অপ্রেমের প্রিয় অধ্যায় পর্ব-০৩

0
955

#অপ্রেমের_প্রিয়_অধ্যায়
#পর্ব_৩ (এ কী অবজ্ঞা!)
#লেখনীতে_নবনীতা_শেখ

“মিস. তনুজা, আপনি কি আমায় বিয়ে করবেন?”

ওপাশ থেকে সেকেন্ড কয়েকের নীরবতার পরপরই ভেসে এলো চিকন কণ্ঠের সজোরে চিৎকার, “শুদ্ধ!”

শুদ্ধ মুচকি স্বীকারোক্তি দিলো, “ইয়েস, মিস. তনুজা।”

“ম্যাম লাগি আমি তোমার। নাম ধরে ডেকে অভদ্রতার পরিচয় দিয়ো না।”

“হ্যাঁ, হ্যাঁ। ম্যাম আপনি আমার ভার্সিটিতে লাগেন। এখানে আমি আপনার স্টুডেন্ট নই, আপনি আমার টিচার নন। আর এখন আমি আপনাকে প্রেম নিবেদন…”

“শিক্ষক বাবা-মায়ের পরের অভিভাবক, শুদ্ধ।”

“হ্যাঁ, আপনি তো এভাবেও আমার অভিভাবকই লাগেন, মানে লাগবেন আর কী।”

“শুদ্ধ!”

“মিস. তনুজা! আপনি এভাবে ডাকলে না, আমার বুকে চিনচিনে ব্যথা হয়। মনে হয়, এর চেয়ে সুন্দর কোনো ডাক নেই। আহা!”

“আমি কি তোমার গার্ডিয়ানকে এসব জানাব?”

“তাদের সাথে কথা বলা আছে।”

“আশ্চর্য! তারা কেন নিজের ছেলেকে আটকায় না!”

“ভুল করেছি কি? যে আটকাবে!”

“ভুল না। পাপ করছ! আমি তোমার মা-তূল্য।”

“নাউজুবিল্লাহ! এসব কী বলছেন?”

“তোমার চেয়ে বড়ো আমি, এটা কি ভুলে যাচ্ছ?”

“নিক-প্রিয়াঙ্কার বয়সের ডিফারেন্স ১০ বছর। সেখানে আমাদের দুটো বছর কমই আছে।”

“ওদের সংস্কৃতি আর আমাদের সংস্কৃতি এক নয়, সমাজ কখনই এসব সোজা চোখে দেখবে না। বোঝার চেষ্টা করো।”

“ম্যাম, সমাজ তো একটা মেয়ের একা বাসায় থাকা নিয়েও কথা বলে। সমাজ তো মেয়েদের ছেলেবন্ধু থাকা নিয়েও কথা শোনায়। একটা মেয়ের চাকরি করা নিয়েও অসংখ্য কথা রটায়। প্রমোশন পেলে, নিশ্চয়ই বসের সাথে কিছু দেওয়া-নেওয়া চলেছে! কিংবা আকারে ইঙ্গিতে তাকে নষ্টা বলাটাও সমাজের ধর্ম! ম্যাম! এমন সমাজকে আমি শুদ্ধ তোয়াক্কা করি না। আর কোনো সমস্যা থাকলে, বলুন।”

তনুজা বুক ভরে শ্বাস নিল। তার দূর্বল হয়ে পড়া চলবে না। সে শক্ত গলায় বলল, “আমার সম্পর্কে কী কী জানো?”

“ম্যাম! অনেএএএক কিছু জানি। আপনি জানাতে চাইলে, আরও জানতে আগ্রহী!”

“অনেককিছুই অজানা তোমার।”

“ম্যাম!”

“শোনো! ভালো ভাবে বলছি, আমাকে আর ডিস্টার্ব করবে না। একটা আগ্রহেরও ব্যাপার আছে। আমার ইন্টারেস্ট আসে না তোমার প্রতি। আমার বয়সী কেউ হলে, মানা যেত! কিন্তু!”

“ম্যাম, বয়সটা ভুলে গেলেই পারেন। তাছাড়া আমাকে দেখতে তো আপনার চেয়ে বড়োই লাগে।”

“শুদ্ধ! আমাকে আর কল করবে না। প্লিজ।”

কথাটা বলেই তনুজা কল কেটে দিলো। শুদ্ধ ওভাবেই ফোনটা জড়িয়ে শুয়ে রইল। তনুজার রাগী গলার স্বরও তার কাছে দারুণ লাগছে! ইশ! সময়টা কী সুন্দর! ঠিক ওভাবেই কখন যে ঘুমিয়ে গেল, বুঝতেই পারল না।

ওদিকে তনুজার চোখে ঘুম নেই। প্রচুর অস্বস্তি লাগছে। মনে হচ্ছে, চোখ বুঁজলেই পাগল ছেলেটা আসবে, তাকে ঘুমোতে দেখে মিটমিটিয়ে হাসবে। মাঝে মাঝে কানের কাছে ফিসফিসিয়ে শুনতেও পাচ্ছে, কেউ বলছে, “ম্যাম! আমার হবেন কী?”

সকালে শুদ্ধর প্রেমে পড়া জেনে তনুজা অবাক হয়নি, অবাক হয়েছে প্রেম নিবেদনে। অনেক আগে থেকেই এই ছেলের চোখ-মুখে কিছু একটা উপচে পড়তে দেখতে পেত। সেটা যে প্রেম, তা আগেই জানতে পেরেছিল। বুঝতে পেরেছিল। কিন্তু ছেলেমানুষী ভেবে পাত্তা দেয়নি। একপাক্ষিক আকর্ষণ ভেবে সত্যিই এই বিষয় নিয়ে ভাবেনি। সে মনে করত—ভার্সিটি লাইফে এরকম লেকচারারদের প্রতি ঘোর আসাটা স্বাভাবিক, তবে সেটা সে অবধিই; ক’দিন গেলেই মিটে যাবে। প্রকাশ্যে আনার সাহস সে শিক্ষার্থীর কোনোদিনই হবে না। এদিকে, শুদ্ধ ক’ধাপ এগিয়ে। সে যে সোজা প্রপোজ করে বসবে—তা কল্পনাতীত ছিল। এত সাহসী ছেলেটা!

________
আজ শুক্রবার। ক্লাস নেই। বুয়াও আসবে না। শুদ্ধ নিজের সাথে অনেকটা লড়াই করেই ঘুম থেকে উঠল ঠিক ৮টায়। বাজারে যেতে হবে। অতিব্যস্ত হয়ে ফ্রেশ হয়ে পরনের ছাঁই-রঙা শর্টসটা পরিবর্তন না করেই উপরে কালো একটা টি-শার্ট পরল। কোঁকড়া চুলগুলো হাতের আঙুলের সাহায্যে সামান্য গুছিয়ে নিল। মানিব্যাগটা পকেটে পুরতে পুরতে শাওনের রুমে গেল।

দেখল, সে কোমর থেকে পা অবধি বিছানায়, বাকিটা ফ্লোরে। কাঁথা গলার উপর দিয়ে ফ্লোরে গড়াগড়ি খাচ্ছে। রুম স্লিপার একটা দরজার কাছে, অন্যটা খাটের উপরে। বালিশ একটা পেটের নিচে, একটা পায়ের নিচে, আরেকটা পিঠের উপরে। রুমের শ্রী দেখে শুদ্ধ চোখ-মুখ কুঁচকে ফেলল। ব্যস্ত ভঙ্গিতে শাওনের পিঠে চাপড় দিতেই সে “আম্মা আম্মা” করে উঠে বসল। শুদ্ধ কড়া চোখে তাকিয়ে বলল, “এসে যেন দেখি পুরো বাসা নিট অ্যান্ড ক্লিন।”

শাওন আবারও বিছানায় গা এলিয়ে শুয়ে পড়ে বলল, “পারমু না বাল, সর। ঘুমাইতে দে। রাতে তোর ইনা ভাবি, মিনা ভাবি, রিনা ভাবি, টিনা ভাবি, টুম্পা ভাবি, আসমানি ভাবি আর ওই ইন্ডিয়ানটার সাথে কথা বলতে বলতে সকাল হইছে। ঘুমাইতে দে। নইলে আমি বাঁচমু না।”

শুদ্ধ বালিশ ছুঁড়ে মেরে বলল, “তুই শালা মরেই যা। একসাথে আমার এতগুলা ভাবি পয়দা করে কেমনে বেঁচে আছিস? তোর বাঁচার অধিকার নাই।”

“আমি না বাঁচলে তোগোর লাইফটাই লস। নিজের লসের কথা মাথায় রাইখ্যা, ঘুমাইতে দে।”

কথাটুকু বলেই শাওন আবার ঘুম। শুদ্ধ অতিষ্ঠ হয়ে ডানে বাঁয়ে মাথা নেড়ে ফ্যান অফ করল, লাইট অন করে দিলো। জানালার পর্দা সরাতেই বিছানায় এসে রোদ লাগল। শাওন চোখ কুঁচকে মুখ দিয়ে কয়েকটা খিস্তি ছুড়ল। শুদ্ধ তা পাত্তা না দিয়ে বলল, “একটা কাজ যেন বাদ না থাকে। নাহলে আজ ভাত পাবি না।”

শাওন মুখ বাঁকা করে পড়ে রইল। একটু পর উঠে ঠিকই কাজ করবে। শুদ্ধ দরজাটা বাইরে থেকে লক করে বেরিয়ে পড়ল। রাস্তায় বেরোতেই তার ডিপার্টমেন্টের একটি মেয়ের সাথে দেখা হয়ে গেল। নাম নেহা। শুদ্ধ চোখ মেরে বলল, “হেই, সুইটি!”

নেহা মুচকি হেসে বলল, “হাই, কিউটিপাই।”

“কই যাচ্ছ?”

“যাচ্ছিলাম তো ফ্রেন্ডের বাসায়। তুমি চাইলে অন্য কোথাও-ও যেতে পারি। উম.. ফর হ্যাভিং অ্যা কাপ অব্ কফি!”

শেষ কথাটি বড্ড চনমনে আওয়াজে বলল। শুদ্ধ গলায় শব্দ করে হাসল। ভি-শেইপড চওড়া বুকটা হাসার বদৌলতে টি-শার্টের ভেতর থেকে বার বার ফুলে ফেঁপে উঁকি দিচ্ছিল। সদ্য ঘুম থেকে ওঠা ফোলা ফোলা চোখ আর কোঁকড়াচুলো শুদ্ধর হালকা লম্বাটে মুখের ওই গজদাঁতটা যেন বোঝাচ্ছিল, “নো মোর বিউটি লেফট ইন দ্যা হোওওল ওয়ার্ল্ড, এক্সেপ্ট দ্যাট।”
নেহা পরপর কতগুলো হার্টবিট মিস করে ফেলল। মনের কোনায় বড্ড আস্তে ধীরে বের হলো একটাই শব্দ, “ওহ্, শিট!”

শুদ্ধ হাসি থামিয়ে বলল, “গ্রোসারি শপে যাচ্ছি, আগুন ধরাতে।”

নেহা শুকনো ঢোক গিলে নিজেকে সামলে, শুদ্ধর তালে তাল মিলিয়ে বলল, “রাস্তা দিয়ে যে কতগুলোর মনে আগুন লাগাবে! বি কেয়ারফুল, শুদ্ধ। পাছে না কোনো ফ্রিজি আইস আগুন নিভিয়ে দেয়!”

শুদ্ধর মনে পড়ল তনুজার মুখটি! বরফ কঠিন হৃদয় তার! আগুনের সংস্পর্শে গলতে তো হবেই। তবে, পানি পড়লে, আগুনও কিন্তু নিভে যায়। এখন দেখার বিষয়—আগুন নেভে না কি বরফ গলে!
শুদ্ধ মুচকি হেসে নেহাকে ‘বাই’ জানিয়ে গ্রোসারিতে ঢুকল। টুকিটাকি কিছু শুকনো খাবার কিনে হাঁটতে হাঁটতে পাশের বাজারে চলে এলো।

সবজির দোকানে গিয়ে দেখতে দেখতেই পাশ থেকে একটা তীক্ষ্ণ, ধারালো অথচ খুবই শান্ত স্বর শুদ্ধের কানে ভেসে এলো, “ভাই, টমেটো আর বেগুনের কেজি কত করে?”

শুদ্ধ শুকনো ঢোক গিলল। পাশে কে—এটা বোঝার জন্য তার তাকানোর প্রয়োজন নেই। অনুভবেরও একটা ব্যাপার-স্যাপার থাকে। আর তা যদি হয় এই নারীকে ঘিরে, তবে সেটা শুদ্ধের অনেকাংশেই বেশি। শুদ্ধর ভাবনার মাঝেই দোকানদার কাঠকাঠ গলায় জবাব দিলো, “আপা, টমেটো বিশ ট্যাকা আর বেগুন পঞ্চাশ ট্যাকা কেজি।”

তনুজা বলল, “সে কী! পরশু না বেগুন ত্রিশ টাকা করে ছিল?”

“দাম বাড়ছে।”

“কম রাখেন। চল্লিশ টাকা রাখেন।”

“আইচ্ছা। দেন।”

“আচ্ছা, দু’কেজি টমেটো আর এক কেজি বেগুন দিন। ফ্রেশ তো?”

“হ, আইজই আনছি।”

“আচ্ছা।”

তনুজা বোধ হয় এখনও শুদ্ধকে দেখেনি। শুদ্ধ মুখে ইয়া বিশাল এক হাসি স্কচটেপে আঁটকে নিয়ে তনুজার পানে তাকাল। রোজকার মতো শাড়ি নয়। কাঁচা হলুদ রঙের একটা ফুল স্লিভসের কুর্তির সাথে ডার্ক মেরুন স্কার্ফ গলায় ঝোলানো। চুলগুলো একটা বিনুনি করা। প্রসাধনীবিহীন গোল, বড্ড ছোট্টো মুখটিতে ঘাম চিকচিক করছে। তনুজা টাকাটা পরিশোধ করে, সবজিগুলো ব্যাগে ঢুকিয়ে হাতের পিঠ দিয়ে ঘামাংশ মুছে নিল। শুদ্ধর এত পছন্দের হাসিখানাও মিইয়ে যাচ্ছিল এক অন্যরকমের আবেশে, কানের গোড়ায় কেউ স্লো মোশনে প্লে করে দিচ্ছিল সেই যে গান,
“ওরে ইচ্ছে করে বুকের ভিতর, লুকিয়ে রাখি তারে।
যেন না পারে সে যেতে, আমায় কোনোদিনও ছেড়ে।
আমি এই জগতে তারে ছাড়া, থাকব নারে থাকব না।
তারে এক জনমে ভালোবেসে ভরবে না মন ভরবে না।
আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি, এই চোখ দুটো মাটি খেয়ো না।
আমি মরে গেলেও তারে দেখার সাধ, মিটবে না গো মিটবে না।”

সমস্ত গায়ে শিরশিরানি বয়ে গেল। শুদ্ধ আবারও অদৃশ্য সেই স্কচটেপ দিয়ে ঠোঁটে প্রশস্ত হাসি এঁটে নিল। সুন্দর করে তনুজার থেকে হাত খানেকের দূরত্ব রেখে বলল, “আসসালামু আলাইকুম, ম্যাম।”

তনুজা বুঝতে পারেনি, এটা শুদ্ধ। ব্যস্ত হয়ে ব্যাগটা গোছাতে গোছাতে অন্য কোনো স্টুডেন্ট মনে করে সালামের জবাব নিল, “ওয়া আলাইকুমুস সালাম।”

“ম্যাম, দিন। আমি নিয়ে যাচ্ছি।”

“না, না। সমস্যা নেই। পার..”

যাহ! মুখের কথা মুখেই রয়ে গেল, কিছুটা উলটো রাস্তা ধরে পেটের ভেতর অবধি পৌঁছে গেল। শুদ্ধকে দেখতে পেয়েই মাথার ভেতরটা দপ করে জ্বলে উঠল। চারপাশটা যেন একত্রে বলে উঠছে, “এটাকে সায়েস্তা করা মিস. তনুজার কম্ম নহে!”
হ্যাঁ। কথাটির কিছুটা নয়, পুরোটাই অক্ষরে অক্ষরে সত্যি। তনুজা এই পাগল ছেলেকে মারতে পারে না। তার হাত এগোয় না। বাধা দেওয়ার খাতিরে কেবল মুখই চলে। তনুজার ওমন থতমত খেয়ে যাওয়া ঘোলাটে দৃষ্টিকে শুদ্ধ উপেক্ষা করতে পারল না। ডান হাতে শপিং ব্যাগ, তাই মাথাটা নিচু করে, বাঁ হাত দিয়ে পেছনের চুলগুলো চুলকে লাজুক ভঙ্গিতে হাসল।

তনুজা মুহূর্তে নিজেকে সামলে নিল। অসভ্যতামোরও একটা সীমা থাকে। ছেলেটা সবটাই পার করে ফেলেছে। কী করলে থামবে—তনুজার জানা নেই। যদি জানা থাকত, তবে পাহাড়ে চড়তে হলেও, তনুজা চড়ত; উচ্চতাভীতি আছে কি না! ফোঁস করে গুটি দুয়েক শ্বাস ফেলে বলল, “নিজের রাস্তা মাপো।”

শুদ্ধ বিনা দ্বিধায় বলে উঠল, “আপনি ছাড়া আমার কোনো গতি নেই।”

“শুদ্ধ! তুমি আমায় প্রচুর ডিস্টার্ব করছ। তোমার ফিউচার ভেবে কিছু বলছি না। আর তুমি এই সুযোগটাই নিচ্ছ..”

“ম্যাম! আই ওয়ান্ট ইউ..”

তনুজা ব্যস্ত ভঙ্গিতে আশে-পাশে তাকাল। লোকজনের ভীড়ে চোখ ফেলেই নতমুখী হয়ে চাপাস্বরে শুদ্ধকে বলল, “এটা বাজার! সিনক্রিয়েট কোরো না, প্লিজ।”

শুদ্ধ এই আশে-পাশের এত্ত এত্ত মানুষকে বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা করল না। এসবে তার এই তো, একটুখানিও আগ্রহ নেই। তার আগ্রহ কেবল এই সামনে দাঁড়ানো ছোটো-খাটো অথচ বয়সে বড়ো, ঘামে নাওয়া অসম্ভব আবেদনময়ী মেয়েটিতেই।
তার দিকে তাকিয়ে বলল, “আমার বাঁচতে হলেও আপনাকে লাগবে ম্যাম, তিন সত্যি।”

“তবে মরে যাও, তবুও আমার পিছু নেবে না।”

চলবে…

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে