আমার তুমি ২ পর্ব-০৪

0
114

#আমার_তুমি[২]
#পর্ব_৪
#জান্নাত_সুলতানা

[পর্ব টা একটু রোমান্টিক, পড়তে না চাইলে স্কিপ করতে পারেন।]
সারা আর প্রিয়তা দু’জনে পরীক্ষা শেষ ভার্সিটির এডমিশন এর জন্য একটা কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়েছে। আজ সারা কোচিং-এ গেলেও প্রিয়তা এব্যাপারে কোনো কথা বলে নি।সুফিয়া বেগম অবশ্য চেয়েছিলেন প্রিয়তা সারার সাথে যায়।কিন্তু শ্বাশুড়ির উপর দিয়ে কোনো কথা বলতে পারে নি। আম্বিয়া মির্জা বেশ আগেকার দিনের মানুষ। মেয়েদের লেখা পড়া নিয়ে ওনার বেশ আপত্তি।আয়নাকে বিয়ের পর আর পড়তে দেয় নি।মাইশা কেও বিয়ে দেওয়ার কথা ছোট ছেলে কে বলছে।কিন্তু মফিজুর মির্জা একমাত্র মেয়ে কে এতো তাড়াতাড়ি বিয়ে দিতে রাজি নয়।মেয়ে যখন পড়ছে পড়ুক না।মেয়ে কে তিনি পড়াশোনা করাতে চায় বেশি। প্রিয়তা বোনের কাছে শুনেছে এনিয়ে মফিজুর মির্জা মায়ের সাথে একটু মনকষাকষি চলছে।
আজো সাদনান কে প্রিয়তা ঘুম থেকে ওঠে সকালে দেখে নি।রাতেই তো মানুষ টা তাকে বুকে নিয়ে ঘুমাল অথচ সকালেই উধাও। অবশ্য আজ দুপুরে বাড়িতে খাবার খাবে বলে শুনেছে প্রিয়তা।এর কারণ আজ শফিক সওদাগর সহ মিতা সওদাগর এসছে মির্জা বাড়ি।উদ্দেশ্য জানা নেই।তবে বিয়ে হয়েছে আজ নাইওর যাওয়ার কথা প্রিয়তার হয়তো সেই নিমন্ত্রণ করতে এসছে।আম্বিয়া মির্জা মনে মনে স্থির করে আজ যদিও যায় তো কাল ফিরে আসার কথা জানিয়ে দিবে।
প্রিয়তা বাবা মা কে পেয়ে প্রচুর খুশি সাথে নিজের বাড়ি যাবে। দুপুরে সাদনান আর জাফর মির্জা সহ সব পুরুষরা বাসায় এলো।সাদনান ফিরার সময় সাথে করে অবশ্য আয়ান কেও নিয়ে এসছে।রাহানের মা এতে ভীষণ খুশি এই খুশির কারণ কি মাইশা জানে।ফুপি নিজের মেয়ে রিধির জন্য আয়ান কে বেশ পছন্দ করেছে মেয়ের ফাইনাল পরীক্ষা শেষ দে-শে এলে বিয়ের কথাবার্তা এগুবে এমনটাই তিনি দুই বাঈজির সাথে শেয়ার করেছে। মাইশা কিছু বলেনি।তবে সারা তখন ফুসফুস করেছে। মেয়ে তার অন্য কাউ কে ভালোবাসে আর মা এদিকে মেয়ের বিয়ে ঠিক করছে।এমনিতে রাহানের মা ভীষণ ভালো মানুষ। স্বামী শহরে থাকে চাকরি সুত্রে বিয়ের পর থেকে স্বামী সন্তান নিয়ে বাবা বাড়িতেই রয়েছে। কখনো এসব নিয়ে কোনো ঝামেলা হয় নি ভাই বা ভাবিদের সাথে।
সারা ফুসফুস করার কারণ ছেলে যে এদিকে দামড়া হয়েছে সে খবর আছে? আর মেয়ে কে বিয়ে দেওয়ার জন্য এক্ষুনি পাত্র নির্ধারণ করে রেখেছে।
দুপুরে সবাই খাবার এক সাথে খেলো।বড়রা সবাই বৈঠক বসলে মেয়েরা সবাই বিদায় নিলো।
শফিক সওদাগর তক্ষুনি জাফর মির্জার সাথে আয়ানের জন্য মাইশা কে চেয়ে কথা খানা পেড়ে নিলো।মফিজুর গম্ভীর।
তবে তিনি কোনো জবাব দিলো না সময় চাইল।মেয়ের মতামত নিয়ে জানাবে।সওদাগর বাড়ির সবাই সায় দিল। বিকেলের দিকে সওদাগর বাড়ির সবাই চলে গেলো। আর সাদনান সন্ধ্যায় প্রিয়তা কে নিয়ে যাবে বলে জানালো।সবাই চলে গেলে প্রিয়তা রুমে এসে নিজের কিছু কাপড় লাগেজে নিলো।সাথে সাদনান এর জন্যও নিলো।সাদনান তখন রুমে এলো।একটু রেস্ট করে আবার বেরুবে।আজ মন্ত্রী ওয়াসিফ দেওয়ান এর সাথে সাক্ষাৎ করবে।তিনি ডেকে পাঠিয়েছে। সাদনান কথা গুলো ভাবতে ভাবতে রুমে এসে প্রিয়তা কে নিজের কাপড় ব্যাগে নিতে দেখে গম্ভীর কণ্ঠে জানাল,

-“আমরা কাল সকালেই চলে আসব।
কাপড় নিতে হবে না।”

প্রিয়তার হাসিহাসি মুখ টা ফাটা বেলুনের ন্যায় চুপসে গেলো।কাপড় বের করে আবার সাদনানের গুলো কাবাডে আর নিজের গুলো লাগেজে রেখে দিলো।সাদনান হঠাৎ কি মনে করে এগিয়ে গেলো।কাবাড খুলে নিজের কাপড় একপাল রাখতে রাখতে বিড়বিড় করে বলল,

“শুধু ভালোবাসলে হয়!ভালোবাসার যত্ন নিতে হয় নয়তো ভালোবাসায় ফিকে পড়ে।”

প্রিয়তার কান অব্ধি কথা গুলো পৌঁছাল না। তবে ভ্রু জোড়া কিঞ্চিৎ কুঁচকে এলো।প্রিয়তা বুঝতে পারছে না সাদনান নিজের কাপড় কেন একপাশ করছে।তাই জিগ্যেস করলো,

-“আপনি কাপড় একপাশ কেন করছেন?
আমার গুলো এখানে ঠিক আছে।”

-“জিগ্যেস করেছি?
চুপচাপ কাপড় রাখো।”

প্রিয়তা সাদনানের কথা মুখ গোমড়া করে নিলো।
এই লোক একটু ভালো করে কথা বলতে পারে না?প্রিয়তা কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে সাদনান নিজে এগিয়ে এসে লাগেজ থেকে কাপড় গুলো কাবাডে রাখে।প্রিয়তা তড়িঘড়ি করে এগিয়ে গিয়ে লাগেজ টেনে নিজের কাছে নিয়ে বলল,

-“আপনি যান রেস্ট করুন।
আমি রাখছি।”

সাদনান প্রিয়তার দিকে তাকিয়ে মৃদু কণ্ঠে বলল,

-“আমার মানে তোমার।
আমার সবকিছুতে যেমন আমার অধিকার রয়েছে তেমন তোমারও।”

সাদনান গায়ের পাঞ্জাবি টা খুলে রেখে একটা গেঞ্জি গায়ে দিয়ে গিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো।
প্রিয়তা নিজের কাপড় গুলো কাবাডে রেখে এসে নিজেও সাদনান এর পাশে শুয়ে পড়লো।
সাদনান প্রিয়তা কে টেনে নিজের বুকের উপর নিয়ে জড়িয়ে ধরে।
প্রিয়তা লাজুক হাসে।লোকটা এই তিন দিনে একবারও প্রিয়তা কে বুকে না নিয়ে ঘুমায় নি।প্রিয়তার প্রথম দিন অস্বস্তি হলেও আজ দু’দিন ধরে ভালোই লাগে।

——–

বিকেলে সাদনান বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় প্রিয়তা কে রেডি হয়ে থাকতে বলে গেলো।
প্রিয়তা তাই করলো।সাদনান এর ফুপিমণির কাছ থেকে শাড়ী পড়ে রেডি হয়ে রইল।
সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে সাদনান বাড়ি এলো।তবে নিজে রুমে এলো না। নিচ থেকে খবর পাঠাল প্রিয়তা কে যাওয়ার জন্য।
প্রিয়তা তাই করল।সাদনান তখন নিজের গাড়িতে বসে রয়েছে। সাথে রাহান যাচ্ছে সে গাড়ি নিয়ে ফিরে আসবে।
ওঁরা পৌঁছাতে মিনিট পাঁচ মিনিট সময়ের মতো লাগল।
প্রিয়তা হন্তদন্ত হয়ে গাড়ি থেকে নামার আগেই সাদনান প্রিয়তার হাত টেনে ধরে বলল,

-“একদম ছুটাছুটি নয়।
আমার সাথে যাবে।”

প্রিয়তা মাথা নাড়ে।সাদনান গাড়ি থেকে নামার পর রাহান নিজেও নামে ডিঁকি থেকে অনেক গুলো শপিংএর ব্যাগ সহ সাদনান প্রিয়তার হাত ধরে বাড়ির উঠোন পেড়িয়ে আসে এরমধ্যে প্রিয়তার মা বাব দুজনেই ছুটে আসে।আয়ান বাড়িতে নেই।
সাদনান আর রাহান কে নিয়ে শফিক সওদাগর নিজেদের বসার ঘরে বসল।প্রিয়তা নিজের মায়ের সাথে রান্না ঘরে চলে গেলো।
রাহান নাস্তা করে বিদায় নিলো।সাদনান ফ্রেশ হওয়ার জন্য প্রিয়তা কে খুঁজে তবে মেয়ে টা নেই।শফিক সওদাগর তখন স্ত্রী কে ডেকে প্রিয়তাকেও ডাকে।প্রিয়তা এসে বাবার সাথে কথা বলে।শফিক সওদাগর প্রিয়তা কে ফ্রেশ হয়ে রাতে খাবার খাওয়ার জন্য আসতে বলে।প্রিয়তা সাদনান কে নিয়ে নিজের রুমে চলে এলো। সাদনান ফ্রেশ হতে গেলে প্রিয়তা দরজা আঁটকে নিজের গায়ের শাড়ী খুলে সেলোয়ার-কামিজ পড়ে নিলো।শাড়ী ভাঁজ করে রাখতে গিয়ে ওড়নার কথা বেমালুম ভুলে বসে।
এদিকে সাদনান ওয়াশ রুম থেকে বেরিয়ে বউয়ের দিকে তাকিয়ে থমথমে খেলো। বউয়ের দিকে তাকিয়ে শুকনো ঢুক গিলে। প্রিয়তার নারীঘটিত শরীর এর ভাঁজ স্পষ্ট।
সাদনান নিঃশব্দে এসে বউয়ের পেছনে দাঁড়ায়। সাদনান এর অস্তিত্ব টের পেতেই তৎক্ষনাৎ শিউরে ওঠে লাফিয়ে সরতে চায় প্রিয়তা।
কিন্তু সাদনান তা হতে দেয় না।পেছন থেকে শক্ত হাতে জড়িয়ে ধরে প্রিয়তার কোমড়।সাদনান প্রিয়তার ঘাড়ে নিজের থুঁতনি ঠেকাতেই প্রিয়তার সারা শরীর শিরশির করে ওঠে।চোখ বন্ধ করে নিজেকে শক্ত রাখার প্রায়শ চালায়।সাদনান নিজের হাত প্রিয়তার কামিজ ভেদ করে প্রিয়তার পেটে বিচরণ ঘটাতেই প্রিয়তা শরীর এর সর্বত্র শক্তি হারিয়ে ফেলে।পা জোরা অবশ হয়ে আসে।নিজে দাঁড়িয়ে থাকার মতো শক্তি পায় না।প্রিয়তা কাঁধে নরম কিছুর সংস্পর্শ পেতেই বুঝতে এক সেকেন্ড সময় লাগে না সাদনান ভাই নিজের অধর জোড়া ছুঁয়ে দিয়েছে।
প্রিয়তা ছিটকে দূরে সরে গেলো।সাদনান প্রিয়তার দিকে তখনো অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে। প্রিয়তা ওড়না খোঁজে চার দিকে পেয়েও যায় তবে সেটা হাত বাড়িয়ে নেওয়ার আগে সাদনান প্রিয়তা কে আবার নিজেদের কাছে টেনে নিলো।সাদনান নিজের বা হাত টা উঁচিয়ে
প্রিয়তার ঠোঁটে নিজের বৃদ্ধা আঙ্গুল ছুঁয়ে দিয়ে অনুমতি চাইলো,

-“ক্যান আই কিস ইউ ফর ওয়ানস্?”

প্রিয়তা সাদনানের কথা শুনে চোখ বড়ো বড়ো হয়ে যায়।তবে সাদনানের দৃষ্টির দিকে তাকিয়ে লজ্জায় মাথা নুইয়ে নিয়ে বিড়বিড় করে আওড়াল,

-“সব সময় নিজের মনমতো সব করে।আর এখন অনুমতি চাচ্ছে?অদ্ভুত।”

সাদনান প্রিয়তার মুখ টা এক হাতে উঁচু করে আস্তে করে নিজের মুখ টা এগিয়ে নিয়ে প্রিয়তার কপালে গাঢ় একটা চুমু খেল।অনেক্ক্ষণ পর সেখান থেকে সরে এসে প্রিয়তার অধরের ভাঁজে নিজের অধর জোড়ার চেপে ধরে।
প্রিয়তার সর্বাঙ্গে কাঁপন ধরে।
সাদনান প্রিয়তার কোমড় টেনে শক্ত করে নিজের সাথে চেপে ধরে।প্রিয়তা প্রথম বারের মতো সাদনান এর এমন লাগামহীন স্পর্শে হাঁপিয়ে ওঠে।নিজেও পাল্লা দিয়ে সাদনান এর সঙ্গে এক হাত সাদনানের চুল শক্ত করে খামচে ধরে অন্য হাত সাদনান এর পিঠে রাখে।
সাদনান সময় নিয়ে ইচ্ছে মতো নিজের রাজত্ব চালায় বউয়ের অধরে।
সময় গড়ালো এক সময় সাদনানের হাতের বাঁধন হালকা হয় প্রিয়তা সুযোগ বুঝে সাদনান কে ঠেলে সরিয়ে ওয়াশ রুম চলে যায়।
সাদনান প্রিয়তার এরূপ ব্যবহারে হেঁসে দিয়ে বিড়বিড় করে বলল,

-“আমার জান, খুব দ্রুত তুমি নিজে থেকে আমার কাছে ধরা দিবে।”

#চলবে…..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে