#গল্পঃ অর্ধের অর্ধাঙ্গিনী
#লেখনিতেঃ তানজিলা খাতুন তানু
#পার্টঃ ২
পুনম আর সুতপা তারপরে আর একটা কথাও বলেনি। সুতপা বাইরের পরিবেশ দেখতে ব্যস্ত।
পুনমঃ ওই চলে এসেছি নাম।
সুতপাঃ হুম।
সুতপা ভেতরে গিয়েই পুনমের মাকে জড়িয়ে ধরলো।
সুতপাঃ মামনি কেমন আছো?
মামনিঃ ভালো আছি আর তোকে দেখে আরো ভালো হয়ে গেলাম।
সুতপাঃ এই না হলে আমার মামনি।
মামনিঃ যা ফ্রেশ হয়ে নে।
সুতপাঃ হ্যা যাচ্ছি।
সুতপা পুনমের রুমে ঢুকে দেখলো বিছানায় গায়ে কম্বল দিয়ে শুয়ে আছে পুনম।
সুতপাঃ ওহ দি তুমি ওহ না,এসেই শুয়ে পড়েছো,ওঠো।
সুতপা পুনমের গায়ের উপর শুয়ে বললো।তখনি একটা কন্ঠস্বর ভেসে আসলোঃ কে?
সুতপাঃ ওহ দি তোমার গলা কবে থেকে ছেলেদের মতো হয়ে গেলো।
সুতপা পুনমের উপর থেকে উঠে মেঝেতে দাঁড়ালো।তখনি কম্বলের নিচে থেকে বেড়িয়ে আসলো একজন ছেলে। সুতপা ছেলেটাকে দেখে হা করে তাকিয়ে আছে।
অর্ধঃ এই মেয়ে তুমি কে?
সুতপাঃ আপনি কে,নিশ্চয় চোর আপনি। ওহ দি এসে দেখো তোমার ঘরে তোর এসেছে।
সুতপা চেঁচামেচি করতে লাগলো। অর্ধ কোনো রকম উপায় না পেয়ে সুতপার মুখটা চেপে ধরলো।সুতপা গোঁ গোঁ করতে লাগলো।
অর্ধঃ এই মেয়ে চুপ করো। আমি চোর নয় আমি এই বাড়ির ছেলে অর্ধ।
সুতপা অর্ধেন্দুর কথা শুনে ওর দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললোঃ আজকে তোমাকে পেয়েছি বাবা তোমার তো বারোটা বাজাবোই আমি।
সুতপা একটা বাঁকা হাসি দিয়ে,অর্ধের পায়ে পা দিয়ে দিলো।
অর্ধঃ আ।
অর্ধ সুতপাকে ছেড়ে দিলো। সুতপা হাঁপাচ্ছে।
অর্ধঃ এই মেয়ে কি হলো এটা তুমি আমার পায়ে পা তুলে দিলে কেন?
সুতপাঃ বাবা রে আপনি আমাকে মেরে ফেলার প্ল্যান করেছেন আর আমি মরে যাবো এমনি এমনি নাকি।
অর্ধ হা করে তাকিয়ে আছে সুতপার দিকে।ওই মেয়ের কি মাথার সব তাঁর কাটা নাকি।
অর্ধঃ আমি তোমাকে কেন,মেরে ফেলতে চাইবো।
সুতপাঃ আমি কি জানি কিন্তু আপনি যে এই বাড়ির ছেলে আমি সেটা কেন বিশ্বাস করবো।
অর্ধঃ আমি কে সেটার প্রমান আমি তোমাকে দেবো না কিন্তু তুমি কে?
সুতপাঃ আমিও আমার পরিচয় আপনাকে দেবো না।
অর্ধঃ মানে কি আমার বাড়ি আর আমাকে পরিচয় দেবেন না।
সুতপাঃ না নিচে এই বাড়ির মালকিন আছে ওনার থেকে আমার পরিচয়টা জেনে নিন।
অর্ধ কিছু বলার আগেই সুতপা ওয়াশরুমে চলে যায়।অর্ধ হা করে তাকিয়ে থাকে।
অর্ধ রাগে গজগজ করতে করতে নীচে এসে ওর মাকে বললোঃ মা ওই মেয়েটা কে?
অর্ধের মা ঃ কে মেয়ে
অর্ধঃ দিয়ের ঘরে যে
মাঃ ও ওটা তো সুতপা তোর আন্টির মেয়ে।
অর্ধ আর কিছুই বললো না। অর্ধ সুতপা নামের সাথে আগে থেকেই পরিচিত,ওর মা সুতপা বলতে একেবারে পাগল। অর্ধ সুতপাকে আগে দেখেনি। আর প্রথম দেখাতেই ঝগড়া। সুতপার ছটফটে স্বভাবের জন্য অর্ধ ওকে পছন্দ করে না।
সুতপার বাস্তবে ফিরে আসলো পুনমের ডাকে।
পুনমঃ কিরে কি ভাবছিস।
সুতপাঃ কিছু না।
পুনমঃ বলছি ভাইয়ের কাছে যাবি না আজকে আজকে তোদের কাল রাত্রি।
সুতপা মুখ বাঁকিয়ে বললো ঃ আমার ঠ্যাকা পড়েছে ওর কাছে যাবার।
পুনম হাসলো কিছু বললো না।
সুতপাঃ দি আমি তোমার কাছেই থাকবো। আমি ওই গুন্ডার কাছে যাবো না।
পুনমঃ তোকে যেতে হবে না। চিন্তা করিস না।
সুতপাঃ হুম।
অন্যদিকে…..
– এটা হতে পারে না।আমার এতদিনের প্ল্যান শেষ হয়ে যেতে পারে না। অর্ধের অর্ধাঙ্গিনী সুতপা হতে পারে না। সূতপা তো অর্ধের থেকে আলাদা করতে হবেই নাহলে আমি আমার সব স্বপ্ন পূরন করবো কিভাবে?সরি সুতপা তুমি তো আমার খেলার মাঝে ছিলে না, বিয়েটা করেই তো তুমি আমার খেলার পথে বাঁধা হয়ে গেলে। তোমাকে দিয়েই আমি আমার খেলা খেলবো।
অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো।
পরেরদিন…..
আজকে সুতপা আর অর্ধেন্দুর ভাতকাপড় আর রাতে ফুলসজ্জা। হঠাৎ করে বিয়ে হওয়ায় বৌভাত এখন হবে না।
পুনম সুতপাকে সুন্দর করে সাজিয়ে দিয়ে। বসার ঘরে নিয়ে আসলো।
মাঃ অর্ধ বাবা সুতপার হাতে ভাতের থালাটা নিয়ে ওর ভাত কাপড়ের দায়িত্বটা নে।
অর্ধ সুতপার হাতে দিয়ে বললোঃ আজ থেকে তোমার ভাত কাপড়ের দায়িত্ব আমার।
সুতপা অর্ধেন্দুর দিকে তাকিয়ে একটা ভেংচি দিলো।অর্ধ রাগি চোখে ওর দিকে তাকালো,সুতপা সেদিকে পাত্তা না দিয়ে ভাব দেখিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো।
ভাত কাপড়ের অনুষ্ঠান শেষ করে সুতপা যেতে গেলেই অর্ধ ওকে টেনে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো।
সুতপাঃ এটা কি হচ্ছে
অর্ধঃ তখন ভেংচি কাটলে কেন?
সুতপাঃ আমার মুখ আমি কি করবো সেটা কি আপনি বলবেন নাকি,ছাড়ুন আমাকে
অর্ধঃ আমার হাত আমি কি করবো সেটা কি তোমার কথা শুনবো কেন
সুতপাঃ আরে বাবা আমাকে ধরে আছেন সেটা কি আমি বলবো না।
অর্ধঃনা কারন ..
অর্ধ বলতে গিয়ে চুপ করে যায়, সুতপা ভ্রু কুঁচকে বললোঃ কি কারন বলুন।
অর্ধঃ কিছু না।
অর্ধ চলে যায় সুতপা অর্ধেন্দুর কাজ কর্ম কিছুই বুঝতে পারলো না।
রাতে…
পুনম সুতপাকে সাজাচ্ছে।
সুতপাঃ আমি তোমার গুন্ডা ভাইয়ের সাথে থাকবো না।
পুনমঃ বোন এমন করিস না। ওহ তোর বর আর আজকের পর ওর সাথেই তোকে থাকতে হবে।
সুতপাঃ আমি পারবো না।
পুনমঃ কিছু করার নেয়।
সুতপাঃ ধ্যাত।
সুতপা কে পুনম অর্ধের ঘরে বসিয়ে দিয়ে আসে।
পুনমঃ চুপচাপ বসে থাকবি আর ভাইকে দুধ আর পানটা খাইয়ে দিবি।
সুতপাঃ আচ্ছা।
পুনম চলে যায়, সুতপা দুধের দিকে তাকিয়ে বাঁকা হাসলো। কিছুক্ষন পর অর্ধ রুমে আসলো। দেখলো সুতপা খাটে বসে পা দোলাচ্ছে।
অর্ধঃ অদ্ভুত মেয়ে একটা।( বিরবির করে)
সুতপাঃ কিছু বললেন আমাকে
অর্ধঃনা তোমাকে কিছু বলার ইচ্ছা নেয় আমার
সুতপা ঃ আমারও কিছু শোনার ইচ্ছা নেয়
অর্ধঃ হুম
সুতপাঃ ওইখানে দুধ আর পান আছে খেয়ে আমাকে উদ্ধার করুন
অর্ধঃকেন
সুতপাঃ না খেলে দি আমাকে ধরবে আমি আপনাকে খাওয়াই নি। চুপ করে খেয়ে নিন
অর্ধঃ আচ্ছা।
অর্ধ দুধটা গালে দিতেই চোখ বড়ো বড়ো হয়ে গেলো
#চলবে….