আহানের শ্যামবতী পর্ব-০৮

0
841

#আহানের_শ্যামবতী
#পর্বঃ৮
Sam Ira

ইহান এক হাত দিয়ে রিমির কাঁধ জরিয়ে ধরে বললে —
“আজকে কোথায় ঘুমাবা??
“ইতির সাথে

ইহান রিমিকে আরেকটু কাছে এনে জরিয়ে ধরে বললো –
” আমার রুমে আজকে অনেক মানুষ থাকবে তাই আমি এখানে যেই রুমটা আছে এইটায় ঘুমাবো। সবাই ঘুমালে তুমি এখানে চলে এসো।

রিমি নিজেকে ইহানের থেকে ছাড়ানোর চেস্টা করতেছে আর বললো –
” ছারুন আমায়। আর আমি রাতে আসতে পারবো না, কেউ দেখে ফেললে সমস্যা হবে।

“আমি যদি না যেতে দেই তাহলে তুমি কখনো যেতে পারবে না। আর সবাই ঘুমালে আসতে বলছি তাহলে তো কেউ দেখবে না।

রিমি এক কথায় বলে দিলো —
” পারবো না।

“কি বলছো??
আবার বলো

“পারবো না, পারবো না, পারবো…….
রিমিকে আর কিছু বলতে না দিয়ে তার ঠোট দখল করে নিলো ইহান।

ইতিকে মোবাইলের দিকে আসতে দেখে আহান কল কেটে দিলো। ইতি রিমি আর ইহানেরর রোমান্টিক সিন দেখে “ভাইয়া” বলে জোরে এক চিৎকার দিলো।
“বিয়ে হচ্ছে আমার অথচ রোমান্স করো তোমরা, কাহিনী কী??
“কোনো কাহিনী নেই, আমার কোনো দোষও নেই। রিমি রোমান্স কি সেটাই বুঝে না তাই তাকে শিখাচ্ছি।

এটা বলেই আর এক মুহূর্ত দেরি না করে নিচে নেমে গেলো ইহান।
ইতি রিমির দিকে তাকিয়ে দেখে সে লজ্জায় মাথা নিচু করে রাখছে। তাই ইতি আর কথা বেশি বললো না, বেশ ভালোই বুঝা যাচ্ছে তাদের মধ্যে রিলেশন আছে।

গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানও ভালোভাবে মিটে গেলো, তবে ইতিকে আহান কল দিয়ে বলছে কয়টা ছবি দিতে তাই ইতিও সুন্দর করে অনেক গুলো ছবি তুলে দিলো।

কালকে ইতি বউ সেজে অন্য কারো বাড়িতে যাবে, অন্য কারো সাথে ঘুমাবে, কালকে থেকে এক অচেনা পুরুষের সাথে মৃত্যু পর্যন্ত থাকতে হবে অথচ সেই অচেনা পুরুষকে একবারও দেখেনি ইতি। এসব ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে পরলো ইতি।

ইতি ঘুমানোর পর রিমি ছাদে চলে আসছে। ইহান ছাদে দাড়িয়ে রিমির জন্যই অপেক্ষা করছিলো।
রিমিকে দেখেই মুচকি হাসি দিয়ে বললো–
“কে জানি বললো আসবে না অথচ এখন ঠিকই চলে আসছে।

রিমি ইহানকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে বললো —
“ভালোবাসি ডাক্তার সাহেব।

ইহান রিমির কপালে একটা গভীর চুমো দিয়ে বললো —
“আমিও আপনাকে ভালোবাসি প্রেয়সী।
শুনেন, কালকে অনেক কাজ আছে আর আপনাকে তো সবসময় কাছে পাবো না তাই এখন একটু শান্তি দিবেন??

রিমি লজ্জায় ইহানের বুকে মুখ লুকালো। ইহান রিমিকে কোলে নিয়ে রুমে চলে গেলো।

সকাল থেকে বাসায় মানুষের ধাক্কাধাক্কি, বিয়ে বাড়ি বলতে কথা। রাতে অনুষ্ঠানের জন্য ঘুমাতে দেরি হয়েছে, এখনও ঠিকমতো ঘুমাতে পারছে না তাই ইতি ঘুম থেকে উঠে তার মায়ের কাছে গেলো।
রানি বেগম ইতিকে পরোটা আর ডিম দিয়ে খেতে বললেন। ইতি পরোটা খাচ্ছে আর মোবাইল দেখছে তখনি আহানের নাম্বার থেকে কল আসলো। ইতি কল রিসিভ করে বললো —
“আস্ সালামুলাইকুম, ভালো আছেন??

“হুম। একটা কিছু কথা বলার ছিলো মনোযোগ দিয়ে শুনো।

” আচ্ছা বলেন।

“আজকে তুমি শুধু নিজের মতো করে সাজবে, কোনো মেকআপ দিওনা। তোমাকে মেকআপ না দিলেই বেশি সুন্দর লাগে।

‘ পার্লার থেকে লোক আসবে তো, যদি আমি কিছু
না দেই তাহলে সবাই কি বলবে

আহান রেগে বললো–
“আমি এতোকিছু জানিনা, আমি যা বলি সেটাই করবা তুমি, আমার কথার বাহিরে যাতে কিছু না হয়।

ইতি মনে মনে বললো-
“এতোদিন তো সুন্দর করেই কথা বলছে এখন আবার কি হলো।

সকল নিয়ম-কানুন শেষে বিয়ে সম্পন্ন হলো। ইতি ঘোমটার মধ্যে অনেকবার নিজের বরকে দেখতে চাইছে কিন্তু পারেনি। তাই ভাবছে একদম বাসর ঘরেই বরের মুখ দেখবে।

সবাই সবার মতো বাসায় চলে গেছে, আহানের বাবা-মা নতুন বউ নিয়ে যাবে তাই বসে রয়ছে। ইতি তার আব্বু আম্মুকে ধরে অনেক কান্না করছে, চোখ মুখের বেহাল দশা। ইহানকে একবার দেখেনি ইতি, সবাই ইহানের নাম্বারে কল দিচ্ছে কিন্তু মোবাইল অফ করে রাখছে।
রিমিকে পাঠিয়েছে ইহানের রুমে, ইহান বারান্দায় দারিয়ে চোখের জল ফেলছে। রিমি গিয়ে রেগে বললো–

” আপনার বোন চলে যাবে, আপনি তাকে শান্তনা না নিজেই কান্না করতেছেন কাহিনী কি??
ইতি আপনার জন্য ওয়েট করতেছে তাড়াতাড়ি……….

রিমির কথা শেষ না হতেই দেখলো ইহান চলে গেছে। রিমিও ইহানের পিছন পিছন গেলো।
ইহান এসেই ইতিকে শক্ত করে ধরছে, দুই ভাই-বোন একসাথেই কান্না করতেছে। ইহান ইতিকে আহানের হাতে তুলে দিয়ে বললো —
চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে