#উষ্ণতা
#বিনতে_ফিরোজ
পর্ব:৭
পকেট থেকে চাবি বের করলো ইতমিনান। দোতলা বাড়িটার নিচ তলায় দুটো রুম নিয়ে সে থাকে। মেসে থাকা তার পক্ষে সম্ভব না। একে তো রান্নার বেহাল দশা তার উপর নানান রকম মানুষের উপস্থিতি। ঠিক এই কারণেই কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সময়টাও সে মেসে থেকেই কাটিয়েছে। দরজা খুলতেই ক্যাচ করে একটা শব্দ হলো। দরজার কাঠটা বেশ পুরোনো হয়ে গেছে। ঘর অন্ধকার।
এতদিন থেকে একাকীত্বটাই আপন হয়ে গেছে। দরজা খুললে অন্ধকার ঘর এখন আর খারাপ লাগে না। তবে মাঝে মাঝে খুব মন চায় দরজার ওপাশটায় কেউ তার জন্য অপেক্ষা করুক। অন্তত দরজাটা খোলার জন্য হলেও। ঠিক সেসময় মায়ের কথা মনে হয়। বাড়ির কথা মনে হয়। তবে কষ্টটা সয়ে গেছে। এই-ই যেনো জীবন। পাখির পালকের মতো ভেসে বেড়ানো।
আয়েশা কয়েক পদ রান্না করে দিয়েছেন। কাজেই আজ খাবারের জন্য কোনো চিন্তা করা লাগলো না। সেগুলো বের করেই খেয়ে নিলো ইতমিনান। আগামীকাল অফিসের জন্য কিছু কাগজ গোছাতেই একটা ফাইল হাতে এলো। উপরে বড় করে মালিহার নাম লেখা। ফাইল ভর্তি ফটোকপি করা সব কাগজ। একদম উপরের কাগজটা জ্বলজ্বল করছে মালিহার কলেজে থাকাকালীন ছবি। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ফাইলটা আগের জায়গায় রেখে দিলো ইতমিনান। সে জানেনা কেনো এই ফাইলটা যত্ন করে বাড়ি থেকে এখানে এনেছে। এটার তো এখানে কোনোই প্রয়োজন নেই। দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ফোন হাতে নিলো ইতমিনান। একবার মালিহাকে কল করার কথা ভাবলো। মুহূর্তেই চিন্তা বদলে ফেললো। মেয়েটা হয়তো ক্লান্ত। ঘুমাতেও পারে। থাক কাল কল করা যাবে। ভেবেই আয়েশাকে ফোন দিলো। মা বাবার সাথে কথা বলে বিছানায় গা এলিয়ে দিল। চোখের পাতায় চিন্তারা হাতছানি দিয়ে ডাকছে।
•
গোসল করে আসতে না আসতেই খিচুড়ি নিয়ে বসলো নীতি। মালিহা ধমক দিল।
“চুলগুলো তো মুছবি নাকি?”
“ক্ষুধা লেগেছে। আগে খেয়ে নিই।”
“এক প্লেট বিরিয়ানি খেয়েও তোর ক্ষুধা লাগে কিভাবে?”
“আশ্চর্য! বিরিয়ানি খেয়েছি দুপুরে। এখন রাত। ঘড়ির দিকে তাকা। তোর সিস্টেমে ডিস্টার্ব দেখা দিসে।”
মালিহা বিরক্ত হয়ে নীতির দিকে এগিয়ে গেলো। মাথায় প্যাঁচানো গামছা খুলে মুছতে শুরু করলো। ওদিকে নীতি গপগপিয়ে খাচ্ছে।
“কোন ক্লাসের স্টুডেন্ট পড়াতে চাও মালিহা?”
আঁখির প্রশ্নে নীতি মালিহার দিকে তাকালো।
“তুই এখনই টিউশনি শুরু করে দিচ্ছিস?”
“খুঁজছি। আপু আপাতত কয়েকটা হলেই হচ্ছে। নাইন টেন অথবা ইন্টারমিডিয়েটের হলে ভালো হয়।”
“কয়েকটা! কয়টা করবি তুই? ক্লাস করে সময় পাবি?”
কণিকা গলা চড়ালো। মালিহা ধীর কণ্ঠে বলল, “অন্তত দুই তিনটা না হলে তো সমস্যা।”
“আচ্ছা মালিহা। আমি দেখব। তুমি টেনশন করো না।”
মালিহা কৃতজ্ঞতার হাসি হাসলো। নীতি বলল, “দোস্ত চার রাস্তায় আমার এক রিলেটিভ আছে। লতায় পাতায় ফুপু। তার এইট পড়ুয়া এক মেয়ে আছে। টোকা দিয়ে দেখবো নাকি?”
“দেখ।”
নীতির চুলগুলো ছড়িয়ে দিয়ে নিজের বিছানায় এলো মালিহা। কণিকা এগিয়ে এসে বলল, “ক্লাস, প্রেজেন্টেশন সব সামলে তিনটা টিউশনি করা কষ্টকর হয়ে যাবে।”
“এখনও তো পাইনি আপু। কে কেমন বেতন দেয় সেটা হিসেব করে খুঁজতে হবে।”
হিসাবের কথা আসতেই কণিকা চুপ করে গেলো। হিসাবের খাতা যে এখন মালিহার ঘাড়ে সেটা তো সে ভুলেই গিয়েছিলো।
এশার পর আশপাশের প্রায় সবাই মালিহার সাথে দেখা করতে এলো। এর মাঝে ব্যাচমেটই বেশি। খোঁজ খবর নেয়ার সাথে সাথে সবাই উদ্বেগ প্রকাশ করলো। কয়েকজন অগ্রগামী হয়ে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিলো। কণিকা মুখ মোচড়ালো। সাহায্য! এই চার বছরে ঢের সাহায্য তার দেখ হয়েছে। তবুও কিছু বলল না। আর এক বছর গেলেই মেয়েগুলো বুঝবে এই জায়গায় কেউ কারো নয়।
দুইজন সিনিয়র থাকায় কেউ এসে বেশিক্ষণ থাকে না। পাছে না আবার সিনিয়ররা রাগ করে বসে। তবে আজ সেদিকে কেউ লক্ষ্য করলো না। বলা ভালো গা করলো না। প্রায় ঘণ্টাখানেক পরে সবাই গেলো। রয়ে গেলো শুধু ইরিনা। এগিয়ে এসে মালিহার হাত ধরে সে প্রায় কেঁদেই ফেললো।
“আন্টি কেমন আছেন মালিহা?”
“আলহামদুলিল্লাহ সুস্থ আছে।”
চোখ বন্ধ করে মালিহার হাত শক্ত করে ধরে ইরিনা বলল, “যদি কোনো কাজে আসতে পারি নির্দ্বিধায় জানাবে। প্লিজ!”
মালিহার মনে হলো সাহায্য করার তাড়া ইরিনার বেশি। সে স্বল্প হেসে বলল, “আপাতত আমার কিছু টিউশনি হলেই হচ্ছে।”
“এই আমার ছোট ভাই তো এবার নাইনে। ওকে পড়াবে তুমি?” মালিহার হাত ঝাঁকি দিয়ে বলল ইরিনা। মালিহা হ্যাঁ বলতেই যাচ্ছিল। কিন্তু নীতি পেছন থেকে ইশারা করছে না বলার জন্য। মালিহা কারণটা বুঝতে পারল না। কিন্তু হ্যাঁ বলতেও বাঁধলো। সে বলল, “আচ্ছা একটু ভেবে দেখি ইরিনা। তোমার বাসা কোথায় যেনো?”
“এই যে সদরে।”
“ভালোই দূরে তো।”
“বেশি দূরে না। বাসে গেলে আধা ঘণ্টা লাগে মোটে।”
“আচ্ছা আমি তোমাকে ভেবে জানাবো।”
“আচ্ছা। যাই তাহলে।”
ইরিনা যেতেই নীতিকে জেঁকে ধরলো মালিহা।
“নিষেধ করলি কেনো তখন?”
“ওর ভাইকে পড়াতে হবে না।”
“কেনো?”
“পরিচিত মানুষের টিউশনি না করাই ভালো।”
“পরিচিত হলেই তো আরো ভালো। আমার অবস্থা ভালোভাবে বুঝবে।”
নীতি মুখে বিরক্ত ভাব ফুটিয়ে তুললে মালিহা বলল, “তোর ফুপুকে নক দিতে চাচ্ছিস তাহলে ওর ভাইকে পড়ালে কি সমস্যা?”
“এ আমার ডাইরেক্ট ফুপু না। চার পাঁচ বছরে একবার দেখা হয়। সে হয়তো জানেই না আমি এখানে থেকে পড়াশোনা করি। কাজেই ঐটা পরিচিতর কাতারে পড়ে না।”
“এমন করে বলছিস মনে হচ্ছে অপরিচিত সবাই ভালো?”
“তুই তো গাধা। ডান্ডা না খাইলে তোর শিক্ষা হয় না। সর সামনে থেকে। যা ভালো লাগে কর। যা!”
কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়লো নীতি। মালিহা আসলেই বুঝলো না এখানে সমস্যা কোথায় ছিল। তবে নীতির কথাও ফেললো না। ফেলতে পারল না। ইরিনাকে বলল দূরত্ব বেশি। যাতায়াতে অনেক সময় চলে যাবে। ইরিনা কি বুঝলো কে জানে। সেও আর জোর জবরদস্তি করলো না।
•
একটা ক্লাস মানেই যেনো একটা ঘটনা। মালিহার মাঝে মাঝে মনে হয় এটা ক্লাস না, থিয়েটার। কোনো না কোনো নাটক লেগেই আছে। নীতি অবশ্য এগুলো বেশ এনজয় করে। মালিহার বিরক্ত লাগে। ক্লাস গ্যাপের সময়টুকু সে বারান্দায় দাঁড়িয়ে কাটিয়ে দেয়। আজ সেটা হলো না। পেটে প্রচুর ব্যাথা। উঠে দাঁড়ানোর শক্তি নেই। ব্যাগের উপর মাথা রেখে মালিহা চোখ বন্ধ করে ছিল। নীতি আজ বিকেলে ওর ফুপুর কাছে নিয়ে যেতে চেয়েছে। আচ্ছা ওরা কতো টাকা দেবে? অন্তত তিন হাজার দেবে না? মালিহা হিসাব কষতে বসলো। বাড়ি ভাড়া, বাজার খরচ, পড়াশোনার খরচ চালাতে মোট কতো টাকা লাগে?
নীতির ধাক্কায় বিরক্ত হলো মালিহা। নীতি মুখ এগিয়ে ফিসফিস করে বলল, “দোস্ত দেখ! এদিকে তো সিনেমা শেষ হয়ে গেলো।”
“হলে হোক। আমার ভাল্লাগছে না।”
“তোর কোনোকালেই ভাল্লাগে না। অশান্তি! তাকাবি তো একবার!”
অনিচ্ছায় মুখ ওঠালো মালিহা। ক্লাসের ওপাশে ভিড়। ছেলেমেয়েরা গোল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
“কি হয়েছে?”
“কি হয় নাই তাই বল! প্রপোজাল দিসে!”
“ওহ আচ্ছা।”
“ওহ আচ্ছা আবার কি? শুনবি না কে কারে দিলো?”
“ভালো লাগছে না নীতি।”
নীতি চুপ করে গেলো। কিছুক্ষণ পর উঠে মালিহাকে বলল, “চল বারান্দা থেকে ঘুরে আসি।”
মালিহা যেনো এক পায়ে খাড়া ছিলো। বলতেই বের হয়ে গেলো।
“নীতি।”
“হুম।”
“তোর ফুপুরা কি বড়লোক?”
নীতি এক পলক মালিহার দিকে তাকালো।
“আছে ভালোই।”
মালিহা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে সামনের রাস্তায় নজর দিলো। সেমিস্টার শেষ হয়ে আসছে। পরীক্ষা এগিয়ে আসছে। ফি দিতে হবে যে!
এহসান ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে এলো। নীতিদের কাছে এসে গলা খাঁকারি দিলো। নীতি বিরক্ত হলো।
“তুই এখানে আসছিস কেনো?”
“কেনো বারান্দা কি তোর একার? এখানে আসা আমার নিষেধ?”
“আমি কি তাই বললাম? এসে আমাদের কোলের উপরে উঠছিস কেনো? আর জায়গা নাই? দূরে যা।”
এহসান আহত হলো। নীতি সবসময় তার সাথে এমন ব্যবহার করে। মাঝে মাঝে মনে হয় তার সাথে দুর্ব্যবহার করার জন্য যেনো মেয়েটা মুখিয়ে থাকে। সে মালিহার দিকে তাকিয়ে বলল, “মালিহা কেমন আছো?”
“ভালো।”
“আন্টি, মিতুল ওরা কেমন আছে?”
“আছে ভালো।”
“ইয়ে মালিহা!”
“বলো।”
“কোনো হেল্প লাগলে আমাকে একটু বলবে প্লিজ। যদিও জানিনা কতোটা করতে পারবো। তবুও একটু..”
নীতি এতক্ষন চুপ করে ছিল। কিছু বলার জন্য মুখ খুলতেই মালিহা এহসানের দিকে পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়িয়ে বলল, “এহসান, বিপদের সময় তুমি আমার পাশে যেয়ে দাঁড়িয়েছ। সেজন্য তোমাকে ধন্যবাদ জানালেও কম হবে। ধন্যবাদ দিয়ে আমি তোমাকে ছোটোও করতে চাই না। তুমি একজন ভালো বন্ধু। আশা করি একজন ভালো বন্ধু হয়েই থাকবে?”
এহসান ঢোক গিললো। মালিহা তাকে কি বোঝাতে চাইলো? মালিহা কথা শেষ করে দাঁড়ালো না। নীতি এহসানকে বলল, “ভাই ওর পিছু নেয়া বাদ দে। নাইলে কথা টথা যা বলতে পারিস এটাও বন্ধ হবে।”
নীতি চলে গেলে এহসান নিজেকে নিয়ে ভাবলো। মনটা যে বড় বেহায়া হয়ে উঠেছে। কি বলে এক পোষ মানাবে সে?
•
বসার ঘরটা বেশ বড়। শৌখিন আসবাব পত্র দিয়ে সাজানো। একেকটা জিনিসপত্র যেনো মালিকের রুচির পরিচয় বহন করে চলেছে। চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে পুরো ঘরটা দেখে নিলো মালিহা। পাশেই নীতি বসে ফোন টিপছে।
“এই! এ তো দেখি বিশাল বড়লোকি কারবার! আমি তো জানতামই না আমার এমন মালওয়ালা একটা ফুপু আছে!”
মালিহা চাপা কণ্ঠে বলল, “মুখ বন্ধ কর নীতি। তোর অসহ্য মার্কা স্ল্যাং এখানে ইউজ করিস না।”
“দোস্ত! ধর ফুপুর একটা বড়সর ছেলে আছে!”
“তো?” ভুরু কুঁচকে বলল মালিহা।
“তো মানে বুঝো না? রাস্তা পাইলে না গাড়ি চালাবা।”
মুহূর্তেই মালিহার কপালের ভাঁজ টান টান হয়ে গেলো।
“তুই কি এখানে মা-ইর খাবি নাকি বাইরে যেয়ে খাবি?”
“বাইরে যেয়েই খাই। এখানে মান সম্মানের প্রশ্ন। কট খাইলে বাশ।”
কিছুক্ষণের মাঝে একজন মহিলা একটা বিশাল ট্রে নিয়ে এলেন। নীতি দেখেই মালিহাকে গোপনে গুতো দিলো। মালিহা চোখ রাঙানোর আগেই নীতির ফুপু আজিজা এসে উপস্থিত হলেন। দুজনেই সালাম দিলো।
“কেমন আছো তোমরা?” সালামের উত্তর নিয়ে অপর পাশে বসলেন আজিজা। তার কথাবার্তায় বেশ মার্জিত ভাব।
“আলহামদুলিল্লাহ ফুপু ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?”
“আমিও ভালো আছি। এটাই তোমার বান্ধবী?”
“জি ফুপু। ওর কথাই আপনাকে ফোনে বলেছিলাম।”
“আচ্ছা কথা পরে হবে। আগে খাও। চায়ে চিনি দেয়া হয়নি। তোমরা কে কয় চামচ খাও একটু কষ্ট করে দিয়ে নাও।”
নীতি নিজ উদ্যোগে তার এবং মালিহার চা বানালো। মালিহাকে উশখুশ করতে দেখে আজিজা বললেন, “তোমার কোনো সমস্যা হচ্ছে?”
“না না ফুপু। আসলে তিশার সাথে যদি একটু দেখা করতে পারতাম ভালো হতো।”
আজিজা পূর্ণ দৃষ্টিতে মালিহাকে একবার দেখে তিশাকে ডাক দিলেন। ছোটখাট গড়নের একটা মেয়ে ভেতরে থেকে ছুটে এলো। আজিজা চোখ রাঙালে আস্তে হাঁটতে শুরু করলো। সবটাই দেখলো মালিহা।
“নীতিকে তো চেনোই। এটা নীতির বান্ধবী, মালিহা। যাও কথা বলো।”
তিশা ডাগর ডাগর চোখে একবার মালিহাকে দেখলো। চুপচাপ তার পাশে যেয়ে বসলো। মালিহার কাছে মনে হলো মেয়েটা একটা ছোটখাট পুতুল। মুখে মায়া মায়া একটা ভাব। কিন্তু সেই ভাবের কোনোটাই মেকি নয়। জীবনে এই পর্যন্ত বেশ অনেকবার মেকি ভাবের দেখা মিলেছে মালিহার। সে জানে মানুষের ব্যবহারের কৃত্রিম দিকটা কেমন হয়। এই যে আজিজা কম কথা বলছেন এটা অহংকার নয়, এটাই তার স্বভাব। এটুকু বুঝতে মালিহার এক মিনিটও লাগেনি। ঠিক তেমন করেই তিশা মেয়েটাকে চট করে তার মনে ধরে গেলো। সিদ্ধান্ত নিলো দুই হাজার টাকা দিলেও এই মেয়েকে সে পড়াবে। তিশার মাথায় হাত রেখে ধীর কণ্ঠে মালিহা বলল, “তুমি কি আমার কাছে পড়বে তিশা?”
চলমান।