#আমার_তোমাকে_প্রয়োজন💖
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_10
কপি নিষিদ্ধ ❌
ওরা পড়তেই একটা গু’লি এসে লঞ্চের লোহার সাথে লেগে বি’ক’ট শব্দ হয়।
আহাদ সামনে তাকাতেই দেখতে পায় শ’ত্রু পক্ষের লোক ওর দিকে ব’ন্দু’ক তাক করে দাঁড়িয়ে আছে,
গু’লিটা মুলত আহাদকে নিশানা করে ছোঁড়া হয়েছিলো কিন্তু ঐশী আহাদকে ধাক্কা দেওয়া গু’লিটি আহাদের গায়ে না লেগে লঞ্চের লোহায় যেয়ে লাগে।
বিক’ট শব্দ শুনে আহাদের গার্ডরা সবাই উপরের তলায় চলে আসে।
আহাদ ঐশী উঠে দাঁড়ায়।
আহাদের গার্ডদের আসতে দেখে শ’ত্রু পক্ষের লোক গু’লি ছোঁড়ে,আহাদের গার্ডরা নিজেদের রক্ষা করে ওদের নিশানা করে গু’লি ছোঁড়ে।
শুরু হয় গো’লাগু’লি।
ঐশী কানে হাত দিয়ে চোখ খিঁচে বন্ধ করে এক কোনায় দাঁড়িয়ে আছে,ঐশী ভয়ে কাঁপছে।
আহাদ দু হাতে রি’ভ’লবার নিয়ে গু’লি করছে।
লঞ্চ পাড়ে আসতেই আহাদের গার্ডরা নেমে গিয়ে ওদের ধরে ফেলে,ওদের কপাল বরাবর শু’ট করে দেয়।
শ’ত্রু পক্ষের সবাইকে মে’রে ফেলা হয়,
আহাদের গার্ডরাও অনেকে আ’হ’ত হয়।
আহাদ ঐশীর কাছে আসে,ঐশী এখনো চোখ বন্ধ করে রেখেছে।
জান।
আহাদের গলার স্বর শুনে ঐশী চোখ মেলে তাকায়,
আহাদকে দেখে জড়িয়ে ধরে।
আহাদও ওকে জড়িয়ে ধরে ওর চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
আহাদকে জড়িয়ে ধরা অবস্থায় ঐশী সামনে তাকায় আড়াল থেকে কারো হাতে রি’ভল’বার দেখতে পায় লোকটা আহাদের দিকেই রিভ’লবা’র তাক করে রেখেছে,ঐশী সাত পাঁচ না ভেবে আহাদকে ঘুরিয়ে দেয়,যার ফলে গু’লি এসে ঐশীর পিঠে যেয়ে লাগে।
ঐশী “আহ” করে উঠে।
লোকটা গু’লি করে দৌড়ে পালিয়ে যায়,লোকটা এতক্ষণ লুকিয়ে ছিল ঠিক সময়ের অপেক্ষায় ছিল কিন্তু এবারও আহাদকে গু’লি করতে পারে না।
ঐশী শরীরের সমস্ত ভর ছেড়ে দেয়,আহাদ ওকে ধরে ফেলে,আহাদ নিজের হাত সামনে তুলতেই হাতে র’ক্ত দেখতে পায়।
জান,এটা তুমি কি করলে,কেন আমাকে বাঁচাতে গেলে?
ঐশীর কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে।
জান তোমার কিচ্ছু হবে না,প্লিজ চোখ বন্ধ করো না।
ঐশী অনেক কষ্টে কাঁপা কাঁপা গলায় বলে,
আহাদ আমার খুব কষ্ট হচ্ছে,খুব কষ্ট হ.
ও আর কিছু বলতে পারলো না ওর চোখ দুটো বন্ধ হয়ে গেলো।
আহাদ ঐশীকে বুকে জড়িয়ে ধরে “জান” বলে চিৎকার দেয়।
আহাদ ঐশীকে কোলে তুলে নেয়।
চিৎকার করে বলে,
গার্ড গাড়ি নিয়ে আসো।
আহাদ ঐশীকে নিয়ে লঞ্চ থেকে নেমে এসে গাড়িতে উঠে বসে,ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ট দেয়।
আহাদ ঐশীর পিঠে রুমাল চেপে ধরে র’ক্ত পড়া কমানোর চেষ্টা করছে।
ওরা হসপিটালে চলে আসে,আহাদ আগেই ডক্টরকে কল করেছিলো ওরা আসতেই নার্স স্ট্রেচার নিয়ে আসে,
আহাদ ঐশীকে স্ট্রেচারে শুইয়ে দেয়,নার্স ডক্টর ওকে ওটিতে নিয়ে যায়।
আহাদ ওটির বাহিরে দাড়িয়ে আছে।
১ ঘন্টা পর,
ডক্টর ওটি থেকে বের হয়।
ডক্টর।
মি. শেখ পেসেন্ট এখন বিপদ মুক্ত,আরেকটু দেরি হলে খুব বড় ক্ষ’তি হয়ে যেতো,আমরা বু’লে’ট বের করে ফেলেছি,পেসেন্টকে এখন কেবিনে শিফট করা হবে,
কিছুক্ষণ পর পেসেন্টের জ্ঞান ফিরবে তখন আপনি দেখা করতে পারেন।
ওকে ডক্টর।
ডক্টর চলে যায়,ঐশীকে কেবিনে শিফট করা হয়।
আহাদ কেবিনে প্রবেশ করে,ঐশীর চোখ বন্ধ দেখে ঐশীর কাছে যায়,চেয়ারে বসে ঐশীর হাত ধরে ঐশীর দিকে তাকায়।
কিছুক্ষণ পর ঐশী আস্তে আস্তে চোখ মেলে তাকায়,
আহাদকে ওর হাত ধরে বসে থাকতে দেখে,আহাদ ওর দিকে তাকিয়ে মুখ ঘুরিয়ে নেয়,ঐশী স্মিত হাসে।
কি হয়েছে,বাচ্চাদের মতো গাল ফুলিয়ে রেখেছেন কেন?
আহাদ কিছু বলে না।
কি হলো,আমার সাথে কথা বলবেন না?
কেন কথা বলবো?
বাহবা এতো রাগ,আহা রাগ করছেন কেন?
তুমি কেন এমন করলে,যদি তোমার কিছু হয়ে যেতো।
হয়নি তো।
কেন বাঁচালে আমায়?
প্রয়োজন ছিল তাই।
মানে?
কিছু না।
ঐশী উঠে বসার চেষ্টা করতেই আহাদ ওকে সাহায্য করে বেডের সাথে হেলান দিয়ে বসিয়ে দেয়।
আহাদ ঐশীর হাত ধরে বসে আছে।
আহাদ।
হুম।
বাসায় যেতে হবে।
এই অবস্থায় কি করে যাবে,তোমাকে আজ রাত এখানে থাকতে হবে।
এটা সম্ভব না,আম্মু আমার জন্য ওয়েট করছে।
কিন্তু,
আমি কেন যেতে চাইছি তা আপনিও ভালো করেই জানেন।
হুম।
আমাকে ড্রেস চেঞ্জ করতে হবে।
আমি নার্সকে আসতে বলছি।
ঠিক আছে।
আহাদ কেবিন থেকে বের হয়ে নিচে যেয়ে গাড়ি থেকে ঐশীর ড্রেস নিয়ে আসে,নার্সের সাহায্যে ঐশী ড্রেস চেঞ্জ করে।
ডক্টর ঐশীকে ডিসচার্জ দিতে চাইনি অন্তত আজ রাত হসপিটালে থাকতে হবে কিন্তু ঐশীর জোড়াজুড়িতে ডক্টর বাধ্য হয়ে ওকে ডিসচার্জ করে দেয়।
ঐশী আহাদ গাড়িতে বসে আছে।
১০ টার দিকে ঐশী বাড়িতে আসে,কলিংবেলে চাপ দিতেই আমেনা দরজা খুলে ঐশীকে জড়িয়ে ধরে মুচকি হাসি দিয়ে বলে
“Happy Birthday “.
আমেনা জড়িয়ে ধরায় ঐশী ব্যাথা অনুভব করে,
কিন্তু আমেনাকে বুঝতে না দিয়ে বলে,
থ্যাঙ্ক ইউ আম্মু।
আমেনা ওকে ছেড়ে দেয়,ঐশী ভেতরে প্রবেশ করে,
চোখ পড়ে ডাইনিং টেবিলের উপর,টেবিলের উপর কেক,আর খাবার সাজিয়ে রাখা আছে।
সরি আম্মু আসতে অনেক লেট হয়ে গেছে।
ফ্রেন্ডের সাথে ছিলে?
হ্যাঁ আম্মু ওদের সাথে আজ বার্থডে সেলিব্রেট করেছি।
আমিও তাই ভেবে তোমাকে কল দিয়ে ডিসটার্ব করিনি,
যাও ফ্রেস হয়ে আসো,একসাথে কেক কাটবো।
আচ্ছা।
ঐশী রুমে যেয়ে ফ্রেস হয়ে আসে,আমেনার সাথে কেক কাটে,দুজন দুজনকে খাইয়ে দেয়।
আমেনা আজ ঐশীর ফেবারিট খাবার গুলো রান্না করেছে,নিজের পছন্দের খাবার দেখে ঐশী খুশি হয়ে যায়,আমেনা নিজ হাতে মেয়েকে খাইয়ে দেয়,
ঐশীও তৃপ্তি করে খায়।
খাওয়া শেষে মায়ের সাথে কিছুক্ষণ গল্প করে রুমে চলে আসে।
পিঠের ব্যাথা বেড়েছে,ব্যাগ থেকে একটা মেডিসিন বের করে খেয়ে নেয়।
ফোন বেজে উঠতেই ঐশীর ঠোঁটে হাসি ফুটে ওঠে।
ঐশীর হাসি দেখে আহাদও হাসে।
ঐশী কল রিসিভ করে,
হুম বলুন।
রাতে খেয়েছো?
হুম,আম্মু আজ আমার পছন্দের খাবার রান্না করেছে,
আমরা একসাথে কেকও কেটেছি,আপনি খেয়েছেন?
হুম খেয়েছি,পিঠের ব্যাথা বেড়েছে?
হ্যাঁ কিছুটা।
মেডিসিন খেয়েছো?
হুম।
মা কি কিছু টের পেয়েছে?
না আম্মুর সামনে স্বাভাবিক ছিলাম তাকে কিছু বুঝতে দেইনি।
ঐশী হাই তুলে।
ঘুম পেয়েছে?
হুম।
আচ্ছা তুমি ঘুমিয়ে পড়ো,রাখছি।
আচ্ছা।
আহাদ কল কেটে দেয়।
ঐশী লাইট অফ করে শুয়ে পড়ে,ঐশী চোখ বন্ধ করতেই আজকের মুহূর্ত গুলো চোখের সামনে ভেসে ওঠে,ঐশী চোখ মেলে তাকায়,ফোন হাতে নিয়ে গ্যালারিতে যেয়ে আজকের ছবি গুলো দেখে,আহাদের ছবি দেখে মুচকি হেসে ফোনটা বুকে জড়িয়ে চোখ বন্ধ করে।
কেটে গেছে আরো ২ মাস।
ঐশীর প্রতি আহাদের আসক্তি দিনকে দিন বাড়ছে,
এক মুহুর্তের জন্যও ঐশীকে একা ছাড়ে না,একদিন না দেখলে ছটফট করে,মাঝরাতে চলে আসে ঐশীর বাসার নিচে ঐশীকে এক ঝলক দেখার জন্য।
ঐশীও এখন অভ্যস্ত এ সবে,ওর প্রতি আহাদের ভালোবাসা,কেয়ার ওকে আহাদকে ভালোবাসতে বাধ্য করেছে,হ্যাঁ ঐশী আহাদকে ভালোবেসে ফেলেছে,
আহাদ ওর কথা রেখেছে ঐশীর মনে জায়গা করে নিয়েছে ওকে ভালোবাসতে বাধ্য করেছে।
ঐশী বুঝতে পেরেছে ও আহাদকে ভালোবেসে ফেলেছে।
ভালো না বেসেই বা উপায় কি আহাদের কেয়ারিং ওকে ভালোবাসতে বাধ্য করেছে।
গত কালকের ঘটনা,
ঐশী সকালে নাস্তা না করে ভার্সিটিতে চলে আসে,
ক্লাসে বসে আছে,টিচার ক্লাস নিচ্ছে,কিছুক্ষণ পরই আহাদ ক্লাসে আসে,স্যার আহাদকে দেখে ঐশীর দিকে তাকায়,স্যার জানে আহাদ ঐশীকে নিতে এসেছে তাই স্যার ঐশীকে যেতে বলে,ঐশী ব্যাগ নিয়ে বের হয়।
কি হলো কেন ডেকেছেন আমায়?
নাস্তা করোনি কেন?
তাড়াহুড়ো করে এসেছি তাই নাস্তা করার সময় পাইনি।
ঠিক আছে চলো।
কোথায় যাবো?
রেস্টুরেন্টে।
কেন?
রেস্টুরেন্টে মানুষ কেন যায়,অবয়েসলি খেতে যাবে।
আপনি নাস্তা করার জন্য আমাকে ক্লাস চলাকালীন নিয়ে আসলেন!
হ্যাঁ।
ঐশী কপালে হাত দিয়ে বলে,”হায়রে”।
কালকের ঘটনা মনে পড়তেই ঐশী আপনমনে হেসে দেয়।
ঐশী ছাদের দোলনায় বসে আহাদের কথা ভাবছে,
আহাদের সাথে প্রথম দেখা থেকে শুরু করে আজ অব্দি যা মুহূর্তে ছিল সব ঐশীর চোখে ভেসে ওঠে,
ঐশী চোখ বন্ধ করে নিশ্বাস নেয়।
” আহাদ,কি জাদু করলেন আপনি,
আপনাকে ভালোবাসতে বাধ্য করে ফেললেন,সবাই ঠিকই বলে মানুষ পেছনে যেতে যেতে একদম কাছে চলে আসে,আমি আপনার থেকে দূরে সরতে সরতে একদম কাছে চলে এসেছি।
আমিও আপনার প্রতি আসক্তি হয়ে পরেছি।
এতোদিন আপনার ভালোবাসায় সাড়া না দিয়ে থাকতে পেরেছি কিন্তু এখন যে আর সাড়া না দিয়ে থাকতে পারছি না।
আমি আসবো আপনার কাছে,হ্যাঁ আসবো আপনার কাছে কারণ #আমার_আপনাকে_প্রয়োজন।
ঐশী রুমে এসে রেডি হয়ে নেয়,ঐশী জানে আহাদের কালো পছন্দ তাই ঐশী কালো থ্রি পিস পড়ে।
রেডি হয়ে আয়নায় নিজেকে একবার দেখে রুম থেকে বের হয়।
রিকশায় চড়ে আহাদের অফিসে যাওয়ার জন্য রওনা দেয়,ঐশী ফুড় ফুঁড়া মেজাজ নিয়ে আহাদকে কল দেয়,
কিন্তু আহাদের ফোন বন্ধ,ঐশী ভ্রু কুচকে আসে,
আজ প্রথম এমনটা হলো,আহাদের ফোন বন্ধ তো দূরের কথা ও কল দিলে একবারই রিসিভ করতো।
ঐশী এ বিষয়ে আর মাথা ঘামায় না।
#চলবে
#আমার_তোমাকে_প্রয়োজন💖
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_11
কপি নিষিদ্ধ ❌
ঐশী এ বিষয়ে আর মাথা ঘামায় না।
ঐশী আহাদের অফিসে চলে আসে।
ঐশী জানে আহাদের কেবিন ৪ তলায়,ঐশী লিফটে উঠে 3 বাটনে ক্লিক করে,লিফটের দরজা বন্ধ হয়ে যায়,
৪ তলায় আসতেই লিফটের দরজা খুলে যায়,
ঐশী লিফট থেকে বের হয়ে আহাদের কেবিনের দিকে যায়,ও যেয়ে দেখে রুম লক করা।
লক করা! উনি অফিসে নেই,তাহলে কোথায় গিয়েছে?
শাহীন ঐশীকে দেখে ঐশীর কাছে আসে।
আসসালামু ওয়ালাইকুম ম্যাম।
ওয়ালাইকুম আসসালাম।
স্যারের সাথে দেখা করতে এসেছেন,উনি তো অফিসে নেই।
কোথায় আছে বলতে পারেন?
হ্যাঁ উনি তো সিক্রেট হাউসে গিয়েছেন।
সিক্রেট হাউস!
জ্বী ম্যাম।
এটা কোথায়,ঠিকানাটা বলতে পারবেন?
ম্যাম এটা তো সিক্রেট হাউস,এটার লোকেশন আমি স্যার আর সিয়াম স্যার ছাড়া আর কেউ জানে না,
এখানে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষে’ধ,
কিন্তু আপনি যখন যেতে চাইছেন,তখন চলুন আমি আপনাকে পৌঁছে দিয়ে আসি।
আপনার যেতে হবে না,শুধু এড্রেসটা বলুন।
সমস্যা নেই ম্যাম আমি আপনাকে দিয়ে চলে আসবো।
আচ্ছা ঠিক আছে।
শাহীন ঐশী লিফটে করে নিচে নামে।
ওরা গাড়িতে উঠে বসে,শাহীন গাড়ি স্টার্ট দেয়।
ঐশী আহাদকে কল দিচ্ছে কিন্তু আহাদের ফোন বন্ধ।
ঐশী শাহীন সিক্রেট হাউসে চলে আসে।
ঐশী গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ায়,ঐশী নেমে যেতেই শাহীন গাড়ি স্টার্ট দিয়ে চলে যায়।
ঐশী দেখে মেইন গেটের সামনে ৪ জন গার্ড দাঁড়িয়ে আছে।
গার্ডরা ঐশী দেখে ওকে যাওয়ার জন্য জায়গা করে দেয়।
ঐশী হেঁটে মেইন গেট দিয়ে ভেতরে আসে,ভেতরে আসতেই দেখতে পায় বাড়িটির চারপাশে ২০/২৫ জন গার্ড দাঁড়িয়ে আছে।
এত গার্ড দেখে ঐশীর মনে একটা প্রশ্নই জাগছে,
এখানে এত গার্ড কেন?
ঐশী দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে,ভেতরে আরো গার্ড,এতো এতো গার্ড দেখে ঐশীর কপাল কুঁচকে আসে,একটা গার্ড ঐশীকে দেখে বলে,
ম্যাম আপনি এখানে!
আপনাদের স্যার কোথায়?
স্যার তো,
গার্ডটা কিছু একটা ভেবে সম্পূর্ণ কথা শেষ না করে কেবলমাত্র বলে “আসুন আমার সাথে “।
গার্ডটা আগে আগে হাটছে আর ঐশী ওর পেছন পেছন।
ওরা একটা রুমের সামনে আসে।
গার্ডটা ভেতরে যায় না।
ম্যাম আপনি ভেতরে যান।
বলেই গার্ডটা চলে যায়।
গার্ডটা চলে যেতেই ঐশী দরজায় নক না করে দরজা খুলে রুমে প্রবেশ করে রুমটাতে লাল লাইট জ্বলছে,
ঐশী কদম ফেলে সামনে যাচ্ছে,ও সামনে যেতেই যা দেখলো তাতে ওর রু’হু কেঁপে উঠল।
আহাদ পাগ’লের মতো একজনের বুকে ছু’ড়ি দিয়ে বার বার আ’ঘা’ত করছে।
আহাদের আশে পাশে ৬/৭ টা লা”শ পড়ে আছে,লা”শ গুলোকে দেখেই বুঝাচ্ছে এদের কতো জঘ’ন্য মৃ”ত্যু দেওয়া হয়েছে,ওদের চোখ উ’পড়ে ফেলা হয়েছে হাতে পায়ের আঙ্গুল কে’টে ফেলা হয়েছে,ঘাড় থেকে মাথা আলাদা করে ফেলেছে।
ঐশী নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না,
ও ভাবতে পারেনি ওর ভালোবাসার মানুষ এতোটা খারাপ হবে।
হঠাৎ আহাদের মনে হলো কেউ ওর পেছনে দাঁড়িয়ে আছে,আহাদ বসা থেকে উঠে পেছনে ফেরে তাকায়।
ঐশী আজ এক অন্য আহাদকে দেখতে পেলো,
চুল গুলো এলোমেলো,শার্টে প্যান্টে হাতে পায়ে র’ক্ত মেখে আছে,ওকে একদম এলোমেলো লাগছে।
গোছানো লোককে আজ অগোছালো দেখে ঐশী ভয়ে কেঁপে উঠে,ও পালিয়ে যেতে নিলে আহাদ ওর হাত ধরে ফেলে টেনে নিজের সামনে দাঁড় করায়।
ঐশী ভয়ে কাঁপছে,ওর কম্পন আহাদ অনুভব করতে পারছে,আহাদ দাঁতে দাঁত চেপে বলে,
এখানে কেন এসেছো?
ভয়ে ঐশীর মুখ থেকে কথা বের হচ্ছে না।
ওকে কথা বলতে না দেখে আহাদ ওর বাহু চেপে ধরে চেচিয়ে বলে,
বলো কেন এসেছো এখানে?
ঐশী কেঁপে উঠে,কাঁপা কাঁপা গলায় বলে,
আপনার সাথে দেখা করতে এসেছিলাম।
ঐশী লা”শ গুলো দেখে ভয়ে ভয়ে বলে,
ওদের কেন মে’রে’ছে’ন,কেন এত জঘন্য মৃ”ত্যু দিয়েছেন
ছিহ আপনি কি মানুষ?
ঐশীর কথায় আহাদ জোরে জোরে হাসতে শুরু করে।
ওকে এভাবে হাসতে দেখে ঐশী আরো ভয় পেয়ে যায়।
এ কোন আহাদকে দেখছে ও,এটা তো ওর আহাদ না,
যে আহাদকে ও ভালোবেসে ছিলো এটা তো সেই আহাদ না,হতেই পারে না।
আহাদ হাসতে হাসতে বলে,
এতোটুকু দেখেই আমাকে জঘ’ন্য,অমানুষ মনে হচ্ছে,
আমি এর থেকেও আরো ভ’য়া’বহ মৃ”ত্যু দেই,
কি দেখতে চাও,জানতে চাও,চলো তোমাকে দেখাই।
আহাদ ঐশীর হাত ধরে টেনে রুম থেকে বের হয়,
আহাদ ওকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে,ঐশী হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু আহাদের সাথে পেরে উঠতে পারছে না,আহাদ ওকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।
এ বাড়িটা ভুলভুলাইয়ার মতো,এখানে অনেক গুলো রুম এক রুম থেকে অন্য রুমে যাওয়া যায়,এখানে কেউ ভুল করে প্রবেশ করলে সহজে বের হওয়ার রাস্তা খুঁজে পাবে না।
আহাদ ঐশীকে একটা বড় রুমে নিয়ে আসে,
সেখানে একজন লোককে হাত পা বাঁধা অবস্থায় মেঝেতে ফেলে রাখা হয়েছে।
আহাদ হাত দিয়ে ইশারা করতেই গার্ডরা লোকটার হাত পা বেঁধে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে তাকে উল্টো করে ঝুলিয়ে দেয়।
ঐশী মেঝেতে তাকাতেই দেখতে পায় ছোট সুইমিংপুলের মতো কিছু সেটা ঢেকে রাখা হয়েছে।
লোকটাকে ঝুলাতেই আহাদ হাতে একটা রিমোর্ট নিয়ে একটা বাটন প্রেস করে সাথে সাথে সুইমিংপুলের মতো জিনিসটার উপরের ঢাকনাটা সরে যায়।
ঐশী দেখতে পায় ওটার মধ্যে পানি জাতীয় কিছু আছে।
ঐশী আহাদকে প্রশ্ন করে,
ও গুলো কি?
এসি’ড।
কি!
হ্যাঁ।
আহাদ রিমোর্টের আরেকটা বাটন প্রেস করে,
লোকটা আসতে আসতে নিচের দিকে যেতে লাগে।
এ কি করছেন আপনি,থামান।
আহাদ ঐশীর কথার উওরে কিছু বলে না চুপচাপ সামনের দিকে তাকিয়ে রয়,ঐশী হাত ছাড়াতে নিলে আহাদ আরো শক্ত করে ওর হাত চেপে ধরে।
আহাদ অন্য হাত দিয়ে পকেট থেকে রিভ’ল’বা’র বের করে দড়িতে শু’ট করতেই দড়ি ছিড়ে যায় আর লোকটা এ’সি’ড ভর্তি সুইমিংপুলে পড়ে যায়।
ঐশী জোরে চিৎকার দিয়ে উঠে।
ও আর সহ্য করতে পারে না জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।
__
ঐশী চোখ মেলতেই নিজেকে আহাদের রুমে আবিষ্কার করে,আহাদ ওর সামনে বসে ওর চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে,ও আহাদকে দেখে উঠতে নিলে আহাদ ওর হাত বেডের সাথে চেপে ধরে,
জান উঠছো কেন?
আহাদের স্পর্শ ঐশীর সহ্য হচ্ছে না ঘৃণা লাগছে।
ঐশী এক ঝটকায় আহাদের হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে উঠে দাঁড়ায়।
আহাদও উঠে দাঁড়ায়।
আহাদ ঐশীর কাছে যেতে নিলে ঐশী চেচিয়ে বলে,
কাছে আসবেন না।
আহাদ “জান” বলে ঐশীর হাত ধরতেই ঐশী ওর থেকে দূরে সরে চেচিয়ে বলে,
ছুঁবেন না আমায়,এই হাত দিয়ে ছুঁবেন না আমায়,এ হাত দিয়ে না জানে কত খু”ন করেছেন,কতো শত র’ক্তে’র বন্যা বইয়েছেন,কতো পরিবারকে ধ্বং”স করেছেন,
আপনি মানুষকে মানুষ মনে করেন না আপনার কাছে এরা কেবল মাএ কীটপতঙ্গ এদের পায়ের তলায় পিছতে পারলেই আপনার শান্তি,আপনাকে আমি ঘৃণা করি,ছিহ আপনি এতোটা জঘ’ন্য,এতোটা নির্দ’য়,
মি.আহাদ শেখ আই হেট ইউ,আই হেট ইউ।
ঐশী কাঁদতে কাঁদতে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
আহাদ কিছু বলতে পারে না কেবলমাত্র ওর যাওয়ার পানে তাকিয়ে রয়।
আজ সাত দিন ধরে আহাদ ঐশীর মাঝে কোনো যোগাযোগ নেই,আহাদ ওকে প্রতিদিন কল দেয় কিন্তু বরাবরের মতোই ফোন বন্ধ পায়,ঐশী একটি বারের জন্যও ওর রুমে আসেনি,ও আমেনার সাথে ঘুমিয়েছে,
এই সাত ভার্সিটিতেও যায়নি না তো রোজার সাথে কথা বলেছে,রোজা বাসায় আসলেও ওর সাথে কথা বলতো না,শেষে রোজা মন খারাপ করে চলে যেতো,
আহাদ অনেক সময় বাড়ির সামনেও চলে এসেছিলো কিন্তু ঐশীকে এক ঝলক দেখতেও পারেনি,
ঐশী যেন আহাদের থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নিজেকে সম্পূর্ণ লুকিয়ে ফেলেছে।
নিজেকে অদৃশ্য মায়াজালে জড়িয়ে ফেলেছে।
আহাদ এক মুহূর্তও শান্তিতে থাকতে পারেনি,
ওর রাতে ঘুম হয় না সারা রাত ছটফট করে।
আহাদের মনে হচ্ছে ঐশীকে এক পলক না দেখলে ও ম”রেই যাবে।
অফিসে,
ল্যাপটপে ঐশীর ছবি দেখছে আহাদ,একটা একটা করে সব ছবি দেখছে আর ঐশীর সাথে কাটানো মুহূর্ত গুলো মনে পড়ে যাচ্ছে।
ওর ভাবনার মাঝে কেউ দরজায় নক করে।
আহাদ সে ব্যাক্তিকে ভেতরে আসতে বলে।
দরজা ঠেলে সিয়াম ভেতরে আসে।
স্যার।
হ্যাঁ বলো।
স্যার ম্যামের বিষয়ে একটা ইম্পর্টেন্ট কথা ছিল।
আর তোমার ম্যাম সে তো আমার সাথে ৭ দিন ধরে কোনো যোগাযোগই রাখেনি,আচ্ছা বলো কি বলবে।
স্যার জাফর জেনে গেছে আপনি ম্যামকে ভালোবাসেন তাই,
তাই?
তাই ওরা প্ল্যান করেছে ওরা এবার আপনার উপর নয় ম্যামের উপর আক্র’মণ করবে,ওরা ম্যামের উপর আক্র’মণ করে আপনাকে দূর্বল করতে চায়।
জাফরকে খুঁজে বের করো।
কথাটা বলেই আহাদ কেবিন থেকে বের হয়ে যায়।
নিচে এসে গাড়িতে উঠে বসে গাড়ি স্টার্ট দেয়।
নাহ অনেক হয়েছে এবার জানকে বুঝাতে হবে,
ওর মুখোমুখি হতে হবে,ও কেন এমন করছে?
কথা গুলো ভেবে আহাদ দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।
আহাদ ঐশীর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছে,
আজ পিছ পা হলে চলবে ওকে ভেতরে যেতেই হবে,
আহাদ ভেতরে যাওয়ার জন্য পা বাড়ায়।
ঐশীর ফ্ল্যাটের দরজার সামনে আসতেই অনেক মানুষ দেখে আহাদের ভ্রু কুঁচকে আসে।
আহাদকে দেখে সবাই সরে দাঁড়ায় ওকে যাওয়ার জন্য রাস্তা করে।
আহাদ দেখে ভেতরে আরো মানুষ তারা আমেনার রুমের সামনে ভিড় করে রেখেছে এতো ভিড় দেখে আহাদ সেই রুমে যায় আর যেয়ে যা দেখে তাতে ওর বুক ধক করে উঠে।
#চলবে