আমার তুমি পর্ব-৪২+৪৩+৪৪

0
491

#আমার_তুমি
#পর্ব_৪২[অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষিদ্ধ]
#জান্নাত_সুলতানা

[পর্ব টা একটু রোমান্টিক, পড়তে না চাইলে স্কিপ করবেন।]

সাদনান শাওয়ার নিয়ে মাত্রই বেড়িয়ে এলো।পড়নে ছাই রঙের একটা ট্রাউজার বলিষ্ঠ পেটানো উদাম শরীর বুকের ঘন কালো লোম গুলো পানি চিকচিক করছে। গলায় একটা টাওয়াল জড়ানো যার এক পাশ দিয়ে মাথার চুল গুলো মুছে নিচ্ছে।
শাওয়ার নেওয়ার ফলে চেয়ারায় আলাদা একটা স্নিগ্ধু লাগছে কিন্তু সেই স্নিগ্ধতা চাপা পড়ে মুখে বিরক্তি প্রকাশ পাচ্ছে বেশি।
সাদনান টাওয়াল সোফায় ছুঁড়ে ফেলে। চুল তার আগে বউ মুছে দিতো সব সময় কিন্তু আজ অনেক দিন হয় বউ এই কাজ হতে বিরতি নিয়েছে। কিন্তু সাদনান বিরতি আজ শেষ করবে আগের মতো আবার কন্টিনিউ করবে সব ঠিক ঠাক করতে হবে।
সাদনান এগিয়ে গেলো। দরজায় দাঁড়িয়ে নিজের বলিষ্ঠ কণ্ঠে মাকে জোরে জোরে ডাকতে লাগলো।
সাদনান জানে মা তার সমস্যা বুঝতে পারবে।সাদনান এর মা নিচ থেকে গলা ছেড়ে ছেলে কে উত্তর করলো আসছি বলে।সাদনান ফিরে গিয়ে সোফায় বসে থাকে উদোম শরীর নিয়ে চুল থেকে তখনো পানি পড়ছে।
সাদনান এর ভাবনা সত্যি হলো মা প্রিয়তা কেই পাঠিয়েছে।
প্রিয়তা ওড়নার এক মাথায় হাত মুছতে মুছতে ঘরে প্রবেশ করে মাথা হতে ঘোমটা ফেলে দেয়।
সোজা বিছানার উপর ওড়না রেখে সাদনান এর দিকে এগিয়ে যায় সাদনান পুরো টা সময় বউয়ের দিকে তাকিয়েদ রয়।প্রিয়তা
সোফা থেকে টাওয়াল তুলে চুল মুছে দিতে দিতে জিজ্ঞেস করলো

-“খাবার রুমে দেবো?”

-“তুমি তো খাও নি।তাছাড়া নিচে অনেক মানুষ এখন।
রুমে নিয়ে এসো।”

-“আচ্ছা,ঠিক আছে।”

সাদনান এর কথার বিপরীতে প্রিয়তা সম্মতি দিয়ে বলল।অতঃপর নিজের হাত দিয়ে সাদনান এর চুল মুছে টাওয়াল নিয়ে ব্যালকনিতে চলে গেলো ফিরে এসে ওয়াশ রুম গিয়ে হাল্কা ফ্রেশ হয়ে নিলো।যদিও ঘন্টা সময় এর মতো হবে শাওয়ার নিয়েছে তবে রান্না ঘরে ছিল বিধায় শরীর কেমন ভার লাগছে।
প্রিয়তা রুমে খাবার নিয়ে এলো তার পর দু’জন মিলে খেয়ে নিলো।
খাবার শেষ এঁটো থালা বাসন নিয়ে প্রিয়তা নিচে চলে গেলো। আর এদিকে সাদনান নিজে রেডি হয়ে নিলো এখন পাঁচ টার আশেপাশে বাজে সময়। মেহমান সব নিশ্চয়ই আসতে চলছে।
আজ প্রায় অনেক মানুষদের কে ইনভাইটেশন করেছে তার কারণও অবশ্য আছে।
বউ তার ধারে কাছে বেশি ঘেঁষে না সে বুঝতে পারে রাগের কারণ তবে কিছু করতে পারে নি মূলত সময় করতে পারে নি।
সাদনান রেডি হয়ে গায়ে পারফিউম দিয়ে নিজের গম্ভীর মুখ নিয়ে বেড়িয়ে এলো রুম হতে।

———-

-“আপনারা কেউ কেউ হয়তো জানেন!
আমি বিয়ে করেছি,তবে সেটা ঘরোয়া ভাবে তাই কাউ কে বলার বা নিমন্ত্রণ করার মতো সময় করে উঠতে পারি নি।আগামী সাপ্তাহে আমার বোনের বিয়ে আর সেই দিন সবার উপস্থিতি কামণা করছি।তখন না হয় আমার স্ত্রী কে দেখে নিবেন।”

সাদনান কথা শেষ সবাই করতালি দিলো।সাদনান কথা শেষ আবারও ফিরে এলো স্টেজ থেকে।
একটু আগেই কেক কাটার পর্ব শেষ হয়েছে এখন সবাই যে যার মতো এনজয় করছে।
প্রিয়তা সালেহা বেগম এর পেছনে দাঁড়িয়ে আছে পড়নে মিষ্টি কালার একটা জামদানী শাড়ী জড়ানো। দেখতে ঠিক শাড়ী টার কালার এর মতোই মিষ্টি লাগছে পাশেই সারা ফোনে কিছু করছে।
আয়ান মাইশা কে আগলে একটা টেবিলে বসে আছে।মেয়ে টা একটু পর পর বমি করছে কিছু মুখে তুলতে পারছে না।আর একটু আগেই বমি করার ফলে হয়তো ক্লান্ত। রাহাত, আয়না ইনিয়া কে নিয়ে সবার সাথে পরিচিত হচ্ছে। আর ওদিক টায়?ওই তো কবির তার ছেলে কে কোলে নিয়ে হাঁটাহাঁটি করছে পাশেই টেবিলে বসে তিন্নি খাবার খাচ্ছে।
এখানে প্রতি টা মানুষ তার ভালোবাসার মানুষ টাকে সময় দিচ্ছে আগলে রাখছে।প্রিয়তা সব কিছু পর্যবেক্ষণ করলো।ভীষণ ভালো লাগলো তবে মনের কোথাও বড্ড কষ্ট হচ্ছে একটা চাপা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ে।

-“ছোট নাত বউ!
সারা কে নিয়ে ভেতরে চলে যাও।”

প্রিয়তার মন টা আরও দিগুণ খারাপ হলো আম্বিয়া মির্জার কথায়।
সারা বিরক্ত হলো।তবে মুখে প্রকাশ করলো না মুখ ভেংচি কেটে প্রিয়তা কে টেনে নিয়ে চলে গেলো।
সাদনান সব টা লক্ষ্য করলো।
দাদি তার এই কাজ টা একদম ঠিক করেছে মনে ধরলো সাদনান এর।তার অবশ্য কারণও রয়েছে।স্টেজে বসে তিন চার টা ছেলে সারা প্রিয়তার দিকে কেমন করে তাকিয়ে আছে। ছেলে গুলো ভদ্র পরিবারের আর এদের বাবারা এখানে আছে তাই ওদের কোনো ব্যবস্থা তো করতে পারবে না তার উপর অতিথি।

———

-“আমাকে মায়ের কাছে রেখে আসুন।”

সাদনান রুমে আসা মাত্রই প্রিয়তা কথা টা বলে উঠলো। সাদনান মোটেও অবাক হয় না,আর না কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলো।বরং খুব স্বাভাবিক ভাবে এগিয়ে গিয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে মিররের প্রিয়তার প্রতিবিম্বর দিকে তাকালো শান্ত কণ্ঠে জানালো

-“দ্বিতীয় বার মুখে এনো না।
ঠেং ভেঙ্গে ঘরে বসিয়ে রাখবো, অতঃপর নিজে হাতে সব করিয়ে দেবো।”

প্রিয়তা সাদনান এর কথা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেলো।কিছু বলে আর কথা বাড়াতে চাইলো না।ঝামেলা করে কি লাভ সাদনান তো আর ইচ্ছে করে করছে না এসব ও জানে।কিন্তু এটা মস্তিষ্ক মানলেও মন মেনে নিতে নারাজ। প্রিয়তা চুপটি করে ওপাশ ফিরে শুয়ে পড়লো। সাদনান ড্রেস চেঞ্জ করে লাইট অফ করে বিছানায় এসে শুয়ে প্রিয়তা কে ফিরিয়ে নিজের দিকে করে নিলো।প্রিয়তা তখন শক্ত হয়ে আছে।সাদনান বউয়ের মুখের দিকে তাকালো ছোট ছোট চুল গুলো কমলা রঙের ড্রিম লাইটেও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। সাদনান ফু দিয়ে চুল গুলো মুখের উপর হতে সারানো প্রায়শ চালালো তবে ব্যর্থ হলো তাই বাধ্য হয়ে হাত দিয়ে কানের পিঠে গুঁজে দিতে দিতে বলল

-“সরি।”

-“সরি?
আপনার সরি আপনার মাথায় দিয়ে বসে থাকুন।”

প্রিয়তা ফুঁসে ওঠে বলল।
সাদনান এবার মৃদু স্বরে জিজ্ঞেস করলো

-“তুমি এমন কেন করছো?
আমি ইচ্ছে করে তো আর এমনটা করছি না, পরিস্থিতি তুমি বুঝতে হবে।”

-“হ্যাঁ,আর আমার পরিস্থিতি?”

-“আর কয় টা দিন অপেক্ষা করো।”

-“আঠারো হয়ে গিয়েছে।”

-“আচ্ছা?”

-“আমি বাচ্চা না বাচ্চার মা হতে চাই।”

সাদনান ঝট করে প্রিয়তা কে নিজের উপর থেকে নিচে ফেলো দিলো।
প্রিয়তা চোখ খিঁচে বন্ধ করে নেয়। শক্ত করে সাদনান এর আকাশী রঙের টি-শার্ট টার কলার চেপে ধরে।
সাদনান সে দিকে তাকিয়ে হাসলো আজও বউ টা তার ছোঁয়া দিশে হারা হয়।অল্পতেই মূর্ছা যায় তবুও যথাসাধ্য নিজে কে শক্ত রাখার চেষ্টা চালিয়ে যায়।
সাদনান নিজের দানবীয় হাতের স্পর্শে কাবু করলো বউ কে।নিজের পুরুষালী শক্ত অধরের ভাঁজে চেপে ধরে প্রিয়তা অধর।প্রিয়তার নখ গেঁথে সাদনান এর উন্মুক্ত পিঠে সাদনান আরও উন্মাদ হলো নিজের সব টা দিয়ে বউ কে ভালোবাসতে লাগলো।প্রিয়তার আস্তে করে চোখ বন্ধ করে নিলো আর অমনি চোখের কোঠরি হতে গাল বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়লো
সাদনান চাইলো বউয়ের বন্ধ চোখ জোড়ার দিকে যা এখন কাজল লেপ্টে একাকার অবস্থা হয়ে আছে।
সাদনান সেই ভেজা চোখের পাতায় চুমু খেয়ে নেশাতুর কণ্ঠে বলল

-“কেন আমাকে পাগল করতে আসো!
শুধু শুধু নিজের কষ্ট ডেকে আনো।”

-“যদি সেই কষ্টের কারণ আপনি হোন তবে তা আমি হাসতে হাসতে গ্রহণ করবো।”

#চলবে……

#আমার_তুমি
#পর্ব_৪৩[অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষিদ্ধ]
#জান্নাত_সুলতানা

-“আপনি কি করে জানতে পেরে ছিলেন স্টিভ আমার জাস্ট ফ্রেন্ড?
প্রথম তো বিশ্বাস করলেন না।”

-“কিছু জিনিস গোপনে সুন্দর।”

ওয়াজিদ কথা শেষ রিধির ঘাড়ে আবার চুমু খেলো।রিধি মোচড়ামুচড়ি করে সড়ে যেতে চাইলো তবে ওয়াজিদ এর শক্ত বাঁধন হতে নিজে কে ছাড়াতে পারলো না।
যা দেখে ওয়াজিদ হাসলো শব্দ করে সেই হাসি রিধির সর্বাঙ্গে শিউরে ওঠলে

-“এই বাঁধন এতো সহজে ভাঙ্গা যাবে?”

-“আমি চাইও না ভাঙ্গতে।

ওয়াজিদ রিধির কাঁধে আবারও চুমু খেলো। রিধি এবার ফিরে ওয়াজিদ কে জড়িয়ে ধরলো।
ওয়াজিদ বুঝতে পারে বউ তার সঙ্গ চাচ্ছে তাই তো কথা না বাড়িয়ে বউ কে কোলে তুলে সোজা রুমে চলে এলো।আর একে অপরের মাঝে ডুবে গেলো।

———

রাহান আর সারার বিয়ের শপিং এর জন্য বাড়িতে দোকান দার নিজে সব রকম পোশাক নিয়ে এসছে।দোকান গুলো অবশ্য মির্জাদের কর্মচারী রেখে দিয়েছে শুধু। আম্বিয়া মির্জার আদেশ কোনো মহিলা মার্কেট যেতে পারবে না।
এতে অবশ্য কারোর কোনো অসুবিধা নেই এতো বছর ধরে তো এই রীতি অনুযায়ী কাজ হয়ে আসছে।
শুধু মাইশার সময় মাইশার জোরাজুরি করাতে মাইশার বিয়ের শপিং মাইশা নিজে করতে চেয়েছে তাই দেওয়া হয়ে ছিল।
সবার জন্য সবার মোটামুটি কাপড় নেওয়া হয়েছে। গায়ে হলুদ এর কাপড় রাহান নিজে পাঠাবে।আর বিয়ের পোশাকও রাহান পাঠিয়ে দিয়েছে।
বাকি ছিল শুধু বাড়ির মানুষ জন। কাল সন্ধ্যায় গায়ে হলুদ বাড়ির ঘর ঝকঝকে পরিষ্কার সাথে সুন্দর করে সাজানো হয়েছে গায়ে হলুদের জায়গায় আগের ন্যায় বাগান টাই করছে, বিশাল জায়গায় নিয়ে তার কারণও অবশ্য রয়েছে ছেলের গায়ে হলুদও এখানে হবে। পরিবার বংশের ছোট মেয়ে তাই বিশাল ধুমধাম করে আয়োজন করা হয়েছে। পাড়াপ্রতিবেশি কাউ কে মনে হয় বাদ রাখে নি পাশের দুই এলাকায় পর্যন্ত বড় বড় মান্য গন্য ব্যাক্তিদের নিমন্ত্রিত করা হয়েছে।
সবার কাপড় নেওয়া শেষ আম্বিয়া মির্জা বেশ দামী দেখে ভারী একটা শাড়ী নিলো একদম লাল টকটকে যেটার দিকে সবাই কমবেশি হা করে তাকালো সাথে অবাক। জাফর মির্জা তো স্ত্রী দিকে চোখ কটমট করে তাকিয়ে বলেই ফেললো

-“আমু নিজের বয়সের দিকে একটু নজর দাও।
এই বয়সে এসে তুমি এসব পড়বে?”

আম্বিয়া মির্জা কোনো প্রতিক্রিয়া করলো না, আর না কারোর দিকে তাকালো। সোজা সবার পেছন চুপ টি করে দাঁড়ানো প্রিয়তার দিকে তাকিয়ে ইশারায় কাছে ডাকলো।প্রিয়তা ভয় পেলো ফাঁকা একটা ঢুক গিলে আশেপাশে সবার দিকে দৃষ্টি বোলাল। সাদনান এর দিকেও তাকালো তবে সাদনান ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে।প্রিয়তা বোনের দিকে তাকাতেই আয়না যেতে ইশারা করে প্রিয়তা হাতে থাকা চা পাতা কালার স্লিভলেস এর শাড়ী টা শক্ত করে চেপে ধরে এগিয়ে এলো।আম্বিয়া মির্জা উঠে দাঁড়িয়ে নিজের হাতের শাড়ী টা প্রিয়তার গায়ের উপর মেলে ধরতেই সবার বোধগম্য হলো এটা প্রিয়তার জন্য নিয়েছে প্রিয়তা নিজেও অবাক হলো।আম্বিয়া মির্জা সবাই কে আরও একদফা চমকে দিয়ে প্রিয়তা কে হুকুমের স্বরে বলল

-“তুমি নিশ্চয়ই জানো সারার বিয়ের দিন তোমাদের একটা ছোটখাটো অনুষ্ঠান করা হবে।
বিয়ের পর পরই এটা পড়ে রেডি হয়ে নিবে।
আর বিয়েতে ওই চা পাতা কালার শাড়ী টা পড়বে।”

প্রিয়তার চোখে পানি চলে এলো।তবে সেটা চোখের কোঠরি হতে বেড়িয়ে আসার আগেই আম্বিয়া মির্জা নিজের হাতের তালুর সাহায্য মুছে নিয়ে কঠিন স্বরে বলল

-“আমার সামনে একদম ন্যাকামো করবে না।
আর হ্যাঁ, দুই বোন রাতে আমার ঘরে আসবে। ”

প্রিয়তা তৎক্ষনাৎ চোখ মুছে নিলো আর সবার মুখে হাসি।আম্বিয়া মির্জা বরাবরই ভালো মানুষ শুধু একটু রাগী মানুষ টা সাথে বেশ পুরনো দিনের নিয়ম কানুন মানে এটাই যা নয়তো ভিষণ ভালো মানুষ প্রিয়তা আগে থেকে জানতো অবশ্য এটা শুধু প্রিয়তা না মির্জা বাড়ির প্রতি টা সদস্য জানে তাই তো সাদনান দাদি কে কখনো কোনো বিষয়ে কিছু বলতো আর না প্রিয়তা সাদনান এর কাছে কিছু জানাতো।

-“আচ্ছা দাদি।”

প্রিয়তা জানালো।আয়নাও সম্মতি দিলো।
অতঃপর আবারও সবাই কাপড় দেখায় মনোযোগী হলো। রাহাত আয়নার পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল। সবাই যখন কাপড় দেখতে ব্যস্ত রাহাত তখন আয়নার একটা হাত মুঠি পুরে নিয়ে ফিসফিস করে বলল

-“বলেছিলাম না দাদি ভীষণ ভালো!সব ঠিক হয়ে যাবে।
আমার কথা ঠিক হলো তো?”

আয়না শুধু প্রশান্তির হাসি হাসলো।আয়না বরাবরই চুপ চাপ কথা কাটাকাটি কোনো দিনই করে নি রাহাত এর সাথে সব সময় কথা কম বলে।
রাহাতের অবশ্য প্রথম প্রথম মনে হতো আয়না হয়তো ওর সাথে এমন কিন্তু না আয়না মানুষ টাই এমন।থাকে না কিছু মানুষ অল্পতেই খুশি আয়নাও ঠিক তেমন।

———

প্রিয়তা, আয়না,সুফিয়া বেগম, সালেহা বেগম সবাই আম্বিয়া মির্জার রুমে উপস্থিত।
আম্বিয়া মির্জা বসে আছে বিছানায় সামনেই অনেক গুলো গহনা রাখা। গহনা গুলো যে অনেক পুরনো সেগুলো এক দেখায় যে কেউ বুঝতে পারবে।
তবে প্রিয়তা বুঝতে পারছে না তাদের এখানে ডেকে দাদি এগুলো কেন বেড় করেছে।

-“ছোট নাত বউ, এগুলো তুমি আমার দেওয়া শাড়ী টার সাথে পড়বে অনুষ্ঠানে।
মনে থাকবে?”

-“কিন্তু দা,,,

-“আমি কিছু শুনতে চাই না।”

প্রিয়তা চুপ করে গহনা গুলো হাতে নিলো। আম্বিয়া মির্জা আয়নার হাতেও সেম ডিজাইন এর একটা নেকলেস মোটা মোটা দুই টা বালা বড় বড় এক জোড়া কানের জিনিস এক জোড়া নুপুর সাথে নাকের একটা বড় নথ আর কোমড়ের একটা বিছা।
প্রিয়তা গহনা গুলো এক পলক দেখে নিলো গহনা সাজুগুজু এসবের প্রতি কোনো দিনই দুই বোনের বেশি আগ্রহ নেই।
আম্বিয়া মির্জা গহনা গুলো দিয়ে আগের স্থানে গিয়ে বসে পড়লো আবার অতঃপর দুই ছেলে বউয়ের উদ্দেশ্য বলল

-“তোমাদেরও কিন্তু দেওয়া হয়েছে।
আর তোমাদের মেয়েদের জন্য আছে।তবে বালা জোড়া শুধু বাড়ির বউয়ের পায়।”

-“জ্বি আম্মা।”

সুফিয়া বেগম বলল।
তার পর সবাই আম্বিয়া মির্জা রুম হতে বেড়িয়ে এলো।
প্রিয়তা গুটিগুটি পায়ে রুমে এসে সেগুলো বিছানায় রেখে সাদনান এর উন্মুক্ত বুকে শুয়ে পড়লো।
জোরে জোরে শ্বাস ফেলে বলল

-“দাদি দিয়েছে।”

-“তোমার নেই।”

-“দাদি দিয়েছে।”

-“ভালো তো।”

সাদনান এর দায়সারা ভাবে জবাব। প্রিয়তা এবার মুখের অবস্থা এমন করলো যেনো কেঁদে ফেলবে।
সাদনান তড়িঘড়ি করে উঠে বসলো বউ কে নিজের বাহুডোর আগলে নিলো।
মুচকি হেঁসে বলল

-“পাগল,মজা করছিলাম।”

প্রিয়তা তাও নাক টানে। ও ভেবেছে হয়তো সাদনান রাগ করে এসব বলেছে।
সাদনান বউ কে বুকের উপর আগলে রেখেই হঠাৎ জানতে চাইলো

-“ঔষধ খেয়েছো?”

-“প্লিজ।”

কণ্ঠে আকুতি। সাদনান এর বুকের ভেতর ধক করে উঠলো।সে কি একটু বেশি করছে?
সাদনান প্রিয়তা কে নিজের বুকের উপর হতে আলগা করলো। দুই হাতের আঁজল নিয়ে নিলো প্রিয়তার মুখখানা।
প্রিয়তা দৃষ্টিতে কেমন আকুলতা কিছু পাওয়ার জন্য আবেদন। সাদনান সে দিকে তাকিয়ে থমথমে খেলো।ফিরাবে না বউ কে আল্লাহ যদি চাই তবে আর কোনো কৃত্রিম পদ্ধতি ব্যবহার করবে না দেখা যাক কি হয়।

-“আমার তুমি কে সুস্থ দেখতে চাই, সব দিক সামলে চলবে।”

প্রিয়তা কি বুঝলো কে জানে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো সাদনান কে।সাদনান নিজেও বউ কে আগলে নিলো।

———-

-“একটু তো লজ্জা পাওয়া উচিত সারু।”

সারা মাইশার কথা শুনে মুখ ভেংচি কাটে কোনো কথা বলে না।
মাইশা হতাশার শ্বাস ছাড়ে। এই মেয়ে কে বলেও কোনো লাভ নেই।কে বলবে এই মেয়ের বিয়ে আজ!দেখো কত সুন্দর সবার সাথে হেঁসে হেঁসে আড্ডা দিচ্ছি। একটু তো লজ্জা সরম পাওয়া উচিত কনের।

-“নিচে অনেক মানুষ।
আশা করি সেখানে ভদ্র ভাবে থাকবি।
নয়তো দাদি কে ডাকবো।”

মাইশা কথা শেষ করে চলে গেলো। মাইশা যাওয়ার পর পরই সারা কে কয়েকজন মেয়ে মিলে হলুদের অনুষ্ঠানের জায়গায় নিয়ে এলো।

#চলবে…..

#আমার_তুমি
#পর্ব_৪৪[অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষিদ্ধ]
#জান্নাত_সুলতানা

সারা আর রাহানের হলুদের অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে।রাহান রা আবার তাদের বাড়ি ফিরে গিয়েছে। এখন শুধু সবাই যে যার মতো মজা করছে। প্রিয়তা সারার পাশেই বসে আছে তার ঠিক বরাবর সাদনান দাঁড়িয়ে কথা বলেছে কিছু লোকের সাথে প্রিয়তা সাদনান এর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সাদনান একবারের জন্যও তাকায় নি।
অবশ্য বাড়ির পুরুষ লোক ছাড়া বাহিরের লোক এদিকে আসা নিষিদ্ধ।
সালেহা বেগম কোথা থেকে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এলো।

-“এখানে আর বসে থেকে কাজ নেই।
যা ফ্রেশ হয়ে চট করে শুয়ে পড় গিয়ে।”

সারা মায়ের মুখে পানে একবার তাকাল। কাল কের পর থেকে আর এই মুখ টা রোজ সকালে ঘুম ভেঙ্গে দেখা হবে না।

-“ওমা দেখো এখনো বসে আছে!
প্রিয়ু ওকে নিয়ে যা তো।”

প্রিয়তা কে উদ্দেশ্য করে বল সালেহা বেগম। প্রিয়তা সম্মতি দিয়ে জানায়

-“আচ্ছা মা।”

সারা চোখে হাল্কা পানি এলো তবে তা গড়িয়ে পড়ার আগে মুছে নিয়ে প্রিয়তার সাথে চলে গেলো।

————

সারা আর রাহানের বিয়ে টা খুব সুন্দর করে হয়ে গেলো।একটু তাড়াহুড়ো সহিতেই হয়েছে। বেলা এখন দুইটা।সারার বিয়ে শেষ ওদের এক সাথে বসানো হলো।ততক্ষণে প্রিয়তা কেও সাজিয়েগুছিয়ে নিয়ে এসছে আম্বিয়া মির্জা।
কেউ কেউ অবাক হলো কেউ আবার প্রশংসা করলো।অবাক হওয়ার অবশ্য অনেক কারণ রয়েছে।সাথে প্রশংসা করারও।
সবাই প্রিয়তা কে এটা সেটা দিচ্ছে কেউ আবার আগেই দিয়ে দিয়েছে। প্রিয়তার পাশেই আম্বিয়া মির্জা বসে আছে। কিন্তু হঠাৎ করেই ওনি ওঠে চলে গেলো। প্রিয়তার এবার ভীষণ অস্বস্তি হতে লাগলো।এতো মানুষের ভীড়ে পরিচিত মুখ খুব কমই আছে।তাও আবার সবাই দূরে দূরে। শুধু মাইশা একটু কাছে আছে তাও মাইশা নিজেও অসুস্থ তাকে তার মা সুফিয়া বেগম আগলে দাঁড়িয়ে আছে।
আয়ান নেই এখানে থাকলে ঠিক বোনের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতো আর আয়না সে তো ইনিয়া কে নিয়ে হয়রান রাহাত নিজেও হয়তো কোথাও কাজ করছে।
প্রিয়তা সবার সাথে হেঁসে হেঁসে কথা বলছে তবে ভেতরে ভেতরে ভয়ে লজ্জায় আড়ষ্ট।
ঠিক তক্ষুনি কোথা থেকে যেনো একজন বলিষ্ঠ শরীরের লোক প্রিয়তার পাশে ধপ করে বসে গেলো।প্রিয়তা ভাবনায় বিভোর ছিল তাই হঠাৎ এহেন ঘটনা হকচকিয়ে উঠে সরে বসতে চাইলো তবে পাশে বসা সুদর্শন পুরুষ সাদনান তা হতে দিলো না নিজের দানবীয় হাত খানা বউয়ের কোমড় চেপে ধরে। প্রিয়তা তৎক্ষনাৎ চোখ ফিরিয়ে দেখে নিলো ব্যক্তিটা কে।
যে এখন কি সুন্দর হেঁসে হেঁসে সামনে কিছু লোকের সাথে কথা বলতে ব্যস্ত।
প্রিয়তা সাদনান কে দেখে একটু স্বভাবিক হলো।ধীরস্থির করে নিজে কে।

-“আমি আছি না!
এতো নার্ভাস কেন হচ্ছিলে?”

-“আগে ছিলেন না।”

-“কে বলেছে?
না থাকলে দেখলাম কি করে তুমি নার্ভাস?”

প্রিয়তা এবার থমথমে খেলো। সত্যি তো।তবে পরক্ষণেই কিছু মনে হতে, জিগ্যেস করলো

-“তাহলে তখন আসলেন না কেনো?”

-“ছিলাম তুমি দেখো নি।”

প্রিয়তা আর কথা বাড়ায় না চুপটি করে থাকে সাদনান নিজেও।

বিকেল সাড়ে পাঁচ টার দিকে সারা কে বিদায় দিবে সবাই তোড়জোড় করছে।বাড়ি কাছে হওয়াতে কেউ তেমন তাগাদা দেয় নি।কিন্তু এখন তো রাত হয়ে আসছে যাওয়া দরকার। কিন্তু সারা সে তো কতক্ষণ বড় ভাই কতক্ষণ ছোট ভাই তো কতক্ষণ মা একে একে সবাই কে জড়িয়ে ধরে কান্না কাটি করেই যাচ্ছে। কত সুন্দর করেই না সেজে ছিল পার্লারের মেয়ে গুলো কে নিজে দেখিয়ে দেখিয়ে বলে বলে সেজে ছিল কিন্তু এখন সেই সাজের বারো টা বেজে গিয়েছে।
বেশ অনেক টা সময় পর রাহানের বাবা আজ্জম মির্জা কে ইশারায় কিছু বোঝাতেই তিনি এগিয়ে এসে মেয়ে কে আগলে নিয়ে রাহানের হাতে মেয়ে কে তুলে দিলো। রাহান হাত টা শক্ত করে ধরে সেভাবে গিয়েই গাড়ীতে বসে।
সাদনান সে দিকে এগিয়ে যায় রাহান কঠিন স্বরে কিছু বলে যা সারার কানে যায় কিন্তু ততটা গুরুত্ব দেয় না
রাহান মুচকি হেঁসে আশ্বাস দিয়ে জানালো

-“তোদের মতো এতো বিলাসবহুল জীবন হয়তো দিতে পারবো না। কিন্তু ভালোবাসার কোনো কমতি হবে না, ইনশাআল্লাহ।”

গাড়ি ছেড়ে দিলো।সাঁই সাঁই করে গাড়ি ছুটে দৃষ্টির আড়াল হলো।সাদনান এর চোখ হতে এক ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়লো।বাড়ির প্রতি টা সদস্য কেমন চুপ চাপ হয়ে গেলো মূহুর্তের মধ্যে।
সালেহা বেগম ততক্ষণে কেঁদে কেটে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছে। চুপ করে আছে তিনি ওনাকে নিয়ে সুফিয়া বেগম আর প্রিয়তা ভেতরে চলে গেলো।
আস্তে আস্তে জায়গা টা জনমানবহীন হয়ে গেলো।

————–

সারা রিধির সাথে ভিডিও কলে কথা বলছে।এই ঘন্টা খানিকক্ষণ হবে কয়েকটা মেয়ে মিলে সারা কে এখানে রেখে গিয়েছে।
সারা এখন একটা স্লিভলেস এর ব্লু কালার শাড়ী পড়ে আছে।শাড়ী টা রাহানের মা দিয়েছে মহিলা খুব ভালো মানুষ সারা জানে।
সারা রিধির সাথে কথা বলে ফোন কাটতেই দরজায় কেউ কড়া নাড়ে।
সারা মাথায় ভালো করে ঘোম টা টেনে বসে।রাহানের মা এসছে।হাতে খাবার এর থালা।
সারা বুঝতে বাকি থাকে না খাবার তার জন্যেই এনেছে।

-” আজ সারা দিন নিশ্চয়ই কিছু খেতে পারো নি!
খাবার টা চট করে খেয়ে নাও।না-কি আমি খাইয়ে দেবো?”

রাহানের মা জানতে চাইলো।
সারা সহসা একটু অবাক হলো তবে মুখে বলল

-“না মা আমি পারবো।
আপনি ঘুমিয়ে পড়ুন গিয়ে রাত তো অনেক হলো।
বাবা কোথায় আপনারা খেয়েছেন।”

-“পাগলি মেয়ে সবে তো সাড়ে আটটা বাজে। আমরা কেউ এখনো খাই নি। তোমার খাবার টা আরও আগে দিতাম কিন্তু এতো কাজ সব একা হাত,,,

-“না মা কোনো সমস্যা নেই।
আপনি যান খাবার খেয়ে শুয়ে পড়ুন গিয়ে।”

সারার কথা শুনে তিনি মুচকি হেঁসে খাবার এর প্লেট টা সেন্টার টেবিলে রেখে সারার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে প্রস্থান নিলো।
সারা দরজা টা হাল্কা ভিড়িয়ে এসে হাত টা ধুয়ে খেতে বসে গেলো। পেটেও ভীষণ ক্ষুধা ছিল তাই কোনো দিকে আর তাকাল না।
খাওয়ার মাঝেই কাশি ওঠে গেলো আর ঠিক তক্ষুনি কেউ পানির গ্লাস ধরে সামনে সারা না দেখে পানি নিয়ে খেয়ে নিলো।কিন্তু পানি খাওয়ার পর গ্লাসে রাখতে গিয়ে হঠাৎ কিছু মনে পড়তেই মাথা তুলে তাকাতেই দেখা মিলে স্বামী নামক ব্যক্তিটার।
রাহান বউয়ের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে।
সারা লজ্জা পেলো।মুখ ফিরে উঠে যেতে নিলেই রাহান হাত ধরে আঁটকে দেয়।
ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করে

-“খাবার ফেলে কোথায় যাচ্ছো?”

-“আমার খাওয়া শেষ।”

-“আচ্ছা।
কিন্তু আমরা খাওয়া শেষ হয় নি।
বসো আমাকে খাইয়ে দাও।”

সারা চমকে উঠলো। হাত টা মোচড়ামুচড়ি করে ছাড়ানোর চেষ্টা করে বলল

-“আপনি বসুন।
আমি খাবার নিয়ে আসছি।”

-“আনতে হবে না।
তোমার হাতের টা খাইয়ে দাও।”

সারা আর কোনো বাক্য প্রয়োগ করলো না। সেভাবে বসে খাবার থালা হতে খাবার নিয়ে রাহান কে খাইয়ে দিলো রাহান তৃপ্তি করে খেলো সাথে খাওয়ার ফাঁকে সারার হাতে কামড় আর নিজের দানবীয় হাতের বেহায়া স্পর্শ তো আছেই। সারা দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করে।তবে একটা অন্য রকম ভালো লাগা কাজ করেছে মেয়েটা দেহ মন জুড়ে।
খাবার শেষ এঁটো থালা রেখে নিজ হাত ধুয়ে রাহানের মুখ মুছিয়ে পানি খাইয়ে দিলো।
রাহান পুরো টা সময় বউয়ের দিকে তাকিয়ে রয়।
বিছানায় ফেলে রাখা গোলাপের পাপড়ি হাতে সারার উপর সেগুলো ছুঁড়ে ফেলে।
সারা তবুও ফিরে তাকায় না যে মেয়ে টা কাল অব্দি লজ্জা পাচ্ছিল না আর আজ এখন এসে লজ্জায় বারংবার আড়ষ্ট হচ্ছে।
সারা নিজের চুল খোলে সে গুলো সুন্দর করে আঁচড়ে বিনুনি করে।
রাহান ততক্ষণে বউয়ের একদম নিকটে এসে দাঁড়িয়ে। সারা মিররে দেখলো কিন্তু তবুও কোনো প্রতিক্রিয়া করে না কিন্তু ভেতরে ভেতরে ঠিক অস্বস্তি বোধ করে।
গলার নিচে নাকের ডগায় ঘাম চিকচিক করছে রাহান সব টা অবলোকন করলো।
আলগোছে নিজের দুই হাত সারার বাহুর উপর রেখে নিজের দিকে ফিরালো। সারা চোখ বন্ধ করে নিলো।রাহান হাসলো।এই মেয়ে ফোনে কি ফরফর করেই না কত কথা বলতো।
আর এখন দেখো লজ্জায় তাকাচ্ছেই না।

-“ঘুমিয়ে পড়বো?”

সারার কি হলো কে জানে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো রাহান কে।
রাহান যেনো নিজের উত্তর পেয়ে গেলো।
এতো দিনের জমানো ভালোবাসা সব দিয়ে বউ কে উজাড় করে ভালোবাসলো।

#চলবে…..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে