#আড়ালে_অনুভবে
#সাদিয়া_আফরিন_প্রতিভা
#পর্বঃ২৬
এলোমেলো পায়ে কোয়াটার এ এসে নিজের রুমে চলে যায় নিরব।দড়জা টা লাগিয়ে সেখানেই ধপ করে বসে পরে।চোখদুটো চিকচিক করছে তার।
বেশ কিছুক্ষন নিরবতা পালন করার পর ই তার ঠোটের কোণে হাসি ফুটে উঠলো।ধীরেধীরে সেই হাসি বারতে লাগলো।
নিরব:তুই কত্ত বড় হয়ে গেলি দিয়াপাখি।কোথায় আমার সেই ছোট্ট দিয়াপাখি আর কোথায় আজকের দিয়া।খুব ভালো লাগছে জানিস তো, তোকে এমন সাহসি দেখে।খুব আনন্দ লাগছে আমার।(চোখে জমে থাকা জল মুছে নেয়) আমি আজ কি বলতে যাচ্ছিলাম ওকে।না না ওকে কিছু বলা যাবে না,আমি তো জানি আমার দিয়াপাখি আমায় কতো ভালোবাসে।
বড্ড ইচ্ছে করছে দিয়াপাখি,তোকে আবারো বুকে জড়িয়ে নিতে কিন্তু সেই পরিস্থিতি ও যে আর নেই।শুধুশুধু দু দিন এর অতিথির সঙ্গে তোকে জড়িয়ে তোর জীবনটা আমি নষ্ট হতে দেবোনা। তার চেয়ে বরং তুই আমাকে ঘৃণাই করে যা, এতদিন যেমনটা করেছিস ঠিক তেমনভাবেই ঘৃণা কর আমায়।আমি কথা দিচ্ছি,এই নিরব এর জন্য তোকে আর কষ্ট পেতে হবেনা,আর কষ্ট পেতে হ হবেনা। (চোখ বন্ধ করে নেয় নিরব)
______একদিন তুই সব জানতে পারবি দিয়াপাখি ~~ অঝোরে চোখের জল ঝরাবি সেদিন ~~ কিন্তু হয়তো বা সেদিন আমি থাকবোনা।🍂_____
টলতে টলতে উঠে দাঁড়ায় নিরব।কোনোরকম বিছানায় গিয়ে মাথা চেপে ধরে শুয়ে পরে সে।মাথা অসম্ভব যন্ত্রণা করছে।এখন না ঘুমোলে আবারো অসুস্থ হয়ে পরবে।
মৃত্যু কে গ্রহণ করতে ভয় নেই নিরব এর কিন্তু তার যে মনে বড্ড শখ জেগেছে,তার দিয়াপাখিকে একটিবার কোনের সাজে দেখার।
ঠোঁটের কোণে মুচকি হাসি ফুটে ওঠে নিরবের।চোখ বন্ধ করে ডুব দেয় অতীতে—
,,
প্রভা:একটা কথা বলবো নিরব?
নিরব:হুম বলো দিয়াপাখি।
প্রভা:লাল টুকটুকে বেনারসি পড়ে রাজকুমার এর অপেক্ষায় বসে থাকবে এক রাজকুমারি।জানালার কাছে দাঁড়িয়ে প্রহর গুনবে রাজকুমার এর আসার।ঠিক সেই সময় সোনালি রঙের শেরওয়ানি পরিহিত রাজকুমার আসবে তার রাজকুমারি কে নিয়ে যেতে।সারাজীবন এমনকি যতগুলো জন্ম আছে সেই সব জন্মের জন্য একান্ত নিজের করে নিয়ে যাবে তার রাজকুমারি কে।এবার বলো এই রাজকুমার আর রাজকুমারি কারা?
নিরব:(মুচকি হেসে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো প্রভাকে)সেই রাজকুমারি বর্তমানে সেই রাজকুমার এর বক্ষে অবস্থান করছে।
প্রভা:এই বক্ষে জায়গা যে একান্ত রাজকুমারির, অন্য কারোর নয়।
নিরব:আর সেই রাজকুমারি হলো আমার দিয়াপাখি।যাকে শুধু তার রাজকুমার নিরব এর সঙ্গেই মানায়।
প্রভা:আমি যে সারাজীবনের জন্য একান্ত নিরবের দিয়াপাখি হয়ে থাকতে চাই।আমার নামের সঙ্গে শুধুই তার নাম জুড়তে চাই।বলো না নির,আমার এই সপ্ন পূরণ হবে তো?
নিরব:হবে দিয়াপাখি,তোমার এই সপ্ন পূরণ করবো আমি।তোমার সপ্নের রাজকুমার এর জায়গায় শুধু নিরব কেই দেখতে পাবে তুমি,শুধু নিরব কে…কথা দিলাম দিয়াপাখি।
,,
মাথা ব্যাথাটা আরো প্রখর হয়ে উঠলো নিরবের। দু হাতে মাথা চেপে ধরে চিৎকার করে বলতে লাগলো,
নিরব:পারলামনা দিয়াপাখি।হেরে গেলাম আমি, পারলামনা তোকে দেওয়া কথা রাখতে,পারলামনা তোর সপ্ন পূরণ করতে।তোর নামের সঙ্গে তো নিজের নাম জুরে নিয়েছিলাম আমি।তবে কেনো এক ঝড় এসে সব তছনছ করে দিলো?এটা যে শুধু তোর সপ্ন নয় আমারো সপ্ন ছিলো রে দিয়াপাখি।ভাগ্য এতোটা নির্মম না হলেও পারতো।
খুব কষ্ট হচ্ছে দিয়াপাখি,খুব কষ্ট হচ্ছে আমার।তবুও এতো কষ্টের মাঝে আজ আমি খুশি।কেনো জানিস?কারণ আমার দিয়াপাখির খুশিতে যে আমিও খুশি,তোর সপ্নের রাজকুমার এর জায়গায় এই নিরব আর নেই তাতে কি হয়েছে?সেখানে এমন একজন থাকবে যে তোকে খুব সুখি রাখবে,তোর সব সপ্ন পূরণ করবে সে দিয়াপাখি। আমার মতো জঘন্য মানুষ নয় সে।খুব সুখে রাখবে ত তোকে,খুব সুখে রাখবে,খুব স সুখে র রাখ ব বে।
আর সজ্য করতে পারলোনা নিরব।মাথা চেপে ধরে জ্ঞান হারিয়ে বিছানায় লুটিয়ে পড়লো।
________🌿
কিপ্তি:এই অরিস আম্মুকে আজ এতো খুশি খুশি লাগছে কেনো বল তো?
অরিস:আমি কি করে জানবো?আর তুই আমায় নাম ধরে ডাকবি না আমি তোর থেকে অনেক বড়।
কিপ্তি:শুধু ২ মিনিট এর ই তো বড়।
সূর্য:এই কাপ কেক কি এতো বকবক করছিস। (দড়জা থেকে ভিতরে ঢুকে কিপ্তির সামনে এসে বললো)
কিপ্তি:এই সূর্য মামা তুমি আমায় কাপ কেক বলবে না আমার নাম কিত্তি।
সূর্য:আমি তোর মামা না আর কতোবার বলবো? আর তোর নাম কিত্তি নয় কিপ্তি।
কিপ্তি:না তুমি সূর্য মামা।
অরিস:তোমরা এতো ঝগড়া করো কেনো? (বেশ শান্তভাবে বললো)
কিপ্তি+সূর্য:তুই চুপ থাক।
কিপ্তি:আম্মুউউউউ..
সুপ্তি:আরে আরে কি হলো টা কি?আরে সূর্য তুই কখন এলি?কে নিয়ে এসেছে? (রান্নাঘর থেকে বেড়িয়ে বললো)
সূর্য:আম্মু আর আব্বুর সাথে।
কিপ্তি:মামনি সূর্য মামা আমায় আবার কাপ কেক বলেছে।
সূর্য:মামিমনি আমি ওর মামা নই।
রোদেলা:আরে বাচ্চারা যত খুশি ফাইট কিরো কিন্তু এখানে নয়।যাও যাও কিপ্তি অরিস তোমাদের আঙ্কেল এর সঙ্গে গিয়ে খেলো।সূর্য তুই ও যা।
রোদ্দুর এর নাম শুনতেই বাচ্চারা ছুটে চলে গেলো।
সুপ্তি:তোমার তো আর আমাদের কথা মনেই থাকে না আপু।কতোদিন পর এলে।
রোদেলা:মনে পরে রে বোন।কিন্তু আসতে চেয়েও পারি না।এই বাড়িটায় এলেই মনে হয় প্রভা বুঝি আসেপাশেই আছে।এই বুঝি রোদ আপু বলে ছুটে এসে আমায় জড়িয়ে ধরবে।
দুজনেই চুপ হয়ে গেলো এবার।এই পাচ বছরেও বাড়ির কেউ বিন্দুমাত্র ভুলতে পারেনি প্রভাকে।
।।
নিজের রুমে খাটের উপর বসে প্রভার একটি ছবির দিকে তাকিয়ে শাড়ির আচল দিয়ে চোখের জল মুছছে মুনতাহা(প্রভার মা)।ঠিক তখনি পিছন থেকে কারোর হাততালির শব্দে হকচকিয়ে ওঠে।পিছন ফিরতেই দেখে সিনথিয়া দাঁড়িয়ে আছে।
সিনথিয়া:আরে বাহ কাকিমনি।তুমি তো দেখছি তোমার মেয়ে সরি তোমার নাম্বার ওয়ান শত্রুর জন্য চোখের জল ও ফেলো।
মুনতাহা:সিনথু!কি বলছিস তুই এসব। প্রভা আমার মেয়ে।
সিনথিয়া:(মুনতাহার হাত থেকে টেনে ছবিটা নিয়ে নেয়)কি বললে আবার বলো?
মুনতাহা:প প্রভা আমার মেয়ে।
সিনথিয়া:প্লিজ কাকিমনি তোমার এসব মেলোড্রামা বন্ধ করো।কাকে তুমি নিজের মেয়ে বলছো?আপু কে?তাহলে বলে রাখি আপুর মা হওয়ার যোগ্যতা তোমার নেই।আরে তোমার তো খুশি হওয়ার কথা।আপদ বিদায় হয়েছে।
মুনতাহা:এভাবে বলিস না সিনথু।তুই আমার জায়গায় থাকলে বুঝতি।
সিনথিয়া:তোমার মতো নিচু মাইন্ডের মানুষের জায়গায় নিজেকে বসানোর কোনো ইচ্ছে নেই আমার।তোমার মতো মানুষেরা সংসার জুড়তে জানেনা বরং সংসার ভাঙতে জানে।একটিবার পারলে ভেবে দেখো কাকিমনি,একটা ছেলে বিনা স্বার্থে তোমায় সবকিছু ফিরিয়ে দিলো,আর তুমি কি করলে?সেই ছেলেটার কাছ থেকে তার বেচে থাকার উৎস টাই কেড়ে নিলে,জীবিত অবস্থাতে মৃত বানিয়ে দিলে তাকে কাকিমনি,মৃত বানিয়ে দিলে।
(কথাটা বলেই চোখের জল মুছে বেড়িয়ে গেলো সিনথিয়া।মুনতাহা এবার আরো জোড়ে কাদতে লাগলো)
মুনতাহা:যার জন্য এতো কিছু করলাম আজ সে আমার দিকে ফিরেও তাকায় না,তার কাছে আমি মৃত।এতো কিছু করেও তাকে ফিরে পেলাম না। এটাই বোধ হয় আমার প্রাপ্য ছিলো।
_______🌿
রাত ১০ টা বাজে এখন।বিকেলে জ্ঞান হারানোর পর কিছুক্ষন আগে জ্ঞান ফেরে নিরব এর।দড়জা লক করা থাকায় কেউ বুঝতে পারেনি কিছু।
বারান্দায় এসে রোজকার মতো সেই নুপুড়টি হাতে নেয় নিরব।একটি চেয়ার এ বসে নুপুড় টা বুজের সঙ্গে আকড়ে ধরে।আকাশ এর দিকে তাকিয়ে গেয়ে ওঠে,
~~Chaahe main rahun jahaan mein
Chaahe tu na rahe
Tere mere pyar ki umra salamat rahe~~
অন্যদিকে,
জানালা থেকে আকাশে দিকে তাকিয়ে আছে প্রভা।চোখ বন্ধ করে গেয়ে ওঠে,
~~Chaahe yeh zameen, yeh aasman
Rahe na rahe
Tere mere pyar ki umra salamat rahe~~
(প্রিয় গানের মধ্যে একটি🥀)
#চলবে
#আড়ালে_অনুভবে
#সাদিয়া_আফরিন_প্রতিভা
#বোনাস_পার্ট
সকালে ঘুম ভাঙতেই চোখ মুখ কুচকে যেই না সোজা হতে যাবে তখনি নিরবের খেয়াল হয় কেউ তাকে জাপটে ধরে আছে।ধীরেধীরে চোখ খুলে পাশে তাকাতেই দেখলো তার দিয়াপাখি বাচ্চাদের মতো গুটিসুটি মেরে তাকে জরিয়ে ধরে বুকের মাঝে বুক গুজে ঘুমিয়ে।ঠোটের কোণে হাসি ফুটে ওঠে নিরব এর।একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে তার দিয়াপাখির মায়াবি মুখের দিকে।কতোদিন ধরে এভাবে দেখতে পারেনা সে।গত এক মাসে প্রতিদিন ই নিরব দিয়াকে জড়িয়ে ধরেই ঘুমোতো আবার ভোরবেলা তার ঘুম ভাঙার আগেই সরে যেনো। এই মায়াবি মুখের দিকে তাকালেই তো সে দুর্বল হয়ে পরে।পারেনা নিজেকে শক্ত রাখতে।
এক মিনিট,দু মিনিট,তিন মিনিট গুনে গুনে ১০ মিনিট শেষ হয়ে যায়।নিরব এখনো একদৃষ্টিকে তাকিয়ে আছে তার ঘুমন্ত প্রেয়সির দিকে।
খেয়াল করে কিছু চুল চোখে মুখে এসে পড়ায় ঘুমের মাঝেই চোখ মুখ কুচকে নিচ্ছে প্রভা।
নিরব মুচকি হেসে সজত্নে সেই চুলগুলো কানের পিছনে গুজে দেয়।ঘুমের মাঝেই সামান্য কেপে ওঠে প্রভা।নিরব এবার প্রভার গালে হাত রাখে। সামান্য ঝুকে ঠোট ছোঁয়ায় প্রেয়সির কপালে।
একটু খেয়াল করতেই দেখে প্রভার চোখের পাশে খানিকটা জল শুকিয়ে রয়েছে।
বুকের মাঝে ধক করে ওঠে নিরবের।কাপা কাপা ভাবে হাত বোলায় প্রেয়সির সম্পূর্ন মুখশ্রী তে। আবারো কিছুটা ঝুকে চুমু খায় দুই চোখে।
কিছুটা সরে গিয়ে ধীর গলায় বলতে লাগে,
নিরব:আমি খুব খারাপ তাই না দিয়াপাখি?খুব কষ্ট দেই তোকে তাই না?তবুও কেনো এই আমি টাকে এতো ভালোবাসিস বলতে পারিস?আর নয় দিয়াপাখি,আর কষ্ট দিতে পারবোনা আমি তোকে। সে যাই হয়ে যাক না কেনো আমি তোকে সব সত্যিটা বলে দেবো।এই নিরব বেচে থাকতে তোকে কেউ কিচ্ছু করতে পারবেনা।
জানিস দিয়াপাখি?তোকে করা প্রতিটা অবহেলা আমায় কতোটা পোড়ায়?প্রতি মুহূর্তে ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাই আমি।কিন্তু আমি কি করবো বলতে পারিস?ইচ্ছে করে তোকে নিয়ে অনেক দূড়ে চলে যাই,কিন্তু সেটাও করতে পারবোনা। আমি যে বাধ্য দিয়াপাখি,বাধ্য আমি।তোর সব না পাওয়া জিনিস তোকে ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিলাম দিয়াপাখি।কিন্তু আমি আর পারছিনা,পারছিনা আমি..
কথাটা বলে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে নিরব।খুব সাবধানে তার দিয়াপাখিকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে যেই হাতে ভর দিয়ে বিছানা থেকে উঠতে যাবে তখনি চাপ লাগে বাম হাতে।
মুখ থেকে “আহহহ” শব্দ বেড়োতে চাইলেও দাতে দাত চেপে সজ্য করে নেয়।সে চায় না তার জন্য দিয়াপাখির ঘুমে ব্যাঘাত ঘটুক।
হাত টা সামনে এনে দেখে ব্যান্ডেজ খানিকটা ভুজে গেছে রক্তে।সেদিকে তাকিয়ে বাকা হাসে নিরব।
নিরব:তোর তো আরো বেশি শাস্তি পাওয়ার দরকার ছিলো নিরব।তুই কি করে পারলি এই হাত দিয়েই তোর দিয়াপাখি কে সামনে থেকে সরিয়ে দিয়ে বাড়ির ভিত্র ঢুকতে?ইচ্ছে তো করছিলো হাত টাই কেটে ফেলি।সিনথু টা যে কেনো আটকালো!
(দিয়ার দিকে একবার তাকায়) ভালোই হয়েছে দিয়াপাখি খেয়াল করেনি।নাহলে হাজারো প্রশ্ন করে বাড়ি মাথায় তুলতো।
আবারো বাকা হাসে নিরব।ঠিক সেই মুহূর্তেই ফোনে একটা মেসেজ আসে।নিরব ফোন টা হাতে নিয়ে দেখে আবারো সেই আইডি থেকে হোয়াটসএপ এ মেসেজ।নিরব দ্রুতগতিতে ভিতরে ঢুকতেই দেখে একটা বড় মেসেজ সাথে একটা ভিডিও।যা দেখা মাত্র নিরব এর পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যায়।আইডিতে কল দিতে যাবে সেই মুহূর্তেই আর খুজে পেলোনা আইডিটা।বাম হাত দারা সজোরে ঘুষি মারলো পাশে থাকা টি টেবিল এ।রক্তে সম্পূর্ন ব্যান্ডেজ ভিজে জেতে লাগলো।এক সেকেন্ড ও দেড়ি না করে কল দিলো ওর বন্ধু নিলয় এর নম্বরে।
নিরব:হ হ্যালো নিলয়,আইডিটা কিছুক্ষণ আগে একটিভ হয়েছিলো।কিহ?এটা কি করে পসিবেল? তুই আরেকবার ট্রাই করে দেখ হ্যাক করতে পারিস কিনা!ওহ শিট! ও ওকে আমি রাখছি।
বলেই কলটা কেটে দিলো নিরব।ডান হাত দিয়ে নিজের মাথার চুল টানতে লাগলো।কিচ্ছু মাথায় ঢুকছে না তার।কেমন যেনো পাগল পাগল লাগছে।আর দেড়ি না করে সিনথিয়া কে কল দিলো,
নিরব:হ্যালো সিনথু।জলদি নিচে নাম,পাচ মিনিটের মধ্যে।
সিনথিয়া কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে কলটা কেটে দিলো নিরব।বিছানা থেকে যেই নামতে যাবে তখন নিজের ডান হাতে টান অনুভব করে।পিছনে ঘুড়তেই দেখে দিয়া ওর হাত টেনে ধরে ঘুমের মাঝেই কিছু বলে চলেছে,
নিরব ভ্রু কুচকে কিছুটা ঝুকে যায় দিয়ার দিকে।
দিয়া:ত তুমি এমন কেনো করছো নির?আমি কি কোনো ভুল করেছি?এমনটা ক করোনা প্লিজ। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে।কেনো আমার থেকে এভাবে দূড়ে সরে যাচ্ছো তুমি।
দুয়ার কথা শুনে নিরব এর চোখ থেকে দু ফোটা জল গড়িয়ে পরে।ছেলেরা নাকি কাঁদেনা,একটা ছেলে কতোটা কষ্ট পেলে কাদতে পারে?
নিরবের মনে হচ্ছে ওর হৃদয়ে যেনো কেউ বারংবার ধারালো ছুড়ি দারা আঘাত করছে। ইচ্ছে করছে এখন ই তার দিয়াপাখি কে বুকের মাঝে আঁকড়ে ধরে বলুক,
“আমি তোর থেকে দূড়ে যাইনি দিয়াপাখি।এই নিরব যে তার দিয়াপাখি ছাড়া অস্তিস্তহীন।”
কিন্তু পরিস্থিতি তাকে বলতে দিচ্ছে না।সজত্নে প্রেয়সির কপালে ঠোট ছুইয়ে দেয় নিরব।
আর এক মুহূর্ত দেড়ি না করে বেড়িয়ে যায় রুম থেকে।
_____🍃
সিনথিয়া:ভাইয়া তুমি এসব কি বলছো?তুমি তো কাল রাতেও বললে আপুকে সবকিছু বলে দেবে।তাহলে…
নিরব:এটা দেখ সিনথু.. (নিচের দিকে তাকিয়ে ফোন থেকে ভিডিও টা বের করে দেয়)
সিনথিয়া কিছু না বলে ফোনটা হাতে নিয়ে ভিডিও টা অন করে।কিছুক্ষণের মাঝেই চোখ বড়বড় হয়ে যায় সিনথিয়ার।হাত অটোমেটিকালি মুখে চলে যায়।চোখ থেকে দউ ফোটা জল গড়িয়ে পরে তার।ভিডিও টা দ্রুত অফ করে বলে,
সিনথিয়া:ব্যাস ভাইয়া আমি আর দেখতে পারছি না।মানুষ এতোটা নিকৃষ্ট কি কঅরে হতে পারে?
নিরব:এখন ও বলবি আমি কালকের সিদ্ধান্ত তেই থাকবো?সিনথু আমি কি করে নিজের কথা ভেবে এতোটা স্বার্থপর হতে পারি?একটা মানুষকে জেনে শুনে মৃত্যুর মুখে রেখে দেবো?
সিনথিয়া:নিশ্চুপ
নিরব:আমাদের হাতে আর সময় নেই সিনথু। যেকোনো সময় ওরা যা খুশি করে ফেলতে পারে।ইচ্ছে না থাকলেও আমায় এটাই করতে হবে।
সিনথিয়া:কিন্তু আপু..
নিরব:তোকে যেমনটা বললাম তুই ঠিক তেমনটাই করবি।আমার দিয়াপাখির গায়ে যেনো একটা ফুলের টোকাও না লাগে।
সিনথিয়া:বুঝেছি ভাইয়া।তুমি চিন্তা করোনা,তুমি যেমনটা বলেছো তেমনটাই হবে।
নিরব আর কিছু না বলে রুমে চলে আসে।ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে তার দিয়াপাখির ঘুমন্ত মুখে দিকে তাকায় আবারো। মনে মনে বলে,
“আমায় ক্ষমা করে দিস দিয়াপাখি।ক্ষমা করে দিস।”
আর কিছু ভাবলো না নিরব।চোখের কার্নিশে জমে থাকা জল মুছে বেড়িয়ে পরে রুম থেকে।
বর্তমান—-
চোখ দুটো মুছে নেয় নিরব।এখন ভাবছে সেদিন হয়তো কিছুটা স্বার্থপর হলেই ভালো হতো।তবুও তো নিজের দিয়াপাখি কে কাছে পেতো।
______”যেই মানুষটি নিজের স্বার্থের কথা না ভেবে অপরকে বাচানোর জন্য সবচেয়ে প্রিয় ব্যাক্তিকে হারাতে পারে🌿সে আর যাই হোক, অপরাধি নয়🍂”_____[সাদিয়া আফরিন প্রতিভা]
#চলবে