#আমার_তোমাকে_প্রয়োজন💖
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_22
কপি নিষিদ্ধ ❌
আহাদ কাজ শেষ করে ৪ টার দিকে হোটেলে ফিরে আসে,রুমের দরজা খুলে ভেতরে এসে ঐশীকে রুমে দেখতে পায় না ও ভাবে ঐশী হয়তো বারান্দায় আছে,
আহাদ ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।
ফ্রেস হয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে টাওয়াল দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে বারান্দায় আসে কিন্তু এখানেও ঐশী নেই।
কি ব্যাপার জান রুমে নেই বেলকনিতেও নেই কোথায় গিয়েছে?
আহাদ টেবিলের উপর থেকে ফোনটা নিয়ে ঐশীর নাম্বারে কল দেয় কিন্তু ফোন বন্ধ।
ফোন বন্ধ! ঐশীর ফোন বন্ধ কেন,ও কোথায় গিয়েছে?
আহাদ ফোন হাতে নিয়ে রুম থেকে বের হয়।
ও দ্রুত নিচে এসে গার্ডকে প্রশ্ন করে,
ঐশী কোথায়?
আহাদের কথায় গার্ড অবাক হয়ে যায়,
স্যার ম্যাম তো আপনার সাথে ছিল।
ওয়াট!
সিয়াম ওদিক দিয়ে যাচ্ছিল,ওদের দেখে ওদের কাছে আসে।
কি হয়েছে?
সিয়াম স্যার স্যার আমাকে ম্যামের কথা জিজ্ঞেস করছে কিন্তু ম্যাম তো ওনার সাথে ছিল।
কি যাতা বলছো যদি আমার সাথেই থাকতো তবে কি তোমাকে জিজ্ঞেস করতাম নাকি।
কিন্তু স্যার আপনিই তো ম্যামকে হোটেলের বাহিরে যেতে বলেছিলেন।
আমি বলছি!
সিয়াম গার্ডকে বলে,
আচ্ছা তুমি সব কিছু ক্লিয়ার করো বলো তো।
স্যার ২ টার দিকে ম্যাম তার রুম থেকে বের হয়ে নিচে আসেন আমি উনাকে দেখে জিজ্ঞেস করি উনি একা কোথায় যাচ্ছেন,ম্যাম আমাকে বলেন স্যার নাকি উনাকে হোটেলের বাহিরে যেতে বলেছেন স্যার নাকি বাহিরে ম্যামের জন্য ওয়েট করছেন,আমি ম্যামকে এগিয়ে দিয়ে আসতে চাইলে “আমি একা যেতে পারবো” কথাটা বলে উনি বাহিরে চলে যান।
আহাদ গার্ডের কথা শুনে দ্রুত হোটেলের বাহিরে চলে যায়,কিছুটা দুর যেতে ব্যাগ জাতীয় কিছু মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে সেদিকে এগিয়ে যায়,সেখানে একটি ব্যাগ এবং ফোন পড়ে আছে আহাদ ব্যাগ এবং ফোন দেখেই বুঝতে পারে এগুলো ঐশীর।
আহাদের পিছে পিছে সিয়ামও আসে।
সিয়াম আমাদের এখনই বের হতে হবে।
____
জারিফ ঐশীর দিকে তাকিয়ে আছে,জারিফ ওখানে উপস্থিত লোকের মধ্যে থেকে একজনকে পানি ভর্তি বালতি নিয়ে আসতে বলে,লোকটা পানি ভর্তি বালতি নিয়ে আসে,জারিফ পানিগুলো ঐশীর গায়ে ঢেলে দিতে বলে,লোকটা তাই করে,জারিফ সবাইকে হাতের ইশরায় এখান থেকে চলে যেতে বলে,সবাই চলে যায়।
গায়ে পানি পড়াতে ঐশীর জ্ঞান ফিরে আসে,ঐশীর সমস্ত শরীর ভিজে গিয়েছে,ঐশী পিট পিট করে চোখ মেলে তাকায় নিজেকে একটা গোডাউনে আবিষ্কার করে,ঐশী হাত নাড়াতেই বুঝতে পারে ওর হাত পা চেয়ারের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছে,ঐশী সামনের দিকে তাকাতেই জারিফকে দেখতে পায়,জারিফ ঐশীর সামনে চেয়ারে পায়ের উপর পা তুলে বসে আছে।
ঐশী জারিফকে দেখে ভয় পেয়ে যায়।
ভয় পাচ্ছো কেন,আহাদ শেখের বউয়ের চেহারায় ভয় মানায় না।
আপনি না জে’লে ছিলেন।
বাহ আমাকে চিনো নাকি?
আপনি নারী পা’চার’কা’রী জারিফ না?
বাহ ঠিক চিনেছো তো আমায়।
আমাকে এখানে এনেছেন কেন?
প্র’তি’শো’ধ নিতে।
প্র’তি’শো’ধ!
হ্যাঁ প্র’তি’শো’ধ আমার ভাইয়ের মৃ’ত্যুর প্র’তি’শো’ধ,
আহাদ আমার ভাই রুস্তমকে এ’ডি’সে ডু’বি’য়ে মে’রে’ছে আজ আমি ওর বউকে মে’রে আমার ভাইয়ের মৃ’ত্যুর প্রতি’শো’ধ নিবো।
জারিফের কথায় ঐশী চুপ হয়ে যায়।
জারিফ এবার চেয়ারে আরাম করে বসে,ঐশীকে উপর থেকে নিচ অব্দি দেখছে মনে হচ্ছে চোখ দিয়েই গিলে খাচ্ছে,জারিফের বাজে চাহনি ঐশীর স’হ্য হচ্ছে না,
ও হাতের বাঁধন খোলার জন্য হাত মোচরাচ্ছে।
আ আহ কি করছো হাত কেটে যাবে তো।
আহাদের চয়েস মানতে হবে তোমার যেমন রুপ তেমন ফিগার উফফ মাথা নষ্ট করার মতো আর ভেজা শাড়ীতে তো অনেক হ’ট লাগছে।
জারিফ ঐশীর গালে হাত দিতে গেলে ঐশী মুখ ফিরিয়ে নেয়,জারিফ হাত সরিয়ে ফেলে।
তোমার মতো সুন্দর পরীকে সঁপিসের মতো সাজিয়ে রাখতে ইচ্ছে করছে কিন্তু কি করবো বলো তোমাকে তো মা’র’তেই হবে,আহাদ যেমন আমার বাসায় আমার ভাইয়ের লা’শ পাঠিয়েছিলো আমি ঠিক সেভাবেই তোমার লা’শ আহাদের কাছে পাঠাবো,আমার ভাইকে মে’রেছিলো তো এবার আমি দেখবো নিজের বউয়ের লা’শ কিভাবে দেখতে পারে।
মে’রেছে ভালো করেছে আপনার মতো নারী পা’চা’রকা’রী খারাপ মানুষের ভাই কি ভালো হবে নাকি সেও নিশ্চয়ই নারী পা’চা’রকা’রী বা অ’বৈ’ধ ব্যবসায়ী,
খারাপ মানুষ,আমার স্বামী সেই খারাপ মানুষটাকে মে’রে’ছে বেশ করেছে আজ আপনাকেও মা’রবে,
কি ভেবেছেন আহাদ শেখের বউকে তুলে নিয়ে আসবেন আর আহাদ শেখ পায়ের পা তুলে বসে থাকবে?
নো,দেখুন হয়তো চলেই এসেছে,আজ উনার হাতে আপনিও ম’র’বে’ন,ভাইয়ের মৃ’ত্যুর প্র’তি’শো’ধ নিতে এসে নিজেই লা’শ হয়ে যাবেন।
ঐশীর এই তি’ক্ত কথায় জারিফের রাগ উঠে যায়,
জারিফ ঠা’স করে ঐশীর গালে চ’ড় বসিয়ে দেয়,
জারিফ অনেক জোরে চ’ড়টা মে’রে’ছে ঐশীর ঠোঁট কেটে র’ক্ত বের হচ্ছে ঐশী তাল সামলাতে না পেরে চেয়ার সমেত মেঝেতে পড়ে যায়।
__
স্যার আমরা কোথায় যাচ্ছি?
ঐশীর কাছে।
ম্যাম কোথায় আপনি জানেন?
হুম,ও আমাদের থেকে কিছুটা দূরে আছে ওর কাছে পৌঁছাতে বেশিক্ষণ লাগবে না।
কিন্তু আপনি কি করে,
আমি কি করে জানি তাই তো।
সিয়াম মাথা নাড়ায়।
লোকেশন ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে।
লোকেশন ট্র্যাকিং!
হ্যাঁ।
কিন্তু কিভাবে?
ঐশীর হাতে ব্রেসলেট দেখেছিলে?
হ্যা তার মানে,
ঠিক বুঝছো ঐ ব্রেসলেটের মধ্যে আমি এমন এক ডিভাইস বসিয়েছি যার মাধ্যমে ঐশী কখন কোথায় যাবে আমি তা আমার ফোনেই জানতে পারবো।
তাই ঐশী এখন কোথায় আছে তা আমি জানি।
__
জারিফ ঐশীকে তুলে মুখ চে’পে ধরে হুঙ্কার দিয়ে বলে,
কি বললি তুই আহাদ আমার ভাইকে মে’রে’ছে ভালো করেছে,আজ আমাকেও ওর হাতে ম’রতে হবে।
তোর কি মনে হয় আহাদ আমাকে মা’রতে পারবে এই জঙ্গলে আহাদ আসতে পারবে?
নো ডিয়ার বেবি ডল এই জঙ্গলে কেউ আসতে পারবে না তোর আহাদ এই জঙ্গলে আসতে পারবে না।
আসবে আহাদ আমাকে বাঁচাতে আসবে আর তোকে মে’রে ফেলবে।
বাহ এতো বিশ্বাস,তুই যখন বলছিস তোর আহাদ আসবে ঠিক আছে মেনে নিলাম কিন্তু এসে তোকে আর জীবিত পাবে না ও তোর লা’শ পাবে,তোকে আমি মে’রে ফেলবো।
জারিফ ঐশীর কপালে রিভ’লবা’র ঠেকায়,ট্রি’গা’রে চাপ দিবে তখনই একটা গু’লি এসে জারিফের হাতে লাগে আর জারিফের হাত থেকে রি’ভ’ল’বা’রটা পড়ে যায়,জারিফের হাত থেকে র’ক্ত পড়ছে।
গু’লির শব্দে ঐশী চোখ মেলে তাকায় নিজের সামনে জারিফের হাত থেকে র’ক্ত পড়তে দেখে ঐশী গাড় ঘুরিয়ে পেছনে ফিরে তাকায় আর তাকাতেই রি’ভ’ল’বা’র হাতে আহাদকে দেখতে পায়,আহাদের পেছনে সিয়াম ও গার্ডরা রি’ভ’ল’বা’র হাতে দাঁড়িয়ে আছে,জারিফের হাতে আহাদ গু’লি করেছে।
গোডাউনের দরজার কাছে আসতেই জারিফকে ঐশীর কপালে রি’ভ’ল’বার ঠেকিয়ে রাখতে দেখে আহাদ জারিফের হাতে গু’লি করে।
গু’লির শব্দে জারিফের লোক এখানে চলে আসে,
আহাদদের দেখের ওদের উপর গু’লি ছোড়ার আগেই আহাদের গার্ডরাই গু’লি ছোড়ে,শুরু হয় গো’লা’গু’লি।
আহাদ জারিফকে মা’রছে,জারিফও আহাদকে মা’রছে,
আহাদ জারিফের হাঁটুতে লা’থি মা’রলে জারিফ হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে আহাদ জারিফের মুখে ঘু’ষি মে’রে বুকে লা’থি মা’রে জারিফ ছি’টকে দূরে যেয়ে পড়ে।
সিয়াম ওকে নিয়ে যাও।
আহাদের কথা মতো সিয়াম জারিফকে তুলে উঠায়।
আহাদ হেঁটে ঐশীর কাছে আসে,আহাদ ঐশীর সামনে এসে হাঁটু গেড়ে বসে,আহাদকে দেখামাত্রই ঐশীর চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ে,আহাদ ঐশীর চোখের জল মুছে দেয়,হাতের এবং পায়ের বাঁধন খুলে দেয়।
আহাদ ঐশীর বাহু ধরে দাঁড় করায়,ঐশী আহাদকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে,আহাদও ওকে জড়িয়ে ধরে।
জান ভয় পেয়েছিলে?
ঐশী মাথা নাড়ায় যার অর্থ না সে ভয় পায়নি।
আমার আপনার উপর বিশ্বাস ছিল আমি জানতাম আপনি আমাকে বাঁচাতে আসবেন।
ঐশী একথায় আহাদের শান্তি লাগে।
আহাদ ওর পড়নের কোট খুলে ঐশীকে পড়িয়ে দেয়,
রুমাল দিয়ে ঠোঁটের র’ক্ত মুছে দেয়,ঐশী আহাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
আহাদের মেঝেতে চোখ পড়ে ওর রিভ’লবা’রটা মেঝেতে পড়ে আছে,ও ঐশীর কাছ থেকে সরে মেঝে থেকে রি’ভ’ল’বা’রটা হাতে উঠিয়ে নেয়।
সিয়াম জারিফকে নিয়ে যাচ্ছিল কিন্তু দরজার কাছে আসতেই জারিফ সুযোগ বুঝে ঝাড়া দিয়ে সিয়ামের হাত থেকে ছুটে গার্ডের রি’ভ’ল’বা’র নিয়ে ঐশীর দিকে তাক করে গু’লি ছোড়ে।
ঐশী আহাদের দিকে তাকিয়ে ছিল,আহাদ ঐশীর কাছে আসতে আসতে জারিফের হাতে রি’ভ’ল’বা’র দেখতে পায়,আহাদ দ্রুত ঐশীর কাছে এসে ওর হাত ধরে টান দেয়,আহাদ ঐশীকে নিয়ে মেঝেতে পড়ে যায়।
আহাদ হাত উঠিয়ে জারিফের বুকে কপালে গু’লি করে দেয়,জারিফের মৃ’ত্যু দেহ মেঝেতে পড়ে যায়।
ঐশী আহাদের উপর থেকে সরে আসে আহাদ উঠে দাঁড়ায়,ঐশী জারিফের লা’শের দিকে তাকায় আর ওর নিজের বলা কথা গুলো মনে পড়ে যায়।
ঐশীর কথাই ঠিক হলো জারিফ ওর ভাইয়ের মৃ’ত্যু’র প্র’তি’শো’ধ নিতে এসে নিজেই লা’শ হয়ে গেলে।
জান কি ভাবছো?
না কিছু না।
ঠিক আছো?
হুম।
চলো।
ওরা গোডাউন থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠে বসে।
গাড়ি চলতে শুরু করে।
ঐশীর ঠান্ডা লাগছে,গায়ের ভেজা শাড়ী এখনো শুকায়নি,ঐশীকে ঠান্ডায় কাপতে দেখে আহাদ ঐশীকে নিজের সাথে মিশিয়ে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে।
#চলবে
#আমার_তোমাকে_প্রয়োজন💖
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_23
কপি নিষিদ্ধ ❌
ওরা হোটেলে ফিরে আসে,আহাদ ঐশী রুমে চলে আসে।
জান ড্রেস চেঞ্জ করে আসো আমরা একটু পর ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিবো।
ঐশী মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
আহাদ ঐশীর কাছে এসে গালে হাত রেখে মৃদু স্বরে বলে,
কি হয়েছে জান?
আপনি কি আমার উপর রেগে আছেন?
না তো।
সত্যি করে বলুন।
না জান রাগ করিনি তবে এরপর থেকে কখনো একা বের হবে না,ঠিক আছে।
হুম।
এখনো মন খারাপ করে আছো কেন?
সরি আমার জন্য আপনাকে সবসময় চিন্তিত থাকতে হয়।
আহাদ ঐশীর কোমড় জড়িয়ে ধরে,
চিন্তা না করলে কি হবে নাকি যার এতো সুন্দর বউ তাকে তো চিন্তা করতেই হবে,শুনো তুমি যেমন আমার শক্তি তেমনই আমার দূর্বলতা,আমার শ’ত্রু তোমাকে আ’ঘা’ত করে আমাকে দূর্বল করতে চাইবে।
তাই তোমাকে সাবধানে থাকতে হবে,আমার জীবনের সাথে তোমার নাম জড়িয়ে গেছে তাই তোমাকে একটু সাবধানে থাকতে হবে,একা কোথাও যাবে না সব সময় গার্ড নিয়ে বের হবে,বুঝেছো?
হুম।
যাও ড্রেস চেঞ্জ করে আসো।
আহাদের কথা মতো ঐশী শাড়ী নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়,আহাদ ওর পড়নের শার্টটা পাল্টে ফেলে।
বেশকিছুক্ষণ পর ঐশী ওয়াশরুম থেকে বের হয়।
আহাদ টাওয়াল দিয়ে ঐশীর চুল মুছে হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকিয়ে চুল আঁচড়িয়ে দেয়।
আহাদ হাতে ঘড়ি পড়ে লাগেজ নিয়ে ঐশীর হাত ধরে রুম থেকে বের হয়।
ওরা হোটেলের বাহিরে এসে গাড়িতে উঠে বসে।
গাড়ি চলতে শুরু করে,ওরা পথেই একটা রেস্টুরেন্টে ডিনার করে নেয়।
সাতটার দিকে ওরা বাসায় এসে পৌঁছায়।
আহাদ ঐশীর গলায় মুখ গুঁজে ঐশীকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে,ঘুম নেই ঐশীর চোখে।
“আরো একবার আপনার প্রেমে পড়ে গেলাম,আপনার থেকে দূরে সরে যাওয়ার চেষ্টা করলাম কিন্তু পারলাম না সেই ঘুরে ফিরে আপনার কাছেই ফিরে আসতে হলো আপনাকেই ভালোবাসতে হলে,আপনি আমার জীবনের সাথে জড়িয়ে গেছেন,আমরা বিবাহ নামক বন্ধনে জড়িয়ে গেছি,এ বাঁধন থেকে আমি ছাড়া পেতে চাই না,
আমি সারাটা জীবন আপনার অর্ধাঙ্গীনী হয়ে থাকতে চাই,আরো একবার আপনাকে ভালোবাসতে চাই,
আমি আপনার সাথে বাকিটা জীবন কাটাতে চাই আপনার সাথে থাকতে চাই,সুখে থাকতে চাই।”
আহাদের ঘুমন্ত চেহারার দিকে তাকিয়ে ঐশী কথা গুলো ভাবছে।
পরদিন,
আহাদ ঘুম থেকে উঠে দেখে ঐশী নামাজ পড়ছে।
আহাদ ওকে নামাজ পড়তে দেখে কাল বিলম্ব না করে কাবার্ড থেকে পাঞ্জাবি পায়জামা নিয়ে ওয়াশরুমে যেয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে ওযু করে বের হয়,বেডের উপর থেকে জায়নামাজটা নিয়ে ঐশীর পাশে ঐশীর থেকে একটু সামনে জায়নামাজ বিছিয়ে নামাজে দাঁড়ায়।
ঐশী সালাম ফিরিয়ে সামনে তাকিয়ে আহাদকে নামাজ পড়তে দেখে মুচকি হেসে মুনাজাত ধরে।
ঐশী নামাজ শেষে কুরআন শরীফ এনে কোরআন তিলাওয়াত করে।
আহাদ নামাজ শেষ করে জায়নামাজটা ঐশীর জায়নামাজের সাথে বিছিয়ে চোখ বন্ধ করে ঐশী কোরআন তিলাওয়াত শুনে,কোরআন তিলাওয়াত শুনতেই আহাদের মন শান্ত হয়ে যায়।
ঐশী একমনে কোরআন তিলাওয়াত করছে আর আহাদ চোখ বন্ধ করে মন দিয়ে কোরআন তিলাওয়াত শুনছে।
কোরআন তিলাওয়াত শেষে ঐশী দোয়া পড়ে নিজের এবং আহাদের বুকে ফু দেয়।
আহাদ ওর কপালে চুমু দিয়ে ওর হাত ধরে উঠায়।
আজ আপনি আমার সাথে নামাজ পড়েছেন আমার পাশে বসে কোরআন তিলাওয়াত শুনেছেন আমার খুব ভালো লেগেছে।
আজ থেকে প্রতিদিন আমরা ফজরের নামাজ এবং তাহাজ্জুদ নামাজ একসাথে আদায় করবো আর তুমি কোরআন তিলাওয়াত করবে আর আমি তোমার পাশে বসে মন দিয়ে কোরআন তিলাওয়াত শুনবো।
ইনশাআল্লাহ।
ইনশাআল্লাহ।
২ দিন পর,
ঐশী ভার্সিটিতে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে আর আহাদ অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে।
ঐশী আহাদ রেডি হয়ে নিচে এসে একসাথে ব্রেকফাস্ট করে বাসা থেকে বের হয়ে গাড়িতে উঠে বসে।
আহাদ ঐশীকে ভার্সিটির সামনে নামিয়ে দিয়ে অফিসে চলে যায়।
ঐশী ক্লাসে বসে আছে রোজা এখনো আসেনি।
ঐশী ক্লাস শেষ করে ক্যান্টিনে এসে একটা চিপস নিয়ে ক্যাপাসের একটা গাছের নিচে বসে।
আহাদ ঐশীকে কল দেয়,ঐশী কল রিসিভ করে,
হ্যাঁ বলুন।
কি করছো?
এই তো বসে বসে চিপস খাচ্ছি,আপনি কি করছেন?
কাজ করছি।
ঐশী কিছু বলবে তার আগে কেউ এসে ওকে ঝাপটে জড়িয়ে ধরে,ঐশী হতবাক হয়ে যায়,কিছুক্ষণ পর বুঝতে পারে এটা রোজা,রোজা ঐশীকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে,রোজার কান্না আহাদও শুনতে পাচ্ছে।
জান কি হয়েছে কে কাঁদছে?
আহাদ আমি আপনাকে একটু পরে কল দিচ্ছি।
বলেই ঐশী কল কেটে দেয়।
ঐশী রোজার চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
দোস্ত কি হয়েছে কাঁদছিস কেনো?
রোজা কেঁদেই যাচ্ছে কোনো কথা বলছে না।
এই জান্টুস বল না কি হয়েছে?
আরে বাবা না বললে আমি বুঝবো কি করে।
রোজা ঐশীকে ছেড়ে দেয়,ঐশী ব্যাগ থেকে রুমাল বের করে রোজার চোখ মুছে দিয়ে রোজাকে পানি খাইয়ে দেয়,রোজা কিছুটা শান্ত হলে ঐশী রোজাকে প্রশ্ন করে,
ঠিক আছিস?
রোজা মাথা নাড়ায়।
বল তো কি হয়েছে তুই এভাবে কাঁদছিলি কেন?
দোস্ত।
হ্যাঁ বল।
বাবা মা আমার বিয়ে ঠিক করেছে।
এটা তো ভালো কথা তুই কাঁদছিস কেন,এই এক মিনিট তুই কি কাউকে ভালোবাসিস।
রোজা মাথা নাড়ায়।
কি! তুই কাকে ভালোবাসিস?
সিয়ামকে।
সিয়াম,কোন সিয়াম,ওয়েট সিয়াম ভাইয়া!
হুম।
কি তুই সিয়াম ভাইয়াকে ভালোবাসিস!
হ্যাঁ।
কিভাবে হলো এসব,আচ্ছা আমাকে প্রথম থেকে সব কিছু খুলে বল।
পরিচয় তো আগে থেকেই ছিল কিন্তু তোর বিয়ের দিন তাকে দেখে আমি ক্রাস খেয়েছিলাম,সেদিন থেকে আমাদের কথা বলা শুরু হয়,তার সাথে মিশতে শুরু করলাম আস্তে আস্তে তার প্রতি অনুভূতি গুলো মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো,প্রতিদিন তার সাথে কথা হতো,
কথা না বললে যেন রাতের ঘুমই হতো না মাঝে মাঝে সিয়ামের সাথে ঘুরতে বের হতাম,দিন যত বাড়ছিল ওনার প্রতি ভালোবাসাও ততই বাড়ছিল,দোস্ত আমি সিয়ামকে ছাড়া বাচঁতে পারবো না,অন্য কাউকে স্বামী হিসেবে মেনে নিতে পারবো না,আমি অন্য কাউকে বিয়ে করবো না প্লিজ তুই কিছু কর।
ভাইয়া কি তোকে ভালোবাসে?
রোজা মাথা নিচু করে বলে,
জানি না।
দেখ আমি তোর দিকটা বুঝতে পারছি কিন্তু ভাইয়া তো.
ঐশীর কথা শেষ হওয়ার আগে রোজা বলে,
মা’ফি’য়া তাই তো,আচ্ছা ঐশী মা’ফি’য়া’রা কি মানুষ না ওদের কি মন নেই,ওদের কি ভালোবাসা যায় না।
আচ্ছা তুই বল ভাইয়া তো মা’ফি’য়া সে কি তোকে ভালোবাসে না সম্মান করে না তোর কি কেয়ার করে না,
ভাইয়া মা’ফি’য়া হলে কি হবে তোর প্রতি তার ভালোবাসায় বিন্দু মাএ খাদ নেই।
তোরা তো ভালোই আছিস সুখে আছিস।
আমি সিয়ামকে ভালোবাসি সিয়ামের মা’ফি’য়া হওয়াতে আমার কোনো সমস্যা নেই,আমি ওনার সব কিছু মেনে নিয়েছি,ওনার মা’ফি’য়া হওয়াকেও আমি মেনে নিয়েছি,ওনার কাজকে মেনে নিয়েছি,ওনার অনিশ্চিত জীবনকে মেনে নিয়েছি,আমি সেচ্ছায় ওনার এই অনিশ্চিত জীবনের সাথে জড়িয়েছি।
ঐশী আমি সিয়ামের কাছ থেকে আলাদা হতে চাই না,
প্লিজ কিছু একটা কর আমি অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারবো না,প্লিজ কিছু কর,আমি সিয়ামের না হলে অন্য কারো হবো না আমি নিজেকে শে’ষ করে দিবো।
শোন মাথা ঠান্ডা কর উল্টোপাল্টা চিন্তা একদম মাথায় আনবি না,আমি আহাদ এবং সিয়াম ভাইয়ার সাথে কথা বলবো তুই চিন্তা করিস না।
আচ্ছা বিয়ে কবে?
পরশু দিন সন্ধ্যায়,ছেলে পক্ষ থেকে কয়েকজন লোক এসে কাবিন করবে,দোস্ত প্লিজ এ বিয়ে আটকা প্লিজ কিছু কর।
তুই চিন্তা করিস না এই বিয়ে হবে না আমি হতে দিবো না।
__
ঐশীর সামনে আহাদ সিয়াম বসে আছে,আহাদ সিয়াম অফিসে মিটিংয়ে ছিল ঐশী ওদের দ্রুত বাসায় আসতে বললে ওরা মাঝ পথে মিটিং ক্যান্সেল করে বাসায় চলে আসে,ওর আসতেই ঐশী ওদেরকে ওর সামনে বসতে বলে,ওরা বসে পড়ে,সে কখন থেকে ওরা ওয়েট করছে কিন্তু ঐশী কিছু বলছে না চুপটি করে বসে আছে।
কি হয়েছে জান বাসায় আসতে বললে কেন তোমার শরীর খারাপ লাগছে?
ঐশী কিছুটা রেগে বলে,
যদি আমি অসুস্থ বোধ করতাম তবে কি ভাইয়াকে আসতে বলতাম।
না না জান শুধু আমাকে আসতে বলতে।
তাহলে এই কথা বলছেন কেন?
আহাদ একটু মিনিয়ে বলে,
সরি জান।
আহাদের অবস্থা দেখে সিয়ামের হাসি পাচ্ছে।
সিয়াম আজ প্রথম আহাদকে ভেজা বিড়ালের মতো মিনিয়ে যেতে দেখলো।
ঐশী এবার সিয়ামের দিকে তাকায় সিয়ামও ঐশীর দিকে তাকায়,ঐশী কিছুটা গম্ভীর স্বরে বলে,
ভাইয়া আপনি কি রোজাকে ভালোবাসেন?
#চলবে