#আহানের_শ্যামবতী
#পর্বঃ১৩
Sam Ira
ইতি বাসায় সবসময় টি-শার্ট আর প্লাজু পরে ঘুমাতো। কিন্তু বিয়ের পর আহানের সাথে ঘুমাতো তাই আর এইসব পরতো না, সকাল হলে যেই অবস্থায় থাকে সেটা আহান দেখলে মান-সম্মান শেষ। আজকে আহান অন্য রুমে ঘুমাবে তাই ইতি একটা শর্ট টি-শার্ট আর প্লাজু পরে ঘুমিয়ে গেছে।
আহান রুমে এসে দেখে ইতির টি-শার্ট উপরে উঠে বুকের কিছু অংশ দেখা যায়, প্লাজু হাটুর উপরে উঠে আছে। ইতিকে এই অবস্থায় দেখে আহান নিজের মধ্যে নাই।
আহান গিয়ে ইতির সারা মুখে কিস করলো, তারপর ঠোটে ঠোট বসাই দিলো।
ঘুমের মধ্যে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসাতে ইতির ঘুম চলে গেলো। ইতি দুহাতে আহানকে ধাক্কা দিতাছে, তাই আহান ইতিকে ছেড়ে দিলো। আহান ইতির পাশে শুয়ে বললো,
” তোমাকে আদর করতে গেলে একটুও শান্তি পাই না, সবসময় খালি ধাক্কা ধাক্কি করো।
“আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যায়, আমি কি করবো।
“এখন চুপ থাকো তাহলে একটু ঘুমাতে দিবো, তা না হলে সারারাত জেগে থাকতে হবে।
খুনসুটি, ভালোবাসা, ঝগড়া, মান-অভিমান এসবের মধ্যে অনেক সময় চলে গেলো। রিমির পেট অনেকটা ফুলে গেছে তাই এখন স্কুলে যেতে দেই না ইহান, বাসায় পড়ালেখা করে। কালকে থেকে টেস্ট পরীক্ষা শুরু তাই ইতি বসে বসে বই রিভিসন দিতাছে।
ইতি পড়া শেষ করে ঘুমাতে গিয়ে দেখলো আহান বারান্দায় দারিয়ে রয়েছে। ইতি আহানকে বললো,
” আপনি কি কোনো কারণে বেশি চিন্তিত??
আহান ইতির দিকে তাকিয়ে বললো,
” একটা কথা জিজ্ঞাস করবো??
“হুম।
“তোমার পিরিয়ড ডেট দুইবার ওভার হয়ে গেছে তারপর ও তুমি কিছু বলছো না কেনো??
ইতি আহানের গলা জরিয়ে তার চোখের দিকে তাকিয়ে আদুরে কন্ঠে বললো,
” আপনি বাবা হবেন।
” কেমনে কি?? তোমাকে তো আমি প্রতিদিন ঔষধ খেতে দিতাম।
“হুম, কিন্তু আমি খেতাম না।
” সবকিছু নিয়ে বেশি বেশি করা তোমার স্বভাব।
একটা সত্যি কথা বলো তো তুমি হঠাৎ বেবির ডিসিশন কেনো নিছো???
“আপনি সারাদিন শুধু পড়া পড়া করেন তাই বেবির ডিসিশন নিছি যাতে আর না পড়তে হয়।
ইতির কথা শুনে আহান হাসবে নাকী কাঁদবে সেটাই ভুলে গেলো। আহান ইতিকে তার বুকের মধ্যে নিয়ে বললো,
“কালকে পরীক্ষা আছে, এখন ঘুমাও। তবে তোমার জন্য একটা গিফট আছে, ফাস্ট টাইম বাবা হবো বলে কথা।
“কি গিফট??
আহান বললো,
“তুমি এখানে দাড়াও, আমি আসতেছি।
আহান একজোড়া নুপুর এনে ইতির পায়ে পরিয়ে দিয়ে বললো,
” এইগুলা কয়েকদিন আগে কিনছি, ভাবছি কোনো স্পেশাল দিনে দিবো। আজকে আমার কাছে অনেক খুশির একটা দিন তাই তোমার জন্য এই সামান্য গিফট। পছন্দ হয়ছে??
“হুম, কিন্তু এই নুপুরের তো কোনো আওয়াজ হবে না।
“হুম, মহিলাদের নুপুরের আওয়াজ কোনো পুরুষ শুনলে গুনাহ হয় তাই এরকম নুপুর নিয়েছি যাতে সবসময় পরতে পারো।
ইতি আহানের কথা শুনে অনেক খুশি হয়ছে। একটা মানুষ তার জন্য কত ভাবে, কত নিখুঁত ভাবে তাকে ভালোবাসে। ইতি কোনো কিছু না ভেবেই আহানের পায়ের উপর পা দিয়ে দারিয়ে ঠোটে গভীর চুমো দিলো।
খুশির ঠেলায় কি করে বসলো সেটা বুঝে উঠার পর ইতি তাড়াতাড়ি রুমে এসে শুয়ে পরলো। আহান এসে পিছন থেকে ইতিকে জরিয়ে ধরে বললো,
” যেই মেয়েকে আদর করতে গেলেই খালি ছাড়ো ছাড়ো করে সেই মেয়েটা কিভাবে আমাকে কিস দিলো? এইগুলা ভাবা যায়??
মেয়েরা মা হওয়ার পর এতো রোমান্টিক হয়, এটা জানলে অনেক আগেই অহনাকে নিয়ে আসতাম।
ইতি আহানের দিকে ফিরে বললো,
” অহনা কে??
“আপনার আর আমার মেয়ে অহনা, বুঝছো শ্যামবতী??
“হুম।
আজকে রিমির পেটে ব্যাথা উঠছে তাই রিমিকে হসপিটাল নিয়ে আসা হয়ছে, ইহিনের একটা অপারেশন থাকায় তাকে কেউ জানাতে পারেনি।
নরমালেই রিমির ছেলে হয়ছে তবে অনেক ব্লাডের দরকার, রিমির এখনো জ্ঞান ফিরে নি।
রিমির ব্লাড গ্রুপ আহানের সাথে মিলে তাই আহান ব্লাড দিতে চলে গেলো।
রিমি হসপিটাল শুনে তার আব্বু আম্মু আর রাগ করে থাকতে পারলো না। হসপিটাল এসে নাতি কোলে নিয়ে বসে রয়ছে কিন্তু মেয়েকে এখনো দেখেনি।
ইতি তার আম্মুর মোবাইলে ভিডিও কলে ইহানের ছেলেকে দেখছে।
রিমির জ্ঞান ফেরার পর পাশে বসে থাকতে দেখলো ইহানকে। ইহান চোখের ইশারায় অপর পাশে তাকাতে বললো। রিমি ছেলেকে কোলে নিয়ে অনেকগুলো চুমো দিলো। রিমির এসব পাগলামি দেখে ইহান রাগ দেখিয়ে রিমিকে বললো,
” তুমি এখনো ভালো করে সুস্থ হও নি। ছেলেকে এখন এইদিকে দেও।
“ভুলেও না। আপনার তো বেবি লাগবে না, এই ছেলের জন্য আমাকে কত কথা বলছেন, আমার গায়ে হাত তুলছো?? সব ভুলে গেছো???
” না, ভুলি নি। ছেলের নাম ঠিক করছো?
রিমি বললো,
” আমি কি জানি, যার ছেলে সে ভালো বুঝবে।
ইহান মনে মনে বললো,
” আসলেই মহিলা মানুষের সাথে কথা বলে পার পাওয়া যায় না। কেনো যে বিয়ে করতে গেলাম 🙁🙁🙁
“হুম , রিহান রাখলে কেমন হয়??
“ভালো তো।
সবাই রিহানকে নিয়ে ব্যস্ত থাকার মধ্যে একটা খারাপ খবর আসলো…………………
চলবে।