#এক_মুঠো_সুখপ্রণয়
#লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)
#পর্ব_১৩
“এ মেয়ে নাও ফোনে তোমার নাম সেট করো, অধিকার খাটাও, নিজের তরফদারি করো। তবুও মুখ ফুটে আমার সাথে কথা তো বলো। একদম চুপ করে থাকলে তোমার চুপের ঠেলায় আমার ডায়রিয়া হয়ে যাবে। এই নাও ধরো আমাদের ফোন। যখন ইচ্ছে চালাইও। কিন্তু মুখ লটকিয়ে রাখিও না। তুমি কথা না বললে আম্মুও কথা বলবে না। এই মেয়ে শুনতেছো কি বলছি? কি গো মরেটরে গেলা নাকি?”
বউয়ের বাহুডোরে মৃদু স্পর্শ করে নেড়ে দেখল শারফান। আমি ঘাপটি মেরে শুয়ে আছি। এসি চলছে ঠান্ডাও লাগছে। তবুও কাঁথা শরীরে জড়ায়নি। স্বামীর মুখ থেকে পাগলাটে কথাবার্তা শুনে ভেতরটা আনন্দে ফেটে যাচ্ছে। শারফানের হঠাৎ ঐ ছেলের কথা মনে পড়ে গেলো। দাঁত কিড়মিড়িয়ে তৎক্ষণাৎ জাপ্টে ধরল বউকে। হতভম্ব হয়ে গেলাম। লোকটা এভাবে পেঁচিয়ে নেবে ভাবতেই পারিনী। শরীর জুড়ে কাঁপন ধরল মত অবস্থা। ঢোক গিলে তার হাত সরানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু তিনি ছাড়ছেই না। বিধেয় আমিও ন্যাকামি করে বললাম।
“এখন কেন আমায় চেপে ধরে রাখছেন? যাইতাছেন না কেন আপনার জারিফা নামক ভূতের কাছে? ওহ ঐটা তো আবার আমার ছোট দেবরানী হয়ে গেলো। ইশ্ স্বামী আপনার মত আনলাকি আর দুটো নেই। বউ পেয়েছিলে তারেও হারালে , প্রাক্তন পেয়েছিলে সেটাও বের হলো বহুরুপী। বলি তাই কি এখন আমায় প্রয়োজন মনে করছেন?”
“বউ আমার তার কাছে যাওয়া তাকে স্পর্শ করার পূর্ণ অধিকার আমার আছে। আর ভালোই ভালোই সবটি ভুলে মানিয়ে নাও তবেই দেখো না কেমনে তোমাতে মজে থাকি।”
রাগে শরীর জ্বলছে উঠল তার কথায়। ঝাড়া মেরে সরিয়ে দিলাম তাকে। সে পিছিয়ে গেলো কিছুটা। তবে বিছানায় ছিল। ক্রন্দন প্রায় চোখ নিয়ে বললাম।
“পুতুল পেয়েছেন হ্যা? যখন খুশি কাছে আসবেন যখন খুশি দূরছাই করবেন। আপনার কাছে কেনো এসেছি জানেন? কারণ দূরে থেকে কষ্ট দেওয়ার চেয়ে কাছে থেকে কষ্ট দেওয়ার মজাই আলাদা। এই রুম এই বাড়ির ভেতরে আমার আনাগোনা চলবে। তবে আপনার আর আমার সম্পর্কের গভীরতা কেমন চলবে জানেন? বলছি মন দিয়ে শুনেন। বউকে কাছের থেকে দেখবেন, তবে ছুঁতে পারবেন না। বউয়ের হাতের রান্না খাবেন তবে ছুঁয়ে প্রশংসা করতে পারবেন না। বউয়ের ইস্ত্রি করা জামা কাপড় পরতে পারবেন কিন্তু সেখানে পাবেন না কোনো মায়া। বউয়ের গোছানো সব জিনিস হাতের নাগালে পাবেন তবে বউকে কাছে ডেকে জিনিসটা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারবেন না। সর্বশেষে বউকে একই ছাদের নিচে একই বিছানায় এক সাথে পাবেন তবে বুকে জড়িয়ে ধরার মত দুঃসাহসিকতা দেখাতে পারবেন না।”
কথাগুলো তিক্ত শুনালেও আমার কিছু করার ছিল না। বিয়ের পর থেকে তিনি আমায় অবহেলার পাত্রে বসিয়ে দিয়ে ছিলেন। এখন সেই তিনি কাউকে না পেয়ে আমায় দয়ার নজরে দেখে কাছে পেতে চাইছেন তা হতে দেবো না। রাগ আমারও আছে। শারফান স্বাভাবিক চোখেই চেয়ে রইল। মৃদু হেসে উঠে দাঁড়ায়। আলমারির কাছে গিয়ে আলমারির দরজা খুলে ভেতরে থেকে কোলবালিশ বের করে। বিছানায় বর্ডারের মত রেখে সন্তপর্ণে বসে বিছানায় হেলান দিলো। তার কার্যসিধি দেখতে থাকলাম। শারফান ফোনের ওয়াল পেপারে তার সুতি থ্রিপিচ পরা একটি হাসির ছবি লাগিয়েছে দেখে অবাক। আগে তো সেই জায়গায় জারিফার ছবি ছিল। তবে পরিবর্তন করলেন কবে তিনি? শারফান ফোনের কাজ সেরে সেটি আমার কাছে এগিয়ে রাখল। নিজের মত উঠে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। আমার কষ্ট হচ্ছে। যতই স্বামীকে নিয়ে রাগ জেদ দেখাই না কেনো মনের মধ্যে তাকে নিয়ে বুনা স্বপ্নের সুতোর গভীরতা খুব প্রখর। ফোনটি হাতে নিয়ে চালু করতেই ভেসে উঠল স্বামী আর আমার দুজনার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকার ছবি। আরে এটা কে তুলে ছিলো? এমন ছবি তো শারফান উঠায়নি। তবে কি শাহানা? হতে পারে ভেবে পুরো ফোন ঘেঁটে জারিফার কোনো চিহ্নটুকু পেলাম। হঠাৎ কারো গম্ভীর গলায় চট করে ফোনটি রেখে দিলাম। তিনি হালকা কেশে ভাতের থালা হাতে নিয়ে এসে বিছানায় বসল। থালায় সুন্দর করে তরকারির সাথে ভাত রাখা। শারফান মেখে এক লোকমা আমার দিকে বাড়িয়ে দিলো। থমথমে চেহারা নিয়ে তাকালাম। শারফান মুচকি হেসে বলে,
“ঝগড়া বলো, অভিমান বলো সবটা আমার সাথেই করো। এমন কি এই বাড়ির ভেতর থেকেই করো। তাতেই আমি খুশি থাকব। তবে আমার কর্তব্য হতে আমি পিছু হবো না। বউকে নিজ হাতে খাওয়ে দেওয়া স্বামীর জন্য সুন্নাত। তা থেকে তুমি আমায় বিরত রাখতে পারবে না জানেমান।”
শেষ শব্দটা শুনে পুরো শরীর জুড়ে লাজুকতা ভর করল। মাথা নুইয়ে অন্যদিক তাকিয়ে রইলাম। হঠাৎ গালে ঠোঁটের স্পর্শ পেয়ে মুখ হা করে তার দিকে তাকাতেই মুখের ভেতর ভাতের লোকমা পুরে দিলো শারফান। সে বাঁকা হেসে বলে,
“আরো মুখ ফিরিয়ে নাও। আমার জন্য তো লাভে লাভ। একের পর এক চুমু দিয়ে তোমার গাল আর গাল রাখব না। টমেটো সস বানিয়ে দেবো ইয়াম্মমিইই।”
জ্বিভ বুলিয়ে ইশারা করল শারফান। তৎক্ষণাৎ ইতস্তত হয়ে খেতে লাগলাম। লোকটার উপর বিশ্বাস নেই সত্যিতে আমার গালে হামলা চালাবে। শারফান মনেমনে হাসল। সে ভেবেই নিলো তার আজ থেকে মিশন একটাই। ‘মিশন একটা বউ পটানো’। আমার খাওয়া হয়ে যাওয়ায় মাথা নেড়ে ‘হয়ছে’ বললাম। শারফান নিজের মত স্বাদ নিয়ে খেয়ে নিলো। হাতের আঙ্গুল চেটেপুটে খেয়ে বলে,
“আজকে ফাস্ট ডে তাই নিজ হাতে খাওয়ালাম পরের বার তুমি আমাকে খাওয়াবে।”
বলেই শারফান চুমুর ইশারা করল। করেই দাঁড়িয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। আমি আর রুমে বসে থাকতে পারলাম না। লোকটার এতটা অধঃপতন হয়েছে। ভয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম। কেননা লোকটা সামনে পেলে দুষ্টুমি করতে উদ্যত হতো। শারফান রান্নাঘরে এসেছে থালাটা ধুয়ে নিতে। থালাটা রেখে খেয়াল করল তার বউ চুরিচুপে শাহানার রুমে যাচ্ছে। যা দেখে হেসে উঠল শারফান। শেরহাজ সবে মাত্র বাড়ির ভেতরে এসেছে। শারফান কে একলা হাসতে দেখে ভ্রু কুঁচকে তার নিকট এগালো। ছোট ভাইকে দেখে শারফান নিজেকে স্বাভাবিক করে নিলো। মৃদু হেসে বলে,
“টিউশনি করে এসেছিস খেয়ে নেয়। রান্না করা আছে। তোর ভাবীর সাথেও দেখা করিস।”
শেরহাজ খুশি হয়ে শারফান কে জড়িয়ে বলে,
“সত্যি ভাই ভাবী ফিরে এসেছেন?”
পরক্ষণে তার মুখে কালো মেঘের ছায়া আনাগোনা হলো। মাথা নুইয়ে বলে,
“আমি কোন মুখে ভাবীর কাছে ক্ষমা চাইবো বলো? তুমি একটু আগে ভাবীকে বুঝিয়ে পুরো ঘটনা বলিও। তাহলে আমি সাহস পাবো।”
শারফান তার ছোট ভাইয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,
“চিন্তে করিস না। তোর ভাবী এখন শাহানার রুমে। সেই সবটা খুলে বলবে। যা ফ্রেশ হয়ে নেয়। দীর্ঘ তিন ঘণ্টায় তোর শার্টের থেকে ঘামের দুর্গন্ধ আসতেছে। বলেছিলাম রাস্তাঘাটে না হেঁটে রিকশা করেই চলে আসতেছে না হয় টেম্পু করে। তুই তো আমার কথা শুনিসই না।”
বড় ভাইয়ের কথায় শেরহাজ লাজুক হেসে বলে,
“এখন থেকে মেনে চলতে হবে তো ভাইয়া। তোমার ছোটু আরেক ছোটুর বাপ হতে চলেছে।”
শারফান ভ্রু কুঁচকে তাকালো। সে আসলে ঠিক শুনেছে কিনা বোঝার দায়ে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। শেরহাজের কথার অর্থ বুঝতে পেরেই চিল্লিয়ে বলে,
“কিই তুই তুই তুই তুততততুই আরেক ছোটুর বাপ?”
শারফান তার ছোট ভাইয়ের গায়ের চারপাশ ঘূর্ণন দিয়ে তাজ্জব বনে গেল। ধপ করে রান্নাঘরে থাকা চেয়ারে বসে বলে,
“এই বেয়াদব তোর বয়স কত-রে? এত বড় কাম করতে তোর বিবেকে ভাবিস নাই একবারও ঐ ছোট মেয়ে এত বড় বোঝা বহন করতে পারবে কিনা?”
“আরে ভাই বয়সের কি যায় আসে? আমি তোমার চেয়ে গুনে গুনে চার বছরের ছোট। অর্নাসের আর একবছর আছে। তাতে কি যায়? বাপ হচ্ছি এতেই খুশি। তোমার আগে আমিই চক্কা মেরে দিলাম ভাইয়া।”
শেরহাজ দুষ্টুমির চটে দাঁত কেলিয়ে হাসল। শারফান দাঁত কিড়মিড়িয়ে বলে,
“বেয়াদব কোথাকার। মেয়েটার বয়স তোর ভাবী চেয়ে একবছর কম। আর এক বছর অপেক্ষা করতি। তা না করেই তোর থেকে তোর কাম সারতে হলো?”
“উফ ভাইয়া ঝগড়া লাগাছো কেন? সে রাতে ঐ মিমলিকে তোমার রুমে ঢুকতে দেখে মাথা পাগলায় গেছিলো। ঠিক ভুল কি আর খেয়াল করছিলাম নাকি যতসব!”
শারফান উদাস হয়ে বলে,
“হায় কপাল দেখলা আম্মু তোমার ছোট ছেলেও বাপ হয়ে যাবে। আর এদিকে আমার বিয়ের পাঁচ মাস অতিক্রম হবে। এখনো আদর করার সুযোগ শুদ্ধ পেলাম না। মেয়েটা একটা চিজ। একেবারে ধানি লঙ্কা। রুমের ভেতর খোঁটা মারতে মারতে আমার ব্রেনলুজ করে দিচ্ছে। যেনো আমি ইচ্ছে করেই দোষগুলো করে ছিলাম।”
শেরহাজ শয়তানি হেসে বলে,
“ভাইয়া তোমাকে একেবারে ফকিরবাবার মত লাগছে। বাহিরে একটা থালা নিয়ে বসায় দিলে মাসে শতখানেক কামাই করতে পারবা। ওহ না এরুপে পীর বাবার মতও লাগছো। পীরগিরি করতে বসে যাও। এটাই বেস্ট হবে। বউকে বশ করে ছয় চক্কা মেরে জ্ঞান ফিরিয়ে বলবা, শেষ তুমি জিতলে। এত চিন্তা করিও না ভাই চলো তোমাকে পীরগিরির ট্রেনিং দেয়।”
শেরহাজের ফাজলামি শারফান ভালোই ধরতে পেরেছে। রাগে তৎক্ষণাৎ দাঁড়িয়ে শেরহাজকে ধাওয়া করতে লাগল। শেরহাজও মা*ই*রের ভয়ে এদিক ওদিক ছুটছে। উপায়ন্তর না পেয়ে শাহানার রুমের ভেতর ঢুকে পড়ল। চমকে গেলাম দুভাইয়ের কাণ্ডে। দুজনে একে অপরকে ধাওয়া কেন করছে বুঝছি না। এতক্ষণ যাবত শাহানার কাছ থেকে জারিফার বহু রুপীর কাহিনি শুনেছি। সে যে আমার ছোট ননদীনি বুঝতে পারলাম। তবে ননদীনি আর ধরা যাবে না দেখতে গেলে জারিয়া ওরফে মিমলি এখন আমার দেবরানী। শেরহাজ কৌশলে শারফান কে জোরেসরে ধাক্কা মারল। তাতে শারফান হোঁচট খেয়ে বিছানায় আমার উপর পড়ে যায়। লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)থমকে গেলাম আমি। কি হলো এটা? শারফানও হতবাক। শেরহাজ আপনমনে ‘ইয়েস’ বলে শাহানাকে ইশারা করে রুম থেকে বের করিয়ে আনল। আমার হাত কাঁপছে। লোকটার শরীরের থেকে লাক্সের ঘ্রাণ আসছে। বোধহয় গোসল করেছে। আফিমের ন্যায় আমার শরীরে উত্তেজনার সৃষ্টি হচ্ছে। এত মাস স্বামী সোহাগ হতে বঞ্চিত। তার উপর স্বামীর কাছ থেকে প্রেমের অনুভূতি পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা আমায় জর্জরিত করে দিচ্ছিল। আজ এতটা কাছে লোকটার আগমনে আমি নিয়ন্ত্রনহীন হয়ে পড়ব। ঢোক গিলে তার চোখের থেকে চোখ ফিরিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে বললাম।
“দদদেখুন উঠে পড়েন। আমি যেতে চাই।”
শারফান এর কথাটা পছন্দ হলো না। সে আয়েশ করে নিজের শরীরের ভর ফেলে বলে,
“কোথায় যেতে চাও সেটাও বলে দাও জানেমান। বুকে নাকি অন্য কোথাও?”
বিস্ফোরিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললাম।
“ছিঃ কি বলছেন কোথায় যেতে চাইবো? বলছি সরেন।”
“উহুম দেখছি আমার বউ খুব নির্লজ্জ। আমি বলেছি কোথায় যেতে চাও। সে ছিঃ ছাঃ করে অন্যকিছু বুঝে নিয়েছে। আচ্ছা অন্যকিছু কি বুঝেছো একটু বলবে জানেমান?”
কথার পরেই চোখ টিপ মারল শারফান। লজ্জায় আমতা আমতা করে চট করে ধাক্কা মারলাম তাকে। লোকটা উবুর হয়ে অন্যপাশে শুয়ে গেলো। আমিও নিজেকে ঠিক করে উঠে দাঁড়িয়ে গেলাম। তার দিকে আঙ্গুল দেখিয়ে বললাম।
“একদম গলানোর চেষ্টা করবেন না। আমি আপনার কাছে কোনো ভাবেও ধরা দেবো না বুঝলেন?”
শারফান বাঁকা হেসে বলে, ‘তবে এসে দেখাই!”
চমকে সুরসুর করে রুমের দরজা খুলে বেরিয়ে গেলাম। ছিঃ চরম অসভ্য হয়েছে স্বামী তার।
চলবে…….
#এক_মুঠো_সুখপ্রণয়
#লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)
#পর্ব_১৪
“এই জামাই এতো পালাই পালাই করছো কেনো হ্যাঁ? ভয় পাচ্ছেন কেনো? দুনিয়ার যে কোণেই লুকিয়ে থাকেন না কেন আজ আপনার দুর্ভাগ্য স্বচক্ষে দেখিয়ে দিচ্ছি। আমি আপনার প্রাক্তন হয় তাই না! কলিগদের সাথে এসবনি কথা বলেন?”
জয়নাল মিয়া শুনেই চোখ বড়বড় করে তাকিয়ে চুপটি করে বসে গেলেন খাবার টেবিলে চেয়ার টেনে। শাহানাকেও চুপ করে খাওয়ার জন্য ইঙ্গিত দিলেন। আমি ঝাড়ু হাতে নিয়ে রুমের ভেতর ডাইনি রুপে দাঁড়িয়ে আছি। স্বামী আমার অথচ বাহিরে আমায় নিয়ে ঠাট্টা মশকারী মারে সাহসের শেষ নেই তার। অন্যদিকে আলমারির ভেতর ঘাপটি মেরে বসে আছে শারফান। নিজেই কপাল চাপড়ে নিজেকে গালি দিচ্ছে বেচারা। আনমনে বিড়বিড় করে বলে,
“ধ্যাঁত মাইলের পুলা পাইন কোন কুলক্ষণে তাদের কে হেল্প করতে এনে ছিলাম। গাধার দলবল একেবারে আমার বিয়ের বারোটা বাজিয়ে রফাদফা করে দিলো।”
শারফান উদাস হয়ে ভাবান্তর হলো। তার বউয়ের আগমনের আজ গুনে গুনে এক সপ্তাহ অতিক্রম হয়েছে। সে না পারল বউকে মানাতে, না পারল বউকে আদরে জাপটে নিতে। রাতবিরেতে হাত-পা ছুড়াছুড়ি করে এক প্রকারে কাবাডি খেলে মেয়েটা। যার কারণে সে বিরক্ত হয়ে নিজেই বর্ডার বানিয়ে একপাশে গুটিসুটি মেরে ঘুমাই। আজ ভেবে ছিলো তার লেংটা কালের কলিগ দুটো-রে দিয়ে বউকে পটিয়ে নিবে। দ্বিতীয় বার বউকে আপন করার সুযোগের রাস্তা গড়বে। হলো তার পুরোটা উল্টো। কলিগ দুটোর মধ্যে একজন হলো ফারেজ আরেকজন আরফ। এতটা ফাজিল ছিল তারা ফারজানা কে দেখেই উচ্চস্বরে ফারেজ বলতে লাগল।
“ওওওও তাহলে এই চলছে তোর মনে শারফান। তুই আমাদের গুণবতী ভাবী কে রেখে কিনা অন্য মেয়েকে খোঁজার কথা বলিস। ছিঃ ছিঃ বিবেক দিয়ে ভাববি না। তোর বউ আছে কোথায় তারে দ্বিতীয় বিয়ে করবি। উল্টো তা না করে অন্য মেয়েকে বিয়ে।”
আরফ ফারেজের সাথে তাল মিলিয়ে বলে,
“ছিঃ শারফান তুই আর্দশ শিক্ষক হতে পারলি কিন্তু একজন আর্দশ জামাই হতে গিয়েও পারলি না। এই নিয়ে তোর জীবনের শিক্ষাই বৃথা-রে বন্ধু। তোর দ্বারা আসলেই ভাবীকে বিয়ে করা উচিৎ হয়নি।”
শারফান দু’বন্ধুর পল্টি খাওয়া দেখে হতভম্ব হয়ে গেলো। চট করে পিছন ফেরে দেখল তার বউ অগ্নিশর্মা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ঢোক গিলে বিড়বিড় করে বলে,
“যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যে হয়। আরে গাধার দল তোরা এতকিছু বলে তো ফেললি এবার তোদের ভাবীর হাত থেকে আমিও তোদেরকে রক্ষে করতে পারবো না।”
শারফানকে বিড়বিড় করতে দেখে আরফ আর ফারেজ তার পাশে এসে ফিসফিসিয়ে বলে,
“কি হলো চুপ মারলি কেনো?”
“হাহাহাহা কারণ বাঁশ খালি আমি একলা খাবো না তোরাও খাবি। ওয়েট এন্ড সি।”
বলেই শারফান ঘাপটি মেরে এককোণে ইতস্তত মুখ করে দাঁড়াল। ফারজানা এগিয়ে নম্র গলায় তার স্বামীর বন্ধু দুটোকে বলে,
“আপনারা কি শারফানের ছোটবেলার ফ্রেন্ডস?”
শারফান পেছন থেকে না না করে ইশারা করছে। তার মানে না বলতে ইঙ্গিত করছে। গাধা দুটো মশকারী ভেবে ‘জ্বি ভাবী’ উচ্চস্বরে বলে। শারফান শুনে কপাল চাপড়ালো। ফারজানা দেখে বলে,
“ওহহ তাহলে একটু দাঁড়ান দুজনে।”
এই বলে ফারজানা কোথায় যেনো গেলো। তারা যেদিক দাঁড়ায় আছে সেদিকটা খোলামেলা ঘাসে ঘেরা স্থান। এ জায়গাকে ঘুরন্ত স্থান বলে। এখানে পর্যটক গণ এসে ঘুরতে মজা পান। মূলত শারফান তার বউকে পুনরায় বিয়ে করার জন্য প্লানিং করতেই তার কলিগ দুটোকে ডেকে ছিল। অথচ এরাই তার বউকে মেসেজ করে এই জায়গার ঠিকানা দিলো। যা মাত্রই ফোন বের করে ফারেজ দেখালো। আরফ হেসে কুটিকুটি অবস্থা তার। তারা বেচারা জানেও না কিছুক্ষণের মধ্যে তাদের সাথে কি হতে চলেছে?
আচমকা আরফ ‘আহহহ’ করে চিল্লিয়ে উঠল। তাকে ঝাড়ু দিয়ে বারি লাগাচ্ছে শারফানের বউ। বেচারা ভয়ে গাছের সাথে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে গেল। তার কলিগ দুটো মাইর খেয়ে ভয়ে সুরসুর করে পালালো। শারফানকে আর পায় কে? সেও ছুটে বাড়ির দিকে গেল। তার বউ পেছন থেকে চিল্লিয়ে থামতে বলছে। কিন্তু সে থামল না। সবার কাছেই তার প্রাণ সবচেয়ে প্রিয়। ভাবনা থেকে ফিরল যখন খেয়াল করল। রুম থেকে কোনো ধরনের সাড়া শব্দ আসছে না।। ঢোক গিলে আস্তে ধীরে আলমারির ফাঁকা গর্ত দিয়ে চোখ দিলো। দেখল তার বউ চুপ করে ঝাড়ু হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে রুমের দরজার দিকে। এপাশ ওপাশ তাকাচ্ছি। দাঁত কিড়মিড়িয়ে বললাম।
“ঐ জামাইয়ের বাচ্চা শুনতে পাচ্ছেন না? গত কয়েকদিন আগেও প্রেমের বড়বড় বাণী শুনালেন রোমান্সের র বোঝার ক্ষমতা হয়েছে বললেন। এখন কোথায় আপনার রোমান্সের বয়াম হুম? ঢেঁড়স হয়ছেন একেবারে। আজ ঝাড়ু দিয়ে পিটিয়ে বুঝাবো দ্বিতীয় বিয়ের অর্থ কি?”
শারফান মুখ বাঁকিয়ে কপাল চাপড়ে কণ্ঠ নিম্ন করে বলে,
“জানেমান বিয়েটা আমি তোমাকে করব বলেছিলাম। কিন্তু ঐ ফাজিলের ড্রাম দুটো ইচ্ছে করে আমায় ফাঁসিয়েছে। বিশ্বাস করো তোমার জামাই একেবারে দুধে ধুঁয়া তুলসী পাতা। এইটুকুন পরিমাণ দোষত্রুটি নেই তার মধ্যে। ইনসেন্টের উপর পিএইচডি করছেরে বউ।”
চট করে আলমারির দরজা খুলে গেলো। বউকে সামনে দেখে তার বুক ছ্যাঁত করে উঠল। দুহাত ধরে দরজা খুলে উড়নচণ্ডী রুপে তাকিয়ে রইলাম। শারফান আমতা আমতা করে বলে,
“আমার সোনা আমার মনু তুমি তোমার জামাইকে মারলে তোমার শ্বাশুড়ি রাগ করবে বলছেন।”
“ওহ আচ্ছা তাই আর কি কি বলছেন আমার শ্বাশুড়ি আম্মা একটু শুনি?”
শারফান ঢোক এদিক ওদিক দৃষ্টি বুলিয়ে ক্যাবলামার্কা হাসি দিয়ে বউয়ের বগলের নিচ থেকে বের হয়ে বিছানার নিকট দৌড় দিল। স্বামীর কাণ্ডে তার আগুপিছু দৌড়াচ্ছি। রুমের মধ্যে যেনো টনেডো বয়ে যাচ্ছে। শারফানকে থামতে বলছি কিন্তু সে থামছেই না। শারফানও মনে মনে শয়তানি পরিকল্পনা করে রেখেছে। সে কৌশলে দৌড়ের মাঝেই রুমের দরজা আঁটকে দিলো। এবার সে হুট করে একদিকে দাঁড়িয়ে গেল। শারফানকে হঠাৎ দাঁড়িয়ে যেতে দেখে হোঁচট খেয়ে তার বুকের উপর ঢলে পড়লাম। সে দিগ্বিদিক না ভেবে আমার নাকে জোরে সরে কামড়ে দিলো। ‘আহহহহ’ শারফান এর গাল সরিয়ে চেঁচিয়ে বললাম।
“এই খব্বিশ বেডা আমার নাক কামড়ে দিলেন কেনো! ছিঃ এখন এই লালে ভরা দাগ নিয়ে আমার শ্বশুর ননদীর সামনে যাবো কেমনে? দেবরও তার বউয়ের সাথে ডাইনিং রুমে আছে। ছিঃ বেশরম স্বামী একটা। অন্যকিছু ও করতে পারতেন। এই কি করলেন?”
শারফান লাজুক ভঙ্গি ধরে বলে,
“সত্যি পুনরায় বিয়ে করার আগে বাসর করতে দেবে?”
কথার ছলে সে তার বউয়ের থ্রিপিচ এর উড়নার সেফটিপিনে হাত লাগিয়ে খুলতে নিলো। দেখেই মেজাজ বিগড়ে গেলো। তার হাতে চাপড় মেরে আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। মুখ ঝামটা দিয়ে বললাম।
“হাহ্ আইছে নবাবজাদার বাণী। বিয়ে হওয়ার আগেই দুনিয়ার বদচিন্তা সব মাথায় নিয়ে ঘুরে। খবরদার যদি বিয়ে করার আগে আমায় টার্চ করেছেন তো। সামনের সপ্তাহে ননদীর পরীক্ষা। তার পরীক্ষায় ধ্যান দিন।”
“এ্যাহ শাহানার সামনে পরীক্ষা তোমাকে কে বলল? উল্টো তোমার এনা সামনের সপ্তাহে পরীক্ষা আরম্ভ হবে। ও ম্যাডাম আপনি হয়ত পরিস্থিতির পরিক্রমায় মাসের গণনা করতে ভুলে গিয়েছেন। আপনি ছিলেন না যে মাসে সে মাসেই শাহানার পরীক্ষা আরম্ভ হয়ে শেষ হয়ে গিয়ে ছিল। শ্বশুরবাড়ির খবরাখবর তো রাখতেন না আপনি। দুনিয়ার পরছেলের কোলে ঘরে পড়া ছাড়া। কি যেনো নাম? ওহহ মির্জা তাই না?”
শারফানের কথায় হকচকিয়ে গেলাম।লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)আসলেই আমার মাসের আর শ্বশুরবাড়িতে ঘটে যাওয়া ঘটনার খেয়াল ছিল না। কবে শাহানার পরীক্ষা শেষ হয়ে গেলো জানলামই না। পরক্ষণে নিজের গাফিলতির জন্য অনুশোচনা হলো। মাথা নুইয়ে বললাম।
“আপনার সাথে বিচ্ছেদের পর আমার সবকিছুই বিতৃষ্ণা লাগছিল। হয়ত সে কারণেই আমি জানার প্রয়োজন বোধ করেনি এই বাড়িতে কি হচ্ছে না হচ্ছে সেই ব্যাপারে। আচ্ছা তার মানে সামনে আমার পরীক্ষা? ইয়া আল্লাহ সামনের সপ্তাহেই তো পরীক্ষা। ইশ্ দাদুরবাড়ি গিয়ে পড়ায় আন্ডা পাবার ব্যবস্থা করেছি। বইয়ে হাতই দেয়নি।”
“তাইত বলি তোমার সুটকেস ঘেঁটে কাপড় গুছিয়ে রাখার মাঝে বিন্দুমাত্র ধুলাবালি পায়নি। অথচ বইগুলোর দিকে যখন চোখ পড়লো। সঙ্গে সঙ্গেই বইগুলোর আত্মার মাগফেরাত কামনা করলাম। ভেতরে কখনো খুলে দেখেছো কিনা সন্দেহ ! একজন পরীক্ষার্থীর বইয়ে কোনো মার্কারের দাগ নেই। নিশ্চিত সেই পরীক্ষার্থী একজন মুলা।”
“এই আপনি খোঁটা মা*রা বন্ধ করেন তো। কোথায় কলেজের মাস্টার্স হয়ে আমায় পরীক্ষার জন্য হেল্প করবেন তা না করে খোঁটা দিচ্ছেন। এখনি বইয়ে সবকিছু সাজেশন দেন।”
“হাহ্ বকেও আবার সাজেশন ও চাই। দিতাম না যাও ভাগো।”
আমি হাতে সেফটিপিন খুলে তার দিকে নিশানা করলাম। সঙ্গে সঙ্গে শারফান বাংলা, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান বই নিয়ে বসে দাগানো আরম্ভ করে। আমি দেখে মুচকি হাসলাম। নম্র গলায় বললাম।
“মির্জা আমার ফুপাতো ভাই। তার সাথে আমার কোনো ধরনের সম্পর্ক ছিল না। সেদিন কলে শুধু আপনাকে জ্বালাতন করতেই ওসব কথা বলে ছিলাম। এর বেশি কিছু নয় কসম।”
বলেই রুম থেকে লজ্জায় ছুটে বেরিয়ে গেলাম। শারফান বইয়ে দাগানোর মাঝেই প্রাণমেলে হাসল। শেরহাজ ভাবীকে চলে যেতে দেখে রুমে উঁকি দিয়ে ভাইয়ের হাসি দেখলো। সেও মৃদু হাসল। আনমনে হেঁটে নিজের রুমে চলে আসল। ভেতরে ঢুকতেই দেখল মিমলির উদাসীন মুখখানা। জানালার ধারে বসে পেটে হাত রেখে আছে। শেরহাজ মনে মনে ভাবল।
“না আর কষ্ট না দেয়। সবাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতেই তৎপর হয়েছে। সেখানে আমি কেনোই বা নিজ স্ত্রীকে কষ্ট দেবো। তার চেয়েও বড় কথা এই স্ত্রীর গর্ভে তার সন্তানের আগমন ঘটবে। বাবা-মায়ের মধ্যকার দ্বন্দ্বের মাঝে নিষ্পাপ বাচ্চার কি দোষ? তার মাও তো ক্ষমা চেয়ে সোহাগ পেতে চেয়েছে বারবার। আমিই তো জেদ দেখিয়ে ধমকেছি, দূরে ঠেলেছি। আমি জানি মিমলির ধারণা আমি তার প্রেগন্যান্সির ব্যাপারে জানি না। কিন্তু এ যে মিথ্যা ধারণা।”
শেরহাজ ধীরস্থির পায়ে গিয়ে মিমলিকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরল। হঠাৎ গরম হাতের স্পর্শে মিমলি কেঁপে উঠল। আজ কত মাস পর যেয়ে সে তার স্বামীর স্পর্শ পেয়েছে ভেবে কুল পাচ্ছে না মিমলি। তবুও ঘোরে ধরেছে ভেবে নিজেই ছাড়ানোর জন্য হাতজোড়া খোলার চেষ্টা করে। শেরহাজ ফিসফিসিয়ে বলে,
“বাবুর আম্মুকে কিছুটা সোহাগ দেওয়া যাবে কি?”
কথাটা শুনে মিমলি থমাকানো দৃষ্টিতে পিছনে তাকালো। শেরহাজ স্বাভাবিক ভাবে তাকিয়ে মিমলিকে ছেড়ে দিলো। সন্তপর্ণে দরজা লাগিয়ে মিমলিকে পাঁজাকোলা করে বিছানায় রাখল। মিমলি ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে। এতো কিছুক্ষণ বাদেই চোখ থেকে পানি টপকে পড়তে লাগল। যখন শেরহাজ গভীর স্পর্শ করতে হাত ছুঁয়ে দিলো। মিমলির চোখের জলের স্পর্শে শেরহাজ ফিসফিসিয়ে বলে,
“ওতো ভেবো না আমার বাবুর আম্মু। চুপটি করে আরামে বাবুর আব্বুকে জড়িয়ে নাও।”
মিমলি খুশিতে জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলো। আজ থেকে তার সুখের দিনের গণনা আরম্ভ। তবে তা কতদিন টিকবে সেটা একমাত্র রবই ভালো জানেন!
সন্ধ্যা হওয়ায় নামাজ পড়ে পড়ার টেবিলে চেয়ার নিয়ে বসে বই ঘাঁটছি। তীব্র গরম থেকে ঘার্মাক্ত শরীরে হাতে খাতার বান্ডিল নিয়ে শারফান বাড়িতে ফিরেছে। আজ এইচএসসি ব্যাচের এডমিট কার্ড দিয়ে সব আদেশাধীন করে , নবম শ্রেণীর অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার খাতা নিয়ে আনল। বাংলা আর ইংরেজি মিডিয়াম মিলে প্রায় ষাটটা খাতা। সে যেহেতু রসায়ন বিভাগের প্রশিক্ষক সেহেতু তার পক্ষের খাতাগুলো অন্যদের তুলনায় বেশিই। শারফানকে ক্লান্ত হয়ে সোফায় বসতে দেখে চট করে রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম। শরবত আর নাস্তা বানিয়ে রুমে এসে দেখি শারফান নেই। ওয়াশরুম থেকে পানির শব্দ পেয়ে বুঝলাম লোকটা গোসল করছেন। তাই স্বামীর জন্য কাপড় বের করে বিছানায় রেখে পুনরায় পড়তে বসলাম। হঠাৎ দরজা খোলার শব্দে স্বাভাবিক গলায় বললাম।
“আপনার জন্য শরবত আর নাস্তা রেখেছি খেয়ে নিন ভালো লাগবে।”
কথার মাঝে খেয়াল করলাম ঘাড়ের উপর ঠান্ডা পানির ফোঁটা পড়ছে। ঢোক গিললাম লোকটা আমার এতটা কাছে কেনো? চেয়ারটা টেনে শারফান তার মুখোমুখি এনে আমায় চেয়ারে আটকে নিলো। গলায় স্বর নিম্ন হতে নিম্নতর হয়ে যাচ্ছে। শারফান মোহনীয় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বলে,
“ইউ আর লুকিং টু ইয়াম্মি জানেমান। আই ওয়ানা ইট ইউ ওয়ানডে। নাউ আই উইল গিভ ইউ মাই লাভবাইট।”
চলবে…..