‘আকাশ তীরে আপন সুর’
|পর্ব ০৪|
লাবিবা ওয়াহিদ
কিছুদিন পেরোতেই প্লাবন আবার বায়না ধরল সে মামার বাড়ি যাবে। এ বিষয় নুহাশ সাহেবের কানে যেতেই তিনি কিছুটা রাগ করলেন। বারবার বেড়াতে যাওয়ার আবদার করলে পড়াশোনা উচ্ছন্নে যাবে। প্রণয়া কখনো এই ধরণের আবদার করেনি, সে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহী ছিল সবসময়। ভালো রেজাল্টও করত। কিন্তু ছোটো ছেলে যে কার মতো হয়েছে কে জানে?
নুহাশ সাহেব প্লাবনকে ঘরে বাঁধতেই মূলত নির্মলকে তার প্রাইভেট টিচার হিসেবে রাখার সিদ্ধান্ত নিল। প্রণয়া অবশ্য জানে প্লাবন প্রাইভেট কিংবা বাসায় টিচার রাখা একদম পছন্দ করে না। সে বরাবরই এই ব্যাপারটায় নাক সিটকায়৷ এছাড়া এখানে চা বাগানের মাঝের কোনো বাড়িতে প্রাইভেট টিচার রাখা সম্ভব নয়। এজন্য কখনো নুহাশ সাহেব সে চিন্তা করেননি। কিন্তু এবার নির্মল কাছেই থাকায় সেই সুযোগ পেল।
অবশ্য প্রণয়ার চিন্তায় জল ঢেলে প্লাবন হাসিমুখে পড়তে রাজি হয়ে গেল। যা দেখে প্রণয়া হতবিহ্বল হয়ে পড়েছে। সামান্য ক’টা চিপস, বিস্কুট খাইয়েছে বলে নির্মলকে টিচার হিসেবে মেনে নিলো সে? কেমনে সম্ভব?
প্লাবন প্রণয়াকে আরও চমকে দিয়ে নিজের এলোমেলো বই-খাতা গুছাতে শুরু করে দেয়। আগামীকাল থেকে নির্মল তাকে পড়াতে আসবে। আর আজ রাতে সে গোছানোতে হাত দিয়েছে, যেই দৃশ্য প্লাবনের বেলায় বিরল। প্লাবন হঠাৎ ভাবনায় ডুবে যাওয়া প্রণয়াকে টেনে বাস্তবে ফেরালো। প্রণয়া পলক ফেলে প্লাবনের দিকে চাইতেই প্লাবন বলল,
–“আপু, আমার ইংরেজি খাতাটা পাচ্ছি না। খুঁজে দাও না।”
প্রণয়া অস্ফুট স্বরে বলল,
–“বই-খাতার সাথেই আছে। ভালো করে খুঁজ!”
প্রণয়ার কথা শুনে প্লাবন আবার খুঁজল। পেয়েও গেল কিছু সময়ের মধ্যে। প্রণয়া হঠাৎ বলল,
–“এই, তুই কী সন্ধ্যার সময় বা রাতে বের হয়েছিস?”
প্রণয়ার কথায় প্লাবন তার কাজ থামিয়ে ভ্রু কুচকে তাকায়।
–“কী বলছ তুমি আপু?”
–“নির্ঘাত তোর ঘাড়ে জিন চেপেছে প্লাবন, নয়তো তুই এসব অস্বাভাবিক কাজ করছিস কীভাবে? মাকে বলব হুজুর ডাকাতে?”
প্লাবন জোরে নিঃশ্বাস ফেলে হতাশ গলায় বলল,
–“তোমরাও না আপু, পড়তে বসলেও সমস্যা না বসলেও সমস্যা। তোমাদের এত সমস্যা কেন আমার পড়ালেখা নিয়ে?”
উত্তর নেই প্রণয়ার কাছে। ফাঁকিবাজ ছেলে হঠাৎ পড়াশোনায় ধ্যান দিচ্ছে ব্যাপারটা অস্বাভাবিক লাগাটাই স্বাভাবিক। আর এই ফাঁকিবাজটা নাকি নির্মলের সংস্পর্শে এসে এরকম পড়ছে? অবিশ্বাস্য! প্রণয়ার শুরু থেকেই মনে হতো নির্মল জাদুটোনা জানে। নয়তো যে-ই তার সংস্পর্শে যাচ্ছে সেই কেন ওই মানুষটার ভক্ত হয়ে যাবে?
প্রণয়ার বরাবরের মতোই জিন, ভূতের গল্প পছন্দ। প্রায়ই ফোনে ভূত এফএম রেডিয়োতে ছেড়ে রাখে। এবং কানে হেডফোন গুঁজে নীরবে সে সকল গায়ে কাঁটা দেওয়া কাহিনী শুনে। ভয়ে তটস্থ হলেও প্রণয়ার এগুলোই ভালো লাগে। অবসরে যখন একা বসে আকাশ দেখে, তখন চট করে কোনো এক নির্দিষ্ট জিনের কাহিনী তার মাথায় ঘুরপাক খায়৷ আর প্রণয়া শুরু থেকে শেষ অবধি সেই কাহিনীতে বিচরণ করে, আপন মনেই সেই কাহিনীর চরিত্রদের আগে পরে অবস্থান নিয়ে বলত। যেমন- এই চরিত্রের এটা করা উচিত হয়নি, ওভাবে চাইলেও এসব ঘটতে পারত ইত্যাদি। তাই তার কথায় জিন কিংবা জাদুটোনা শব্দগুলো প্রায়ই শোনা যায়। প্রণয়ার যেন নেশা এসব শোনা। তার অবস্থা এমন যে, সে সারা রাত না ঘুমিয়ে থাকতে পারবে তবুও এগুলো শোনা ছাড়তে পারবে না। সে যতই ভয় পাক না কেন, শক্ত হয়ে শুনবেই।
*******
আবছা আলোয় কুয়াশাচ্ছন্ন ভোর। প্রণয়া সবে ব্রাশ করে বেরিয়েছে উঠোনে। হাতে এক কাপ ধোঁয়া ওঠা চা। তার প্রায় রোজকার-ই অভ্যাস উঠোনে দাঁড়িয়ে একনজরে চা বাগান দেখা। কুয়াশা এবং চায়ের খুঁনসুটিগুলো ইদানীং বেশ টানছে তাকে।
অবশ্য প্রতিদিন এই চা বাগান দেখতে দেখতে বিরক্ত কিংবা একঘেয়ে হওয়ার কথা। প্রণয়ার একঘেয়েমি আসেও, তবে সেটা ক্ষণস্থায়ী। কয়েক দিনেই সেই একঘেয়েমি দূর হয়ে যায়। চা বাগান যেন প্রায়ই তাদের নিজেদের রূপ বদলায়। যা সাধারণ নজরে না এলেও প্রণয়া ঠিক বুঝতে পারে তাদের পরিবর্তন। হয়তো চায়ের বিশাল সম্রাজ্যও জানে, প্রণয়া নামের এক ফুল যে কি না তাদের সঙ্গে বসবাস করছে এবং সে চায়ের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে!
এই চা বাগানের সঙ্গে প্রণয়ার যেন অদৃশ্য নিবিড় সম্পর্ক হয়ে গিয়েছে। মানুষের সাথেও বুঝি উদ্ভিদদের এই অদৃশ্য সম্পর্ক সম্ভব? কেন নয়, নির্দিষ্ট মানুষটার মায়া এবং যত্নের মাধ্যমেই তো একটি উদ্ভিত বেড়ে ওঠে এবং তার সর্বাচ্চ ফলনটা তার মালিককে দেয়। তবে এখানে একা প্রণয়ার সাথে শুধু একটি গাছ নয়, অসংখ্য বিস্তৃত চা বাগান যেন প্রণয়ার বন্ধু হয়ে উঠেছে। প্রণয়া চায়ে চুমুক দিয়ে আপনমনে বলল,
–“চা বিলাস।”
–“শুভ সকাল।”
আচমকা পুরুষালি কণ্ঠস্বর কানে পৌঁছাতেই প্রণয়া চমকে পিছে ফিরে তাকাল। নির্মল দাঁড়িয়ে আছে তার থেকে বেশ কিছুটা দূরত্বে। প্রণয়া চোখের দেখায় পরখ করে নিল নির্মলকে। একটা টাউজার এবং শার্ট পরেছে সে। আজ আবারও সেই কালো শার্ট। শার্টের হাতা কনুই অবধি গুটানো। বুকের দিকে একটা বোতাম খোলা। প্রণয়ার বলতে ইচ্ছে করল, “আপনার শীত করছে না?”
কিন্তু প্রণয়া মুখে সেরকম কিছু বলল না। নির্মলের কথার পিঠে মৃদু গলায় বলল, “শুভ সকাল।”
–“চাচা বাসায়?”
প্রণয়া ঘাড় নাড়িয়ে বোঝাল, ‘না।’
নির্মলও যেন সহসা বুঝে নিল প্রণয়াকে। সে চট করে টাউজারের পকেট থেকে ফোন বের করে বলল,
–“আচ্ছা, ঠিক আছে।”
প্রণয়ার একবার নির্মলকে বলতে ইচ্ছে করল বাসায় যেতে। কিন্তু নির্মল অধর প্রসারিত করে প্রণয়াকে বলল,
–“আসছি।”
বলেই সে বিদায় নিয়ে চলে গেল। প্রণয়া একমনে চেয়ে রইলো নির্মলের যাওয়ার পানে। হঠাৎ পলক ফেলে প্রণয়া নিজের দিকে তাকাল। তার গায়ে একটি শাল। আর সেখানে নির্মল এভাবে খোলামেলা পোশাকে বেরিয়ে গেল?
পাহাড়ে প্রায়ই শীত থাকে। নির্মল কী তা জানে না, নাকি ইচ্ছাকৃত শীতের পোশাক এড়িয়ে গেল? প্রণয়া হঠাৎ-ই উপলব্ধি করল এই নির্মল নামের স্বল্প চেনা মানুষটাকে নিয়ে প্রণয়া একমনে ভেবে যাচ্ছে। চটজলদি প্রণয়া নির্মলের ভাবনা বাদ দিল।
খাবার টেবিলে স্ব-পরিবারে নাশতা করতে বসেছে প্রণয়া। আজ সে কলেজ যাবে। তাই একদম তৈরি হয়েই বসেছে। প্লাবনও একদম তৈরি স্কুলের জন্য। প্লাবন অবশ্য আজ স্কুল যেতে চায়নি, গাঁইগুঁই করছিল। কিন্তু ফাহিমার ধমকে প্লাবন মুখ ভার করে যেতে বাধ্য হচ্ছে। এখনো মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে সে মন খারাপ করে আছে।
নুহাশ সাহেব খাওয়ার মাঝে নিজেই বললেন,
–“নির্মল গেল শহরের দিকে, মায়ের জন্য নতুন শীতের কাপড় আনার জন্য। সে বুঝতে পারেনি পাহাড়ি অঞ্চলে এরকম শীতল আবহাওয়া। এছাড়া আমারও বলতে মনে ছিল না।”
প্রণয়া চুপ করে শুনল বাবার কথা। ফাহিমা বলল, “ছেলেটা আসলেই লক্ষী। নীলু আপা ভাগ্য করে এমন সন্তান পাইছে।”
প্লাবন এবার মায়ের কথায় ফোড়ন কেটে বলল,
–“আমিও তো লক্ষী। শুধু তোমরা আমার লক্ষী ভাবটা চোখে দেখো না।”
মাগরিবের আযানের পরপরই নির্মল আসল প্লাবনকে পড়াতে। নির্মল তাকে পড়াতে বসল প্লাবনের পড়ার ঘরেই। প্রণয়া তখনো ঝুল বারান্দায় ছিল। উঠোনের আবছা আলোয় নির্মলকে বাড়িতে আসতে দেখেছে সে।
সেখানে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে সে নিচে চলে আসল। নিচে আসতেই ফাহিমা তাকে কাজে জড়িয়ে দিয়ে বলল,
–“আমি একটু তোর নীলু চাচীর কাছে যাচ্ছি। তুই কষ্ট করে নির্মলকে চা এবং নাশতা দিয়ে আসিস। না জানি নীলু আপা একা একা কী করছেন।”
ফাহিমার মুখ জুড়ে চিন্তার রেশ। প্রণয়া কিছু বলতে চাইল, কিন্তু সেই সুযোগ হলো না। তার আগেই ফাহিমা গায়ে শাল জড়িয়ে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গেল। প্রণয়া থমকে দাঁড়িয়ে রইলো সেখানেই কিছুক্ষণ। হঠাৎ উপর থেকে শোনা গেল প্লাবনের হাসির শব্দ। সে কিছু একটা বলছে এবং হাসছে। নির্মলের গলা অবশ্য শোনা যাচ্ছে না।
প্রণয়া ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলে রান্নাঘরের দিকে পা বাড়াল। চা বানিয়ে দিয়ে গেছে ফাহিমা। অতটা ঠান্ডা হয়নি। তাই কাপে চা ঢেলে সাথে আরেক প্লেটে বিস্কুট নিয়ে উপরে চলে গেল।
পড়ার ঘরের মুখে আসতেই দেখল প্লাবন মুখস্থ পড়া বলার চেষ্টা করছে নির্মলকে। হাত নাড়িয়ে, বৃদ্ধাঙ্গুল মুঠোতে চেপে, কনিষ্ঠ আঙুলে চোখের কোণ খুঁচিয়ে নানান ভঙ্গিতে মুখস্থ বলছে। বলতে গিয়ে বেশ কয়েকবার আটকিয়েছে তার।
প্রণয়া দরজার সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করল। মনোযোগ দিয়ে দেখল ভাই এবং নির্মলকে। নির্মলের সমস্ত মনোযোগ যেন প্লাবনের উপর। আর প্রণয়ার বোধহয় নির্মলের উপর। নির্মলের বাম পাশটা দেখা যাচ্ছে। প্লাবনের মুখস্থ বলা শেষে নির্মল তাকে কিছুটা ভুল ধরিয়ে দিতেই নির্মল পরপর দু’বার হাঁচি দিয়ে উঠল। তখনই হুঁশ ফিরল প্রণয়ার। চোখের পলক ফেলে সে হাতে থাকা চায়ের দিকে তাকাল। চায়ের নিস্তব্ধতাই যেন প্রমাণ দিচ্ছে চা ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু নির্মল যেভাবে হাঁচি দিয়েছে তাতে করে তাকে ঠান্ডা চা খাওয়ানো যাবে না। তার চাইতেও বড়ো বিষয় সম্মানেরও একটা ব্যাপার আছে। প্রণয়া এই প্রথম নির্মলকে চা সার্ভ করবে, আর প্রথমবারেই ঠান্ডা হলে নাক থাকবে? প্রণয়া চট করে ট্রে-টা দরজার পাশে মেঝেতে রেখে ঠান্ডা চা এক চুমুকে শেষ করে ফেলল। অরঃপর চায়ের কাপ নিয়ে ছুটল নতুন করে চা আনতে। নতুন করে চা এনে ট্রে হাতে প্রণয়া ঘরে প্রবেশ করল।
ঘরে কারো উপস্থিতি টের পেতেই নির্মল, প্লাবন দরজার দিকে তাকাল। প্রণয়া চট করে অনুভব করল তার মাথায় জড়ানো ওড়নাটা মাথায় নেই। ছোটাছুটির দরুণ সেটা ঘাড়ে গিয়ে ঠেকেছে। ট্রে-তেও হাত বন্দি, আবার চাইলেও উলটো পথে ঘর ছেড়ে বের হতে পারবে না। বের হওয়াটা দৃষ্টিকটু। উপায়হীন প্রণয়া চোখ তুলে নির্মলের পানে তাকাতেই চোখা-চোখি হয়ে গেল।
প্রণয়ার ভেতরটা আকস্মিক ধুকপুক করতে লাগল। কেমন যেন অস্থির, শক্ত ভাবও তাকে ঘিরে ধরল। নির্মল চোখ সরিয়ে নিলেও প্রণয়ার অস্বস্তি ভাব কাটল না। সে টেবিলে নাশতা রেখে মিনমিন করে নির্মলের উদ্দেশে বলল,
–“আপনার জন্য নাশতা!”
নির্মল মাথা উঁচিয়ে প্রণয়ার দিকে তাকাল। প্রণয়া ট্রে টেবিলে রেখে এক ফাঁকে ওড়নাটা মাথায় জড়িয়ে নিয়েছিল। নির্মল হাসি বজায় রেখে বলল,
–“এসবের কী প্রয়োজন ছিল?”
–“প্রয়োজনের কথা বলে লজ্জা দিবেন না। আপনি মাস্টার সাহেব, মাস্টারদের যত্ন করতে হয়।”
প্রণয়া আর কিছু বলল না। নির্মলকেও কিছু বলার সুযোগ না গিয়ে চটপট পায়ে দ্রুত রুম থেকে বেরিয়ে গেল।
নির্মল প্লাবনকে পড়ানো শেষ করে প্রণয়াদের বাড়ি থেকে বের হতেই চৌকাঠ থেকে সুরেলা কণ্ঠের ডাক কানে এলো। নির্মল পিছে ফিরে তাকাতেই তিনটি হলদে বাতির ঝকঝকে আলোয় নারীমূর্তি দেখতে পেল, সেটা প্রণয়া। প্রণয়া কণ্ঠে কিছুটা জড়তা মিশিয়ে বলল,
–“আপনার ঘরে প্যারাসিটামল আছে?”
নির্মলের ভ্রু কুচকে গেল। প্রণয়া স্পষ্ট দেখতে পেল নির্মলের নাক, গাল জুড়ে হালকা লালচে ভাব ছড়াচ্ছে। সঙ্গে নির্মলও ক্ষণে ক্ষণে নাক টানছে। নির্মল চিন্তিত গলায় বলল,
–“কেন বলুন তো?”
–“থাকলে খেয়ে নিবেন। দেখলাম তখন নাকের সর্দি মুছেছেন। প্যারাসিটামল হলে হয়তো জ্বরটা আসবে না।”
নির্মল অবাক হলো ভীষণ। প্রণয়াও নিজের কাণ্ডে অবাক। কী হলো ব্যাপারটা? সে নির্মলকে কী কিছু বলল যা তার বলা উচিত ছিল না? নির্মল কিছু মুহূর্তের জন্যে থমকালেও মুচকি হেসে বলল,
–“ধন্যবাদ আমাকে নিয়ে ভাবার জন্য। আপনি ব্যস্ত হবেন না। আমি প্যারাসিটামল একটা খেয়ে নিব। আজ আসছি, শুভ রাত্রি।”
নির্মল চলে গেলেও প্রণয়া থমকে রইলো। এই প্রথম সে নির্মলের মুখে আপনি সম্বোধন খেয়াল করল। মুহূর্তেই অনুভব করল তার ভেতরটা ক্রমাগত আনন্দ মিছিল করে বেড়াচ্ছে। সুখে সুখ মিলেমিশে যাচ্ছে। প্রণয়া নির্মলের থেকে অনেকটা ছোটো হলেও নির্মল তাকে আপনি সম্বোধন করছে। যেকোনো নারীই চায় পুরুষ তাকে সম্মান করুক। কিন্তু সেই সম্মানটা এত উপচে পড়ে সরাসরি প্রণয়ার বুকে গিয়ে বিঁধবে কে জানত? আচ্ছা, নির্মল কী কথার জাদু জানে?
–“আপনি কী কথার জাদু জানেন নির্মল সাহেব?”
#আকাশ_তীরে_আপন_সুর
চলবে~~