#আহানের_শ্যামবতী
#পর্বঃ১৪ (last part)
Sam Ira
সবাই রিহানকে নিয়ে ব্যস্ত থাকার মধ্যে একটা খারাপ খবর আসলো। ইতি পড়ে গিয়ে ব্যাথা পাইছে, তাকে নিয়ে আহানের আব্বু-আম্মু হসপিটাল আসছে।
অপারেশন রুমে নিয়ে গেছে ইতিকে, আহান শেষ একবার ইতিকে দেখে আসলো। মুহূর্তের মধ্যে সব খুশি শেষ হয়ে সবার চোখে পানি চলে আসলো।
আহান নামাজ পরছে আর আল্লাহর কাছে স্ত্রী সন্তানের জন্য সাহায্য চাইছে।
ডক্টর অপারেশন রুম থেকে বাহির হয়ে বললো,
” ওনার অবস্হা খুব ক্রিটিকাল, মি.আহান আপনি বলেন আমরা কাকে বাচাবো?? দুইজনের অবস্হায় আশঙ্কাজনক, যেকোনো একজনকে বাচাতে হবে। তবে আপনার স্ত্রী সন্তান নেওয়ার জন্য পরিপূর্ণ ছিলো না, উনার বয়স কম ছিলো। এরপর উনি বেবি কনসিভ না করার সম্ভাবনা ৯০%। আপনি একজন ডক্টর হয়ে এই ভুল কিভাবে করলেন??
আহান এক কথায় উত্তর দিয়ে দিলো,
” আমার সন্তান চাই না, আমার শ্যামবতীকে চাই। যে করে হোক তাকে বাচিয়ে তুলেন।
অপারেশন শেষ হয়ছে, মৃত মেয়েকে আহানের হাতে তুলে দিলো। মেয়েটি চাদের মতো সুন্দর, আহান ইতির ভালোবাসার ফল, তাদের নিজের সন্তান। আহান মেয়ের দিকে তাকিয়ে শুধু চোখের পানি ফেলছে।
আহান মেয়ের জানাজা পরে হসপিটাল চলে আসছে, সবাই অনেকবার বলছে থাকতে কিন্তু আহান এক কথায় বারবার বলছে, আমি বাবা হয়ে আমার মেয়ের লাশ কিভাবে কাঁধে নিবো??
দুইদিন পর ইতির জ্ঞান ফিরছে, তারপর থেকে শুরু করছে পাগলামি। অহনা, অহনা করে পাগল পয়ে গেছে। হসপিটালের মধ্যে অনেক কিছু ভেঙ্গে ফেলছে, এর জন্য আহান ক্ষতিপূরণ দিয়ে ইতিকে বাসায় নিয়ে আসছে। বসায় আসার পর থেকে চিৎকার দিয়ে কান্না করতে করতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে।
আহান ইতির জন্য ইউ টিউব দেখে বিরিয়ানি রান্না করে রুমে নিয়ে গেলো। আহান ইতির কাছে গিয়ে বললো,
” আল্লাহ চাইলে সব হবে, এখন অহনাকে এই পৃথিবীতে আসতে হলে তো তোমায় সুস্থ থাকতে হবে শ্যামবতী।
ইতির ভালোর জন্য সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলো যে এক বাসায় থাকবে সবাই। রিমিদের বাসা অনেক বড়, তৃতীয় ফ্লোরে ১২টি রুম আছে।
সবাই একসাথে থাকার পর থেকে ইতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ছে, রিহানকে নিয়ে সারাদিন সময় চলে যায়।
____________
আজকে রিহানের ৫ম জন্মদিন। জাকজমক ভাবে পালনের পর যখন সব মেহমান চলে গেলো তখনি আহান একটা খুশির খবর দিলো।
ইতি আবার মা হবে, এটা শুনে সবাই অনেক খুশি হয়ছে। রিহান রিমির কাছে জিজ্ঞাস করলো,
” মাম্মাম, তোমরা সবাই এতো খুশি কেনো??
তখন আহান বললো,
” আপনার একটা বোন আসবে।
রিহান বললো,
” বোন আসার তো দরকার নাই, আমার আদর কমে যাবে।
রাতে ইতি আকাশের চাঁদের দিকে তাকিয়ে আহানকে বললো,
” আমার মেয়েটা আপনার মতোই সুন্দর হবে।
“আমি চাই তোমার মতো শ্যামবতী হোক।
“আপনি কিভাবে জানেন মেয়ে হবে।
“এই পাঁচ বছর আল্লাহর কাছে শুধু একটা জিনিসেই চাইছি যে আমার একটা মেয়ে হোক তোমার মতো।
ইতি আহানকে জরিয়ে ধরে বললো,
” ভালোবাসি আপনাকে অনেক বেশি।
আচ্ছা আপনি এতো সুন্দর সুন্দর মেয়ে থাকতে আমায় কেনো পছন্দ করছেন??
“জানিনা, তবে সব মেয়ের মধ্যে শুধু তোমার দিকেই চোখ আটকে গেলো। তোমার মধ্যে অদ্ভুত মায়া আছে যার জন্য তোমার জন্য এত পাগল আমি।
— সমাপ্ত —