আমিরাহ্
৪,
সালমা এখন ওর বাচ্চা নিয়ে বড়ো রুমেই থাকে। তবে সালমার মেয়ে সাফাকে সালমার চেয়ে আমিরাহ্ ই বেশি যত্ন করে। বাচ্চাটাও এই এক বছরে বেশ নাদুস-নুদুস হয়ে উঠেছে। সবাই একসাথে সকালের নাস্তা খেতে বসেছে। বড়ো রুমের কার্পেটেই সবাই গোল হয়ে বসেছে। আমিরাহ্ সাফাকে কোলে নিয়েই খাচ্ছে। এক মূহুর্তের জন্যও বোনকে কোলছাড়া করতে তার ইচ্ছা করে না।
আরবরা সব বেলাতেই সবাই মিলে একসাথে খায়। বড়ো থালায় খাবার সাজিয়ে চারপাশে সবাই গোল হয়ে বসে। সকালের নাস্তায় থাকে খুবস ( আরবীয় রুটি), সাথে কয়েক ধরণের মাখন, পনির, জয়তুন ( অলিভ)।
দুপুরে বেশিরভাগই খাসী/দুম্বা/ উটের মাংস দিয়ে খাবসা রান্না করা হয়।( বড়ো মাংসের টুকরা শুধুমাত্র টমেটো পিউরি আর লবন দিয়ে অনেক পানি দিয়ে সিদ্ধ করতে বসিয়ে দেওয়া হয়। মাংস সিদ্ধ হয়ে এলে তাতে চাল দেওয়া হয়। চাল আর পানির অনুপাত এমন হয় যে চাল সিদ্ধ হতে হতে পানি শুকিয়ে একদম ঝরঝরে হয়ে যায়।
রাতের মেন্যুতে থাকে মাংসের ছোটো ছোটো টুকরো দিয়ে রান্না করা পাঁচমিশালি সবজি আর খুবস।
এছাড়াও প্রতি বেলার খাবারের সাথেই অনেক ফল থাকে। মূল খাবার অল্প করে খেয়ে সবাই ফলই বেশি খায়। একারণে মূল খাবার অনেক নষ্ট হয়। একবেলার খাবার তারা অন্য বেলায় খায় না। যা খাবার বাড়তি থাকে সব ফেলে দেয়।
আমিরাহ্ এত খাবার নষ্ট করা পছন্দ করে না। ওর খুব খারাপ লাগে। টিভিতে দেখেছে অনেক দেশের অনেক মানুষ না খেয়ে থাকে। অথচ ওরা এত এত খাবার রোজ নষ্ট করে। কিন্তু সে কিছু বললেই বা কে শুনবে? এভাবেই তো চলে এসেছে বছরের পর বছর।
আমিরাহ্ এসব ভাবতে ভাবতে একটু অন্যমনষ্ক হয়ে পড়েছিল। সালমা কনুই দিয়ে একটু গুঁতো দিল। সাফা আমিরাহ্ র কোলেই ঘুমিয়ে পড়েছে।
–আমিরাহ্, সাফা তো ঘুমিয়ে পড়েছে। দুই ঘন্টার আগে আর উঠবে না। আর উঠলেও অন্যরা দেখতে পারবে। চল তুমি আর আমি বাজার থেকে ঘুরে আসি।
– কী বল? গত সপ্তাহেই না বাজারে গেলে ? কী কিনবে আবার?
– কিছু কিনব না। এমনিতেই ঘুরে আসব। বাসায় থাকতে থাকতে দমবন্ধ লাগে। চল না, আহমাদের সাথেও তোমার দেখা হয়ে যেতে পারে।
আহমাদের নাম শুনেই আমিরাহ্ এর গালে লালচে আভা খেলে গেল।
– কী যা তা বলছ ছোটো উম্মী?
– আচ্ছা, আমি যা তা বলছি? আমি বুঝি লক্ষ্য করিনি যে বাজারে গেলেই তুমি আহমাদদের স্বর্ণের দোকানে যেতে চাও। এর আগে তো সোনার গয়নার প্রতি তোমার এত ভালোবাসা দেখিনি। এখন ভালোবাসাটা কী সোনার গয়নায় নাকী গয়নার দোকানের মালিকের প্রতি সে তুমি ভালো জানো। তাছাড়া আহমাদকেও দেখেছি তোমার দিকে কেমন চোড়া চোখে তাকায়। শুধু তোমার চোখ দেখেই সে এত মুগ্ধ। ভাবছি যদি নিকাব ছাড়া দেখত তাহলে কী করত।
– সে আমাকে নিকাব ছাড়া একদিন দেখেছে উম্মী।
– কী বলছ? কবে? কিভাবে?
– যেদিন সাফার জন্ম হলো ওদের পরিবার আমাদের বাসায় এসেছিল মনে আছে? সেইদিন।
এরপর আমিরাহ্ সালমার কাছে সেদিনের সন্ধ্যার ঘটনাটা বলল। এতদিন পেটে চেপে রাখতে তার নিজেরও অস্থির লাগছিল। আজে সালমাকে বলতে পেরে ভালো লাগছে।
– তাই তো বলি। শুধু চোখ দেখে প্রেম আজকাল হয় নাকী। তাহলে আর তো কথাই নাই। আহমাদের মতো ধনী এবং সুপুরুষ ছেলে তোমাকে ভালোবাসে। এই খুশিতেই তো আজ বাজারে ঘুরতে যেতে হবে।
– আস্তে বলো উম্মী। কেউ শুনতে পারলে আমাকে মেরে ফেলবে। আর তুমি কিভাবে জানো সে আমাকে ভালোবাসে? সে তো বলেনি কখনও।
– আমি তোমার চেয়ে একটু হলেও বয়সে বড়ো, অভিজ্ঞতা একটু হলেও বেশি। সবচেয়ে বড়ো কথা কাছ থেকে পুরুষ চেনার অভিজ্ঞতা আমার আছে। তাদের চোখের ভাষা আমি ঠিক বুঝতে পারি। আহমাদ তোমাকে অবশ্যই পছন্দ করে। তোমাকে নিয়ে ওদের স্বর্ণের দোকানে গেলে আলাদা আপ্যায়ন করে, নানা ছুতোয় তোমার কাছাকাছি থাকতে চেষ্টা করে। তাছাড়া তোমাকে নিয়ে ওদের দোকানে গেলেই তাজা আমের শরবত খেতে দেয়। ঐরকম স্বাদ আর কোথাও পাই না। চলো এই সুযোগে শরবতটাও খাওয়া যাবে। যা গরম পড়েছে আজ!
– তুমি একটু বেশিই বুঝে ফেলেছ। আসলে ওসব কিছুই না।
– তাই নাকী? তুমি কি কিছুই বোঝ না? নাকী বুঝেও না বোঝার ভান করছ?
আমিরাহ্ সবই বোঝে। এসব বোঝার সহজাত ক্ষমতা নিয়েই মেয়েরা জন্মায়। কে তাকে ভালোবাসে, কে ঘৃণা করে, কার মাঝে থাকে শুধুই কামনা– এসব বোঝার জন্য মেয়েদের আলাদা ডিগ্রি নিতে হয় না। কিন্তু আমিরাহ্ ভাবে তারা দুজন-দুজনকে পছন্দ করলেও কী তাদের সম্পর্কটা পরিণতি পাবে?
চলবে…
#আমিরাহ্
৫,
শহরের সবচেয়ে বড়ো স্বর্ণের দোকানটা আহমাদের বাবার। এটাকে অবশ্য দোকান না বলে শো-রুম বললে বেশি ভালো মানায়। স্বর্ণ, রৌপ্য, হীরা-জহরত নির্মিত এমন কোনো বস্তু নেই যা এখানে পাওয়া যাবে না। শুধু অলঙ্কারই না, দামী ধাতু ও পাথরে তৈরী শৌখিন বিভিন্ন বস্তুও এখানে পাওয়া যায়। যেমন- অনেক ধনী আরবের বাড়িতে রত্ন খচিত সোনা-রুপার তৈজসপত্র, ঢাল-তলোয়ার, গাওয়ার সেট, হুক্কাদানী, ফুলদানী, ঘড়ি এমনকি ছোটো ফোয়ারাওদেখা যায়। কেউ কেউ শখ করে সোনার দাঁত লাগায়। এসব কিছু তৈরি করার আলাদা কর্মশালা রয়েছে আহমাদের পরিবারের। অসংখ্য কর্মচারী ওদের হয়ে কাজ করে।
এত ধনী পরিবারের আদরের ছোটো ছেলে হলেও আহমাদ বেশ ভদ্র-মার্জিত। তার বয়সে অনেকেই হুক্কা সেবনে অভ্যস্ত হলেও আহমাদের সেই বদ অভ্যাস নেই। কর্মচারীদের সাথেও সে যথেষ্ঠ ভালো আচরণ করে। একারণেই আহমাদের বড়ো ভাই মেহমুদের চেয়ে কর্মচারীরা আহমাদকে বেশি পছন্দ করে।
কর্মচারীরাও খেয়াল করেছে আহমাদ ইদানিং মেইন ডোর ঠেলে কোনো নারী ক্রেতাকে ঢুকতে দেখলেই আগ্রহভরে তাকায়। কিছুক্ষণ দেখেই মুখে বিষাদের রেখা টেনে মুখ ফিরিয়ে নেয়। তারা অবাক হয়, এর আগে কখনোই তারা আহমাদকে কোনো নারীর চোখের দিকে তাকাতে দেখেনি। তাহলে ইদানিং হঠাৎ কী হলো? শুধু আল কুতুব পরিবারের একজন অল্প বয়সী মেয়ে যখন দোকানে পা রাখে তখন আহমাদের চোখে-মুখে এক অন্যরকম আনন্দ খেলে যায়।
সেদিন সে বাকী সব কাজ ফেলে তাদের সেবায় নিয়োজিত হয়ে যায়। এক ফাঁকে তাদের জন্য ঠান্ডা তাজা আমের স্পেশাল শরবত, যা শুধু আহমাদদের রেস্টুরেন্টের স্পেশাল পানীয় হিসেবে শহরখ্যাত, তা পরিবেশন করার আদেশ করে। আহমাদ অবশ্য কখনও কর্মচারীদের আদেশ করে না, সে অনুরোধ করে। আর আহমাদের বিনীত অনুরোধে কর্মচারীরা বলতে পারে না যে এত দামী শরবত শুধু যারা অনেক টাকার কেনাকাটা করে তাদেরকেই পরিবেশন করা হয়। যারা কিছুদিন পরপর শুধু গয়না দেখতে আসে তাদের দেওয়া হয় না। কর্মচারীরাও এতদিনে বুঝে গেছে আহমাদ নিশ্চয়ই ঐ সুরমা টানা চোখের মেয়েটির মাঝে কিছু খুঁজে পেয়েছে।
আজ যখন সালমা আর আমিরাহ্ দোকানে প্রবেশ করল আহমাদ একদম দাঁত বের করে হেসে ফেলল। এবার বেশ অনেকদিন পরে আমিরাহ্ আসল। মাঝে সালমা কয়েকবার এসে ঘুরে গেলেও আমিরাহ্ আসেনি। আর তখন সালমার ভাগ্যে আমের শরবতও জোটেনি। তাই আজ বেশ পটিয়ে আমিরাহ্কে সাথে নিয়েই এসেছে। আমিরাহ্ যখন থেকে বুঝতে পেরেছে যে সে এবং আহমাদ দুজনেই একে অপরের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছে, তখন থেকেই এখানে আসতে চাইছে না। এত অল্প বয়সেও সে জেনে গেছে যে আরব দেশে এসব প্রেম-ভালোবাসা সহজে পরিণতি পায় না। তাই নিজেই নিজেকে গুটিয়ে নিতে চেয়েছে।
কিন্তু সালমার সাথে কে পারবে? সে নাছোড়বান্দা। আজ আমিরাহ্কে নিয়েই এসেছে। সে বুঝে ফেলেছে আমিরাহ্ না আসলে আমের শরবত পাবে না। আমিরাহ্কে সেকথা বলেও ফেলেছে। আমিরাহ্ তো হাসতে হাসতে শেষ। ছোঁচা বলে কিছুক্ষণ ক্ষেপিয়েছেও। তারপর বলেছে এতই যখন পছন্দ তখন সালমা কিনে খেলেই তো পারে। জবাবে সালমার এক কথা,
– বিনামূল্যে খেতে পারলে কেন রিয়াল খরচ করব? সেটা দিয়ে অন্য কিছু কিনব। আর তাছাড়া রোজ রোজ এটা কিনে খেতে গেলে যে দুই-চার রিয়েল নিজে জমাই সেটা আর জমানো হবে না। বেশি রিয়েল জমিয়ে আমি এবার একটা হিরের হার কিনব। সেদিন আহমাদদের সোনার দোকানে দেখে এসেছি। কিন্তু অনেক দাম। এত দামী যে তোমার বাবাকে বলে লাভ হবে না। সে কিনে দেবে না। তাই আমি নিজেই কিছু জমিয়ে বাকীটা তার কাছ থেকে নেব। চলো প্রিয় মেয়ে। উম্মীর এতটুকু শখ পূরণের সুযোগ করে দাও।
– উম্মী, তুমি যেমন দুষ্টু, তেমন ছোঁচা, তেমন জেদী। আমাকে না নিয়ে ছাড়বে না। আচ্ছা যাও, আমি তৈরি হয়ে নিচ্ছি।
কিন্তু দোকানে ঢুকেই আহমাদের চোখে চোখ পড়তেই আমিরাহ্ এর পা যেন এক মণ ভারি হয়ে গেল। তার উপর যে হাসিটা সে দিয়েছে তাতে আমিরাহ্ তার হৃদয়ের ধুকপুকানি যেন বাইরে থেকেও শুনতে পাচ্ছে। কাঁপা শরীর নিয়ে সে কাচের বক্সে সাজানো আংটি দেখতে লাগল। সালমা অন্যদিকে তার পছন্দের হারটা গলায় পরে দেখতে গেছে। আমিরাহ্ একটা বড়ো পান্নার চারপাশ ঘেরা ছোটো ছোটো হীরা বসানো আংটি নিয়ে অনামিকায় পরল।
– আপনার মেহেদীরাঙা আঙুলে আংটিটা চমৎকার মানিয়েছে। এটা আপনি নিয়ে যান।
আমিরাহ্ চমকে সামনে তাকিয়ে দেখে আহমাদ ওর একদম সামনেই।
– না, না, সেকী! আমি তো এমনিতেই পরে দেখছিলাম।
আহমাদ তার দিকে আমের শরবতের গ্লাস এগিয়ে দিল। আমিরাহ্ একবার ঘাড় ঘুরিয়ে সালমাকে দেখল। সে মনের সুখে সোফায় বসে শরবত খাচ্ছে। আমিরাহ্ এবার মনের অজান্তেই নেকাব পুরোটা সরিয়ে শরবত খেতে লাগল। আহমাদকে দেখেই তার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছিল। আর আহমাদ মুগ্ধ চোখে আমিরাহ্ এর গোলাপি ঠোঁট গোল করে স্ট্র দিয়ে শরবত খাওয়া দেখতে লাগল।
– আংটিটা আপনি নিয়ে যান। এটা আপনার আঙুলের জন্যই যেন তৈরি হয়েছে। এটা এক পিসই তৈরি করা হয়েছে। আপনি নিন।
–নাহ্, কী বলেন? এত দামী আংটি দিয়ে আমি কী করব? আমি তো কিছু কিনতে আসিনি। আমি আমার ছোটো উম্মীর সাথে এসেছি।
– দামের কথা ভাববেন না। ধরে নিন এটা আমার পক্ষ থেকে আপনার জন্য উপহার।
এবার আমিরাহ্ চোখ কুঁচকে, ভুরু বাঁকিয়ে আহমাদের দিকে তাকাল। সে অবশ্য জানল না তার এই চেহারা দেখে আহমাদ আবারও ঘায়েল হয়ে গেছে।
– কেন? আপনি কেন আমাকে উপহার দিবেন? আর আমিই বা কেন আপনার উপহার নেব? আমাকে কী আপনার লোভী মেয়ে বলে মনে হয়?
আহমাদ হাসল। তার বাম গালের টোল দেখে এবার আমিরাহ্ এর ভিরমি খাওয়ার পালা। সে নিজেকে লুকাতে তাড়াতাড়ি শরবতে মন দিল।
– আমিরাহ্, আপনি কী বোঝেন না যেদিন সন্ধ্যার পর থেকে আমি আপনাকে নিয়ে অনেক ভাবছি। আমি আপনার মতো সুন্দর মেয়ে আর দেখিনি। আপনি শুধু সুন্দর নন, আপনি স্নিগ্ধ সুন্দর। আপনার স্নিগ্ধতা আপনার সৌন্দর্যকে আরও মোহনীয় করে তোলে। আমি আপনাকে এই আংটিটা উপহার দিতে চাই। আপনার প্রতি আমার অনুভূতির একটা প্রকাশস্বরুপ এটা আপনাকে দিতে চাই। আপনার কিছু বলতে হবে না। শুধু এটা গ্রহণ করলেই আমি বুঝব আপনিও আমাকে নিয়ে ভালো কিছুই ভাবেন।
আমিরাহ্ লজ্জায় লাল হয়ে গেছে। সে মাথা তুলতেও লজ্জা পাচ্ছে। মনের অজান্তেই হোক অথবা মনের গোপন ইচ্ছাতেই হোক সে এখনও তার নেকাব পরেনি। ফলে তার গালের গোলাপি রঙ আহমাদের চোখ এড়াল না। এরমাঝেই সালমা আমিরাহ্ কে ফিরে যাওয়ার জন্য ডাকল। আমিরাহ্ এবার সরাসরি প্রথমবারের মতো আহমাদের চোখে তাকাল।
– আমি এখন নিতে পারব না। বাড়িতে তাহলে মিথ্যা বলতে হবে। আমি মিথ্যা কথা বলি না। এটা আপনার কাছেই থাকুক। আপনার বেগমকে উপহার দিবেন।
এটুকু বলে আমিরাহ্ মিষ্টি করে হাসল। তার হাসি তার না বলা কথাটুকু আহমাদের কানে কানে বলে দিল। আমিরাহ্ কী বোঝাতে চেয়েছে আহমাদ বুঝল। সেও মনে মনে বলল, ” বড়ো ভাইয়ের নিকাহ্ হয়ে গেলেই আমি বাবাকে তোমার কথা বলব। তোমাকে আমার বেগম করে নিয়ে আসব। আর তখন নিজ হাতেই তোমার অনামিকায় এই আংটি পরাব। ততদিন এটা তোমার আমানত হিসেবেই আমার কাছে থাকবে।”