আমার তোমাকে প্রয়োজন পর্ব-৩৬+৩৭

0
1039

#আমার_তোমাকে_প্রয়োজন💖
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_36

কপি নিষিদ্ধ ❌

বউমা আমার ছেলেটা অনেক কষ্ট পেয়েছে ওর এই টুকু জীবনে অনেক কিছু ঘটেছে অনেক কষ্ট পেয়েছে।
আহাদ তোমাকে অনেক ভালোবাসে তুমিই পারবে ওকে ভালো রাখতে,মা আমার ছেলেটাকে কখনো কষ্ট পেতে দিও না এবার নাহয় ও একটু সুখের মুখ দেখুক।

ছোট মা আমি আপনাকে কি বলে ধন্যবাদ দিবো বুঝতে পারছি না আপনি না থাকলে হয়তো আমি কখনো এসব জানতে পারতাম না আপনি চিন্তা করবেন না আমি আহাদকে আর কষ্ট পেতে দিবো না।

কথা বলতে বলতে অনেক রাত হয়ে গেছে যাও বউমা ঘুমিয়ে পড়ো।

ছোট মা আমরা আগামীকাল চলে যাবো।

কেন?

আমি আমার প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এসেছিলাম আমি আমার উওর পেয়ে গেছি,ভাইয়ার অফিসে অনেক কাজ পড়ে আছে না গেলে প্রবলেম হবে।

আচ্ছা তোমরা যখন যেতে চাইছো তখন আর তোমাদের আটকাবো না যদি এই মায়ের কথা মনে পড়ে তাহলে চলে আসবে।

অবশ্যই আসবো।

সবাই সবার রুমে যেয়ে শুয়ে পড়ে।
সকাল হতেই সিয়াম,ঐশী,মরিয়ম এবং হামিদের সাথে নাস্তা করে ওদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে এয়ারপোর্টে চলে আসে।
সেখানকার সব ফর্মালিটিস পূরণ করে প্লেনে উঠে বসে।

সিয়াম,ঐশী বাসায় চলে আসে।

রাতে ঐশী সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে আনমনে ভাবছে,
“মানুষের জীবন বড়ই অদ্ভুত,রাগি,খুশি মুখটার পেছনে দুঃখের আবরণটা আমরা দেখতে পাই না।
আমি ভাবতাম কেবল আমার জীবনেই কষ্ট আছে কিন্তু আমি ভুল ছিলাম আহাদ আমার থেকে বেশি কষ্টে আছে,ওনার কষ্টের কাছে আমার কষ্ট তো কিছুই না,
আমার বাবা তো মারা গিয়েছেন,কিন্তু ওনার বাবা তো থেকেও নেই।
উনি কিভাবে এত কষ্ট স’হ্য করেছে জানি না তবে আমি কথা দিচ্ছি আহাদকে আর কখনো কষ্ট পেতে দিবো না,
উনি জীবনে অনেক কষ্ট পেয়েছেন এবার উনার সুখের মুখ দেখার পালা,আহাদ আমি আপনায় কথা দিচ্ছি আপনাকে আর কখনো কষ্ট পেতে দিবো না।”

৪ দিন পেড়িয়ে গেল আজ আহাদ বাসায় আসবে,
এ কদিন আহাদকে ছেড়ে থাকতে ঐশীর খুব কষ্ট হয়েছে,কিভাবে যে এতো দিন আহাদের জন্য অপেক্ষা করছে তা কেবল ওই জানে,আজ সেই অপেক্ষার অবসান ঘটবে আজ ওর আহাদ ওর কাছে ফিরে আসবে।

ঐশী বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আহাদের জন্য অপেক্ষা করছে ও আহাদের গাড়ি বাড়িতে প্রবেশ করতে দেখেছে।
হঠাৎই পেছন থেকে কেউ ওকে জড়িয়ে ধরে ঐশী জানে এটা কে তাই তো ও ওর সমস্ত ভর তার উপর ছেড়ে দিয়েছে,আহাদ স্বযত্নে ঐশীকে আগলে রেখেছে।
আহাদ ঐশীর কানে ফিসফিস করে বলে,
জানো জান অপেক্ষা মৃ’ত্যু’র চেয়েও ভ’য়া’ন’ক,এ সাত দিন যে কিভাবে কেটেছে তা তোমায় বলে বুঝাতে পারবো না,প্রতিটা দিন বি’ষা’দে ভরা ছিল তোমাকে ছেড়ে এক মুহূর্তও থাকতে পারছিলাম না মনে হচ্ছিল এই যেন দ’ম বন্ধ হয়ে মা’রা যাবো,কিন্তু আজ তোমায় কথা দিচ্ছি আর কখনো তোমাকে একা রেখে যাবো না হয়তো তোমাকে নিয়ে যাবো নয়তো যাবই না কিন্তু এ অপেক্ষা আমি স’হ্য করতে পারবো না,জান তোমাকে অনেক মিস করেছিলাম।

ঐশী ঘুরে আহাদের বরাবর দাঁড়িয়ে আহাদের গলা জড়িয়ে ধরে বলে,
আমিও আপনাকে অনেক মিস করেছি,আমার প্রতিটা মুহূর্ত বি’ষা’দে ভরা ছিল,সত্যি অপেক্ষা মৃ’ত্যু’র চেয়েও ভ’য়া’ন’ক।

রাত ৩ টায়,
আহাদ ঐশীর গলায় মুখ গুঁজে ছোট ছোট ভালোবাসার পরশ একে দিচ্ছে,ঐশী চাদর খামছে ধরে চোখ বন্ধ করে আহাদের দেওয়া পরশ গুলো অনুভব করছে।
আহাদ ঐশীর গলা থেকে মুখ তুলে ঐশীর ঠোঁট জোড়া দখল করে নেয়।
আহাদ ঐশীকে ভালোবাসতে মগ্ন কিন্তু ঐশীর মনে তো চলছে অন্য কিছু,ও আস্তে করে আহাদকে সরিয়ে উঠে বসে,আহাদ বিছানার সাথে হেলান দিয়ে ঐশীকে কাছে টেনে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়।
ঐশী ভাবছে কথা গুলো কি বলা ঠিক হবে কথা গুলো বলতে ভয় লাগছে তবুও ঐশী সাহস সঞ্চয় করে বলে,
আহাদ কিছু বলার ছিল।

আহাদ ঐশীর কাঁধে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলে,
হুম জান বলো।

আমি আপনার না বলা অতীত সম্পর্কে জেনে গেছি।

আহাদ হেসে বলে,
আমি জানি তুমি ছোট মায়ের কাছে গিয়েছিলে।

ঐশী ঘুরে অবাক হয়ে বলে,
কিহ!

হ্যাঁ জান আমি জানি,আর আমি এটাও জানি ছোট মা তোমাকে সব কিছু খুলে বলেছে আর আমিও চেয়েছিলাম তুমি যেন নিজ থেকে আমার অতীতের সন্ধানে বের হও তাই তোমায় কিছু বলিনি।

আপনার খুব কষ্ট হয়?

আগে হতো এখন না এখন তোমাকে পেয়ে সব কষ্ট ভুলে গেছি।

মাকে খুব মনে পড়ে তাই না।

হুম খুব মনে পড়ে।

বাবাকে ক্ষমা করা যায় না?

নাহ।

কেন সে তো আপনার বাবা।

হ্যাঁ বাবা কিন্তু সে শুধু নামের বাবা সে যদি কেবল আমাকে কষ্ট দিতো তবে ওনাকে আমি মাফ করে দিতাম কিন্তু সে আমার মাকে ধোঁ’কা দিয়েছে,
কষ্ট দিয়েছে,অপমান করেছে,গায়ে হাতও তুলেছে,
মায়ের মৃ’ত্যু’র জন্য কেবল আর কেবল উনি দ্বায়ী,
আমি ওনাকে কখনো ক্ষমা করবো না,আমার মা যখন অসুস্থ ছিল তখন উনি একটি বারও দেখা করতে যাননি,এমনকি যখন মা মা’রা যায় তখনও উনার মুখে কষ্টের রেশ মাএও ছিল না আমার মা মা’রা যাওয়াতে সে খুশি হয়েছিল।
জানো ঐশী উনি কখনো আমায় ভালোবাসেনি,
একদিনও বাবা বলে বুকে জড়িয়ে নেননি,কখনো আমার চুলে হাত বুলাননি।
স্কুলে যখন দেখতাম অন্য বাচ্চাদের বাবা ওদের কোলে তুলে স্কুলে নিয়ে আসে,চুলে হাত বুলিয়ে কপালে ভালোবাসার পরশ একে দেয় তখন না খুব কষ্ট হতো কষ্টে বুকটা ফে’টে যেতো,ঐশী আমার বাবা থাকতেও ছিল না।
উনি আমার থেকে উনার ভাইকে বেশি ভালোবাসতেন,
সেদিন আমার হাতে টপটা দেখে উনি ভেবে নিলেন আমিই চাচ্চুকে মে’রে’ছি,উনি না একটা বারও আমায় জিজ্ঞেস করেননি আমি কি সত্যি চাচ্চুকে মে’রেছি?
উনি চোখের দেখা বিশ্বাস করেই আমাকে সং’শো’ধ’নী কে’ন্দ্রে পাঠিয়ে দিলেন।
শুধু মাত্র ছোট মা এবং ছোট বাবার জন্য আমি এতটা বড় হতে পেরেছি সবার সামনে মাথা উঁচু করে কথা বলতে পারছি,সব চেয়ে বড় কথা আমি সুস্থ ভাবে বেঁচে আছি।
উনি যদি আমার মায়ের হাত মাঝ পথে ছেড়ে না দিতো তাহলে আর আমাকে এ দিন দেখতে হতো না,এত কষ্ট পেতে হতো না।
আমি আয়মান শেখকে ঘৃ’ণা করি,ওনাকে বাবা বলে মানি না উনি বাবা নামের ক’ল’ঙ্ক,আমি আয়মান শেখকে ঘৃ’ণা করি,ঘৃ’ণা করি।
কথা গুলো বলতে বলতে আহাদের চোখে অশ্রু টলটল করে উঠে ঐশী আহাদকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আহাদ চোখ বন্ধ করে ফেলে আর সেই বন্ধ চোখ থেকেই এক ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ে।

আহাদ আপনি একা নন আমি আছি আপনার পাশে,
আপনি জীবনে অনেক কষ্ট পেয়েছেন কিন্তু কথা দিচ্ছি
আপনাকে আর কখনো কষ্ট পেতে দিবো না আগলে রাখবো,মন গহীনে আপনাকে লুকিয়ে রাখবো কষ্টের ছায়াও আপনার উপর পড়তে দিবো না,এতোটাই ভালোবাসবো যে আপনার সব কষ্ট ঘুচে যাবে।
আহাদ কথা দিচ্ছি আপনাকে কখনো কষ্ট পেতে দিবো না,কখনো না।
ঐশীর কথা শুনে আহাদ ঐশীকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।

রাত পেড়িয়ে দিন হলো।

আহাদ,ঐশী রেডি হচ্ছে,ওরা দুজন রেডি হয়ে নিচে চলে
আসে,ওরা সিয়াম,রোজার সাথে বসে নাস্তাটা সেড়ে ফেলে।
ওরা চার জন গাড়িতে উঠে বসে,ঐশী,রোজাকে ভার্সিটিতে নামিয়ে দিয়ে ওরা দুজন অফিসে চলে যায়।
রোজাকে ক্লাসে যেতে বলে ঐশী সামনের দিকে হাঁটা শুরু করে।

ঐশী বসে আছে আয়মান শেখের সামনে।

#চলবে

#আমার_তোমাকে_প্রয়োজন💖
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_37

কপি নিষিদ্ধ ❌

ঐশী বসে আছে আয়মান শেখের সামনে।
ওরা দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে।
আয়মান ভনিতা ছেড়ে বলে,
কেমন আছো বউমা?

আলহামদুলিল্লাহ,আপনি কেমন আছেন?

এইতো আছি কোনো রকম।

আপনাকে দেখে অসুস্থ মনে হচ্ছে।

হ্যাঁ অনেক দিন যাবৎ অসুস্থ আমি।

কি হয়েছে বাবা?

ও কিছু না,তুমি আজ হঠাৎ আমার কাছে আসলে যে?

আপনার সাথে কিছু কথা বলার ছিল।

হ্যাঁ বলো।

বাবা আমি আপনার আর আহাদের মাঝের দ্ব’ন্দ্বের কারণ জানি।
ঐশীর কথায় আয়মান চুপ হয়ে যায়।

আপনি মায়ের সাথে কি করেছেন না করেছেন সেগুলো নিয়ে আমি কথা বলবো না কিন্তু আহাদের বিষয়ে কিছু কথা বলতে চাই,চাচ্চুকে আহাদ খু’ন করেনি।

কিহ!

হ্যাঁ আহাদ খু’ন করেনি খু’ন করেছে ছোট মা।
ঐশী আয়মানকে সবকিছু খুলে বলে।

বাবা আশা করি আপনি সব কিছু বুঝতে পেরেছেন।

তার মানে আমি কোনো কিছু তদন্ত না করেই নিজের ছেলেকে দো’ষী সাব্যস্ত করে দিলাম।

বাবা আহাদ আপনার থেকে অনেক কষ্ট পেয়েছে অতীতের করা কাজ তো আর শুধরানো যাবে না কিন্তু এখন চাইলেই আপনারা নিজেদের মধ্যেকার দ্ব’ন্দ্ব মিটিয়ে নিতে পারেন,দুজন দুজনের সাথে কথা বলেন,
আপনি আহাদকে ছেলে বলে বুকে জড়িয়ে নিন আমার বিশ্বাস আহাদ আপনাকে ফিরিয়ে দিবে না।
_

আহাদ গাড়িতে বসে আছে ঐশীর ভার্সিটিতে আসছে, আজ অফিসে কাজ ছিল না তাই ভাবলো ঐশীকে নিয়ে কোথাও ঘুরতে বের হবে।

আহাদ ভার্সিটিতে চলে আসে ঐশীর ক্লাসরুমে এসে দেখে রোজা একা বসে আছে।

রোজা একা বসে আছে কেন ঐশী কোথায়?
কথাটা ভেবে আহাদ রোজার কাছে যায়।
রোজা আহাদকে দেখে দাঁড়িয়ে যায়।

ভাইয়া আপনি এখানে!

রোজা ঐশী কোথায়?

ও তো আঙ্কেলের রুমে গিয়েছে।

আহাদ মনে মনে বলে,আয়মান শেখের কাছে কেন গিয়েছে?

আহাদ দ্রুত পায়ে ক্লাস রুম থেকে বের হয়ে সামনের দিকে হাঁটা শুরু করে।
_

বাবা একটিবার আমার কথা শুনে দেখুন ওনাকে ছেলে বলে কাছে টেনে নিন প্লিজ ওনাকে আর অবহেলা করবেন না।

“ঐশী”
হঠাৎ আহাদের ধ’মকে ঐশী কেঁপে উঠে পেছনে ফিরে দেখে আহাদ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
ঐশী আহাদকে দেখে ভয়ে ঢক গিলে।

আহাদ ঐশীর কাছে এসে ঐশীর হাত ধরে টেনে চেয়ার থেকে উঠিয়ে বলে,
তুমি কোন সাহসে এখানে এসেছো,ওনার সামনে আকুতি মিনতি কেন করছো,আমি কি একটি বারও বলেছি ওনার কাছে আসতে,কেন এসেছো এখানে,
বলো কেন এসেছো?
আহাদের ধমকে ঐশী কেঁপে উঠে ভয়ে আহাদের দিকে চোখ তুলে তাকাতে পারছে না।

আহাদ কিছু বলবে তার পূর্বে আয়মান বলে,
বাবা আহাদ এমন করছো কেন,বউমাকে ধমকাচ্ছো কেন?

আয়মানের মুখে বাবা ডাক শুনে আহাদ আরো রেগে যায়।

বাবা! কোন মুখে আমায় বাবা বলে ডাকছেন,যে মানুষ কিনা নিজের সন্তানকে একটি বার ছুয়ে পর্যন্ত দেখেনি সে কি না আজ আমায় বাবা বলে ডাকছে।

বাবা আহাদ আমার ভুল হয়েছে আমি মানছি তোমাকে অবহেলা করা উচিত হয়নি আমাকে ক্ষমা করে দাও।

ক্ষমা! আপনি কিসের জন্য ক্ষমা চাইছেন,আপনি তো কোন ভুল করেননি আপনি কিসের জন্য ক্ষমা চাইছেন,
আর বাবা বলে ডাকছেন যে,কে আপনার ছেলে?

তুমি,তুমি আমার ছেলে।

আয়মানের কথা শুনে আহাদ পা’গলের মতো হাসতে লাগলো।
হাহা ছেলে,শুনলে ঐশী উনি আমাকে ছেলে বলে ডাকছেন,লিসেন মিস্টার আয়মান শেখ না তো আপনি আমার বাবা আর না তো আমি আপনার ছেলে,
আমার মা যেদিন মারা গিয়েছিল সেদিনই তো আমাদের মাঝে সব সম্পর্ক শেষ হয়ে গিয়েছিল,
তবে আজ কেন আমায় ছেলে বলে দাবি করছেন।

আহাদ আমি তোমার বাবা তুমি আমার ছেলে।

মানি না,আপনি আমার বাবা না।

তুমি না মানলেও এটাই সত্যি,আমি তোমার বাবা আমি জানি আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি আমাকে মাফ করে দাও তোমাকে অবহেলা করা উচিত হয়নি।

মাফ করে দিবো! ঠিক আছে মাফ করে দিবো আপনি আমার মাকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিন,আমার মায়ের কষ্ট গুলো ফিরিয়ে দিন,আমার মায়ের চোখের জল মুছিয়ে দিন,আমার মায়ের চোখের জলের মূল্য দিন।
আমার সুন্দর শৈশব ফিরিয়ে দিন,আমার শৈশবের কষ্ট ঘুচিয়ে দিন,আমার চোখের জলের মূল্য দিন,আমার সেই দিন গুলো ফিরিয়ে দিন।

আহাদের কথায় আয়মান মাথা নিচু করে ফেলে।

কি হলো পারবেন না,বলুন পারবেন না এগুলো ফিরিয়ে দিতে?

আয়মান এবারও চুপ।

আপনি যেহেতু এগুলো ফিরিয়ে দিতে পারবেন না আমিও আপনাকে ক্ষমা করতে পারবো না।
আপনি খু’নি,আপনি আমার মাকে খু’ন করেছেন,
আমার মায়ের ভালোবাসা,বিশ্বাসকে গ’লা টি’পে হ’ত্যা করেছেন,আপনি আমার মায়ের খু’নি আপনাকে আমি কখনো ক্ষমা করবো না।

“আপনি খু’নি,আপনি আমার মাকে খু’ন করেছেন,
আমার মায়ের ভালোবাসা,বিশ্বাসকে গ’লা টি’পে হ’ত্যা করেছেন,আপনি আমার মায়ের খু’নি আপনাকে আমি কখনো ক্ষমা করবো না।”
আহাদের বলা কথা গুলো আয়মানের কানে বাজাচ্ছে,
হঠাৎ আয়মানের বুকে ব্যাথা শুরু হয়ে যায়।

আহাদ ঐশীর হাত ধরে চলে যাওয়ার জন্য পেছনে ঘুরে সামনের দিকে পা বাড়ায়।

আয়মান “আহ” করে বুকে হাত দিয়ে মেঝেতে পড়ে যায়।

আয়মানের পড়ে যাওয়ার শব্দ শুনতেই আহাদ ঐশী পেছন ফিরে তাকায়।
আয়মানকে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে ওরা দ্রুত পায়ে আয়মানের কাছে আসে।

আহাদ আয়মানের মাথা ওর কোলের উপর রাখে,
আয়মান ব্যাথা ছটফট করছে।
বাবা তুমি চিন্তা করো না তোমার কিচ্ছু হবে না,চলো হসপিটালে যেতে হবে।

আহাদের মুখে বাবা ডাক শুনে আয়মান ব্যাথার মধ্যেও শান্তি অনুভব করে।
আয়মান অনেক কষ্টে করে বলে,
ধন্যবাদ আমাকে বাবা বলে ডাকার জন্য,আহাদ আমি হয়তো আর বাঁচবো না।

বাবা এসব কি বলছো তোমার কিচ্ছু হবে না।

না বাবা আমার হাতে আর সময় নেই,বাবা আমাকে মাফ করে দাও,তোমার সাথে করা অন্যায়ের জন্য আমাকে মাফ করে দাও,তোমাকে অবহেলা করার জন্য আমাকে মাফ করে দাও,বাবা আমাকে মাফ করে দাও দয়া করে মাফ করে দাও।

বাবা এসব বলছো কেন চলো হসপিটালে চলো।

আহাদ একবার বলো আমাকে মাফ করেছো,তুমি মাফ না করলে আমি ম’রেও শান্তি পাবো না।

আমি তোমাকে মাফ করেছি বাবা,তুমি আর এসব কথা বলো না,চলো হসপিটালে চলো।
আহাদের কথা শুনে আয়মান মুচকি হেসে আহাদের কোলে শে’ষ নি’শ্বা’স ত্যা’গ করে।
আহাদ “বাবা” বলে থ’ম মে’রে বসে রয় আহাদ এক দৃষ্টিতে আয়মানের দিকে তাকিয়ে আছে,ঐশী কাঁদতে কাঁদতে সিয়ামকে কল দেয়।

ঐশীর কথা শুনে সিয়াম গাড়িতে উঠে বসে সিয়াম দ্রুত ড্রাইভ করে ভার্সিটিতে চলে আসে।
সিয়াম আয়মানের রুমে এসে দেখে আয়মানের লা’শের সামনে ঐশী কাঁদছে রোজা ঐশীকে শান্ত করার চেষ্টা করছে,আহাদ আয়মানের দিকে তাকিয়ে থ’ম মে’রে বসে আছে,সিয়াম দ্রুত পায়ে আহাদের কাছে আসে।
ও আহাদকে কিভাবে সান্ত্বনা দিবে বুঝতে পারছে না।

আহাদ সিয়ামের দিকে তাকিয়ে শান্ত গলায় বলে,
সিয়াম বাবার দা’ফ’ন কা’ফ’নে’র ব্যবস্থা করো।

আহাদ,সিয়াম আয়মানের দা’ফ’ন কা’ফ’নের কাজ শেষ করে বাসায় চলে আসে,আহাদ রুমে এসে দেখে ঐশী বিছানায় বসে আছে,আহাদ ঐশীর সাথে কথা না বলে ওয়াশরুমে চলে যায়,বেশ কিছুক্ষণ পর গোসল করে ওয়াশরুম থেকে বের হয়,ঐশী দেখে আহাদের চোখ জোড়া লা’ল হয়ে আছে,হঠাৎ আহাদ ঐশীর কাছে এসে ঐশীকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে,ঐশী আহাদের চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে,হঠাৎ ঐশী ওর কাঁধে তরল কিছু অনুভব করে ওর আর বুঝতে বাকি নেই আহাদ কাঁদছে।

#চলবে

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে