Monday, October 6, 2025







আমার তুমি পর্ব-৩২+৩৩

#আমার_তুমি
#পর্ব_৩২[অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষিদ্ধ]
#জান্নাত_সুলতানা

বাহিরে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। আর তিন্নি ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে দুই হাত বাইরে দিয়ে সেই বড় বড় বৃষ্টির ফোঁটা গুলো ছুঁয়ে দিচ্ছে।
আজ সারা দিন আকাশ মেঘ জমে ছিল আর সন্ধ্যা হতে না হতে সেই মেঘ বৃষ্টি হয়ে এসছে।
কবির রুমে বসে ল্যাপটপ কোলে নিয়ে কিছু করছে। তিন্নি জানে না কি করছে এতো মনোযোগ দিয়ে কি এমন রাজকার্য করছে।এতো সুন্দর ওয়েদার কোথায় বউয়ের সাথে রোমান্স করবে তা না করে কাজ নিয়ে পড়ে আছে।তিন্নি বিরক্ত হলো।আর ভাববে না কবির এর কথা। তিন্নি অনেক টা সময় হয় এভাবে দাঁড়িয়ে থাকে। ওর খুব করে ইচ্ছে করছে বৃষ্টিতে ভিজতে কিন্তু এটা সম্ভব হবে না কবির কখনো দিবে না।
তিন্নি হঠাৎ কোমড়ে একটা শক্ত হাতের স্পর্শ পেলো।তিন্নির সেকেন্ড এর মতো সময় লাগলো না স্পর্শ টা চিনতে। এই স্পর্শ টা এই চার মাসে খুব ভালো করে অনুভব করতে পেরেছে। তবে তিন্নির কাছাকাছি কবির যতবার আসে ঠিক ততবার তিন্নি কেঁপে কেঁপে উঠে।এবারও তার উল্টো হয় না।তিন্নি সারা শরীর অবস হয়ে আসার জোগাড়
তবে মুখে কিছু বলতে পারে না চুপ চাপ সেভাবেই দাঁড়িয়ে থাকে।
কবির বাম হাত টা তিন্নির কোমড়ে রেখে ডান হাত টা দিয়ে তিন্নির বাহিরে বৃষ্টির পানিতে ভিজতে থাকা ডান হাত টা মুঠোয় পুরো নিলো
হাত টা সেভাবে রেখেই ভেতরে আনে।অতঃপর তিন্নির কোমড়ে রাখে।ঠান্ডা বৃষ্টির পানি তার উপর হাল্কা শীত তিন্নি বরাবর এর মতো এবারও কেঁপে উঠল। তবে নিজে কে ধাতস্থ করে মিনমিন করে জিজ্ঞেস করলো

-“আপনার কাজ শেষ?”

-“হুম।”

কবির মাথা নেড়ে জবাবে বলে।
তিন্নি নিজে কে ছাড়ানোর চেষ্টা করে বলল

-“চলুন তবে খাবার খেয়ে নিবেন।”

কবির তিন্নির ঘাড়ে হাল্কা করে কামড়ে ধরে। তিন্নি ব্যাথাতুর শব্দ করে উঠে।
কবির মুচকি হেঁসে ছেড়ে দিয়ে তিন্নি কে নিজের দিকে ফিরে তিন্নির কপালের উপর পড়া থাকা ছোট ছোট চুল গুলো কানের পিঠে গুঁজে দিতে দিতে বলল

-“এটুকুতে এই হাল?
কিন্তু আজ এক ফোঁটাও ছাড়াছাড়ি নেই মিসেস কবির খাঁন।”

তিন্নি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে।
কথা টার মানে বুঝতে পারে নি।
তাই তিন্নি ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে

-“মানে?”

-“মানে টা একটু পর বুঝিয়ে দেবো।”

কবির রুমে চলে আসে। তিন্নি নিজেও পেছন পেছন আসে।
তিন্নি তখনো কথা টা বুঝতে পারে নি। তাই কবিরের সামনে এসে দুই হাত কোমড়ে রেখে বলল

-“আপনার কি হয়েছিল বলুন তো?”

-“বাবা কোথায়?”

-“হয়তো রুমে।
আপনি বসেন আমি ডেকে নিয়ে আসছি।”

তিন্নি বুঝতে পারছে কবির বিষয় টা এড়িয়ে যেতে চাচ্ছে তাই আর কিছু জিজ্ঞেস করে না।

রাতে খাবার শেষ সব কিছু গুছিয়ে কাজের লোক কে বুঝিয়ে দিয়ে তিন্নি রুমে এসেই দেখলো পুরো রুম অন্ধকার সাথে গোলাপ ফুলের গন্ধে মৌ মৌ করছে রুম জুড়ে।

তিন্নি ডান পাশে দেওয়ালে সুইচ টিপে লাইট অন করতেই
দেখে কবির এর হাতে একটা গোলাপ ফুল আর সেই ফুল থেকে পাপড়ি গুলো ছাড়িয়ে বিছানায় ফেলছে পাশেই সেন্টার টেবিলে আরও তিন চার টার মতো পরে আছে। সাদা চাদর এর উপর গোলাপের পাপড়ি গুলো কি সুন্দর লাগছে।
কিন্তু তিন্নির হঠাৎ মনে হলো কবির ফুল কোথা থেকে আনলো? বাহিরে তো বৃষ্টি? তবে কি,,,,

-“ফুল গুলো ছিঁড়ে নিলেন?”

-“হুম।”

তিন্নির প্রশ্নে খুব স্বাভাবিক ভাবে জবাব দেয় কবির।
সব গুলো ফুল ততক্ষণে কবির বিছানায় ছড়িয়ে ফেলেছে।

-“আপনার প্রিয় ছিল?
তাছাড়া ফুল গুলো তো কখন ছুঁতেও দেন নি?”

তিন্নি আবার অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে।
কবির তিন্নির প্রশ্নের জবাব না দিয়ে এগিয়ে গিয়ে দরজা টা বন্ধ করে ফিরে এসে ঝুঁকে এক ঝটকায় তিন্নি কে কোলে তুলে নেয়।
তিন্নি হকচকিয়ে উঠে চমকে কবিরের গলা জড়িয়ে ধরে।

-“ফুল ছাড়া বাসর কি করে হবে?
তাই প্রিয় জিনিস দিয়ে আজ আমার প্রিয় মানুষ টাকে আপন করে নিতে চাই!”

কথা গুলো বলতে বলতে কবির তিন্নি কে বিছানায় শুয়ে দিয়ে নিজের সম্পূর্ণ ভর ছাড়ে তিন্নির শরীর এর উপর।
গলায় মুখ গুঁজে অধর ছুঁয়ে দেয় সেখানে।

তিন্নি কি বলবে বুঝতে পারছে না। ওর সারা শরীর কাঁপছে থরথর করে। কবিরের হুটহাট জড়িয়ে ধরা চুমু খাওয়া এ-সব করে কিন্তু এতোটা গভীর স্পর্শ কবির কখনো করে নি।তিন্নি গলা শুকিয়ে আসছে। এতো দিন তো এটাই চাইতো তবে আজ কেন সম্মতির জবাব দিতে পারছে না।
তিন্নি কাঁপতে থাকা ডান হাত টা কোনো রকম কবির এর পিঠের ওপর রেখে ধরে আসা গলায় প্রশ্ন করে

-“ভালোবাসেন?”

-“প্রমাণ দিয়ে দেই?”

কবির উত্তর না দিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করে।
তিন্নির ঠোঁটের কোণায় হাসি দেখা দিলো।কি অদ্ভুত এই কবির খাঁন। ভালোবাসে অথচ মুখে কখনো শিকার করে না সব সময় এড়িয়ে চলে এই বিষয় টা।না শুধু এটা না কবির খাঁন মানুষ টা সব কিছুতেই এমন বেশি বাড়াবাড়ি একদম পছন্দ করে না।
তিন্নি দ্বিতীয় বারের মতো আবার বাম হাত টা কবিরের পিঠে রাখে।
দুই হাতে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে জানায়

-“ভালোবাসি ভীষণ ভালোবাসি।”

কবির আর সেকেন্ড দেরী করে না শক্ত করে নিজের অধরের ভাঁজে বউয়ের অধর চেপে ধরে।
সাথে নিজের হাতের এলোমেলো স্পর্শ তো আছেই।তিন্নি যেনো দিশেহারা হলো।শক্ত করে জড়িয়ে ধরে স্বামী কে।
আর কবির ব্যস্ত বউ কে ভালোবাসতে।সেই ভালোবাসার সাক্ষী সরূপ থাকলো আজ বৃষ্টির রাতে আকাশ থেকে জমিনে লুটিয়ে পড়তে থাকা বৃষ্টির পানি গুলো।

———–

রিধি সুন্দর করে একটা খয়েরী রঙের শাড়ী পড়ে রেডি হচ্ছে।
পাশেই সারা,মাইশা বসে আছে।আয়না আর আম্বিয়া মির্জা আসে নি। আয়না কনসিভ করেছে। তাই আম্বিয়া মির্জা নড়চড়া করতে দেয় নি।তাই আয়না আর আম্বিয়া মির্জা ছাড়া মির্জা বাড়ির সবাই আজ রাহানদের বাড়ি এসছে। তার কারণ রিধি কে আজ দেখতে আসবে।ছেলে কি করে রিধি জানে না। ছেলের সম্পর্কে কিছু জানে না রিধি। জানে বললে ভুল হবে সবাই জানাতে চেয়েছে কিন্তু রিধি শুনে নি।
ওর ভীষণ অভিমান হচ্ছে। কিন্তু কার উপর? যে আজ দুই মাসে একবারও রিধির খুঁজ নেয়নি তার উপর?
রিধি খুব করে চাইছে ওয়াজিদ যেনো আজ একটা বার ফোন করে। কিন্তু না রিধির ভাবনা চাওয়া সব ভুল ওয়াজিদ একবারও ফোন বা খুঁজ নেয়নি।
রিধির সাজানো শেষ প্রিয়তা গিয়ে তাগাদা দেয়।ছেলের বাড়ির সবাই এসেছে অনেক্ক্ষণ হয়।খাওয়া দাওয়ার পাট চুকিয়ে এখন তারা মেয়ে দেখার জন্য তাঁরা দিচ্ছে।

প্রিয়তা রিধি কে নিচে নিয়ে যেতে বলে তড়িঘড়ি করে ছুটে গেস্ট রুমের উদ্দেশ্য।
সাদনান এসছে মিনিট পাঁচ এর মতো সময় হবে।তাকে ফ্রেশ হওয়ার জন্য প্রিয়তা গেস্ট রুমে দিয়ে এখানে চলে এসছে।
বউ পাগল সাদনান না জানি ওয়াশ রুম থেকে বেড়িয়ে বউ কে রুমে না পেলে কি করে বসে তার ঠিক নেই।
তাই তো প্রিয়তা তাড়াতাড়ি করে রুমে আসতে নিয়ে ধাক্কা খেলে শক্ত একটা কিছুর সাথে।
বুঝতে সেকেন্ড এর মতো সময় লাগলো সামনের বস্তু টা কি।

-“আসছিলাম আমি।
প্রয়োজন ছিল না আসার।”

সাদনান কিছু না বলে টেনে নিয়ে রুমে ঢুকে পরে।
প্রিয়তা কে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে নিজের মাথা প্রিয়তার কোলে তুলে দিয়ে পেটে মুখ গুঁজে হুকুমের স্বরে বলে উঠে

-“আধঘন্টা ঘুমুতে হবে।
চুপ চাপ বসে থাকবে।ঘুম থেকে উঠে যেনো পাশে পাই।”

-“কি বলছেন আপনি?
বিয়ের কথা হবে একটু পর!”

প্রিয়তা সাদনানের কথা শুনে অবাক হয়ে জানায়।সাদনান সেসব পাত্তা না দিয়ে চোখ বন্ধ করে বলল

-“এসব নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না।
আমি গেলেই কথা হবে।আর এখন দেখাদেখির পালা।
সো চুপ চাপ বসে থাকো।”

#চলবে….

#আমার_তুমি
#পর্ব_৩৩[অনুমতি ছাড়া কপি করা নিষিদ্ধ]
#জান্নাত_সুলতানা

মেয়ে কে দেখতে ছেলে আসে নি। আর ছেলে ছাড়াই বিয়ের তারিখ ঠিক করা হয়ে গেছে। ছেলের বাবা আর ফুফি এসছে আর ছেলের ফুফি মেয়ে কে পছন্দ করে এক জোড়া বালা পড়িয়ে রেখে গিয়েছে।
রিধি ছেলের বাবা কে একবারও দেখে নি।দেখবে কি করে ওর মন এখানে ছিল কি? ওর মন তো অন্য কোথাও।
রিধির বিয়ের দিন সারা আর রাহান এর এনগেজমেন্ট হবে বলে জানিয়েছেন জাফর মির্জা। রাহানের পরিবার এর কেউ অমত পোষণ করে নি।অবশ্য করবে কি? করার মতো কিছু থাকলে তো করবে।জাত গোষ্ঠী নাম দাম সব ভালো মেয়ের দাদা এলাকার চেয়ারম্যান, বাবা উপজেলা চেয়ারম্যান,চাচা, বড় ভাই ব্যবসায়ি ছোট ভাই এমপি। মেয়েও দেখতে শুনতে মাশা-আল্লাহ। আর কি লাগে।রাহানের বাবা বিজনেসম্যান সেখানে রাহানদের তুলনায় সারা’র পরিবার বহুত এগিয়ে।
পাত্র পক্ষ যাওয়ার পর মির্জা বাড়ির সবাই আবার বাড়ি ফিরে আসে।
কতশত কাজ বাকি রিধির বিয়ের আগে মাইশার আর আয়ানের বিয়ে টাও সেরে ফেলতে চায় শফিক সওদাগর জানিয়েছেন। এতে অবশ্য কেউ অমত করে নি তবে কাজের দখল টা বেশি হবে এই যা।নয়তো সব দিক দিয়ে ঠিক আছে । এমনিতেও রিধির বিয়ে তো এক মাস পর তাই বেশি ঝামেলা হবে না।
আর সওদাগর বাড়িতেও মানুষ নেই।মিতা সওদাগর সব সময় বাড়িতে একাই থাকে সেই সাথে ছেলের বয়স তো আর কম হলো না দেখতে দেখতে। এখন ছেলে কে বিয়ে দেওয়া দরকার।
দুই মেয়ে? হ্যাঁ দুই মেয়েই তো তাদেরও তো বিয়ে দিয়ে এখন ভালো আছে। তিনিও এখন একটু ভালো থাকতে চায়।
সেটা যদি হয় দূরে কোথাও গিয়ে?
হ্যাঁ দূরে চলে যাবে অনেক দূরে যেখানে চাইলেও শফিক ওনার খুঁজ পাবে না ফিরিয়ে আনতে পারবে না।

———

সারা প্রিয়তা কলেজে ভর্তি হয়েছে আগের প্রতিষ্ঠানেই তাই এখানে চিনার মতো নতুন কিছু নেই তবে সৃতি হিসেবে আবারও অনেক কিছু রয়েছে। এই যে রাত বিরাতে সাদনান এর সাথে এই দিকের বট গাছের পাশে চিকন রাস্তা টায় হাতে হাত রেখে হাটা পাশেই একটু দূরে চায়ের দোকান হতে চা খাওয়া।
আহ কি সুন্দর সুন্দর মূহুর্ত ছিল সে সব।
কিন্তু এখন শুধুই সৃতি এখন আর আগের মতো সাদনান তাকে সময় দেয় না। রাতে বাড়ি ফিরে লেট করে।
অবশ্য সে তো আর এখন আগের মতো আর সাধারণ জণগণ নয় সে এখন এমপি কতশত দায়িত্ব।
এই যে আজ বাদে দুই দিন পর বাড়িতে বিয়ে অথচ সাদনান এর খবর নেই। কাল সবাই আবারও শপিং করতে যাবে।প্রিয়তা ব্যালকনিতে মেঝেতে বসে এক দৃষ্টিতে হাল্কা মেঘাচ্ছন্ন করে থাকা আকাশ এর দিকে তাকিয়ে আছে। দূর আকাশে চাঁদ টা যেমন একটু পর পর এক টুকরো মেঘ এসে যেমন চাঁদ টাকে ঢেকে দেয় আবার খানিকক্ষণ সময় পর আবারও ভেসে উঠে ঠিক তেমন সাদনান এর দেখা পাওয়াটাও এমন হয়ে গিয়েছে।
দেখা হয় কখনো বা প্রিয়তা ঘুমিয়ে থাকে সাদনান বাড়ি ফিরে ফ্রেশ হয়ে রুমে এসে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে। প্রিয়তা তখন সজাগ পায়,আর মন টা খুব করে অভিযোগ করতে মন চায়। শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কান্না করে মনের কষ্ট গুলো ধুয়েমুছে ছাফ করে ফেলতে ইচ্ছে করে। তবে সে টার করা হয় না।ইচ্ছে করে না সাদনান এর ক্লান্ত ভরা মুখের দিকে তাকিয়ে সে সব করতে। থাক না সে সব, চলুক না জীবন যেভাবে চলছে।কোনো কিছুর অভাব তো আর হচ্ছে না শুধু এই স্বামী নামক প্রিয় মানুষ টার সময় টা একটু কম দেয়।
হয়তো সামনে থেকে আরও কম দিবে।আর সেটা না হয় এখন থেকে অভ্যাস করে নেওয়া যাক।
রুমে দেওয়ালে থাকা বড় দেওয়াল ঘড়ি টা জোরে তিন বার শব্দ করে ওঠায় প্রিয়তার ধ্যান ফিরে আসে। বারো টা বেজে গিয়েছে। রুমে যাওয়া প্রয়োজন।প্রিয়তা রুমে এসে বিছানার পাশে থাকা সেন্টার টেবিলের উপর হতে বিয়ের রাতে তুলা ফটো ফ্রেম টা হাতে নিয়ে সেটার দিকে তাকিয়ে থাকে।
আজ ছয় মাস হলো সাদনান প্রিয়তার বিয়ের।
প্রিয়তার কেন জানি ডান চোখ হতে গড়িয়ে এক ফোঁটা জল পড়ে?
প্রিয়তা চোখের পানি টা মুছে নেয়।
ওড়না পাশে রেখে বিছানা গুছিয়ে শোয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়।
আর ঠিক তক্ষুনি দরজায় নক পড়ে।প্রিয়তার ভ্রু কুঁচকে আসে। এই রাতে কে নক করে? সাদনান তো রুমে নক করে ঢুকে না।
প্রিয়তা কিছু বলবে তার আগেই সারা হড়হড় করে রুমে এসে প্রিয়তা কে নিজের হাতে থাকা ফোন টা এগিয়ে দিলো।
প্রিয়তা প্রশ্নবোধক চাহনি তাকিয়ে থাকে সারা’র দিকে।
সারা ইশারা করে ফোন কানে নিতে বলে।
প্রিয়তা এক বার ফোন টার দিকে তাকিয়ে ফোন টা কানে তুলতেই ওপাশ হতে সাদনান এর গম্ভীর কণ্ঠে ভেসে এলো

-“ফোন কোথায় তোমার?”

-“সাথে, সাথেই ছিল,,,,

প্রিয়তা সাদনান এর কণ্ঠ শুনে বুঝতে পারে সাদনান রেগে আছে।
তাই নিজের রাগের কথা ভুলে সাথে ভয়ে আমতা আমতা করে কিছু বলতে যাচ্ছিল।
তবে সাদনান শুনে না সবা টা তার আগেই হুকুমের স্বরে বলল

-“দশ মিনিট সময়।
আলমারি খোলে ডান পাশের ড্রয়ারে সেখান একটা প্যাকেট পাবে।
ওটা পড়ে রেডি হয়ে নিচে এসো।
আমি অপেক্ষা করছি।
আর হ্যাঁ,শাল গায়ে দিয়ে আসবে।”

প্রিয়তা কিছু জিজ্ঞেস করার সুযোগ পায় না।তার আগেই সাদনান ফোন কাটে।
সারা বিরক্তে চোখ মুখ কুঁচকে ফোন টা নিজের হাতে নিতে নিতে বলল

-“তোর ফোন চালানোর কি দরকার?
কে দিয়েছে তোকে ফোন?”

প্রিয়তার মন টা হটাৎ কেন জানি বেশ ফুরফুরে হয়ে গেলো। সারা কে খুঁচা তে ইচ্ছুক করলো।
তবে হাতে সময় নেই তাই শর্ট কার্ট টিপুনি কেটে বলে

-“প্রেম করছিলি বুঝি?”

যদিও প্রিয়তা জানে সারা ঘুমিয়ে ছিল হয়তো সাদনান এর ফোন পেয়ে উঠে এসছে।
তবুও একটু রাগীয়ে দিলো।
সারা কটমট করে তাকালো প্রিয়তার দিকে ততক্ষণে প্রিয়তা আলমারি খুলে সেখান থেকে সাদনান এর কথা মতো কাজ করে ওয়াশ রুম চলে গিয়েছে। তাই সারা আর কিছু বলতে পারে না শুধু বিরবির করে বলল

-“অসভ্য মেয়ে মানুষ।
সবাই কে নিজের মতো ভাবে, হু।”

সারা রুমে থেকে বেড়িয়ে এলো। কিন্তু হাতে থাকা ফোন টা আবারও সশব্দে বেজে উঠে।
সারা ভাবে হয়তো আবার সাদনান ভাই ফোন দিয়েছে। তাই নাম্বার ভালো করে না দেখে রিসিভ করে ফোন কানে নিতেই ওপাশ হতে রাহান ক্লান্ত ভরা কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলো

-“ঘুমিয়ে ছিলে?”

-“হ্যাঁ।
ভাইয়া ফোন দিয়ে বলল প্রিয়তার ফোন বন্ধ তাই ওর কাছে আসলাম।”

-“রেখে দেবো।”

-“না,,হ্যাঁ মানে আপনার খারাপ লাগলে রেখে দিন।”

সারা মলিন কণ্ঠে বলে।রাহান মুচকি হাসলো।
তার খারাপ লাগা তো এই মেয়ের কণ্ঠ শোনা মাত্র চলে যায়।
তা কি জানে এই মেয়ে?
জানলে কখনো বলতো না রেখে দেওয়ার কথা।
তবে রাহান মুখে বলল

-“খাবার খেয়েছো?”

-“হুম।
আপনি?”

-“মাত্র ফ্রেশ হয়ে এলাম।
মা খাবার রেখে গিয়েছে।”

এভাবে তাদের কথোপকথন চলতে থাকে।

——

এদিকে প্রিয়তা শাড়ী পড়ে রেডি হয়ে চুল গুলো হাত খোঁপা করে নেয়।
অতঃপর গায়ে একটা শাল জড়িয়ে রুম হতে বেড়িয়ে আসে।
নিচে আসতেই দেখলো সে দিনের কাজের মহিলা টা লিভিং রুমে দাঁড়িয়ে আছে।
প্রিয়তা বুঝতে পারে সে বেরুলে সে দিনের মতোই আজও তিনি দরজা বন্ধ করে রাখবে।
প্রিয়তা ওনার দিকে তাকিয়ে হাল্কা লজ্জা পেলো।
মহিলা টা এগিয়ে এলো।
মুচকি হেঁসে বলল

-“ছোট বউ সাবধানে, আর জলদি আইবার চেষ্টা কইরো।
হেই দিন কিন্তু দাদি তোমারে আর ছোট সাহেবরে এক লগে রাইতে বাড়ি ফিরতে দেখছে।”

#চলবে….

পূর্ববর্তী নিবন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধ
গল্প পোকা
গল্প পোকাhttps://golpopoka.com
গল্পপোকা ডট কম -এ আপনাকে স্বাগতম......
RELATED ARTICLES

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments

Md masrur Hasan mahi على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
আমিনুল ইসলাম على প্রয়োজন পর্ব: ৩০ ( অন্তিম)
সাজিবুল ইসলাম على ধর্ষিতাবউ২ ৯ তথা শেষ পর্ব
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
শাহিদুল ইসলাম على জীবন সঙ্গী ১ম পার্ট
Nita Sarkar على স্বপ্নীল ৬৮
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على রহস্য শেষ_পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৬ এবং শেষ পর্ব
Nazmun Nahar Akhi على Psycho_is_back? part_7
Nazmun Nahar Akhi على Dangerous_Villian_Lover part 2
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على জানালার ওপারে পর্ব-১৭ এবং শেষ পর্ব
শিয়াসা ইসলাম হুরিজিহান على লীলা বোর্ডিং ১২১৫ পর্ব-১১ এবং শেষ পর্ব
মিজানুর রহমান রাহুল على সেই তুমি পর্ব-০১
@feelings على প্রহেলিকা
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Anamika Basu على সে পর্ব-১২
Nusrat jahan على coffee & vanilla Part-10
Pallabi Roy على স্বপ্নীল ৬৮
M.D Mahabub على The_Villain_Lover Part_2
Labani sarkar على Dangerous_Villain_Lover part 23
MD Akas Apc على বিবেক
Tanisha Ahmed على Devil love part-18 
Aius Barmon shorob على নারীর দেহকে নয়
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Chandan roy على স্বপ্নীল ৬৮
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Priya Banerjee على devil love married life last part
Riya Biswas على তুমি রবে ৬০
Riya Biswas على তুমি রবে ৫২
Mohammad Adib على তুমি রবে ৬০
Avni Ayesha على তুমি রবে ২৮
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
সুমিত على তুমি রবে ২৮
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
TANJIBA ZENIFAR على তুমি রবে ৫০
Samiah Begum على তুমি রবে ৫১
biddut das rocky على নর নারী
গল্প পোকা على নষ্ট গলি শেষ পর্ব
Md Jobayer Hossain Shohag على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على দুই অলসের সংসার
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤৪২.
A.J.S Rakib على মন ফড়িং ❤৪২.
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
গল্প পোকা على গল্পঃ ভয়
Samiya noor على গল্পঃ ভয়
Sadikul على গল্পঃ ভয়
Samia Islam على গল্পঃ ভয়
শূন্য মায়া على মন ফড়িং ❤ ৪০.
Sutapa biswas على মন ফড়িং ❤৩৯.
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৮.
sutapa biswas على মন ফড়িং ❤ ৩৭
Foysal Mahmud على My_Mafia_Boss_Husband Part: 16
Siyam على বিবেক
Sudipto Guchhait على My_Mafia_Boss পর্ব-৯
saptami karmakar على devil love married life last part
saptami karmakar على devil love married life last part
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ৩০.
মায়া على মন ফড়িং ২৬.
Shreyashi Dutta على  বিয়ে part 1
Sandipan Biswas على  বিয়ে part 1
Paramita Bhattacharyya على অনুরাগ শেষ পর্ব
জামিয়া পারভীন তানি على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
মায়া على মন ফড়িং  ২২
সুরিয়া মিম على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على মন ফড়িং ২১
গল্প পোকা على নষ্ট গলি পর্ব-৩০
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على Love At 1st Sight Season 3 Part – 69
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
Sahin ssb على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ২১
মায়া على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ২০.
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
গল্প পোকা على খেলাঘর /পর্ব-৪২
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৮. 
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৭.
Jannatul Ferdous على খেলাঘর পর্ব-৩৫
গল্প পোকা على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ফাল্গুনের_ফুল last_part_8
মায়া على মন ফড়িং ❤ ১৬. 
গল্প পোকা على ছাত্রী যখন বউ পাঠঃ ১
গল্প পোকা على বাজির প্রেম পাঠঃ ১
Foujia Khanom Parsha على মা… ?
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৮
HM Ashraful Islam على অবুঝ_বউ পার্ট: ৫
Ibna Al Wadud Shovon على স্বার্থ