অলক্ষ্যে তুমি পর্ব-০৪

0
970

#অলক্ষ্যে_তুমি #চতুর্থ_প্রহর #Yasira_Abisha (#Fatha)

আমার টিউশান স্যার দেখতে এতো সুন্দর আর এমন দামী গাড়ি দিয়ে এসেছে, এটা দেখে পাড়ার প্রায় সব মেয়েদেরই একটা হিংসা লেগে গেলো। কিভাবে যেনো তারা রাতারাতি খবর পেয়েছে আল্লাহই জানে। আর এদিকে আমার মাথা খারাপ হয়ে গেছে কিভাবে এই ইরাদ নামক স্যারের থেকে পালানো যায়। পারলে ওদের কাছে তাকে দিয়ে আমি পালিয়ে যাই, আর এমনিতেও মেয়েদের অনেক বেশি ইন্টারেস্ট তার দিকে সারাক্ষণ মেয়েরা আসেপাশে থাকে স্পেশাল এটেনশন দেয়। একদিন তো এক মেয়ে তার হাত ধরে বলছিলো “থ্যানক্স ফর দ্যাট নাইট, তুমি এতো ওয়াইন্ড আই উইল নেভের ফর্গেট ইট”
ছেলেটা ব্যালকনিতে রেলিং থেকে পেছন ঘুরে হেলান দিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে অর্থ্যাৎ ওয়ালের দিকে মুখ করে বললো,
“প্লেজার ব্যেবস।”
এই সব কিছুই আমি দেখেছি হাসপাতালে থাকতেই।
একদম শুনতেই কেমন যেনো লাগলো ব্যাপারটা। পরক্ষনেই ভাবলাম হতে পারে সে ওর গার্লফ্রেন্ড। আর এইজন্যই আমি কিছু মনে করি নি। কিন্তু এভাবে তার বাসায় এসা আমাকে পড়াতে ইন্টারেস্ট দেখানোটা আমার ভালো লাগেনি তাই
আমার জানতে হবে যে মেয়েটা তার গার্লফ্রেন্ড কি না জানা প্রয়োজন। যদি হয় তবে তার আজকের সবটা আমি বলে দিবো।
আর আমি হাসপাতালে ঠিকি গিয়েছিলাম আজকেই চেকাপের জন্য এবং লাকিলি মেয়েটার সাথে দেখা হয়ে গেলো। তখনই তাকে দেখে আমি এগিয়ে গিয়ে বললাম,
“হাই আপু আপনি অনেক সুন্দর। আমি রুহি অনেকদিন এখানেই ভর্তি ছিলাম আপনাকে প্রথম থেকে দেখছি আপনি খুব সুইট কি সুন্দর স্টাইল আপনার। ”
যতটা তাকে খুশি করা যায় ততটা বলে একটা সাসি দিয়ে তাকিয়ে রইলাম তার দিকে। আর মনে মনে ভাবছি এর এখন ইম্প্রেস হওয়া উচিত, নাহলে জানাতে পারবো না ঘটনা।
এটা শুনে মেয়েটার তো মুখে একটা হাসি ফুটে ওঠে।
সে আমাকে পাল্টা বলে
“আওওহ তুমিও, তোমাকে আমি আগেই দেখেছি তোমাকে যে দেখবে সে খেয়াল করতে বাধ্য বিকজ তুমি এতো কিউট। ”

“টেক লাভ আপু৷ আচ্ছা আপু আমি অনেক ভালো পেইন্টিং করি আপনার আর আপনার বয়ফ্রেন্ডের একটা সুন্দর পেইন্টিং করতে চাই যদি আপনি অনুমতি দেন।”
“সিউর। ”
এই বলে সে তার সাথে অন্য একটা ছেলের পিক দেখালো।
“আপু উনি?”
আমি বেশ অবাক হয়েই জিজ্ঞেস করলাম কারণ এখানে ইরাদের ছবিটা চাচ্ছিলাম।
“আমার বয়ফ্রেন্ড। কেনো?”
“আপু একটা ফর্সা ছেলে দেখেছিলাম উনি না আপনার বয়ফ্রেন্ড? ”
“দ্যাট টল গাই? ইউ মিন ইরাদ?”
“নামটা খেয়াল নেই মুখে দাড়ি আছে যে তার কথা বলছিলাম।”
“হুমম ইরাদ। ও সব মেয়েদের বয়ফ্রেন্ড। ”
বলেই অট্ট হাসি হাসলো মেয়েটা।
“সরি?”
“হি ইজ নট মাই বয়ফ্রেন্ড। ও সিংগেল আমার ক্লাসমেট।”
আমি এবার পুরো ইনফরমেশন বেড় করার জন্য বলে উঠলাম,
“তাহলে উনাক্ব থ্যাংকস দিচ্ছিলেন যে ফর দ্যাট নাইট? ”
এবার মেয়েটা একটু আতংকিত হয়ে বলে,
” মানে?”
“আমি শুনেছিলাম আপনাদের কথা। আপনার আর উনার কি চলছে তাহলে?”
” তুমি কে এসব জানতে চাওয়ার।”
” উনি কি আপনাকে জোর করেছে? দেখেন আপু আমরা লিগ্যাল একশন নিতে পারবো আপনি ভয় পাবেন না। এমন ছেলে আছে কিছু আমাকে বলুন আমার এক ক্লোজ আপু লয়ার আমি আপনাকে সাহায্য করতে পারি।”
এবার সে হেসে বললো,
“লিসেন কিডো, এমন কিছু না আমার ব্রেকাপ হয়ে গেসিলো আর ওকে আমার আগে থেকেই ভালো লাগতো আমার ইনফ্যাক্ট মোটামুটি সব মেয়েদেরই ওকে পছন্দ তাই যখন চান্স পেয়েছি আই স্পেন্ড এ নাইট উইথ হিম, নাথিং এলস। আর ও রিলেশন করার মতো ছেলে তো না তাই আমি কিছু এক্সপেক্ট করতে চাইলেও পারতাম না। আই মিন কোনো মেয়েই পারবে না ইউ নো? তাই আর কিছু না।
মেয়েটার কথা শুনে আমি আকাশ থেকে যেনো ধপ করে মাটিতে ক্লান্ত হয়ে পরে গেলাম। বাসায় ফিরে এলাম সাথে সাথেই। অনেক কিছুই ক্লিয়ার হয়ে এলো সে যে কতো বড় অসভ্য এবং তার এতো সুন্দর হওয়াটা আমার ভালো লাগছিলো না, কথাটা কেউ শুনলে আমাকে পাগল ভাববে কিন্তু আমার তো কথাতে বেশ লজিক আছে। সে দেখতে এতো ভালো, এতো ধনী তার বাবার পরিচয় আজকে কিছুক্ষণ আগে রুফাইদার কাছে শুনেছি (বান্ধুবী) তারপরেও

“আমার মতো মিডেল ক্লাস মেয়ের প্রতি তার ইন্টারেস্ট কেনো থাকবে এতো বেশি যার জন্য সে বাড়ি পর্যন্ত চলে আসবে তাও টিউশান দিতে? এই ছেলের কি টিউশন দেওয়ার কোনো প্রয়োজন আছে? তারপরেও সে এসেছে। তার মতলব অন্যকিছু।
আচ্ছা সে যদি আমাকে ওই ধরনের মেয়ে মনে করে যাকে নিয়ে রাত কাটানো যাবে? তাহলে আমি একদম গলা চেপে মেরেই ফেলবো।”
কথা গুলো একদমে বলে ফেললাম রুফাইদার দিকে কঠিন দৃষ্টি নিয়ে। আমার কথায় রুফাইদা কপাল কুচকে কিছুটা চিন্তিত ভংগিতে বললো,
“কিন্তু আমার মনে হচ্ছে না এমন কিছু।”
“কেমন কিছু?”
আমি ওর অর্ধেক কথাতে কিছুই না বুঝে জিজ্ঞেস করলাম
“কেমন কিছু রে?”
“এই যে তুই এতো বড় ছেলেটাকে একলা গলা চেপে মেরে ফেলবি।”
বলেই ফিক করে হেসে দিলো।
রুফাইদার সারাটা জীবনের একটাই কাজ আমি সিরিয়াসলি কিছু বললে সে একটা না একটা ফাজলামো করেই ছাড়বে। আজকে আমি বেশি সিরিয়াস মুডে তাই তার ফাজলামো উপেক্ষা করে বললাম,
“শোন একটু পর তো আমাকে পড়াতে আসবে এই ইরাদ নামক আপদটা। আমি কি করি বলতো?”
“জানিস না?”
“কি?”
“গলা চেপে ধরবি। আর আমি এসে ওকে উদ্ধার করবো নায়কার মতো তারপর ধরে নিয়ে বিয়ে।”
একদম উচ্চস্বরে ও হেসে উঠে আমাকে এগুলো বলে।
“আচ্ছা শোন আমি একা পড়বো না, তুই ও প্লিজ আমার সাথে পড়তে বসিস। ”
” আমি বিবিএ তে ভর্তি হবো বোকা তোর সাথে ইঞ্জিনিয়ারিং এর বিষয়ে কি প্রিপারেশন নিবো বলতো? আমি কমার্সের না?”
” প্লিজ সাথে থাক না, আমার একা ভালো লাগছে না। প্লিজ্জজ্জজ্জজ্জজ।
“আচ্ছা আমি থাকবো।”

.

বাইরে আবহাওয়া একদম শীতল আজকে হালকা রোদ মিষ্টি বাতাস, ঠিক ৪টার দিকে ইরাদ আসলো গেইটে কলিংবেল বাজাতেই আমি উঠে গেলাম গেইট খুলতে
আর মনে মনে বকা দিচ্ছিলাম তাকে। দরজা খুলে দেখি সে এসেছে ব্লু শার্ট ব্ল্যাক প্যান্ট ব্ল্যাক জ্যাকেটটা হাতে নিয়ে বুকে সানগ্লাসটা রাখা। আমাকে দেখেই হাসি দিয়ে বললো,
” হাই সুইটহার্ট, ইউ লুক সো ডেডলি গর্জিয়াস। ওয়েরিং সেইম কালার বাই দা ওয়ে।”
আমি ভ্রু কুচকে ফেললাম সাথে সাথেই
” আপনি আবারো আমাকে……
কথা শেষ করার আগেই সে বললো,
“সুইটহার্ট বললাম? আই নো সুইটহার্ট নাও লেট মি ইন। এভাবে গেইটে দাড়িয়ে আমাকে দেখা লাগবেনা নটি গার্ল।”
“আমি আপনাআ….
কথা বলতে না দিয়ে সে নিজে বলেই পাশ কাটিয়ে ভেতরে চলে এলো। আমি দরজা বন্ধ করে মনে মনে বললাম,
” ছুটাচ্ছি তোমার সুইটহার্টগিড়ি ভেতরে যখন রুফাইদাকে দেখবে, দেখি কেমন করে আর সুইটহার্ট ডাকো।হাহ!!”

মা বসে বসে অফিসের কাজ করছিলো।
মাকে বললাম
“মা ইরাদ এসেছে।”
“রুহি এভাবে… ”
“হ্যাঁ এভাবে বলতে হয় না। স্যার এসেছে বলতে হবে। ”
“তাহলে বলছো না কেনো মামনী?”
“কারণ তাকে আমার পছন্দ না।”
“কি করেছে ও?”
এখন মাকে তো আমি বলতে পারি না এই ছেলে আমাকে সুইটহার্ট ডাকে। ফ্লার্ট করে।
“এমনিই”
“তাহলে এখন পড়তে যাও এমনিই ভালো লেগে যাবে যেদিন দেখবে বুয়েটে চান্স হয়ে গেছে।”

মাকে বলে লাভ আর নেই বুঝেছি,
হাতখোপা বাধতে বাধতে ঘরে যাওয়ার আগে পাশের আয়নায় একবার তাকিয়ে নিজেকে দেখে নিলাম, ব্লু লং কালিজ ডিভাইডার সালোয়ার সাথে ব্লু জর্জেটের ওড়না পরা, আমাকে রোজকার মতো স্বাভাবিকই দেখাচ্ছে। আমাকে গর্জিয়াস বললো কেনো? আমি আরো একটু সময় নিয়ে ভালো মতো তাকিয়ে দেখি নাহ চেহারায় আজকে একটু ক্রিম ও দেওয়ার কথা মনে ছিলো না জনাবের আসার আতংকে। ঠোঁটে হালকা লিপবামটাই দিয়েছি একটু আগে গোসল থেকে আসার পর আর হালকা পার্ফিউম যেটা সবসময়ই থাকে। নির্ঘাত আবারো ফ্লার্টই করলো সে।
এমনই সময় দেখি ফোনের তাকিয়ে রুফাইদা হাসতে হাসতে মেইন দরজার দিকে যাচ্ছে।
“এই কোথায় যাচ্ছিস?”
” বাসায়।”
” তুই তো আমার সাথে থাকবি। এখন কেনো যাচ্ছিস?”
” জরুরি কাজ আছে তোর সাইয়া তো জোস বিয়েটা করে ফেল, থাক এখন বাই।”
আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারলাম না। তবে মাথায় এটাই ঘুরছে আমার এখন একাই পড়তে হবে তার কাছে।
ঘরে ঢুকতেই দেখি ইরাদ এক পায়ের ওপর পা তুলে দিয়ে আয়েশ করে বসে আছে। আমি কিছু বলার আগেই সে বলে,
“সুইটহার্ট পড়ার সময় তুমি আর আমিই থাকবো হ্যাং আউটে গেলে ফ্রেন্ডসদের নিবো ওকে?”
“এক্সকিউজ মি? আপনার সাথে কে যাবে হ্যাংআউটে? মিস্টার দেখেন আমি কিন্তু ওই ধরনের মেয়ে না।”
ইরাদ কোনো কথা না বলে উঠে সোজা আমার দিকে এগিয়ে এলো ওর কাছে আসা দেখে আমি এক পা করে করে পেছন যাচ্ছিলাম আর ও কাছে আসছিলো। ঘরে কেউ নেই আমার কিছুটা ভয় লাগছিলো পেছনে দেয়াল ছিলো আমার আর যাওয়ার কোনো জায়গা ছিলো না সে একদম কাছে আসার ফলে আমি চোখ বন্ধ করে ফেলি।
দরজা বন্ধ করার খট শব্দে আমি তাকাই,
তখনই সে আমার কানের কাছে এসে বলে,
” তুমি হ্যাংআউটে যাওয়ার মেয়ে না? থাক সুইটহার্ট তাহলে আমরা ঘরেই করবো।”

বলেই সে সরে গেলো।
তার কথাতে আমি অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করায় সে বললো,
সে চেয়ারে বসতে বসতে বললো,
“চিল.. আমি চিল করার কথা বলেছি দ্যাট টু আফটার ইউর এক্সাম নট নাও। আর এসি টা অন করো তো, যেই গরম এমনিতেই আমি এতো হট সুইটহার্ট আর তুমি এই ওয়েদারে আমার মতো হট একটা ছেলেকে এসি অফ করে বসিয়ে রাখবে? নট ফেয়ার।”
আমি কপাল কুচকে এসি অন করে রিমোট টেবিলে রাখলাম।
আর বুঝলাম তাহলে সে এসির জন্য দরজা অফ করতে উঠেছিলো। অন্যকিছু না, হয়তো আমিই বেশি বেশি ভেবে ফেলছিলাম।
আমাকে অন্যমনস্ক দেখে সে বলে,
“তুমি না সুইটহার্ট অনেক টাইম ওয়েস্ট করো পড়াশোনা না করে, সো বই নিয়ে বসো আর্লি।”
আমি বই নিয়ে বসে তাকে বললাম,
“আমার ফ্রেন্ড অনেক উইক পড়ালেখায় তাই ওর হেল্প লাগবে আর কাল থেকে ও পড়বে আপনার কাছেই আমার সাথে নাহলে হবেনা ওর এখন আলাদা টিউটর রাখার টাকা নেই।”
“কোন সাব্জেক্টে ও উইক?”
“কেমিস্ট্রিতে।”
ওকে ওয়েট।
এটা বলে সে তার মোবাইলে দেখে একটা হাসি দিয়ে বললো,
“প্রব্লেম সলভড।”
“মানে?”
“তোমার ফ্রেন্ডের বিবিএ এর প্রিপারেশন নেওয়ার জন্য আমার একটা ফ্রেন্ডকে ঠিক করে দিয়েছি কাল থেকে আসবে পড়াতে ঠিক এই টাইমেই সুইটহার্ট তাও তোমার ফ্রেন্ডের কোনো বেতন দেওয়া লাগবেনা ওকে। ও মাত্র কনফার্ম করেছে। ”
“মানে??”
“সুইটহার্ট তুমি এতোটা চালাক ও কিন্তু না যতটা নিজেকে ভাবো। না মানে টাকা ছাড়া কেনো পড়াবে।”
“ডোন্ট ওয়ারী আমার ফেভারিট কার নিচ্ছে তো ও সবই করবে আমি যা বলবো।”
তার আস্তে কথা আমি ঠিক শুনিনি।
“মানে?”
“এতো মানে যদি ফিজিক্সের ইকুয়েশন সমাধানে জিজ্ঞেস করো আই গেস বেশি বেনিফিট পাবা।”
আমি তার ওপরে প্রচুর বিরক্ত থাকলেও এটা বলতে বাধ্য পড়ায় দারুন। পুরো দু’ঘন্টা পড়ালো, তখন এদিক সেদিকের কোনো কথাই সে বলেনি। খুটিনাটি অনেক কিছুই মুটামুটি সাবজেক্ট গুলোর সম্পর্কে জানতে পারলাম যা আগে পড়িনি, বুঝা গেলো ছেলেটা পড়াশোনায় আসলেই মনোযোগি ছিলো। যাওয়ার সময় যখন হলো আমি তখন মনে মনে হাফ ছেড়ে বাচলাম আজকের মতো বিদায় হচ্ছেন উনি। সে বেড় হতে হতে বলে গেলো,

“আচ্ছা সুইটহার্ট ওয়ান মোর থিং কেমিস্ট্রি তে তোমার আরো একটু ইম্প্রুভ কর‍তে হবে রিয়েল লাইফে, এবং প্রতিদিন তুমি এই সময়টা এখন থেকে শুধুই আমাকে দিবে অন্য কেউ নিতেও পারবে না। তাই মাথা খাটিয়ে উল্টা পালটা প্ল্যান বানিয়ে কিংবা হসপিটালে গিয়ে জেমস বন্ড না সেজে পড়ালেখাতে মনোযোগ দাও প্লিজ সামনে এক্সাম আর আমাদের ড্রিম কিন্তু বুয়েট।”
বলেই একটা হাসি দিয়ে চলে গেলো।

তার মানে আমি যে আজকে ওই মেয়ের সাথে দেখা করেছি উনি তাও জেনে গেছে আর এতোক্ষণ আমাকে কিছু বললো ও না এই ব্যাপারে। ছেলেটার কি আরো একটা চোখ আছে যেটা আমার আশেপাশে লাগিয়ে রেখে গেছে?
ধুর কি সব ভাবছি আমি এগুলো? আর আমার ড্রীম না বলে উনি আমাদের ড্রীম কেনো বললো?
উফফ! আই উইশ সে আমার লাইফ থেকে দূর হয়ে যাবে।

ঠিক এভাবেই প্রায় দুইমাস হতে চললো তার কাছে পড়ছি। তার আমার প্রতি অনাধিকার চর্চা বেড়েই চলেছে, এখন সে প্রতিটা কথায় একটা কথাই বলে “তুমি আমার। “আমি রাগান্বিত চোখে তাকালেই সে বলে “এটা আজকের জন্য এনাফ।” আমার মায়ের দাদুর সবার প্রচুর খেয়াল রাখে সে, আমার তাকে ভালো লাগে না কিন্তু তার ভালো দিক গুলো ও ঠিক ইগ্নোর করতে পারি না। তার আগের আচরণ মেয়েদের প্রতি আর এখন আমার পরিবারের মানুষ গুলোর খেয়াল রাখা মিলেছে না।

কিছুদিন আগে আমি হিটস্টক করেছিলাম রাস্তায় তার ২দিন পরেই ইরাদ মায়ের নামে নাকি লটারি তুলেছে, সেটা বাবদ ১টা গাড়ি পেয়েছি আমরা। আরো অনেক জিনিস সে করছে আমাদের জন্য। আমাকে পড়াতেও সে কিচ্ছু নিচ্ছেনা। তার এই সবকিছু কেনো করছে সে আমি বুঝি না। ফ্লার্ট করার জন্য এক রুহি আমি যে আছি না তো না আমি মানলাম আমি যথেষ্ট সুন্দরী কিন্তু এই দুনিয়ায় রূপবতীদের অভাব তো নেই তাহলে কেনো সে এতো কিছু করছে? এখন সে আমাকে পড়ানো ছাড়াও দাদুর সাথে এসে প্রায়ই আড্ডা দেয় তখন অবশ্য আমার সাথে তার কোনো কথা হয় না। মায়ের সাথে বসে ফাইলপত্রের হিসেব দেখতে হেল্প করে। আর সময় পেলে আমার দিকে তার সেই ড্যাব ড্যাব চাহনি আর হাসি দিতে ভুলে না।

একদিন বিকেলে রুফাইদা আমার বাসায় আসে, ওকে দেখেই আমি বলি,
“জানিস আজকে উনি কি করেছে?”
” না দোস্ত এটা জানিনা তবে অন্য একটা জিনিস জানি যেটা তুই জানিস না।”
“কি জানিস?”
“তুই মিস্টার ইরাদকে ভালোবাসিস।”
“হোয়াট?”
“ইয়েস, যেভাবে সারাদিন উনার নাম জপতে থাকিস সারাটা দিনে ২৪ ঘন্টাই ইরাদ ইরাদ ইরাদ। তার মানে কি হতে পারে বেবি?”
আমি কোনো কথা না বলে রুফাইদার দিকে তাকিয়ে রইলাম।

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে