অপ্রেমের একাত্তর দিন পর্ব-০৯

0
56

অপ্রেমের একাত্তর দিন
লেখনীতে : নাফিসা তাবাসসুম খান
৯.

পি আই সি সি করানোর জন্য নির্দিষ্ট রুমে প্রবেশের পূর্বে শেষ বারের মতো মুখ কালো করে বাবা এবং বোনের দিকে তাকায় মোহ। শিহানের মাঝে তেমন একটা ভাবান্তর দেখা গেলো না। মায়া কেবল হেসে বোনকে ইশারায় বেস্ট অফ লাক বললো। মোহ তাতে গলে না। উল্টো রাগে মুখ ফিরিয়ে নেয়। মাথায় বাচ্চামো ইচ্ছে ঘুরে বেড়াচ্ছে তার। মন চাচ্ছে নিজের বাপ আর বোনকে ধরে বেধে দুই ডোজ গ্রাফিল ইঞ্জেকশন দিতে।

নিজের অবান্তর ইচ্ছাকে বালি চাপা দিয়ে মোহ সুস্থ পায়ে হেঁটে নার্সের সঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে। ভেতরে প্রবেশ করতেই মোহ দেখে টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন একজন ফিমেল ডক্টর। হাতে মোহর ফাইল। কম্পিউটার স্ক্রিনে মনযোগের সহিত কিছু একটা দেখছে। গায়ে সার্জিক্যাল পোশাক জড়ানো। মোহকে দেখেই তিনি মিষ্টি হেসে বলে,

“ হাই মেহনামা। আর ইউ রেডি? “

মোহ মাথা নেড়ে সত্যটাই বলে। সে প্রস্তুত নয়। ডক্টরটা খুব মিশুক। এগিয়ে এসে মোহকে আশ্বাস দিয়ে বলে,

“ কেউই রেডি থাকে না। কিন্তু এটা তো জরুরী। তুমি চিন্তা করো না, আমরা অনেক সাবধানে পুরো কাজটা শেষ করবো। ব্যথা হবে না বলছি না, তবে আমরা যতটা সম্ভব ব্যথা কম দেওয়ার চেষ্টা করবো। “

মোহ মিষ্টি কথায় ভুললো না। আর না বিশ্বাস করলো। লাস্ট বার এরকম কথা সে শায়লা আন্টির মুখে শুনেছিলো। মোহ তখন ক্লাস ফোরে পড়ে। শায়লা আন্টি একদিন তাকে ভুলিয়ে ফুসলিয়ে বলে কান ফোঁড়ানোর কথা। মোহ প্রথমে আগ্রহ দেখালেও পরে ভয় পাচ্ছিলো। কিন্তু আন্টি তাকে হেসে বলেছিলো,

“ একটুও ব্যথা পাবে না তুমি আম্মু। সামান্য পিঁপড়ের কামড়ের মতো লাগবে। টেরও পারে না। “

আন্টির কথায় মোহ রাজি তো হয়েছিলো, কিন্তু কানের লতিতে সুঁচ প্রবেশ করতেই তার চিৎকারে দু বাড়ির মানুষ এক হয়ে গিয়েছিল। এরপর থেকে মোহ এসব মিছে আশ্বাসে ভরসা করে না আর। এদের বলা পিঁপড়ের কামড়ের অর্থ যে কি তা মোহ ভালো করেই জানে।

__________

পি আই সি সি প্রসিডিওরের রুমটা দুটো স্তরে বিভক্ত। প্রথম স্তর পেরিয়ে ভেতরে মোহকে নিয়ে যায় ডক্টর। সেখানে উপস্থিত আছে আরো তিনজন নার্স। এই রুমটা তুলনামূলক আরেকটু বেশি ঠান্ডা। হয়তো এসির তাপমাত্রা বেশি কমানো বলেই। তাছাড়াও পুরো রুমটা মাত্রারিক্ত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতায় মোড়ানো। ইনফেকশন এড়ানোর সকল ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ডক্টর মোহকে ইশারা করে পেশেন্টের উঁচু বেডটা দেখিয়ে দিয়ে বলে,

“ তুমি ওখানে উঠে বসো। আমি হাত স্যানিটাইজ করে গ্লাভস পরে নিচ্ছি। “

মোহ চুপচাপ ভঙ্গিতে বেডটায় উঠে বসে। নার্স গুলো বেডের কাছে একটা টেবিলের উপর ট্রে তে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম গুলো চেক করে নিতে ব্যস্ত। মোহ সূক্ষ্ণ দৃষ্টিতে সেদিকে তাকিয়ে দেখে ট্রে তে থাকা সরঞ্জাম গুলো। বিভিন্ন গেজের সূঁচ, ১০ মিলি সিরিঞ্জ, ডিলেটর, ছোট ব্লেড, সেলাই করার সরঞ্জমাদি, ড্রেসিং কিট এবং মূল উপাদান পি আই সি সি ক্যাথেটর। মোহ সঙ্গে সঙ্গে বড়ো বড়ো নিঃশ্বাস ফেলে। তার চোখের সামনে ভাসছে পুরো দৃশ্যটা। ওই পাইপটাকে কি-না এরা হাতের বেসিলিক, ব্র্যাচিয়াল, সিফালিক অথবা মধ্য কিউবিটাল শিরা হয়ে মোহর হৃদয় পর্যন্ত ঠেলেঠুলে পাঠাবে? এর থেকে তো টুপ করে মরে যাওয়া সহজ।

ডক্টর এগিয়ে আসে। নিজ দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত তিনি। বেডের মাথার কাছটায় থাকা আল্ট্রাসাউন্ড মেশিনের সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন তিনি। মোহর দিকে তাকিয়ে তিনি হাসিমুখে বলেন,

“ আগে তোমার হাতের বাহুর পরিমাণ নিতে হবে আমাদের। যেনো হাতে সোয়েলিং হওয়ার আশংকা কতদূর আন্দাজ করতে পারি। “

মোহ কিছু বলে না। একে একে পি আই সি সি প্রসিডিওরের ধাপগুলোর সঙ্গে সরাসরি পরিচিত হতে থাকে সে। প্রথমে তার হাতের পরিমাণ মেপে নেওয়া হয়। অত:পর লাইন বসানোর জন্য কোন শিরা এক্সেস করা হবে তা শনাক্ত করতে আল্ট্রাসাউন্ড ব্যবহার করা হয়। অত:পর একটা মার্কারের সাহায্যে দাগ টেনে তার হাতের একটা জায়গা চিহ্নিত করা হয়। মোহ সবটা দেখে শান্ত ভঙ্গিতে।

ঠিক যেই মুহুর্তে সুঁই নিয়ে ডক্টর এগোতে নিবে সেই মুহুর্তে মোহ চোখ খিচে বন্ধ করে চিৎকার শুরু করে। ডক্টর, নার্স সকলেই অবাক হয়। একজন নার্স মোহকে বুঝানোর উদ্দেশ্যে বলে,

“ আরে! ভয় পেও না। এখনো তো সুঁই ব্যবহারও করা হয় নি। আগেই কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছো তুমি। শান্ত হও… শান্ত হও। “

ডক্টরও মোহকে বুঝিয়ে বলে,

“ মেহনামা, আগেই কান্নাকাটি শুরু করো না। একটু কো অপারেটিভ হও। আমাকে আমার কাজ করতে দাও। “

মোহ শুনলো না কারো কথা। চোখ বুজে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকলো। ডক্টর ধরে নেয় মোহ ভয় পাচ্ছে বিধায় এভাবে কান্নাকাটি করছে। তাই তিনি বাধ্য হয়ে নার্সদের ইশারা করেন মোহকে একটু ধরতে। একজন নার্স এগিয়ে মোহকে ধরার চেষ্টা করতেই মোহ এবার হাত পা মুচড়িয়ে কাঁদতে থাকে। যেনো সে কিছুতেই এই পি আই সি সি করতে দিবে না।

ডক্টর তবুও বেশ অনেকটা সময় চেষ্টা চালায়। শেষমেশ হার মেনে কিছুটা রাগ দেখিয়ে মোহকে সরাসরি প্রশ্ন করে,

“ তুমি কি এটা করাতে ইচ্ছুক নও? “

মোহ অশ্রুসিক্ত চোখ মেলে তাকায়। মাথা নেড়ে জানায় সে রাজি নয়। ডক্টর কিছুটা রাগ নিয়ে মোহর সাথে আসা নার্সের হাতে তার ফাইলটা ধরিয়ে দিয়ে বলে,

“ ওর এখন কি করতে হবে সেটা ওর ডক্টর ভালো বুঝবে। তুমি সাক্ষী রইলে যে আমরা চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমাদের সঙ্গে যদি পেশেন্ট কো অপারেট না করে সেই দায় আমাদের না। “

__________

নিজ কেবিনে হাসিখুশি মেজাজে বসে টিভি দেখছে মোহ। মায়া ভ্রু কুচকে তাকে দেখছে। শিহান এতক্ষণ রাগারাগি করে এইমাত্রই কেবিনের বাহিরে গিয়েছে। কিন্তু শিহানের রাগ কিংবা ধমক কোনটাই যেনো মোহর গায়ে লাগে নি। উল্টো তাকে দেখে মনে হচ্ছে এই মুহুর্তে তার থেকে বেশি খুশি কেউ নেই।

মায়া সন্দিহান গলায় প্রশ্ন করে,

“ তুই ইচ্ছে করে ওখানে কান্নাকাটির নাটক করেছিস, তাই না? “

মোহ জবাব দেয় না। উল্টো মন দিয়ে টিভিতে ওগি এন্ড দ্যা কোক্রোচেস দেখে হাসতে থাকে। মায়া এবার উঠে গিয়ে টিভির প্লাগ খুলে ফেলে। মোহ রাগ হয়। ফুঁসে উঠে বলে,

“ কি সমস্যা তোর? “

“ আমাকে এই প্রশ্ন করছিস? আগে বল তোর মাথায় কি পাকাচ্ছিস? পি আই সি সি করতে দিস নি কেন? “

“ যেটায় আমার মন সায় দিচ্ছে না সেটা আমি কেনো করাবো? আজাইরা জ্ঞান দিস না তো। বাসায় যা। হসপিটালে এসে সারাদিন পড়ে থাকবি না। আমি বিরক্ত হই। “

মায়া মোহর কথা গায়ে মাখে না। সে চিন্তিত। কপালে ভাজ পড়েছে। দুঃশ্চিন্তায় পায়চারি করে বেড়াচ্ছে। মনে প্রশ্ন জাগছে এখন কি হবে?

মোহ বোনের দুঃশ্চিন্তা বুঝতে পারে। বোনকে শান্তনা দিয়ে নাটকীয় ভঙ্গিতে বলে,

“ টেনশন লেকে কা নেহি, দেনে কা হে। চিল ব্রো। “

__________

অর্থোপেডিক ডিপার্টমেন্টের অনকোলজিস্ট প্রফেসর মতিউর আলম। মোহর সামনে গম্ভীর ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে আছেন। এই লোকটাই মূলত মোহর কেস হ্যান্ডেল করছেন। বোন এবং সফট টিস্যুর কেসগুলো নিয়ে উনার অভিজ্ঞতা খুব দীর্ঘ সময়ের। হসপিটালের অন্যতম সিনিয়র এবং অভিজ্ঞ ডক্টর তিনি।

শিহান ফেরদৌস পাশ থেকে বলে উঠে,

“ ও অবুঝ। ট্রিটমেন্ট প্রসিডিওরের গুরুত্ব বুঝতে পারছে না। আপনি চিন্তা করবেন না ওকে রাজি করিয়ে ফেলবো আমরা। “

মতিউর আলম থমথমে গলায় বলে,

“ আমাকে পেশেন্টের সঙ্গে আগে কথা বলতে দিন। “

শিহান ফেরদৌস চুপ হয়ে যায়। মতিউর আলম এবার মোহকে উদ্দেশ্য করে বলে,

“ তুমি কি পি আই সি সি করাতে চাও না মেহনামা? “

মোহ কিছুটা অধৈর্য্য হয়ে বলে,

“ গতরাত থেকে আমি সবাইকে এটাই তো বলে আসছি। আমি পি আই সি সি করাবো না। আমাকে যেনো কেউ জোর না করে। “

“ আচ্ছা। পেশেন্টের মর্জির বিপরীতে কিছু করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ট্রিটমেন্ট জার্নিতে পেশেন্টের কনসেন্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একটা পেশেন্ট কোঅপারেটিভ হলেই, ডক্টরের জন্য ট্রিটমেন্ট করাটা আরো সহজ হয়। তাই এখন আমি তোমাকে ঠান্ডা মাথায় আরেকটা অপশন এক্সপ্লেইন করবো। মন দিয়ে শুনবে। তারপর ডিসিশন নিয়ে আমাকে জানাবে। “

মোহকে কিছুটা মনযোগী দেখায়। মতিউর আলম বলতে শুরু করেন,

“ পি আই সি সি র বিকল্প হিসেবে পোর্ট আছে। পি আই সি সি যেমন পেশেন্টের সজ্ঞানে করা হয়, পোর্টে সেই ঝামেলা নেই। এনেস্থিসিয়া দিয়ে চেতনাহীন করে তারপর একটা মাইনর সার্জারির মাধ্যমে এটা সেটাপ করা হয়। বায়োপসির মতো পনেরো থেকে ত্রিশ মিনিটের একটা প্রসিডিওর এটা। একটুও টের পাবে না তুমি। পি আই সি সি তে যেই লাইনটা হাতের শিরা হয়ে হার্টে সেটাপ করা হয়, পোর্টে সেটা অন্যভাবে সেটাপ করা হয়। তোমার ঘাড়ের এখানে এবং ব্রেস্টের হাড়ের কিছুটা উপরে দুটো ছোট কাট করা হবে। সেখান দিয়ে তোমার ত্বকের নিচে ক্যাথেটার প্রবেশ করানো হবে। একবার পোর্টটা সেটাপ করা হয়ে গেলে সেলাই বা সার্জিক্যাল আঠার মাধ্যমে কাটা জায়গাটা বন্ধ করে দিয়ে সেখানে ড্রেসিং করে দেওয়া হবে। কেবল ব্লাড, ইঞ্জেকশন অথবা কেমো দেওয়ার সময় সেই ড্রেসিং ওপেন করে সরাসরি পোর্টের মাধ্যমে তোমাকে সেসব দেওয়া হবে। “

মোহকে কিছুটা ভাবুক দেখা যায়। আগ্রহী গলায় প্রশ্ন করে,

“ ব্যথা করবে খুব? “

মতিউর আলম বলেন,

“ বায়োপসি টেস্টের পর তোমার পায়ে যেমন স্বাভাবিক কিছুটা ব্যথা অনুভব করেছিলে সেরকমই। চিকিৎসা শেষ হয়ে গেলো সেম একটা মাইনর সার্জারির মাধ্যমে পোর্টটা বের করে ফেলা হবে। “

শাহিন ফেরদৌস এবার প্রশ্ন করে,

“ পোর্ট সেটাপের ফলে কি কি অসুবিধা হতে পারে ডক্টর? “

“ দেখুন অসুবিধা বলতে ইনফেকশনের রিস্কটাই আছে আরকি। এই কারণেই সকল ডক্টর এবং নার্সরা এই ব্যাপারে অধিক সচেতন থাকে। আর তাছাড়া আজীবনের জন্য ছোট দুটো সেলাইয়ের দাগ আপনার মেয়ের গলার নিচটায় এবং বুকের এখানে রয়ে যাবে। “

শিহান ফেরদৌস এই দফায় আর আগ বাড়িয়ে কিছু বলে না। অপেক্ষা করে মেয়ের উত্তরের। মোহ কিছুক্ষণ নীরবে বসে থাকে। যেনো খুব গুরুত্বপূর্ণ কোনো সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। মতিউর রহমান ক্ষানিক বাদে প্রশ্ন করে,

“ পোর্ট ইমপ্ল্যান্ট সার্জারি করাতে আপত্তি আছে তোমার? “

__________

রাত তখন প্রায় একটা বাজে। কানের পাশ হয়ে মাথার পিছনে নিয়ে সার্জিক্যাল মাস্কের ফিতা বাঁধতে বাঁধতে ব্যস্ত পায়ে হাঁটছে মনন। এই মধ্যরাতে আচমকা গুরুত্বপূর্ণ কল পেয়ে হসপিটালে ছুটে এসেছে সে। দ্রুত নিজের জামা বদলে হসপিটালের পোশাক পরে দ্রুত কদমে এসে পৌঁছেছে সিক্সথ ফ্লোরে। সে একাই নয়, তার ডিপার্টমেন্টের আরো বেশ কিছু ডক্টরও এখানে এসে উপস্থিত হয়েছে। সকলের মাঝেই তাড়াহুড়ো এবং চিন্তার ভাব ফুটে উঠেছে।

আজকেই মাত্র বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট সম্পন্ন করা একটা বাচ্চা পেশেন্টের মাঝে আচানক জটিলতা ধরা পড়েছে। বাচ্চাটার শারীরিক পরিস্থিতি খুব সিরিয়াস। আই সি ইউ তে শিফট করা হয়েছে ইতিমধ্যে। তা-ই তো এই মধ্যরাতে কল পেতেই বাচ্চাটার কেস সামলাতে হসপিটালে এসে হাজির হয়েছে বেশ কয়েকজন পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজিস্ট অনকোলজিস্ট।

মনন যখন দ্রুত পায়ে আই সি ইউ র দিকে যাচ্ছিলো আচানক তার পা জোড়া থেমে যায়। কি ভেবে যেনো ঘাড় ঘুরিয়ে পাশে তাকায়। মুহুর্তেই সে বিস্মিত হয়। কুঞ্চিত ভ্রু জোড়া সোজা হয়ে যায়। ভুলে বসে নিজের তাড়া। কিন্তু তাকে সেই তাড়া মনে করিয়ে দিতেই তার সহকর্মী তাকে ডাকে,

“ বি ফাস্ট ওয়াসিফ। “

চলবে…

[ কপি করা কঠিনভাবে নিষিদ্ধ ]

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে