#অবহেলার সংসার
#Imran_khan
#পর্ব_০৮
প্লিজ আমাকে আপনি বউ ডাকবেন না।বউ কথাটা আপনার মুখে মানায় না।আপনার মনে হয় শরীর -মাথা দুটোই খারাপ হয়ে গেছে ।আপনি এক কাজ করেন অফিস থেকে আসার সময় ডাক্তার দেখায় আসেন ওকে।
আমাকে ডাক্তার দেখাতে হবে না, আমার সমস্যার ঔষধ হচ্ছো তুমি তাই তুমি হলেই হবে।
আপনি সত্যি পাগল হয়ে গেছেন কি আজব আচরণ করতেছেন?
হ্যা, আমি পাগল হয়ে গেছে তোমার জন্য।
আমি কি বলছি আমার জন্য আপনি পাগল হন?যাই হোক এখন বাজে কথা বাদ দিয়ে ফোনটা কেটে দেন আপনার সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করতেছে না আর আপনার মতো সারাদিন আমি বসে থাকি না কাজ করি তাই এখন কাজ করতেছি যদি কিছু বলার থাকে বলুন না হলে ফোনটা কেটে দিন।
তুমি তো দেখতেছি একটু রোমান্টিক না,কথা কথা ঝগড়া করো।আমি তোমার স্বামী হই একটু রোমান্টিক ভাবে কথা বলবে তা না শুধু রাগ দেখাও।
আচ্ছা এই মানুষটার হলো কি আজকে সকাল থেকে দেখতেছি কেমন আচরণ করতেছে?আসলেই কি ভালো হতে চলেছে নাকি ভালো হওয়ার নাটক করতেছে আমার কাছে।আপনি যতোই ভালো সাজুন না কেনো,আমি আপনাকে সহজে মেনে নিবো না আর।আমাকে যেমন কষ্ট দিয়েছেন সব হিসাব আপনার থেকে তুলে নিবো কষ্ট দিয়ে।আমি আপনাকে দেখে দিবো গ্রামের মেয়েরাও সবকিছু করতে পারে।
কথা বলো না,কেনো বউ।
এই আপনাকে না বললাম আমাকে বউ বলে ডাকবেন না।(রাগি ভাবে বলতেছি আবার যখন বউ বলে ডাকতেছে তখন মনে ভালোলাগা কাজও করতেছে কিন্তু এতো সহজে মেনে নেওয়া তো যাবে না।তাকে বুঝায় দিবো কতো ধানে কতো চাল হয় )
তাহলে কি বলে ডাকবো ?
বউ বাদে অন্য কিছু বলে ডাকেন।
কিন্তু অন্য নাম মুখে আসতেছে না তাই বউ বলেই ডাকি কি বলো?
ধূর যতো সব ফালতু লোক। এত কিছু করার পরে এখন আসছে বউ বলে ডাকতে।নাটক দেখলে বাঁচা যায় না।এখন তো নাটক করবেন ভালো সাজার কারন আপনাকে যে আমার পাশে ঘেসতে দেই না,রাতের চাহিদা মিটাতে দেই না সেই জন্য।এটা কখনো আশা করবেন না আমাকে পাশে পাওয়ার,এটার জন্য যদি আমাকে বাসা থেকে বাহির হতে হয় তাও যাবো কিন্তু আপনাকে ভূলেও আমার পাশে ঘেসতে দিবো না।
তুমি এগুলো বলতে পারলে।
যা বলছি ভালো বলছি আপনাকে।এখন ফোনটা রাখলে ভালো হতো কারন আমি কাজ করতেছি তাই ব্যস্থ আছি।
আর একটু কথা বলো না।কাজটা না হয় পরে করিও।তোমার সাথে কথা বলে ভালো লাগতেছে এতোক্ষন হতাশায় ভূগতেছিলাম।
বাই,কথা বলার ইচ্ছা নাই আর আমার।(এই বলে ফোনটা কেটে দেই ওনার সাথে কথা বলা ভালো লাগতেছিলো না।)
এই ফোনটা কেটে দিলো ধূর।আচ্ছা আবার দেখি ফোন দিয়ে, এই ভেবে আবার ফোনটা দিলাম কিন্তু এখন ফোন ঢুকেই না,বার বার বলে আপনার কাংখিত নাম্বারটা ব্যস্হ আছে।অনেক কয়বার ফোনটা দিলাম ওই একই কথা বলে তাহলে কি ও আমার নাম্বারটা ব্লাকলিস্টে ঢুকে দিয়েছে।কি করি এখন?অফিসে থাকতেও ভালো লাগতেছে না,শুধু মনে হচ্ছে বাসায় কখন যাই আর কখন জান্নাতুন এর থেকে ক্ষমা চাই।কিন্তু যেথে পারতেছি না কারন অফিসে একটা মিটিং আছে দুপুর তিনটার দিকে তাই বাসায় যেথে পারতেছি না।এখন তো বাজে প্রায় একটা আরো দুই ঘন্টা ওয়েট করতে হবে।না এর ফাঁকে লান্চটা খেয়ে আসি।তারপর আমি অফিস থেকে বাহির হয়ে গাড়িটা নিয়ে লান্চ করতে রেস্টুরেন্টে এর যাচ্ছি। রেস্টুরেন্টটা আবার অফিস থেকে বেশি দূরে না প্রায় প্রতিদিন এখানে লান্চ করি।প্রায় পাচঁ থেকে ছয় মিনিট লাগে আমার অফিস থেকে রেস্টুরেন্টে যেথে।পাঁচ মিনিট পরে রেস্টুরেন্টে চলে আসলাম।গাড়িটা একসাইটে পার্ক করে রেস্টুরেন্টের ভিতরে গেলাম।তারপর রেস্টুরেন্টের এক সাইটে গিয়ে বসলাম।বসার পরে একটা ওয়েটার এসে বললো কি খাবেন স্যার তারপর আমি যা যা খাওয়া তাই আনতে বললাম?একটু পরে খাবারগুলো ওয়েটার দিয়ে গেলো তারপর আমি এক এক করে সব খেয়ে ফেললাম এতো তাড়াতাড়ি খাওয়ার কারন হচ্ছে খুবেই খুদা লেগেছিলো।খাওয়ার পরে একটু বসে থেকে চেয়ার থেকে উঠে এসে বিলটা মিটিয়ে দিয়ে আবার গাড়ির কাছে চলে আসলাম। রেস্টুরেন্টে পাশে দেখতেছি একটা চায়ের দোকান তাই আজকে একটা সিগারেট খাবো তাই ভেবে দেড়ি না করে 10 টাকা দিয়ে একটা সিগারেট নিলাম তারপর সিগারেট টা ধরাই নিয়ে চলে আসলাম আবার গাড়ির পাশে।গাড়ির পাশে দাড়িয়ে সিগারেটের ধোঁয়া গুলো আকাশের দিকে ছেড়ে দিচ্ছি।আর আগের কথাগুলো ভাবতেছি।কিছুক্ষন পরে দেখতেছি ধোঁয়াগুলো মিশে যাচ্ছে।
এই যে,মিস্টার এখানে আপনি ধূমপান করতেছেন কেনো।আপনি যানেন না, ধূমপান স্বাস্হ্যের জন্য ক্ষতিকর।
আমি আমার টাকায় খাচ্ছি তাহলে আপনার কই লাগতেছে শুনি হ্যা।আমি জানি সিগারেট স্বাস্হের জন্য ক্ষতিকর এটা কতো জন মানে শুনি।আর আমার ক্ষতি হবে তো আপনার কি?(হঠাৎ করে একটা মেয়ে এসে বলতেছে )
আমার কি মানে,আপনি সিগারেট খেতে পারবেন না এখানে ?
কেনো পারবো না আমার টাকায় আমি খাচ্ছি আপনার কোথায় লাগতেছে।কোথায় থেকে যে এই পাগল ছাগল গুলো আসে।
আচ্ছা আপনি সিগারেট খাচ্ছেন খান কিন্তু এই পাবলিক প্লেচে খাচ্ছেন কেনো।আপনি খাচ্ছেন আপনার ক্ষতি হচ্ছে আবার ভালো মানুষগুলোও ক্ষতি করতেছেন।আবার বেশি কথা বলেন।
আমি কই খাবো না খাবো সেটা আমার বেপার আপনি আপনার কাজে যান তো ফালতু মেয়ে কোথাকার।
আমাকে ফালতু বলেন, এই মিম চৌধুরীকে,দেখে নিবো আপনাকে।
কি দেখবেন দেখেন পারলে একটা ছবি তুলে নেন আপনার ফোনে যখন ইচ্ছা দেখে নিয়েন।
আরে মিম এগুলো কি শুরু করেছিস তোকে একায় রাস্তায় ছেড়ে দিলে খালি ঝামেলা বেধে বেড়াস।ছরি ভাইয়া আপনি ওর কথায় রাগ করিয়েন না ও একটু এমনে।
কি বললি আমি ঝামেলা বেধে বেড়া,?ওনি কেনো এই পাবলিক প্লেচে সিগারেট খাবে।আর তুই আমার বান্ধবী হয়ে ওই বেয়াদব ছেলেটার পক্ষ নিচ্ছিস।
আরে ওনি কই সিগারেট খাবে না খাবে সেটা ওনার বেপার তুই বাধা দেওয়ার কে রে?আর মিম এখন কিন্তু বেশি হয়ে যাচ্ছে রে।
কি বেশি হয়ে যাচ্ছে,
আচ্ছা আপনারা দাড়ান আপনাদের মাঝে ঝগড়া করতে হবে না আমি চলে যাচ্ছি আপনি আপনার মিম না ডিম কি নাম ওনাকে এখান থেকে নিয়ে গিয়ে ভালো ডাক্তার দেখান তাহলে ভালো হয়ে যাবে।(ওনার পাশের মেয়েটাকে বলতেছি )
আমার নাম মিম ওকে ডিম না।আর একবার যদি ডিম বলেন তাহলে আপনার মাথা ফেটে দিবো।
কি সাঙ্গাতিক মেয়েরে বাবা এই যে, আপু আপনি ওনাকে এখনে এখান থেকে নিয়ে যান না হলে একটা দূর্ঘটনা ঘটে যাবে।
এই মিম চল এখান থেকে।
আমাকে তুই চেড়ে দে এই বেয়াদব ছেলেটার আজকেই মাথা ফেটে দিবো।
মিম চল তো তুই।
দেখে নিবো এর প্রতিশোধ নিয়ে ছারবো আমি ।
ঠিক আছে কি করতে পারেন সেটাই দেখতে চাই আমি।
তারপর মিম নামের মেয়েটাকে জোড় করে ওনার বান্ধুবী নিয়ে যায় আমার সামনে থেকে।এই মেয়ের কারনে আমার দশ টাকার সিগারেট বাতাসে পুরে উরে চলে গেলো।একটু শান্তিতে সিগারেট টা খেতেই পারলাম না।মেয়ের সাহস দেখলে বাঁচি না,আমার নাকি মাথা ফেটে দিবে।হঠাৎ করে দেখি ফোনটা পেন্টের পকেটে বাজতে শুরু করলো।আমি ফোনটা পকেট থেকে বাহির করে দেখি ম্যানেজার ফোন দিয়েছে।আমি ফোনটা রিচিপ করলাম,
হেলো স্যার আপনি কই?অফিসে চলে আসুন তাড়াতাড়ি মিটিং এর টাইম হয়ে যাচ্ছে তো।প্রায় তিনটা বাজতে চলেছে।
ওকে আমি যাচ্ছি আপনি একটু ওদিকে সামলান।
ওকে স্যার।
ফোনটা পকেটে রেখে গাড়িতে উঠলাম কারন এখানে আর দাড়িয়ে থাকা যাবে না।সালা মেয়েটাই সব গড় মিল করে দিয়েছে।এবার চার মিনিটে অফিসের সামনে চলে এসেছি গাড়িটা একটু জোড়ে চালিয়েছি তো তাই এক মিনিট আগে চলে এসেছি।গাড়িটা পার্ক করে সোজা অফিসের ভিতরে চলে গেলাম।ভিতরে গিয়ে দেখি সবাই আমার জন্য ওয়েট করতেছে।
স্যার আপনি এসেছে।
হুম চলেন কিন্তু ওনারা কই?
স্যার ওনারা আপনার কেবিনে আছে ওখানে আপনার জন্য অপেক্ষা করতেছে।
ওকে আমি তাহলে কেবিনে যাচ্ছি।
ওকে স্যার।
তারপর আমি আমার কেবিনে ঢুকে সালাম দিলাম।
আসসালামু-আলাইকুম,আপনারা কেমন আছেন সবাই?
ওলাইকুমসালাম, আলহামদুলিল্লাহ্ আমরা সবাই ভালো,আপনি?
আমিও ভালো।তারপর আমি আমার চেয়ারে গিয়ে বসলাম।বসে দেখি আমার সামনে পাঁচ জন ব্যক্তি বসে আছে।পাঁচ জনার মধ্যে এক জন মেয়েও ছিলো।মেয়েটার মুখে মাক্চ পড়া ছিলো।কিন্তু যখন মুখ থেকে মাক্চটা খুলো আমি অবাক হয়ে গেছি মেয়েটাকে দেখে।
এই মেয়েটা এখানে কিভাবে?
#চলবে,,,,কী?