#আমার_তোমাকে_প্রয়োজন💖
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_5
কপি নিষিদ্ধ ❌
রাগে ঐশীর চোখ থেকে পানি পড়ছে ও দৌড়ে ভার্সিটি থেকে বের হয়ে যায়।
বাসার সামনে এসে কলিংবেলে চাপ দেয় আমেনা এসে দরজা খুলে দেয়।
ও আমেনার সাথে কথা না বলে দৌড়ে রুমে চলে যায়।
হাতের ব্যাগটা বিছানায় ছুঁড়ে মারে,ওয়াশরুমে যেয়ে ঝর্ণা ছেড়ে দেয়,ঝর্ণার পানি ওর সারা অঙ্গ ভিজিয়ে দিচ্ছে,ঐশী জোরে জোরে ঠোঁট মুচ্ছে,ওর ভাবতেও ঘৃণা হচ্ছে ওর ঠোঁটে আহাদের পরশ আছে।
আহাদ ওকে জড়িয়ে ধরেছিলো এটা মনে পড়তেই ঐশী
ওর শরীর সাবান দিয়ে ঘষছে,ঘষতে ঘষতে একটা পর্যায় ওর শরীর ছিলে যায়।
ঐশী ঝর্ণার নিচে হাঁটু গেড়ে বসে কাঁদছে,
ঝর্ণার পানির সাথে ওর চোখের পানি মিশে যাচ্ছে।
বেশ কিছুক্ষণ পর ঐশী ওয়াশরুম থেকে বের হয়,
চুল এখনো ভিজা ওর মুছতে ইচ্ছে করছে না চুলের পানিতে পিঠ ভিজে যাচ্ছে,ঐশীর সে বিষয়ে কোনো ত্রুক্ষেপ নেই ও বারান্দায় চলে আসে,মেঝেতে দু হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে,আজ কেমন নিজেকে অসহায় অসহায় লাগছে,আগে তো কখনো এতোটা অসহায় লাগে তবে আজ কেন লাগছে?
ঐশীর চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ছে,
মি. আহাদ শেখ,আই হেইট ইউ,
হ্যাঁ মানছি আমার চার পাশে আপনার ছায়া বিদ্যমান থাকবে,হ্যাঁ আমার হৃদ স্পন্দনে,নিশ্বাসে আপনার নাম জড়িয়ে থাকবে,হ্যাঁ আমার ভাবনায় আপনি বসবাস করবেন,কিন্তু তা কেবল আর কেবল ঘৃণার,
আপনার মতো মা’ফি’য়াকে আমি কখনো ভালোবাসবো না,আপনার মতো মানুষ কারো ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য না,আপনি সারাটা জীবন আপনার কাছ থেকে ঘৃণাই পাবেন কখনো এই ঘৃণা ভালোবাসায় পরিণত হবে না।
ঐশী না খেয়ে পড়াতে চলে যায়,প্রথমে দুটো স্টুডেন্ট পড়িয়ে,শেষের স্টুডেন্টকে পড়াতে যায়,ঐশী দাঁড়িয়ে আছে সেই গলিটার সামনে ওর ভয় হচ্ছে ও বুঝতে পারছে না কি করবে যাবে না কি যাবে না,
আজও যদি ওরা ওকে তাড়া করে তখন ও কি করবে?
কিন্তু না গেলে পড়াবে কি করে,বেশ কিছুক্ষণ পর ঐশী সাহস জুগিয়ে গলি দিয়ে হাঁটা শুরু করে,নাহ আশে পাশে কেউ নেই,ঐশী স্টুডেন্টটার বাসায় চলে আসে।
ঐশীর পড়ানোর মাঝে বাচ্চার মা ওর কাছে আসে,
জানো ঐশী এখানে কি হয়েছিলো?
না তো আন্টি আমি তো কিছু জানি না,
কি হয়েছে এখানে?
তুমি যেদিন পড়িয়ে গিয়েছিল,ঐ যে বৃষ্টির রাতে।
হ্যাঁ।
সেদিনের পরদিন সকালে রাস্তায় এই এলাকার বখাটে ছেলে গুলোর লা’শ পাওয়া গেছে।
কি?
হ্যাঁ,কে মে’রেছে জানো?
কে মে’রেছে?
আহাদ শেখ।
কি আহাদ শেখ!
হ্যাঁ,তাও আবার খুব বাজে ভাবে মে’রেছে,ছেলে গুলোর চোখ উ’পড়ে ফেলেছে,জিহবা কে’টে দিয়েছে,হাতের নখ গুলো প্লা’স দিয়ে টেনে উ’ঠি’য়েছে,শরীরের সমস্ত জায়গায় ধারালো ছু’রি দিয়ে আ’ঘা’ত করেছে,
ওদের অনেক কষ্ট দিয়ে মে’রেছে।
মে’রে ফেলেছে ভালোই করেছে ওরা অনেক মেয়ের জীবন ন’ষ্ট করেছে ওদের মতো ন’রপ’শুদের মে’রে ফেলাই উচিত।
কথাগুলো বলেই উনি অন্য রুমে চলে যান।
ওদের এতোটা বাজে ভাবে মা’রা কথা শুনতেই ভয়ে ঐশীর সারা শরীর কেঁপে উঠে।
পড়ানো শেষ করে ঐশী ওনাদের বাসা থেকে চলে আসে,গলি থেকে বের হয়ে মেইন রোডে আসতেই আহাদকে দেখতে পায়,আহাদ ঐশীকে দেখে ওর কাছে আসে,ঐশী ওর পাশ কেটে চলে যেতে নিলে আহাদ ওর হাত ধরে ফেলে আহাদ হাত ধরতেই ঐশী ব্যাথায় ”আহ” করে উঠে।
আহাদ ঐশীর হাত দেখে ভ্রু কুচকে বলে,
হাত ছিলেছে কিভাবে?
ঐশী কিছু বলে না।
আমার জন্য নিজেকে কষ্ট দিয়েছো কেন?
ঐশী আহাদের হাত থেকে হাত ছাড়িয়ে নেয়।
আমি নিজের সাথে যা ইচ্ছে তাই করবো
তাতে আপনার কি?
আহাদ ঐশীর হাত ধরে হেঁচকা টান দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়।
আমারই তো সব,কারণ তুমিই তো আমার।
ছাড়ুন।
আচ্ছা নেও ছেড়ে দিলাম।
দুপুরে খাওনি কেন?
খেতে ইচ্ছে করেনি।
আচ্ছা চলো।
কোথায় যাবো?
চলো একসাথে ডিনার করে আসি।
না,আপনি যান।
তোমাকে ছাড়া যাচ্ছি না।
আচ্ছা আপনার সমস্যা কি আপনি কেন আমার পিছনে পড়ে আছেন।
কারণ আমি তোমায় ভালোবাসি।
আপনার ভালোবাসার আমার প্রয়োজন নেই।
আমার তো প্রয়োজন আছে,চলো।
যাবো না।
ঐশী এবার কিন্তু আমার রাগ উঠে যাচ্ছে।
দুপুরের কথা,আর ঐ ছেলেদের মৃ’ত্যুর কথা মনে পড়তেই ঐশী ভয়ে ঢোগ গিলে।
চলো।
ঐশী আর কিছু না বলে গাড়িতে উঠে বসে,
ঐশীকে গাড়িতে উঠতে দেখে আহাদ মুচকি হেসে গাড়িতে উঠে বসে,আহাদ গাড়ি স্টার্ট দেয়,ঐশী চুপ করে বসে আছে।
আহাদ ওর সাথে কথা বলছে কিন্তু ও উত্তরে কিচ্ছু বলছে না।
ওরা রেস্টুরেন্টে চলে আসে,আহাদ আগে থেকেই টেবিল রিজার্ভ করে রেখেছে,ওরা যেয়ে টেবিলটায় বসে
আহাদ ওকে খাবার অর্ডার করতে বলে কিন্তু ঐশী কিছু অর্ডার করে না তাই আহাদই খাবার অর্ডার করে।
আহাদ ঐশীর সাথে কথা বলছে কিন্তু ও উওরে কিছুই বলছে না।
খাবার চল আসে,ঐশী এখনো অব্দি কিছু মুখে দেয়নি
চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে আছে।
কি হলো জান খাচ্ছো না কেন?
খেতে ইচ্ছে করছে না।
আহাদ ঐশীর মুখের সামনে খাবার তুলে ধরে,ঐশী আহাদের দিকে চোখ তুলে তাকায়।
খেয়ে নাও।
ঐশী আহাদের দিকে তাকিয়ে ওর হাত থেকে খেয়ে নেয়,আহাদ মুচকি হাসে।
আহাদ আস্তে আস্তে ঐশীকে খাইয়ে দিচ্ছে ঐশী আহাদের দিকে তাকিয়ে খেয়ে নিচ্ছে।
ঐশী খাওয়ার মাঝে আহাদকে প্রশ্ন করে,
ছেলে গুলোকে মে’রেছেন কেন?
আহাদ সোজাসাপ্টা উওর দেয়,
কারণ ওরা আমার জানের দিকে হাত বাড়িয়েছিলো।
ওদের কথার মাঝে ঐশীর ফোন বেজে উঠে,ও ব্যাগ থেকে ফোন বের করে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে দেখে ওর মা কল দিয়েছে।
ঐশী কল রিসিভ করে।
আসসালামু ওয়ালাইকুম আম্মু।
ওয়ালাইকুম আসসালাম,মা তুমি কোথায়,আসতে এতো দেরি হচ্ছে কেন?
আম্মু আমি রেস্টুরেন্টে।
রেস্টুরেন্টে! কার সাথে?
আব আম্মু রিমন আর আন্টির সাথে আসলে ও বাহিরে আসার জন্য বায়না করছিলো তাই ওকে নিয়ে এসেছি।
ওহ আচ্ছা ঠিক আছে,সাবধানে এসো।
আচ্ছা।
আচ্ছা।
আমেনা কল কেটে দেয়।
মাকে মিথ্যে বললে কেন?
সত্যিটা বলা যেতো না।
মায়ের শরীরটা বেশি ভালো না তাই না?
আপনি কি করে জানেন?
গতকাল তুমি হসপিটালে গিয়েছিলে মায়ের চেকআপ করানোর জন্য তাই না?
হ্যাঁ কিন্তু আপনি,
কি করে জানলাম তাই তো,বলেছিলাম না আমার ছায়া সব সময় তোমার আশে পাশে থাকবে,
আমার বর্ডিগার্ডরা আমার ছায়া আর আমার ছায়ারা সব সময় তোমার আড়ালে তোমার উপর নজর রাখবে।
আপনি আমাকে নজর ব’ন্দী করতে চাইছেন?
নতুন করে আর কি করবো তুমি তো আগে থেকেই আমার নজরে ব’ন্দী হয়ে আছো।
ঐশী বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়।
আহাদও উঠে দাঁড়ায়।
ঐশী হাঁটা শুরু করে,ঐশীর পিছে পিছে আহাদও হাটা শুরু করে।
ওরা গাড়িতে উঠে বসে,আহাদ ঐশীকে ওর বাসার সামনে নামিয়ে দেয়।
এভাবে দোখতে দেখতে কেটে যায় ২ টি মাস।
এ ২ মাসে অনেক কিছু হয়েছে।
ঐশীর প্রতি আহাদের ভালোবাসা বেড়েছে,
বেড়েছে ওর প্রতি কেয়ারিং।
এই কদিনে ঐশীর একটা মেয়ের সাথে পরিচয় হয়েছে
মেয়েটার নাম”রোজা”,মেয়েটা ভালো,ভদ্র,মেয়েটা মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান,মেয়েটা খুব সুন্দর কিন্তু কিছুটা ভীতু প্রকৃতির,ঐশী রোজার সাথে চলা ফেরা করে,একসাথে কলেজে আসে,একসাথে বাসায় যায়,
ওদের মাঝে বেশ ভালো বন্ডিং তৈরি হয়েছে।
ঐশী রোজা ভার্সিটিতে ক্লাস করছিলো,স্যার ক্লাস করানো শেষে কক্ষ থেকে চলে যান,স্যার যেতেই কক্ষে আহাদ প্রবেশ করে,ও ঐশীদের বেঞ্চের কাছে আসে,
ঐশী রোজা কথা বলছিলো আহাদকে আসতে দেখে ওরা দুজনেই দাঁড়িয়ে যায়।
রোজা তোমার সাথে কিছু কথা আছে আমার সাথে আসো।
আহাদের কথায় রোজা ভয়ে ঢোগ গিলে।
#চলবে