অভিমান হাজারো পর্বঃ২৪

0
1958

অভিমান হাজারো পর্বঃ২৪
আফসানা মিমি

—“অতশী, তুমি একটা ব্যাপার লক্ষ্য করেছো?”
ড্রয়িংরুমে বসে অদিতি আর অতশী মিলে টুকটাক কথা বলছিল। তার মাঝেই হঠাৎ অদিতি অতশীকে প্রশ্নটা করলো।
জোড়া ভ্রু সামান্য কুঞ্চিত করে অতশী জানতে চায়লো
—“কিসের কথা বলছো ভাবী?”
—“লাবণ্যর কথা বলছি।”
অতশীও সাথে তাল মেলায়
—“হ্যাঁ, আমিও একটা ব্যাপার খেয়াল করেছি লাবণ্য আগের চেয়ে কিছুটা পরিবর্তন হয়ে গেছে। বলতে পারো আগুনে হঠাৎ করেই পানি পড়লে যেমন তৎক্ষনাৎ নিভে যায়। তেমনি মনে হচ্ছে লাবণ্যর সাথেও এমন কিছু হয়েছে যার জন্য ওর এতো পরিবর্তন। কিন্তু কারণটা ধরতে পারছি না।”
—“ঠিকই বলেছো। আগে তো খোঁচা দিয়ে কথা না বললে পেটের ভাতই হজম হতো না যেন। আর এখন প্রয়োজনীয় কথাটাও বলে না। সারাক্ষণই কেমন গম্ভীর হয়ে থাকে আর কী যেন ভাবে। আল্লাহ্ই ভালো জানেন এমন পরিবর্তনের কারণ।” চোখ মটকে বলে অদিতি।

তাদের কথার মাঝখানে ইয়াসমিন বেগম এসে উপস্থিত হন। সরাসরি অদিতিকে প্রশ্ন করেন
—“তোমার না আজ ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কথা চেকাপ করার জন্য? কখন যাবা?”
—“আপনার ছেলে বললো আমি গাড়ি নিয়ে হাসপাতাল চলে যেতে। ও নাকি অফিস থেকে ডিরেক্ট সেখানেই আসবে। ভাবছি একটু পরই রওয়ানা দিব।”
—“তোমাকে সাথে করে নিয়ে গেলে ভালো হতো না! আসলেই আমার ছেলেটার কোন কাণ্ডজ্ঞান নেই। তোমাকে কিভাবে বলে একা গাড়ি নিয়ে চলে যেতে? বাপ হচ্ছে অথচ কোন দায়িত্বই নেই বউ বাচ্চার প্রতি।”

বেশ রেগেই কথাগুলো বলেন ইয়াসমিন বেগম। উনার বড় ছেলেটা কেমন যেন একগুঁয়ের মতো। ঠিকঠাক ভাবে কোন কাজই করতে জানে না। আরে বউ প্রেগন্যান্ট। অথচ কী সুন্দর বলছে গাড়ি নিয়ে চলে যেতে, সে সেখানে আসবে অফিস থেকে। আজকাল রাস্তাঘাটের যা অবস্থা! কতশত এক্সিডেন্ট হয়! সেদিকে ছেলের খেয়াল নেই। অথচ স্পন্দন আদিলের থেকে সম্পূর্ণই আলাদা। বউয়ের বেশ কেয়ার করতে জানে সে। অতশীর প্রেগনেন্সির খবরটা জানার পর থেকে আদর যত্নের কোন ত্রুটি সে রাখেনি। এ সময়টাতে স্বামীর যত্ন, ভালবাসার দরকার পড়ে বেশি। মেয়েরা তা-ই চায় বেশি বেশি। কিন্তু আদিলের যেন সেদিকে কোন হেলদোলই নেই। বিয়ের এতোগুলো দিন পর প্রথম সন্তান আসতে চলেছে। কই আনন্দের সাথে বউয়ের সেবাযত্ন করবে! তা না করে করছে উল্টোটা। কথাগুলো ভাবতেই বিরক্তিতে উনার কপাল কুঁচকে আসে।
অদিতি সাফাইয়ের সুরে বললো
—“আসলে মা হয়েছে কী, ওর অফিসে কী একটা বিষয় নিয়ে ঝামেলা চলছে। তাই………”
তার কথার মাঝখানেই তাকে থামিয়ে শাশুড়ী বলেন
—“হয়েছে, আর সাফাই গাইতে হবে না ওর হয়ে। আমার ছেলেকে আমার চেয়ে বেশি চেনো না তুমি। এখনই তার অফিসে ঝামেলা হতে হলো! যত্তসব বাহানা!” শেষ কথাগুলো বিড়বিড় করে জপে তারপর আবার বললো “আজকে যেতে হবে না তাহলে। ওর যেদিন সময় হয়, যেদিন ঝামেলা মিটবে সেদিনই নাহয় নিয়ে যাবে। যাও রুমে গিয়ে রেস্ট নাও।” অতশীর দিকে ফিরে বললো “আর তুমি, এখানে শুধুশুধু বসে না থেকে একটু বিশ্রাম করো রুমে গিয়ে। এ অবস্থায় বেশিক্ষণ এক জায়গায় বসে থাকলে পা অবশ হয়ে আসে। যাও তোমরা রুমে বিশ্রাম নাও। বেশি নড়চড় কোরো না।” বলেই সে জায়গা থেকে প্রস্থান করলেন ইয়াসমিন বেগম।
শাশুড়ীর কথা শুনে দুই জা একবার চোখাচোখি তাকিয়ে হালকা তৃপাকির হাসি হেসে যার যার রুমে চলে যায়। শাশুড়ীর এমন আদরমাখা শাসনগুলো খুব উপভোগ করে ওরা দুজন। ওদের চেয়ে বেশি চিন্তা যেন উনারই। মাঝে মাঝে মনে হয় নিজের মা-ও বোধহয় এভাবে আদর করে শাসন করতো না। যেভাবে তাদের শাশুড়ী করেন।

এখনই জয়েন করুন আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে।
আর নিজের লেখা গল্প- কবিতা -পোস্ট করে অথবা অন্যের লেখা পড়ে গঠনমূলক সমালোচনা করে প্রতি মাসে জিতে নিন নগদ টাকা এবং বই সামগ্রী উপহার।
শুধুমাত্র আপনার লেখা মানসম্মত গল্প/কবিতাগুলোই আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। এবং সেই সাথে আপনাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরষ্কার।

গল্পপোকার এবারের আয়োজন
ধারাবাহিক গল্প প্রতিযোগিতা

◆লেখক ৬ জন পাবে ৫০০ টাকা করে মোট ৩০০০ টাকা
◆পাঠক ২ জন পাবে ৫০০ টাকা করে ১০০০ টাকা।

আমাদের গল্প পোকা ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন: https://www.facebook.com/groups/golpopoka/?ref=share

—“কিছু বলবা, মা?” ল্যাপটপে মুখ গুঁজেই মায়ের উদ্দেশ্যে প্রশ্নটা ছুড়ে দেয় সামির।
আছিয়া বেগম বেশ কিছুক্ষণ হয়েছে সামিরের রুমে এসেছে। কিভাবে কথাটা বলবেন বুঝতে পারছেন না। ছেলেকে কিছুটা ভয় পান বলা চলে।
—“না মানে… আসলে এক.. একটা কথা বলার ছিল।” মুখে কথা জড়িয়ে আসে উনার।
—“হ্যাঁ, বলো। এতো হেজিটেট ফিল করছো কেন? নির্ভয়ে বলো না!”
—“ইয়ে… বলছিলাম কী…”
—“মা যা বলতে এসেছো তা না বলে এভাবে তোতলাচ্ছো কেন?” পিছন থেকে আফরা বলে উঠে। ওকে আজ ওর মা ফোন দিয়ে এ বাসায় এনেছেন সামিরের বিয়ের ব্যাপারটা নিয়ে কথা বলতে। উনি বেশি একটা সাহস পাচ্ছেন না তাই আফরাকে ডেকে আনা।
—“কিরে আফু, মা কী বলতে এসেছে রে?” সামির আগের অবস্থায়ই বললো।
—“আম্মু একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলতে এসেছে। তাই ক্ষণিক সময়ের জন্য তোমার সকল কাজকর্ম সাইডে রাখো।” সামিরকে আদেশ করলো আফরা।
—“কী এমন ইম্পোর্টেন্ট কথা যে…….”
সামিরকে কথার মাঝখানেই থামিয়ে দিয়ে বললো
—“উফফ্ ভাইয়া! বড্ড কথা বলো তো তুমি। হাফ এন আওয়ারের জন্য তোমার রাজকার্য ভেসে যাবে না। মন দিয়ে কথা শুনো।”
—“ওকে ওকে।” ল্যাপটপ সাইডে সরিয়ে তাদের দিকে সোজা হয়ে ঘুরে বসে বললো “হ্যাঁ, এবার বল কী বলবি!”
আছিয়া বেগম কথা শুরু করলেন
—“এভাবে আর কতদিন সামির বলতে পারিস? জীবনে থিতু হতে হবে না? আফরার বিয়ে হয়ে গেছে। আমরা বুড়া বুড়ি কতদিনই বা বেঁচে থাকবো! দেখা যাবে আমাদের অবর্তমানে তুই একা ভালো নেই। আমাদের কী ভালো লাগবে এটা দেখে? তুই…..”
মা’কে হাত তুলে থামিয়ে বললো
—“এতো কথা না বলে কথার সারমর্মটুকু বললে আমার বুঝতে সুবিধা হবে। আর কিসব বলছো তুমি? হ্যাঁ? কিরে আফরা, মা এক্স্যাক্টলি কী বলতে এসেছে আমাকে?”
—“মায়ের মুখ থেকেই শুনো।”
—“আচ্ছা বলছি, তোর জন্য বিয়ের পাত্রী দেখেছি।”
—“হোয়াট?” বিস্ময়ে সামির হতবাক। “মানে কিসের বিয়ে, কার বিয়ে? এতো তাড়াতাড়ি কিসের বিয়ে মা?”
—“এতো তাড়াতাড়ি মানে? বয়সটা কী কম হয়েছে তোর? বুড়া হয়ে বিয়ে করবি তুই?”
—“মা অবুঝের মতো কথা বোলো না। কয়েকদিন পর আমার মাস্টার্স ফাইনাল এক্সাম। আর তুমি এখন এসে বিয়ে করার কথা বলছো? তোমার মাথা ঠিক আছে মা? চাকরী ছাড়া কে বিয়ে দিবে আমার কাছে? লাইফে সেটেল না হয়ে বিয়ের নাম মুখে নিব না।”
—“এখন তুই তো একটা পার্টটাইম জব করছিসই। তাছাড়া তোর বাপের কী কম ধন সম্পদ আছে যে মানুষের পায়ের কাছে পড়ে বেগার খাটনি খাটবি তুই? তোর বাপের ব্যবসাটায় বসে গেলেই তো পারিস।”
—“মা, আমি নিজেকে নিজে গড়তে চাই। প্লিজ এতে ইন্টারফেয়ার কোরো না অন্তত!” সামিরকে হতাশ দেখালো কিছুটা।
—“তা বাপু তুমি নিজেকে নিজে গড়ো না! ধরে রেখেছে কে তোমায়? শুধু বলছি বিয়েটা করে যা খুশি তা করো গে গিয়ে। কেউ তোমাকে বাধা দেবে না।”

সামির বুঝলো অবস্থা বেগতিক। মা রেগে গেলেই এভাবে কথা বলে। কী বলা যায় এখন! মনেনে মনে ভাবতে লাগলো সে।
আফরা বললো
—“ভাইয়া, মায়ের কথাটা মেনে নাও। দ্যাখো আম্মু কিন্তু বাসায় একা থাকে। আব্বু কাজের সূত্রে বাহিরে থাকে। তুমিও লেখাপড়া, চাকরী নিয়ে ভালোই ব্যস্ত থাকো। বাসায় কখনো কোন অঘটন ঘটে গেলেও টের পাবা না। আর আম্মুর বয়স বাড়ছে আস্তে আস্তে। কখন কী হয়ে যায় বলা যায় না। এমনিতেই তোমার চিন্তায় তাঁদের ঘুম আসে না। সন্তান হিসেবে তোমার কী উচিৎ না তাঁদের দুশ্চিন্তা থেকে রেহাই দেওয়া? তুমি বিয়ে করলে যদি একটু নিশ্চিন্ত থাকতে পারে তাহলে করে নাও না বিয়েটা। একদিন না একদিন তো করতেই হবে তাই না? তাহলে এখনই কেন নয় সেটা? আর অমত কোরো না ভাইয়া। প্লিজ আম্মুর কথাটা মেনে নাও।”

সামিরকে এ পর্যায়ে চিন্তাগ্রস্ত দেখালো কিছুটা। আফরা ঠিক কথা-ই বলেছে। কিন্তু বলতেই তো আর হলো না যে বিয়ে করে নাও। যেখানে তার মনের রাজ্যে পুরোটা জুড়ে একজন স্থায়ীভাবে ঘাপটি মেরে বসে আছে, তাকে ছেড়ে অন্যকারো কথা ভাবতেও পারছে না সে। আবার তার প্রতি কিছুটা রাগ, কিছুটা অভিমানও আছে ওর। কী করবে সে এখন? পুরোপুরি দ্বিধাগ্রস্ত লাগছে তাকে।
—“আমাকে আর কিছুদিন সময় দেয়া যায় না?” সামিরকে অসহায় দেখালো কিছুটা।
—“হ্যাঁ হ্যাঁ, আমরা বুড়া বুড়ি মরে গেলে পরে তুই বিয়ে করিস। আমাদের কথার তো কোন দাম নেই তোর কাছে। আমাদের কথা শুনবি কেন? যা, তোর যা ইচ্ছা কর কিছু বলবো আর আমরা।” কান্নার ভান করে কথাগুলো বলেই যাওয়ার জন্য পা বাড়িয়েছিল। সামিরের কথা শুনে থেমে গেল।
—“ঠিক আছে, আমি বিয়ে করলে যদি তোমরা খুশি হও তবে তা-ই হোক। মেয়ে দেখা শুরু করে দাও তোমরা। মেয়ে পছন্দ হলে আমাকে শুধু বলবে বিয়ের দিন গিয়ে কবুল বলে বউ নিয়ে এসে তোমার মনোবাঞ্ছা পূরণ করবো।” হাল ছেড়ে দিয়ে বললো সামির। মেয়ে দেখতে দেখতেও তো বেশ কয়েকদিন চলে যাবে। ততদিন আর ঘ্যানঘ্যান শুনতে হবে না বিয়ে করার জন্য। কয়েকদিন শান্তিতে থাকতে পারবে। সে কথা ভেবেই বিয়ের জন্য রাজী হয়ে গেল সামির। কিন্তু সে তো আর জানতো না যে তার জন্য এতোবড় চমক অপেক্ষা করছিল।

স্পন্দনের বুকে মাথা রেখে তার নগ্ন বুকে আঁকিবুকি করছে অতশী। চোখ বন্ধ করে স্পন্দন অতশীর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। আজকাল অতশীকে একদম কাছ ছাড়া করতে ইচ্ছে করে না। মনে হয় যেন কাছ ছাড়া করলেই হারিয়ে ফেলবে তার প্রিয়তমাকে। অতশীরও আজকাল স্পন্দনকে ছাড়া আর কিছুই ভালো লাগে না। শুধু মনে হয়, ইশ! বিধাতা আর কিছুকাল সময় তাকে কেন দিলো না স্পন্দনের সানিধ্যে কাটানোর জন্য! একসময় মাথা তুলে স্পন্দনের মুখের দিকে তাকিয়ে তাকে ডাকলো
—“স্পন্দন?”
—“হ্যাঁ বলো।”
—“একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?”
—“হ্যাঁ করো না! পারমিশন নেওয়ার কী আছে?” আশ্বস্ত করে বললো অতশীকে।
—“তোমার ছেলে চাই না মেয়ে চাই?”
চোখ খুলে মুচকি হেসে অতশীর দিকে তাকিয়ে বললো
—“তোমার কী চাই?” প্রশ্নের উত্তরে প্রশ্ন স্পন্দনের।
—“উফফ্! আমি তোমার কাছে জানতে চাইলাম। আর তুমি কিনা পাল্টা প্রশ্ন করছো আমাকে! এটা কিন্তু ঠিক না।” গাল ফুলিয়ে বললো অতশী।
অতশীর চুলের ওপর চুমু দিয়ে বললো
—“লক্ষ্মীটি, আল্লাহ্ যা দেয় তাতেই আমি আমি খুশি। এখানে আমার চাওয়ার কিছু নেই।” বেদনাময় হাসি হেসে বললো স্পন্দন। দিন যত গড়াচ্ছে ততই তার ভয় বাড়ছে।
—“তাই বলে….”
ঠোঁটে আঙুল দিয়ে থামিয়ে
—“নো মোর ওয়ার্ডস্। চুপচাপ শুয়ে থাকো।”

বেশ কিছুক্ষণ পর উসখুস করে অতশী আবারো বললো
—“আরেকটা কথা বলবো?”
—“বলো।” চোখ বন্ধাবস্থায়ই জবাব দিল স্পন্দন।
—“তোমার এই বুকে এতো শান্তি কেন বলতে পারো স্পন্দন? আচ্ছা আমার মৃত্যুর সময় তোমার এই বুকটা একটু ধার দিবে কিছু সময়ের জন্য?”
অতশীর কথাটা শুনে ঝট করে চোখটা খুলে রক্তচক্ষু নিয়ে তার দিকে তাকায় স্পন্দন। অতশী ভয় পেয়ে যায় স্পন্দনের এমন চাহনি দেখে। তাই মিনমিনিয়ে বলতে থাকে
—“না মানে শুনেছি যে মৃত্যুর সময় মানুষের অনেক কষ্ট হয়। তাই বলছিলাম যে তোমার বুকে তো অনেক শান্তি তাই মৃত্যুর সময় আমার কষ্টটা একটু কম হবে। তোমার বুকে মাথা রেখে মরলে কোন কষ্টই হবে না আমার।”

ভয়ে ভয়ে স্পন্দনের দিকে তাকিয়ে দেখে আগের চেয়ে দ্বিগুণ রাগান্বিত হয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে। স্পন্দন তাকে বুক থেকে একপ্রকার ঝাড়া দিয়ে সরিয়ে দরজায় সজোরে একটা লাথি মেরে হনহন করে রুম থেকে বেড়িয়ে যায়। স্পন্দন বুঝে পায় না মেয়েটা তাকে বারবার এসব বলে কষ্ট কেন দিচ্ছে? প্রতিশোধ নিচ্ছে সে? তার মৃত্যুর কথা শুনলেই যে কলিজায় মোচড় দিয়ে উঠে তা কি অতশী বুঝে না?
‘বুঝেও কেন এমন অবুঝের মতো আচরণ করো অতশী? কেন একটু বুঝতে পারো না আমাকে? আমার ক্ষতবিক্ষত রক্তান্ত কলিজাটা তোমার হাতে ধরিয়ে দিলে তবে শান্তি হবে তোমার? তবে একটু বুঝতে পারবে আমাকে? এই বুকটা বিদীর্ণ করে যদি দেখাতে পারতাম তোমাকে কতটা নিঃসঙ্গ, অসহায় আমি তোমাকে ছাড়া তবে স্বার্থক হতো আমার ভালবাসা। তোমাকে ছাড়া যে আমার চলবে না অতশী। কেন এভাবে একলা ফেলে চলে যাবে আমাকে? নিয়তি এমন খেলা কেন খেললো আমার অনুভূতিগুলো নিয়ে! কেন এই অভাগার কপালে একটুখানি সুখ লেখা নেই! এ জীবনে বোধহয় আর সুখের দেখা পাবো না, যে জীবনে তুমি নেই। তবে পরজন্ম বলে যদি কিছু থেকে থাকে, তাহলে তোমাকেই আমি চাইবো অতশী। তোমাকেই আমি চাইবো বারংবার।’

চলবে……..

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে