আহানের শ্যামবতী পর্ব-০৬

0
837

#আহানের_শ্যামবতী
#পর্বঃ৬
#Sam Ira

কয়েক রকমের জুতা, ৫ টা থ্রিপিস, ৫ টা স্কার্ট, ৩টা কালো বোরকা, ৫ টা হিজাব, লিপস্টিক, কয়েক ধরনের প্রসাধনী, মোবাইল, সবকিছু কিনে ব্যাগ ঠিক করছে আহান।

তারপর আবার গেলো গোল্ডের দোকানে, সব রকমের কেনাকাটা শেষ করে বাসায় ফিরে ফ্রেস হয়ে ঘুমিয়ে গেলো কারণ তারপর দিন সকালে চট্টগ্রাম যেতে হবে।

রিমি আর ইহান কাজী অফিস থেকে বের হয়ে একটা রেস্টুরেন্টের সামনে গাড়ি থামিয়েছে।
কফি আর বার্গার খাওয়ার পর রিমি বললো ২ প্যাকেট বিরিয়ানি নিয়ে দিতে। ইহান জিজ্ঞাস করলো কেনো??

রিমি বললো–
আব্বু আম্মু বাসায় নাই। আজকে আপনাদের বাসায় থাকবো তাই কাজের লোকদের আসতে না করে দিয়েছি। দুপুরের ঘটনার জন্য অনেক লজ্জা লাগছিলো তাই চলে আসছি। বাসায় তো কিছু রান্না করা নাই তাই রাত আর সকালের জন্য দুই প্যাকেট বিরিয়ানি লাগবে।

ইহান একটু ভেবে বললো –
” তুমি বাসায় একা থাকতে পারবা নাকী আমিও যাবো তোমার সাথে??

“আপনি থাকলে তো ভালোই হয়, আমি বাসায় একা কখোনো থাকিনি।

ইহান চার প্যাকেট বিরিয়ানি নিয়ে দিছে রিমিকে।
তারপর রিমিকে বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে বললো –
“আমার একটু কাজ আছে, এখন হাসপাতাল যেতে হবে। তুমি বাসায় গিয়ে ফ্রেস হয়ে কালো শাড়িটা পরো, কালো শাড়িতে তোমাকে অনেক সুন্দর লাগে।

রিমি ইহানের কথা মতো কালো শাড়িটা পরছে। রিমি সবসময় ইউ টিউব দেখে শাড়ি পরে। প্রথমে ঠিক থাকলেও পরে শাড়ির অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যায়।

ইহান বাসার নিচে এসে রিমির কাছে কল দিছে তখন রিমি বলছে তৃতীয় ফ্লোরে তাদের বাসা।
ইহান বাসায় এসে রিমিকে দেখে অবাক —
“কালো শাড়িতে এই মেয়ে তো আমাকে পাগল করে ফেলবে।
রিমি ইহানকে তার রুমে নিয়ে গেলো। ইহান ওয়াসরুম থেকে ফ্রেস হয়ে বের হওয়ার পর রিমি জিজ্ঞাস করলো —
“আপনার জন্য কি বিরিয়ানি গরম করবো??
ইহান বারান্দায় তোয়াল দিতে দিতে বললো —
“গরম করা লাগবেনা, ২০মিনিট সময়ে বেশি ঠান্ডা হয়নি।

ইহান খাবার খেতে বসে দেখলো রিমি পাশে দারিয়ে রয়ছে।
“কি হলো??
খাবে না??

রিমি একটু ইতস্ততবোধ করে বললো —
“আপনি খেয়ে নিন, আমার খিদা নেই।

ইহান রেগে বললো —
“তুমি খেতে বসবা নাকী আমি বাসায় চলে যাবো।

রিমি তাড়াতাড়ি ইহানের পাশে গিয়ে বসলো।
ইহান রিমিকে নিজের হাতে খাইয়ে দিলো, রিমি প্রথমে না না করলেও পরে খেয়েছে।

খাওয়া শেষে ইহান রিমিকে কোলে তুলে নিলো।
রিমি চিৎকার দিয়ে বললো-
” আরে আরে কি করছেন, ছারুন আমায়, পরে যাবো তো।

ইহান রিমিকে নিয়ে সোজা রুমে ঢুকে দরজা লক করে দিয়েছে। রিমিকে কিছু বলতে না দিয়ে তার শাড়ির আচল সরিয়ে পেটের মধ্যে মুখ গুজলো।
দুইজনেই হারিয়ে গেলো তাদের ভালোবাসার রাজ্যে।

আহান সকালে নামাজ পড়ে ইতির আম্মুর নাম্বারে কল দিলো। ইতির আম্মু রান্নাঘরে ছিলো তাই ইতি মোবাইলের কাছে গেলো। আহান নামটা দেখেই মনের মধ্যে এক অজানা ভয় কাজ করতে লাগলো। বিয়ে না হলেও এখন লোকটা তার হবু স্বামী, এত সকাল কল দিলো যে কোনো বিপদ হলো না তো।
এইসব ভাবতে ভাবতে কল রিসিব করতেই শুনতে পেলো–
“আস্ সালামুলাইকুম আন্টি, ভালো আছেন??

ইতি শান্ত ভাবেই জবাব দিলো,
“আম্মু রান্নাঘরে, আমি ইতি।

“কেমন আছো??
“ভালো, আপনি কেমন আছেন?
“আলহামদুলিল্লাহ, ভালো।

” এতো সকাল কল দিলেন যে কোনো সমস্যা হয়েছে।
“না, সব ঠিক আছে। তোমার সাথে কথা বলার জন্য কল দিলাম, তুমি কি খুশি হও নি??

ইতি তো মনে মনে সেই লেবেলের খুশি। আহানের সাথে কথা বললে এখন আর পড়তে বসতে হবে না।
“না তেমন কিছু না। এত সকাল কল দেওয়াতে একটু ভয় পেয়ে গেছি।

“ওহহ, নামাজ পড়ছো??
“হুম
“শুনো, আমি এখন বাহির হবো, চট্টগ্রাম যাবো।
তুমি ব্রেকফাস্ট করে পড়তে বসো।
“আচ্ছা

আহান কল কেটে দেওয়ার পর ইতির মন খারাপ হয়ে গেলো।
“লোকটা এমন কেনো? আর একটু কথা বললে কি এমন ক্ষতি হতো?🙂🙂

চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে