#অবহেলার সংসার
#Imran_khan
#পর্ব_০৯
আপনার ভাবছেন আসলে মেয়েটা কে আর কাকে দেখে অবাক হয়েছি?মেয়ে আসলে হচ্ছে আমার কলেজ লাইফের বান্ধবী।সেই তিন বছর আগে দেশের বাহিরে চলে গিয়েছিলো।দেশের বাহিরে যাওয়ার পরে কোন যোগাযোগ হই নি।এতো দিন পরে তাকে আবার আমার অফিসে দেখতে পারবো সেটা কখনো ভাবতে পারি নি।
আরে ঈমান তুই এখানে!
হুম আমি এখানে থাকবো না তো কই থাকবো এটা তো আমার অফিস।
তাহলে তোর সাথে মিটিং করতে আসছি।তুই আগে আমাকে বলবি না তোর সাথে ডিলটা হতে চলেছে।তাহলে তো এখানে আসতেই হতো না।
আমি কি জানি তুই এখানে আসতেছিস?আচ্ছা বাদ দে তাহলে তুই দেশে কবে আসছিস রে।আর দেশে আসছিস যখন আমাকে জানালি না।
দেশে এসেছি দুইদিন হচ্ছে আর এতো ব্যস্হতার মধ্যেছিলাম তাই তোকে জানাতেই ভূলে গেছিলাম।
ও তাই।আমারা দুইজনে কথা বলতেছি এটা দেখে বাকি চারজনা হা করে আমাদের দেখতেছে।
আচ্ছা মনি তুই কি এই মিস্টার ঈমানকে চিনিস?
হুম চাচ্চু ও আমার কলেজ লাইফের বেস্ট বন্ধু ছিলো।
ও তাহলে তো ওনার ডিলটা পেতে কোন সমস্যাই নাই।
হুম চাচ্চু ডিলটা তাহলে ওকে দেন।ও অনেক ভালো একটা ছেলে ও ডিলটা কমপ্লিট করতে পারবে।
ওকে তুই যখন দিতে বলতেছি তাহলে আমাদের কোন সমস্যাই নাই ডিলটা দিতে।
ঠিক আছে চাচ্চু।
আজকে এতো বড় একটা ডিল পাবো কখনো ভাবতেই পারি নি।এটা শুধু মনি র জন্য পেয়েছি।ও না থাকলে ডিলটা পেতাম মনে হয় না,যদিও পেতাম তাহলে আমাকে অনেক কষ্ট করতে হতো।একমাত্র ওর জন্য আজকে এতো বড় ডিলটা খুব সহজে পেলাম।ও আপনাদের তো বলাই হয় নি,মেয়েটার নাম কি?মেয়েটার নাম হচ্ছে মনি চৌধুরী।ও হচ্ছে বড় ফ্যামেলীর মেয়ে।ওর বাবার টাকার অভাব নেই।ওর বাবা-মা দেশের বাহিরে থাকে আর ও এখানে ওর চাচ্চুর কাছে থাকে।মনির বাবার দেশের বাহিরেও অনেক গুলো কম্পানি আছে,তাদের কাছে আমরা কিছুই না।তবুও কিভাবে যে ও আমার বেস্ট বান্ধবী হয়েছিলো আমি নিজেই জানি না।
মিস্টার ঈমান আপনি যদি এই ডিলটা ভালোভাবে কম্পলিট করতে পারেন Next এ আরো ডিল আপনাকে দেওয়া হবে।তাই আশা করি আপনি এই প্রথম কাজটা গুরুত্ব দিয়ে করবেন।
স্যার আপনি কোন চিন্তা করবেন না,আমি ঠিক গুরুত্ব দিয়ে কাজটা করবো।
ঠিক আছে তাহলে আমরা আসি।মনি চলো তাহলে,
চাচ্চু তুমি যাও আমি একটু পরে যাবো।ঈমানের সাথে একটু কথা বলে,
ওকে কিন্তু মনি মা রাস্তা দেখে শুনে আসিস ওকে।এমনিতে আমাদের শত্রুর অভাব নাই।
ওকে চাচ্চু।
স্যার আমি না হয় মনিকে পৌছিয়ে দিবো কোন সমস্যা হবে না।
ওকে।
তারপর মনির চাচ্চু আর বাকি তিন জন চলে গেলেন। মনি রয়ে গেলো আমার কেবিনে।
ধন্যবাদ রে মনি।
ধন্যবাদ কেনো?
এই যে তুই না থাকলে এতো বড় একটা কাজ পেতাম না।তাই তোকে ধন্যবাদ দিচ্ছি।
ঠিক আছে তোকে ধন্যবাদ দিতে হবে না।ওটা তুই পাওয়ার যোগ্য ছিলি তাই পেয়েছিস,এগুলো কথা বাদ দে তো আগে চল কোথাও গিয়ে দুইজনে বসে কফি খাই।
আইডিয়াটা খারাপ না চল তাহলে রেস্টুরেন্টে গিয়ে কফি খেয়ে আসি।
ওকে চল তাহলে।
তারপর মনিকে নিয়ে আবার ও রেস্টুরেন্টে আসলাম কফি খেতে। রেস্টুরেন্টে এর আসতেই আবার ওই মিম না ডিম এর কথা মনে পড়ে গেলো।গাড়িটা একসাইটে দাড় করিয়ে দুইজনে গাড়ি থেকে বাহির হলাম।আমি গাড়ি থেকে বাহির হয়ে রেস্টুরেন্টের চারপাশটা ঘুরে ঘুরে দেখতেছি যদি আমাকে দেখে আবার ঝামেলা করতে পারে।এমনিতে তখন বেঁচে গেছি।
কিরে ঈমান এমন ভাবে ঘুরে ঘুরে কি করতেছি?
আর বলিস না রে মনি সে অনেক কাহিনী তুই বুঝবি না।এখন চল ভিতরে যাই প্রায় সন্ধ্যা হতে চললো তো বাসায় যেথে হবে তাড়াতাড়ি।
সন্ধ্যা হয়েছে তো কি হয়েছে অনেক দিন পরে দেখা আজকে তুই দশটার আগে বাসায় যেথে পারবি না।
আমার দারায় সম্ভব নয় রে বেশি দেড়িতে বাসা যাওয়া যাবে না।
কেনো রে বাসায় কি বউ বেধে রেখে আসছিস নাকি?
বউ বেধে রাখি নাই কিন্তু বউ বাসায় আছে দেড়িতে গেলে পিটাবে।(মিথ্যা বললাম কারন আমাকে আজকে তাড়াতাড়ি বাসায় যেথে হবে।বাসায় গিয়ে প্রথমে জান্নাতুন এর থেকে ক্ষমা চাইতে হবে এই জন্য।ক্ষমা না চাওয়া পযর্ন্ত মনে শান্তি পাবো না।)
কি তুই বিয়েও করে ভেলেছিস?
হুম আমার বিয়ে করা প্রায় দুই বছর হচ্ছে।
ও।
ও নয় হুম।কিন্তু তুই আমার বিয়ের কথা শুনে মন খারাপ করতেছিস কেনো রে।
আরে এগুলো বাদ দে তো।আচ্ছা তুই কি এখানে দাড়িয়ে থাকার জন্য আমাকে এখানে এনেছিস।
আমি বুঝতে পারতেছি ও কিছু আমার থেকে লুকাচ্ছে।আমি যখন বললাম তখন ও কথাটা পাল্টে দিয়ে দাড়িয়ে থাকার কথা বলতেছে।
ওকে চল তাহলে আর দাড়িয়ে থেকে কি করবি?
হুম চল।
তারপর আমরা দুইজনে রেস্টুরেন্টে এর ভিতরে ঢুকলাম।ভিতরে ঢুকে একটা টেবিলে দুইজনে বসলাম।তারপর আমি দুইটা কফি অডার দিলাম।কফি আসতে নাকি একটু টাইম লাগবে তাই আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
ঈমান আংকেল-আন্টি আর এশা কেমন আছে রে।
আলহামদুলিল্লাহ্ সবাই ভালো আছে কিন্তু আমার বউ একটু অসুস্হ রে।
তোর বউ আবার কেমন করে অসুস্হ হয়েছে।
আমার বউ আজকে অসুস্হ সেটা আমার জন্য রে।আমার ভূলের জন্য আজকে বউ আমাকে অবহেলা করতেছে।
তোকে কেনো অবহেলা করবে রে তোর বউ,আমি ঠিক বুঝতে পারতেছি না আমাকে একটু বুঝায় বল তো।
আসলে, তারপর আমি সব কাহিনী মনিকে বললাম।
তুই এতো খারাপ আগে বুঝতে পারি নাই তো।এতোগুলো বছর একসাথে পড়ালেখা করেছি।এখন তো দেখতেছি তো চরিত্র খারাপ।যে নিজের সন্তানকে পৃথিবীতে আসার আগে মেরে ফেলেছে।তোকে সাধে তোর বউ অবহেলা করতেছে।আমি তোর বউ এর জায়গায় হলে তো তোকে কবেই ছেড়ে চলে জেতাম আর ও তো এখনো পড়ে আছে তোর সংসারে।আমি এটা ভেবে পাচ্ছি না তুই কিভাবে এতো পাষাণ হয়ে নিজের সন্তানকে মেরে ফেললি।
আমি মানতেছি অনেক অন্যায় করেছি কিন্তু এখন আমি ভালো হতে চাই,আমি আমার বউকে ভালো বাসতে চাই,আমি চাই একটা আদর্শ স্বামী হতে যাকে নিয়ে ও আমাকে গর্ব করবে।
এগুলো তোর কপালে জুটবে না আমি শিউর।তুইযে অন্যায় করেছিস সেটা কখনো ক্ষমার যোগ্য নয়।
প্লিজ তুই অন্তত এমন করে বলিস না।তুই কিছু একটা কর এর যেনো আমি ভালো হতে পারি।আমাকে বল কি করলে আমার বউ আমাকে ক্ষমা করে দিবে ?
শুন ঈমান তোকে একটা কথা বলি আমিও একটা মেয়ে সে ক্ষেত্রে,একটা মেয়ে মানুষের বিশ্বাস অর্জন করা খুব সহজ কাজ কিন্তু একবার বিশ্বাস ভেঙ্গে গেলে কখনো সেই মেয়ের মাঝে বিশ্বাস অর্জন করাতে পারবি না,যদি তুই তোর বুক চিরে দেখাস যে আমি তোমাকে ভালোবাসি কিন্তু কখনো তোর কথা আর বিশ্বাস করবে না।এটাই মেয়েদের কেরেক্টার বুঝলী।
তাহলে কি আমি কখনো আমার বউ এর থেকে ক্ষমা পাবো না,কখনো আর স্বামী হিসাবে মেনে নিবে না?
আমি এটা বলতে পারবো না যে তোর বউ কখনো মেনে নিবে না,মেনে নিতেও পারে,আবার নাও নিতে পারে, এটা কখনো কেউ গ্যেরান্টি দিতে পারবে না।আমার মনে হয় তোর প্রথম কাজ আগে গিয়ে ক্ষমা চাইবি তোর বউ এর থেকে।
একবার না পারিলে,
দেখো শত বার!
এই প্রবাদ টা কিন্তু ছোটবেলায় অনেক বার বই এ পড়েছি।চেষ্ট করে দেখ ক্ষমা পেতে পারিস।
স্যার আপনাদের কফি।
ও এখানে রেখে যান।(আমাদের দুইজনার কথার মাঝে ওয়েটার কফির কথা বলতেছে)
ঠিক আছে আমি তাই করবো তার কাছে ক্ষমা চাবো।যতদিন না ক্ষমা করে আমাকে ততোদিন চেষ্ট করেই যাবো।
#চলবে,,,,কী?