অলকানন্দার নির্বাসন পর্ব-০১

0
1509

(সূচনা পর্ব)
#অলকানন্দার_নির্বাসন
#মম_সাহা

১.

ষোলো বছরের মেয়েটার শরীরে লাগলো বিধবার ফ্যাকাসে চিহ্ন। কন্যার গলার মোটা স্বর্ণের চেইন, হাতের মোটা স্বর্ণের বালা, নাকের নাকফুল খুলে ফেললো গ্রামের বয়স্ক মুরব্বিরা। হাতের শুভ্রা রাঙা শাখা, কপালে লেপে রাখা রক্তবর্ণ সিঁদুরটাও মুছে দিলো কেমন নির্মমতায়! কন্যার মুখে কোনো উদ্বেগ নেই, বিষাদ নেই। চোখ দুটো যেন ধূ-ধূ মরুভূমি। দূর হতে দূরে কোথাও যেন কিছু নেই, কেবল মনে হচ্ছে ইতিহাসে বিধ্বস্ত হওয়া কোনো হিমালয় হয়তো। শরীরের চকচকে রঙের শাড়িটা খুলে অবশেষে সাদা থান পড়িয়ে দিয়ে মেয়েটার শরীরে এঁকে দিলো বিধবার চিহ্ন। এতক্ষণের এত ধস্তাধস্তিতে কন্যার ক্লান্তি ভার করলো শরীর জুড়ে। ষোড়শীর বিধ্বস্ত মেয়েটা মাটির উপরই শুয়ে পড়লো। দেহ যে আর দিচ্ছে না ৷ ঝিমিয়ে এলো শরীর, অবচেতন হয়ে নেতিয়ে গেলো মাটির বক্ষে।

গ্রামের মহিলারা মাটিতে নেতিয়ে পড়া অলকানন্দার দিকে ধ্যান দিলো না। যেন ফেলনা জিনিসের ঠাঁই মাটিতে হওয়াটাই স্বাভাবিক। আর বিধবা নারীদের জায়গা যেন চির পরিচিত প্রথা অনুসারে এই মাটিই হয়ে এসেছে। মানুষ জাতির ভাব এমন, বিধবা পৃথিবীতে থাকতে দিচ্ছে এ-ই ঢের, আবার তার চালচুলোর কথা ভাবটা নেহাৎ ই বিলাসিতা।

অবচেতন কন্যার মা, মেয়ের মাথার নিচে একটা শক্ত মতন পাথর দিলেন। মেয়েটা তার উঁচু বালিশ না হলে যে শুতেই পারতো না। মায়ের মন কেঁদে উঠলো হু হু করে। অথচ সেই মাকেও প্রাণ খুলে কাঁদতে দিলো না প্রতিবেশী মহিলারা। বিধবা মেয়েমানুষ মানেই অলক্ষী,তাদের জন্য চোখের জল ঝড়ানো সর্বনাশা কাজ!

কন্যার মাকে জোর করেই নিয়ে যাওয়া হলো কন্যার ঘর থেকে। সবচেয়ে বড় রাজকীয় ঘরটায় থাকা টুকটুকে বধূ আজ পড়ে আছে বাড়ির সবচেয়ে নোংরা,ছোটো ঘরটাতে। একদম একা, নিস্তব্ধ। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই শুরু হলো “অলকানন্দার নির্বাসন”।

_

‘বিহারিণী মহল’ তুমুল হৈচৈ এ পরিপূর্ণ। মহলের জমিদার সুদর্শন ঘোষ আজ মৃত্যুবরণ করেছেন। গ্রামের ছোটো-বড়ো সকল জাতের মানুষ তাই ভীড় করেছে ‘বিহারিণী মহল’ নামক বাড়িটায়। গ্রামের মানুষ যেন খালি পেটে না ফিরে তাই বাড়ির কিনারায় বড়ো খালি জায়গাটাতে চলছে বিরাট খাওয়া দাওয়ার আয়োজন। খাওয়া দাওয়া বলতে চিঁড়ে, মুড়ি, দই, রসগোল্লা। মানুষ পেট পুরে খাচ্ছে আর নিয়েও যাচ্ছে সে গুলো। এলাকার জমিদার মরে গিয়েও কত কাজে লাগছে তাদের! বেঁচে থাকা কালীনও মানুষটা বেশ সাহায্য করেছে গ্রামবাসীকে। সেই কথা কী ভুলা যায়? দইয়ের মাঝে জিহ্বা ডুবিয়ে মানুষ খুব হা হুতাশ করছে জমিদারের জন্য। কত ভালোই না ছিলো মানুষটা! অবশ্য চির পরিচিত প্রথা অনুয়ায়ী মৃত্যুর পর সকল মানুষই ভালো হয়ে যায়। জমিদারও সে প্রথার বাহিরে না।

অন্দরমহলে যতটা কান্নাকাটি হওয়ার কথা ছিলো তার একাংশও বোধহয় হচ্ছে না। শুধু কাঁদছে জমিদারের মা। খুব চিকন স্বরে সে কাঁদছে। কিন্তু হৈচৈ হচ্ছে ভেতরে। তবে সেটা কান্না না। জমিদার সুদর্শন ঘোষের স্ত্রী অলকানন্দার মোটা মোটা স্বর্ণের গহনা গুলো ভাগ করা নিয়ে সকল হৈচৈ। বিধবা স্ত্রী তো আর গহনা পড়তে পারবে না তাই সেগুলোর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতেই ননদ, ননস, জা লেগে গিয়েছে ভাগ-বাটোয়ারায়।

এমন ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে বিরক্ত হলেন জমিদারের মা সুরবালা। বেশ বিরক্ত হয়ে গমগমে কণ্ঠে কিছুটা ধমকে সকলের উদ্দেশ্যে বললেন,
“তোরা থাম দেখি। গয়না গুলো ভাগ করছিস কোন আক্কেলে শুনি? মরেছে তো আমার ছেলে, বউটা তো মরে নি। তবে তার জিনিস কেন ভাগ করছিস?”

সুরবালার কথাটা ঠিক পছন্দ হয়নি সবার। সুরবালার দেবর নন্দন মশাইয়েরও যে তেমন ভালো লাগেনি কথাখানা তা উনার গুমোট চেহারা দেখেই টের পাওয়া গেলো। সাথে ভারিক্কি কণ্ঠে কপাল কুঁচকে বললেন,
“বউ ঠাকুরানী, বিধবা বউয়ের জন্য আপনার এমন দরদ বড়োই আশ্চর্য সৃষ্টি করছে। বউ এনেছেন মাস ঘুরলো না অথচ এখনই আপনার ছেলেকে খেলো, অলক্ষী মেয়েমানুষ।”

“ঠাকুরপো, এমন কথা বলোনা। যার যতটুকু আয়ু, তা খণ্ডন করার সাধ্য কারো নেই।”

“তাই নাকি বউ ঠাকুরানী? বেহুলার গল্প তো শুনেছেন? সতী সাবিত্রী স্ত্রী বলে নিজের স্বামীর প্রাণ ফিরিয়ে এনেছিল। স্ত্রী চাইলে কী না পারে? আপনি মাথায় তুলবেন না ঐ বউকে।”

সুরবালা আরও কিছু বলতে চাচ্ছিলেন কিন্তু তার আগেই গ্রামের দু’জন মহিলা ছুটে এলেন। ব্যস্ত কণ্ঠে সুরবালার উদ্দেশ্যে বললেন,
“গিন্নী, বউ তো চুল গুলো কাটতে দিচ্ছেন না। একটু আসুন দেখি। ও মেয়ে আমাদের কারো কথা শুনছে না। বিধবা বউ চুল না কাটলে স্বামীর আত্মা শান্তি পাবে বলুন তো?”

সুরবালা কিছু বলার আগেই ফোড়ন কাটলেন নন্দন মশাই। মুখ ঝামটি মেরে বলল,
“অমন মেয়ের মুখে চুনকালি লেপে দেওয়া উচিৎ। কেবল বাড়ির বউ বলে কিচ্ছুটি বলছি না।”

নন্দন মশাইয়ের বাচনভঙ্গিতে বিরক্ত হলো সুরবালা কিন্তু কিছু বললেন না। মাথার ঘোমটাটা আরেকটু শক্ত হাতে টেনে গম্ভীর কণ্ঠে বললেন,
“চলো আমিও যাচ্ছি সাথে। ওর চেতনা ফিরেছে কখন? সেটা না জানিয়ে চুল কাটতে লাফালাফি করছো। চলো, আমি দেখছি।”

সুরবালা কথাটা বলে দু’পা আগাতেই নন্দন মশাই কটাক্ষ করে বললেন,
“বিধবা মা* গুলোর এত ভাব কিসের কে জানি।”

সুরবালার শরীরটা ঘিন ঘিন করে উঠলো। কথাটা সে শুনেও যেন শুনলো না। বিধবা তো সে নিজেও। আর দেবর যে তাকে উদ্দেশ্য করেই কথাটা বলেছে তা বুঝতে বাকি রইলো না তার। কিন্তু মিটমিট হাসি দেখা গেলো গহনাপত্র ভাগ করা মেয়ে, বউদের মুখে। কোথাও একটা নন্দন মশাইকে গোপন আশকারা দিলো তাদের হাসি।

_

ছোটো, আধো আবছা ঘরের এক কোণায় ঘাপটি মেরে বসে আছে অলকানন্দা। দু-চোখে তার নিগার শূণ্যতা। অথচ ঠাঁই মেলেনি অশ্রুর। তার জীবন সবসময় গতিশীল নদীর মতনই চঞ্চল। সেখানে বাসা বাঁধতে পারেনি নিস্তব্ধতা। অথচ স্বামীর মৃত্যু নামক শব্দটা তাকে টেনে এনে ফেলেছে কূল বিহীন সমুদ্রে। এখান থেকে বাঁচার উপায় কী? না-কি এভাবেই পাড় করতে হবে জীবন তরী?

প্রশ্নরা হামাগুড়ি খায় অথচ চারপাশ হাতড়ে মিলে না উত্তর। অলকানন্দার মাথা ঝিমঝিম করে উঠে। ষোলো বছরের জীবনটা কতটুকুই বা? ছোটো একটা জীবন! অথচ জীবনের ভার আজ প্রায় নব্বই বছরকেও হার মানায়!

অলকানন্দার ভাবনার মাঝে ঘরে হাজির হয় তার শাশুড়ি সুরবালাসহ আরও কয়েকজন মহিলা। সাথে তার খুড়তুতো জা, ননদ দু’জনও আছে। তাদের দেখেও অলকানন্দার ভাবাবেগে হয় না। সে আগের ন্যায় চুপটি করে বসে থাকে।

ঘরের নিস্তব্ধতা ঠেলে প্রথম কথা তুলে সুরবালা। কণ্ঠ ধীর রেখে প্রশ্ন করে,
“বউমা, তুমি নাকি চুল কাটবে না বলেছো?”

অলকানন্দা উত্তর দেয়না। চুপ করে বসে থাকে। এতে বিরক্ত হয় তার ননদ পানকৌড়ি ও মনময়ূরী। পানকৌড়ি তো রেগেমেগে বলে উঠে,
“বউরানী, এ কেমন তোমার ব্যবহার? স্বামী মারা যাওয়ার কোনো শোক তাপ তোমার মাঝে নেই! এখন আবার চুল কাটতে চাচ্ছো না, এসব কেমন আচরণ!”

পানকৌড়িকে আশকারা দিয়ে মনময়ূরী বলে উঠলো,
“আরে ছোটো বংশের মেয়েমানুষ তো, ওরা আচরণ বুঝবে কেমন করে?”

দুই বোন ঠোঁট টিপে হেসে উঠলো। তাদের কথায় বিরক্ত হলো অলকানন্দার খুড়তুতো জা কৃষ্ণপ্রিয়া। একহাত ঘোমটাটা টেনে নিবিড় কণ্ঠেই বলল,
“আহা ঠাকুরঝি, অমন করে বলছো কেন! মেয়েটা কষ্ট পাবে।”

“তাতে তোমার এত দরদ কেন মেঝো বউ? নাকি তোমারও ছোটো বংশ বলে লেগে গেলো?”

কৌড়ি আর ময়ূরী যেন কৃষ্ণপ্রিয়াকে ছোটো করতে পেরে বেজায় খুশি হলো। তাদের খুশিকে আর বাড়তে না দিয়ে ধমকে উঠলো সুরবালা। চোখ রাঙিয়ে বললো,
“তোরা দু’টিতে এক্ষুণি এখান থেকে বিদায় হবি। মেয়েমানুষ নাকি তোরা? তাহলে আরেকটা মেয়েকে কীভাবে এত অপদস্ত করতে পারিস? তোদেরও তো বিয়ে হয়েছে, শ্বশুরবাড়িতে তো থাকিস না বুঝবি কীভাবে বিবাহিত জীবনের যন্ত্রণা।”

সুরবালার কথায় খেপে গেলো দু’বোন। দাঁত কিড়মিড় করে বললো,
“জেঠিমা, বাড়ির মেয়েকে তুমি এসব বলতে পারো না। আমরা এ বাড়ির মেয়ে। আমাদের বাপ-দাদার ভিটে এটা।”

“ওরাও তবে এ বাড়ির বউ। ওদের শ্বশুর-স্বামীর ভিটে এটা। কোন কারণে ওরা তোদের কথা শুনবে? যা বলছি।”

কৌড়ি আর ময়ূরী দাঁড়ালো না এক মুহুর্ত। গুমোট চেহারা নিয়ে চলে গেলো ধুপধাপ পায়ে। জেঠিমা সবসময় কড়া কথা বলে। তার সামনে কিছু বলা যায় না কখনো।

সুরবালা আরেক পা এগিয়ে গেলেন। গম্ভীর কণ্ঠেই বললেন,
“চুল কাটবে না বলেছো তুমি?”

“হ্যাঁ।”

অলকানন্দার অকপটেই উত্তর ভেসে এলো। ঠিক সেই মুহুর্তেই দরজার সামনে উপস্থিত হয় তার পিসি শাশুড়ি লক্ষী দেবী। নামে লক্ষী হলেও কথায় ঝরে তীর। অলকানন্দার উত্তর তার কর্ণ অব্দি পৌঁছাতেই সে তেতে উঠলো। হায় হায় করে ছুটে এলো। অলকানন্দার বাহু নিষ্ঠুর ভাবে টেনে ধরে চিৎকার দিয়ে বললেন,
“হায় হায়, এ কেমন অলক্ষী মেয়েমানুষ! স্বামীটা যে গেছে এর কোনো কষ্ট নেই বুকে। কী রঙ ওর শরীরে। এই বউ, তুই চুল কাটবি না কেন? তোর শাশুড়ি, আমি তো বেধবা হওয়ার সাথে সাথে চুল গুলো সব ফেলে দিছি, আমরা কী মরে গেছি? এটা নিয়ম, চুল ফেলতেই হবে। স্বামীর আত্মা নাহয় শান্তি পাবে না।”

“যে মরে গেছে তার আত্মার শান্তি খুঁজছেন পিসিমা, অথচ আমি বেঁচে আছি। আমার জীবিত আত্মার কথা ভাবছেন না যে!”

“এই মেয়েই তো কী শান্ত বউ হয়ে ছিলো তাই না? স্বামীটা মারা যেতেই ওর মুখে খই ফুটছে যেন? ছিঃ ছিঃ, কেমন মেয়ে মানুষ ও! শোন বউ, চুল তোকে কাটতেই হবে।”

“চুল আমি কাটবো না পিসিমা। আমার শখের চুল এগুলো।”

লক্ষীদেবী যেন রুষ্ট হলেন অলকানন্দার কথায়। তাই তৎক্ষণাৎ টেনে ধরলেন অলকানন্দার চুলের গোছা। হাঁটু ছাড়িয়ে যাওয়া চুল গুলো সব নিয়ে নেন নিজের হাতের মুঠোয়। ব্যাথায় অস্থির হয়ে উঠে মেয়েটা। সুন্দর মুখশ্রী লাল বর্ণ ধারণ করে। আকুতি মাখা কণ্ঠে বলল,
“আমার লাগছে পিসিমা, ছেড়ে দেন আমারে।”

কিন্তু সেই আকুতি ছুঁতে পারে না পিসির মন। ছুটে আসে সুরবালা। নিজের ননাসের হাত খানা চেপে ধরে শক্ত কণ্ঠে বলেন,
“বড়দি, ছেড়ে দেন বউয়ের চুলগুলো।”

লক্ষীদেবীর হেলদোল দেখা গেলো না সে কথায়। সুরবালা আরও বার কয়েক ছাড়তে বলার পরও শক্ত হাতে মুঠ করে ধরে রাখে সে চুল। অতঃপর সুরবালা তার ননাসের হাতখানা টেনে ছাড়িয়ে দেন। ঝামটি মেরে বলেন,
“বউ চুল কাটতে না চাইলে, কাটবে না। কেউ যেন জোর করতে না আসে।”

ছোটো ভাইয়ের বউয়ের কথায় খেপে যান লক্ষীদেবী। দাঁত কিড়মিড় করে একবার সুরবালা আরেকবার অলকানন্দার দিকে তাকিয়ে বলে,
“চুল তো এই মেয়েকে কাটতেই হবে। যে নিয়ম আমরা করেছি সে নিয়ম ও করবে না কেন? ছোটো বংশের মেয়ের এত দেমাগ? ওর চুল থাকবে না।”

কথা শেষ করেই হনহনিয়ে বেরিয়ে গেলো সে। মুখ নাক কুঁচকে বেরিয়ে গেলো প্রতিবেশী মহিলারাও। ঘরে পড়ে রইলো দু’জন স্বামী হারা নারী। যারা আজ বেঁচে থেকেও মৃত।

সুরবালা নিজের পুত্রবধূর কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো মেয়েটাকে। সাদা শাড়িতেও ষোলো বর্ষীয়া কন্যাকে স্বর্গের অপ্সরা থেকে কম লাগছে না। কী বিশাল চুলের গোছা মেয়েটার? হাঁটু অব্দি সেই চুল। এত সুন্দর মেয়েটার জীবন কেবল থেমে যাবে বিধবা নামের বিধিনিষেধে? চঞ্চল তো কম ছিলোনা মেয়েটা। সে নিজে পছন্দ করে তার ত্রিশ বর্ষের ছেলের জন্য এই ছোটো মেয়েটাকে এনেছিল। একমাসও হয়নি বিয়ের। মেয়েটার সবসময় উড়ে বেড়ানোর ইচ্ছে ছিলো। একটা সাদা শাড়ির কী এমন ক্ষমতা যে উড়ে বেড়ানোর ইচ্ছেটা শিকল দিয়ে আটকাবে? অলকানন্দার চোখ পাথর। সে মিনমিন কণ্ঠে বললো,
” আমি চুল কাটবো না, মা। আমি এমন সাদা শাড়ি পরবো না। না, না, না।”

সুরবালার কান অব্দি পৌঁছায় সে কথা। অতঃপর ভেসে আসে দীর্ঘশ্বাস। এ সমাজ বড্ড কঠিন যে। বিধবার ইচ্ছে এত সহজে যে এ সমাজ মানবে না। যু দ্ধ করতে হবে তারজন্য অনেক। ছোটো অলকানন্দা পারবে তো? সংশয়ে বুক কাঁপে সুরবালার।

চলবে…..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে