#এক_মুঠো_সুখপ্রণয়
#লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)
#পর্ব_০৬
“আপনি যে মারাত্মক অসভ্য তা ঢের বোঝা যাচ্ছে মাস্টার জান। তবে আমার আঙ্গুল কামড়ে যে কষ্টটা দিচ্ছেন না। তার শাস্তি রুমেই দেবো।”
শেষটুকু ভাতের লোকমা শারফান কে খাওয়ে উঠে গেলাম। এর মাঝে শেরহাজকে বসারত অবস্থায় দেখে ভ্রু বাঁকিয়ে তাকালো শারফান। কেননা শাহানা কবেই খাওয়া শেষ করে উঠে পড়েছে। এর মাঝে এই ছেলের উঠার নামগন্ধ নেই। গম্ভীর গলায় সে শেরহাজের মনদৃষ্টি আকর্ষণ করে। শেরহাজ চোখ তুলে নিজ ভাইয়ের দিকে তাকালো। শারফান চোখের দৃষ্টি গাঢ় করে জিজ্ঞেস করে।
“তুই এখনো অব্দি খাওয়া শেষ করলি না কেনো? কি হয়ছে তোর? গতকাল থেকে দেখছি তোর স্বভাবে পরিবর্তন আসছে। এর কারণ কি?”
“আভ ভাইয়া ওমন কিছু না পরীক্ষার টেনশন হচ্ছে। তার উপর ফিও আসছে।”
“ফি কত আসছে?”
“আভ ভাইয়া এবার একটু বেশিই আসছে। কোর্সের ডিমান্ড যত তত বেশি আসছে।”
“হুম আমাকে মেসেজে এমাউন্ড জানিয়ে দিস।”
শেরহাজ খুশি হয়ে গেলো। তৎক্ষণাৎ খাওয়া শেষ করেই হাত ধুয়ে রুমে চলে গেলো। আমি বাসন কোসন গুছানোর সময় শেরহাজ এর কার্যাদি লক্ষ্য করে গেছি। তার অদ্ভুত ব্যবহার আমায়ও ভাবাচ্ছে। চোখের সামনে তুড়ি বাজাতেই চমকে তাকালাম। শারফান দুষ্টু হাসি দিচ্ছে। পরক্ষণে আমার আপাদমস্তক পরখ করে বলেন,
“নিজেকে কারো সামনে খোলামেলা ভাবে প্রদর্শন করবে না। যার কারণে চ’ড় খেতে হয়। নেক্সট টাইম খোলামেলা শাড়ি পরবে না। এভাবে ভদ্র কাপড় পরে ঘোমটা টানাই হলো বউদের আসল অলঙ্কার।”
“লোকটা আমায় আদর করেও বোঝাতে পারতো। চ’ড় মেরে বোঝানোর কি দরকার ছিল যতসব?”
দাঁতে দাঁত চেপে তার থেকে মুখ ফিরিয়ে সোজা অন্য রুমে চলে গেলাম। শারফান তা দেখে ছুটে আসল। তার আগামন দেখেই ঠাস করে দরজাটা বন্ধ করে দিলাম। কারণ আমার শরীরের মধ্যে যে ঝড় বয়ে যাচ্ছে তা আমি শারফান কে বুঝতে দিতে চাই না। আজ আমি জানি আমার সঙ্গে কি হতে পারে? সেই ঘৃণ্য স্পর্শের ন্যায় পরপুরুষের ছোঁয়া কোমরে লেগেছে। ঢোক গিলে আলমারি খুলে অন্য থ্রিপিচ নিয়ে ওয়ালরুমের ভেতর ঢুকে পড়লাম।
দেখতে দেখতে আমার আর শারফান এর খুনসুটির আড়ালে দুমাস পার হয়ে গেলো। তার মাঝে শাহানা আর শেরহাজ হোস্টেল ফিরে গিয়ে ছিল। কিন্তু গতদিনই শারফান জানালো শেরহাজ আবারো আসছে। কেনো আসছে তা বলেনি! আমিও ওতটা আমলে নেয়নি। কারণ তার বাড়ি অবশ্য আসা যাওয়া করবে। তবে তার খাবারের আয়োজনে ত্রুটি রাখব না।
শারফানও অনেকটা পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। আগের মত জারিফার নাম মুখে নেন না। তবে মাঝেমধ্যে নিজের ফোনের ওয়ালপেপারের দিকে তাকিয়ে থাকেন। আমি বুঝি তিনি তখন জারিফাকে স্মরণ করেন। তবে এ যেনো এক স্ত্রী হিসেবে হৃদয়বিদারক দৃশ্য। কিন্তু আমার জন্য মানুষটা নিজেকে শোধরে নিচ্ছে এই ঢের। তিনি প্রায় এখন আমার পিছু ঘুরঘুর করেন। যিনি কয়েক দিন আগেও জারিফার নামে মুখে ফেনা তুলত আজ তার মুখে এই বউ ডাক ছাড়া অন্য নাম নেই। সেই মানুষটা আজ আমার হাতের রান্না ছাড়া খেতে বসে না, কাপড় ঠিকভাবে গুছিয়ে না রাখলে মুখ ফুলিয়ে বসে থাকে। তার অভিমান করা মুখশ্রী দেখে যতটা শান্তি পায় ততটা সেই অচেনা স্পর্শের কথা মনের প্রান্তে জোড়ো হতেই ভয়ে শিউরে উঠি। আজও আমি খোঁজ লাগিয়ে বেড়ায়। কে সেই রাতে আমার কোমর স্পর্শ করে ছিল?
যাক সেসব ভাবনা বাদ। আজ নানার সাথে দেখা করতে যাবো। পুরো দুমাস উকিল জোগাড় করে নানার কেস লড়াইয়ের জন্য টাকা জমিয়েছি। কেস জিতার পর সেই টাকার মালিক ঐ উকিল হবেন। নানার বাড়িতে গিয়েই পরীক্ষার প্রস্তুতি নেবো। আর একমাস হাতে আছে। মোটামুটি পড়াগুলো উদ্ভাসে দুমাস নিয়মিত পরীক্ষার মাধ্যমে আয়ত্তে নিয়েছি। পরীক্ষার আগ পর্যন্ত শ্বশুরবাড়ি থেকেই উদ্ভাসে যাবো। হঠাৎ কারো ডাকে ধ্যান ফিরলো। সামনে কুসমা আপাকে দেখে টাকার ব্যাগ হাতে ধরিয়ে নিলাম। কুসমা আপা কে বুঝিয়ে দিলাম কি করতে হবে উকিলের কাছে কি কি প্রমাণ দিতে হবে সবটা টাকার ব্যাগেই দিয়ে দিয়েছি। তিনি মাথা নেড়ে চলে গেলেন। আমি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে রিকশায় উঠে বসলাম। লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)জানতাম না আমার এই দেখা করার অর্থ আমার স্বামী অন্যভাবে ধরে নেবেন। বাড়ি পৌঁছাতেই সন্ধ্যা সাতটা বেজে গেলো। ভয়ে আছি শারফান এখন বাড়িতে আছে কিনা ভেবেই! দরজা চাবি দিয়ে গুলার আগেই কেউ দরজা খুলে দিলো। সামনে শাহানা কে দেখে অবাক হলেও হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। কিন্তু শাহানার চেহারা অনেকটা ঘোলাটে হয়ে আছে। তাকে কোনোরুপ প্রশ্ন করার পূর্বেই সে পাত্তাহীন দরজা খুলা রেখেই চলে গেলো। আমি তার দেখাদেখি দরজা বন্ধ করে শ্বশুর আব্বুর রুমে গেলাম। কিন্তু আশানুরূপ কিছু পেলাম না। যার মাধ্যমে জানতে পারবো বাড়ির লোকগণের নিশ্চুপতার কারণ! হতাশ হয়ে শারফান এর রুমের সামনে এলাম। শ্বশুর আব্বুর রুম এসময় বন্ধ দেখে সন্দেহ দৃঢ় হলো। শারফান এর রুমের দরজা খুলতে এগোতেই আমার হাত ধরে টেনে অন্যরুমে নিয়ে এলো শেরহাজ। আমি হতভম্ব হয়ে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিলাম। শেরহাজ মনে নিলো না এ কাণ্ডটা। তবে আমার হাতে আলতো হাত রেখে বলে,
“ভাবী এমুহুর্তে তুমি ভাইয়ার রুমে যেয়ো না।”
“আগে আপনি আপনার হাত সরান।”
শেরহাজ জোরপূর্বক হেসে সরিয়ে ফেললো। আমি প্রথমে খেয়াল না করলেও এখন খেয়াল করতেই শরীর অবশ হওয়ার উপক্রম। শেরহাজ এর হাতের উপর আঘাতের চিহ্ন। যা এখনো সরেনি। হয়ত ক্ষত পরিষ্কার করে ব্যান্ডেজ লাগানো হয়েছিল। তাতে কি আর ক্ষতের দাগ সরানো যায়? এ দেখে আমি কি বলব বুঝতে পারছিলাম না। তবুও চুপটি করে তার কথা শোনার জন্য দাঁড়িয়ে রইলাম। শেরহাজ মৃদু গলায় বলে,
“ভাবী ভাইয়াকে মনে হয় চাচী কানপোড়া দিয়েছেন। আজকে রেগেমেগে ভাইয়া ভাংচুর অব্দি করেছে। তোমাকে এখন সামনে পেলে মেরেই ফেলবে ভাইয়া। তার রাগ গলে ঠান্ডা হতে দাও। তারপর যেও।”
শেরহাজ এর কথায় অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম।
“আমি কি করেছি যে আমাকে শাস্তি দেবেন?”
‘দেখেন এটা।’ শেরহাজ তার ফোন থেকে চাচী শ্বাশুড়ি আর শারফান এর কথোপকথন এর দৃশ্য দেখাচ্ছে। সেখানে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে শারফান এর রাগী চেহারা। ঢোক গিললাম স্বামীর হঠাৎ মাত্রাতিরিক্ত রাগের কারণ কি হতে পারে ভেবে? আমতা আমতা করে বললাম।
“এ থেকে প্রমাণ হয় না শারফান আমার উপর রাগ করে আছেন।”
“আহারে ভাবী তুমি এখনো সরল বাচ্চা রয়ে গেলে।”
কথাটা বলেই শেরহাজ আমায় একহাতে জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করে। আমি তার আচরণে গুটিয়ে যাচ্ছি। তার হাত সরিয়ে যথাসম্ভব দূরে গিয়ে দাঁড়ালাম। শেরহাজ তার ভাবীর অবস্থা বুঝে হাত মুঠো বদ্ধ করে বলে,
“আচ্ছা ভাবী এই নেন প্রমাণ। চাচী ভাইয়াকে এ ছবিগুলো দেখিয়েছেন। যার কারণে ভাইয়া এগুলো দেখেই পুরো বাড়ি জুড়ে তাণ্ডব চালিয়েছে। আব্বু তো দেখেই তোমার উপর অতিষ্ঠ হয়ে রুমবন্দি হলেন। শাহানা তো তোমায় দুচোখে সহ্য করছে না। আমিই একমাত্র দেবর তোমার যে এই ছবি দেখে বিশ্বাস করলাম না যে তুমি অপরাধী বা অপরাধ করেছো।”
“বাহ্ মায়ের চেয়ে মাসির দরদ বেশি দেখছি। তবে যাই হোক স্বামী আমার নিশ্চয় তিনি এতটা ক্রোধিত হবেন না আমার উপর।”
আমার কাঠ কাঠ কথার জবাব দিয়ে আমি রুম থেকে বের হতে গেলেই শেরহাজ আমার হাত আঁকড়ে ধরল। বিরক্তির চোটে তার দিকে ফিরে কষে এক চ*ড় লাগিয়ে দিলাম। শেরহাজ জ্বলন্ত চোখে তাকিয়ে কিছু বলবে। তার আগেই কারো মুখে নিজের নাম শুনে পিছু তাকালাম। শেরহাজ ও থেমে গেলো। শারফান দুহাত বুকে গুঁজে তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে। আমি করুণ দৃষ্টিতে তার নিকট যেতে নিলেই একজোড়া হাত শারফান এর হাত আঁকড়ে ধরল। অবাক হয়ে গেলাম। শারফানও দ্বিধাহীন সেই হাতজোড়ার মালিককে টেনে রুমের ভেতর আনলো। সেই হাতজোড়ার মালিক কে দেখে দুকদম পিছিয়ে গেলাম। এ আমি কাকে দেখছি? জারিফা?
শারফান সন্তপর্ণে আমার মুখ বরাবর দাঁড়িয়ে বলেন,
“বলে ছিলাম আমি শুধু জারিফাকে ভালোবাসি। আমার ভালোবাসা সত্য হলে অবশ্যই সে ফিরবে। দেখলে সে ফিরে এলো এবার তোমার যাওয়ার পালা এ বাড়ি থেকে, আমার জীবন থেকে।”
কথাগুলো শুনে নির্লিপ্ত চোখে তাকিয়ে রইলাম। কিঞ্চিৎ মুহূর্ত পরে আমার হাতকে শেরহাজ ধরার চেষ্টা করতেই দাঁতে দাঁত চেপে কাঁচের টেবিলের রাখা ছুড়ি নিয়ে তার হাতের উপর আঘাত করলাম। বিস্ময়ে শারফান আর জারিয়া তাকিয়ে রইল। ‘ফারজানা’ মৃদু চিৎকার দিয়ে শারফান শেরহাজ এর হাত ধরে নিলো। আমার জ্বলন্ত বিধ্বংসী রুপ সম্পর্কে এরা অবগত নয়। তাইত আমার সাথে অবহেলিত নারীর মত আচরণ করছে। সেই ছুড়ি দিয়ে শারফান এর নিকট গিয়ে তার হাত চেপে ধরে তার হাতের উপরও জোরালো আঘাত করলাম। জারিফা ভয়ে পিছিয়ে গেলো। শারফান চিৎকার করে আমার হাত সরানোর চেষ্টা করল। কিন্তু আমি তাকে জখম দিয়ে নিজের হাতের বন্ধনীতে আবদ্ধ করে পাশে আটকে নিলাম। জারিফার দিকে তাকিয়ে বললাম।
“আমাদের ফ্যামিলি ড্রামার মধ্যে ইউ বাস্টার্ড বাহিরের মেয়ে ইন্টারফেয়ার না করলেই খুশি হবো। আর আপনি শারফান এ দুমাস একই ছাদের নিচে থেকে দু’জনের মানসিক মিলবন্ধন কি হতে পারেনি? নাকি আমি ব্যর্থ হয়ে ছিলাম আপনার কাছে? যদি ব্যর্থ হয়েই থাকি তবে স…..।”
পরের কথা মুখে নিলাম না। কারণ এখন সে সময় নয়। পরিস্থিতি আজ বিপরীতে যেতে চাচ্ছে। তবে আমি তা হতে দেবো না। স্বামী আমার তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা মানুষের ক্ষতি করতেও দু’সেকেন্ড ভাববো না। লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)শারফান কে ধাক্কা দিয়ে সোফায় বসিয়ে জারিফার দিকে ভয়ানক দৃষ্টি নিয়ে এগোলাম। মেয়েটা ভয়ে তটস্থ হয়ে গেলো। সে ভাবেইনি আমি এতটা ভয়ানক রুপ ধারণ করব। শেরহাজ ও হতবাক। শাহানা এসে দু’ভাইয়ের কাণ্ডকলাপ দেখছে। তবে টু শব্দ করেনি। দাঁতে দাঁত চেপে জারিফার গাল চেপে ধরলাম শক্ত করে। আরেক হাতে তার চুলের মুঠি ধরে চেঁচিয়ে বললাম।
“হা*রা*মজা*দী, সুযোগ সন্ধানী মেয়ে কোথাকার। তোকে আমার মা-নানার গোষ্ঠী কতটা সহায়তা করে ছিলো। সেই তুই আমার আগপিছে আমার স্বামীর সাথে রংঢং মারতে উদ্যত হয়েছিস। বল কি করেনি আমার মা-বাপ-নানা-নানী তোর জীবন সুন্দর বানানোর জন্য।”
কথার ছলে ঠাসঠাস করে চ’ড় দিলাম। এক চড়ে তার গাল থেকে রক্ত পড়তে লাগল। দেখেই পৈশাচিক হাসি দিয়ে বললাম।
“এই হাত নর*পশুর শরীর টুকরো করে কেটে ছিল জানিস? জানবি কেমনে তুই না মরে গেছিলি ঐ কামুক*কর কু*ত্তার জন্য। যাকে না পেলে তুই মরেই যেতি। সেই তো নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মরছিলি। আমার স্বামীকেও পিছু ঘুরিয়ে টাকা হাতড়ে নিলি। ঐ কামুক*কর পোলার সাথেও শুয়ে শুয়ে ইজ্জতের ছিটেফোঁটা ও রাখলি না।”
পুনরায় অপর গালে চ’ড় বসালাম। সে এবার যন্ত্রণায় কাশতে লাগল। মিসেস জাহানারা এসে শাহানা কে সরিয়ে রুমের ভেতর চোখ দিতেই ভয়ে মাথা চেপে ধরলেন নিজের। চিৎকার করে বললেন।
“এই শাকচুন্নী আমার মেয়েকে এত বেধম প্রহার করে মার*ছিস কেন?”
কথাটা আমার শ্রবণে প্রবেশ করতেই অগ্নিশর্মা হয়ে জারিফাকে ধরে রেখে চাচী শ্বাশুড়ির সামনে গেলাম। তার নিকট জারিফাকে ধাক্কা দিলাম। মিসেস জাহানারা জারিফার ভর সামলাতে না পেরে দুজনেই মাটিতে পড়ে গেলো। শারফান এতক্ষণ যাবত যা হয়েছে নিজ চোখে দেখে ভয়ে গুটিয়ে গেলো। শেরহাজ এর দিকে তাকিয়ে বললাম।
“জানিস আজ যদি তুই আমার স্বামীর ভাই না হতি তাহলে তোকে জ্যান্ত মাটিতে পুঁতে ফেলতাম। আমার সাথে অসভ্যতামির ফলাফল হলো দণ্ডনীয় মৃত্যু। তোর মরার শখ জাগছে? পূরণ করে দেয়।”
সেই ছুড়ি নিয়ে এগোতে নিলেই শেরহাজ সুর সুর করেই রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। মিসেস জাহানারা তার সঙ্গে জারিফাকে ধরে উঠিয়ে নিয়ে যেতে নিলেই গম্ভীর গলায় ডাক দিলাম। তাদের পা থেমে গেলো। আমার দিকে ঘুরতেই বললাম।
“এই আবর্জনাকে যেখান থেকে উঠিয়ে এনেছেন না সেখানেই ফেলে আসুন। নাহলে আজ আপনার লাশ এমন জায়গায় গেড়ে দেবো যেখান থেকে আপনার স্বামীও খুঁজে বের করতে পারবে না। গেট লস্ট ফম হেয়ার ব্লা*ডি বি*চে*স।”
শারফান নিশ্চুপ তাতে কি আমি জখম দিয়েছি স্বামীকে সৎ পথে আনতে। তাই আমিই এর সুরাহা দেবো। তার নিকট গিয়ে আঘাতহীন হাতটা ধরে ধীরে সুস্থে নিজ রুমে নিয়ে এলাম। শাহানা সবটুকু দেখে আচমকা হেসে ফেলল। সে মনেমন ভেবে রাখল।
“আজ আব্বু উঠলে বড়জোড় ফিল্মের মত কাহিনী শুনাতে পারব। ইশ্ ভাবী আমার সুপারডুপার উইম্যান। গুড জব ভাবী। এটুকু মেয়ে এতটা চটর ফটর ভাবা যায়? গ্রামে নিশ্চয় ভাবীর সাথে কিছু ঘটেছে। নাহলে কেনো ভাবী এরুপ ধারণ করতেও এক সেকেন্ড পিছপা হলেন না।”
মনে প্রশ্ন জাগলেও আপাতত জমিয়ে রেখে মুভি দেখতে রুমে চলে গেলো শাহানা। দরজা আটকে শারফান কে ধরে বিছানায় বসালাম। আলমারি থেকে ফাস্ট এইড বক্স বের করে। মলমপটি লাগিয়ে দিলাম সুন্দর করে। শারফান হাঁসফাঁস করছে দেখেও নিবিড় হয়ে নিজের কাজ করছি। ব্যান্ডেজ করে শারফান এর শার্ট খুলতে লাগলাম। এর মাঝে নিজের গলায় পরিহিত উড়না নিজ হাতে সরিয়ে দিলাম। শারফান ইতস্তত হয়ে পিছু হতে চাইলেও তাকে ছাড়লাম না।
শার্টের শেষ বোতাম খুলে তার উদাম বুকে জোরালো কামড় বসালাম। শক্তপোক্ত সুঠামদেহে আমার কামড় তাকে যন্ত্রণা দিলে সে হাতমুঠো করে বসে রইল। আমি ততক্ষণ কামড়ে রইলাম যতক্ষণ না জায়গাটা লাল-রক্তিম বর্ণ ধারণ করে।
দীর্ঘ খানিক পর খেয়াল করলাম শারফান এর বুকের বাম পাশে রক্তজমাট বাঁধছে। সেইদিক তাকিয়ে মৃদু ঠোঁটের স্পর্শ দিলাম। পুনরায় শার্টের বোতাম লাগিয়ে দিলাম। শারফান আমতা আমতা করে জিজ্ঞেস করে।
“নিজেই ক্ষত দিলে এখন নিজেই কেনো?”
“আপনি হয়ত পরকীয়া করতে পারেন আমিত নয়। আপনার জীবনে হয়ত প্রথম প্রেম ছিল কিন্তু আমার জীবনে তো আপনিই প্রথম পুরুষ। প্রেমের দিক বিশ্বাস নেই দেখেই স্বামীকে নিজের দিকে টানার চেষ্টা করেছি অগণিতবার। ভাবিনী এই স্বামীই তখনো পুরনো প্রাক্তনের মাঝে মজে থাকবে।”
চলবে……