#আমি_তোমারি_সনে_বেঁধেছি_আমারো_পরাণ💙(২)
#Maisha_Jannat_Nura(লেখিকা)
(২)
নিজ রুমে পায়চারি করছিলো রিজওয়ান। কিয়ৎক্ষণ পর হাতের ডানপার্শে দেওয়ালের সাথে ঠেকানো ড্রেসিং টেবিলের দিকে চোখ যায় রিজওয়ানের। আয়নায় পড়া নিজের প্রতিচ্ছবির উপর দৃষ্টি স্থির করতেই ওর প্রতিচ্ছবি যেনো ওকেই চিৎকার করে বলছে….
—“তুই একটা কাপুরুষ। যদি আসলেই পুরুষ হইতি তাহলে নিজের সৎ মা-বোন, দু’ভাই-ভাবীদের কাছে নিজের ভালোবাসার মানুষ, নিজের সবথেকে প্রিয় ছায়া ও জীবনসঙ্গিনীকে অকারণে ছোট হতে দিতি না। নিজের সম্মান ও নিজের নির্দোষ স্ত্রীর সম্মান রক্ষা করার ক্ষমতা যে রাখে না সে পুরুষ নামে ক*ল*ঙ্ক। কাপুরুষ তুই… কাপুরুষ… কাপুরুষ…. কাপুরুষ…।”
রিজওয়ান আর সহ্য করতে না পেরে দু’হাতে নিজের মাথার দু’পাশ চেপে ধরে ধ*প করে বিছানায় বসে পরে। কিয়ৎক্ষণ পর রিজওয়ান ওর মাথা থেকে হাত সরিয়ে বিছানার দু’পাশের চাদর দু’হাতে মুষ্ঠিবদ্ধ করে ধরে দৃষ্টি মেঝের উপর স্থির করে বললো….
—“নিজের চোখের সামনে কিংবা আড়ালে আর কোনো অ*ন্যা*য় আমি হতে দিবো না। অনেক হয়েছে। বাবার কথা চিন্তা করে পরিবারের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য দিনের পর দিন ধরে ওদের সবার করা অ*ন্যা*য়, অ*বি*চার, অ*প*মান মূলক করা মুখ বুঝে সহ্য করেছিলাম। অ*ন্যা*য় যে করে আর অ*ন্যা*য় যে সহে দু’জনেই তো সমান ভাবে অ*প*রাধী হয়। তাই এবার প্র*তি*বাদ করার উপযুক্ত সময় এসে গিয়েছে।”
এই বলে রিজওয়ান বিছানা থেকে নেমে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়।
(৩)
রান্নাঘরের নলকূপের পাশে আলগা হয়ে বসে সেখানে জমে রাখা সব এঁ*টো প্লেট-বাটি, কালির পাতিল ও কড়াই পরিষ্কার করছিলো মেহরিন। সেইসময় মেহরিনের বড় জা শেফালি রান্নাঘরে প্রবেশ করে রাগী স্বরে বললো…
—“তোমাকে কি প্রতিদিন আমায় নিয়ম করে বলে দিতে হবে যে আমার ছেলেকে স্কুলে যাওয়ার আগে দুধ গরম করে হরলিক্স বানিয়ে ওর রুমে দিয়ে আসতে হবে! বলি আমার ছেলের জন্য কেনা দুধ আর হরলিক্সের টাকা তোমার স্বামী দেয় নাকি যে বারবার ভুলে যাওয়ার না*ট*ক করো!”
সেইসময় শেফালির পিছন থেকে ঊর্মিলা রান্নাঘরে প্রবেশ করে ক*টা*ক্ষে*র স্বরে বললো….
—“আরে বড় ভাবী…তুমি কি ভুলে গিয়েছো যে ওর স্বামী একজন বেকার। আমাদের স্বামীদের ক*ষ্ট করে উপার্জন করা টাকায় ওরা বসে বসে খেয়ে সংসারের অন্ন ধ্বং*স করে।”
ওদের দু’জনের এরূপ কথাগুলো শুনে মেহরিনের দু’চোখ আবারও নোনাজলে ভিজে আসে। একবার ঢোক গি*লে শাড়ির আঁচল দিয়ে ওদের আড়ালেই চোখের জলটুকু মুছে নিয়ে হাত ধুয়ে মেহরিন উঠে দাঁড়ায়। সেইসময় রিজওয়ান রান্নাঘরের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে রাগী স্বরে বললো….
—“তোমার ছেলের প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার আগে দুধ দিয়া হরলিক্স খাওয়ার অভ্যাস যখন তখন তুমি নিজ হাত বানিয়ে ওকে খাওয়াতে পারো না নাকি বড় ভাবী! আমার স্ত্রীকে কেনো তোমাদের সবার ফাই-ফরমাশ খাঁটতে হবে শুনি? আর আমি বেকার এটা যেমন সত্য তেমনি তোমাদের দু’জনের কাপুরুষ স্বামীদের রোজগার করা টাকায় আমি বা আমার স্ত্রীর খাওয়া-পড়া চলে না এটাও সত্য। আমার বাবা এখনও সুস্থ ও জিবীত আছেন। প্রবাসে তিনি এখনও নিজের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে হাজার হাজার টাকা রোজগার করছেন। তার রোজগার করা টাকার ৮০ ভাগ তো তিনি বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। আর তার পাঠানো ঐ টাকাগুলো দিয়েই যে পুরো সংসারের যাবতীয় খরচ চলে সেটাও আমি খুব ভালো করেই জানি। আজ বাবার আয় করার ক্ষমতা না থাকলে তোমাদের স্বামীরা যে কয়টা টাকা রোজগার করে তা দিয়ে তো শুধু তোমাদের নিজেদের তিনবেলার খাবারের জোগান দিতেই হিমশিম খেতে। আমাদের ভরণপোষণ সামলানোর হিসাব তো দূরের বিষয় হয়ে দাঁড়াতো।”
মেহরিন আর রিজওয়ানের বিয়ের এখনও ৪মাস পূর্ণ হয় নি। বিয়ের পর এই প্রথম নিজের স্বামীকে অ*ন্যা*য়ে*র প্রতি*বাদ করতে দেখে মেহরিনের চেহারায় অবাক ভাব স্পষ্ট ফুটে আছে। রিজওয়ানের এমন প্রতি*বাদ মূলক কথাগুলো শুনে শেফালি আর উর্মিলা যেনো কোনো কথা বলার ভাষাই খুঁজে পাচ্ছে না। ওদের দু’জনের চেহারার ধরণ পানসেঁটে বর্ণ ধারণ করেছে। কিয়ৎক্ষণ পর রিজওয়ান আবারও বললো….
—“আজ এই মূহূর্ত থেকে আমার স্ত্রী এই বাড়ির বাড়তি কোনো সদস্যের জন্য কোনো কাজ করবে না। যদি নিজেদের কাজ নিজেরা করতে না পারেন আপনারা তাহলে কোনো কাজের লোকের সন্ধান করে নিয়েন। আর হ্যা মিনিমাম লজ্জা বা সম্মান বোধ থাকলে তাদের বেতনটা নিজেদের স্বামীদের পকেট থেকে দিয়েন। মেহরিন এক্ষুণি আমার সাথে রুমে চলো তুমি।”
মেহরিন স্বামীর বলা একবাক্যে দ্রুতপায়ে এগিয়ে আসে। অতঃপর রিজওয়ান মেহরিনের হাত ধরে ওকে নিয়ে রান্নাঘর থেকে বেড়িয়ে উপরে নিজেদের রুমের উদ্দেশ্যে হাঁটা ধরে। শেফালি আর ঊর্মিলা এখনও আগের স্থানেই ঠায় দাঁড়িয়ে ওদের যাওয়ার পানে তাকিয়ে রয়।
.
.
.
.
মেহরিনের শ্বশুড় মশাই শরীফ সাহেব একজন প্রবাসী। দীর্ঘ ২৫ বছর হলো মালেশিয়াতে একটা কোম্পানির আন্ডারে চাকরি করছেন তিনি৷ মেহরিন ওর দাদী শ্বাশুড়ির থেকে শুনেছিলো এই লম্বা সময়ের মাঝে ৩-৪বার ১-২মাসের ছুটি নিয়ে দেশে এসেছিলেন তিনি। বড় ছেলে রাজিবুল ও মেজো ছেলে রফিকুল ঊর্মিলা আর শেফালির সাথে প্রেমের সম্পর্কে আবব্ধ হয়ে শরীফ সাহেবের দেশে অনুপস্থিত থাকাকালীন সময়েই বিবাহ বন্ধনে আবব্ধ হয়েছিলেন। শরীফের মনে এ নিয়ে খারাপ লাগার শেষ ছিলো না।
রিজওয়ানের যখন ৯ বছর বয়স তখন ওর জন্মদাত্রী মা রূপালী বেগম ক্য*ন্সা*রে আ*ক্রা*ন্ত হয়ে মা*রা গিয়েছিলেন। শরীফ রিজওয়ানের ও সাংসারিক খরচ সামলানোর কথা চিন্তা করে ১৩ ও ১৫ বছর বয়সী দুই ছেলে রাজিবুল ও রফিকুলকে মেনে নিয়ে ডিভোর্সী রাহেলা বেগমকে ২য় বার বিয়ে করে নিজ বাড়িতে এনেছিলেন। আর রিজওয়ানের দায়ভার রাহেলার হাতে তুলে দিয়ে ২মাস এর মধ্যেই তিনি আবারও মালেশিয়া চলে গিয়েছিলেন। রাহেলা তখন আবারও গর্ভবতী হয়েছিলেন। আর ১০মাস পর তার কোলজুড়ে কন্যাসন্তান রুমি আসে। মেহরিনের বাবা-মা মা*রা গিয়েছিলেন ওর বয়স যখন ৭ তখন একটা রোড এ*ক্সি*ডে*ন্টে। তখন থেকে মেহরিন ওর বড় মামা আজহারুল উদ্দিনের বাড়িতে থেকে-পড়েই বড় হয়েছে। আজহারুলের স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের অল্প বয়স থেকে পেটে অতিরিক্ত চর্বি জমে যাওয়ায় কোনোভাবেই বাচ্চা কন্সিভ হতো না।
বিয়ের পর ১০ বছর ওভাবেই ক*ষ্ট ও আ*ফ*সোসের সাথে পার করেছিলেন আজহারুল দম্পতি। এর মাঝেই তাদের সংসারে সন্তানের শূন্যতা কাটিয়ে পূর্ণতার আলো ফুটিয়ে দিয়েছিলো মেহরিন। আজহারুলের ছোট্ট একটা পান ও চায়ের দোকান ছিলো। এই দোকান থেকে আয়কৃত সামান্য অর্থ দিয়েই দিন এনে দিন খেয়ে তাদের তিনজনের সংসার দিব্বি চলতো। মেহরিন ওর গরীব মামা-মামীর বড্ড আদরের ছিলো সবসময়। মেহরিন ছোট থেকেই পড়াশোনার দিক থেকে অনেক ভালো ও মেধাবী ছিলো। তাই আজহারুল নিজের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে হলেও মেহরিনের পড়ার খরচ চালিয়ে ওকে একের পর এক পড়াশোনার উচ্চধাপে উঠিয়ে দিতে পিছপা হন নি। শরীফ ৬মাস আগে ছুটিতে দেশে এসেছিলেন। বয়স তখন তার ৫৫ ছুঁই ছুঁই। আবারও বিদেশের মাটিতে পা রাখার পূর্বে তার গভীর ভাবে ইচ্ছে হয়েছিলো নিজে তার ছোট ছেলের জন্য বউ পছন্দ করবেন আর নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ছোট ছেলেকে তার পছন্দের মেয়ের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবব্ধ করে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসবেন।
এরপর শরীফ ঘটককে বলেছিলেন একজন ভালো মেয়ের সন্ধান করতে। মেহরিনের বয়স যখন ১৯ ছুঁই ছুঁই তখন সবেমাত্র উচ্চমাধ্যমিকের গন্ডি পেরিয়ে পড়াশোনার আরো উচ্চধাপে উঠার জন্য বড় কলেজে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন দেখছিলো সে। তখন ওর মামা-মামীর কাছে একজন ঘটক রিজওয়ানের সাথে ওর বিয়ের সম্বন্ধ নিয়ে এসেছিলেন। রিজওয়ানের বয়স তখন মাত্র ২৪ বছর, বেকার সে। খোঁজ-খবর নেওয়ার পর মেহরিনের মামা-মামী জানতে পারেন রিজওয়ানের পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতা যথেষ্ট উচ্চমানের। তাই মেহরিনকে যদি রিজওয়ানের পরিবার পছন্দ করেন তাহলে তারা এই সম্বন্ধে আর বাঁধা প্রদান করবেন না। মামা-মামীর খুশি ও তাদের শারিরীক অবস্থার কথা চিন্তা করে মেহরিনও দ্বিমত পেষণ করে নি, শুধু বলেছিলো ছেলেপক্ষের যদি তাকে পছন্দ হয়ে যায় তাহলে মেহরিন যে অনেকদূর পর্যন্ত পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায় এই ইচ্ছের কথা যেনো ওর মামা-মামী ছেলেকে ও ছেলেপক্ষের অভিভাবককে জানিয়ে দেয়। ঘটকের থেকে খবর পেয়ে শরীফ তার মা আমেনাকে নিয়ে মেহরিনকে দেখার জন্য ওদের বাড়িতে এসেছিলেন। প্রথম দেখেই মেহরিনকে তাদের পছন্দ হয়ে গিয়েছিলো। আজহারুল মেহরিনের পড়াশোনা করার ইচ্ছের কথা শরীফকে বলেছিলেন আর তিনি হাসিমুখে তা মেনে নিয়েছিলেন।
এরপর শরীফ বাসায় ফিরে ছোট ছেলে রিজওয়ান ও পরিবারের বাকি সদস্যদের নিয়ে মেহরিনকে আবারও দেখতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। স্বামীর সামনে সরল-সোজা রূপ নিয়ে থাকার কারণে রাহেলা এ বিষয়ে কারোর সামনে দ্বিমত পেষ করতে পারেন নি। তাই বাধ্য হয়ে শরীফের সাথে মেহরিনকে দেখার জন্য ওর বাড়িতে এসেছিলেন রাহেলা ও তার ২ছেলে-বউমা ও ১ মেয়ে মিলে। মেহরিনের পরিবার ও তাদের আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে সবকিছু জানার পর রাহেলা সহ বাকিরা ভিতর থেকে যেনো তেলে-বেগুনে জ্ব*লে পু*ড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছিলেন। তবুও কেও মুখ ফুটে এই সম্বন্ধ নিয়ে একটা টু শব্দও পেষ করতে পারেন নি।
মেয়ের পরিবারের থেকে দামী দামী আসবাবপত্র, মোটা অংকের টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নেওয়ার বিষয় নিয়ে শরীফ সাহেবের ঘোর অমত ছিলো। বরং মেহরিনকে নিজের কেনা স্বর্ণালঙ্কার দিয়ে সাজিয়ে রিজওয়ানের সাথে বিয়ে দিয়ে নিজের বাড়িতে আনার ইচ্ছেটা খুব দ্রুতই পূরণ করেছিলেন শরীফ। বিয়ের ৩দিন পর মেহরিনকে ওর শ্বশুড় বাড়ি থেকে কাছাকাছি হয় এমন একটা ভালো কলেজে অনার্সে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন শরীফ। সবকিছু বেশ ভালোই চলছিলো। মেহরিন আর রিজওয়ানের বিয়ের ১০দিনের মাথায় শরীফ আবারও মালেশিয়াতে চলে যান। তখন থেকে মেহরিন তার শ্বশুড় বাড়ির প্রতিটি মানুষের আসল রূপ গুলো সম্পর্কে একটু একটু করে অবগত হতে শুরু করেছিলো। শ্বশুড় মশাইয়ের দেওয়া বিয়ের সকল গয়নার মালিকানা লাভ করে মেহরিনের বড় দুই জা ও ননদ রুমি। স্বামীর কম বয়স ও বেকারত্ব এবং নিজের পরিবার গরীব হওয়া মেহরিনের জন্য যেনো কাল হয়ে দাঁড়াতে শুরু করলো। রাহেলা মেহরিনকে উঠতে বসতে ক*টা*ক্ষ করে কথা শুনাতে শুরু করেছিলেন। যার ফলে মেহরিনকে বাধ্য হতে হয়েছিলো পড়াশোনা ছাড়তে। আর শ্বশুড় মশাইকে এ নিয়ে মি*থ্যেও বলতে হয়েছিলো। যে মেহরিনের নিজেরই এখন আর ইচ্ছে করে না পড়াশোনা করার। শরীফ অনেকবার বুঝানোর চেষ্টাও করেছিলেন কিন্তু মেহরিন চেয়েও কিছু করতে পারে নি।
আজহারুল উদ্দিন ও মনোয়ারা বেগম এর জীবনের বেঁচে থাকার একমাত্র সম্বল ছিলো মেহরিন। মেহরিনকে বিয়ে দেওয়ার পর ওনারা দু’জনেই ওকে ভিষণ ভাবে মিস করছিলেন। আজহারুল দিন এনে দিন খাওয়া মানুষ ছিলেন। চাইলেই মেহরিনের শ্বশুড় বাড়িতে যাওয়ার মতো সামর্থ্য তার ছিলো না। অনেক ক*ষ্ট করে ২মাস সময় নিয়ে কিছু টাকা জমাতে সক্ষম হয়েছিলেন আজহারুল। সেই টাকা দিয়ে আজহারুল মেহরিনের শ্বশুড় বাড়ির সকল সদস্যদের জন্য তাঁতে বুণনকৃত শাড়ি, জামা, পান্ঞ্জাবি আর এক হাড়ি রসগোল্লা কিনে স্ত্রী মনোয়ারাকে সাথে নিয়ে মেহরিনের শ্বশুড় বাড়িতে এসেছিলেন। সেখানে আসার পর মেহরিনের সামনেই ওর শ্বাশুড়ি, ভাসুররা , জায়েরা ও ননদ মিলে তাদের খুব বা*জে ভাবে অ*প*মান করেছিলেন। মেহরিন সেদিন ওর স্বামী রিজওয়ানের মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলো এই আশা নিয়ে হয়তো সে কিছু বলবে। কিন্তু রিজওয়ান নিঃশব্দে স্থান ত্যগ করেছিলো। রাহেলা মেহরিনের মামা-মামীর আনা সব কাপড় গুলো উঠোনের উপর ফেলে পা দিয়ে পা*ড়ি*য়ে ন*ষ্ট করেছিলেন। তার এমন কাজে আজহারুল ও তার স্ত্রীর দু’চোখ অ*প*মানে, লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছিলো। মেহরিন আর সহ্য করতে না পেরে সবার সামনেই ওর মামা-মামীকে নিজের কসম দিয়ে বলেছিলেন তারা যেনো আর কখনও এ বাড়ির ছায়াও না মা*রে*ন। ভেবে নেন যেনো তাদের মেহরিন মা*রা গিয়েছে। শত ক*ষ্ট বুকের উপর পাথর চা*পা দিয়ে মেহরিনের মামা-মামী চলে গিয়েছিলেন সেখান থেকে। এরপর মেহরিন আর কখনও তার মামা-মামীর সাথে দেখা করতে বা যোগাযোগ করতে পারে নি। সবকিছু মুখ বুঝে সহ্য করতে করতে মেহরিন আর রাফসানের দাম্পত্য জীবনের পায় ৪মাস হতে চলেছিলো।
আর আজ হুট করেই রিজওয়ানের এমন পরিবর্তন মেহরিনকে বাকরুদ্ধ করে দিয়েছে যেনো।
#চলবে ইনশাআল্লাহ……..