#একই_সুরে_প্রেম_আমায়_কাঁদায়
#Part_45
#ইয়াসমিন_খন্দকার
সমুদ্র রেগে গিয়ে নিজের ঘরে এসে বসে থাকে। কোনভাবেই প্রণালীকে শায়েস্তা করতে না পেরে ভীষণ রেগে আছে সে। সমুদ্র নিজের কপাল চাপড়ে বলে,”মেয়েটার মধ্যে কি আছে? ওর কোন ফিলিংস হয় কি না? এত কিছুর পরেও কেউ কিভাবে এত স্বাভাবিক থাকতে পারে? ওকে জব্দ করতে গিয়ে আমি তো নিজেই জব্দ হয়ে বসে আছি।”
সমুদ্রের এমন ভাবনার মাঝে কেউ তার দরজায় নক করে। সমুদ্র বলে,”কে?”
তখনই রায়ান সাহেব বলে ওঠেন,”আমি, সমুদ্র। তোমার রায়ান আঙ্কেল। তোমার সাথে কিছু কথা বলতে চাই।”
“ওহ, আঙ্কেল আপনি ভেতরে আসুন।”
রায়ান সাহেব ভেতরে এসে সমুদ্রকে বলল,”কি ব্যাপার? তুমি হঠাৎ করে সবার মাঝ থেকে চলে এল?”
“না, মানে…”
“দেখো সমুদ্র, এখন তোমার সাথে আমার মেয়ের ভাগ্য জড়িয়ে গেছে। তাই আমি তো তোমাকে অবহেলা করতে পারি না। আমি জানি, হয়তো প্রণালীকে নিয়ে তোমায় অনেক সমস্যা পোহাতে হচ্ছে। কারণ প্রণালী এখন অন্য পাঁচটা মেয়ের মতো স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। আজ ওকে দেখে আমি নিজেই এটা খুব ভালো ভাবে বুঝতে পেরেছি।”
সমুদ্র কিছুই বলে না। আরো ভালো করে বলতে গেলে বলার মতো কিছুই খুঁজে পায়না। এরমধ্যে রায়ান সাহেব বলেন,”আমার মেয়েটা এমন ছিল না। হঠাৎ করেই ওর জীবেন আসা কিছু ধাক্কা ওকে এভাবে বদলে দিয়েছে বাবা। তুমি একটু ওর সাথে মানিয়ে নিও।”
সমুদ্রর কৌতুহল বাড়ে। সে তো আগে থেকেই প্রণালীর এমন ব্যবহারের কারণ জানার চেষ্টা করছিল। আর এখন রায়ান সাহেবের কথা শুনে তার এই আগ্রহ বাড়লো আরো বেশি। তাই সে বলে উঠল,”কি হয়েছে প্রণালীর সাথে যে ও এমন ব্যবহার করছে?”
রায়ান সাহেব দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলেন,”আমি তোমার থেকে কিছুই লুকাতে চাই না বাবা। আমি তোমাকে সব খুলে বলছি।”
এই বলে তিনি সমুদ্রকে শান্তর ব্যাপারে, শান্ত প্রণালীর সাথে কি কি করেছে এবং কি পরিস্থিতিতে প্রণালী বিয়েতে রাজি হয়েছে সব বলেন। সব শুনে সমুদ্র বাকরুদ্ধ হয়ে যায়। সে বুঝতে পারে প্রণালীর উপর দিয়ে অনেক ঝড় বয়ে গেছে তাই সে এমন শক্ত হয়ে গেছে।
সমুদ্র যখন নিজের ভাবনায় মশগুল ছিল তখনই রায়ান সাহেব তার হাত শক্ত করে ধরে বলে,”আমার মেয়েটা অনেক কষ্ট সহ্য করেছে বাবা। আমি জানি ওর সাথে মানিয়ে নিতে এখন তোমার অনেক অসুবিধা হবে। আমি বাবা হিসেবে এইজন্য তোমার কাছে ক্ষমা চাইছি। কিন্তু তোমার কাছে একটাই অনুরোধ, আমার মেয়ের সাথে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করো। ও কিন্তু মোটেই খারাপ মেয়ে নয়। এখন যেমন চুপচাপ আর নির্লিপ্ত দেখছ ও কিন্তু ঠিক এর বিপরীত স্বভাবের।”
সমুদ্র চৌধুরী বলে,”আপনি চিন্তা করবেন না। আমি আপনার মেয়ের খেয়াল রাখব।”
মুখে এই কথা বললেও মনে মনে সে বলে,”প্রণালীকে স্বাভাবিক করতে হবেই। আমার প্রতিশোধ নেওয়া যে এখনো বাকি।”
তবে প্রতিশোধের কথা বললেও সমুদ্রের মন যে প্রণালীর প্রতি একটু বলেও দূর্বল হয়ে গেছে সেটা সে নিজেও বুঝতে পারছে। তবে এই দূর্বলতাকে প্রশ্রয় দিতে চায় না সমুদ্র। সে ভাবছিল সবই হয়তো ইমোশন। হঠাৎ করে প্রণালীর দুঃখের কথা শুনে হয়তো তার প্রতি মায়া তৈরি হয়েছে। যেমনটা স্বাভাবিক। বাড়ির একটা কুকুর বেড়ালের প্রতিও এমন মায়া হয়। এই ভাবনা থেকেই সমুদ্র ভাবল এটা স্বাভাবিক। কিন্তু আসলেই কি তাই? তার উত্তর তো সামনে পরিস্কার হবে।
~~~~~
প্রণালী সবাইকে নিজের হাতে খাবার খেতে দিচ্ছিল। এটাই নাকি চৌধুরী বাড়ির নিয়ম। যদিও রান্না বাইরের লোকই করেছে। অতিথিরা সবাই খাওয়া দাওয়া শেষে বিদায় নেয়। রায়ান সাহেবও প্রত্যুষকে নিয়ে চলে যান। আর এরপরই পুষ্পা চৌধুরী সুযোগ পেয়ে যান নিজের আসল রূপ দেখানোর। এইজন্যই তো তিনি সমুদ্রকে বলেন,”বাবাই তুমি খাওয়া দাওয়া শেষ করে টায়রাকে নিয়ে একটু বাইরে ঘুরতে যাও। মেয়েটা কতদিন পর দেশে ফিরল। দেশটা একটু ঘুরে দেখুক।”
সজল চৌধুরী বলেন,”এসব তুমি কি বলছ? তোমার ছেলের সবে সবে বিয়ে হয়েছে। আর ও কিনা নিজের বউকে ফেলে অন্য একটা মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে যাবে! এটা কোন আঙ্কেলে বলছ তুমি? তোমার কি কোন সেন্স নেই?”
“তোমার কোন কথা আমি শুনতে চাইনি৷ তুমি নিজের মতো খাও। আমার বা আমার ছেলের ব্যাপারে নাক গলানোর অধিকার আমি তোমাকে দেইনি।”
সায়মা চৌধুরী বলে ওঠেন,”ভাবি! তুমি কিন্তু এটা ঠিক করছ না। সবার সামনে ভাইয়াকে এভাবে বলার অধিকারও কিন্তু তোমার নেই।”
“তুমি নিজের সীমার মধ্যেই থাকো। অনুষ্ঠান তো মিটে গেছে। তাহলে তুমি এখানে পড়ে আছ কেন? যাও নিজের বাসায় যাও।”
সায়মা চৌধুরী অপমানিত বোধ করেন। তবুও বলেন,”এটা আমার বাবার বাড়ি। এখানে আমি যতদিন ইচ্ছা থাকব।”
পুষ্পা চৌধুরী বাকা হেসে বলেন,”কিন্তু এই বাড়িটা তো আমার নামে। তাই এখানে থাকতে চাইলে তোমার আমার কথা শুনে চলতে হবে।”
সায়মা চৌধুরী একদম চুপ হয়ে যান। খাওয়া শেষ করে সমুদ্র টায়রাকে বলে,”চলো আমরা ঘুরতে যাই।”
টায়রাও বিনাবাক্যে রাজি হয়। প্রণালীর পাথরের মতোই দাঁড়িয়ে ছিল। সমুদ্র প্রণালীর দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে,”দেখি, তুমি কতদিন এমন সহ্য করে চলতে পারো। একদিন না একদিন তোমায় রিয়্যাক্ট করতেই হবে।”
~~~~~~
রাতে বাসায় ফিরে সমুদ্র প্রথমে নিজের রুমে ঢো মারে। সে দেখে প্রণালী তার রুমেই শুয়ে আছে। সমুদ্র রুমে প্রবেশ করে প্রণালীকে বলে,”তুমি এই রুমে কি করছ? এটা আমার রুম। বেরিয়ে যাও এখান থেকে।”
প্রণালী কোন কথা না বলে উঠে বসে। তারপর রুম থেকে বেরিয়ে যেতে উদ্যত হয়। প্রণালী রুম থেকে বেরোতে যাবে এমন সময় সমুদ্র তাকে আটকে দিয়ে বলে,”এমন কেন তুমি? তোমাকে আমি বললাম আর তুমি বেড়িয়ে যাচ্ছ। একটু প্রতিবাদ তো করতে পারো। নিজের অধিকার আদায়ের চেষ্টা তো করতে হবে।”
প্রণালী স্বাভাবিক থেকেই উত্তর দেয়,”যা আমার নয়, তার উপর আমি অধিকার দেখাই না।”
প্রণালীর এই কথা ভীষণ হার্ট করে সমুদ্রকে। সে প্রণালীর হাত ছেড়ে না দিয়ে প্রণালীকে নিজের আরো কাছে নেয়। প্রণালী প্রথমে একটু অবাক হয়ে গেলেও নিজেকে সামলে নেয়। এক ঝটকা দিয়ে সমুদ্রকে দূরে সরিয়ে দেয়। তারপর একদম স্বাভাবিক ভাবে রুম থেকে চলে যাবার চেষ্টা করে যেন কিছু হয় নি। কিন্তু এতে করে সমুদ্র আরো রেগে গিয়ে আবার প্রণালীকে নিজের কাছে টেনে নেয়। প্রণালী থমথমে গলায় বলে,”ছাড়ুন আমায়।”
সমুদ্র বলে,”না, ছাড়বো না। আজ তোমায় আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। এমন পাথরের মতো হয়ে আছ কেন তুমি? কেন কিছুতেই আমি তোমায় জব্দ করতে পারি না? তোমার মধ্যে কি কোন ফিলিংস নেই।”
“না, নেই।”
প্রণালীর স্পষ্ট উত্তর।
” আমাকে অন্য কোন মেয়ের সাথে দেখলে তোমার কষ্ট হয় না?”
“না, হয়না।”
“নিজেকে তুমি আমার স্ত্রী বলে মানো না?”
“না, মানি না।”
প্রণালীর সব কথা যেন সমুদ্রর গালে এক একটা থাপ্পড়ের মতো লাগে। সমুদ্র চৌধুরী, যে নিজের সৌন্দর্য আর বংশ পরিচয়, ধন-সম্পদ নিয়ে সবসময় অহংকার করেছে। যার সাথে কথা বলার জন্য সব মেয়েরা উৎসুক থাকে তাকে কিনা এই মেয়েটা ঘোল খাওয়াচ্ছে। তাকে বিন্দুমাত্র পাত্তা দিচ্ছে না। এটা তার হজম হয় না। সমুদ্র প্রণালীর আরো কাছে যেতে চাইছিল এমন সময় পুষ্পা চৌধুরী সেখানে উপস্থিত হন। এসেই দুজনকে এত কাছাকাছি দেখে রেগে যান। চিৎকার করে বলেন,”বাবাই! কি করছ তুমি? এই মেয়ের থেকে দূরে সরে আসো।”
হঠাৎ মায়ের গলা শুনে সমুদ্র ছিটকে সরে আসে। প্রণালী পড়ে যেতে গিয়ে নিজেকে সামলে নেয়। পুষ্পা চৌধুরী সমুদ্রের কাছে এসে বলেন,”বাবাই, তুমি এই মেয়েটার এত কাছে ছিলে কেন? যাও আমার রুমে যাও।”
সমুদ্র মায়ের বাধ্য সন্তানের মতো তার কথায় চলে যায়। সে যাওয়ার পর পুষ্পা চৌধুরী প্রণালীকে বলেন,”একদম আমার বাবাইয়ের কাছে আসার চেষ্টা করবে না। তোমার উদ্দ্যেশ্য আমি বুঝি না ভেবেছ, নিজের রূপ দিয়ে ছলাকলা করে আমার বাবাইকে ভোলাতে চাইছ। এভাবে তুমি আমার বাবাইকে পাবে না। আমার বাবাই আমাকে অনেক ভালোবাসে। আমি না বলা পর্যন্ত ও তোমায় ছুয়েও দেখবে না। তুমি আমার থেকে আমার বাবাইকে কেড়ে নেওয়ার বৃথা চেষ্টা করো না। তুমি কিছুতেই বাবাইকে আমার থেকে কেড়ে নিতে পারবে না।”
to be continue…
#একই_সুরে_প্রেম_আমায়_কাঁদায়
#Part_46
#ইয়াসমিন_খন্দকার
সজল চৌধুরী আর সায়মা চৌধুরী দুজনেই বসে সমুদ্র ও প্রণালীর ব্যাপারে কি করা যায় সেই নিয়ে আলোচনা করছিল। সজল চৌধুরী বলেন,”আমার মনে হয় পুষ্পা যতদিন থাকবে ততদিন কিছুতেই প্রণালী আর সমুদ্রকে কাছাকাছি আসতে দিবে না।”
সায়মা চৌধুরী নিজের ভাইয়ের সাথে সহমত প্রকাশ করে বলে,”তুমি একদম ঠিক বলেছ ভাইয়া। ভাবি তো চিনে জোকের মতো ওদের পেছনে পড়ে আছে। আর প্রণালীও কেমন যেন নির্জীব থাকে সবসময়। হয়তো ভাবিকে সামলানো ওর দ্বারা সম্ভব নয়।”
সজল চৌধুরী উদ্বিগ্ন স্বরে বলে ওঠেন,”তাহলে কি করা যায় বল তো? কিভাবে আমি সমুদ্র আর প্রণালী কে কাছাকাছি আনব বল? কিভাবে আমি পুষ্পার নজরের বাইরে থেকে এমনটা করতে পারবো?”
সায়মা চৌধুরী কিছুটা ভেবে বলেন,”আমার মনে হয় না ভাবির চোখের সামনে এমন কিছু সম্ভব। তবে হ্যাঁ, তুমি যদি ওদের কে দূরে কোথাও পাঠিয়ে দাও ভাবির নজর এড়িয়ে তাহলে ওদের কাছাকাছি আসা সম্ভব হবে। হাজার হোক, ওরা বিয়ে করেছে। বিয়ে শব্দটা দুই শব্দের হলেও এর গাম্ভীর্য অনেক। এই দেখো না, আমার স্বামী আমার থেকে ১০ বছরের বড় ছিল জন্য আমি তো বিয়েতে রাজিই ছিলাম না। তোমরা এক প্রকার ধরে-বেধে আমাদের বিয়ে টা দিয়েছিলে। আর এখন সেই স্বামীকেই আমি চোখে হারাই। বিয়ে হলো এমনই একটা সম্পর্ক যেটায় বাধা পড়ার পর স্বামী-স্ত্রীর একে অপরের প্রতি অনুভূতি এমনিতেই তৈরি হয়ে যায়। শুধু তাদের কিছু স্পেস দরকার।”
সজল চৌধুরী ভেবে বলেন,”তাহলে আমি একটা কাজ করি। ওদেরকে হানিমুনে পাঠিয়ে দেই৷ তাহলে কাজ হতে পারে? কি বলিস তুই।”
“সেটা তো ঠিক আছে। কিন্তু সবটাই করতে ভাবির নজর এড়িয়ে। কারণ ভাবি যদি একবার ওদের হানিমুনের কথা জানতে পারে তাহলে দেখবা সেখানেও বাগড়া দিতে চলে যাবে।”
“এটা তুই একদম ঠিক বলেছিস। তবে চিন্তা করিস না। এবার আমি এমন প্ল্যান করব যে সাপও মরবে আর লাঠিও ভাঙবে না।”
~~~~~~~~~~~~~~~~~
পুষ্পা চৌধুরী নিজের ঘরে বসে বসে নিজের কিছু গহনা আর শাড়ি দেখছিলেন। এমন সময় টায়রা তার রুমে এসে বলে,”আন্টি? আপনি ডেকেছিলেন আমায়?”
পুষ্পা চৌধুরী এক গাল হেসে বলে,”আরে টায়রা। এসো এসো আমার পাশে বসো।”
টায়রা পুষ্পা চৌধুরীর পাশে বসে তার সাথে শাড়ি আর গহনা গুলো দেখছিল। হঠাৎ একটা ডায়মন্ড নেকলেস তার পছন্দ হয়ে যাওয়ায় সে সেটা তুলে নিয়ে বলে,”ওয়াও! এটা কত সুন্দর।”
“তোমার পছন্দ হয়েছে?”
“হ্যাঁ, আন্টি। ভীষণ পছন্দ হয়েছে।”
“তাহলে তুমি এটা নিজের কাছে রেখে দাও”
“সত্যি? আমি এটা নিজের কাছে রাখব?”
“হ্যাঁ, রাখো। এমনিতেই এই সব শাড়ি গহনা আমি তো নিজের ছেলের বউয়ের জন্যই রেখে দিয়েছিলাম। কিন্তু তোমার আঙ্কেল যে এমন গেম খেলবে সেটা তো আমি জানতাম না।”
কিছুক্ষণ থেমে পুনরায় বলেন,”কিন্তু তুমি কোন চিন্তা করো না টায়রা। আমার সমুদ্রর বউ তো শুধু তুমিই হবে। ঐ মেয়েটাকে আমি এমন ভাবে অপদস্ত আর টর্চার করব যে আর দুদিনও এই বাড়িতে টিকতে পারবে না।”
টায়রা বলে,”তুমি শুধু শুধু একা কেন কষ্ট করতে যাবে আন্টি? ঐ মেয়ের দায়িত্ব তুমি আমার উপর ছেড়ে দাও। ঐ মেয়েকে আমি এমন শিক্ষা দেব যে বুঝবে টায়রার জিনিসে নজর দেওয়ার ফল কত ভয়াবহ হতে পারে।”
এই বলেই একটা বিশ্রী রকমের হাসি দেয় টায়রা।
~~~~~~~~
প্রণালীর ভীষণ মাথা ব্যাথা করছিল। তাই সে গেস্টরুম থেকে বের হয়ে নিচে এসে কিচেনে ঢুকে নিজের জন্য কফি বানাচ্ছিল। টায়রা কিচেনে প্রণালীকে দেখে তার কাছে যায়। প্রণালী টায়রাকে দেখেও না দেখার ভান করে থাকে। টায়রা প্রণালীকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলতে থাকে,”কি নির্লজ্জ মেয়ে তুমি! সমুদ্রর মতো একটা রিচ, হ্যান্ডসাম ছেলে দেখে নাচতে নাচতে তার গলায় ঝুলে পড়লে। তোমার কি একটুও সেল্ফ রেস্পেক্ট নেই? এত অপমানিত হয়ে এখানে পড়ে আছ কেন?”
প্রণালী টায়রার কথায় কোন প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে নিজের কাজ করে যেতে থাকে। এতে টায়রা রেগে গিয়ে প্রণালীকে বলে,”এত ইগো কিসের তোমার? এত ইগো কেন?”
সমুদ্র ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানি নিতে কিচেনে এসেছিল। সেও এসে টায়রার কথা শুনে তার সাথ দিয়ে বলে,”এই মেয়েটার শুধু ইগোই আছে আর কিছু নেই। আসলে খুব বড় ছ্যাকা খেয়েছে তো। তাই এমন হয়ে গেছে। জানো, মেয়েটাকে একটা ছেলে ভীষণ বাজে ভাবে ধোকা দিয়েছে। অবশ্য ওর মতো মেয়ে এটাই ডিজার্ভ করে। কেই বা ওর সাথে সংসার করতে চাইবে। ইভেন আমিও তো খুব শীঘ্রই ওকে ডিভোর্স দেবো। আর তোমাকে বিয়ে করে নেব।”
সমুদ্র কথাগুলো প্রণালীকে জ্বালানোর জন্য বলেছিল। কিন্তু প্রণালী কারো কথায় কোন পাত্তা না দিয়ে কানে হেডফোন গুজে গান শুনতে থাকে। টায়রা গিয়ে প্রণালীর কান থেকে হেডফোন খুলে বলে,”এই কথা শুনছ না কেন? তোমার মা কি তোমায় কোন শিক্ষা দেয়নি?”
নিজের মায়ের নামে এমন কথা মেনে নিতে পারল না প্রণালী। এটা তার দূর্বলতার যায়গা। তাই অনেকদিন পর নিজের আসল খোলসে আসল। গরম কফি সম্পূর্ণ ঢেলে দিল টায়রার হাতে। টায়রা যন্ত্রণায় ওমাগো বলে চিৎকার করে উঠল। প্রণালী বলল,”ভবিষ্যতে আমার মায়ের সম্পর্কে কোন খারাপ কথা বলার আগে এই কথাটা মনে রেখো।”
টায়রা গরম চোখে দেখতে থাকে প্রণালীকে। সমুদ্র টায়রাকে বলে,”ইস, হাতের কি অবস্থা। তাড়াতাড়ি পানি দাও হাতে।”
কিন্তু প্রণালীকে সে কিছুই বলে না ব্যাপারটা নিয়ে। টায়রা রেগে গিয়ে বলে,”তুমি ঐ মেয়েটাকে কেন কিছু বলছ না? দাঁড়াও আমি আন্টিকে গিয়ে সব বলছি। তারপর দেখো কি হয়।”
এই বলে টায়রা কাঁদতে কাঁদতে চলে যায়।
সমুদ্র প্রণালীকে বলে,”কাজটা তুমি ঠিক করলে না। এখন দেখো টায়রা মমকে গিয়ে কি বলে। মম কিন্তু টায়রাকে অনেক ভালোবাসে। তোমাকে ছেড়ে কথা বলবে না।”
প্রণালী বলে,”আমি আপনার মতো আপনার মমকে ভয় পাইনা। তাই আমার মধ্যে কোন ভয় নেই।”
এরমধ্যে টায়রা পুষ্পা চৌধুরীকে ডেকে নিয়ে আসে। পুষ্পা চৌধুরীকে এনেই বলতে শুরু করে,”দেখো আন্টি এই মেয়েটা আমার হাতে গরম কফি ঢেলে কি অবস্থা করেছে। তুমি এর বিচার করো।”
পুষ্পা চৌধুরী প্রণালীর দিকে এগিয়ে এসে বলেন,”এত বড় সাহস তুমি পাও কোথায়?”
বলেই প্রণালীর গায়ে হাত তুলতে যান। প্রণালী পুষ্পা চৌধুরীর হাতটা শক্ত করে ধরে বলে,”ভুলেও এই কাজটা করবেন না। আমি এতদিন মুখ বুজে সবটা সহ্য করেছি তার মানে এই নয় আমি দূর্বল। আমি একজন আইনের স্টুডেন্ট। বাড়ির বউয়ের গায়ের হাত তোলার কি শাস্তি হয় জানেন? আপনাকে আমি ডোমেস্টিক ভায়োলেন্সের কেইসে জেলের ভাত খাওয়াবো যদি দ্বিতীয় বার এই স্পর্ধা দেখান।”
সমুদ্র চেচিয়ে বলে ওঠে,”তোমার এত বড় সাহস তুমি আমার মায়ের সাথে এমন ব্যবহার করছ?”
প্রণালী আরো জোরে চেচিয়ে বলে,”এই মমের চামচা চুপ থাকো।”
সমুদ্র হতবাক হয়ে যায়। সাথে একটু স্বস্তিও পায় যে মেয়েটা আবার আগের রূপে ফিরছে। এদিকে দরজায় দাঁড়িয়ে সব ঘটনা দেখলেন সায়মা চৌধুরী আর সজল চৌধুরী। সজল চৌধুরী সায়মা চৌধুরীকে বলেন,”দেখলি তো। বলেছিলাম না, এই মেয়েই পারবে পুষ্পাকে জব্দ করতে।”
“তাই তো দেখছি ভাইয়া। তুমি একদম ঠিক মেয়েই বাছাই করেছ। এবার খেলা জমবে।”
to be continue…
#একই_সুরে_প্রেম_আমায়_কাঁদায়
#Part_47
#ইয়াসমিন_খন্দকার
প্রণালী নিজের ঘরে এসে কাপড় চোপড় গোছাচ্ছে৷ বেশ অনেক হয়েছে সে আর এসব সহ্য করতে পারছে না৷ তাই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে আজই সে এই বাড়ি ছেড়ে আবার নিজের বাবার কাছে ফিরে যাবে। এই জন্য সে তৈরি হয়ে নিচ্ছিল। সায়মা চৌধুরী প্রণালীর রুমে এসে তাকে এভাবে তৈরি হতে দেখে অবাক হয়ে যান। প্রণালীর কাছে এসে জিজ্ঞেস করেন,”মা, তুমি হঠাৎ রেডি হচ্ছ কেন? আবার ব্যাগ পত্রও গুছিয়ে রাখছ। কোথাও কি যাবে?”
প্রণালী একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলে,”হ্যাঁ, আন্টি। আমি এখান থেকে আমার বাড়িতে ফিরে যাব।”
সায়মা চৌধুরীর মুখ কালো হয়ে যায়। এই মেয়েই তো এখন তাদের আশা ভরসা। তারা তো স্বপ্ন দেখছে এই মেয়েই পুষ্পা চৌধুরীকে টাইট দেবে। কিন্তু এই মেয়ে এভাবে চলে গেলে তো তাদের সব আশা শেষ হয়ে যাবে। তাই সায়মা চৌধুরী বলে ওঠেন,”তুমি এই বাড়ি থেকে কোথাও যেওনা প্রণালী। এটা তোমার বাড়ি৷ তোমাকে তো এখানেই থাকতে হবে। বিয়ের পর শ্বশুর বাড়িই যে মেয়ের সব। শ্বশুর বাড়িতে টিকে থাকতে হবে সেটা মাটি কামড়ে হলেও।”
প্রণালী স্পষ্ট গলায় বলে,”সরি, আমি এসব পুরানো দিনের ধ্যান ধারণায় বিশ্বাসী নই। আমি এত লড়াই ঝগড়া করার মুডে নই। আর আমি চাই না, আমার জন্য এই বাড়িতে ফারদার আর কোন ঝামেলা হোক। আমি এমনিতেই অনেক ঝামেলার মাঝে আছি। আমি চাই না আমার ঝামেলা আরো বাড়ুক। আমার একটা শান্তিপূর্ণ জীবনের ভীষণ দরকার।”
এমন সময় সজল চৌধুরী এসে বলেন,”আমি বুঝতে পারছি তুমি এখানে অতীষ্ঠ হয়ে উঠছ। তবে এখন তোমায় একটু সহ্য করতেই হবে। এটুকু সহ্য করেই দেখো জীবনে অনেক সুখী হবে।”
“আমি পারবো না আঙ্কেল। আমার আর সেই সহ্যক্ষমতা নেই।”
“ঠিক আছে। তোমায় কিছু সহ্য করতে হবে। তোমার শান্তি চাই তো? আমি তোমার শান্তির ব্যবস্থা করছি। তবে তোমায় আর বাপের বাড়ি যেতে হবে না। তুমি যাবে অন্য কোথাও?”
“অন্য কোথাও মানে কোথায়?”
“হানিমুনে।”
“কি?!”
“আমার উপর বিশ্বাস রাখো প্রণালী। আমি সব ঠিক করে দেব। কাপড় চোপড় গুছিয়ে ভালোই করেছ। আজ রাতেই তোমরা বেড়িয়ে পড়বে।”
“কিন্তু..”
“কোন কিন্তু নয়। সায়মা তুই প্রণালীকে সামলা। আমি ওদিকটা ম্যানেজ করি।”
~~~~~~~~~~~
পুষ্পা চৌধুরী টায়রার হাতে বার্নাল লাগাতে লাগাতে বলেন,”খুব লাগছে তাইনা? ইশ,ফোস্কা পড়ে গেছে। ঐ মেয়েটার সাহস দেখে আমি তো অবাক হয়ে যাচ্ছি। প্রথমে কি সুন্দর ভেজা বিড়াল হয়ে থাকত আর সুযোগ পেতেই নিজের আসল রূপ দেখিয়ে দিলো। আমাকে পুলিশের ভয় দেখাচ্ছে! ও এখনো পুষ্পা চৌধুরীকে চিনে নি। ওর আমি এমন অবস্থা করব যে..”
টায়রা প্রতিশোধের আগুনে জ্বলছিল৷ সে বলে,”আপনি চিন্তা করবেন না আন্টি। ঐ মেয়ের আমি এমন ব্যবস্থা করব যে ও ভাবতেই পারছে না। কিন্তু তার আগে আমাকে সমুদ্রকে নিজের করে নিতে হবে। আপনি প্লিজ এমন কোন ব্যবস্থা করুন যাতে আমি সমুদ্রকে নিজের করে পাই।”
পু্ষ্পা চৌধুরী বলেন,”আগে ঐ মেয়েকে তাড়াতে হবে।”
“না, আন্টি। আমি চাই ওর চোখের সামনে ওর বরের সাথে একান্ত সময় কা*টাতে। এভাবে ওকে ওর অবস্থানটা বুঝিয়ে দিতে চাই।”
“তুমি এমনটা চাইলে তাই হবে। বাবাইকে আমি বলে দেব তোমার সাথে একান্ত সময় কাটাতে। বাবাই তোমাকে ভালোবাসে। তাই ও নারাজ হবে না।”
টায়রা কিছু একটা ভেবে বলে,”আমার মনে হয় না সমুদ্র আমায় ভালোবাসে বলে। যদি ও সত্যি আমায় ভালোবাসত তাহলে যখন ঐ মেয়েটা যখন আমার হাতে গরম কফি ঢেলে দিল তখন প্রতিবাদ করত, ও তো এমন কিছুই করল না। কেমন নীরব দর্শকের মতো সবকিছু দেখে গেল।”
পুষ্পা চৌধুরী গর্জে উঠে বললেন,”বাবাই আমার ছেলে। আমার কথাই ওর কাছে শেষ কথা। আমি যদি ওকে বলি তোমাকে ভালোবাসতে হবে তাহলে ওকে তোমাকেই ভালোবাসতে হবে। আমার কথার অবাধ্য ও হতে পারবে না।”
পুষ্পা চৌধুরীর কথায় টায়রা ভীষণ খুশি হয়। অতঃপর মনে মনে প্রণালীর উদ্দ্যেশ্যে বলে,”এবার দেখো মেয়ে, তোমার আমি কি অবস্থা করি।”
এই বলে সে পুষ্পা চৌধুরীকে বলে,”আন্টি আপনি একটু সমুদ্রকে ডেকে পাঠান। প্রমাণ করিয়ে দিন যে আপনার কথায় ও আমায় ভালোবাসবে।”
পুষ্পা চৌধুরী সমুদ্রকে ডেকে পাঠান। সমুদ্র আসতেই তিনি বলেন,”বাবাই, তুমি তো আমার সব কথা শোনো। আমি যদি কিছু বলতে বলি বলবে।”
“হ্যাঁ, মম। তুমি যা বলবে আমি তাই করবো।”
“তাহলে এক্ষুনি আমার সামনে এই গোলাপ ফুলটা দিয়ে টায়রাকে প্রপোজ করো।”
সমুদ্র হচকচিয়ে যায়। আসলে তো তার মনে টায়রার জন্য কোন ফিলিংস নেই। সে তো শুধু প্রণালীকে জ্বালানোর জন্য টায়রাকে ব্যবহার করছে। পুষ্পা চৌধুরী সমুদ্রকে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বলেন,”কি হলো চুপ করে দাঁড়িয়ে আছো কেন? আমি যা বলছি করো।”
সমুদ্র একপলক টায়রার দিকে তাকায়৷ ফুলটা হাতে নিয়ে টায়রার দিকে বাড়িয়ে দেয়। পুষ্পা চৌধুরী বলে ওঠেন,”এভাবে নয়। হাটু গেড়ে বসে টায়রাকে আই লাভ ইউ বলো।”
“ওকে, মম।”
সমুদ্র নিজের মায়ের কথা মতো হাটু গেড়ে বসে টায়রাকে বলে,”আই লাভ ইউ।”
টায়রা আনন্দে লাফিয়ে ওঠে। পুষ্পা চৌধুরী বিশ্বজয়ের মতো হেসে বলেন,”আমার বাবাই আমারই আছে।”
~~~~~~~~~~~~~~
সজল চৌধুরী সায়মা চৌধুরীকে জিজ্ঞেস করেন,”তোকে যা বলেছিলাম করেছিস তো?”
“হ্যাঁ, ভাইয়া। আমি তোমার কথা মতো ভাবি আর ঐ টায়রা পায়রার খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছি। ওরা এখন পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছে।”
“বেশ, বেশ এটাই সুবর্ণ সুযোগ। এবার তুই যা সমুদ্রকে ডেকে আন। আমি নাটক শুরু করে দেই।”
“আচ্ছা।”
সজল চৌধুরী বিছানায় অসুস্থ হওয়ার ভান করে শুয়ে থাকেন। সায়মা চৌধুরী সমুদ্রের রুমে গিয়ে দরজা নক করতে থাকেন। সমুদ্র হন্তদন্ত হয়ে দরজা খুলে বলে,”কি হয়েছে ফুপি? এমন উদ্ভ্রান্তের মতো দরজা ধাক্কাচ্ছ কেন?”
সায়মা চৌধুরী কান্নার সুরে বলে,”ভাইয়া খুব অসুস্থ রে সমুদ্র। তোকে ডাকছে।”
“কি হয়েছে ড্যাডের? আমি এক্ষুনি যাচ্ছি।”
এই বলে সমুদ্র দৌড়ে সজল চৌধুরীর রুমে যান। সজল চৌধুরী বিছানায় শুয়ে কাতড়াচ্ছেন দেখে সমুদ্র তার পাশে গিয়ে বসে বলে,”ড্যাড, তোমার কি হয়েছে? ডাক্তার আঙ্কেলকে ডেকেছ? চলো আমি তোমায় হসপিটালে নিয়ে যাই।'”
“আমি এখন ঠিক আছি। তোর ডক্টর আঙ্কেল আমায় দেখে গেছেন। তিনি বলেছেন প্রেশার বেড়ে গিয়েছিল।”
“তোমাকে কতদিন না বলেছি এত টেনশন না করতে। এইজন্য তোমার প্রেশার বাড়ে। প্রেশারের ওষুধ খেয়েছ?”
সায়মা চৌধুরী তখনই পেছন থেকে বলে ওঠেন,”এটাই তো সমস্যা সমুদ্র। ডাক্তার বার বার করে বলেছেন তোর বাবাকে সে যেন সঠিক সময় ওষুধ খান। কিন্তু তোর বাবা ওষুধ খেতেই চাচ্ছেন না।”
সমুদ্র চৌধুরী নিজের বাবার দিকে তাকিয়ে বলে,”তুমি ওষুধ খেতে চাইছ না কেন? এভাবে চললে তো অসুস্থ হয়ে যাবে।”
“কেন খাবো আমি ওষুধ? তুই আমার কোন কথা শুনিস যে আমি তোর কথা শুনব।”
“আচ্ছা, তুমি বলো আমি কি করলে তুমি ওষুধ খাবে। আমি তাই করবো।”
সজল চৌধুরী মনে মনে হাসেন৷ এই সুযোগই তো তিনি খুঁজছিলেন,”আমি চাই তুমি প্রণালীর সাথে হানিমুনে যাও।”
“কি?!”
“হ্যাঁ, আর এই হানিমুনে যাবার সময় তোমার ফোন আমার কাছে জমা দিয়ে যাবে। ভুলেও নিজের মায়ের সাথে যোগাযোগ করবে না। নাহলে আমি ওষুধ খাওয়া বন্ধ করবে।”
“বাবা, এটা তোমার কেমন ছেলেমানুষী? আমি পারবো না তোমার কথা রাখতে।”
“তাহলে আমিও ওষুধ খাবো না।”
সায়মা চৌধুরী বলেন,”ডাক্তার বলেছে ওষুধ না খেলে তোর বাবার জীবন নিয়ে টানাটানি।”
সমুদ্র দ্বিধায় পড়ে যায়। অনেক ভেবে বলে,”ঠিক আছে,আমি রাজি।”
এই বলে সে নিজের ফোন সজল চৌধুরীর হাতে তুলে দেয় এবং সেই রাতেই প্রণালীকে নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে সিলেটের উদ্দ্যেশ্যে।
to be continue…