#আহানের_শ্যামবতী
#পর্বঃ৪
#Sam Ira
ইহান রিমিকে আগে থেকেই পছন্দ করতো, তবে সিরিয়াস ছিলো না। এখন চোখের সামনে রিমির সাদা পেট আর অগোছালো শাড়ি দেখে নিজের মধ্যেই ছিলোনা। রিমির কাছে যাওয়ার সময় শাড়ির উপর পা ছিলো তখনি রিমি টান দিছে তারপর ইহান রিমির উপর পরছে।
দুইজন দুইজনের দিকে ঘোর লাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। ইহানের যদিও কোনো হুস নেই তবে রিমির অবস্থা বেচে থেকেও মরার মতো। ৭০ কেজি ওজনের পুরুষ যদি ৪০ কেজি ওজনের মেয়ের উপর থাকে তাহলে তো সে এমনিই কোমায় চলে যাবে।
ইহান তার দুই হাত দিয়ে রিমির হাত চেপে ধরে ঠোটে ঠোট মিলিয়ে দিয়েছে। ইহানের কাছে এক অন্যরকম সুখের অনুভূতি হচ্ছে, রিমির এমনেই দম যায় যায় অবস্থা তার মধ্যে এখন নিঃশ্বাস নিতে পারছেনা।
আহান তার শ্যামবতীকে দেখতে ব্যস্ত অথচ তার শ্যামবতী তার দিকে একবারও তাকায়নি। সবাই সবার মতো করে কথা বলতেছে, ইহানও রুম থেকে এখনো আসতেছে না, আহানের কাছে খুব বিরক্ত লাগতেছে। আহান সবার থেকে এতটু দুরে দারিয়ে ইহানের নাম্বারে কল দিলো।
হঠাৎ মোবাইলের আওয়াজে ইহানেরর হুস আসছে। তাড়াতাড়ি করে রিমির উপর থেকে উঠে গেছে। যেই লোক কল করছে তাকে রিমি ফেরেশতা মনে করে নাহলে রিমি মরেই যাইতো। রিমি চোখ বন্ধ অবস্থায় বললো —
” আপনি কি পড়া-লেখা না করেই ডাক্তার হয়েছেনন, কোনো বিবেক বুদ্ধি নেই কেনো আপনার?? এমনিতেই আপনার চাপে চ্যাপ্টা হয়ে গেছি তার মধ্যে নিঃশ্বাস বন্ধ করে দিলেন।
ইহান মনে মনে নিজের উপরেই নিজে রাগ দেখাচ্ছে —
” ছিঃ, ছিঃ, ছিঃ, শেষ পর্যন্ত এই পিচ্চি মেয়ের সামনেই নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলাম না। রিমি মনে মনে কি ভাবছে কি জানে। আর আমার কি দোষ, সামনে যদি এরকম হ*ট, সুন্দরী মেয়ে থাকে তাহলে কন্ট্রোল না থাকারএ কথা।
ইহান রিমির দিকে তাকিয়ে দেখে রিমি এখনও নিচে শুয়ে আছে। কালে রংয়ের ব্লাউজ পরা, ফর্সা শরীরে কালো রং খুব মানিয়েছে। ইহান অন্যদিকে তাকিয়ে বললো —
” উঠো না কেনো??
রিমি বিরক্ত হয়ে বললো —
” নরতেই তো পারতেছি না, কিভাবে উঠবো??
ইহান রিমিকে কোলে নিতে গিয়ে পেটের মধ্যে হাত পরছে, তাই বিরবির করে বললো —
“এই মেয়ে আমাকে পাগল করে ছারবে।
রিমি ইহানকে জিজ্ঞাস করলো —
“যা বলার জোরে বলেন
ইহান রিমিকে বিছানায় শুয়ে দিয়ে,শাড়ি নিচ থেকে উঠিয়ে রিমির গায়ের উপর দিয়ে দিয়েছে, তারপর বললো –
“আমি কি বলছি সেটা নিয়ে তোমার টেনশন করা লাগবে না, এখন চুপচাপ এখানে শুয়ে থাকো। শাড়ি যদি সামলাতে না পারো তাহলে আর কখনো শাড়ি পরবে না।
বলেই ইহান বাহিরে চলে গেল, মোবাইল নিয়ে দেখলো আহানের কল ছিলো তাই আহানের কাছে গেলো।
আহান তো ইহানকে দেখেই মনে হয় ভুত দেখার মতো চমকে গেলো —
” দোস্ত তোর ঠোটে লিপিস্টিক, তাড়াতাড়ি মুছে ফেল, নাহলে মান-সম্মান সব শেষ।
ইহান পকেট থেকে টিসু বের করে তাড়াতাড়ি ঠোট মুছে ফেলছে। এখন আহান তো তাকে ছেরে কথা বলবে না, কী জবাব দিবে সেটাই চিন্তার বিষয়।
ইহানের ভাবনার মাঝে আহান বলে উঠলে —
” দোস্ত, আজ তোর খবর আছে। প্রথমত ইতি যে তোর বোন সেটা বলিসনি আমায়, দ্বিতীয়ত তুই লুকিয়ে চুবিয়ে প্রেম করস সেটাও আমাকে বলিসনি।
আহান একটু থেমে আবার বলে উঠলো —
” এক মিনিট, তুই যখন বাসায় আসলি তখন তো ঠিক ছিলি, আর এখন তো ইতির ফ্রেন্ড ছাড়া বাসায় অন্য কেউ নাই, তুই আমাকে এখানে একা বসিয়ে রেখে এতক্ষন পর্যন্ত ওই পিচ্চি মেয়ের সাথে রোমান্স করলি???
ইহান মাথা নিচু করে বললো —
” দোস্ত, বিশ্বাস কর প্লিজ, আমার সাথে রিমির কোনো রিলেশন নাই। এখন যাস্ট একটা একসিডেন্ট হয়েছে এর বেশি কিছুনা। আর ওই মেয়ে মোটেও পিচ্চি না যথেষ্ট বড় হয়েছে।
আহান একটু রসিকতার সাথে বললো —
“হুম, আমি যখন তোর বোনরে পছন্দ করছি তখন কি বললি যে সে বাচ্ছা মেয়ে আর এখন নিজের বেলাই সব ঠিক।
তাদের কথার মধ্যে আরমান হোসেন এর জরুরি একটা কল আসছে হাসপাতাল থেকে। তাই তাড়াতাড়ি আংটি পরানোর কাজটা শেষ করতে বললেন। আহান তার শ্যামবতীর হাতে গোল্ডের লাভ শেপের একটা আংটি পরিয়ে দিলো। #আহানের_শ্যামবতী তার দিকে একবারও তাকায়নি সেজন্যই আহান খুশি, বলা তো যায় না আহানকে দেখলে আবার কি থেকে কি বলে।
বিয়ের দিন তারিখ সব ঠিক করে আহানের পরিবার চলে গেলো। ২ সপ্তাহ পরেই বিয়ে, এখন থেকে কাজ শুরু করতে হবে, সব ঠিক করতে হবে, এইসব নিয়ে বসে বসে সবাই কথা বলতেছে তাই ইতি উঠে তার রুমে চলে গেলো।
ইতি রুমে গিয়ে রিমিকে দেখে তো অবাক,
“কিরে? তোর শাড়ির অবস্থা এতো ভালো কেনো??
“মজা নিস না বইন, আমি শাড়ি সামলাতে পারিনা। এখন তোর একটা টপস আর জিন্স দে।
“তোরে দিয়ে কি হবে সেটা আমার ভালোই জানা আছে। সারাজীবন জিন্স, শার্ট পরে তুই এখন পর্যন্ত সামান্য একটা থ্রিপিস পরেই থাকতে পারোস না শাড়ি তো পরের ব্যাপার।
রিমি ইতিকে রেগে বললো —
“আমি অভিশাপ দিচ্ছি, তোর জামাই তোরে শার্ট, প্যান্ট পরাইবো।
“তোর জামাই তোরে বোরকা পরাইবো।
রিমি মজা করে বললো —
“তোর জামাই তোরে জামা কাপড়ও কিনে দিবে না।
এটা বলেই ইতির হাত থেকে ড্রেস নিয়ে ওয়াসরুমে ঢুকে গেছে।
ইতি আর রিমি নিচে নেমে দেখে ইহান সোফার মধ্যে বসে রয়েছে। তাই ইতি ইহানকে বললো রিমিকে বাসায় দিয়ে আসতে। রিমি প্রথমে না করলেও পরে ইতির জোরাজুরিতে আসতে হলো।
চলবে।