এক অভিমানীর গল্প
পর্ব- ০৪
লেখা- অনামিকা ইসলাম।
রাত্রি ৯টা নাগাদ বাঁধন কল দেয় মায়াকে। পরপর দু’তিনবার কল দেওয়ার পরও রিসিভ করেনি মায়া। ফোনটা টেবিলের উপর রেখে তরকারী গরম করে বাঁধন বাবাকে খেতে দিয়ে নিজেও কিছু খেয়ে নেয়। রাত্রি ১১টা। বাঁধনের ইচ্ছে হচ্ছে ওর পুতুলবউটার ভয়েচটা শুনতে। কিন্তু ও কি এখন জেগে আছে? আর জেগে থাকলেই বা কি? এত রাত্রে ও কি আমার কল রিসিভ করবে?
নাম্বারটা ডায়াল করেও কেটে দেয় বাঁধন। বিছানায় ছটফট করতে করতে কখন যে ঘুমের জগতে চলে যায় টের পায় না বাঁধন।
রাত্রি ২টা বেজে ২৩মিনিট_
বাঁধনের ফোনটা বেজে উঠে। ঘুমন্ত বাঁধন পাশেই টেবিলের উপর থেকে হাতড়ে ফোনটা খুঁজে বের করে। চোখের সামনে এনে রিসিভ করতে গিয়ে ‘থ’ হয়ে যায় বাঁধন। এ যে মায়ার কল। স্বয়ং মায়া ওকে কল দিয়েছে, তাও এত রাত্রে। বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল বাঁধনের। কিন্তু কষ্ট হলেও এটাই সত্যি যে মায়া কল দিয়েছে। সাত, পাঁচ ভাবতে ভাবতেই ফোনটা কেটে যায়। বাঁধন নিজেই কল দেওয়ার জন্য স্ক্রিনে হাত রাখতেই আবারো কল। তাড়াতাড়ি কলটা রিসিভ করে বাঁধন। হ্যাঁলো, বলে কিছু বলতে যাচ্ছিল বাঁধন ওর পুতুলবউটাকে। কিন্তু তার আগেই কথা শুরু করে মায়া। মায়ার কথা শুনে কেমন যেন স্তব্ধ হয়ে যায় বাঁধন। নিশ্চুপ শ্রোতার মত বাঁধন নিরব থেকে ওর পুতুলবউয়ের কথা শুনছে।
মায়ার যে একটা কথায় বাঁধন বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল, সে একটি কথা ছিল-
” স্যরি, ৯টায় কল দিয়েছিলেন রিসিভ করতে পারিনি। আসলে তখন আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। আর ঘুম থেকে যখন জাগলাম তখন মনে হলো আপনাকে একবার কল দেওয়া দরকার।…..”
বাঁধনের বাকরুদ্ধ হওয়ার কারণ-
এর আগে মায়া কখনো বাঁধনের ইচ্ছের প্রাধাণ্য দেয়নি। মায়ার কাছে সবার উপরে ওর ক্যারিয়ার, ওর স্বপ্ন। আর সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য ও যেকোনো কাজ করতে রাজি। যেমনটি বাঁধনের সাথে করেছে। বিয়ের ৯মাস অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পরও মায়া বাঁধনকে তার প্রাপ্য অধিকারটুকু দেয়নি। মায়ার এককথা- আমি এ বিয়ে চাইনি। আমার মনের মধ্যে ছোট্ট থেকে যে স্বপ্ন লালিত হয়ে আসছে সেটা হলো আমার লেখাপড়া। আমি আমার সম্পূর্ণ লেখাপড়া শেষ করে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে বাবা মায়ের কষ্টের একটু হলেও প্রতিদান দিতে চেয়েছিলাম। তারপর বিয়ে, অন্যান্য চিন্তা। আমার পড়াশুনা আমার কাছে কম্পোলসারি, আর আমার বিয়ে-ঘর-সংসার এসব অফশনাল। কম্পোলসারি বাদ দিয়ে আমি অপশনালকে গুরুত্ব দিতে কখনো পারিনি, আজও পারব না। মায়া অতি সুন্দর করে বাঁধনকে বুঝিয়ে দিত, ওর জীবনে স্বপ্ন বলতে লেখাপড়াটাই অন্যতম।
বাঁধন যখন ভালোবেসে মায়াকে খাওয়াতে আসত, মায়া তখন একবুক ঘৃণা নিয়ে দুরে সরে যেত। ওর একটাই কথা-
” কাছে আসবেন না একদম। শেষ করে দিব আমি নিজেকে। আমি এখন এসব কিছুর জন্য প্রস্তুত না।”
বাধ্য বাঁধন বিয়ের ৭দিনের মাথায় মায়াকে শ্বশুরালয়ে মায়ার বাবার বাড়িতে রেখে আসে। সেই থেকে মায়া নিজের ইচ্ছে মতই চলত। মন চাইলে শ্বশুর শাশুড়িকে কল দিত, মন না চাইলে দিত না। কখনো কখনো নিজ ইচ্ছেতেই সুদূর নরসিংদী থেকে ঢাকায় বাঁধনের কাছে যেত, আবার ঝগড়া করে বাঁধনকে টেনশনে রাখার জন্য পালিয়ে চলে আসত। বাঁধন কিচ্ছু বলত না মায়াকে। শুধু নির্বাক শ্রোতাদর্শকের মতই সবকিছু নিরবে দেখে শুনে যেত।
বাঁধন কোনো প্রতিদানের আশা করে ভালোবাসেনি মায়াকে, আজও বাসবে না। আর তাইতো বাঁধন কখনো স্বামীর অধিকার নিয়ে মায়ার কাছে যায়নি। যদিও মাঝে মাঝে ভেতরের পুরুষসত্তাটা জেগে উঠত, আবার বহুকষ্টে নিজেকে কন্ট্রোলও করত।
বাঁধন চাইনা ওর কারণে ওর ভালোবাসার মানুষটির স্বপ্ন ভেঙে যাক। আর চাই না বলেই বাঁধন ওর বাবা মাকে জানিয়ে দিয়েছে, মায়ার লেখাপড়া শেষ হওয়ার আগে ওকে যেন শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার জন্য ফোর্স না করা হয়। বাঁধনের ফেরেস্তার মত বাবা মা বিনাবাক্যে বাঁধনের কথা মেনে নিল। ওদেরও এক কথা- মায়ার লেখাপড়া শেষ হোক! তারপর না হয় ধূমধাম করে বিয়ে করিয়ে ওকে এ বাড়িতে নিয়ে আসব।
আজ এতগুলো দিন পর সেই মায়ার মুখ থেকে এমন নরম কথা শুনে বাঁধন তাই স্তব্ধবাক! একমুহূর্তের জন্য বাঁধন ওর কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেললেও মায়ার প্রশ্নে মুখ খুলে। প্রশ্ন করে মায়া-
” কল দিয়েছিলেন! কিছু বলবেন?”
জবাবে বাঁধন বলে, শরীর ভালো আছে তো তোমার? মায়ার শান্ত জবাব, হুম।
মনে হচ্ছে ঘুম পাচ্ছে তোমার। কন্ঠ’টা কেমন যেন শুনাচ্ছে! আজ না হয় থাক।ঘুমিয়ে পড় তুমি।
বাঁধনের কথা শুনে টানটান কন্ঠে মায়ার জবাব, না! না! আমি ঠিক আছি। আপনি বলতে পারেন….
এবার বাঁধন ধমক দেই মায়াকে। মায়া আচ্ছা বলে চুপটি করে ভদ্র বালিকাদের মত কলটা কেটে দেয়।
সে রাত্রে বাঁধন আর ঘুমুতে পারেনি এই ভেবে যে, ওর বউটা হঠাৎ করে কিভাবে এত ভদ্র হয়ে গেল!
পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই কল দেয় বাঁধন ওর পুতুলবউ মায়াকে। কল দেওয়ার মিনিট পাঁচেক পর কল ব্যাক করে মায়া। অনুনয়ের স্বরে স্যরি বলে এটা জানায় যে ও ওয়াশরুমে ছিল, যার কারণে কলটা রিসিভ করতে পারেনি। যতই সময় যাচ্ছে বাঁধনের অবাক হওয়ার মাত্রাটা ততই যেন বেড়েই চলছে। খাবার খেতে বললে ভদ্র শিশুর মত আচ্ছা বলে খেতে যাওয়া, গোসল করতে বললে গোসল করা, ঘুমাতে বললে ঘুমাতে যাওয়া। কোনোটাতেই এখন আর মায়ার অনীহা নেই। বাঁধন যা বলে মায়া তাই করে। হঠাৎ করে এভাবে চেঞ্জ হয়ে যাওয়া, ব্যপারটা ভাবিয়ে তুলে বাঁধনকে।
” আমার যে করেই হোক জানতে হবে ওর ভিতর কি চলছে? না হলে আমি শান্তি পাচ্ছি না”
সেদিন রাত্রে ঘুম আসছিল না বাঁধনের। নানান টেনশন যেন বাঁধনের উপর ভালো করে ঝেকে বসেছে। ভিতরটা কেমন অস্থির অস্থির লাগছিল বাঁধনের। ঘুমানোর জন্য হাজারো চেষ্টা করলেও ঘুম আসছিল না বাঁধনের। বার বার চোখের সামনে মায়ার মায়াবী মুখটা ভেসে উঠছিল। খুব ইচ্ছে হচ্ছে অভিমানীটার সাথে কথা বলতে। ওর ভয়েচটা শুনতে। আমি কি ওকে কল দিব?
কল দিবে না দিবে না করেও মায়ার কাটা হাতের কথা মনে পরতেই কল দিয়েই দেয় বাঁধন। ওপাশ থেকে ছোঁ মেরে কল রিসিভ করে মায়া। মনে হচ্ছে এত রাত অবধি জেগে মায়াও এই কলেরই অপেক্ষায় ছিল।
” ঘুমাওনি এখনো?”
শান্তস্বরে মায়ার জবাব, নাহ! আপনি? আপনি ঘুমাননি কেন এখনো?
—– ঘুম আসছিল না।
– ওহ……..
——- মায়া, একটা কথা বলব?
– একটা কেন? হাজারটা বলুন। তার জন্য অনুমতির কি আছে?
– আসলে আমার খুব ইচ্ছে হচ্ছিল আমার অভিমানীর চাঁদমুখটা দেখতে। আমি কি ঘুমানোর আগে তাকে একটু দেখতে পারি? বাঁধন কথা বলে উত্তরের অপেক্ষায় আছে। ও জানে মায়ার জবাব কি? সবসময় যে কথাটি শুনে ও মুখস্ত করে ফেলেছে সেই কথাটিই বলবে মায়া। মায়া বলবে-
” স্যরি, সম্ভব না। ভিডিও কলে আমি আমার পরিবার পরিজনের সাথে পর্যন্ত কখনো কথা বলিনি। সেখানে আপনার সাথে কথা বলব ভাবলেন কি করে?”
কিন্তু মায়া কি করল জানেন? বাঁধনকে অবাক করে দিয়ে সেদিন মায়া নিজেই ভিডিও কল করে। অবাক বাঁধন কিছুক্ষণ নিস্তব্ধ হয়েছিল। ঘোর কাটে মায়ার ডাকে, শুধু তাকিয়েই থাকবেন? কিছু বলবেন না?
দু’দিন ধরে মায়ার এমন অদ্ভুত রকম চেঞ্জ এমনিতেই বাঁধনের রাতের ঘুম হারাম করে দিয়েছে, তারউপর আজকে এভাবে ভিডিও কলে মুখোমুখি কথা বলা বাঁধন জাস্ট নিতে পারছে না। কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে ও। তাইতো মায়ার মনে কি চলছে সেটা বুঝার জন্য অপলক দৃষ্টিতে মায়ার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকা। কিন্তু নাহ! কোনো কূলকিনারা পায়নি বাঁধন।
আচ্ছা! দেখলামই তো। এবার তাহলে রাখি। এমনিতেও অনেক রাত হয়েছে। ঘুমিয়ে পরো তুমি। কথাটা বলে বিদায় নিয়ে বাঁধন কলটা কেটে দেয়।
নাহ! কিচ্ছু বুঝছি না এই মেয়ের মনে কি চলছে। উফফ! মাথাটা কেমন ব্যথা করছে। মাথায় হাত ধরে বাঁধন বিছানাতে উঠে বসতেই মায়ার হাতের কথা মনে পড়ে। ইস! আমার তো ওর হাতটাই দেখা হলো না।
মায়া তো মনে হয় এখনো ঘুমাইনি। আচ্ছা, একটা মেসেজ করে বলি ডাটা অন করতে।
যদিও শিউর না বাঁধন আদৌ মায়া ডাটা অন করবে কি না! তবুও মায়ার ফোনে একটা মেসেজ দিয়েই দিল।
” লক্ষ্মী! ডাটাটা অন করবা একটু? একটা জিনিস দেখতে ভুলে গেছিলাম।”
বাঁধনের মেসেজটা সাথে সাথেই সিন হয় ওপাশ থেকে। এবারো মায়া বাঁধনকে অবাক করে দিয়ে সাথে সাথে কল করে। ভিডিও কল। বাঁধন ওর মায়ার দিকে এমনভাবে তাকিয়ে আছে যেন এই প্রথম ও ওর মায়াকে দেখছে। আর দু’দিন ধরে মায়া যা করা শুরু করছে তাতে এমন মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক।
– কি যেন দেখতে চেয়েছিলেন আপনি!
—– তোমার কাটা হাত। হাতের অবস্থা কি রকম এখন?
মায়া ওর ডান হাতটা উঁচু করে ক্যামেরার সামনে ধরে। বাঁধন কিছুক্ষণ হাতের দিকে তাকিয়ে ছিল। তারপর মায়ার চোখের দিকে তাকাতেই বুঝতে পারে ঘুমে ঢুলুঢুলু ও।
দেখা শেষ। এবার কলটা কেটে লক্ষ্মী মেয়ের মত ঘুমিয়ে পরো কেমন?
মায়া ওর ঘুমন্ত ভাবটা দুর করার জন্য চোখটা জোর করে টানা দিয়ে বড় করে। তারপর ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলে, এটুকুতেই দেখা শেষ? আর কিছু দেখবেন না? অবাক বিস্ময়ে মায়ার দিকে তাকায় বাঁধন, আর কিছু মানে? শান্ত গলায় মায়ার জবাব, মানে শুধু কি হাতই দেখবেন অন্য কিছু দেখবেন না?
How do you mean, Maya?
তেমন কিছু না। আমি তো জাস্ট এটাই বলতে চাচ্ছি, হাত ছাড়াও আরো কিছু দেখার ইচ্ছে থাকলে নির্দ্বিধায় বলতে পারেন। আমি আপনাকে তাই দেখাবো।
বাঁধনের চোখ দুটো জলে টলমল করে উঠল। ওর আর বুঝতে বাকি নেই মায়া ঠিক কি বুঝাতে চাইছে। অনেক কষ্টে চোখের জল আটকিয়ে কাঁপা গলায় বাঁধন প্রশ্ন করে, মায়া! তুমি আমায় এমন ভাবলে? আমি তোমার হাত দেখতে চেয়েছি, আর তুমি কি না বিষয়টা অন্য ভাবে নিয়ে গেলে? এভাবে ভুল বুঝলে তুমি আমায়? এটাই বুঝি আমার প্রাপ্য ছিল মায়া?!
মায়া একটা শুকনো হাসি দিয়ে বলে, ঐ! আপনি কাঁদছেন কেন? আর আমি মোটেও আপনাকে ভুল বুঝিনি। আপনি চাইতেই পারেন এমন কিছু। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো আমি আপনার বিয়ে করা বউ। আমার উপর আপনার যথেষ্ট অধিকার আছে। আর তাই আপনি চাইলে আমি হাত কেন সব, সব দেখাতে বাধ্য।
বাঁধনের চোখের জল আর বাধ মানছিল না। নিমিষেই দু’চোখের নোনাজলে বাঁধনের গাল ভিঁজে যায়। মায়া নিশ্চুপ দর্শকের মত সেটা চেয়ে চেয়ে দেখছে শুধু।
বহুকষ্টে কান্না থামিয়ে চোখের জল মুছে নেয় বাঁধন। তারপর ঢোক গিলে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে বলে, লক্ষ্মী! এভাবে তুমি আমায় ভুল বুঝো না। আমি দম আটকে মরে যাব। লক্ষ্মী! প্লিজ আমায় বুঝার চেষ্টা করো। আমি ঐ রকম কিছু মনে করে তোমার সাথে কথা বলতে চাইনি। তুমি আমায় ভুল বুঝছ লক্ষ্মী! অনেক বড় ভুল বুঝছ?
ভুল?!!!
মায়া একটা অট্টহাসিতে মেতে উঠে। কোনটা ভুল? আমার কারণে আপনার জীবন নষ্ট হয়ে গেছে এটা নাকি অন্য ৮,১০টা মেয়ের মত আমি হতে পারিনি এটা? কোনটা ভুল আপনি সত্যি করে বলতে পারবেন?
কথার মাঝখানে থামিয়ে দেয় বাঁধন।তারপর একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে, স্যরি, লক্ষ্মী! মাথা ঠিক ছিল না ঐদিন। তাই কি বলতে কি বলছি নিজেও জানি না। আর তুমি যা করছ তাতে যে কারো মাথা নষ্ট হওয়ারই কথা! তুমি জানো পুরো বাসা খুঁজেও যখন তোমাকে পায়নি, তখন আমার ভিতরে কি চলছিল?
এতকিছু আমাকে কেন বলছেন? আমি কি আপনাকে এসবের জন্য কিছু বলেছি? আর স্যরি কেন বলছেন? আপনাকে তো আমার ধন্যবাদ দেওয়ার দরকার। আপনি আসলে সেদিন যদি আমায় চোখে আঙুল দিয়ে আমার ভুলগুলো না দেখিয়ে দিতেন, তাহলে আমি কখনো’ই আমার ভুলগুলো শুধরে নিতে পারতাম না। সবচেয়ে বড় কথা যেটা সেটা হলো, আমি কল্পনাতেই ভাবতে পারতাম না যে আমার কারণে কারো জীবন নষ্ট হয়ে গেছে। আমি দিনের পর দিন আপনাকে আপনার প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে আসছি। কিন্তু আর নয়! এখন থেকে আপনার সবটুকু অধিকার আপনি আমার উপর…..(…..)….???
চুপ! একদম চুপ! আর একটা কথা যদি শুনি তাহলে খারাপ হয়ে যাবে। চুপচাপ আমার কথা শুনো….
মায়া কান্নাজড়িত কন্ঠে বলল, প্লিজ! আমায় একটু সুযোগ দেন। কথা দিচ্ছি আমি আমার ভুলগুলো শুধরে নিব। অন্য ৮,১০টা মেয়ের মতই হয়ে যাব। আপনার সব কথা শুনব। প্লিজ আপনি আমাকে এই সুযোগটা দিন। কথা দিচ্ছি, আমি আর পাগলামী করব না। আপনার যেভাবে সেভাবেই আমায়….(…..)…..????
বাঁধন আর নিতে পারছিল না। কল কেটে দিয়ে ফোনটা বন্ধ করে ফেলে বাঁধন। হু, হু করে কেঁদে উঠে বাঁধন। তুমি আমায় এতটা খারাপ ভেবেছ? সেদিনের এই একটু কথাকে এভাবে নেগেটিভ মাইন্ডে নিয়ে গেলে? আমি তোমার দেহ চাই, দেহ, নাহ? অন্য ৮,১০টা মেয়ের মতো হওয়া বলতে তুমি এটাই বুঝলে? এত বড় ভুল আমি আমায় বুঝতে পারলে মায়া! তোমার চোখে ভালোবাসার মানুষ থেকে এখন আমি নারী মাংস লোভী দানব হয়ে গেলাম? এতবড় অপবাদ তুমি আমায় দিতে পারলে???
চলবে…..