#আহানের_শ্যামবতী
#পর্বঃ৫
Sam Ira
ইতি এখন শুধু আপসোস করতেছে, তখনস একবার হলেও ছেলেটার নাম্বার নেওয়া উচিত ছিলো। তাহলে এই ২ সপ্তাহ পড়া-লেখা বাদ দিয়ে তার সাথে কথা বলতো। ইতি রাগ দেখিয়ে মনে মনে আহানকে বকা দিতে লাগলো —
“শালা ইডিয়েট, আমার না হয় মনে ছিলো না আর মনে থাকলেও বলতে পারতাম না কারণ সবার সামনে একটু লজ্জা লজ্জা ভাব নিয়ে বসে থাকতে হয়। আমার কপালে কেনো এই আনরোমান্টিক পোলা জুটছে আল্লাহ ভালো জানে।
ইহান রিমিকে নিয়ে একটা নির্জন জায়গায় গিয়ে গাড়ি রাখছে। আকস্মিক ঘটে যাওয়া দুপুরের ঘটনায় এতক্ষন পর্যন্ত লজ্জায় কেউ কারো সাথে কথা বলেনি।
রিমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে ইহানের দিকে তাকিয়ে আছে। ইহান গাড়ির সাথে দারিয়ে রিমিকেও ইশারা করলো। রিমি ইহানের কাছ থেকে এক হাত দূরে দারিয়ে রইলো। এটা দেখেই ইহানের মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো, তারপরও কিছু না বলে অন্যদিকে ফিরে বললো —
“আজকের জন্য সরি, প্লিজ তুমি কাউকে কিছু বলো না। এটাকে একটা একসিডেন্ট ভেবে ভুলে যাও।
রিমি ইহানের কথা শুনে অবাক হয়ে গেলো, কাছে এসে ছুঁয়ে দিয়ে এখন বলতেছে ভুলে যেতে, এটা কিভাবে সম্ভব??? এসব ভাবতেই রিমির চোখে পানি চলে আসছে। রিমি অন্যদিকে ফিরে চোখের পানি মুছে বললো —
“মেয়েদের কাছে গিয়ে ছুঁয়ে দিয়ে ভুলে যেতে বলা, এইসব কি আপনার চারিত্রিক অভ্যাস???
ইহান মনে মনে ভাবলো —
” আমি তো তোমাকে ভালোবাসি প্রেয়সী, কিন্তু তুমি বরলোক বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। তোমাকে ভালাবাসার সামর্থ্য তো আমার নাই। তাই যা হয়েছে সব ভুলে যেতে বলছি।
রিমির চোখে পানি দেখে ইহান রিমিকে হেচকা টানে বুকের মধ্যে এনে নরম সুরে জিজ্ঞাস করছে —
” তুমি কি চাও আমি সারাজীবন তোমায় ছুঁয়ে দেই???
রিমি এখন লজ্জায় ইহানের বুকে মুখ গুজলো। ইহান রিমির মুখটা উপরে তুলে বললো —
“তুমি আমায় ভালোবাসো??
রিমি আগে থেকেই ইহানকে ভালোবাসতো, যতবার ইতির সাথে তাদের বাসায় গিয়েছিলো ততবার ইহানকে দেখে ক্রাস খেতো। এখন যখন ইহান নিজে থেকে জিজ্ঞাস করছে তাহলে তো বলতেই হবে, তাই রিমি মিনমিন সুরে হুম বলেই ইহানকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো।
ইহান রিমিকে নিজের থেকে সরিয়ে তার হাত দুটো নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে বললো —
“প্লিজ রিমি, একটু বুঝার চেষ্টা করো, তোমার ফ্যামেলি কখনো আমাদের রিলেশন মানবে না।
রিমি আবার ইহানকে জরিয়ে ধরে বললো —
“চলেন আমরা বিয়ে করে ফেলি, তারপর কেউ আমাদের ব্যাপারে জানলেও কিছু করতে পারবে না।
প্রেয়সী বুকের মধ্যে থাকলে এক অন্যরকম সুখ অনুভূত হয়। এই সুখ সারাজীবনের জন্য উপেক্ষা করার সাধ্য তার নেই। তাই রিমিকে বললো —
” সিউর তো??
রিমি হুম বলে গাড়িতে গিয়ে বসলো। ইহান তার তিনজন ফ্রেন্ডকে কাজী অফিস আসতে বলে গাড়িতে গিয়ে বসলো।
আহান ১ সপ্তাহ চট্টগ্রাম থাকবে, বিয়ের আগে অনেক কাজ থাকে, চট্টগ্রাম থেকে এসে ইতির শাড়ি গহনা কিনতে পারবে না ঠিকমতো। তাই ইতিদের বাসা থেকে সোজা মার্কেটে চলে আসছে আমেনা বেগমকে সাথে নিয়ে।
মেহেন্দি অনুষ্ঠানের জন্য আহান ইতির জন্য লাল পাড়ের সাদা শাড়ি আর নিজের জন্য একটা সাদা রংয়ের পান্জাবি নিয়েছে। গায়ে হলুদের জন্য হলুদ, সবুজ মিশ্রনের শাড়ি আর পান্জাবি নিয়েছে। বিয়ের জন্য লাল লেহেঙ্গা,আর শেরোয়ানি নিয়েছে। রিসেপশন অনুষ্ঠানের জন্য নীল রংয়ের লেহেঙ্গা আর শেরোয়ানি নিয়েছে।
এতক্ষন পর্যন্ত যতকিছু নিয়েছে সবগুলো ইতি পছন্দ করে দিয়েছে। ইতির আম্মুর কাছে কল দিয়ে কথা বলার পর ইতির কাছে মোবাইল দেওয়ার জন্য বলছে আহান। তারপর থেকে পছন্দ মতো অনেক ড্রেসের ছবি পাঠানোর পর ইতি চয়েস করে দিয়েছে।
যেই ড্রেসগুলো সবসময় ইতি বাসায় পরবে সেগুলো আহান নিজে পছন্দ কর নিবে। প্রথম ব্যাগে ৩০টা শাড়ি, ব্লাউজ, পেটিকোট নিয়েছে।
১৫ টা শাড়ি বাসায় পরার জন্য আর বাকী ১৫ টার মধ্যে কিছু জরজেটের আবার কিছু জামদানি শাড়ি নিয়েছে। শাড়ির সাথে মেচিং করে ৩০ টা হিজাবও নিয়েছে।
আহান নিজের জন্যও অনেক কিছু নিয়েছে তবে সব শার্ট, টি-শার্ট তার শ্যামবতীর শাড়ির সাথে মেচিং করে কিনলো।
চলবে।