অবুঝ পাড়ার বাড়ি পর্ব-০৭

0
2

#অবুঝ_পাড়ার_বাড়ি
#হুমায়রা
#পর্বঃ০৭

সাদিকের আসার খবরে সিদ্দিকা পরদিন সকালেই চলে আসলো। রিক্সার আধঘন্টার দূরত্বে থাকে সে। এসেই সাদিককে পাকড়াও করে ঘরে দরজা আটকে দিলো। ভাতিজার সাথে একান্ত গোপনে কথা সারবে। ফরিদার কান পাতার স্বভাব নেই। ছেলে অহনার হাতে খায় না বলে নিজেই রান্নার দ্বায়িত্ব নিলো। অহনা তাতে টুকটাক সাহায্য করতে লাগলো কেবল।
সিদ্দিকা সাদিকের শুকনো মলিন মুখের দিকে তাকাল। এমন শুকনোমুখ এর আগে কেবল অ্যাডমিশন এর রেজাল্টের দিন দেখেছিলো। পছন্দের ভার্সিটিতে যখন চান্স হয়নি তখন। সেই ক্ষোভে ইঞ্জিনিয়ারিংই পড়লো না। অন্য ভার্সিটিতে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে ভর্তি হয়ে গেলো। দীর্ঘশ্বাস ফেলে জেদী ভাতিজার পিঠে হাত বুলিয়ে বলল,
–অহনাকে পছন্দ হয় না?

–ফুপু প্লিজ!

সাদিকের গলার স্বর কাতর শোনালো। সিদ্দিকা চাপা গলায় বলল,
–একটা মেয়ে নিজের সব কিছু ছেড়ে একা তোর হাত ধরে চলে এসেছে আর তুই এই ব্যবহার করছিস? ও কি এই ব্যবহার পাওয়ার যোগ্য?

সাদিক ছোট করে বলল,
–ও কি ব্যবহার পাওয়ার যোগ্য তা আমি কিভাবে জানবো?

সিদ্দিকা এর আগে ফোনেও সাদিককে অনেক বুঝিয়েছে। এখন ওর কথা শুনে মনে হচ্ছে আগের সব বুঝানো বৃথা। যখন বুঝায় তখন বোঝে আর এরপর আবার সব আগেরমতোই। হাল ছেড়ে দেওয়ার মতো করে বলল,
–জানিস না তো জানার চেষ্টা কর। কতদিন আর এভাবে চলবে? সব কিছুর একটা শেষ আছে।

সাদিক সব জানে, বোঝে কিন্তু মানতে পারে না। সিদ্দিকা মলিন হেসে বলল,
–তোর সাথে আমরা ভুল করতে যাচ্ছিলাম। উপরওয়ালা আমাদের ভুলটা হতে দিলেন না। চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন আমরা কত বড় ভুল জুটির চিন্তা করছিলাম। তোদের জোর উপরওয়ালা বানিয়েছেন। এমন করলে তিনি নারাজ হবেন। এমন করিস না সাদিক, ভাগ্য মেনে নে।

সাদিক কিছুই বললো না। মনের মাঝে ঢুকে পড়া কাঁটাটা আরো গভীর ভাবে বিঁধে গেলো শুধু। ফুপু ডেকে উঠলো,
–সাদিক

–জ্বি ফুপু?

–মেয়েটার সাথে আর খারাপ ব্যবহার করিস না। ওর ফ্যামিলির কথা শুনে খুব খারাপ লাগছে। বাবা, মা, ভাই, বোন সবাইকে হারিয়ে এখানে এসেছে তোর ভরসায়, তোর হাত ধরে। ওর মামা বাড়ির সবাই তোর সাথে খারাপ করলেও ওর তো কোন দোষ নেই।

মামা বাড়ির দোষ! এখানে তো সাদিক চরমভাবে ঠকেছে। বন্ধু হারিয়েছে, ভালোবাসা হারিয়েছে, সম্মান হারিয়েছে। বোনের বিয়ে বলে দাওয়াত দিতে বাড়ি নিয়ে গেছিলো অহনার মামাতো ভাই। আর এরপর বদনাম করে রটিয়েছে, সাদিকের খারাপ নজর অহনার দিকে আছে। জোরজবরদস্তি করতে চেয়েছিলো মেয়েটার সাথে। অথচ এই অহনাকে সে কোনকালেই দেখেনি। লজ্জায় অপমানে চলে আসতে চাইলে সবাই একপ্রকার ধরে বেঁধেই তাদের বিয়ে দিয়ে দেয়। হিংসা মানুষকে কোথা থেকে কোথায় নিয়ে যায়। বন্ধু যে মনে মনে ওকে এতো হিংসা করত তা কি কোনদিন জেনেছিলো! জানলে কি আর বিশ্বাস করতো!

–আমি কাউকে দোষ দিচ্ছি না ফুপু।

সাদিক উদাস ভাবে উত্তর দিলো৷ সিদ্দিকা ধীর গলায় বলল,
–বিয়েটা মেনে নে।

–নিয়েছি। সব কিছুই মেনে নিয়েছি।

সাদিক সবটাই মেনে নিয়েছে। মেনে নিয়েছে তার বিয়ে হয়েছে। তার জীবনে মৌলির বদলে অন্য কেউ এসেছে। চিরজীবনের মতো ভালোবাসার মানুষকে হারিয়ে ফেলেছে। সবটাই তো মেনেছে। আর কি বাকি আছে!

–আমাদের সাদিক বুদ্ধিমান ছেলে। কারো উপর অন্যায় করবে না বলেই বিশ্বাস।

সাদিক হালকা হাসলো। নিজের কষ্ট গোপন করে অভিনয়ের সিদ্ধান্ত অনেক আগেই নিয়েছে। আজ তার উপর মোহর পরলো। ফুপু আরো অনেক কথা বললো। সাদিক শুধু হু হা তে জবাব দিয়ে কথা শেষ করলো। কথাবার্তা শেষ হলেও সিদ্দিকাকে ফরিদা যেতে দিলো না। দুপুরের খাবার তাদের সাথেই খেতে বলল। সিদ্দিকা আগ্রহভরে খেতে বসলো। সাথে টেনে নিলো সাদিককেও। অহনাকে ডেকে বলল,
–নতুন বউ খাবার পরিবেশন করে দাও। আজ তোমার হাতে খাবো।

অহনা ফরিদার দিকে একপলক তাকালো। ফরিদা অন্যদিকে তাকিয়ে রাগ চাপার চেষ্টা করছে। অহনা ঠোঁট কামড়ে সাহস সঞ্চয় করে কাঁপা হাতে পরিবেশন করতে যেতেই সাদিক উঠে দাঁড়ালো। সিদ্দিকা কিছু বলার আগেই বড় বড় পা ফেলে বাইরে চলে গেলো। ফরিদ্দা জ্বলন্ত চোখে অহনার দিকে তাকিয়ে বলল,
–তোমার এই সুন্দর মুখটা নিয়ে আমার ছেলের সামনে না আসলেই কি চলে না?

স্পষ্ট ঠেস দিয়ে কথা বলল। অহনা মুখ নিচু করে বারবার পলক ফেলে কান্না আটকানোর চেষ্টা চালালো। আসতে তো চায়নি। টেনে আনা হয়েছে। সে কথা কে বলবে! সিদ্দিকা খাবার রেখে উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
–আমি চলে যাচ্ছি। আপনার ছেলেকে বলবেন, যেদিন বউকে যথাযথ সম্মান দেবে সেইদিনই যেনো আমাকে ফুপু বলে মানে।

বলে আর এক মূহুর্ত দাঁড়ালো না। ফরিদা অহনার উপর ফেঁটে পরলো। গর্জে উঠে বলল,
–খাও শান্তিতে। কারো শান্তিতে খাওয়া তো পছন্দ হয় না। অলক্ষী বাড়িতে এসে গেছে। শান্তি কি আর থাকবে!

বিড়বিড় করে বলে প্লেট ঠেলে উঠে ঘরে চলে গেলো। অহনা নিরবে খাবার ঢেকে রেখে স্টোররুমে গেলো।

বাইরে জোরে জোরে বাজ পরার শব্দে অহনার মনে পরলো, ছাদ জামাকাপড় মেলা আছে। সেগুলো আনতে হবে। এক দৌড়ে ছাদে গেলো সে। ফরিদার দুপুরে ঘুমানোর অভ্যাস। নাহলে ওকে জীবনেও বাইরে বের হতে দিতো না। বাড়ির মালিক বলে কেউ আগ্রহ দেখানোর সাহস না করলেও যদি হঠাৎ প্রশ্ন করে বসে তখন মুশকিল হয়ে যাবে। তাই ওকে বের হতে দেয় না।
ছাদ থেকে জামাকাপড় আনতে আনতে ভিজে গেলো অহনা। জামাকাপড় এনে ফরিদার ঘরে তার কাপড় রেখে সাদিকের ঘরে গেলো। সাদিক বাড়ি নেই দেখেই এই সাহস করলো। ইচ্ছে ছিলো জামাকাপড় রেখে চলে যাবে কিন্তু ভাজ করে না গেলে যদি আবার রাগে তখন! তাই দ্রুত হাতে ভাজ করতে লাগলো। তার নিজের শরীর ভিজে একাকার। শাড়ি ভিজে একদম শরীরের সাথে লেপ্টে আছে। সেদিকে তার ধ্যান নেই। বর্তমানে বকা খাওয়ার হাত থেকে বাঁচাই তার একমাত্র উদ্দেশ্য।
হঠাৎই দরজা লাগানোর শব্দে দরজার দিকে তাকাতেই ভয়ের শিহরণ খেলে গেলো শরীর জুড়ে। সাদিক কখন এসেছে জানা নেই। চোখ টকটকে লাল হয়ে আছে৷ শরীর ঘামছে সমানে। অহনা ঢোক গিলে হাতের কাজ ফেলেই চলে যেতে চাইলো। হাত চেপে বাঁধা দিলো সাদিক। এরপর অনেক এগিয়ে আসলো। যতটা এগিয়ে আসলে নিশ্বাস ভারী হয়ে আসে ঠিক ততটা। অহনা ভয়ে থরথর করে কাঁপতে লাগলো। সাদিকের চোখ টকটকে লাল। এতো রেগে আছে কেন? মনের মাঝে ভয় এসে আঁকিবুঁকি করতে লাগলো। এবারে মারবে নাকি? এটাই বা বাদ রাখবে কেন!

সাদিক মারলো না তবে এমন কিছু করলো যেটাতে অহনার শরীর বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে গেলো। এটা তো মারার থেকেও অনেক বেশি! ঠোঁটের জ্বলন সহ্য করতে না করতেই মানুষটার অবাধ্য বিচরণ তাকে অদ্ভুত এক সুখানূভুতির শিখরে নিয়ে গেলো। শরীরের প্রতিটি স্নায়ুতে অদৃশ্য কাঁপন ছড়িয়ে পড়লো মূহুর্তেই। হৃদস্পন্দন থেমে থেমে যেতে লাগলো তাদের। মিলনের এই সন্ধিক্ষণে পরস্পরের নিঃশ্বাস এক হয়ে দুরত্ব ঘুচিয়ে ফেললো খুব শীগ্রই। অদৃশ্য এই আগুনে দুজনেই সমান তালে পুড়তে লাগলো।

বিকালে ঘুম ভাঙতেই নিজেকে সাদিকের রুমে আবিষ্কার করলো। সাদিক ঘরে নেই দেখেও লজ্জায় লাল টুকটুকে হয়ে গেলো সে। তাহলে কি অবশেষে স্বামী, সংসারের সুখ ওর কপালে জুটবে? আশায় বুক বেঁধে রাখলো। পূর্বের অসম্মান ভুলে টুলে রাতে স্বামীর জন্য মন ভরে রান্না করলো। কিন্তু সাদিক ফিরলো না। ফরিদাকেও চুপচাপ দেখলো। রাতে শোবার সময় সাদিকের ঘরে গিয়ে দেখলো তার ব্যাগও নেই। পালালো তবে! স্থির হলো সে। আর কত অপমান সইতে হবে! কি করে ভেবেছিলো, যাকে দেখলে ঘৃণা লাগে, যার হাতের ছোয়ায় বানানো খাবার ঘৃণা করে তার শরীরে বিচরণ করে নিজেকে অপবিত্র মনে করবে না! সবটাই তার কল্পনা, মোহ! সব কাটুক, কাটুক, কাটুক।

****
সাদিক বাইরে গেছিলো। ফিরে এলো বড় দুটো ফুলের বুকে নিয়ে। একটা অহনার হাতে দিয়ে আরেকটা মাহদীর হাতে দিয়ে বলল,
–এর মাঝের একটা ফুল আমাকে দাও। কাল কিন্তু দাও নি। আমি খুব কষ্ট পেয়েছিলাম।

মাহাদী কি মনে করে ছোট ছোট হাত দিয়ে ফুল ছিড়ে সাদিকের হাতে তুলে দিতেই মিষ্টি করে হাসলো সাদিক। এরপর ছেলের কপালে চুমু দিয়ে ঘরে গেলো। মাহাদী নিজের মনে খেলছিলো। সাদিক ওকে পাশ কাঁটিয়ে অহনাকে খুঁজতে রান্নাঘরে যেতেই থমকে গেলো। অহনা বেকিং করছে৷ খুব মনোযোগ দিয়ে কেক বানাচ্ছে। সাদিক ভেতরে এসে ঘাড় কাত করে অনেকক্ষণ দেখে বলল,
–এতো কেক বানিয়ে কি করবে? দোকান দেবে নাকি?

–দোকানে দেবো।

অহনা ছোট করে উত্তর দিতেই সাদিক কপাল কুঁচকে বলল,
–মানে?

–আমার বানানো কেক হোটেলে যায়। ওরা এগুলো প্রসেস করে বিক্রি করে।

–আর এগুলো করেই সংসার চালাও, তাইতো?

অহনা নিরবে মাথা নাড়িয়ে সায় জানালো। সাদিক কিচেন কেবিনের উপর উঠে বসে একটা কাপকেক হাতে নিয়ে বলল,
–তুমি পুরো লসে ডুবে আছো। আমার কাছে থাকলে এতোদিনে নিজের বেকারি খুলতে পারতে। কার হাত ধরে যে ঘর ছেড়েছো! পুরো লস প্রজেক্ট!

অহনার নজর সাদিকের হাতে ধরা কাপকেকের উপর। এসব উল্টাপাল্টা কথায় কান দেয়নি মোটেও। সাদিক গভীর দৃষ্টিতে কাপকেক উলটে পালটে, গন্ধ শুকে দেখছে। অহনা চাপা গলায় বলল,
–সব গোনা কেক। নষ্ট করবেন না প্লিজ। এক ঘন্টার মাঝে ডেলিভারি দিতে হবে।

সাদিক কাঁধ নাচিয়ে বলল,
—আগে দেখি কেমন কেক বানাও। নাহলে কাস্টমারের কাছে মান থাকবে না।

বলেই টুপ করে খেয়ে ফেললো। মাথা নেড়ে বলল,
–হুম, মজা আছে। সব কি একই ফ্লেভারের?

অহনা উত্তর দিলো না। এরপরের ঘটনা সে বুঝে গেছে। সাদিক খুঁজে খুঁজে আলাদা আলাদা ফ্লেভারের কয়েকপিস খেয়ে ফেলল। নিজে খেয়ে শান্তি না পেয়ে অহনার মুখেও ঢুকিয়ে দিলো। এরপর মাহাদীর জন্য গোটা তিনেক নিয়ে তবেই রান্নাঘর ছাড়লো।
অহনা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। আর মাত্র আড়াইমাস!
অতিরিক্ত আরো কেক বানানোয় কাজ বেড়ে গেলো। ডিম না থাকায় ডিম কিনে আনতে হলো। এরপর দেখে ভ্যানিলা আর স্ট্রবেরি এসেন্স শেষ। আবার সেগুলো আনতে হলো৷ এসব করতে করতে দুপুর হয়ে গেলো। এরপর কেক ডেলিভারি দিয়ে তবেই ছুটি। গতরাতের বৃষ্টিতে জমে যাওয়া কাঁদায় আচ্ছামতো খেলেছে মাহাদী। উষ্কানি দিয়েছে সাদিক৷ মাহাদীকে সেখান থেকে তুলে গোসলে নিয়ে গেলো। ছেলেকে গোসল করাতে করাতে নিজেও অর্ধেক ভিজে গেলো। গোসল শেষে অর্ধভেজা শরীরে ছেলের হাত ধরে বাইরে আসতেই সাদিকের দৃষ্টিতে পরে গেলো। সামনের মানুষটার বুনো দৃষ্টি তার ভেজা অঙ্গে বুঝে অস্বস্তিতে গাট হয়ে গেলো। ছেলের দিকে ঝুঁকে বলল,
–তুমি বারান্দায় রোদে গিয়ে বসো। মা চেঞ্জ করে আসবে এক্ষুনি।

মাহাদী মাথা নেড়ে সাদিকের পাশ কাটিয়ে চলে গেলো। দূরত্ব এখনও ঘোচেনি তাদের। অহনা দ্রুত পা চালিয়ে ঘরে গেলো। ওয়্যারড্রবের ড্রয়ার খুলে জামা খুঁজতে খুঁজতেই পেছনে দরজা লাগালোর শব্দ পেলো। জমে গেলো সে। নড়ার আর ক্ষমতা রইলো না। এই পরিস্থিতি থেকে না আগে বাঁচতে পেরেছে আর না এখন বাঁচতে পারছে। প্রতিটি ভারী কদমের সাথে ওর বুকের ভেতরের ঢিপঢিপ শব্দ আরো বাড়তে লাগলো। সাদিক পেছনে এসে দাঁড়িয়ে তার কোমর চেপে বুকের সাথে আটকে ধরলো। হাত কোমর ছাড়িয়ে পেট জড়িয়ে ধরতেই অহনা হাত খামচে ধরলো। সাদিকের গরম নিঃশ্বাস কাঁধে পরতেই কেঁপে উঠলো সে। নিঃশ্বাসের দ্রুত বেগ সামলাতে না পেরে একদময় নিজেকে সপে দিলো। সাদিক আগলে নিলো সম্পূর্ণভাবে। ঠিক যেমন ছয় বছর আগে আগলে নিতো ঠিক তেমন ভাবেই।

অনেকক্ষণ অপেক্ষা করিয়ে বিরক্ত মাহাদীর সামনে হাজির হলো অহনা। সদ্য গোসল করায় চুল দিয়ে টপাটপ পানি পরছে তার। মাহাদী খিলখিল করে হেসে বলল,
–মাহাদীও গোসল করেছে, আম্মুও গোসল করেছে।

অহনা হেসে ছেলের মাথায় চুমু দিলো। পেছন পেছন আসলো সাদিক। ওরও চুল ভেজা। মুখ ব্যাজার করলো মাহাদী। লুকানোর জায়গা না পেয়ে মাকে জাপ্টে ধরলো। অহনা অবাক হলো না। অন্য সময় বাবা বাবা বলে মাথা খারাপ করে দেয় অথচ বাবাকে পেয়ে কাছে যাওয়ার নামও নিচ্ছে না। সাদিক ভ্রু বাঁকিয়ে ছেলের দিকে তাকালো। নতুন জিনিস অ্যাকসেপ্ট করতে পারতো না সে নিজেও। ছেলেটার সব অভ্যাস তার মতো হতে হবে কেন! মায়ের মতো সব মেনে নিলেই তো হয়।

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে