্ঠস্বর শোনা যায়।
“কল করতে হবে না, স্বপন। আমরা চলে এসেছি। ওই ছেলেটাকেও নিয়ে এসেছি।”
সাগর নীলয়ের কন্ঠ শুনে উঠে বসে। নীলয়, রাকিব ও মনিরের সাথে আরেকটা ছেলে। ছেলেটার হাল দেখেই বুঝা যাচ্ছে, এটাই ওই ছেলে। সাগর ছেলেটাকে জিজ্ঞাসা করে,
“নাম কী তোর?”
ছেলেটা জবাবে বলে,
“দেলোয়ার হোসেন।”
সাগর আবার জিজ্ঞাসা করে,
“তোকে ওই মারসাদ আসলে মা*রলো কেন? কী করেছিলি?”
“আমি কিছু করি নাই। ওই হা*রামি আমারে হুদাই মা*রছে।”
দেলোয়ার ছেলেটা ফ্লোরের দিকে চঞ্চল দৃষ্টি রেখে কথাটা বলে। সাগর উঠে দেলোয়ারের কাছে আসে। তারপর হুট করে ছেলেটাকে সপাটে একটা চ*র মে*রে বলে,
“আমাকে কি তোর ব*লদ মনে হয়? তুই বললি আর আমি বিশ্বাস করে ফেললাম? তুই কিছু করিস নাই তারপরও মা&ইর খাইছিস! মারসাদ তোরে মা*রছে! মারসাদ কাউরে শুধু শুধু মা*রবে? তোর এই বয়ান পু*লিশে বিশ্বাস করলেও এই সাগর বিশ্বাস করে না। শোন, পুরা ক্যাম্পাস জানে মারসাদের চির প্রতিদ্বন্দ্বী এই সাগর। তারপরও আমি জানি মারসাদ কেমন। ও রগচটা কিন্তু অন্যায় সহ্য করে না। আর এইজন্যই ওরে আমার পছন্দ না।”
দেলোয়ার গালে হাত দিয়ে নিচের দিকে চেয়ে ফুঁ*সছে। সাগর এবার দেলোয়ারের দুই গালে এক হাত দিয়ে চেপে ধরে মুখটা উঁচু করে। তারপর বলে,
“সত্যি কথা বল। আর তুই আমাদের হয়ে কাজ কর। তাহলে দেখবি তোরও লাভ আমাদেরও লাভ। তুই যেটা করতে চাইছিলি সেটাও পাবি। আর মারসাদের উপর প্রতিশোধও নিতে পারবি।”
দেলোয়ার সাগরের মুখের দিকে চেয়ে থাকে। সাগরকে দেখে দেলোয়ারের মনে হচ্ছে তার মতোই। তাই সে বলে,
“আমি কয়েকদিন ধইরা একটা মাইয়ারে ফলো করতেছি। আমার ওরে ভাল্লাগছে। মাইয়াডা এইখানেই পড়ে।”
সাগর দেলোয়ারকে ছেড়ে দিয়ে নাক ছিটকে বলে,
“মেয়ের খ*প্পর! মেয়ের খ*প্পর হলে সেটা ভার্সিটি পর্যন্ত কেন আনলি? রাস্তাই তো ছিল! তো বল, কোন মেয়ে? নাম কী? কোন ডিপার্টমেন্ট? কোন ইয়ার?”
“জানিনা আমি কিছু। ওই মাইয়ারে ফলো করতাম। আর ওই মাইয়ারে আমি আমার এলাকায় সেইদিনই প্রথমবার দেখছি। আর ওই মারসাদরে তো প্রায়ই দেখি, আমার এলাকাতেই থাকে। ওর বইনেও থাকে জানি। আমি তো ওর বইনের দিকে নজর দেই নাই। তারপরও হা*রামি আমারে পি*ডাইছে।”
“হয়তো মেয়েটা মারসাদের কাছে কম*প্লেন করেছে। ক্যাম্পাসে কোনো কিছু হলে সবাই তো ওর কাছেই যায়। আচ্ছা সেসব বাদ দে। এখন তুই আমার সাথে পু*লিশ স্টেশনে চল।”
দেলোয়ার কিছুটা ভয় পেয়ে যায়। সে বলে,
“না না। আমি পুলিশের কাছে যামু না।”
এবার নীলয় বলে উঠে,
“কেন? পু*লিশের কাছে যাবি না কেন?”
“যামু না কইছি যামু না।”
রাকিব বলে,
“তুই কি চো*র, গু*ন্ডা?”
দেলোয়ার চুপ করে থাকে। সাগর কিছু একটা ভেবে বলে,
“শোন, কিচ্ছু হবে না। তুই গিয়ে এটেম্প্ট টু মা*র্ডার কেস করবি। আর তুই যদি সামান্য চো*র, গু*ন্ডাও হোস তাতে সমস্যা নেই। আমরা আছি তো।”
তারপর ওরা দেলোয়ারকে রাজি করিয়ে পু*লিশ স্টেশনে নিয়ে যায়।
_____
পু*লিশ স্টেশনে গিয়ে আদিরা পু*লিশ অফিসারকে সবটা বলে। সব শুনে পু*লিশ অফিসার বলেন,
“দেখুন মেম, আমি আপনার অভিযোগটা বুঝতে পারছি। রাস্তাঘাটে এখন অনেক লা*ফা*ঙ্গারা ঘুরে বেড়ায়। যারা মেয়েদেরকে বিরক্ত করে। কিন্তু একটা ভার্সিটি ক্যাম্পাসে এভাবে মা*রামা*রি করাটা তো ঠিক না। এখন যাকে মা*রা হয়েছে, সে যদি এসে মা*র্ডার কে*স দেয়! তাহলে? আপনি ই*ভটি*জিংয়ের কে*স দিলেও, মা*র্ডার কে*স তো…” (আমার জ্ঞা*নের পরিধি সী*মাবদ্ধ। ভুল হলে কমেন্টে জানিয়ে দিবেন।)
মৃদুল বলে,
“স্যার, এখন আমরা কি করতে পারি?”
“উকিল ধরে দেখুন, কী করতে পারেন। আমরা আমাদের ডিউটি করছি। জামিনে তাকে বের করতে পারবেন, কিন্তু মা*র্ডার কে*সের মা*মলা হলে কোর্ট পর্যন্ত যাবে।”
তখনই সাগররা দেলোয়ারকে নিয়ে পুলিশ স্টেশনে প্রবেশ করে। তারপর সাগর উচ্চস্বরে বলে উঠে,
“মা*র্ডার কে*সই তো, অফিসার! একটা ছেলেকে ভার্সিটি ক্যাম্পাসের গেইটের কাছে জনসম্মুক্ষে বেধড়ক মা*রপিট করে বেহাল অবস্থা করাকে আর কী বলে? আপনি দেখুন, ছেলেটার অবস্থা! ছেলেটার কী দোষ ছিল? সে তো কারো কোন ক্ষতি করেনি।”
দেলোয়ারকে দেখেই মারসাদ জে*লের ভেতরের রড খিঁচে ধরে। রবিন মারসাদকে ইশারায় শান্ত হতে বলে। পু*লিশ অফিসার সাগরকে উদ্দেশ্য করে বলে,
“আপনি কে?”
“আমি যেই হই, অফিসার! আমার পরিচয়ে কী? আমার ভার্সিটির ক্যাম্পাসের গেইটে একটা বাইরের ছেলেকে বেধ*ড়ক ভাবে আমারই ব্যাচমেট এভাবে মা*রবে সেটা আমার জন্য লজ্জাকর। ছেলেটা এসে আমার কাছে বিচার চেয়েছে। এখন আমি তো আর পু*লিশের উর্ধ্বে না। তাই আমি ছেলেটাকে নিয়ে পুলিশের কাছে এসেছি। আপনারাই এর বিচার করবেন।”
মারসাদের বন্ধুমহল সাগরের হঠাৎ এই পরিবর্তন দেখে হা হয়ে গিয়েছে! রিহান তো মৃদুলকে চি*মটি কে*টে নিশ্চিত হতে চাইছে! বদলে সে মৃদুলের একটা চা*টাও খেয়েছে! পু*লিশ অফিসার বলেন,
“আপনি ভাল কাজ করেছেন। আপনার বন্ধুও যদি এই কাজটা করতো তাহলে হয়তো আজকে তিনি জেলের ভিতরে থাকতেন না।”
পু*লিশের কথা শুনে সাগর মারসাদের দিকে তাকিয়ে শয়তানি হাসি হাসে!
চলবে ইন শা আল্লাহ,
কপি নিষিদ্ধ। ভুল, ত্রুটি ক্ষমার নজরে দেখবেন। রিচেক হয়নি।