#আজল
#পর্ব-দশ
২৩.
“তুমি হয়তো ভাবছো এসব কথা তোমাকে কেন বলছি? তাই না?”
তানভীর মাথা নাড়ল।
“কারন তো অবশ্যই আছে। এই পৃথিবীতে কোন কিছুই কারন ছাড়া ঘটে না, জানো তো? তো যা বলছিলাম…. আমি আসলে ফ্যামিলির দ্বায়িত্ব পালন করতে করতে বুঝতেই পারিনি যে আমার আসল ফ্যামিলি যারা আমার…. শুধুমাত্র আমার দ্বায়িত্ব তাদেরকেই অবহেলা করেছি সারাজীবন ভর। অবশ্য না বোঝার যথেষ্ট কারনও ছিল…. তোমার শাশুড়ি মা আমাকে কোনোদিনও কোনো ব্যাপারেই কোনো অভিযোগ দেননি কখনো। ছেলেমেয়েরাও কখনো বলেনি যে, বাবা তোমার এই কাজটা পচ্ছন্দ হচ্ছে না…বা বাবা আমি এই কাজটা করতে চাই। অথবা এমন হয়েছে হয়তো যে, ওরা বলতে চেয়েছে…. ওদের মা ওদের বলতে দেয়নি….কিংবা প্রচন্ড অভিমান ওদের বাঁধা দিয়েছে?? আর ওরা যদি কিছু বলতোও আমার মনে হয়না সেই সময় আমি ওদের কথা কখনো আমলে নিতাম। কারন ততদিনে আমি আমার সংসারে একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছি। কারো কোনো কথা কখনো শুনিনি আর তখনো শুনতাম বলে মনে হয় না। ফুয়াদ সারাজীবন আমি যেভাবে বলেছি সেভাবেই ওর জীবন চালিয়েছে…. পড়ালেখা করেছে, চাকরি করছে… এর পাশাপাশি হয়তো আরো কিছু করে। আর মেয়েটা প্রচন্ড মেধাবী হওয়া সত্বেও তাকে আমি সবার অমতে তোমার হাতে তুলে দিয়েছিলাম। মেয়ের বিয়ের সময়ই প্রথম তোমার শাশুড়ি মা আমার মতের বিরুদ্ধে কিছু বলার চেষ্টা করেছিলেন, সাথে ফুয়াদ তো ছিলোই। আমি কারো মতের তোয়াক্কা না করেই প্রিয়র দ্বায়িত্ব তোমায় দিয়েছিলাম। মনে করেছিলাম তুমি আমার মেয়েকে স্নেহ, মায়া, মমতা, ভালোবাসা দিয়ে আগলে রাখবে। এখন আমি তোমায় জিজ্ঞেস করছি- তুমি কি আমার বিশ্বাসের মান রাখতে পেরেছো?”
তানভীরের দিকে প্রশ্ন ছুরে দিয়ে থামলেন আজমল সাহেব। তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিয়ে দেখছেন তানভীর কে। তানভীর সেই দৃষ্টির সামনে অস্বস্তি বোধ করলো।
“আসলে বাবা, আমি বুঝতে পারছি না কি হয়েছে? প্রিয় কি কিছু বলেছে? আমি তো নিজের দ্বায়িত্ব ঠিক ভাবেই পালন…. ”
শেষ করতে পারলো না তানভীর, তার আগেই ওকে থামিয়ে দিলো আজমল সাহেব।
” তোমার কি ধারনা? প্রিয়তা এসব বলতে পারে আমাকে? নিজের স্ত্রীকে এই চেনো তুমি? আমি ভেবেছিলাম তোমার সৎসাহস আছে! সেই গাটস আছে যা তুমি সত্য বলায় ব্যবহার করো। কিন্তু আমি ভুল। আসলে কি বলোতো…. টাকা থাকলেই মানুষ ধরাকে সরা জ্ঞান করে… ভাবে যে, সে যা খুশি তাই করতে পাড়ে। কিন্তু আসলে কি তাই…. ”
শশুরের কথা বলার টোনে তানভীর এবার ঘামতে শুরু করলো। লোকটা এতো স্ট্রং ভয়েজে কথা বলছে যে, তানভীরের মনে হচ্ছে ওর ভিতর টাও দেখে নিচ্ছে আজমল সাহেব, মগজের চিন্তাগুলোও পরে ফেলছে সব!!! তানভীরের সব কথা গুলিয়ে গেলো।
” আমি তোমার লাস্ট কয়েকটা বিজনেস ট্রিপের খবর নিয়েছি….দুর্ভাগ্যজনক হলো সেরকম ভালো বলার মতো কিছু পাইনি। তুমি যদি ভেবে থাকো যে মেয়ে বিয়ে দিয়ে দিয়েছি তাই ঝাড়া হাত পা হয়ে কারো কোনো খবর রাখবো না তাহলে ভুল ভাবছো!!..মেয়েকে যেমন নিজের ইচ্ছায় তোমার সাথে বিয়ে দিয়েছি তেমনি সেরকম মনে হলে তাকে ফিরিয়ে নিতে দ্বিধা করবো না….”
তানভীরের মুখটা এই মুহূর্তে প্রচন্ড হাস্যকর দেখাচ্ছে। ফ্যাকাসে রক্তশুন্য মুখ… মুখোশ উন্মোচন হলে যেমনটা হয় আর কি….
” তুমি এতদিন প্রিয়র সাথে কি করেছো, স্বামী বা বাবার দায়িত্ব পালন করেছো কি না এসব কথা আর তুলছি না। এখন তুমি কি করবে সেটাই আমি দেখবো। আমি তোমাকে ছয়মাস টাইম দিলাম… এই ছয়মাসে তুমি আমার মেয়ের মনে তোমার জন্য জায়গা তৈরী করবে… উহু ভয় দেখিয়ে না.. ভালবাসা দিয়ে…৷ যেন তোমার কথা মনে হলেই তার মুখে হাসি ফুটে ওঠে…সে হাসিটা অবশ্যই যেন সুখের হাসি, ভালোবাসা, বিশ্বাস আর নির্ভরতার হাসি হয়।”
তানভীর এর মুখে কোনো কথাই ফুটছে না… এতো বড় বিজনেসম্যান…. আজ এই লোকটাকে ভয় পাচ্ছে একটু একটু। বাবা মারা গেছে সেই কবে? ভাইয়েরা সবাই নিজের নিজের সংসার নিয়ে ব্যাস্ত। আর মা বরাবরাই ওকে একটু বেশি আদর করতো তাই শাসন সেভাবে পায়নি তানভীর। আর এখন তার শশুর মশাই তাকে রীতিমতো ভদ্র ভাষায় শাসন করে যাচ্ছে! রাগ ওঠার কথা তানভীরের কিন্তু তার বদলে ওর ভয় লাগছে একটু একটু। শশুরের কনফিডেন্স লেবেল ওর মনে ভয় ধরিয়ে দিচ্ছে। সত্যি সত্যি কি লোকটা ওর বিজনেস ট্রিপ এর খবর জানে? লোকটা আবার মাকে কিছু জানিয়ে দেবে নাতে? যত যাই হোক মা আবার প্রিয়কে খুব ভালোবাসে। প্রিয়র সাথে ও এরকম করে শুনলে খুব কষ্ট পাবে মা!
” এবং তোমার আমার মধ্যকার এই কথাবার্তা যেন সে ঘুনাক্ষরেও টের না পায়। মনে কর তোমাকে নতুন করে জীবন গড়ার সুযোগ দিচ্ছি। সেই সুযোগটা তুমি কিভাবে কাজে লাগাবে নাকি কাজে লাগাবে না সেটা একান্তই তোমার ব্যাপার। মাত্র ছয় মাস…. এই ছয়মাসে নিজের বউ বাচ্চাকে কিভাবে নিজের করে নেবে সেটাই চিন্তা করো…. তা না হলে… একদিন আফসোস করতে হবে।”
উঠে দাড়ালেন আজমল সাহেব। এসে তানভীরের কাছে দাড়ালেন…কাঁধে হাত রেখে বললেন
” ইয়াংম্যান! আমার কথাগুলো নেগেটিভলি না নিয়ে পজিটিভলি নাও…আশাকরি ভালো হবে… তা না হলে একদিন আমার মতো পস্তাতে হবে, বুঝলে?”
বলেই সেখানে আর দাড়ালেন না আজমল সাহেব। দ্রুত বের হয়ে এলেন রেস্টুরেন্ট থেকে। সাহস নিয়ে পুরো অনুমানের ভিত্তিতে ঢিল ছুড়েছিলেন তানভীরের দিকে। ঢিলটা জায়গা মতো লেগে গেছে বলে মনেমনে একটু হাসলেন আজমল সাহেব। তার ষাট বছর জীবনের মানুষ চেনার অভিজ্ঞতা এবার আসল কাজে লাগলো, মনেহয়!!! তানভীর যে রকম ছেলে তাতে আজকের ডোসটাই পারফেক্ট, আর কিছু করার দরকার হবে বলে মনে হয় না? মেয়ের জীবনে যদি সুখটা ফেরত আসে তাহলে আর কি চাই জীবনে??? সারাজীবন বাচ্চাদের জন্য ওদের মনের মতো কিছু করতে পারেননি, এখন তার এইটুকু প্রচেস্টা যদি ওদের জীবনে ভালো কিছু সুখের মুহুর্ত এনে দেয় তাহলে উনি মরেও শান্তি পাবেন। এটা ভাবতেই মনটা ফুরফুরা হয়ে গেল আজমল সাহেবের। তিনি খুশি মনে গাড়িতে না উঠে ফুটপাত ধরে হাঁটতে শুরু করলেন।
২৪.
★
মনের মধ্যে যতনে রেখেছি এক কুঠুরি আজল
সেই আজলে লুকিয়ে আছে দুঃখ আমার সকল।★
আজ তিনদিন ধরে সচির মাথায় ঘুরছে লাইন দুটো। শয়নে, স্বপনে, জাগরণে সব সময় এই দুটো লাইন নিয়েই ভেবে যাচ্ছে। তিনদিন সময় দিয়েছিল ফুয়াদ। এরমধ্যে উওর বলতে না পারলে ফুয়াদের গোপন কথা জানা তো হবেই না সেই সাথে বেড়ানোর সুযোগটাও হাত থেকে যাবো-এটা ভাবতেই মাথার চুলগুলো সব টেনে ছিড়তে ইচ্ছা করছে সাঁচির। তিনদিনের আজ শেষ দিন। কি করা যায়…কি করা যায়… ভাবতে ভাবতেই ছোট বোনের কথা মনে পড়লো। ওকে একবার ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করলেই তো হয়….ওর সামনে ভার্সিটি এ্যাডমিশন এক্সাম… পড়ালেখার মধ্যে আছে….ওর আবার রহস্য ভেদের আগ্রহ অনেক…একবার ট্রাই করে দেখা যাক… ট্রাই করতে দোষ কোথায়? সাঁচি ফোন দিলো ছোট বোন প্রাচিকে-
“হ্যালো!প্রাচী, কোথায় রে তুই?”
“আপ্পি, কেমন আছিস? এতদিন পর বোনকে মনে পড়লো?? বাসাতেও তো আসিস না অনেকদিন? তুই কি রে? বর পেয়ে আমাদের এইভাবে ভুলে গেলি?”
“আস্তে… মেরি মা আস্তে…তোর সব অভিযোগ পরে শুনবো… আগে তুই আমাকে একটু হেল্প কর। একটা প্রবলেমে ফেসে গেছি..”
“হুম, তাইতো বলি… আপ্পি.. আজ কেন ফোন করেছে…”
“এই রাখলাম…যা তোর হেল্প লাগবে না… দুষ্টু মেয়ে…”
“ওহ, আপ্পি! একটু দুষ্টুমিও করতে দেবে না নাকি…আচ্ছা বলো কি বলবে?”
“তোকে একটা ধাঁধা বলবো তুই আমাকে এর উত্তর টা বলবি…. একঘন্টা সময়….”
“এতোক্ষণ লাগবে না… বলোতো তুমি কি ধাঁধা। ”
“উম্মাহ! আমার বোনটা… তোকে এত্তগুলা ভালোবাসা… আচ্ছা লিখে নে…..”
প্রাচিকে বলতে পেড়ে খুব নিশ্চিত হলো সাঁচি। ও জানে প্রাচি ঠিক বের করে ফেলবে উত্তর। বড়ো একটা শ্বাস নিয়ে হাত দুটো ছড়িয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো। উফ! এই দুটে দিন খামোখাই নিজে টেনশন নিয়েছে… আগেই যে কেন প্রাচির কথা মনে আসেনি? যাক বাবা…. তাও ভালো…. সময় থাকতেই মনে এসেছে!!! ফুয়াদ বাবু!এখন কি করবে তুমি…. হানিমুনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নাও…মনে মনে বলতে বলতে একা একাই হাসছে সাঁচি।
অফিসে আজ কাজের চাপ একটু কম ছিলো। ফুয়াদ ভাবলো আজ অফিস থেকে একটু তাড়াতাড়ি বেড়িয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেবে। অনেকদিন কারো সাথে দেখা হয়না। সেই যে বিয়েতে দেখা হলো তারপর আর কারোরই কোনো খবর নাই। দেখি ওদের কে ফোন দিয়ে… কি অবস্থা সবার…ভাবতে ভাবতে ফোনটা হাতে নিতে না নিতেই ফোন বেজে উঠলো….সাঁচির ফোন!! ও তো কখনো এই সময় ফোন দেয় না…. তাহলে কি ও জবাবটা পেয়ে গেছে?
“হ্যালো”
“কোথায় আপনি?বাসায় কখন আসবেন?”
“এই তো অফিসে… কেন? কি দরকার? ”
“আরে!আমরা বেড়াতে যাবো না….কোথায় যাবো…কখন যাবো… এগুলো ঠিক করতে হবে না?তাড়াতাড়ি চলে আসেন না আজ!!!”
“আচ্ছা! ঠিক আছে আসছি। ”
দীর্ঘশ্বাস ফেলে ফোন কাটলো ফুয়াদ। বিয়ে করলে আসলেই জীবনটা আবদ্ধ হয়ে যায়… শুধু মেয়েদের না ছেলেদেরও….ভাবলো ফুয়াদ।
বাসায় ঢুকতেই রান্নার সুঘ্রাণ পেলো ফুয়াদ। নিশ্চয়ই আজ পোলাও হচ্ছে… ড্রইংরুমে দেখলো প্রিয়, বাবা, মা বসে আছে…প্রিতি আর সাঁচি দুজনে খেলছে…
“ভাই, এসেছিস?”
“তুই হঠাৎ এলি যে?”
প্রিতিকে কোলে নিয়ে আদর দিলো ফুয়াদ। প্রিতিও মামাকে পাল্টা আদর দিলো।
“আর বলিস না…ভাবি জোর করলো খুব…তোরা নাকি হানিমুনে যাচ্ছিস? সে উপলক্ষে ভাবি আজ রান্না করেছে নিজ হাতে…সবাই মিলে একসাথে খাব…”
শুনে কাশি উঠে গেল ফুয়াদের। এই মেয়ে তো আচ্ছা ত্যাদর… বেহায়া মেয়ে…উনি হানিমুনে যাবেন তাই ঢোল পিটিয়ে সবাই কে জানাচ্ছে…. আজব???
সাঁচি গ্লাসে পানি এনে দিলো….হাত বাড়িয়ে পানি নিলো…
“ভাই যা তো তারাতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নে… আমি আবার খেয়েই বেড়িয়ে যাবো.. এক্সাম চলছে তো আমার…” প্রিয়তা বললো।
ফুয়াদ মাথা নেড়ে উঠে এলো নিজ রুমে….আনমনে রুমে ঢুকতেই পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো সাঁচি….চমকে উঠে ফুয়াদ বললো-
“কে?”
“আপনার বউ গো? আর কে হবে?”
সাঁচির হাতটা ছাড়াতে চেষ্টা করলো ফুয়াদ-
“কি হচ্ছে এসব? গেট খোলা তো…বাবা মা দেখতে পাবে তো?”
” দড়জা বন্ধ, আপনার টেনশনের কোনো কারন নেই?”
পিঠে মুখ রেখে বললো সাঁচি।
“তোমার আজকাল সাহস বেড়েছে দেখছি! ছাড়ো তো দেখি…কেন ধরেছো আমাকে….”
পিছন থেকে একটা চিরকুট বাড়িয়ে দিলো সাঁচি
” আমি শ্রীমঙ্গল যেতে চাই…চা বাগানের বাংলোয় বসে গভীর রাতে ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক শুনবো… তারপর সমুদ্র দেখবো….কক্সবাজারে…”
ফিসফিসিয়ে বললো সাঁচি।
“উহ! সাঁচি, ছাড়ো আমাকে….”
জোর করে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে চাইলো ফুয়াদ। চিরকুটে চোখ বুলিয়ে দেখলো সেখানে ওর জানতে চাওয়া ধাঁধার উওরটা গোটাগোটা অক্ষরে লেখা।
“শর্ত অনুযায়ী তুমি যেখানে যেতে চাও নিয়ে যাব। বাট প্লিজ যখন তখন এভাবে জড়িয়ে ধরবে না…আমি চাই না কোনোভাবেই তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করতে…. বাট তুমি…তুমি বারবার সেই সুযোগটাই নিচ্ছো।”
সাঁচির খুব… খুব লজ্জা লাগলো ফুয়াদের কথা শুনে…ও তারাতাড়ি ফুয়াদ কে ছেড়ে দিলো…চুপচাপ দাড়িয়ে রইলো একটা কথাও না বলে…আসলেই তো…ও মনেহয় একটু বেশিই করে ফেলেছে…সবসময় কি জোর চলে…এই প্রথম ফুয়াদ কে রেগে যেতে দেখলো ও…
“প্লিজ,ডোন্ট ক্রস ইয়োর লিমিট…সবসময় ভালো লাগে না…বিয়ে করেছি বলেই কি সবসময় এমন করতে হবে? যত্তোসব…”
ফুয়াদের হঠাৎই রাগ উঠে গেল..কেন ও নিজেও যানে না?
ফুয়াদের শেষের কতাগুলো শুনে অপমানে লাল হয়ে গেল সাঁচি…কষ্ট পেল খুব…কান্না চলে আসলো…এই প্রথম ফুয়াদের রুদ্র রুপ দেখলো…চোখদুটো জলে ভরে গেলো আপনাতেই…টুপটুপ করে চোখ থেকে পানি পড়ছে….দু দিন না হয় জোর করে কিসি দিয়েছি আর আজ খুশির চোটে একটু না হয় জড়িয়ে ধরেছি সব ভুলে… তাই বলে এভাবে কথা শোনাবে…কান্নার বেগ বাড়ছে সাঁচির। ও চায়না ফুয়াদ ওর কান্না দেখে ওকে আরো কয়েকটা কথা শোনাক…তাই ও দৌড়ে বাথরুমে ঢুকে গেল।
ফুয়াদের হঠাৎ হুঁশ হলো-হায় হায় কি করলো এটা! সাঁচির সাথে এতো রুডলি কথা বললো….কি করলো এটা…মেয়েটা মনেহয় কাঁদছে?কেন জানেনা আজ প্রচন্ড রাগ উঠে গেল….নিজেকে কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারলো না। সাঁচির কাছে নিজের বন্ধ ডায়েরির পাতাগুলো মেলে দিতে হবে বলেই কি এতো রাগ!!!
এখন নিজের উপরই রাগ লাগছে ফুয়াদের। সে হাতে থাকা চিরকুট টা দুমড়ে মুচড়ে সজোরে ছুরে ফেললো ঘরের কোনে….
চলবে—-
©Farhana_Yesmin