আনকালচার্ড বউ পর্বঃ-০৫

0
4918

আনকালচার্ড বউ পর্বঃ-০৫

(অসামাজিক বউ)
লেখক ঃ- আবু জাফর

আবু নাস্তা করে বেড় হয়ে গেলো।
সিলেট গিয়ে রাতে হোটেলে উঠলো। সকালে ঘুম থেকে উঠে ঘুরতে বেড় হয়ে ঘুরতে ঘুরতে আবুর চোখে কাচা পাতার চা পড়লো।
আবুর আবার খুব কাচা পাতার চা পছন্দ। আবু চা কিনতে যাবে এমন সময় আবুর বউয়ের ফোন।

আবুঃ- হ্যালো।

মেহরিমা ঃ-ওখান থেকে আমার জন্য কাচা পাতার চা নিয়ে আসবেন। আমার খুব ভালো লাগে।

আবুঃ-আচ্ছা রাখো এখন।

আবু ফোনটা কেটে দিয়েই চা নিলো না ইচ্ছেকৃত ভাবে।তারপর
কয়েকদিন ওখানে ঘুরে আবু বাসায় ফিরে এলো।

আসার পর মেহরিমা দৌড়ে গিয়ে বলতেছে আমার চা কই। আবু ব্যাগ টা রেখে আমার মনে নেই বলে বাথরুমে চলে গেলো।
মেহরিমা খাটের উপর বসে পড়লো।মেহরিমার বুঝতে বাকি থাকলো না যে আবু ওইটা ইচ্ছে করেই আনেনি।

আবু এখন প্রতিটা রাতেই মেহরিমার উপর বিরক্ত হয়। কারণ মশারী টা আবু কেই টানাতে হয়। অনেক বকা দিয়েও অভ্যাস টা চেঞ্জ করাতে পারি নাই। একদিন রাতে আবু ঘুমিয়ে আছে মেহরিমা কানের কাছে মুখ নিয়ে চেচিয়ে বলতেছে ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি।
তুমি আমাকে ভালোবাসো না।

আবু চোখ রাঙ্গিয়ে বলে উঠলো তোর চৌদ্দ গুষ্টিকে ভালোবাসি।

মেহরিমা সেদিন হঠাৎ করেই রেগে গেলো।আবু ভয়ে তো বাথরুমে গিয়ে পালালো।
তারপর আবু বাথরুম থেকে শুনে যে তার ফোন বাজতেছে।
বাথরুম থেকে বেড় হয়ে ফোনটা নিতে যাবে।
এমন সময় আবুর বেড় হওয়া দেখেই মেহরিমা খিকখিক করে হেসে উঠে বললো আমিই আমার ফোন দিয়ে আপনার ফোনে ফোন দিয়েছি।
আপনাকে বাথরুম থেকে বেড় করার জন্য।

আনকালচার্ড মেয়ে একটা বলেই আবু রুম থেকে বেড় হয়ে গেলো।
পরের দিন সকালে আবুর শরীরে জ্বর বিছানা থেকে উঠতে পারছে না।
মেহরিমা খাবার নিয়ে এসে আবু কে বলতেছে আজকে আমি আপনাকে খাইয়ে দিবো।

বিপত্তি সত্ত্বেও আবু কিছু বললো না।
আবু খেয়ে আবার ঘুমিয়ে পড়লো। সন্ধ্যায় ঘুম থেকে উঠার পর আবুর মাথায় পানি দিয়ে ওষুধ খাইয়ে পাশে বসে থাকলো। রাতে আবুর জ্বর বেশি এলো মেহরিমা আবু কে জড়িয়ে ধরে বললো আজকের রাত টা আমরা এক বিছানাই থাকবো।আবুও অসুস্থতার জন্য রাজি হয়ে গেলো।

পরের দিনও হাত টা জড়িয়ে ধরে এক আবদার এই সপ্তাহ টা আমাকে দিয়ে দেন না প্লিজ।
আবু হাতটা একটা টান দিয়ে বললো করুণা একদিন করা যায় প্রতিদিন না।
আবু ভাবে আচ্ছা মেয়েতো বাবা জোর করেই জেনো ভালবাসা আদায় করতে চাই।

আবু ভাবে এভাবে বাসাই থাকা সম্ভব না। মেয়েটা দিন দিন কেমন জেনো অধিকার খাটিয়ে বসতেছে।
আবু পরের সপ্তাহে বাইরে একটা ফ্লাট নিয়ে একা একা সেখানে চলে গেলো।
চাকরিতেও জয়েন করলো।
একদিন মেহরিমা ফোন দিলে আবু ইচ্ছে মতো বকে দেয়।
মেহরিমা বলে আপনি কি আমাকে ইগ্নোর করতেছেন।
আমি বকা দিয়েই বলে উঠলো কেন রে শালি ব্যবহারে বুঝিস না।

আজ কয়েক সপ্তাহ হয়ে গেলো মেহরিমা আবুকে ফোন দেয়না। আবুও ভাবে একা একা বেশ ভালই আছি।
এভাবে আবুর দিন ভালই যাচ্ছে হঠাৎ কয়েক মাস পর মেহরিমার ফোন কয়েকবার আবু ফোনটা ইগ্নোর করলো।
পরে কি মনে করে রিসিভ করলো।

ওপাশ থেকে মেহরিমা বলে উঠলো ডাক্তার বলেছে সুখবর আছে। বলেই মেহরিমা ফোনটা রেখে দিলো।

আবু গজগজ করে বলে উঠলো কি একটা আনকালচার্ড মেয়েরে বাবা এইটুকু বলতেও লজ্জা পায়।

আজ দুইটা মাস হয়ে গেলো মেয়েটার কোন ফোন নেই। আবুও কোন খোঁজ নেয় না।
আজকে কেনো জানি আবুর মনে হচ্ছে যত যাইহোক পেটের সন্তান তো।
আবু চাকরিটা ছেড়ে বাসায় চলে এলো।
চাকরি টা নিয়েছিলো মেহরিমার থেকে দূরে থাকার জন্য।

আবু বাসায় এসে মেহরিমা কে কোন ভারি কাজ করতে দেয় না। আবার নিজে হাতে করেও খাইয়ে দেয়।
রাতে মেহরিমা আবুকে জড়িয়ে ধরে ঘুমাই। আবু এসব থেকেও না দেখার ভান করে।

একদিন হঠাৎ শেষ রাতে আবুর ঘুম ভেঙ্গে গেলে দেখে যে মেহরিমা আবুকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে। মুখের উপর চুল গুলো পড়ে জেনো চেহারার অন্য রকম একটা রুপ এনে দিয়েছে ।
সেদিনই প্রথম আবু একটু হলেও মেহরিমার প্রেমে পড়ে যায়।

এইদিকে এক এক করে দিন যেতে লাগলো হঠাৎ একদিন মেহরিমার পেটে ব্যথা উঠলো আবু মেহরিমাকে নিয়ে……

চলবে…..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে