আরেকটি বার পর্ব-২৮

0
730

#আরেকটি_বার
#পর্বসংখ্যা_২৮
#Esrat_Ety

ব্রেকফাস্ট টেবিলে পিনপতন নীরবতা। ডক্টর রাওনাফ করীম খান নাস্তা খেতে খেতে তার ছোটো কন্যার দিকে তাকায়। শর্মী পাপাকে পাত্তা দিচ্ছে না। একমনে খাবার নাড়াচাড়া করছে। কালকের ঘটনায় সে এখনও রেগে আছে তার বাবার ওপর। আজ বাড়ির সবাই ব্রেকফাস্ট টেবিলে উপস্থিত আছে। আজমেরী আর রুমা আজ বিকেলে যার যার শশুরবাড়িতে ফিরে যাবে।
খেতে খেতে রাওনাফ সামিউলের দিকে তাকায়,জানতে চায় অন্তরার কথা।

সামিউল বলে,”ঘরে। খাবার ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

রাওনাফ বলে,”সব গুছিয়ে নিয়েছিস?”

সামিউল মাথা নাড়ায়। উর্বী বলে,”কেনো? ওরা কি কোথাও যাচ্ছে?”

রাওনাফ উর্বীর দিকে তাকায়। বলে,”তোমাকে বলা হয়নি। ওরা রাজশাহী যাবে। ওখানটা সামিউল সামলাবে,ওখানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে ওকে নিয়োগ দিয়েছি।”

“আর ওনার বিজ্ঞাপন অফিসের চাকুরী?”

উর্বীর কথায় সামিউল তার দিকে তাকায়, নিচুগলায় বলে,”করছি না আর ভাবী।”

উর্বী সবার প্লেটে ডিমের পোচ তুলে দিতে দিতে বলে,”কবে যাচ্ছেন? ফ্ল্যাট দেখেছেন?”

_আমি দেখে সব ঠিক করেছি। সামিউলের সাথে অন্তরাও যাবে। ওরা ওখানেই থাকবে। বিকেলে যাবে আজ।
রাওনাফ জবাব দেয়।

উর্বী মলিন মুখে বলে,”বাড়িটা যে খালি হয়ে যাবে পুরো!”

রওশান আরা মাথা তুলে তাকায়। তারপর ঠান্ডা গলায় বলে,”অন্তরা তার স্বামীর সাথে থাকবে। স্বামী অন্য শহরে পরে থাকবে আর সে এই সংসার সামলাবে এমন বৌয়ের আমার প্রয়োজন নেই। মোহনাকেও শাফিউলের সাথে পাঠিয়েছি। সামিউলও তার বৌকে সাথে নিয়ে যাবে। আর ঘর কেন খালি হবে? আমার বড় ছেলে,ছেলের বৌ,নাতী নাতনি। সবই তো আছে।

উর্বী শাশুরির কথায় ম্লান হেসে কিচেনে চলে যায়। রাওনাফ উঠে পরে। আজমেরী বলে,”ভাইজান আমরাও বিকেলে যেতে চাচ্ছি। তুমি তো রাতে ফিরবে,দেখা হচ্ছে না আর।”

রাওনাফ অবাক হয়ে তাকায়, বিষন্ন ভঙ্গিতে বলে,”চলে যাবি! গত পরশুই না এলি!”

রুমা হেসে বলে,”পরশু না। চারদিন হয়েছে ভাইয়া। আর এখন এতো মন খারাপ করছো কেন? তখন কত কেঁদেছি আমি আর আপা বিয়ে করবো না বলে। তখন তো শোনোনি। যেই সরকারি চাকরিজীবী পাত্র পেয়েছো অমনি ধরে বেঁধে বিয়ে দিয়েছো। এখন কেন আটকে রাখতে চাও?”

রাওনাফ হেসে ফেলে। আজমেরী বলে,”বাচ্চাদের স্কুল আছে ভাইয়া। সামনের মাসে আসবো আবার। তাও তো এখন আসছি,বাড়িটা কেমন বাড়ি বাড়ি লাগে বড় ভাবী এসেছে বলে। গত দশবছর একটুও আসতে ইচ্ছে করতো না বাড়িতে।”

রাওনাফ হেসে আমীরুনকে ডাকে,”কফিটা আমার ঘরে দিয়ে যা। আমি বেরোবো এক্ষুনি।”

উর্বী শুনেছে রাওনাফের কথা। যেহেতু আমীরুনকে বলেছে তাই সে তার নিজের কাজ করতে থাকে। আমীরুন পাশে এসে দাঁড়ায় উর্বীর, নিচুগলায় বলে,”নিয়া যান ভাবী!”

_কি?
উর্বী জানতে চায়।

_কফি নিয়া যান। ভাইজান চাইছে তো।

_তো তুমি নিয়ে যাও। তোমাকে বললো যে। আমাকে তো বলেনি। আমি এদিকটা দেখছি।

আমীরুন হাসে। উর্বী বলে,”হাসছো কেন?”

আমীরুন হাসতে হাসতে বলে,”ভাইজান আপনারেই ইশারা দিছে ঘরে যাওয়ার জন্য। যান আপনে,গিয়া দেখেন জরুরি কথা থাকবার পারে। ডাইনিং টেবিলে বাড়ির সব মানুষ ছিলো তাই আপনারে সরাসরি ডাকেনাই।”

উর্বী অবাক হয়ে বলে,”তুমি কিভাবে বুঝলে?”

আমীরুন হাসে আর বলে,”সেই এইটুকুন বয়স থেকে ভাইজানরে দেখি। বড় ভাবীর সাথেও এমন করতো। আমি এইগুলা বুঝি!”

উর্বী লজ্জা পেয়ে যায়। আমীরুন কফির মগটা উর্বীর হাতে তুলে দিয়ে বলে,”যান। কফি ঠান্ডা হইয়া যাইবো।”

****
উর্বী ঘরে ঢুকতেই রাওনাফ উর্বীর দিকে তাকিয়ে আন্তরিক হাসি দিয়ে কফির মগটা নিয়ে নেয়। রাওনাফের হাসি দেখে উর্বী আমীরুনের কথার সত্যতা বুঝে যায়।
রাওনাফ কফির মগে চুমুক দেয়। কিন্তু কিছু বলে না। উর্বী রাওনাফের একটা ইস্ত্রি করা শার্ট বিছানার ওপর রেখে দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে নিলে রাওনাফ ডাকে,”উর্বী।”

উর্বী দাড়ায়। রাওনাফ উঠে ড্রয়ার থেকে একটা খাম এনে উর্বীর হাতে দেয়। উর্বী জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায়। রাওনাফ বলে,”কাল বলতে মনে ছিলো না। মুভি টিকিট। ওদের নিয়ে যেও সন্ধ্যায়। শর্মী খুব এক্সাইটেড ছিলো মুভিটা নিয়ে।”

উর্বী হাতের টিকিট গুলোর দিকে তাকিয়ে রাওনাফের দিকে তাকায়,বলে,”আর আপনি?”

রাওনাফ হেসে ফেলে,”আরে ধুর! আমার অত সময় আছে? ডাক্তারি ফেলে বাচ্চাদের এ্যানিমেশন মুভি দেখবো! তুমি ওদের তিন ভাইবোনকে নিয়ে যেও।”

_নাবিল যাবে?

_যেতে পারে। জিজ্ঞেস করে দেখবে। না গেলে ওদের দুবোনকে নিয়ে যাবে।

উর্বী বলে,”তো এতো টিকিট কেনো? বাড়িতে কেউ থাকছে না। সামিউলরাও চলে যাচ্ছে বিকেলে। এখানে মোট দশটা টিকিট।”

_ওগুলো শর্মী আর শায়মীর ফ্রেন্ডদের জন্য। আমি প্রতিবার সবার জন্য কিনি। ওরাও যায়।

উর্বী চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে। রাওনাফ উর্বীর দিকে খানিকটা ঝুকে বলে,”চাকরি করবে না ঠিক আছে। নিজেকে গৃহবন্দী করার কোনো মানে নেই। ওদের সাথে ঘুরে এসো। ভালো লাগবে। বাচ্চাগুলো চমৎকার সব!”

রাওনাফ টাইয়ের নট বাঁধতে থাকে। উর্বী ঘর থেকে বেরোয় না। মুভি টিকিট গুলো রাখতে গিয়ে দেখতে পায় টেবিলের ওপর একটা এ্যাপয়েনমেন্ট লেটার। হাতে তুলে নিয়ে রাওনাফের দিকে তাকিয়ে বলে,”এটা কার এ্যাপয়েনমেন্ট লেটার? রুপা কে?”

রাওনাফ ঘুরে তাকায়। তারপর বলে,”এখানের একজন নার্স। সামহাউ চাকরি টা চলে গিয়েছে তাই রাজশাহী চাকরির ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। খুবই অভাবী পরিবার।”

উর্বী কথা না বাড়িয়ে কাগজটা রেখে দেয়। তারপর বলে,”ডাক্তারি রেখে সমাজ সেবা করতে শুরু করলেন নাকি! অবশ্য আপনি যে খুব মহান তা তো টের পেয়েছি। যার মনে দু’টো বৌয়ের জায়গা হয় তার মহানুভবতা নিয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই!”

রাওনাফ টাইয়ের নট বেঁধে হাতে এ’প্রো’ন তুলে নিতে নিতে বলে,”খুবই দুর্বল ধরনের ব্যঙ্গ এটা মৃদুলা উর্বী। এ্যান্ড দিস ইজ ফর ইওর কাইন্ড ইনফরমেশন….আমি একটুও অফেনডেড হইনি! আমার আপনার এই ব্যঙ্গটা গায়েই লাগেনি।”

উর্বী শাড়ির আঁচল মুখে চে’পে ধরে হাসছে। রাওনাফ উর্বীর দিকে তাকায়। হুট করে তার চোখ চলে যায় উর্বীর পায়ের দিকে, উৎকণ্ঠা নিয়ে বলে ওঠে,”ওটা কি হয়েছে পায়ে!”

উর্বী নিজের পা লুকানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে। রাওনাফ এগিয়ে গিয়ে উর্বীর হাত টেনে বিছানায় বসায়। তারপর নিজে ঝুঁকে বসে উর্বীর ডান পায়ের আঙ্গুলের কাছটাতে দেখতে থাকে। উর্বী চাপা স্বরে চেঁচিয়ে বলে,”ধরছেন কেনো! এমনি দেখুন। হাত সরান পা থেকে।”

রাওনাফ উর্বীর দিকে কপাল কুঁচকে তাকায়। তারপর গম্ভীর কন্ঠে বলে,”তোমরা বাঙালি মেয়েরা এতো ঢং করো কেনো? কোথা থেকে আসে এসব? পায়ে হাত দিলে কি হবে? তোমার পাপ হবে? হোয়্যাট দ্যা…….!”

প্রচন্ড বিরক্ত রাওনাফ। উর্বী চুপ। রাওনাফ বলে,”কেটেছে কিভাবে?”

_কিচেন নাইফ হাত থেকে পরে গিয়েছে সকালে।
লজ্জিত ভঙ্গিতে বলে উর্বী।

রাওনাফ বলে,”ওহ হো হো! আমি তো ভুলেই গিয়েছি। আপনি মৃদুলা উর্বী। আপনি অক্ষত,সুস্থ শরীর নিয়ে দিন যাপন করবেন তা কি করে হয়! কোনো না কোনো অঘটন তো আপনাকে ঘটাতেই হবে। কথায় কথায় সেন্সলেস হওয়ার ব্যাপারটা কমেছে একটু। তাই এখন কাটাছেঁড়ার পথ বেছে নিয়েছেন। কারন আপনাকে তো পেশেন্ট হয়ে ঘুরতে হবে, বাড়িতে একজন ফ্রীতে ডক্টর পাচ্ছেন যে! ভিজিট তো দিতে হয় না, তার ওপর নার্সের কাজটাও করে দেয়!”

উর্বী মুখ ভার করে বলে,”আপনি আমায় অপমান করছেন! আমি বুঝি ইচ্ছে করে এসব করি?”

রাওনাফ উর্বীর কথার জবাব না দিয়ে পায়ের আঙুলে একটা ব্যান্ডেজ করে দিয়ে উর্বীর দিকে তাকায়। উর্বী বলে,”এতো কুইন ট্রিটমেন্ট দিচ্ছেন যে! অভ্যাস খারাপ করে দিচ্ছেন আমার!”

রাওনাফ বলে,”সবসময় কিং ট্রিটমেন্ট দাও আমাকে! ভাবলাম শোধ করি!”

উর্বী বলে,”হয়েছে? এবার তো পা থেকে হাত সরান। ডাক্তারি তো শেষ হলো!”

রাওনাফ হাত সরিয়ে নেয়। উর্বী উঠে দাঁড়ায়। রাওনাফ গিয়ে হাতে ব্যাগ আর এপ্রোন তুলে নিয়ে উর্বীর দিকে তাকিয়ে বলে,”আসছি। টেইক কেয়ার!”

উর্বী বলে,”হয়নি তো!”

রাওনাফ থেমে দাড়ায়। উর্বীর দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায়। উর্বী রাওনাফের ডান হাত টেনে নিজের মাথায় বুলিয়ে দিতে দিতে বলে,”এভাবে! বলুন টেইক কেয়ার!”

রাওনাফ হেসে ফেলে। এগিয়ে যায় উর্বীর কাছে। উর্বী তার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। রাওনাফ উর্বীর বা গালে একটা হাত রেখে আলতো করে চুমু খায় ডান গালে। উর্বী গুটিয়ে যায়। মুখ তুলে রাওনাফ উর্বীর দিকে তাকিয়ে নিচু স্বরে বলে,”টেইক কেয়ার!”

রাওনাফ চলে যায়। থেকে যায় রাওনাফের পারফিউমের গন্ধ পুরো ঘরে,উর্বীর গালে। উর্বী লজ্জামাখা মুখটা তুলে দরজার দিকে তাকায়। হাত দিয়ে নিজের গাল ছুঁয়ে বিরবির করে বলে,”এতোটাও আশা করিনি ডাক্তার!”

****
শর্মী অনেকক্ষণ ধরে নাবিলের ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে ভেতরে উঁকি দিচ্ছে। নাবিল খেয়াল করেছে, কিছুক্ষণ সময় নিয়ে বলে ওঠে,”কিছু বলার থাকলে বলে যা,ওখানে দাঁড়িয়ে তাকাঝাকা কেনো করছিস তোর ছোটোমার মতো?”

শর্মী ক্ষে’পে যায়। ভেতরে ঢুকে দাঁতে দাঁত চেপে বলে,”আন্টিকে নিয়ে একটা বাজে কথা বলবে না।”

নাবিল ব্যঙ্গ করে বলে,”সরি সরি সরি। ভুল হয়ে গিয়েছে আমার। এখানে কেন এসেছিস?”

শায়মী ঘরে ঢোকে। শর্মীকে কিছু বলতে না দিয়ে বলে ওঠে,”মুভি দেখতে যাবো, যাবি তুই? পাপা টিকিট এনেছে। দশটা। ”

নাবিলের চোখ বড় বড় হয়ে যায়। অবাক হয়ে বলে,”দশটা? কে কে যাবো?”

_আকিব,তুলি ওদের চারজনকে বলেছি। শর্মীর দুজন ফ্রেন্ড। আর আমরা চারজন। তুই,আমি,শর্মী আর আন্টি।

নাবিল মাথা তুলে তাকায়। বলে,”আন্টি?”

_হু।

_মানে পাপার বৌ?

_হু

_মানে দাদুর পুত্রবধূ?

_হু
বিরক্ত হয়ে জবাব দেয় শায়মী।

নাবিল হাসতে হাসতে বলে,”মানে তোদের ছোটো মা?”

শায়মী এবার প্রচন্ড ক্ষে’পে যায়। নাবিল হাসছে। শায়মী বলে সন্ধ্যা সাতটায় ফার্স্ট শো। যেতে চাইলে চল।

নাবিল হাই তুলতে তুলতে বলে,”আমি যাবো না। তোরা ছোটোমার সাথে ঘুরে আয়!”

শায়মীও গা ছাড়া ভাব দেখিয়ে বলে,”ঠিকাছে যাস না! ফাবিয়া আসবে! অনেক মজা হবে।”

নাবিল আড়চোখে শায়মীর দিকে তাকায়, নিচু স্বরে বলে,”ফাবিয়া আসবে!”

শায়মী হাসি চেপে রেখে বলে,”হ্যা। ওকে ইনভাইট করেছি। আসবে। যাই হোক! তুই তো যাবি না। থাক তাহলে!”

শর্মী আর শায়মী ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। উর্বী বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলো। শর্মীকে দেখে ফিসফিসিয়ে বলে,”রাজি হয়েছে?”

শর্মী মাথা নাড়ায়। উর্বী শুকনো মুখে বলে,”ওহ।”

শায়মী বলে,”নাবিল যাবে। দেখে নিও। ওর ব্রেইন ওয়াশ করে দিয়ে এসেছি।”

উর্বী বলে,”কিভাবে?”

_বলেছি ফাবিয়া আসবে। ফাবিয়ার কথা শুনলেই ও একেবারে খুশিতে গদগদ হয়ে যায়।

উর্বী অবাক হয়ে বলে,”ফাবিয়া কে? নাবিলের গার্লফ্রেন্ড? ওর গার্লফ্রেন্ডও আছে?”

শায়মী বলে,”এই না না আন্টি। গার্লফ্রেন্ড না। তবে নাবিলের মনে লাড্ডু ফোটে ফাবিয়ার নাম শুনলে। কেমন ব্লাশ করে দেখো।”

উর্বী হেসে ফেলে। শায়মী বলতে থাকে,”এসব কথা পাপাকে প্লিজ বলে দিও না আন্টি। নাবিল আমাকে কাঁচা খেয়ে নেবে তবে।”

উর্বী মাথা নাড়ায়। হাসতে হাসতে বলে,”একদমই না। তোমাদের সব সিক্রেটের মতো এই সিক্রেট টাও গিলে ফেললাম।”

শায়মী হাসছে।
শর্মী নাক কুঁচকে বলতে থাকে,”আমার ফাবিয়া আপুকে একদমই পছন্দ নয়। একেবারেই নেকু টাইপ। ওর বাবা মিনিস্টার তাই এতো দেমাগ! ওকে কেনো তোমরা ফ্রেন্ড বানিয়েছো আপু!”

উর্বী শর্মীর কথায় অবাক হয়ে শায়মীর দিকে তাকিয়ে বলে,”বাবা মিনিস্টার? বাব্বাহ! রাওনাফ করীম খানের ছেলের তো কলিজা আছে!”

শর্মী উর্বীর কথাটার মানে ধরতে পারে না কিন্তু শায়মী ঠিকই হাসতে থাকে।

উর্বী হাসতে হাসতে বলে,”চলো,তোমরা রেডি হবে। আমি সামিউল অন্তরাকে ফোন করে দেখি ওরা পৌঁছালো কি না।”

শর্মী বলে,”আমাকে ফ্রান্স বেনী করে দেবে আন্টি?”

উর্বী হেসে বলে,”দেবো! দেবো!”

শায়মী বলে ওঠে,”আমাকেও দিও প্লিজ।”

***
রেডি হয়ে তিনজন সিড়ি বেয়ে নিচে নামতেই দেখে নাবিল রেডি হয়ে বসে আছে নিচতলার লিভিং রুমে। উর্বী,শায়মী,শর্মী তিনজনই তাদের হাসি চেপে রেখেছে। নাবিল কপাল কুঁ’চ’কে বসে আছে, বারবার হাত ঘড়িতে সময় দেখার ভান করছে। শায়মী বলে ওঠে,”এ কি রে নাবিল,তুই কোথায় যাচ্ছিস?”

নাবিল উঠে দাঁড়িয়ে বলে,”তোদের সাথে।”

শায়মী বলে,”কেনো? বলেছিলি তো যেতে চাস না।”

_তোদের দেখেশুনে নিয়ে যাবো আমি।

শায়মী ঠোঁট বাঁকিয়ে বলে,”আমাদের দেখেশুনে নিয়ে যাওয়ার জন্য আন্টি আছে। তোর যেতে হবে না। যতোসব পাকনামো।”

নাবিল বলে,”উনি তো নিজেই নিজের দেখাশোনা করতে পারেন না। তোদের কি করবে!”

উর্বী বহু কষ্টে তার হাসি চেপে রেখেছে। শায়মী এবার বলতে থাকে,”আচ্ছা ঠিকাছে! চল, আর শোন ফাবিয়া যাচ্ছে না। ফোন দিয়েছিলো। আর কাকে ইনভাইট করা যায় বলতো?”

নাবিল অবাক হয়ে শায়মীর দিকে তাকিয়ে বলে,”ফাবিয়া যাচ্ছে না?”

শায়মী হাসি চেপে রেখে জবাব দেয়,”না।”

নাবিল চোখ মুখ কঠিন করে বলে,”তো আমার কি! চল দেরি হয়ে যাচ্ছে!”

গাড়িতে ওঠার আগে উর্বী শায়মীকে ফিসফিসিয়ে বলে,”ফাবিয়া সত্যিই আসছে না?”

শায়মী উর্বীর থেকেও নিচু স্বরে জবাব দেয়,”আসবে। নাবিলকে একটু ঘোল খাইয়েছি।”

উর্বী হাসে। হাসতে হাসতে নাবিলের দিকে তাকায়। গাড়ির সামনের সিটে চোখ মুখ কুঁচকে বসে আছে। বয়স সবে ষোলো, চেহারা থেকে বাচ্চা ভাবটাই যায়নি অথচ এই বয়সেই তার প্রেয়সীর জন্য হৃদয় ব্যাকুল। উর্বীর ইচ্ছা করছে উচ্চশব্দে কিছুক্ষণ হাসতে। ডক্টর রাওনাফ করীম খান শুনলে কি করবে!
অবশ্য পাপার রক্তই তো বইছে নাবিলের শরীরে। তার পাপাও তো ইচরে পাকা ছিলো। স্কুল জীবন থেকে নাকি শিমালার সাথে সম্পর্ক ছিলো! প্রেমিক পুরুষ বাবার ছেলে তো প্রেমিক পুরুষই হবে!

শায়মী ফিসফিসিয়ে বলে,”আন্টি এতো হেসো না তো। তোমাকে বলাটাই আমার ভুল হয়েছে।”

উর্বী নিজের মুখ চেপে ধরে। সে তবুও হাসছে।

***
ফাবিয়াকে দেখে উর্বীর হাসি মিলিয়ে যায়। সে শুধু মুগ্ধ হয়ে দেখতে থাকে! মেয়েটিকে একটা পুতুল বললে কম হবে। কাঁচা হলুদের মতো গাঁয়ের রং,ছোটো খাটো আদুরে আনন, মিষ্টি মুখশ্রী,পাতলা দু’টো ঠোঁট নেড়ে নেড়ে আদুরে গলায় উর্বীর দিকে হাত বাড়িয়ে বলে,”হেলো আন্টি।”

উর্বী খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে থাকে নাবিল শায়মী শর্মীর সব বন্ধুকে। সবগুলোই সম্ভ্রান্ত পরিবারের ছেলেমেয়ে। কিন্তু যথেষ্ট মিশুক, কথাবার্তায় অহংকারের ছিটেফোঁটাও নেই। উর্বীর সাথে খুব দ্রুতই যেন মিশে গেলো বাচ্চাগুলো। কিন্তু বেশভূষায় বেশ আধুনিক সবাই। রাওনাফ কখনো নিজের মেয়ে দুটোকে এতোটা খোলামেলা টপ পরতে দেয়না। শর্মী শায়মীরও আগ্রহ খুবই কম এসব পোশাকে। তারা কখনো ফ্রক নয়তো সালোয়ার কামিজ পরে, বড়জোর জিন্স আর শার্ট।

সিনেপ্লেক্সের অপজিটে বিরাট বড় রেস্তোরাঁয় তারা একটা বড় টেবিল বুক করে বসেছে। মাত্র কিছুক্ষণ আগে মুভি দেখে এখানে এসেছে তারা। এখন রাত সাড়ে নয়টা বাজে। প্রত্যেকটা ছেলেমেয়ের বাড়ির গাড়ি পার্কিং লটেই পার্ক করা।

উর্বী খাবার অর্ডার দিয়ে সবার মুখের দিকে তাকায়। বাচ্চাগুলো হাসছে,মুভি নিয়ে গসিপ করছে, শুধু চুপ করে আছে নাবিল। সে মাথা নিচু করে লজ্জা লজ্জা মুখ করে বসে আছে। উর্বী মনে মনে হাসে। সিনেপ্লেক্সের বাইরে যখন ফাবিয়া এসে নাবিলকে জিজ্ঞেস করে,”কেমন আছিস নাবিল।”

তখন থেকেই কেমন থম মে’রে আছে। মনে হচ্ছে লজ্জায় শ্বাস আটকে রেখেছে, ও নিঃশ্বাস নিলেই ফাবিয়া টের পেয়ে যাবে ওর মনের কথা। এতো ভীতু ছেলে!

উর্বী বাচ্চাগুলোকে খুব উপভোগ করছে। ধীরে ধীরে সবকিছু কেমন তার জীবনে সুগন্ধি ছড়িয়ে দিচ্ছে।

খাবার এসে যায়। খাওয়া দাওয়া শেষ করে সবাইকে বিদায় জানিয়ে উর্বী রাওনাফ করীমের তিন ছানা নিয়ে গাড়িতে ওঠে।

গাড়িতে মৃদু আওয়াজে “যাস্ট হাউ ফাস্ট দ্য নাইট চেইঞ্জেস” গানটা বাজছে। বাইরে হঠাৎ গুড়িগুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়ে ধীরে ধীরে মুশলধারে বৃষ্টি পরতে শুরু করে।

শর্মী শায়মী চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে দেয়। উর্বী চ’ম’কে উঠে বুকে হাত চেপে বলে,”কি হয়েছে! চেচাচ্ছো কেন?”

_ভিজবো আন্টি। আংকেল গাড়ি থামাও।

আব্দুল গাড়ি থামিয়ে দেয়। উর্বী বিরক্ত হয়ে বলে,”ক্ষেপেছো? তোমাদের পাপা জানতে পারলে বকুনি খাবে।”

_কিভাবে জানবে পাপা?

উর্বী বলে,”আমি বলে দেবো।”

শর্মী শায়মী হেসে বলে,”কিন্তু পাপাকে তো আমরা বলবো তুমি আমাদের জোর করে ভিজিয়েছো।”

উর্বী বোকার মতো তাকিয়ে আছে মেয়ে দু’টোর দিকে। শর্মী শায়মী টেনে উর্বীকে গাড়ি থেকে নামায়।

মুহুর্তেই ভিজে যায় উর্বী। বৃষ্টির ফোঁটা গুলো তার গায়ে আছড়ে পরতেই উর্বী টের পেলো তার ভীষণ ভালো লাগছে। মেয়েগুলোর সাথে সাথে নিজেকেও সে একটা সপ্তদশী কিশোরী ভেবে ফেলে।

শায়মী ভিজতে ভিজতে গাড়ির জানালা দিয়ে উকি দিয়ে নাবিলকে ডাকে,”এই নাবিল, বৃষ্টিতে ভিজবি?”

_না। তোদের খেয়েদেয়ে কাজ নেই তাই ভিজতে থাক!
কঠিন গলায় বলে নাবিল।

শায়মী ফিরে যায় উর্বীর কাছে। প্রাইভেট কারের চালক,বাইক আরোহীরা রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে তাদের তিনজনকে দেখছে। রাস্তার পাশে গাড়ি থামিয়ে একজন ভদ্রমহিলা শাড়ি পরে তার সাথে দুজন ফ্রক পরে থাকা কিশোরী নিয়ে ভিজছে, খিলখিলিয়ে হাসছে। ব্যস্ত রাস্তায় সবার চোখে কৌতুহল। এদের এতো আনন্দ কেন! এরা কি অনেক সুখী?

কিছুক্ষণ পরে নাবিল গাড়ি থেকে নেমে তাদের দিকে এগিয়ে যায়। সেও পুরোপুরি ভিজে যায়। শায়মী হেসে বলে,”থাকতে পারলি না তো!”

নাবিল কপাল কুঁ’চ’কে বলে,”আমি তো তোদের ডাকতে এসেছি। লোকজন তোদের পাগল ভাবছে। চল।”

উর্বী হেসে কিছু বলতে যাবে তখনই গাড়িতে তার ফোন বেজে ওঠে। সে গাড়ির দিকে এগিয়ে যায়। হাত মুছে ফোনটা রিসিভ করে। রাওনাফের গলা,”বাড়িতে ফিরেছো তোমরা?”

_না। আমরা রাস্তায়! আপনি কোথায়?

_আমি তো এইমাত্র চেম্বার থেকে হসপিটালে ফিরলাম। রাস্তায় কি করছো তোমরা? ওরা কোথায়?

_ওরা ভিজছে।

রাওনাফ অবাক হয়ে বলে,”ভিজছে মানে! কি আশ্চর্য। এই বৃষ্টিতে ভিজছে! তুমি বারণ করোনি কেনো!”

উর্বী হাসে আর বলে,”কারন আমিও ভিজছি।”

রাওনাফ একটা গভীর নিঃশ্বাস ফেলে বলে,”জ্বর বাধালে প্রত্যেককে শাস্তি পেতে হবে।”

_মঞ্জুর। এখন রাখুন তো! চাইলে আপনিও এসে পরুন। সবাই মিলে জ্বর বাধাই।

খিলখিলিয়ে হাসছে উর্বী। রাওনাফ হেসে ফোন কেটে দেয়। উর্বী নাবিলদের কাছে এগিয়ে গিয়ে বলে,”মালাই চা খাবে তোমরা?”

শর্মী শায়মী সাথে সাথে মাথা নাড়ায়। উর্বী নাবিলের দিকে তাকায়, নাবিল বলে,”না। আপনারা খান। আমি এখানে দাড়িয়ে আছি।”

“ওকে।”

উর্বী ওদের দুবোনকে নিয়ে খুব কাছেই একটি টং-এর দোকানে চলে যায়। নাবিল কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে ধীরে ধীরে সেও এগিয়ে যায় সেদিকে। তারও খুব খেতে ইচ্ছে করছে মালাই চা।

****
রাওনাফ খেয়াল করছে হসপিটালের প্রায় সবাই তার দিকে তাকিয়ে আছে। সে তাকাতেই সবাই মাথা নিচু করে ফেলছে। তার খুব অস্বস্তি হচ্ছে। এদের সমস্যা টা কি আসলে?

আজ সারাদিন চেম্বারে রোগী দেখেছে রাওনাফ। এখন হসপিটালে তার পেশেন্ট গুলোকে দেখে বাড়ি চলে যাবে বলে ঠিক করে রাওনাফ। আজ তার কোনো ও.টি. নেই।

একটু পর একজন নার্স রাওনাফের কেবিনে আসে।
“স্যার আমায় ডেকেছিলেন?”
নিচু গলায় বলে হেড নার্স।

_বুঝলাম না। আজ তোমাদের সবাইকে অস্বাভাবিক লাগছে। কোনো সমস্যা হয়েছে? সেদিন যে দুর্ঘটনা হয়েছে তার জন্য রোগীর ফ্যামিলি মেম্বার রা ঝামেলা করেছে আবারও?

নার্স মুক্তার চোখে মুখে অস্বস্তি।
রাওনাফ বলে,”কি হলো। বলো! ”

_স্যার আপনি ম্যানেজমেন্ট রুমে যাননি?

ইতস্তত করে বলে নার্সটি।

_না তো! আমি তো সরাসরি কেবিনে এলাম। কি হয়েছে?

স্যার সেটা আপনি গেলেই বুঝতে পারবেন। কথাটি বলে নার্সটি চলে যায়। বড় স্যারকে আর কিছু খুলে বলার ক্ষ’মতা তার নেই।

রাওনাফ ম্যানেজমেন্ট রুমে ঢোকে। বাকি ডাক্তাররা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছিলো। তাকে দেখে সবাই চুপ হয়ে যায়। রাওনাফ লামিয়ার দিকে তাকায়। লামিয়া মাথা নিচু করে আছে।

একে একে সবাই তাকে সালাম দিয়ে চলে যায়।

লামিয়া বসে থাকে। রাওনাফ এসে দাঁড়ায়।

“কিছু হয়েছে লামিয়া? ইজ এভরিথিং ফাইন? সবাই এমন করছে কেন!”

লামিয়া একটি কাগজ রাওনাফের দিকে এগিয়ে দেয়। তার হাত কাঁপছে। চোখ মুখ শুকনো।

রাওনাফ কাগজটি হাতে নিয়ে পড়তে শুরু করে। রাওনাফের নাম উল্লেখ করে ম্যানেজমেন্টের কাছে যৌ’ন হয়রানির অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগ করেছে রুপা।
অভিযোগের বিষয় একটি বিষয়কে কেন্দ্র করে রাওনাফ রুপাকে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেয় এবং পরে তার সাথে রাত কাটানোর প্রস্তাব দেয় এবং বলে তার কথা শুনলে তাকে তার চাকরিতে বহাল রাখা হবে। এবং মলেস্ট করার চেষ্টাও করা হয়।”

রাওনাফ কাগজটি সম্পুর্ণ পড়তে পারে না। সে ধপ করে চেয়ারে বসে পরে।
লামিয়া বলে,”রাওনাফ..!!”

রাওনাফ চেঁচিয়ে ওঠে,”আমি ইনোসেন্ট লামিয়া। আমি সত্যিই ইনোসেন্ট। ট্রাস্ট মি।”

লামিয়া বলে,”আই নো রাওনাফ। আই নো ইউ। তুমি চিন্তা করো না। এটা একটা সাধারণ অভিযোগ। কমিটি তদন্ত করতে আসবে। কোনো প্রমান পাবে না। তুমি ইনোসেন্ট রাওনাফ সেটা সবাই জানে। যাস্ট রিল্যাক্স।”

রাওনাফ কাগজটি কুটি কুটি করে ছিড়তে থাকে, চেঁ’চি’য়ে বলতে থাকে,”আমার ষোলো বছরের ডাক্তারি ক্যারিয়ারে তিল তিল করে গড়ে তোলা সম্মান,সব শেষ লামিয়া। সব শেষ।”

লামিয়া রাওনাফকে বলে,”কিচ্ছু শেষ না রাওনাফ। তুমি এক কাজ করো। বাড়ি চলে যাও। বাড়িতে গিয়ে আরাম করো। বাকিটা আমরা ম্যানেজমেন্টের লোক বুঝে নেবো। উর্বীকে গিয়ে বলো সব টা। ওর সাথে শেয়ার করো।”

রাওনাফ হতবাক হয়ে বলে,”কি বলছো তুমি লামিয়া? এসব আমি ওকে কিভাবে বলবো? কিভাবে ফেইস করবো ওকে আমি? ইউ নো হার। দুর্বলচিত্তের মহিলা। ক্ষণে ক্ষণে অসুস্থ হয়ে পরে! উর্বী এসব শুনলে শেষ হয়ে যাবে। সি ইজ ঠু মাচ সেন্সিটিভ। তুমি বলছো ওকে সব বলি? আর আমার বাচ্চারা! ওরা যদি এসব শোনে? ওরা বড় হয়েছে লামিয়া।”
গলা কাঁপছে রাওনাফের।

“না রাওনাফ। উর্বী খুবই বুঝদার একটি মেয়ে । সমস্যা তখন হবে যখন সে এসব কথা অন্য মানুষের থেকে শুনবে। তার চেয়ে ভালো তুমি নিজেই ওকে সবটা জানাও। আমি চাই তোমরা দুজনেই শান্ত থাকো। আমরা বিষয়টা দেখছি।”

রাওনাফ ভীত কন্ঠে বলে,”সব শেষ লামিয়া। কথাটা একবার উঠেছে তার মানে সবার মনেই সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। আমাকে সবাই ঐ চোখে দেখছে। সবাই সত্যতা প্রমাণিত হবার অপেক্ষায় নেই লামিয়া। আমাকে হয়তো ইতিমধ্যেই কেউ কেউ চরিত্রহীন ভেবে বসে আছে। কারন আমি পুরুষ। খুব সহজেই আঙ্গুল তোলা যায়।
রুপা মেয়েটা এমন কেনো করলো লামিয়া?”

লামিয়া শুকনো গলায় জবাব দেয়,”জানি না। তুমি প্লিজ শান্ত হও। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি আমরা। যেখানে তুমি কিছু করোইনি সেখানে….তুমি প্লিজ বাড়ি যাও। প্লিজ রাওনাফ।”

রাওনাফ বসেই থাকে। উর্বী অনবরত রাওনাফের ফোনে ফোন দেয়। রাওনাফ ফোনটা রিসিভ করে না। খুব বিধ্বস্ত লাগছে তার নিজেকে। দুর্বল লাগছে খুব। এতোটা দুর্বল কখনোই লাগেনি নিজেকে।

চলমান…….

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে