একই_সুরে_প্রেম_আমায়_কাঁদায় পর্ব-৩৯+৪০+৪১

0
290

#একই_সুরে_প্রেম_আমায়_কাঁদায়
#Part_39
#ইয়াসমিন_খন্দকার

“কাল তোমার বিয়ে। তৈরি হয়ে থাকো।”

প্রণালী হতবাক হয়ে গেলো রায়ান সাহেবের মুখে এমন কথা শুনে। প্রতিবাদের সুরে বলল,”আমি শান্ত ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করবো না বাবা। তোমার ঠিক করা পাত্রকে তো নয়ই।”

রায়ান প্রণালীকে হুংকার দিয়ে বলে,”আমার অবাধ্য হওয়ার চেষ্টা করো না প্রণালী। এতে কোন লাভ হবে না। এতদিন তোমার অনেক বাত্তামিজি আমি বরদাস্ত করেছি কিন্তু আর না। এবার আমি তোমাকে উচিৎ শিক্ষা দেব।”

“তুমি অনেক খারাপা বাবা। তুমি কারো কথা গ্রাহ্য করো না। এখন আমি বুঝতে পারছি মা কেন তোমাকে ছেড়ে চলে গেছে। আসলে তুমি এটারই যোগ্য। আমিও যখন তোমাকে ছেড়ে চলে যাব তখন তুমি যোগ্য শিক্ষা পাবে।”

রায়ান সাহেব আজ আর নিজেকে সামলাতে পারলেন না। প্রণালীর গালে ঠা**স করে চ**-ড় বসিয়ে দিলেন। আজ তার সব সহ্যের সীমা পেরিয়ে গেছে। প্রণালী এতেও দমল না। ঘরের সব জিনিসপত্র এলোপাতাড়ি এদিকে ওদিকে ছু**ড়ে দিয়ে বলল,”এই দিন দেখার জন্য আমি তোমাকে এত কষ্ট করলাম। আসলে তুমি কারো ভালোবাসা ডিজার্ভ করো না। তোমার যেখানে যাওয়ার ইচ্ছা তুমি যাও। কিন্তু যাওয়ার আগে আমার জানাজা করে যেও।”

“বাবা! তুমি কিন্তু ইমোশনাল গেইম খেলছ। এতে কোন লাভ হবে না। শান্ত ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করতে হলে আমার লাশ করবে আমি না।”

রায়ান সাহেবের ইচ্ছা করছিল প্রণালীকে মাটিতে পু্ঁতে ফেলতে। শান্তর বাবার ব্যাপারে সবটা জেনেও কিরকম নির্লজ্জ, অভদ্রের মতো আচরণ করছে।

রায়ান সাহেব শেষবারের মতো নিজের মেয়েকে বললেন,”তুমি নিজের ভালোটা এখনো বোঝো। আমি তোমায় বিশ্বাস করলাম। তুমিও আমার উপর বিশ্বাস করে আমার ঠিক করা পাত্রকে বিয়ে করে নাও। যদি নিজের পছন্দ করা পাত্রকে বিয়ে করো তাহলে কিন্তু তোমায় আজীবনের জন্যই পস্তাতে হবে।”

প্রণালী এবার উত্তরে কিছু বলল না। মাথাটা যথাসম্ভব ঠান্ডা রাখল সে। রায়ান সাহেব তার রুম থেকে বেরিয়ে যেতেই সে বলে উঠল,”পস্তাবো তো তখন যখন আমি তোমার পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করব। আমার সুখ আমি শান্তর মাঝেই খুঁজে নিয়েছি। তাই আমি বিয়ে করলেও ওকেই করব। আর অন্য কাউকে নয়।”
~~~~~~~~~~~~~
অনুরাধা দেবী ও সোহিনী আজ এলো প্রণালীর সাথে দেখা করতে। সৌভিক বাবুই তাদের আজ এখানে পাঠিয়েছেন। তাদের দায়িত্ব হলো প্রণালীকে বোঝানো।

আজ সোহিনী ও অনুরাধা দেবীকে দেখে প্রণালী একটুও খুশি হলো না৷ অনুরাধা দেবী প্রণালীর কাছে এসে বললেন,”তুমি তোমার বাবার সিদ্ধান্তটা মেনে নাও প্রণালী। শান্ত ঐ আবিরের ছেলে। তুমি তো সবটাই জানো আবিরের জন্য তোমার মা-বাবার জীবনে কি দূর্গতি নেমে এসেছিল। তারপরও তুমি কিভাবে ওর ছেলেকে বিয়ে চাইছ?”

প্রণালী নিস্তেজ গলাতেই বলল,”শান্তর বাবা দোষ করেছে শান্ত তো কিছু করেনি। তাই না? তাহলে কেন শুধু শুধু আমি আর শান্ত সাফার করব? আমরা তো একে অপরকে ভালোবাসি তাইনা?”

সোহিনী এসে প্রণালীর মাথায় হাত রেখে বলল,”আমি তোকে নিজের ছোট বোনের মতোই দেখি প্রণালী। এই দিদির একটা অনুরোধ রাখ। রায়ান আঙ্কেলের কথাটা মেনে নে। উনি তোর ভালোই চান। এই বিয়েটা করলে তুই সুখী হবি। ছেলেমানুষী করিস না একদম।”

প্রণালী তাচ্ছিল্য হেসে বলল,”নিজের ভালোবাসার মানুষকে না পেয়ে আমি কিভাবে সুখী হবো সোহিনী দিদি?”

সোহিনী প্রণালীকে বোঝানোর জন্য বলে,”তোমার ভালোবাসার মানুষটা যে সঠিক নয় প্রণালী। আর দেখ মা-বাবার আশীর্বাদ ছাড়া কোন কিছুই সুখকর হয় না। আর সমুদ্র ভাইয়াকে বিয়ে করলে তুমি সুখীই হবে।”

প্রণালী অবাক হয়ে গেল। বলল,”সমুদ্র ভাইয়া মানে? সজল আঙ্কেলের ছেলে?”

“হ্যাঁ, ওনার সাথেই তো তোমার বিয়ে ঠিক করা হয়েছে। কেন তুমি জানো না?”

প্রণালী ধাক্কা খেলো ভীষণ। মনে করল সমুদ্রের সাথে তার প্রথম দেখার কথা। ঐ অহংকারী, নিম্ন মানসিকতার ছেলেকে তাকে বিয়ে করতে হবে! প্রণালী বিড়বিড় করে বলল,”কক্ষনো না।”

বলেই সে দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে এলো। অত:পর বলল,”তোমার চয়েজের উপর আমার ভরসা উঠে গেছে বাবা। আমি ১০০% শিওর আমার চয়েজই সেরা।”

এই বলে সে ছুটে বাড়ি থেকে বেরোতে যাবে এমন সময় রায়ান সাহেব তাকে আটকে দিলেন। বললেন,”কোথায় যাচ্ছ তুমি? বিয়ের আগে পর্যন্ত কোথাও যাওয়া হবে না তোমার।”

“বাবা, আমায় যেতে দাও। তুমি আমার সাথে এত বড় জুলুম করতে পারো না।”

“আমি কি করতে পারি আর কি পারি না সেটা এবার তুমি টের পাবে।”

বলেই প্রণালীকে টানতে টানতে তার ঘরে নিয়ে গেলেন রায়ান সাহেব। প্রণালীকে ঘরে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলেন। নিজের মেয়ের সাথে এমন করে তিনিও অনেক কষ্ট পেলেন। কিন্তু মেয়ের ভালোর জন্য যে এটা করতেই হতো।

এদিকে প্রণালী সমানে চিৎকার করতে লাগল। সেখান থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য। কিন্তু রায়ান নিষ্ঠুর হলো ভীষণ। এতদিন মেয়ের সব জেদ মেনে নিয়ে তাকে বড্ড প্রশ্রয় দিয়েছিলেন। সেই প্রশ্রয়েই মেয়ে মাথায় উঠেছে। এখন তাকে যে মাথা থেকে নামাতেই হতো। নাহলে অপেক্ষা করছে সমূহ বিপদ!
~~~~~~~

সমুদ্র যখন থেকে তার বিয়ের কথা জানতে পেরেছে তখন থেকে না, না করেই চলেছে। তার এখন মোটেই বিয়ে করার কোন ইচ্ছা নেই। কিন্তু সজল চৌধুরীও নাছোড়বান্দা। তিনি যখন একবার সুযোগ পেয়েছেন তখন সেই সুযোগের সদব্যবহার করবেনই। নিজের ছেলেকে এবার সাংসারিক দায়বদ্ধতার জালে বাধবেন সেটা একদম ঠিক করে রেখেছেন। সমুদ্র তার বাবার সামনে চিৎকার করে বলল,”মম না থাকায় এই সুযোগটা কাজে লাগাচ্ছ তাই না? তাহলে শুনে রাখো ড্যাড, আমি এখন কিছুতেই বিয়ে করবো না। নো, নেভার।”

সজল চৌধুরী বললেন,”এসব কথায় কাজ হবে। আমি মিস্টার রায়ানকে কথা দিয়েছি যে ওনার মেয়ে প্রণালীকেই আমার ঘরের বউ করে আনব। তাই এই কথা আমি রাখবোই।”

সমুদ্র একটু স্থির হলো। বলল,”প্রণালী!”
“হ্যাঁ, সেদিন পার্টিতে যেই মেয়েটাকে দেখলে তুমি। মেয়েটা কিন্তু দারুণ সুন্দরী। ফর্সা, লম্বা, সুন্দর মুখশ্রী। তোমার সাথে দারুণ মানাবে।”

হঠাৎ করেই সমুদ্র ৩৬০° ঘুরে গিয়ে বলে,”আমি বিয়েতে রাজি। তুমি দ্রুত সব এরেঞ্জমেন্ট করো।”

“তোমার সুমতি হলো তাহলে? মেয়েটাকে তাহলে মনে ধরেছে?”

সমুদ্র মুচকি হাসলো। মনে মনে বললো,”ঐ মেয়েটা সেদিন আমাকে অনেক অপমান করেছিল। আমার গায়ে হাত অব্দি তুলেছিল। এবার আমি তার সব কিছুই সুদে আসলে উসুল করব। একবার আসুক আমার বউ হয়ে। তারপর আমি ওকে মজা দেখাবো।”

~~~~~~~
প্রণালী কাঁদতে কাঁদতে নিজের চোখের জল শুকিয়ে ফেলেছে। আর কাঁদতেও পারছে না বেচারি মেয়েটা। নিজের ভালোবাসার মানুষটার সাথে চির বিচ্ছেদ আর ঘৃণিত ব্যক্তিকে নিজের স্বামী হিসেবে বরণ করে নেয়া! ভীষণ জঘন্য এসব অনুভূতি। প্রণালী দেখতে লাগল সিলিং ফ্যানের দিকে। চোখের জল মুছে বলল,”শান্তকেই যদি না পাই তাহলে আমি আর বেঁচে কি করবো? এর থেকে ভালো আমি নিজেকেই শেষ করে দেই। ঐ সমুদ্রর মতো জঘন্য মানুষকে বিয়ে করার থেকে মরে যাবাই তো ভালো।”

বলেই সে এগিয়ে গেলো সিলিং ফ্যানের দিকে। উদ্দ্যেশ্য নিজেকে শেষ করে দেওয়া। এই সকল কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়া। নিজের ভালোবাসার মানুষটাকে না পাওয়ার বেদনা নিয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে তার কাছে যেন মৃত্যুই শ্রেয় মনে হলো। অনুভূতির মায়ের জালে বদ্ধ হলো। প্রেম তাকে কাঁদিয়েছে! প্রেমের বিরহ তাকে ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছে। তাইতো এমন আত্মবিধ্বংসী সিদ্ধান্ত নিলো রায়ান সাহেবের জেদী, চঞ্চল মেয়েটা।

to be continue…

#একই_সুরে_প্রেম_আমায়_কাঁদায়
#Part_40(ধামাকা)
#ইয়াসমিন_খন্দকার

প্রণালী নিজের কোন বড় ক্ষতি করতে যাবে তার আগেই প্রত্যুষ তার ঘরের দরজা খুলে দিলো। প্রণালীর উদ্দ্যেশ্যে বলল,”আপু, তুমি এটা কি করছ?”

প্রণালী প্রত্যুষের দিকে তাকায়। প্রত্যুষ এগিয়ে এসে বলে,”আমি জানি তুমি শান্ত ভাইয়াকে ভালোবাসো এবং তাকেই বিয়ে করতে চাও। তাই তো আমি তোমাদের এক করার জন্যই এখানে এসেছি। এখন বাড়িতে কেউ নেই। বাবা আমাকে তোমার খেয়াল রাখতে বলে বাইরে গেছে। এই সুযোগ তুমি পালিয়ে যাও। নিজের জীবনটা নিজের মতো গুছিয়ে নাও।”

প্রণালী খুশিতে আপ্লুত হয়ে যায়। তার বাবা তাকে না বুঝলেও তার ভাই তাকে বুঝেছে। প্রণালী এগিয়ে এসে প্রত্যুষের গালে কয়েকটা চুমু খায়। ভাইয়ের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে,”তোকে অনেক ধন্যবাদ ভাই। তুই আমাকে বুঝলি।”

“বাবা যেকোন সময় চলে আসবে আপি। তুই যা তাড়াতাড়ি।”

প্রণালী মাথা নাড়ায়। যাওয়ার জন্য পা বাড়ানোর সাথে সাথেই প্রত্যুষ প্রণালীর হাতে তার ফোন তুলে দিয়ে বলল,”বাবা তো তোমার ফোন নিজের কাছে রেখে দিয়েছে। তাই তুমি আমার ফোনটা নিজের সাথে করে নিয়ে যাও আপি। এর মাধ্যমে শান্ত ভাইয়ার যোগাযোগ করো।”

প্রণালীর আবারো নিজের ভাইকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বিদায় নেয়। এখন তার গন্তব্য শান্ত। শান্তর সাথে নতুন করে সে সব শুরু করবে। একসময় রায়ান সাহেবও সব মেনে নিবে এটাই তার বিশ্বাস।

~~~~~~~~~~~~
প্রণালী শান্তর সাথে ফোনে কথা বলেছে। শান্ত প্রণালীকে বলেছে কাজি অফিসের সামনে এসে বসে থাকতে। প্রণালীও তাই কাজি অফিসের দিকে পা বাড়িয়েছে। কাজি অফিসের সামনে এসে শান্তকে ফোন দিলো প্রণালী। কিন্তু শান্ত ফোনটা রিসিভ করল না। প্রণালী বারবার ফোন করতে লাগল। এক সময় শান্ত ফোনটা রিসিভ করে বলে,”আমি কিছু কারণে ঢাকার বাইরে আছি। তুমি কমলাপুর রেলস্টেশনে এসে অপেক্ষা করো। আমি যথাসময়ে পৌঁছে যাব।”

“আমি তাই করবো।”

বলে প্রণালী ফোনটা রেখে দেয়। আর অপেক্ষা করতে থাকে শান্তর জন্য। তবে তার অপেক্ষার প্রহরের কোন শেষ হয়না।
~~~~~~
রায়ান সাহেব বাড়িতে ফিরে প্রণালীকে তার রুমে না দেখে ভড়কে যান। প্রত্যুষকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকেন কিন্তু প্রত্যুষ মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকে। রায়ান সাহেব অধৈর্য হয়ে বলেন,”তুমি বুঝতে পারছ না নিজের বোনকে কি বিপদের দিকে ঠেলে দিয়েছ। ভালো চাইলে এখনই আমাকে সব সত্য বলে দাও। নাহলে নিজের বোনের দূর্ভাগ্যের দায় তোমাকে সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হবে।”

প্রত্যুষ তবুও যখন চুপ থাকে তখন রায়ান সাহেব শান্তর বাবা রায়ানের ব্যাপারে রায়ান সাহেবকে সব খুলে বলেন। সব শুনে প্রত্যুষ বুঝতে পারে সে কত বড় ভুল করে ফেলেছে। তাই রায়ান সাহেবকে সব খুলে বলেন। সাথে এও বলেন প্রণালী তার ফোনটা সাথে নিয়ে গেছে। এ শুনে রায়ান বলে,”তুমি অনেক বড় ভুল করেছ৷ আশা করি, তোমার বোনের বড় কোন ক্ষতি হয়ে যাবার আগেই আমরা ওকে পেয়ে যাব। যাইহোক, আমি সৌভিকের সাথে কথা বলি। ও এখন নাম্বার ট্রেস করে প্রণালীর লোকেশন বের করবে।”

.
রায়ান সাহেব অনেকক্ষণ অপেক্ষা করলেন। সৌভিক বাবুর ফোনে তার ধ্যান ভাঙে। ফোনটা রিসিভ করতেই সৌভিক বাবু বলেন,”প্রণালীর লোকেশন কমলাপুর রেলস্টেশনে দেখাচ্ছে।”

“ধন্যবাদ তোকে।”

এই বলে রায়ান প্রত্যুষকে সাথে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে। দুজনে কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছে যায়। কিন্তু সেখানে তন্ন তন্ন করে খুঁজেও প্রণালীকে পাওয়া যায়না। এদিকে লোকেশনও এইটাই দেখাচ্ছে। এরমধ্যেই হঠাৎ প্রত্যুষ রেলস্টেশনেই নিজের ফোনটা কুড়িয়ে পায়। রায়ান সাহেবকে এই ব্যাপারে বলতেই তার যা বোঝার বোঝা হয়ে যায়। রায়ান সাহেব বিমর্ষ হয়ে বলে ওঠেন,”মেয়েটাকে বুঝি আর বাঁচাতে পারলাম না!”

এক অসহায় পিতার কন্ঠে এমন কথা শুনে প্রত্যুষ ভীষণ কষ্ট পেলো। তার নিজেরও ভীষণ অনুশোচনা হতে লাগল। বারবার মনে হলো তার জন্যই আজ এত কিছু হয়ে যাচ্ছে। সে নিজের বাবাকে শান্তনা দেওয়ার ভাষা খুঁজে পেল না।

~~~~~~~
প্রণালীর চোখ খুলতেই সে নিজেকে আবিষ্কার করলো একটা অন্ধকার ঘরে। বিছানায় শুয়ে ছিল সে। দ্রুত আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসে। তারপর শান্তর নাম নিয়ে ডাকতে থাকে। কিছুক্ষণ পর একটা মেয়ে বধুবেশে প্রণালীর রুমে প্রবেশ করল এবং লাইট জ্বালিয়ে দিলো। প্রণালী তাকে দেখে অবাক হয়ে বলল,”তুমি কে? আর শান্ত কোথায়?”

মেয়েটি বাকা হেসে বললো,”আমি লারা, আমি হলাম শান্তর হবু বউ।”

প্রণালী বড়সড় ধাক্কা খায়। হতবাক স্বরে বলে,”শান্তর হবু বউ মানে? শান্ত আর আমি একে অপরকে ভালোবাসি। তাহলে তুমি কিভাবে শান্তর হবু বউ হতে পারো?”

তখনই শান্ত সেই রুমে প্রবেশ করে বলে,”ভালোবাসা মাই ফুট। তুমি ভাবলে কি করে আমি তোমাকে ভালোবাসি?”

প্রণালী অবিশ্বাস্য কন্ঠে বললো,”শান্ত! তুমি কি বলছ? আর এই মেয়েটাই বা কি বলছে? ওর সাথে তোমার বিয়ে মানে?”

শান্ত বাকা হেসে বলে,”সবকিছু মানে তুমি এবার বুঝতে পারবে। লারা ডার্লিং, তুমি আমার পাশে আসো।”

লারা শান্তর সামনে আসতেই তার কপালে চুমু খায়। গভীর আলিঙ্গন করে। প্রণালীর বুকে বা পাশে তীব্র ব্যাথা হতে থাকে এই দৃশ্য দেখে। সে চিৎকার করে বলে ওঠে,”এসব তুমি কি করছ শান্ত? তুমি তো আমায় ভালোবাসো তাহলে এই মেয়েটার এত ঘনিষ্ঠ কেন হচ্ছ?”

শান্ত প্রণালীর সামনেই লারাকে লিপ কিস করে। প্রণালী এসব আর সহ্য করতে না পেরে চোখ বন্ধ করে নেয়। ডুকরে কাঁদতে থাকে। প্রণালীকে এভাবে কাঁদতে দেখে শান্ত পৈশাচিক আনন্দ লাভ করে। পৈশাচিক হেসে বলে,”কাঁদো, কাঁদো আরো কাঁদো। তুমি যত কাঁদবে আমি ততই পরিতৃপ্তি পাবো। শুধুমাত্র তোমার বাবা-মায়ের জন্য আমি আমার বাবাকে পাইনি কখনো। আমার বাবাকে এখনো জেলে থাকতে হচ্ছে। তার তুলনায় তো এটা কিছুই না।”

প্রণালী কাঁদতে কাঁদতে বলে,”তাহলে বাবাই ঠিক বলেছিল। তুমি প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যই…”

“হ্যাঁ, তবে তুমি বুঝতে একটু দেরি করে দিলে বোকা মেয়ে।”

প্রণালী এই ধাক্কা সামলাতে পারে না। তার মধ্যেই কয়েকজন মেয়ে ভেতরে চলে আসে। শান্ত তাদেরকে বলে,”একে নিয়ে বাইরে চলো তোমরা। ও আমার বিয়ে নিজের চোখের সামনে দেখুক।”

প্রণালী বারবার বলতে থাকে,”প্লিজ শান্ত, তুমি এমন করো না। আমাকে এভাবে ঠকিও না তুমি। এত কষ্ট আমি মেনে নিতে পারবো না।”

শান্তর মন একটুও গলে না। মেয়েগুলো শান্তর নির্দেশমতো কাজ করতে থাকে। প্রণালীকে নিয়ে বাইরে আসে। বাইরে একজন কাজি এসেছে। শান্ত প্রণালীর সামনেই লারার হাত ধরে কাজির সামনে বসে পড়ে। কাজি বিয়ে পড়ানো শুরু করে। প্রণালী ছলছল নয়নে এসব দেখতে থাকে। একসময় কাজি লারাকে কবুল বলতে বলতেই সে কবুল বলে দেয়। এরপর তিনি শান্তকে কবুল বলতে বললে শান্ত চুপ থাকে। প্রণালীর মধ্যে আশার সঞ্চার ঘটে। সে শান্তকে বলে,”আমি জানি তুমি আমাকে ছাড়া অন্য কাউকে নিজের স্ত্রী হিসেবে মানতে পারবে না শান্ত। এখনই এই মেয়েটাকে ছেড়ে দাও। আমাকে বিয়ে..”

অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে শান্ত। হাসতে হাসতে বলে,”এটা শোনার জন্যই আমি চুপ ছিলাম। তুমি ভাবছ যে আমি তোমায় ভালোবাসি? সব ছিল ড্রামা। এখনো বোঝো নি গবেট।”

প্রণালী কোন প্রতিক্রিয়া দেখানোর আগেই শান্ত কবুল বলে দেয়। প্রণালী নিজের চোখের সামনেই তার ভালোবাসার মানু্ষটাকে চিরতরে হারিয়ে ফেলে। ঠকে যায় বাজেভাবে। তার প্রেমিক এখন আর তার নেই। সে এখন অন্য কারো স্বামী। প্রণালীর চোখের জল বাঁধ মানতে চাইছে না। এর মধ্যেই শান্ত বিদঘুটে হাসি দিয়ে বলে,”সবকিছু তো লাইভ দেখে নিলে। এখন কি আমাদের বাসরটাও লাইভ দেখবে?”

প্রণালী নিশ্চুপ, ভালোবাসা এখন ঘৃণায় পরিণত যেন। প্রণালী হাত তালি দেয়। শান্তকে বলে,”তুমি আজ বুঝতে পারবে না শান্ত তুমি কি হারালে। নারীর ভালোবাসা যতটা তীব্র, ঘৃণা তার দ্বিগুণ। এখন থেকে আমি শুধু তোমায় ঘৃণাই করি। ভালোবাসা বিন্দুমাত্র অবশিষ্ট নেই।”

বলেই সে এগিয়ে চলে। শান্ত বলে,”এখনই চলে যাবে? আমাদের লাইভ বাসর দেখবে না?”

প্রণালী এগিয়ে এসে শান্তকে ঠাস ঠাস করে থা*প্পড় মে*রে চলে যায়। লারা এগিয়ে এসে বলে,”তুমি ওকে কিছু বললে না কেন শান্ত?”

“আরে, ওর কথা বাদ দাও। ও এখন একটা লেজকাটা শেয়াল। কিছু করতে পারবে না।”

to be continue…

#একই_সুরে_প্রেম_আমায়_কাঁদায়
#Part_41
#ইয়াসমিন_খন্দকার

রায়ান সাহেব প্রত্যুষকে নিয়ে বাড়িতে ফিরেছেন। এসেই সোফায় গা এলিয়ে দিয়েছেন৷ বড্ড ক্লান্ত তিনি। নিজের মেয়ের চিন্তায় চিন্তায় একদম শেষ হয়ে যাচ্ছেন। তার সামনেই অপরাধী মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে প্রত্যুষ। আজ প্রত্যুষের নিজেকেই নিজের কাছে অপরাধী মনে হচ্ছে। তার বারবার এটাই মনে হচ্ছে তার জন্যই সবটা হলো। রায়ান সাহেব নিজের ছেলের দিকে তাকিয়েই তার মনোভাব বুঝলেন। কিন্তু কিছু বললেন না এবিষয়ে। বরঞ্চ বললেন,”প্রত্যুষ, তুমি একটু তোমার সৌভিক আঙ্কেলকে ফোন করো। ওকে বলে দাও যে আমরা প্রণালীকে খুঁজে পাইনি। সৌভিক যেন সজল চৌধুরীকে সব কথা বলে দেয়। তার সামনে দাঁড়ানোর মুখ আমার নেই।”

প্রত্যুষ ফোন বের করে কল করতে যাবে ঠিক এমন সময় বিধ্বস্ত প্রণালী পা রাখে বাড়ির মধ্যে। অস্ফুটস্বরে ডেকে ওঠে,”বাবা।”

রায়ান সাহেব, প্রত্যুষ দুজনেই অবাক হয় প্রণালীকে দেখে। সাথে ভীষণ খুশিও হয়। রায়াম সাহেব উঠে গিয়ে নিজের মেয়ের কাছে যান। প্রণালীকে জড়িয়ে ধরে বলেন,”তুমি ঠিক আছ তো মা?”

প্রণালী বলে ওঠে,”তোমার পছন্দ করা ছেলেকেই আমি বিয়ে করবো বাবা।”

প্রত্যুষ, রায়ান সাহেব দুজনেই অবাক। রায়ান সাহেব এবার ভালো করে নিজের মেয়েকে পর্যবেক্ষণ করেন। ফোলা ফোলা দুটি চোখ দেখেই বুঝতে পারছেন কেঁদে কেঁদে মেয়েটার অবস্থা খারাপ। তিনি আর কিছু বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না তখন। মেয়ের অবস্থা দেখে তারো ভীষণ কান্না পাচ্ছিল। প্রত্যুষ বাবা-মেয়ের এমন অবস্থা দেখে এগিয়ে এলো। প্রণালীকে বলল,”আপি তুমি ঠিক আছ তো? তোমাকে এমন কেন লাগছে?”

প্রণালী আবার কান্না শুরু করে দেয়। কাঁদতে কাঁদতে বলে,”আমি ঠিক নেই ভাই। আমি একদম ঠিক নেই। ও আমাকে ভেতর থেকে ভেঙে গুড়িয়ে একদম শেষ করে দিয়েছে রে!”

.
বাবা ভাইকে নিজের সাথে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা খুলে বললো প্রণালী। সব শুনে রায়ান সাহেব কিছুটা স্বস্তি পেলেন। বললেন,”যাইহোক, আল্লাহর কাছে এটাই লাখ লাখ শুকরিয়া যে ঐ শান্ত তোমার বড় কোন ক্ষতি করে নি। আমি তো ভেবেছিলাম ও তোমার কি না কি করে। আল্লাহ বাঁচিয়েছেন।”

প্রত্যুষ বলে,”আপি, তুমি আর একদম ঐ শয়তান লোকটার জন্য কাঁদবে না। উনি তোমাকে ধোকা দিতে গিয়ে নিজেই ঠকে গেছেন। তুমি জিতে গেছ। দেখবে একসময় উনি খুব আফসোস করবেন এটা নিয়ে।”

প্রণালী জোরপূর্বক হাসল। রায়ান সাহেব বললেন,”ঐ শান্তর ভয়েই আমি তোমার বিয়ে দিতে চাচ্ছিলাম তাড়াহুড়ো করে। কিন্তু এখন যখন সেই ভয় কে’টে গেছে তার উপর তুমি এমন বিধ্বস্ত অবস্থায় আছো তাই আমাকে তো নিজের সিদ্ধান্ত বদলাতে হবে।”

প্রণালী বলে,”না, বাবা। তোমাকে নিজের সিদ্ধান্ত বদলাতে হবে না। আমি বিয়ের জন্য একদম প্রস্তুত আছি।”

“কিন্তু মা, তোমার এই অবস্থা!”

“আমি একদম ঠিক আছি বাবা। এমনিতেই আমার জন্য তোমার অনেক ফেস লস হয়েছে। আমার জন্য অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে তোমায়। আমি চাই না আমার জন্য তুমি আরো কষ্ট পাও।”

রায়ান সাহেব মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলতে লাগলেন,”আমার লক্ষী মেয়েটা কত কিছু বুঝতে শিখে গেছে।”

প্রত্যুষ বলে ওঠে,”তাহলে কি বিয়েটা হচ্ছে?”

রায়ান সাহেব এবং প্রণালী দুজনেই সম্মতি দেয়।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
সজল চৌধুরী রাজকীয় ভাবে তৈরি হয়েছেন। তিনি নিজের ছেলেকেও তিনি রাজকীয় ভাবেই তৈরি হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সজল চৌধুরীর পরদাদা ছিলেন একজন বিখ্যাত জমিদার। তাদের বংশের বেশ ভালোই গৌরব। পুরান ঢাকার বনেদী পরিবার বলে কথা। তাই তো তিনি চান তার ছেলের বিয়েটাই সেভাবে হোক। কিন্তু সময় সল্পতার জন্য সেটা সম্ভব না। তবে তিনি ঠিক করে রেখেছেন আপাতত কাবিনটা হবার পর তিনি বেশ ধুমধাম করে ছেলের বিয়ে দেবেন।

সজল চৌধুরী এই বিয়েটা যথাসম্ভব গোপন রাখার চেষ্টা করেছেন। যাতে তার স্ত্রীর কাছে খবর না যায়৷ এজন্য স্ত্রীর বাড়ির কোন আত্মীয় স্বজনকেও বলেন নি৷ শুধু নিজের কাছের কিছু বন্ধু-বান্ধব আর নিজের একমাত্র বোন সায়মাকে বলেছেন৷ সায়মা চৌধুরী সজল চৌধুরীর খুব আপন। সায়মা চৌধুরী নিজের ভাইয়ের এই সিদ্ধান্তে তার পাশেই আছে। কারণ তিনি নিজেও চেনেন তার ভাবিকে। তাই তিনি চান তার ভাবির অনুপস্থিতিতে বিয়েটা ভালোয় ভালোয় মিটে যাক।

সমুদ্র তৈরি হতে একটু বেশি সময় নিচ্ছিল। তাই সজল চৌধুরী বিরক্ত হয়ে তার দরজায় গিয়ে নক করতে থাকেন এবং বলেন,”আর কত সময় লাগবে তোমার? সবাই তো অপেক্ষা করছে।”

সজল চৌধুরী নক করার কিছুক্ষণ পরেই সমুদ্র চৌধুরী বেরিয়ে আসে৷ পড়নে তার কালো রঙের রাজকীয় শেরওয়ানি। মাথায় রাজকীয় টুপি। সায়মা চৌধুরী নিজের ভাতিজাকে দেখে বলে ওঠেন,”মাশাল্লাহ, কি সুন্দর লাগছে। কারো নজর না লাগুক।”

সমুদ্র বলে ওঠে,”নজর তো লাগবেই ফুফি। আমার হবু বউয়ের।”

বলেই দূর্বোধ্য হাসি দেয়।

~~~~~~~~~~~~~~~~~
প্রণালীকে বধূবেশে সাজানো হচ্ছে। গায়ে গোলাপী কালারের বেনারসি শাড়ি, সাবেকি সোনার গহনা সহ, মর্ডান হিরার গহনা এবং প্রসাধনী দিয়ে একদম পরির মতো সাজানো হয়েছে মেয়েটাকে। অনুপমা দেবী তার বড় মেয়ে স্নেহা এবং ছোট মেয়ে সোহিনী সেখানে উপস্থিত ছিল। অনুপমা দেবী নিজের বড় মেয়ে স্নেহাকে বলেন,”দেখ তো অনেক সুন্দর লাগছে না প্রণালীকে।”

স্নেহা সায় জানায়। সোহিনীও বলছে,”অনেক সুন্দর লাগছে৷ সমুদ্র ভাইয়া তো দেখে একদম পাগল হয়ে যাবে।”

সমুদ্র নামটা শুনতেই কেমন জানি অদ্ভুত অনুভূতি হতে লাগল প্রণালীর৷ লোকটার কথা মনে পড়ে গেল৷ লোকটার সাথে প্রথম সাক্ষাৎ ছিল বিভৎস রকমের। লোকটাকে একদম তার ভালো মনে হয়না। তবে একবার নিজের সিদ্ধান্তের জন্য তাকে পস্তাতে হয়েছে। শান্তকে তো কত ভালো ভেবেছিল। অথচ সেই শান্তই কত সুন্দর অভিনয় করে গেল আর দিনশেষে তাকে বাজেভাবে ঠকালো। তাই প্রণালীর কাছে মনে হলো, সে যখন ২ বছরেও একটা মানুষকে চিনতে পারল না তখন তার একবারের দেখায় কিভাবে চিনবে? তার বাবা নিশ্চয়ই তার খারাপ চায় না। সবদিক ভেবে চিন্তেই হয়তো সমুদ্রকে চয়েজ করেছে। হয়তো সে মনের দিক থেকে এতোটাও খারাপ না যতটা প্রণালী ভাবছে৷ এমনটা ভেবেই প্রণালী আর এই সম্পর্কটাকে মেনে নিতে কোন অমত জানাচ্ছে। এমনিতেও সে যা হারানোর হারিয়েই ফেলেছে। বেঁচে থাকার ইচ্ছাটাও তার মধ্যে তেমন নেই, না তো ভালো থাকার ইচ্ছা৷ শান্ত নামক পুরুষটা একদম তাকে ভেতড় থেকে গুড়িয়ে দিয়েছে। এর থেকে সুন্দর প্রতিশোধ বুঝি আর ছিলই না।

প্রণালীর ভাবনার মাঝেই হঠাৎ করে প্রত্যুষ এসে বলে,”বর এসে গেছে। বাবা আপিকে নিয়ে যেতে বলেছে।”

সোহিনী বলে,”হ্যাঁ, তুমি যাও। আমি প্রণালীকে নিয়ে যাচ্ছি।”

~~~~~~
মুখোমুখি বসে আছে প্রণালী ও সমুদ্র। কাজি ইতিমধ্যে বিয়ে পড়ানো শুরু করে দিয়েছে। সমুদ্র আড়চোখে প্রণালীকে দেখলেও প্রণালীর দৃষ্টি মাটিতে নিবদ্ধ। যা দেখে সমুদ্রর মনে হয় মেয়েটা তাকে ইগ্নোর করছে৷ যা তার ইগোতে লাগে৷ সে মনে মনে বলে,”একবার শুধু বিয়েটা হোক। তারপর এসবকিছুর শোধ তুলব। ”

কাজি সাহেব বলেন,
“আব্দুল্লাহ রায়ানের একমাত্র কন্যা রুকাইয়া জাহান প্রণালীর সাথে মোহাম্মদ সজল চৌধুরীর একমাত্র ছেলে মোহাম্মদ সমুদ্র চৌধুরীর বিয়ে ১০ লাখ টাকা মোহরানা দ্বারা ধার্য করা হইল।”

এরপর তিনি প্রণালীকে কবুল বলতে বললে সে কিছু সময় নিয়ে কবুল বলে। সমুদ্র অবশ্য বেশি অপেক্ষা না করেই কবুল বলে। অতঃপর মনে মনে বলে,”এবার তোমার জীবনটা আমি কিভাবে হেল বানাই দেখো মিস সরি আমার মিসেস।”

to be continue…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে