#এক_মুঠো_সুখপ্রণয়
#লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)
#পর্ব_০৭
“আপনার সাথে কেনো বেহায়াপনা করতাম জানেন? কারণ একমাত্র আপনিই ছিলেন আমার জন্যে পবিত্র পুরুষ। সেই আপনার মনে পরনারীর আক্ষেপ থাকলেও আমার কিছু যাই আসতো না। আমি জীবনে শুধু এটাই চেয়ে ছিলাম আপনি আমার হয়ে থাকুন। অতীত নাহয় এককোণে আবদ্ধ থাকবে। আপনার বর্তমান আর ভবিষ্যত হতে চেয়েছি। কিন্তু আপনি সেই জারিফার মধ্যে মজে ছিলেন। আচ্ছা বিগত দু’মাসেও কি আমি আপনার মনে জায়গা করতে পারিনি? এতো এতো খুনসুটির পেছনে কি তবে বাধ্যকতা দায় ছিল? আপনার কাছে আমাকে বেহায়া মেয়ে হতো তাই না? আচ্ছা বলেন তো স্ত্রী স্বামীর কাছেই তো সব প্রকাশ করে। আমিও করতাম এতে বেহায়াপনার কি আছে? আমি আত্মসম্মানি নয় সেটাই কারণ ছিল? এবার হারে হারে বুঝবেন এক মেয়ের আত্মসম্মানবোধ কতটা প্রখর। যে মেয়ে অধিক ভালোবাসতে জানে, সে মেয়ে অধিকের চেয়েও বেশি ঘৃণা করতে পারে। আপনার জারিফা আপনাকে মোবারকবাত। দুজনের নরকের জীবন দুঃখের হোক। ভাববেন না সুখের দয়া করব। সতীনকে আশীর্বাদ করার মত মেয়ে আমি নয়। পরদিকে সতীন যদি আবার হয় বহুরুপী।আপনার জীবন আমার সাথেই স্বর্গের ছিল সেটা আপনি এখন বুঝবেন না। আমার #এক_মুঠো_সুখপ্রণয় এর জন্য আপনি আক্ষেপ করবেন, তড়ফাবেন, কাঁদবেন। তবে আমার কাছ থেকে সুখপ্রণয় আপনি অন্যের বক্ষে কখনো পাবেন না। যাই আল্লাহ হাফেজ।”
কথার ঝুলি বুঝি শেষ। হ্যাঁ শেষ। আর কোনো পিছুটান নেই আমার। নিজের ব্যাগ নিয়ে বাহিরের দরজার কাছে এসে দাঁড়িয়েছি। সামনে রক্তিম জল ভরা চোখ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন শ্বশুর আব্বু আর শাহানা। মুখ গম্ভীর করে শেরহাজ এক কোণায় দাঁড়িয়ে রইল। হয়ত ভদ্রতার খাতিরে বিদায় দিতে এসেছে। তার চোখে আমার জন্য ক্রোধ স্পষ্ট প্রতীয়মান। সেদিকে পাত্তা না দিয়ে শ্বশুর আব্বুর সালাম নিয়ে বললাম।
“আব্বু ওষুধ নিতে কখনো অবহেলা করবেন না। আপনার কিছু হলে আপনার সন্তানরা অসহায় হয়ে পড়বে। আমি চলে যাচ্ছি তার মানে এই নয় আপনি আর শাহানা আমায় ভুলে যাবেন। আপনাদের আমার কথা মনে পড়লে দেখা করতে চলে আসবেন।”
কথাটা বলে সবার চোখের আড়ালে শাহানাকে জড়িয়ে ধরলাম। তার হাতে একটি চিরকুট গুঁজে দিলাম। মাথায় হাত বুলিয়ে বললাম।
“ইন শা আল্লাহ তোমার আগাম জীবন সুখের হোক। আব্বুর খেয়াল রেখো। ভাইদের দিকে নজর দিও। আর সর্বশেষ নিজের যত্ন নিও। আল্লাহ চাইলে কোনো একদিন দেখা হবে।”
“ইন শা আল্লাহ ভাবী। আপনাকে খুব মনে পড়বে। আপনার রান্নার স্বাদ পেয়ে মায়ের রান্নার স্বাদ পেয়েছিলাম। এই স্বাদ আর কেউ দিতেও পারবে না।”
কথাটা রুক্ষ গলায় জারিফার দিকে তাকিয়ে বলে সে। জারিফাকে চাচী শ্বাশুড়ি ব্যান্ডেজ করে নিয়ে এসেছে। শারফান মূর্তির মত দাঁড়িয়ে আছেন। জারিফা গিয়ে তার বাহু আঁকড়ে ধরল। শরীরের রক্ত টগবগে উঠল আমার। তবুও নিয়ন্ত্রণ করে নিলাম। আজ সব পরিস্থিতি আমার হাতের বাহিরে। চোখ বুজে দীর্ঘ শ্বাস ফেলে জারিফা আর শারফান এর নিকট এগিয়ে গেলাম। শারফান কে একপলক দেখে জারিফার দিকে অগ্নি দৃষ্টি দিয়ে বললাম।
“অন্যের স্বামী কে যতই নিজের কাছে টানার চেষ্টা করিস না কেনো সেই পুরুষ কখনো তোর হবার নয়। তুই যে বহুরুপী। তা আমার চেয়ে ভালো আর কেউ জানে না। তাই নিজের রাস্তা মাপার জন্য প্রস্তুত হয়ে থাকিস। নাহলে শাস্তি আমার দিতে হবে না। তোর পাশে দাঁড়ানো এই লোকটাই মারাত্মক ভয়ানক লোক। সত্য জানলে তোর জীবন নরক বানিয়ে দিবে।”
শেষের কথাগুলো জারিফার কানে কানে বলে বাঁকা হাসি দিয়ে চোখ টিপ মারলাম। জারিফার সহ্য হলো না। তাই মুখে ব্যথা নিয়ে বলে,
“যাহ্ তো যাহ্ সংসার ছাড়ার কারণে পাগল হয়ে গিয়েছিস।”
আমি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে ঠোঁট কামড়ে হাসলাম। তার দিকে ঘুরে বললাম।
“নিজেকেই জিজ্ঞেস করে নেহ্ নিজের এই বিধ্বস্ত রুপ দেওয়ার মালিকের কথা।”
মুখ ঝামটা মে*রে ব্যাগ সমেত গাড়িতে উঠে বসলাম। গাড়ির জানালা কাঁচ নামিয়ে শাহানার দিকে তাকালাম। চোখের ইশারায় চিরকুটটি যত্নে রাখতে ইঙ্গিত দিলাম। সেও চোখের ইশারায় আশ্বাস্ত করল। মিটি হাসি দিয়ে নিজের সংসার ছেড়ে চলে যাচ্ছি। ভাবা যায় কারো বিচ্ছেদ হলে মানুষ হাসে? সবাই তো কান্না করে। তবে আমি হাসছি। আসলেই আমি হেসে সংসার ছাড়ছি। গাড়ি ছুটতে লাগল। সংসারের রাস্তা পেরিয়ে যেতেই আপনাআপনি আমার চোখ হতে পানি গড়ালো। মৃদু হেসে চোখের জল মুছে নিলাম। বিড়বিড় করে বললাম।
“আপনি নিশ্চয় খুব খুশি শারফান। আমি ছেড়ে যাচ্ছি। তার মানে এই নয় আমার সংসারে ডাইনির আগমনে নিজের সংসার, নিজের স্বামীর জীবন তছনছ হতে দেবো। সাময়িক সময়ের উল্লাস আপনাদের। তারপর আমার পালা…আপনাকে জয়ের উল্লাসের শুভেচ্ছা চাচী। আপনার একতরফা আক্রমণ আমার উপর মারাত্মক ভাবে ফলল। তবে আমি আল্লাহ বিশ্বাসী। উনি চাইলে নিশ্চয় অন্তিম ফলাফল সুখময় করে দেবেন আমার জন্য।”
হঠাৎ মোবাইলের স্ক্রিনে শারফান এর কল ভেসে উঠল। দেখেও অদেখা করে নাম্বারটি ব্ল্যাক লিস্টে ফেলে দিলাম। সব সোশাল সাইড থেকে শারফান নামক ব্যক্তিকে দূরে সরিয়ে দিলাম। শাহানা একমাত্র বোন হিসেবে ঠাঁই রইবে। মোবাইলটি বন্ধ করে চোখ বুজে নিলাম। অতীত হাতড়ে দুমাস আগের ঘটনা মনে করছি।
অতীত,
শারফান মোবাইল হাতে নিয়ে চালাতে গিয়ে পাসওয়ার্ড দেখে তার মাথা ধরে গেলো। দিনকে দিন তার মোবাইলের উপর কব্জা বসিয়ে রেখেছি আমি। পাসওয়ার্ড মুখে বললেও লোকটা ধরতে পারে না। উল্টো ছ্যাঁত করে উঠে। নাহয় লজ্জা পেয়ে রুমের বাহিরে চলে যায়। যাওয়ার আগে বলে মোবাইলের লক খুলে রাখতে। ইশ্ কি মজা পেতাম। স্বামীর কাছ থেকে ইনিয়ে বিনিয়ে এ নিয়ে প্রায় অনেকবার চুমু খেয়েছি গালে। তা আমার স্বামী জোরপূর্বক দিতো বোঝা যেতো। স্বেচ্ছায় দিলে অবশ্য ভালোবাসার অনুভূতি পেতাম। যে অনুভূতির জন্য আমার শত প্রার্থনা আল্লাহর কাছে। আমি উন্মাদের মত মোবাইল নিয়ে এদিক ওদিক ছুটে স্বামীকে ধাওয়া করতাম। সেও এসে বলতো।
“ব্যস দেখো ফারজানা আমার মোবাইলের পাসওয়ার্ড বলো। নাহলে চ’ড় খাবা বলে দিলাম।”
“ওকে জামাই আমাকে উম্মাহ দাও।”
শারফান থেমে করুণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বিড়বিড় করে নিজের সাথেই কি যেনো বলতো। আমি দেখে ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলাম।
“এই একলা কি বিড়বিড় করছেন?”
“এই মেয়ে একলা কোথায় আমার সাথে আমার আম্মু আছে বুঝলে?”
“ওহ আমার শ্বাশুড়ি মা সঙ্গে আছে আপনার? একটু জিজ্ঞেস করেন তো আমাকে আম্মুর পছন্দ হয়েছে কিনা?”
বলেই লাজুক হেসে মুখে হাত চেপে ধরলাম। শারফানও আমার কথামত জিজ্ঞেস করে। আমি অবাক লোকটার বয়স এখন ছাব্বিশ চলছে। বার্থ সার্টিফিকেট দেখে জেনে ছিলাম। সেই তরুণ যুবকের এই কি দশা? তার বিড়বিড় করে কথা বলাটা আমার মনে খটকা দিতো। শারফান এর ডাকে ধ্যান ফিরলো। সে বলে,
“আম্মু বলছে পছন্দ হয়ছে কিন্তু আমার সাথে দুষ্টুমি করতে মানা করছেন। তাই এখনি পাসওয়ার্ড খুলে দাও।”
“ওহ শ্বাশুড়ি আম্মু বলেছেন আর কি দুষ্টুমি করতে পারি বলুন? এই নেন আপনার ঢেঁড়স মার্কা ফোন। সেই ঘুরে ফিরে আমার কাছে এসেই ফোন চালাবেন। হিহিহি। আমার নিজের ফোন নেই তাতে কি? আপনার যা তাই আমার স্বোয়ামী জি।”
কথার ছলে শারফান এর ঠোঁটে আলতো স্পর্শ দিয়ে রুম থেকে পালালাম। গন্তব্য শ্বশুর আব্বুর রুম। রুমের সামনে এসে মাথায় ঘোমটা টেনে দরজায় টোকা দিলাম। জয়নাল মিয়া ভেতর থেকে উচ্চ আওয়াজে আসতে বললেন। আমি ধীর পায়ে হেঁটে ভেতরে প্রবেশ করলাম। দেখি শ্বশুর আব্বু এক মহিলার ফ্রেম হাতে নিয়ে বসে আছেন। আমাকে দেখে চোখের জল মুছে বসতে বললেন। আমি নম্র গলায় জিজ্ঞেস করলাম।
“আব্বু ইনি আমার শ্বাশুড়ি?”
“হুম তোমার শ্বাশুড়ি সুন্দরী ছিলো অনেক। তাকে বিয়ের আগে কনে দেখতে যাওয়ার সময় দেখেই প্রেমানুভূতি জাগ্রত হয়ে ছিল। সেই তাকে শুরু তাকে দিয়েই শেষ হবার ইচ্ছা আছে। মেয়েটা না খুব নাজুক ছিল। আমার ব্যথা সহ্য করতো না। অথচ সেই মেয়েটা শ্বশুর বাড়ির নানান অত্যাচার সহ্য করে রাতবিরেতে স্বামীর বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে কাঁদতো। আমি অসহায় বাধ্যগত সন্তান ছিলাম বলে মুখ ফুটে বাবা-মায়ের মুখের উপর কথা বলতে পারতাম না। লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)এতে অবশ্য তোমার শ্বাশুড়ির কোনো আক্ষেপ ছিল না। তবুও চাইতো আমি কিছু বলি। বলিনী কখনো। তেমনি সংসারের পুরো দায়িত্ব সে বড় বউ হিসেবে নিয়ে পালন করে বেড়াতো। তার পর তো ছোট ভাইয়ের বিয়ে হয় জাহানারার সাথে। তাকে ধনীবিত্ত দেখে মায়ের লোভ জেগে উঠে। আমার বউকে দিয়ে আরো খাটিয়ে নিতো। আর কত সহ্য করতাম? আমি তখন এক ছেলের বাবা। শারফান তার মায়ের উপর হওয়া নির্যাতন দেখেছে স্বচক্ষে। তাই সে কখনো মেয়েদের উপর জুলুম করার সাহস পায়নি। তুমি বলতে পারবে মা? সে কখনো অকারণে তোমাকে মেরে ছিলো কিনা? উহুম মারেনি মারলেও অবশ্য তার পেছনে কারণ থাকবে। কিন্তু যখন তোমার শ্বাশুড়ির পেটে শেরহাজ এলো। তখন মা জাহানারার পক্ষপাতীত্ব করে খুব কাজ দিতো। যা আমার সহ্যসীমা লঙ্ঘন করে ছিল। নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে নিজের বউকে নিয়ে অন্যত্রে চলে এলাম। এতে অবশ্য উপকৃত হয়ে ছিলাম আল্লাহর দরবারে। কারণ বাবা মা জাহানারার কাছে ভালো ছিল না। তারা বুঝতে পেরেছিল আসল হীরে কে? তবে দেরি হয়ে গেছিল তখন। আমরা দেশ ছেড়ে ইউকে চলে গিয়ে ছিলাম। সেখানে থেকে আমি আমাদের এ বাড়ির আয়োজন করি, বসতভিটে গড়লাম। শেরহাজ এর জন্মের কয়েকবছর পর শাহানা হলো। ইউকেতে জন্ম হলেও বাবা-মায়ের আর্তনাদের টানে ফিরে আসি। এসে জানলাম তারা মারা গিয়েছে একমাস হবে। আমার কুলাঙ্গার ভাই আমায় জানানোর প্রয়োজন অব্দি মনে করেনি। বাবা-মায়ের কবরে গিয়ে খুব কাদঁলাম। তোমার শ্বাশুড়ির সাথে সুখের দিন পেলেও সময়সীমা সীমিত ছিল জানতাম না। আস্তেধীরে আমার ছেলেমেয়ে বড় হলো। তোমার শ্বাশুড়ি গর্ব হলেও মাঝরাতে নামাজে কাঁদতো। আমায় কিছু বলতো না। হঠাৎ একরাতে সে আমার বুকে মাথা রেখে বলে ছিল।
“ওগো আমার বাচ্চাদের জন্য আমার মতই বউমা এনো। যাতে সংসারটা স্বর্গের হোক। আমি চাই না আমার শ্বাশুড়ির মত তারাও বউ হিসেবে অনাদারে থাকে। শারফান এর জন্য নববধূ এনো যে কিনা পুরো বাড়ির খেয়াল রাখবে।”
আমি সেরাতে তোমার শ্বাশুড়ির কথায় খুব ব্যথিত হয়ে ছিলাম। কেনো সে কান্না করে এসব বলছে পরখ করতে পারছিলাম না। হাসপাতালে নিতে চাইলে যেতো না। জোর করলে কান্না করে বাড়ি মাথায় তুলতো। লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)কি করব সেরাত খুব ভয়ে কেটে ছিল। জানো মা সকালে যখন দেখি তোমার শ্বাশুড়ির শরীর ঠান্ডা বিশ্বাস করো আমিও তখনি মারা যেতাম। ছেলেমেয়েদের ডাকে ধ্যান ফিরে চটজলদি তোমার শ্বাশুড়ির চেকআপ করিয়ে জানলাম সে নাকি রাতের তিনটায় পরলোকগমন করে ছিল।”
কথার মাঝে চশমা খুলে চোখের পানি মুছলেন শ্বশুর আব্বু। আমারও চোখ ভিজে গেলো। তিনি তপ্ত শ্বাস ফেলে বলেন,
“তখন থেকে শারফান বিড়বিড় করে নিজের সাথেই কথা বলতে লাগল। জিজ্ঞেস করলে বলতো মায়ের সাথে কথা বলি। অথচ ছেলেটা শারীরিক ভাবে পুরোদমে সুস্থ ছিল। ডক্টর কে জানানোর পর তিনি বলে ছিল আপনার ছেলে মায়ের উপর হওয়া নির্মম অত্যাচার স্বচক্ষে দেখেছিল, সে যখন খাওয়ার জন্য কাঁদতো তখনো তার দাদু ধমকে চুপ করাতো। এসবের কারণে সে মনেমনে মাকে কল্পনা করে সঙ্গহীন কথা বলতো। এতে মানুষের ক্ষতি হয় না। এক ধরনের মেন্টালি ফোবিয়া বলতে পারেন। আপনার ছেলের মা আপনার ছেলেকে রক্ষা করে তাকে আশ্বস্ত করে তিনি তার সাথে আছেন। যার কারণে আপনার ছেলে হয়ত আজ অব্দি কোনো অসৎ কদম উঠায়নি। সেই থেকে ছেলেকে মানুষ করলাম। তবে তার মায়ের সাথে কথা বলার অভ্যাস চলমান ছিল। শাহানা শেরহাজ আর শাহানাকে মায়ের কথা শুনাতো। তারাও শুনে খুশি হতো। তুমি জানতে না তাই তোমাকে বলে আজ মনটা হালকা করলাম। একটু কষ্ট করে আমার জন্য চা পাঠিয়ে দিও মা।”
আমি সব জেনে খুশি হয়েছি। যাক স্বামীকে সান্নিধ্যে পাওয়ার আরেক ধাপ হাতে পেলাম। রুমে গিয়ে বললাম।
“শ্বাশুড়ি আম্মা জানেন আপনার ছেলে হলো বদ*মাইশ। অন্য মেয়ের দিকে মজে আছে। আমি কি সুন্দরী না আম্মা?”
“এই আমার আম্মুর কাছে অভিযোগ দিচ্ছো কেনো?”
“আপনি যেমন দেন তেমন। তাই না আম্মু একে বারে ভালো কাজ করেছি না? দেখলেন আম্মু হ্যা বলেছেন।”
“কি আম্মু তুমি এখন এই মেয়ের পক্ষপাতীত্ব করছো। এটা কিন্তু ঠিক না আম্মু। আমি তোমার ছেলে। হ্যা জানি পরের মেয়ে আর আমার বউ তাই বলে মাথায় চড়বে নাকি? না দেবো না একে আমার ফোন। আজই নতুন ফোন কিনে আনবো।”
রেগেমেগে শারফান বেরিয়ে গেলো। হ্যাবলার মত খালি তাকিয়ে রইলাম। কি হলো ব্যাপারটা লোকটা চলে গেলো তাও আবার নতুন ফোন কিনতে?
মনটা উদাস হয়ে গেলো। নতুন ফোন কিনলে যে তাকে জ্বালাতে পারব না।
বিড়বিড় করে বললাম।
“ওওওও শ্বাশুড়ি আম্মা আমার জামাইটার মাথায় বুদ্ধি দাও । আমার মত বউ পেয়েও অবহেলা করে লোকটা।”
চলবে….