#আমার_তোমাকে_প্রয়োজন💖
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_18
কপি নিষিদ্ধ ❌
আহাদ দরজা ঠেলে ভেতরে আসে,ভেতরে আসতেই অনুতপ্তের মাএা কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
পুরো রুম অগোছালো,আসবাবপত্র ভা’ঙ্গা।
মেঝেতে কাঁচ,আসবাবপত্রের ভা’ঙ্গা অংশ দেখে বুঝতে পারে এসব ও রাগের মাথায় করেছে।
ঐশীকে মেঝেতে পরে থাকতে দেখে আহাদ দ্রুত পায়ে ঐশীর কাছে আসে,ঐশীর অবস্থা দেখে আহাদের ভিষণ কষ্ট হচ্ছে নিজের প্রিয়তমাকে এভাবে র’ক্তা’ক্ত অবস্থায় দেখবে ভাবতে পারেনি,আহাদ কখনো ঐশীকে ওর রাগের শিকার করতে চায়নি,আহাদের রাগ ভিষণ ভ’য়ং’ক’র,রাগলে ও হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে,
ও কি করছে না করছে কিছু বুঝতে পারে না।
আহাদ ঐশীর এ অবস্থা দেখে নিজেকে দো’ষা’রো’প করছে কেন ও রাগ কন্ট্রোল করতে পারলো না কেন ওর ভালোবাসার মানুষের গায়ে হাত তুললো।
আহাদ দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে ঐশীকে কোলে তুলে নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে ওর রুমে আসে,ঐশীকে বিছানায় শুইয়ে দেয়।
আহাদ ঐশীর ড্রেস চেঞ্জ করার জন্য শাড়ি স্পর্শ করতে যেয়েও থেমে যায়,ও রুম থেকে বের হয়ে রিমিকে আসতে বলে,রিমি উপরে আসে।
আহাদ কাবার্ড থেকে ড্রেস বের করে রিমির হাতে দেয়।
ওর ড্রেস চেঞ্জ করে পাশের রুমটা ক্লিন করে ফেলবে।
ওকে স্যার।
আহাদ রুম থেকে বের হয়ে যায়।
সিয়ামকে কল করে একজন ডক্টরকে পাঠাতে বলে।
রিমি ঐশীর ড্রেস চেঞ্জ করে রুম থেকে বের হয়,
আহাদ রুমে আসে ঐশীর পাশে বসে।
কিছুক্ষণ পর সিয়াম ডক্টর নিয়ে আসে।
সিয়াম জানতো আহাদ ঐশীর উপর রাগ ঝাড়বে,
ঐশীর এ অবস্থা দেখে সিয়ামের মায়া হয়,
ও দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে রুম থেকে বের হয়ে যায়।
ডক্টর ট্রিটমেন্ট শুরু করে,ডক্টর ঐশীর শরীরে মা’রের দাগ দেখে বারবার আড়চোখে আহাদের দিকে তাকাচ্ছে,উনি বুঝতে পেরেছেন আহাদ ঐশীকে কতো বাজে ভাবে মে’রেছে,ডক্টর প্রেসক্রিপশনে কিছু ঔষধ লিখে,আহাদের হাতে প্রেসক্রিপশন দিয়ে চলে যায়।
আহাদ সিয়ামকে প্রেসক্রিপশন দেয়,সিয়াম মেডিসিন আনার জন্য বের হয়।
আহাদ ঐশীর হাতের দিকে তাকিয়ে আছে,
ফর্সা হাতে বেল্টের আ’ঘা’ত গুলো কিভাবে বসে গেছে,
ঐশীর পিঠে,হাতে,পায়ে,পেটে আ’ঘা’তের দাগ গুলো বসে আছে,ফর্সা ত্বকে আ’ঘা’তে’র চিহ্ন গুলো ভালোভাবে বুঝা যাচ্ছে।
আহাদ ঐশীর হাত ধরে আপনমনে বিড়বিড় করে বলছে,
কি অবস্থা করেছি তোমার,আমার নিজের উপর ঘৃণা হচ্ছে,আমি কি করে তোমাকে আ’ঘা’ত করতে পারলাম,
আমার তো তোমাকে সকল আ’ঘা’ত থেকে রক্ষা করার কথা কিন্তু আমিই আজ তোমাকে আ’ঘা’ত করে ফেললাম,কি করে এতো বড় ভুল করলাম আমি,
আমি জানি এ ভুলের কোনো ক্ষমা হয় না কিন্তু তবুও আমি তোমার কাছে মাফ চাইবো,জান আমায় ক্ষমা করবে তো?
আহাদের চোখের জল ঐশীর হাতের উপর পড়ে।
আহাদ চোখ মুছে ফেলে।
কিছুক্ষণ পর সিয়াম দরজায় নক করে,আহাদ ওকে আসতে বললে ও এসে মেডিসিনের প্যাকেট দিয়ে চলে যায়।
আহাদ প্যাকেট থেকে একটা অয়েন্টমেন্ট বের করে ঐশীর ক্ষ’তগুলোতে লাগিয়ে দিচ্ছে।
ভোর ৪ টার দিকে ঐশী পিট পিট করে চোখ মেলে তাকায়,নিজের সামনে আহাদকে দেখতে পেয়ে ঐশী ভয় পেয়ে যায়,আহাদ ঐশীর চেহারায় স্পষ্ট ভয় দেখতে পাচ্ছে,ঐশীর চোখে ভয় দেখে আহাদের কষ্ট হচ্ছে।
ও ঐশীকে উঠিয়ে বসায়,ঐশী ভয়ে মাথা নিচু করে রেখেছে,ওকে ভয় পেতে দেখে আহাদ ওর গালে হাত রাখে,নিজের গালে আহাদের হাতের স্পর্শ পেতেই ঐশী ভীত স্বরে বলে,
প্লিজ আমাকে আর মা’রবেন না।
কেন যেন ঐশীর একথায় আহাদের ভিষণ কষ্ট হয়।
ও ঐশীর কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে ঐশীকে জড়িয়ে ধরে।
জান আমাকে মাফ করে দাও,প্লিজ আমাকে মাফ করে দাও,আমি তোমার গায়ে হাত তুলতে চাইনি বিশ্বাস করো আমি তোমার গায়ে হাত তুলতে চাইনি,আমি জানি না তখন আমার কি হয়ে গিয়েছিলো,কেন এতো রেগে গিয়েছিলাম,আমি জানি আমার রাগ অনেক ভ’য়ং’ক’র,রাগলে আমি হিং’স্র হয়ে যাই হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলি তখন কি করি না করি কিছু বুঝতে পারি না আমার তখন সব কিছু ধ্বং’স করে দিতে ইচ্ছে করে,
আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারি না।
জান আমি তোমাকে আমার রাগের শিকার করতে চাইনি কিন্তু জানি না কি করে এসব হয়ে গেল,
মেডিসিন না খেলে আমার রাগ কমে না তখন আমার কাছে আমার মেডিসিন ছিল না তাই আমার রাগও কমেনি,রাগের মাথায় তোমাকে আ’ঘা’ত করে ফেলেছি।
আমার নিজের উপর ঘৃণা হচ্ছে,ম’রে যেতে ইচ্ছে করে কি করে পারলাম তোমাকে আ’ঘা’ত করতে।
আমি জানি এখন হয়তো তোমার আমার এসব কথা গুলো বিশ্বাস হচ্ছে না,আমাকে খারাপ মানুষ ভাবছো,
হিং’স্র ভাবছো,হ্যাঁ মানলাম আমি খারাপ,হিং”স্র
কিন্তু জান আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি বিশ্বাস করো আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।
ঐশীর কাঁধে আহাদের চোখের জল গড়িয়ে পড়ে,
ঐশী তা অনুভব করতে পারে।
আহাদ মাথা হালকা উঠিয়ে চোখের জল মুছে ঐশীর থেকে সরে এসে ঐশীর গালে হাত রেখে বলে,
আজ যদি আমি সময় মত না পৌছাতাম তবে কি হতো তার কোনো ধারণা আছে তোমার।
আচ্ছা তুমি কেন পালিয়ে ছিলে?
জান তুমি কেন আমার ভালোবাসা বুঝো না?
কি কমতি আছে আমার মাঝে?
আমি কি দেখতে কুৎসিত?
আমি কি অশিক্ষিত?
আমার কি টাকা পয়সা নেই?
আমি কি মেয়ে বাজ?
আমি কি অবৈধ কাজ করি?
কখনো কি তোমাকে বাজে ভাবে স্পর্শ করেছি?
তোমাকে কি ভালোবাসিনি?
বলো আমাকে,আমার মাঝে কি এমন কমতি আছে যার জন্য তুমি আমার ভালোবাসাকে মেনে নিচ্ছো না,
আমার সাথে থাকতে চাইছো না,আজ আমি প্রথমবার কোনো মেয়ের গায়ে হাত তুলেছি তাও আবার নিজের ভালোবাসার মানুষের উপর।
তোমাকে আ’ঘা’ত করতে চাইনি কিন্তু তুমি আমাকে বাধ্য করেছো,বলো ঐশী কি করণে তুমি আমার ভালোবাসাকে মেনে নিচ্ছো না,কেন আমাকে অবহেলা করছো,বলো ঐশী বলো।
ঐশীকে কথা বলতে না দেখে আহাদ কিছুটা ধমকের স্বরে বলে,”বলো কেন করছো এমন।”
আহাদের ধমকে ঐশী কেঁপে উঠে,
ঐশী মিনমিন করে বলে,আপনি মানুষ খু’ন করেন।
কি বললে শুনতে পাইনি।
ঐশী কাঁপা কাঁপা স্বরে বলে,
আপনি মানুষ খু’ন করেন।
আহাদ ঐশীর কথা শুনে জোরে জোরে হাসছে।
ওর হাসি দেখে ঐশীর ভ্রু কুচকে আসে।
হাহাহা কি বললে আমি মানুষ খু’ন করি তাই তুমি আমার ভালোবাসা মেনে নিতে পারছো না,
তুমি শুধু এই কারণে আমার ভালোবাসাকে দিনের পর দিন,অসম্মান করেছো অবহেলা করেছো।
তুমি শুধু এতোটুকু জানো আমি মানুষ খু’ন করি কিন্তু কাদের খু’ন করি আর কেন খু’ন করি তা কি জানো?
শুধু মাএ আমার একটি খারাপ দিকের কারণে আমার ভালো দিক গুলো তোমার চোখে পড়লো না।
জান আমি তোমাকে যতোটা বোঝার চেষ্টা করি তুমি আমাকে বোঝার বিন্দুমাএ চেষ্টাও করো না।
আহাদ উঠে রুম থেকে চলে যায়।
ঐশী আহাদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রয়,
কেন যেন আহাদের কান্নায় ঐশীর কষ্ট হচ্ছে,ও আজ প্রথম আহাদকে কাঁদতে দেখলো তাও আবার ওর জন্য,
ওর কাছে আহাদের প্রশ্ন গুলোর উওর ছিলো না।
হ্যাঁ ওনার মাঝে কোনো কমতি নেই।
উনি দেখতে কুৎসিত না যথেষ্ট সুন্দর।
অশিক্ষিত না।
মেয়ে বাজও না।
অবৈধ কাজও করেনা।
উনি কখনো আমাকে বাজে ভাবে স্পর্শ করেনি কখনো উনার স্পর্শে লালসা দেখিনি,দেখিনি হিং’স্র’তা।
আমাকে অনেক ভালোবাসে কেয়ারও করে।
আহাদ তো ঠিকই বলেছেন তার একটি মাএ খারাপ দিকের কারণে তার ভালো দিক গুলো আমার চোখে পড়লো না।
আচ্ছা উনি কাদের খু’ন করে আর কেনোই বা খু’ন করে?
আর মেডিসিন,আহাদ কোন মেডিসিনের কথা বলছিলেন,কোন মেডিসিন খেলে ওনার রাগ কমে,
ওনার রাগের সাথে মেডিসিনের কি সম্পর্ক?
এসব কথা গুলোই ঐশীর মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।
#চলবে
#আমার_তোমাকে_প্রয়োজন💖
#Writer_Tanisha_Akter_Tisha
#Part_19
কপি নিষিদ্ধ ❌
ঐশী যখন ভাবনায় মশগুল ছিল তখন আহাদ খাবারের ট্রে নিয়ে রুমে আসে,আহাদ বেডের উপর খাবারের ট্রে টা রেখে ঐশীর দিকে তাকায়।
ঐশীও আহাদের দিকে তাকায়।
আহাদ স্যান্ডউইচটা ঐশীর মুখের সামনে তুলে ঐশী আহাদের দিকে তাকিয়ে খেয়ে নেয়।
আহাদ ঐশীকে খাইয়ে দিচ্ছে ঐশীও লক্ষী মেয়ের মতো খেয়ে নিচ্ছে।
খাবার খাওয়া শেষে আহাদ ঐশীর মেডিসিন গুলো নিয়ে এসে ঐশীকে খাইয়ে দেয়।
আহাদ ঐশীর চোখে চোখ রেখে বলে,
আজ আমাদের বিয়ে,কাল যা করেছো করেছো কিন্তু আজ কোনো রকম ঝামেলা করবে না,আশা করি বুঝে গেছো আমার থেকে তোমার নিশতার নেই,
আমার সাথেই তোমাকে সারাজীবনটা থাকতে হবে,
আহাদ চলে যেতে নিয়েও থেমে পিছনে ঘুরে কিছুটা গম্ভীর স্বরে বলে,
আমি সব স’হ্য করতে পারি কিন্তু ছলনায় আর বিশ্বা’স’ঘা’ত’ক’তা স’হ্য করতে পারি না,এবার যদি পালাতে চাও তবে আমাকে মে’রে তারপর পালাবে কারণ বেঁচে থাকতে তো তোমাকে আমার থেকে দূরে যেতে দিবো না।
কথা গুলো বলে আহাদ চলে যায়,ঐশী ওর যাওয়ার পানে তাকিয়ে রয়।
সন্ধ্যা ৭ টার দিকে আহাদ অফিস থেকে বাসায় আসে পুরো বাড়ি অনেক সুন্দর করে সাজানো হয়েছে,
কিছুক্ষণ পর গেস্টরা আসতে শুরু করবে।
আহাদ ওর রুমে যেয়ে ফ্রেশ হয়ে নেয়।
___
মেকাপ আর্টিস্টরা ঐশীকে সাজাচ্ছে,ঐশী চুপচাপ পুতুলের বসে আছে,ওর মাঝে কোনো অনুভূতি কাজ করছে না,এখন ঐশীর চুল সেট করা হচ্ছে,চুল গুলো কার্ল করে একটা সুন্দর হেয়ার স্টাইল করছে।
সাজানো শেষে মেকাপ আর্টিস্টরা চলে যায়।
ঐশী আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখছে,
গ্রে কালার ফ্লাফি গাউনটা ঐশীর গায়ে বেশ মানিয়েছে,
ডায়মন্ডের অর্নামেন্ট গুলো ওর সৌন্দর্য আরো ফুটিয়ে তুলছে,মাথার ওড়নাটার জন্য একদম বউ বউ লাগছে।
ঐশী নিজেকে দেখে দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ে ও না তো খুশি হতে পারছে না তো দুঃখী হতে পারছে,ঐশী বিছানায় যেয়ে বসে শরীরটা ভালো লাগছে,শুতে ইচ্ছে করছে কিন্তু শুতেও পারছে না।
ঐশী বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়,তখন আহাদ দরজা খুলে ভেতরে আসতেই ঐশীকে দেখে মাএই থমকে যায়,
ঐশীও তুলে আহাদের দিকে তাকায় আর তাকাতেই আহাদের মাঝে চোখ আটকে যায়,দুজন দুজনের থেকে চোখ সরাতে পারছে না।
আহাদ এক পা এক পা করে ঐশীর কাছে আসে,
ঐশীও কিছুটা এগিয়ে আসে,আহাদ ঐশীর কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে গালে হাত রেখে বলে,
মাশাআল্লাহ,আমার জানকে অনেক সুন্দর লাগছে,
আমার কল্পনার চাইতো বেশি সুন্দর লাগছে।
ঐশীও মনে মনে বলে,
আপনাকেও অনেক সুন্দর লাগছে।
জান চলো নিচে সবাই আমাদের জন্য ওয়েট করছে।
আহাদ ঐশীর হাত ধরে রুম থেকে বের হয়,সিড়ির সামনে আসতেই সবাই সিঁড়ির দিকে তাকায়,
ওদের দেখে সবার ভালো লাগে,সবার মুখ থেকে শুধু একটা কথাই বের হচ্ছে,”মেইড ফর ইচ আদার”।
আহাদ ঐশীর হাত ধরে আস্তে আস্তে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামছে,আহাদ ঐশী স্টেজে যেয়ে বসে,সবাই ওদের সাথে দেখা করতে আসে ওরাও হাসিমুখে কুশল বিনিময় করে।
ইতোমধ্যে সব গেস্ট চলে এসেছে।
রোজা ওর বাবা মায়ের সাথে আহাদের বাসায় আসে,
রোজা ঐশীকে স্টেজে দেখে মাএই দৌড়ে যেয়ে জড়িয়ে ধরে,রোজা একটু জোরেই ধরেছে,জড়িয়ে ধরার ফলে ঐশী পিঠে,বাহুতে ব্যাথা অনুভব করে ব্যাথায় ওর চোখে জল চলে আসে,রোজা ঐশীকে ছেড়ে দেয়।
কি হলো দোস্ত তোর চোখে জল কেন?
ও কিছু না এমনি চোখে জল আসছে।
মাশাআল্লাহ আমার জান্টুসকে কতো সুন্দর লাগছে,
একদম পরীর মতো।
রোজার কথায় ঐশী মুচকি হাসে।
দুলাভাই আপনাকেও অনেক সুন্দর লাগছে,দুজনকে বেশ মানিয়েছে।
থ্যাঙ্ক ইউ শালি সাহেবা,তুমি এসেছো আমি অনেক খুশি হয়েছি।
আমার জান্টুসের বিয়ে আর আমি আসবো না তা কি হয়।
না একদম হয় না।
আচ্ছা আমি আসছি।
আচ্ছা।
রোজা স্টেজ থেকে নেমে যায়।
রোজার কল আসতেই ও বাড়ি থেকে বের হয়ে গার্ডেনে চলে যায়,কথা বলতে বলতে কারো সাথে স্ব জোরে ধাক্কা লাগে রোজা পরে যেতে নিলে সে ব্যাক্তি ওকে ধরে ফেলে,রোজা চোখ তুলে তাকিয়ে দেখে সিয়াম ওকে ধরে রেখে,সিয়াম ওকে সোজা হয়ে দাঁড় করায়।
সিয়াম কিছুটা বিরক্ত গলায় বলে,
তুমি দেখে চলতে পারো না,আমি না ধরলে তো পড়ে যেতে।
সরি।
হুম,সাবধানে চলবে।
সিয়াম চলে যায়।
রোজা কোমড়ে হাত রেখে কিছুটা বিরক্ত গলায় বলে,
আমি বুঝি না এই ব্যাটার সাথে সবসময় আমার ধাক্কা লাগে কেন?
___
খাওয়া দাওয়ার পর্ব শেষে এবার বিয়ের পর্ব শুরু হয়,
উকিল সব পেপার্স রেডি করে,আহাদের হাতে দেয়,
আহাদ পেপার্স চেক করে সাইন করে দেয়।
আহাদ ওর হাতের কলমটা ঐশীর দিকে বাড়িয়ে দেয়,
ঐশী কলম ধরে বসে আছে সাইন করছে না।
ঐশীর আজ মায়ের কথা খুব মনে পড়ছে।
বিয়ে নিয়ে আমার কতো স্বপ্ন ছিল,আমি আম্মুর হাতে বউ সাজাবো,আম্মু আমার গায়ে হলুদ ছুঁইয়ে দিবে,
কবুল বলার সময় আম্মু আমাকে সাপোর্ট দিবে,
কিন্তু আমার এই স্বপ্ন গুলো স্বপ্নই রয়ে গেল,
আজ আমার বিয়ে হচ্ছে কিন্তু আম্মু আমার পাশে নেই।
কথা গুলো ভাবতেই ঐশীর চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ে,ঐশী আবেশে চোখ মুছে ফেলে।
সবাই ঐশীকে সাইন করতে বলছে কিন্তু ঐশী থম মেরে বসে আছে,ঐশীকে সাইন করতে না দেখে আহাদ সবার অগোচরে ঐশীর কানে কানে বলে,
জান তোমাকে কিন্তু আমি বলেছিলাম আমি বিয়েতে কোনো প্রকার ঝামেলা চাই না,প্লিজ ঝামেলা করো না চুপচাপ সাইন করো,আর যদি সাইন না করো তবে এখানে উপস্থিত সবাইকে আমি মে’রে ফেলবো।
হুমকি দিচ্ছেন?
তুমি যা মনে করো,আমি কিন্তু যা বলি তাই করি,
এখন তুমি ভেবে দেখো তুমি কি এতো গুলো মানুষের মৃ’ত্যুর কারণ হতে চাও।
ঐশী আহাদের কথা শুনে কাল বিলম্ব না করে সাইন করে দেয়,কারণ ও জানে আহাদ যা বলে তাই করে।
ঐশী সাইন করায় আহাদ বাঁকা হাসি দেয়।
রোজা সিয়াম সাক্ষীর জায়গায় সাইন করে।
ধর্মঅনুসারে ওদের বিয়ে পড়ানো হয়।
কিছুক্ষণ পর আয়মান আহাদ মেনশনে আসে,
স্টেজে উঠতেই ঐশী আয়মানকে সালাম করে আয়মান ঐশীকে দোয়া করে ঐশীর হাতে একটা ডায়মন্ডের জুয়েলারি বক্স দিয়ে বলে,”বউমা এটা তোমার জন্য”।
থ্যাঙ্ক ইউ বাবা।
আয়মানের আগমনে ঐশী যতোটা খুশি হয়েছে আহাদ তার বিন্দু মাএও খুশি হয়নি।
আয়মান আহাদের দিকে তাকিয়ে বলে,
কেমন আছো বাবা?
ভালো।
দোয়া করি তোমরা সারাজীবন সুখে থাকো।
থ্যাঙ্ক ইউ।
আয়মান আর কিছু না বলে স্টেজ থেকে নেমে যায়।
আহাদের ভাবভঙ্গি দেখে ঐশী বুঝতে পারে আয়মান আসায় আহাদ খুব বেশি খুশি হয়নি।
কিন্তু এর কারণ কি?
হঠাৎ ঐশী অসুস্থ বোধ করে,বসে থাকা আর সম্ভব হচ্ছে না।
আহাদ ফোনে কথা বলছিলো ঐশীর দিকে চোখ পড়তেই ঐশীর চেহারায় ক্লান্তি ভাব দেখতে পায়,
আহাদ কল কেটে ঐশীর হাত ধরে,ঐশী আহাদের দিকে তাকায়,
জান খারাপ লাগছে,বসে থাকতে কষ্ট হচ্ছে?
না ঠিক আছি।
আহাদ জানে ঐশী চাপা স্বভাবের ও কিছু বলবে না।
আহাদ সিয়ামকে ডাক দেয়,সিয়াম ওদের কাছে আসে,
তোমার ম্যাম একটু অসুস্থ বোধ করছে,আমরা উঠছি।
না না সমস্যা নেই আরো কিছুক্ষণ বসি।
না এখন রুমে চলো।
আহাদ সবার থেকে বিদায় নিয়ে ঐশীর হাত ধরে সিঁড়ি বেয়ে নিজের রুমে চলে আসে,আহাদ দরজা খুলেই ঐশী থমকে,ওদের রুমটা অনেক সুন্দর করে সাজানো হয়েছে,ঐশী রুমে প্রবেশ করে কাঁচা ফুল গুলো ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখছে,গোলাপ ওর বরাবরই ভিষণ পছন্দ,এতো এতো গোলাপ দেখে ঐশী মন নিমেষেই ভালো হয়ে যায়
ঠোঁটে হাসি ফুটে ওঠে,ঐশীর হাসি দেখে আহাদের ভালো লাগে,”যাক অবশেষে আমার জানটার ঠোঁটে হাসি ফোটাতে পারলাম”।
#চলবে