#আমার_তুমি
#পর্ব_৩৬[অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষিদ্ধ]
#জান্নাত_সুলতানা
ফুল দিয়ে সাজানো আয়ানের রুমে মাইশা বসে আছে। রুম জুড়ে ফুলের গন্ধে মৌ মৌ করছে।
রাত এখন সাড়ে আটটা বাজে
সওদাগর বাড়িতে তেমন মেহমান নেই।তাই বাড়ি ফাঁকা। বিয়েতেও তেমন লোকজন যায় নি শুধু এলাকার কিছু মুরব্বি আর আশে পাশের কিছু পাড়াপ্রতিবেশি আর শফিক সওদাগরের হোটেলের কিছু কর্মচারী সাথে কিছু আয়ানের বন্ধু।
আর মাইশা কে পাশের বাড়ির কিছু মেয়ে সাজিয়ে গুছিয়ে এখানে বসিয়ে দিয়ে গিয়েছে।
আয়না,প্রিয়তা কাউ কে আসতে দেয় নি আম্বিয়া মির্জা। আয়নার চার মাস চলে তাই আসতে দেয় নি।আর প্রিয়তা কেও আসতে দেয় নি আম্বিয়া মির্জা।
সারা আসতে চেয়ে ছিল কিন্তু কয় দিন পর আবার সারা অন্যের বাড়ির বউ হবে সেখানে এখন এখানে আসাটা ভালো দেখায় না তাই মাইশা আনে নি সারা কে।
মাইশার ভাবনার মাঝেই বাহির হতে খটখট শব্দ করে কেউ রুমে ভেতর প্রবেশ করে।
মাইশা একটু নড়েচড়ে বসে।বুকের ভেতর কেমন করছে টিপটিপ শব্দ হচ্ছে।
মাইশা জোরে জোরে কয়েক বার নিশ্বাস টানে নিজে কে স্বাভাবিক করতে চায় এ-র মধ্যে আয়ান দরজা টা বন্ধ করে এগিয়ে এলো।
হাতের ঘড়ি খোলে ড্রেসিং টেবিলের উপর রাখে।
গায়ে একটা আকাশী রঙের শার্ট সেই এর হাতার ভাঁজ খুলতে খুলতে মাইশার দিকে এগিয়ে এলো।
মাইশা তখনো লম্বা ঘোম টা টেনে বসে আছে। আয়ান হাসলো।মাইশা তৎক্ষনাৎ দোপাট্টা টেনে সড়িয়ে দিলো।
ফুসফুস করে শ্বাস টেনে বলল
-“আপনি হাসছেন?
সেই কখন থেকে বসে আছি।আর আপনি এসে কোথায় আমার ঘোমটা সড়াবেন তা না করে হাসছেন।”
-“গরম কি বেশি লাগছে?”
মাইশা এবার লজ্জা পেলো।
মাথা নুইয়ে নিলো এদিক ওদিক তাকাল।সে তো ভুলেই বসে আজ তাদের বাসর আর সে কি না বাসর রাতে জামাইর সাথে এমন বিহেভিয়ার করছে?
অবশ্য গরম টাও ইদানীং একটু বেশি পড়ছে।তার মধ্যে এমন ভারি লেহেঙ্গা পড়ে সেই বেলা এগারো টা থেকে আর এখন রাত বাজে নয় টার বেশি সময়।
-“লজ্জা?
কোনো ব্যাপার না,একটু পর সব ঠিক করে দেবো।”
হাসতে হাসতে কথা টা বলে আয়ান।
মাইশা আবারও লজ্জা পেলো।আর লজ্জা আড়াল করতে আমতা আমতা করে জানালো
-“ফ্রেশ হবো।”
-“শাওয়ার নেওয়ার প্রয়োজন নেই।
আমি ড্রেস দিচ্ছি। শুধু এগুলো চেঞ্জ করে এসো।”
আয়ান কথা গুলো বলতে বলতে আলমারি খোলে সেখান থেকে একটা প্যাকেট বের করে এনে মাইশার হাতে দেয়।মাইশা প্যাকেট টা হাতে নিয়ে আচ্ছা বলে উঠে ওঠে ওয়াশ রুম চলে গেলো।
আর আয়ান বাঁকা হাসলো।
মাইশা ওয়াশ রুম এসেই আগে দোপাট্টা খোলে তার পর সব গহনা।
শরীরে টাওয়াল পেঁচিয়ে প্যাকেট খুলতেই চোখ কপাল উঠে।
তড়িঘড়ি করে আবারও সে গুলো আগের স্থানে রেখে ওয়াশ রুমের দরজা খুলে আয়ান কে ডেকে উঠলো। আয়ান যেনো এটার অপেক্ষায় ছিল।
ফোন বিছানায় রেখে এগিয়ে আসে। হাসি চেপে মুখে কৌতূহল ভাব টেনে জিজ্ঞেস করে
-“কি হয়েছে?
কোনো সমস্যা?”
-“মানে আপনি জানেন না?”
মাইশা ভ্রু কুঁচকে নিজেও জিজ্ঞেস করে।
আয়ান সিরিয়াস মুখ করে বলল
-“না বললে জানবো কি করে?”
-“আচ্ছা জানতে হবে না।
আপনি একটা কাজ করুন না প্লিজ আমার লাগেজ টা খুলে সেখান থেকে একটা কুর্তি আর প্যান্ট দিন।”
মাইশা চোখ বন্ধ করে শ্বাস টানে।আয়ান যে ইচ্ছে করে এমন টা করেছে বুঝতে পারে তবে আজ প্রথম রাতে এমন একটা শর্ট ড্রেস পড়ে আয়ানের সামনে সে কিছুতেই যেতে পারবে না।
তাই নিজের মর্জি মতো পোশাক দিতে বলে।
আয়ান হয়তো বুঝতে পারে। মাইশা এসবে কমফোর্টেবল ফিল করতে পারছে না তাই আর জোর করে না।
-“আচ্ছা।”
আয়ান মুখ টা মলিন করে জানায়।
অতঃপর এগিয়ে গিয়ে মাইশার কথা মতো কাজ করে। মাইশা সে গুলো পড়েই ওয়াশ রুম হতে বেড়িয়ে আসে। হাতে বিয়ের জিনিস গুলো সব সোফায় রেখে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল গুলো খুলে ঠিক ঠাক করে আঁচড়ে নেয়।
আয়ান তখন বিছানায় ল্যাপটপ কোলে তুলে নিয়ে বসে কিছু কর ছিল কিন্তু মাইশা কে ওয়াশ রুম হতে বেড়িয়ে আসতে দেখে নিজে এগিয়ে গিয়ে ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার থেকে কিছু একটা বেড় করে মাইশার হাতে দেয়।
মাইশা অবাক নয়নে তাকালো আয়ানের দিকে।
-“দেনমোহর তো আগে দিয়ে দিয়েছি।
বাসর রাতের উপহার।”
আয়ান মুচকি হেঁসে বলল।
মাইশা কি বলবে খোঁজে পাচ্ছে না। আয়ান বিয়ের ছয় মাস পরেই মাইশার নামে একটা একাউন্ট খোলে সেখান দেনমোহর এর টাকা রেখে দিয়েছে। এতো টাকা তো আর বাড়িতে দিতে পারে নি আর দিলেও বা রাখতো কোথায়?
তাই এটা আয়ান বেস্ট মনে করেছে। এতে অবশ্য মাইশা রাজি ছিল না। ভালোবাসার জোরের কাছে এসব কিছু না।
দেনমোহরে যদি সংসার এর চাবিকাঠি হতো তবে সমাজে এতো এতো ডিভোর্স হতো না।
মাইশার ভাবনার মাঝেই আয়ান মাইশার হাত থেকে পায়েল টা নিজের হাতে নিয়ে মাইশা কে ড্রেসিং টেবিলের সামনে টুলে বসিয়ে দিয়ে নিজেও হাঁটু গেঁড়ে বসে মাইশার পায়ে সোনার পায়েল টা পড়িয়ে দিলো।
মাইশা এক দৃষ্টিতে সে দিকে তাকিয়ে থাকে।
-“রেগে আছেন?”
-“না।
তবে একটু একটু অভিমান হয়ে ছিল।
কিন্তু আমার ভালোবাসার মানুষ টার অস্বস্তি হোক আমি চাই না।”
আয়ানের কথার পিঠে মাইশা কিছু বলল না তবে মনে মনে ঠিক করে আয়ানের ইচ্ছে টা খুব শীগগির পূর্ণ করে দিবে।
মাইশা আয়ানের গালে হাত রেখে নিজের অধর জোড়া আয়ানের কপালে ছুঁয়ে চুমু খেয়ে সরে আসতে নিলেই আয়ান হুট করে মাইশা কে কোলে তুলে নেয়।
মাইশাও শক্ত করে আয়ানের গলা জড়িয়ে ধরে।
আয়ান মাইশা কে আলগোছে বিছানায় শুয়ে দিলো।
গলা হতে ওড়না টা সড়িয়ে গলায় মুখ গুঁজে সেখানে চুমু খায়।মাইশা শক্ত করে আয়ানের শার্ট সহ পিঠ খামচে ধরে।আর এভাবেই রাত যত গভীর হলো তাদের ভালোবাসা তত প্রখর হলো।
এক নতুন অনুভূতির সাথে পরিচয় হলো।একে অপরের মাঝে হারিয়ে গেলো।
বিয়ে টা অনেক আগে হলেও এই অনুভূতি সম্পূর্ণ নতুন।
————
-“এদিকে ঘেঁষা হচ্ছে কেন?”
প্রিয়তা হকচকিয়ে উঠে। চুপ করে সাদনান এর বুকের উপর মাথা রেখে চোখ খিঁচে বন্ধ করতে নিয়েও করে না।
আজ এর একটা বিহিত করেই ছাড়বে।আজ দুই রাত ধরে সাদনান প্রিয়তার আশেপাশে ঘেঁষে না।
প্রিয়তা বুঝতে পারে সাদনান কেন এমন করে কিন্তু কিছু বলে নি।
কিন্তু আজ প্রিয়তা কে বুকেও নেয় নি তাই তো সাদনান ঘুমিয়েছে ভেবে সুড়সুড় করে সাদনান এর বুকের উপর নিজের মাথা টা রেখে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ছিল কিন্তু হঠাৎ সাদনান সজাগ হয়ে উপরোক্ত কথা টা বলে।
প্রিয়তা সোজা শোয়া থেকে উঠে বসে সাদনান সেভাবেই শুয়ে থাকে।
বউ তার খেপেছ। এখন কি করে দেখার পালা।
-“এমন করছেন কেন আপনি?
সমস্যা কি আপনার?”
প্রিয়তা রাগে গজগজ করতে করতে প্রশ্ন করে। সাদনান খুব স্বাভাবিক ভাবে জবাব দেয়
-“কোনো সমস্যা নেই।
একদম ঠিক আছি।”
-“আমাকে তো আর প্রয়োজন নেই।
এখন নতুন কাউ কে পেয়েছেন না? আমাকে আর লাগবে না। আমি কালই মায়ের কাছে চলে য,,,,
প্রিয়তা কথা সমাপ্ত করতে পারে না সব টা তার আগেই সাদনান ঝড়ের বেগে শোয়া থেকে উঠে প্রিয়তা কে এক ঝটকায় নিজের নিচে ফেলে দিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে উঠে
-“উঁহু, ভুলেও এসব ভাবতে যেয়েও না, জান।
তুমি চাও আর না চাও তুমি এখানে এই আমার সাথে থাকতে হবে। হয় ইচ্ছে নয় অনিচ্ছায়।”
প্রিয়তা মুচকি হাসলো। দুই হাত সাদনান এর হাতের বাঁধন থেকে ছাড়িয়ে শক্ত করে সাদনান এর গলা জড়িয়ে ধরে বলল
-“আমি চাইও না আপনার থেকে ছাড়া পেতে ,এমপি মহোদয়। ”
#চলবে….
#আমার_তুমি
#পর্ব_৩৭[কপি করা নিষিদ্ধ]
#জান্নাত_সুলতানা
রিধি হলুদের সাজে বসে আছে স্টেজে। সামনে পেছনে মানুষ গিজগিজ করছে।
রিধির হাসি-হাসি মুখ করে বসে আছে।অথচ বুকের ভেতর এক তীব্র যন্ত্রণা হচ্ছে। কেন এমন হলো তার জীবন টা? এমন তো হওয়ার কথা ছিল না।আচ্ছা সে নাহয় তখন ছোট ছিল। কিন্তু ওয়াজিদ? সে কি ঠিক ঠাক একজন প্রেমিক যা করে তা ছিটেফোঁটাও করতো রিধির জন্য? সব টাই কি রিধি ইচ্ছে করে করেছে?ওয়াজিদ এর বুঝি ভুল ছিল না?ভুল টা রিধি করেছে কিন্তু তার কারণ টা তো ওয়াজিদ ছিল।সে কি সময় দিতো রিধি কে?রিধির আজ খুব করে মনে হচ্ছে তখনকার সব টার জন্য ওয়াজিদ দায়ী। কখনো কি রিধি কে সময় দিয়েছে হাতে হাত রেখে এক সাথে হেঁটেছে?না সে শুধু ভালোই বেসে গেছে কিন্তু ভালোবাসলে হয় না ভালোবাসার মানুষ টার জন্য সত ব্যাস্ততার মাঝেও একটু সময় বেড় করে ভালো মন্দ জিগ্যেস করতে হয়।সে কি করেছে তেমন কিছু সে তো তখন নিজের ক্যারিয়ার গড়তে ব্যস্ত ছিল। আর যখন রিধি ভুল টা করে ছিল তখন কি একবারও রিধির পাশে থেকে সেই ভুল টা কে শোধরে দেওয়ার চেষ্টা করেছে? উল্টো নিজে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে দূর দেশে পাড়ি জমিয়ে ছিল।
রিধি আর ভাবে না।আর আজকের পর আর ভাববেয়েও না ভুলে যাবে সব। তার জীবনের সাথে যেই নতুন জীবন টা জুড়তে যাচ্ছে তাকে নিয়ে ভাববে।
শুনেছে সেও ডক্টর দেখতেও না-কি সুদর্শন।আর তাছাড়া একটু পর তো আসবেই তখন না হয় দেখে নিবে।
কিন্তু রিধির ভাবনা ভুল প্রমাণ করে দিয়ে সারা এসে জানালো ছেলে আসে নি। ছেলর না-কি ইমারজেন্সী কেস পড়ে গিয়েছে। ছেলের কাজিন আর বন্ধুরা এসছে হলুদ নিয়ে।
এতে অবশ্য রিধির কিছু এসে গেলো না কারণ হলুদের সময় ছেলেও মেয়ের বাড়ি আসে এটা জানতো না। তাছাড়া বিষয় টা ভালো দেখায় না। কিন্তু ছেলে না-কি নিজে থেকে আসবে বলেছে তাই কেউ আর না করে নি।
রিধি ভাবে মাত্র তো আর কয়েক ঘণ্টা ব্যবধান তার পর তো সরাসরি দেখতে পারবে।
——-
হলুদের অনুষ্ঠান শেষ রিধি ফ্রেশ হয়ে এসে শুয়ে পড়ে।কিন্তু কিছুতেই ঘুম আসছে না।কেমন জানি সব এলোমেলো লাগছে। মনে হচ্ছে কিছু একটা জীবন থেকে হারিয়ে গিয়েছে। রিধির আর ঘুম আসে না ওঠে বসে ফোন হাতে ওয়াজিদ এর পিক গুলো দেখতে দেখতে চোখ হতে জল গড়িয়ে পড়ে। কেন একটু বিশ্বাস করলো না তাকে?কেন সব টা না জেনে তাকে ভুল বুঝলো?
রিধি ভাবনার মাঝেই রিধির হাতে থাকা ফোন টা সশব্দে বেজে ওঠে।
অপরিচিত নাম্বার থেকে ভ্রু কুঁচকে আসে।ধরবে কি ধরবে না দ্বিধা করতে করতে ফোন টা কেটে গেলো।
রিধি যেনো হাঁপ ছেড়ে বাঁচল। তার কারণ রিধি ভাবছে যদি যার সাথে বিয়ে হচ্ছে সে হয়?
রিধি ফোন টা হাত থেকে বালিশের তলায় রাখতে যাবে ঠিক তখুনি আবার ফোন টা বেজে উঠল।
রিধি ফোন টা রিসিভ করতেই ওপাশ হতে রাশভারী কণ্ঠে ওয়াজিদ জিজ্ঞেস করলো
-“ঘুমিয়ে ছিলে?”
রিধি কি জবাব দেবে বুঝতে পারছে না।এতো কিছুর পরেও এতো টা স্বাভাবিক কি করে ওয়াজিদ?
-“শুয়েছি মাত্র।”
-“আসতে পারি নি বলে রাগ হয়েছে?
আসলে জরুরি একটা কেস পড়ে গিয়ে ছিল।”
-“এসব কেন আমাকে বলছেন?
তাছাড়া আপনার আসার না আসায় আমার কি আসে যায়?”
ওয়াজিদ এর কথা শুনে রিধি অবাক হয়ে বলল।
ওয়াজিদ আবারও খুব স্বাভাবিক ভাবে বলে উঠে
-“আসে যায়।
নিজ ইচ্ছে আসতে চেয়েছিলাম।”
-“আপনি কি বলছেন আমি বুঝতে পারছি না।”
রিধি ওয়াজিদ এর কথা কিছু বুঝতে পারছে না তাই আগের ন্যায় আবার অবাক হয়ে বলে।
ওয়াজিদ রিধির কথা মুচকি হাসে যা রিধি ফোনের মাঝেও বুঝতে পারে।
ওয়াজিদ ফিসফিস করে ফোন টা মুখের সামনে ধরে বলল
-“বুঝতে হবে না সুইটহার্ট।
কাল সারপ্রাইজ আছে।”
কথা টা শেষ ওয়াজিদ খট করে ফোন কেটে দেয়।
আর রিধি এদিকে সারা রাত ভাবতে থাকে ওয়াজিদ কিসের কথা বলল?কি সারপ্রাইজ আছে?
———
বিয়ে বাড়ি মানুষ জন অভাব নেই। পাড়াপ্রতিবেশি থেকে শুরু করে আত্মীয় স্বজনের।
রিধির নানা নানি নেই শুধু এক মামা আছে। ওনি ওনার পরিবার সমতে এসছে বিয়েতে।খুব কাছের আত্মীয় বলতেই এই ওনারাই।
তবে সমস্যা হলো রিধির মামি প্রিয়তা কে ওনার ছেলের জন্য চাইছে।
তিনি জানতো না সাদনানের বউ প্রিয়তা।এটা আম্বিয়া মির্জার কানে যাওয়া মাত্র তিনি মির্জা বাড়ির সবাই কে একটা রুমে ডাকে।
সাদনান দাঁড়িয়ে আছে ওর পাশেই রাহাত। জাফর মির্জা আম্বিয়া মির্জা পাশে বিছানায় বসে আছে। রুমে থাকা দুই টা সিঙ্গেল সোফায় আজ্জম মির্জা সাথে মফিজুর মির্জা। তাদের পেছনে দাঁড়িয়ে সালেহা বেগম, সুফিয়া বেগম। আর সালেহা বেগম এর আঁচল ধরে প্রিয়তা চুপটি করে ওনার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। তার কি দোষ ওই মহিলা তাকে সারার সাথে দেখেছে আর সারা কে প্রিয়তার পরিচয় জিগ্যেস করার মাত্র সারা জবাবে বলে ছিল তালতো বোন সাথে বান্ধবী।
ব্যস সেই থেকে ওনি প্রিয়তার পেছনে পড়ে আছে।
-“বাড়ির বউ হয়ে এমন রংঢং করলে তো এমনি হবে।
আছে কোনো বউয়ের চিহ্ন।”
-“আমার চোখে তো এমন কিছু পড়েনি।”
আম্বিয়া মির্জার কথার বিপরীতে বলল জাফর মির্জা।
-“আমি বলি আবার বিয়ে দিয়ে,,,
-“আচ্ছা?
চলো তবে তোমাকেও দিয়ে দেই।”
সাদনান এর কথা শুনে সবাই মুখ টিপে হাসতে লাগলো। জাফর মির্জা না পেড়ে শব্দ করে হেঁসে উঠলো। আম্বিয়া মির্জা মুখ বিরক্ত মুখে করে বলল
-“আপনি হাসছেন?”
-“তো কি করবো?
মেয়ে মানুষ এমন একটু আধটু এসব ঘটনা হবেই।
তাছাড়া বয়স টা এখন এমন পর্যায়ে এসব বিয়েসাদী সম্বন্ধ আসবেই।
এতে অবশ্য আমার প্রিয়তা দাদু ভাইয়ের কোনো দোষ নেই।”
জাফর মির্জা কথা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দরজায় কেউ কড়া নাড়ে।
সবাই মোটামুটি ভ্রু কুঁচকে নেয়।
এখানে তো কারোর আসার কথা নয়।
-“ভাবি দরজা টা একটু খোলেন?”
রিধির মামি ভদ্রমহিলার কণ্ঠ।
সালেহা বেগম শ্বশুর শ্বাশুড়ি দিকে তাকালো।জাফর মির্জা ইশারায় দরজা খুলতে বলল।
রাহাত গিয়ে দরজা টা খোলে।রিধির মামি সহ ওনার স্বামী, রাহান, রাহানের, বাবা মাও রুমে আসে।
রাহানের বাবা ভদ্রলোক এসেই রাহাত এর পাশে একবার দাঁড়িয়ে নিজের স্ত্রী দিকে চোখ কটমট করে তাকালো। রাহানের মা তৎক্ষনাৎ ভাবির দিকে তাকালো।
ভদ্রমহিলা আমতা আমতা করে বলল
-“আমি জানতাম এসব।
আপনারা দয়া করে ব্যাপার টা নিয়ে কেউ রাগ করবেন না।”
-“না, না আপা এভাবে বলবেন না।
এটা তো একটা ভুল বোঝাবুঝি মাত্র।”
সালেহা বেগম বলল।
সাথে সবাই সায় দিলো।ব্যাপার টা এখানে মিটমাট করে সবাই আবার যে যার বরাদ্দকৃত রুমে চলে গেলো।
———–
সাদনান প্রিয়তা কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে।প্রিয়তা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে যাচ্ছে।
-“ভাবা যায় মির্জা সাদনান শাহরিয়ার বউ এর জন্য আবার বিয়ের প্রপোজাল আসে!”
সাদনান টেনে টেনে বলল।
প্রিয়তা সাদনান এর এমন খামখেয়ালি কথায় অবাক হয়ে বলল
-“আপনি মজা নিচ্ছেন?”
-“নাহ একদমই না।”
কিন্তু প্রচুর রাগ হচ্ছে।”
প্রিয়তা ওঠে বসে শোয়া থেকে সাদনান নিজেও ওঠে বসে।
-“আপনাদের একদম উচিত হয় নি দাদি কে ওঠা বলা।”
-“কোন টা উচিত কোন টা অনুচিত সেটা আমি খুব ভালো করে জানি।”
সাদনান নিজের বক্তব্যে শেষ নিজেও শুয়ে বউ কে আবারও নিজের উপর টেনে নেয়।
শক্ত দানবীয় হাতের লাগাম ক্রমেই ছাড়িয়ে যায়। সেই হাতের স্পর্শে কাবু হয় ছোট প্রিয়তা।
প্রিয়তা চুপচাপ সাদনান এর সঙ্গ দেয়।
#চলবে…..