#এক_ঝড়ো_হাওয়ায়
#লেখনীতে-ইনসিয়া আফরিন ইমারা
#পর্বঃ০৭
অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে অনেকক্ষণ আগে। এখন অনুষ্ঠানের মধ্যভাগ। নাওয়াস আর নিহানের গান করছে। ওদের গানে শেষ হতেই চারিদিকে করতালির শব্দে মুখোরীত হয়। পিউ বলে,
“নাওয়াস ভাইয়া দারুণ গান করে তাই না আপু?”
প্রত্যাশা কোনো উত্তর করে না। মাইকে পিউ আর প্রত্যাশার নাম বলা হয়। ওরা দুজন রবীন্দ্রনাথের ‘আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার’ গানে নাচে। পিউ আর প্রত্যাশার নাচ সবাই মুগ্ধ হয়ে দেখে। নাওয়াস মনে মনে বলল,
“মেয়েটা মা’রকুটে হলেও, গুনি আছে।”
প্রত্যাশারা নাচ শেষে স্টেজ থেকে নামতে সবাই ওদের ঘিরে ধরে। সাধুবাদ জানায়। দুজনের অনেক প্রসংশা করে। অনুষ্ঠান প্রায় শেষের দিকে। পুরুষ্কার পর্ব বাকি। পুরুষ্কার দেওয়ার আগে লান্স বিরতি দেওয়া হলো। পিউ প্রত্যাশার হাত টেনে নাওয়াসদের নিকট নিয়ে গেল।
“আরে কোথায় যাচ্ছিস? আস্তে পড়ে যাবি।”
পিউ যেন প্রত্যাশার কথা শুনতেই পেলো না। একদম নিহানদের সামনে গিয়ে থামল। প্রত্যাশার হাত ছেড়ে দিয়ে উৎফুল্ল চিত্ত বলল,
“ভাইয়া আপনি দারুণ ভালো গান করেন। গিটারও অসাধারণ বাজান। আপনাদের দুজনের যুগলবন্দী বেস্ট ছিলো। আমি শিওর আজকে সংগীতে প্রথম পুরুষ্কার আপনারা দুজন পাবেন।”
“আমরা পুরুষ্কার পাবো কি-না জানি না। কিন্তু তুই আর আপু নিঃসন্দেহ পুরুষ্কার পাবি। তোরা দুজন অনেক ভালো নাচ করেছিস।”
প্রত্যাশা হালকা হাসে। পিউ বলল,
“চল আমরা এক সাথে খায়। আমরা বাড়ি থেকে কাচ্চি এনেছি। এবং সেটাও আমি আর আপু দুজনে মিলে রান্না করে।”
শেষের কথা পিউ দ্বিগুন উৎফুল্ল নিয়ে বলে। নিহানও তেমনই উৎফুল্ল হয়ে বলল,
“সত্যি? তোর কথা শুনে আমার খিদে দ্বিগুন হয়ে গেলো। চল!”
ওরা যেতে নিয়েও থেমে যায়। নিহান নাওয়াসের উদ্দেশ্যে বলল,
“কী হলো ভাইয়া? আসো?”
“তুমি যাও। আমি এখানে আছি।”
নিহান কিছু বলবে তার আগেই পিউ বলল,
“আপনি খাবেন না?”
পিউয়ের প্রশ্নে নাওয়াস বলল,
“আমরা বাইরে থেকে খেয়ে নিবো।”
“বাইরে থেকে কেন খাবেন ভাইয়া?”
“এমনি!”
“এমনি কেন? আপনি কী আমাদের সাথে খেতে চাইছেন না? কারণ কী আমার আপু ? আপু সাথে আপনাদের ঝামেলা আছে। সেই জন্যই আপনি আমাদের সাথে যেতে চাইছেন না।”
পিউয়ের কথায় নাওয়াস প্রত্যাশা দুজনেই চমকায়। চমকিত একে অন্যে দিকে চাইল। নাওয়াস অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে বলল,
“আমি কী তোমার আপু কে ভয় পায়? তোমাদের ফ্রেন্ডসদের মাঝে আমি যেতে চাইছি না। সেই জন্য…”
নিহান এবার বলল,
“তুমিও তো আমার ফ্রেন্ডই হও। বড়ো ভাইয়া মানে বেস্ট ফ্রেন্ড। পিউও আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। এখানে এতো হেজিটেট করার কী আছে। আসো তো।”
নিহান নাওয়াসের হাত ধরে টেনে নিয়ে যায়। নাওয়াসের বারণও শোনে না। পিয়াশ,তন্ময়, মিন্টুও সাথে যায়। প্রত্যাশার সাথে খেতে হবে শুনেই মিন্টু শুকনো ঢোক গিলে। পিউ ব্যাগ থেকে কাচ্চি বের করে নিহান কে দিলে। নাওয়াস মিন্টু কে খাবার আনতে বলে,
“মিন্টু খাবার কিনে নিয়ে আয়!”
তড়িৎ পিউ বলল,
“খাবার কেন কিনে আনবে? এখানে যা খাবার আছে সবার আরামছে হয়ে যাবে।”
নাওয়াস পিউয়ের বাক্যে নাকচ করে বলল,
“তার প্রয়োজন নেই। মিন্টু যা নিয়ে আয়…”
পিউ শাসনের সুরে বলল,
“কেউ কোনো খাবার কিনে আনবে না। আপনারা আমাদের আনা খাবারই খাবেন। ব্যস আমি আর কিছু শুনবো না।”
“তুমি অযথা জেদ করছো পিউ। আমি খাবার আনাছি তো।”
“কেন আমাদের খাবার খেলে কী হবে? আপনি না আমায় ছোটো বোন বলেন? তাহলে ছোটো বোনের আনা খাবার খেতে এতো কীসের সমস্যা?”
“সমস্যা নেই। কিন্তু…”
“তাহলে আর কিছু শুনবো না আমি। আপনি আমার আনা খাবারই খাবেন। মিন্টু ভাইয়া বসুন কোথাও যাওয়ার দরকার নেই।”
মিন্টু দ্বিধা চোখে নাওয়াসের দিকে চাইল। নাওয়াস ইশারা করল বসতে, মিন্টুও বসে পড়লো। পিউ আর প্রত্যাশা খাবার পরিবেশ করে দিলো।
মিন্টু বিড়বিড় করে বলল,
“যেমন বড়ো বোন তেমনই ছোটো বোন। বড়ো বোন কথায় কথায় থা’প্প’ড় মা’রে। আর ছোটো জন হুমকি ধামকি দিয়ে খাবার খাওয়াই। আমাদের ভাইকে এই দুই বোন নাকে দঁড়ি দিয়ে ঘোরানোর ক্ষমতা রাখে।”
পিয়াশ বলল,
“তা যা বলেছিস মামা।”
“এরা কী চালের ভাত খেয়ে এমন ডা’কাত হয়েছে? সেই চালের ভাত আমিও খাবো।যাতে নাওয়াস ভাইয়ের সামনে সাহস নিয়ে কথা বলতে পাড়ি।”
নাওয়াস তন্ময়ের দিকে সুচালো দৃষ্টি নিক্ষেপ করে। তন্ময় আবেগে বেশি বলেছে বুঝে বোকা হাসে।
“হে হে মানে আপনার মতো সাহসী হতে…”
সকলে খাওয়া শুরু করে। পিউ, প্রত্যাশা, নিহান জমিয়ে গল্প করছে। নাওয়াস এমনিতেই কম কথা বলে। এদের মাঝে আরোই চুপ চাপ আছে। প্রত্যাশা আড় চোখে নাওয়াসকে অবলোকন করল। নাওয়াস নিজ মনে খেয়ে যাচ্ছে। আশেপাশে কী হচ্ছে না হচ্ছে ধ্যান নেই।
কথা বলার মাঝে হঠাৎ নিহানের বিষম লাগে। নাওয়াস নিহানকে পানি দিয়ে পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলল,
“খাওয়ার সময় বেশি কথা বলতে নেই।”
“স্যরি ভাইয়া!”
নাওয়াস ইশারায় আবার খাওয়া শুরু করতে বলল। নিহান আবার খাওয়া শুরু করে। এবার সবাই চুপ হয়ে যায়। মিন্টু তো প্রত্যাশার ভয়ে গুটিয়ে আছে। বেচারার সামনে প্রিয় খাবার। তবুও ঠিক মতো খেতে পারছে না। বলাবাহূল্য মিন্টু খেতে প্রচুর ভালোবাসে এর জন্য শরীর স্বাস্থ্যও ভালো। প্রত্যাশা মিন্টুর দিকে তাকাতেই মিন্টু দুই হাতে গাল আড়াল করে। মিন্টুর এহেন অবস্থায় তন্ময়,পিয়াশ মিটমিট করে হাসতে থাকে। নাওয়াস বিরক্তিতে ‘চ’ বর্গীয় শব্দ করে।
বিড়বিড় করে বলল,
“আহাম্মক!”
___________
পুরুষ্কার বিতিরণ করা হবে। তার আগে ছোটো খাটো বক্তব্য দিচ্ছেন স্যার ম্যাম। যা ভিষণ বিরক্তি কর। প্রত্যাশার গরমে অস্বস্তি হচ্ছে। সেই জন্য প্রত্যাশা ভাবলো। চোখ মুখে একটু পানি দিলে হয়তো ভালো লাগে। এই ভেবে প্রত্যাশা উঠে ভিতরের দিকে চলে গেল। আজ স্কুলে অনুষ্ঠান থাকায় যে কেউ স্কুলে প্রবেশ করছে। সেই জন্য এখানে কয়েক জন বখাটে ঢুকে এসেছে। ওদের মধ্যে একজন প্রত্যাশাকে দেখে বলল,
“হিট্টু ভাই দ্যাহেন সেই মাইয়াডা!”
হিট্টু নামক বখাটে বলল,
“কোন মেয়ে?”
“ওই যে আমাদের মা’রছিলো? মনে নাই?”
হিট্টু সতর্ক দৃষ্টিতে চাইলো। প্রত্যাশাকে দেখে মনে পড়ে গেলো সেদিন কী ভাবে ওকে মে’রে ছিলো। হিট্টু মিন্টুর খালাতো ভাই হয়। মিন্টু বখাটে হলেও হিট্টুর মতো চরিত্র খারাপ না। প্রত্যাশাকে সেদিন মূলত হিট্টুই টিজ করেছিলো। মিন্টু সেখানে উপস্থিত ছিলো। খালাত বড়ো ভাই বলে কিছু বলতে পারেনি। এমনিতেই মিন্টু ভীতু প্রকৃতির। প্রত্যাশাকে দেখে হিট্টুর রাগ হয়। মনে মনে প্রতিশোধ নেওয়ার কুৎসিত পরিকল্পনা করে। নিজের পরিকল্পনা সাথে থাকা সাঙ্গপাঙ্গদের বললে সকলে একযোগে বিশ্রী হাসে। একজন বলে,
“আজ তাইলে সেই মস্তি হবে?”
প্রত্যাশা বাথরুমে থেকে বের হতেই হুট করে হিট্টু সামনে চলে আসে। প্রথমে প্রত্যাশা চমকে ওঠে। পরক্ষণে সামনে সেদিনের সেই বখাটে ছেলেকে দেখে প্রত্যাশার মুখশ্রী শক্ত হয়ে আসে। হিট্টুর মুখের বিশ্রী হাসি। প্রত্যাশাকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত কুদৃষ্টিতে দেখে। হিট্টুর এহেন দৃষ্টিতে প্রত্যাশা মাথা গরম হয়ে যায়। পায়ের তালু পর্যন্ত ক্রোধে জ্বলে ওঠে। হিট্টু তখন বলল,
“যাই বলি। তুই কিন্তু একদম খাসা মা’ল আছিস। তোর ফি’গার একদম বলিউডের নায়িকাদের মতো। দেখলেই ছুঁয়ে দিত…”
হিট্টুর কথা সম্পূর্ণ করার আগেই প্রত্যাশা হিট্টু গালে সজরে থা’প্প’ড় মা’রে।
“সেদিন বোধহয় ডোজ কম পড়ে গেছিলো। তাই আজ আবার এসছিস? কোনো ব্যাপার না। আজ এমন ডোজ দেবো। যে বাপের জন্মে আর মেয়েদের দিকে চোখ তুলে তাকাবি না।”
হিট্টু রাগে হিসহিসিয়ে বলে।
“তুই কী ডোজ দিবি? আজ আমি তোকে এমন শিক্ষা দেবো না। তোর সব তেজ পানি হয়ে যাবে। এই ধর শা**”
হিট্টুর সাথে থাকা দুজন ছেলে প্রত্যাশাকে ধরতে গেলে প্রত্যাশা ওদের থেকে নিজেকে ডিফেন্ড’স করে পেটে ঘুষি মা’রে। প্রত্যাশা বলে,
“আমাকে দূর্বল ভাবার ভুল করবি না। আ’ম ক্যারাটে চ্যাম্পিয়ান।”
“সে তুই যাই হোস আজ তোকে আমি উচিত শিক্ষা দিয়েই ছাড়বো।”
“দেখা যাক কে কাকে শিক্ষা দেয়।”
প্রত্যাশা ওদের সাথে মা’রামা’রি করছিলো। প্রত্যাশাকে বাগে আনতে না পেরে হিট্টুর রাগ বাড়ে। সেই সময় নজর পড়ে পাশে ভাঙা বেঞ্চের দিকে। হিট্টু ক্রূর হাসে। বেঞ্চের পায়া তুলে নিলো।পিছন থেকে প্রত্যাশার ঘাড়ে আঘাত করে। আকস্মিক আক্রমণে প্রত্যাশা থমকে যায়। ঘাড়ে আঘাত লাগায় ব্যথায় মুখ নীল হয়ে আসে। ঘাড়ের কাছে শীতল অনুভব হয়। মনে হয় শীতল কিছু গড়িয়ে যাচ্ছে। প্রত্যাশা ঘাড়ে হাত দিতে হাতে তরল চিটচিটে কিছু লেগে যায়। হাত সামনে নিতেই দেখে র’ক্ত। প্রত্যাশার মাথা চক্কর দিয়ে ওঠে। পাশের দেওয়াল ধরে বহু কষ্টে নিজেকে সামলায়। যথা সম্ভব নিজেকে শক্ত রাখে। হিট্টু ওর চ্যালেদের ইশারা করে প্রত্যাশাকে ধরার জন্য। ওরা কাছে আসতে নিলেই প্রত্যাশা পা দিয়ে লাথি মা’রে। তা দেখে হিট্টু বলে,
“এখনও তোর তেজ কমেনি?”
হিট্টু এবার প্রত্যাশার পায়ের আঘাত করে। প্রত্যাশার দূর্বল শরীর এবার মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। মাটিতে লুটিয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যাশার হাতের চুড়ি ঝনঝনিয়ে ভেঙে যায়। হিট্টু হেসে বলে,
“এবার তোকে বোঝাবো হিট্টু কী জিনিস। তোকে আমি আমার র’ক্ষি’তা করে রাখবো।”
হিট্টু ওদের ইশায়ার বলে প্রত্যাশাকে নিয়ে ওদিকে যেতে। ওরা প্রত্যাশার হাত ধরে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যেতে থাকে। প্রত্যাশার এখনও জ্ঞান আছে। তবে শরীরে শক্তি নেই। সম্পূর্ণ শরীর অসাড় হয়ে আসছে। মনে মনে আল্লাহ কে সরণ করে।
নাওয়াসের ভিড় পছন্দ না। অনেকক্ষণ ভিড়ের মধ্যে থেকে মাথা ধরেছে। তাই উঠে নিরিবিলি জায়গায় আসলো। এখানে এসে সিগারেটে ধরিয়ে নিকোটিনের সাদা-কালো ধোয়া নিতে লাগলো। হঠাৎ আওয়াজে আর কারো অস্পষ্ট কথার শব্দে নাওয়াসের মনে খটকা লাগে। এই সময় এখানে কারো থাকার কথা না। আর অস্পষ্ট ভাবে ভেসে আসা কথা গুলোই নাওয়াস যেটা বুঝল। তাতে কেউ হয়তো কোনো মেয়ে সাথে খারাপ কিছু করতে চাইছে। নাওয়াস সময় ব্যয় না করে ভিতরে চলে যায়। ভিতরে যেতেই বাথরুমের সামনে ভাঙা চুড়ি দেখতে পায়। নাওয়াস ভাঙা চুড়ির টুকরে হাতে নিতেই বক্ষ ছ্যাত করে ওঠে। অজানা আতঁকে বুক কাপে। মনে মনে বলে,
“এটা তো ওই মা’রকুটে মেয়ের চুড়ি।”
নাওয়াস আশেপাশে খুঁজতে থাকে। তখন ফ্লোরে ফোটা ফোটা র’ক্ত দেখতে পায়। র’ক্তের ফোটা অনুসরণ করতে থাকে। একটা ক্লাস রুমের কাছে এসে র’ক্তের ফোটা আর পাওয়া যায় না। নাওয়াস আলত ভাবে ক্লাস রুমের দরজা ধাক্কায় ভিতর থেকে লাগানো। দরজায় কান পাতে। চাপা স্বরে কথার আওয়াজ শোনা যায়। প্রত্যাশা দূর্বল শরীরেও নিজেকে বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা করছে। হিট্টু বলে,
“এই শা** হাত ধর।”
হিট্টু নিজের শার্ট খুলে প্রত্যাশার দিকে হাত বাড়াতে নিবে। সে মুহূর্তে দরজায় ভেঙে হিট্টুর গায়ে পড়ে। নাওয়াসকে দেখে হিট্টুর সাথের দুজন আতঁকে ওঠে। নাওয়াসের চোখ মুখ লাল হয়ে আছে। চোখ দুটো জ্বলন্ত কোনো আগুনের গোলা। যে আগুনের গোলাই ওরা পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। প্রত্যাশার হাত ছেড়ে দিয়ে দুপা পিছিয়ে যায়। একে ওপকে ধরে কম্পিত কণ্ঠে বলে,
“ভাই এ এখানে কী করে এলো? এখন কী হবে?”
নাওয়াস তড়িৎ এসে হিট্টুকে মাটি থেকে তুলে মা’রতে থাকে। বিশ্রী ভাষায় গালি দিয়ে বলে,
“হা’রা—দা তোর এতো কলিজা হয়েছে তুই আমার এলাকায় ঢুকে। একটা মেয়ের সম্মানহানি করতে যাচ্ছিলি? আজ তোকে জানে মে’রে দেবো…”
প্রত্যাশা নিভু চোখে নাওয়াসকে দেখলো। ওর কথাও অস্পষ্ট শুনলো। এতক্ষণ নিজের ইজ্জত রক্ষা করতে, নিজের শরীর ও মনের সব শক্তি দিয়ে চোখ খোলা রেখেছিলো। নাওয়াসকে দেখে স্বস্তির শ্বাস ছেড়ে শরীর ছেড়ে দিলো। নাওয়াসকে ডাকতে মিন্টু এদিকে এসেছিলো। তখন এই সব কিছু দেখে পিয়াশ আর তন্ময়কে ফোন করে ডাকে। ওরা এসে নাওয়াসকে ছাড়িয়ে নিলো। কেননা হিট্টুর অবস্থা খারাপ। আর যদি মা’রে তাহলে ম’রেই যাবে। তখন পুলিশের ঝামেলা হবে। নাওয়াসের নজর প্রত্যাশার ওপর পড়তে নিজেকে পিয়াশ আর তন্ময়ের থেকে ছাড়িয়ে,প্রত্যাশার পাশে হাঁটু ভেঙে বসে বলল,
“প্রত্যাশা শুনতে পাচ্ছো?”
প্রত্যাশা রেসপন্স করে না। নাওয়াস প্লাস চেক করে। দ্রুত প্রত্যাশাকে কোলে তুলে পিয়াশদের উদেশ্যে বলল,
“ওদের তিনজন যেন ছয় মাসের কমে, হসপিটাল থেকে বের হতে না পারে। আর এই ব্যাপারটা যেন জানাজানি না হয়।”
নাওয়াস চলে যায়। ওরা তিনজন হিট্টুর চ্যালাদের দিকে বাকা হেসে তাকায়। ওরা ভয়ে শুকনো ঢোক গিলে।
চলবে
(ভুল-ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।)