অপ্রেমের একাত্তর দিন
লেখনীতে : নাফিসা তাবাসসুম খান
২৪.
সেপ্টেম্বরের শুরুটা হয়েছে শহরের বুকে নেমে আসা বর্ষণ দিয়ে। সুখ পাখি হয়ে নিজ নীড়ে উড়ে বেড়ানো মোহকে আজ আবার হসপিটালে ভর্তি হতে হয়েছে। তার তৃতীয় সাইকেল কেমোটা শুরু হওয়ার কথা ছিলো সেপ্টেম্বরের দুই তারিখ অর্থাৎ আজ থেকে। কিন্তু ব্লাড টেস্টের রিপোর্টে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা হুট করেই ছয়ের ঘরের নিচে নেমে যাওয়ায় ডক্টররা আগে জরুরী ভিত্তিতে ব্লাড ট্রান্সফিউশানের কথা বলেছে। হসপিটালের ব্লাড ব্যাংক থেকে ইতিমধ্যে মোহর ব্লাড গ্রুপ অনুযায়ী তার জন্য ব্লাডের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুই ব্যাগ ব্লাড তাকে দুই দিনে ধাপে ধাপে দেওয়া হবে।
এইবার মোহ বারো তলায় একটা প্রাইভেট কেবিন পেয়েছে। হসপিটালে এডমিট হওয়ার ফর্মালিটিস সম্পন্ন করে কেবিনে পা রাখতেই শিহান মেয়ের উপর রাগ ঝাড়তে শুরু করে।
“ খাবার না খেয়ে জানালা দিয়ে ফেলে দিলে বা খাবো না বলে জেদ করলে তো হিমোগ্লোবিন লো হবেই। আরো নখড়া করো! কার কি? এখন শুধু শুধু কেমোর ডেটটা পিছিয়ে গেলো। ট্রিটমেন্ট শেষ হতে আরো দেরি হবে। তাড়াতাড়ি সুস্থ হওয়ার ইচ্ছে থাকলে তো খাওয়াদাওয়াটা ঠিকঠাক করতো! “
মোহ জানালার ধারে দাঁড়িয়ে নীরবে শুনে সবটা। বাবার রাগটা অযথা নয় সে জানে। কিন্তু তারও কি খুব দোষ আছে? সে কাউকে বুঝাতে পারে না যে সে ইচ্ছে করে খাবার নষ্ট করে না। তার কাছে সবকিছুই কেমন পানসে লাগে।
শিহানের কথার মাঝেই কেবিনে একজন নার্স প্রবেশ করে। মোহর প্রেশারটা মেপে ফাইলে তা নোট করে রাখে তিনি। যাওয়ার আগে জানিয়ে যায়, রাতে খাওয়ার পর মোহকে ব্লাড দেওয়া হবে। সারা রাতে এক ব্যাগ দেওয়ার পরিকল্পনা ডক্টরের। আরেক ব্যাগ আগামীকাল দেওয়া হবে।
মোহ আপত্তি করে না। খাওয়া দাওয়া করে একেবারে ফ্রেশ হয়ে শোয়ার পর ব্লাড নেওয়াটা তার কাছে বেটার অপশন মনে হয়। শিহান কিছুক্ষণ রাগারাগি করে ফোন বের করে সময়টা দেখে নেয়। তার ল্যাপটপটা সঙ্গে করে আনা হয় নি। তাছাড়া মোহর জন্যও কিছু ফলমূল কিনে আনতে হবে। ড্রাইভার ছুটিতে আছে বলে কাউকে নিয়েও আসতে বলতে পারছে না শিহান। মায়ারও পরীক্ষা সামনে। ওর মনযোগটা এখন পড়াশোনার দিকে থাকাই উত্তম।
শিহান উঠে দাঁড়িয়ে মোহকে বলে,
“ আমি একটু বাসায় যাচ্ছি। ল্যাপটপ আর দু একটা ফাইল নিয়ে আসতে হবে। আসার সময় তোমার জন্য ফল নিয়ে আসবো। তোমার কিছু লাগবে? কিছু নিয়ে আসবো? “
মোহ জানালা দিয়ে আবার বাহিরে তাকায়। ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। মোহর হঠাৎ করেই খুব খিচুড়ি খেতে ইচ্ছে হলো। সে নরম গলায় বলে উঠে,
“ শায়লা আন্টিকে একটু খিচুড়ি রেঁধে দিতে বলবে? রাতে হসপিটালের খাবার খেতে চাচ্ছি না। আমার বমি পায়। “
শিহানের মনটা হঠাৎ নরম হয়ে আসে। প্রশ্ন করে,
“ খিচুড়ির সাথে কি খাবে? বেগুন ভাজা? তোমার তো এলার্জি আছে। “
“ শুধু পেয়াজ ছাড়া ডিম ভাজি হলেই চলবে। “
মেয়ের এই সামান্য আবদারে শিহান সন্তুষ্ট হলো না। ঠিক করলো বাসায় ফেরার সময় কবুতরের বাচ্চা কিনে নিয়ে যাবে। বাসায় গিয়ে শায়লা আপাকে বলবে তার মেয়ের জন্য যেনো খিচুড়ির সাথে কবুতরের মাংস আলু দিয়ে ভুনা করে দেয়। সাথে একটা ডিম ভাজি।
শিহান চলে যেতেই মোহ আবারও জানালার বাহিরে তাকায়। আজকের বৃষ্টিটা একটু বেশিই সুন্দর? নাকি তারই এরকমটা মনে হচ্ছে?
__________
গোধূলি লগ্ন তখন। শিহান গিয়েছে আধ ঘন্টা হবে বোধহয়। এর মধ্যে কয়েকবার কল করে মোহর খোঁজ নিয়ে ফেলেছে ইতিমধ্যে। মোহ বাধ্য মেয়ের মতো জানিয়েছে যে সে কেবিনেই আছে, শুয়ে ফোনে গেমস খেলছে। শিহান জানিয়েছে যে রান্না হতে আরো ঘন্টা খানেক সময় লাগবে। মোহ যেনো ততক্ষণ নিজের খেয়াল রাখে। বাবার এই অহেতুক চিন্তায় মোহ বিরক্ত হয় না। বরং বেশ মজা পায়। বাবা ইদানিং তাকে নিয়ে যে চিন্তা করে সেটা বিভিন্ন কাজেই প্রকাশ করে ফেলে।
ভাবনায় বিভোর মোহর ধ্যান ভাঙে আরেক দফা রিংটোনের শব্দে। তাকিয়ে দেখে এবার বাবা নয় বরং আরেকজন পুরুষ তাকে কল করছে। যে-ই পুরুষটাও সম্ভবত মোহকে নিয়ে চিন্তা করে। সেদিন নদীর পাড় হতে ফেরার পর থেকে লোকটা প্রতিদিন তাকে সময় করে ম্যাসেজ দেয় হালচাল জানতে। মোহ নিজেও রিপ্লাই করে। যে যার রাস্তা মাপার ব্যাপারটায় আর অটল থাকতে পারে না সে। মনে হয় যেহেতু লোকটা নিজ থেকে যোগাযোগ করছে সেহেতু মোহর যেভাবে যা চলছে তা চলতে দেওয়া উচিত। সে তো অন্তত গায়ে পড়ে লোকটার সঙ্গে কথা বলছে না। এটাই যথেষ্ট তার জন্য।
ভাবনা থেকে বেরিয়ে মোহ কল রিসিভ করে। ফোনের অপর পাশ হতে মনন প্রশ্ন করে,
“ কেমো চলছে? “
“ উঁহু। “
“ এখনো শুরু করে নি দেওয়া? “
“ কেমোর ডেট পিছিয়েছে। সিবিসি রিপোর্টে হিমোগ্লোবিন সিক্স পয়েন্টের নিচে এসেছে। এখন ব্লাড ট্রান্সফিউশান করাবে। “
মননের কণ্ঠে এবার চিন্তা প্রকাশ পেলো।
“ আল্লাহ! লাস্ট উইকের রিপোর্টেও তো হিমোগ্লোবিন কাউন্ট নরমাল ছিল বলেছিলেন। হুট করে ড্রপ করাটা তো চিন্তার বিষয়। “
“ প্যারা খাওয়া কিছু নেই। আজকে ওভার নাইট এক ব্যাগ ব্লাড নিবো আর কালকে আরেক ব্যাগ। কাউন্ট আবার নরমাল হয়ে যাবে। “
“ আপনি কি এখন কেবিনে? “
“ হু। “
“ ফ্যামিলি সাথে আছে? “
“ বাবা কিছুক্ষণের জন্য বাসায় গিয়েছে। রাতের খাবার নিয়ে আসতে। আপনাদের হসপিটালের খাবার একদম বাকওয়াস। “
মনন এবার কিছুটা সংশয় নিয়ে প্রশ্ন করে,
“ দেখা করা যাবে? “
মোহ কিছুক্ষণ নিশ্চুপ থেকে বলে,
“ বৃষ্টি হচ্ছে। ছাদে যাওয়া সম্ভব নয়। “
“ কেবিনে আসতে পারবেন? “
মোহ কিছুক্ষণের জন্য ভাবনায় পড়ে যায়। আসলে সে-ও একা কেবিনে বসে থেকে বিরক্ত বোধ করছিলো। একা কেবিনে বসে থাকার থেকে একটু নিচ থেকে ঘুরে আসা উত্তম। মোহ বলে,
“ আচ্ছা। আসছি। “
“ শুনুন। “
“ বলুন। “
“ এসে কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করতে হবে না। সরাসরি কেবিনে চলে আসবেন। আমি বাহিরে কাউন্টারে বলে রাখবো। “
মোহ কলটা কেটে উঠে বসে। বেরিয়ে যাওয়ার আগে একজন নার্সকে জানিয়ে যায় সে একটু হাঁটাহাঁটি করতে বের হচ্ছে। কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে চলে আসবে।
__________
আজকের জন্য মননের রোগী দেখার সময় পেরিয়েছে আরো ঘন্টা খানেক আগে। সাতটার দিকে তার পেশেন্ট ভিজিটে যেতে হবে। ততক্ষণ সে ফ্রি আছে আপাতত। তা-ই মোহও ফ্রি আছে জানতে পেরে দেখা করতে চেয়েছে। ভাগ্যিস মোহ রাজি হয়েছে!
মনন কম্পিউটারে বসে একটা পেশেন্টের ফাইল দেখছিল। এরই মাঝে হঠাৎ কেবিনের দরজা ঠেলে মোহ ভিতরে উঁকি দিলো। ছোট করে প্রশ্ন করে,
“ আসবো? “
মনন সঙ্গে সঙ্গে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলে,
“ হ্যাঁ। প্লিজ, আসুন। “
মোহ নীরবে কেবিনে প্রবেশ করে প্রশ্ন করে,
“ ফ্রি এখন? “
“ হ্যাঁ। “
এতটুকু বলেই দু’জন চুপ হয়ে যায়। দু-জনের নীরবতাই অস্বস্তিতে ঘেরা। বুঝে উঠতে পারে না কি বলা উচিত তাদের। মোহর এভাবে চুপ থাকতে আরো বেশি অস্বস্তি হচ্ছিলো। তা-ই সে কেবিনটা ঘুরে দেখতে দেখতে হঠাৎ বলে উঠে,
“ বাহ! আপনি তাহলে একা থাকেন না এখানে। রুমে আপনার ফ্রেন্ডও হাজির আছে। “
মনন লক্ষ্য করে মোহ তার রুমের এক কোণায় থাকা কৃত্রিম কঙ্কালটাকে দেখিয়ে কথাটা বলছে। সে মৃদু হেসে এগিয়ে গিয়ে মোহর পাশে দাঁড়ায়। কঙ্কালটাকে উদ্দেশ্য করে বলে,
“ হেই বনি। মিট হার। মেহনামা ফেরদৌস মোহ। “
অত:পর মোহর দিকে তাকিয়ে বলে,
“ মোহ, মিট মাই বেস্ট ফ্রেন্ড। ওর নাম বনি। আমার ইন্টার্ন লাইফ থেকে হি ইজ মাই বেস্ট ফ্রেন্ড। “
মোহ সন্দিহান গলায় বলে,
“ ডক্টরদের মাথার তারে একটু সমস্যা থাকে শুনেছিলাম। কিন্তু আজ প্রমাণও পেলাম। লেস্কেটন কিভাবে কারো বেস্ট ফ্রেন্ড হয়? “
মনন মাথা চুলকে হেসে বলে,
“ লেস্কেটন না, স্কেলেটন হবে উচ্চারণটা। আমি সহজে ফ্রেন্ড বানাতে পারতাম না। কারো সাথে নিজ থেকে কথা বলতে অস্বস্তি ফিল হতো। তাই দাদু আমাকে এই স্কেলেটন গিফট করে। বনি ইজ এ গুড ফ্রেন্ড। “
মোহ আগ্রহ নিয়ে জানতে চায়,
“ আপনি এই লেস্কেটনকে বনি কেনো ডাকেন? “
মনন এবার সরাসরি মোহর দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে,
“ আপনি আমাকে মদন কিংবা মরণ কেনো ডাকেন? “
মোহ এবার নিশ্চুপ হয়ে যায়। কথা ঘোরাতে আশেপাশে তাকায়। কিছু না পেয়ে বলে বসে,
“ আজকের বৃষ্টি সুন্দর। অসুস্থ না হলে আমি এতক্ষণে সাইকেল নিয়ে বাসার সামনে ঘুরতাম। আর বাসায় ফিরে মজার একটা জ্বর উপভোগ করতাম। “
মনন বুঝতে পারে মোহ কথা ঘুরিয়ে ফেলতে চাচ্ছে। তা-ই সে-ও সঙ্গ দিয়ে বলে,
“ জ্বর কি করে মজার হয়? “
“ বৃষ্টিতে সাইক্লিং করতে গিয়ে জ্বর বাঁধালে সেটাকে আমি উপভোগ করি। মনে হয়, জ্বর এসেছে তো কি হয়েছে? আমার আত্মা তো তৃপ্ত। “
মনন কিছু একটা ভেবে বলে,
“ বৃষ্টি দেখতে যাবেন? “
মোহ অবাক হয়ে বলে,
“ সম্ভব না। বৃষ্টিতে ভিজে টিজে গেলে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ইনফেকশন হলে কি হবে? “
মনন হেসে বলে,
“ হবে না ইনফেকশন। আমি আছি। ইউ আর সেফ উইথ মি। “
__________
গাড়ির ব্যাক সিটে বসে শহর জুড়ে নামা বৃষ্টি মোহ দেখছে মুগ্ধ চোখে। আর গাড়ির রেয়ার ভিউ মিরর হতে তাকে দেখছে আরেক জোড়া মুগ্ধ দৃষ্টি। আচমকা মোহকে সামনে তাকাতে দেখেই মনন চোখ ফিরিয়ে নেয়। মনযোগের সহিত ড্রাইভ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। মোহ পিছন থেকে কণ্ঠে উচ্ছ্বাস নিয়ে জানায়,
“ এদিকের রোড সাইড ভিউ চমৎকার। “
মনন হেসে বলে,
“ ভিউ চমৎকার। কিন্তু বৃষ্টির সময় প্রায়ই জ্যাম লেগে থাকে। “
বলতে বলতে মনন গাড়ির গতি ধীর করে। সামনেই জ্যাম লেগে আছে। মনন ঠিক করে এখান থেকে আর সামনে যাবে না, গাড়ি ঘুরিয়ে নিবে। মনন ইউ টার্ন নেওয়ার জন্য গিয়ার লিভারে হাত রাখতেই জানালায় কিছু একটার শব্দ শুনে। পাশ ফিরে তাকাতেই দেখে একটা ছয় বছরের বাচ্চা ছেলে ফুল হাতে দাঁড়িয়ে আছে। মনন গাড়ির কাঁচ নামাতেই বাচ্চাটা শুধায়,
“ ফুল নিবেন স্যার? “
মনন একবার মিররের মাধ্যমে সরাসরি মোহর দিকে তাকায়। মোহও তার দিকে তাকিয়ে ছিল। মননকে তাকাতে দেখেই সে নিজের দৃষ্টি ফিরিয়ে নেয়। মনন বাচ্চাটাকে বলে,
“ দাও। “
“ কদম নিবেন নাকি দোলনচাঁপা? “
মনন নিশ্চিত হতে মোহকে জিজ্ঞেস করে,
“ আপনার কোনো ফুলে এলার্জি আছে? “
মোহ অবাক হয়। পরমুহূর্তে মাথা নেড়ে না জানায়। মনন ওয়ালেট থেকে টাকা বের করে বাচ্চাটাকে দিয়ে বলে,
“ দুটোই দাও। “
বৃষ্টিতে ভেজা এক গুচ্ছ কদম এবং দোলনচাঁপা নিয়ে মনন তা নিজের পাশের সিটে রেখে দিয়ে গাড়ি হসপিটালের পথে ঘুরালো। মোহ নীরবে দেখে সবটা। অত:পর চোখ ফিরিয়ে সে বাহিরে তাকায়। হুট করেই তার মনে অভিমান চাপে। তার মন হয়তো ফুলগুলোকে নিজের জন্য আশা করছিল। কিন্তু মনন তার জন্য কেনো ফুল কিনবে? নিশ্চয়ই বিশেষ কারো জন্য নিয়েছে। মননের জীবনে কি সত্যিই বিশেষ কেউ আছে?
বাকিটা রাস্তা মোহ আর একটাও কথা বললো না। না দেখা গেলো তার মাঝে উচ্ছ্বাস। হুট করেই যেনো কেমন মিইয়ে গেলো। হসপিটালে পৌঁছাতেই মোহ দ্রুত গাড়ির দরজা খুলে নেমে পড়তে নিলো। কিন্তু মননের ডাকে সে থেমে যায়। ঘাড় ঘুরিয়ে ড্রাইভিং সিটের দিকে তাকাতেই মনন তার দিকে কদম এবং দোলনচাঁপা গুলো এগিয়ে দিয়ে বলে,
“ আপনার জন্য। “
মোহর চাপা অভিমান ফুঁস করেই হাওয়া হয়ে গেলো। হাত বাড়িয়ে ফুলগুলো নিলো। অত:পর কি ভেবে যেনো কদম গুলো আলাদা করে মননের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে,
“ এগুলো আপনি রাখুন। “
মনন বারণ করে না। কদম গুলো নিয়ে কিছু বলতে নিবে এর পূর্বেই মোহ তড়িঘড়ি করে গাড়ি থেকে নেমে গেলো। একবারও ফিরে তাকালো না। গাড়ির ভেতর থেকে মনন কেবল দেখলো হালকা আকাশি রঙের জামা এবং সাদা রঙের স্কার্ফ মাথায় প্যাঁচানো মেয়েটা কিভাবে ফুল হাতে ছুটে হসপিটালের ভেতর চলে গেলো। মনন হঠাৎ আনমনে হেসে উঠে। কদম গুলো হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে থাকে। হুট করেই সব সুন্দর লাগছে তার। ঝুম বৃষ্টি, কদম, মোহ সবই অপার্থিব সুন্দর। ঠোঁটে হাসি নিয়েই মনন মনে মনে আওড়ায়,
“ আপনার বেঁচে থাকাটা জরুরী মোহ। আপনি প্লিজ সুস্থ হয়ে বেঁচে থাকুন। সাইক্লিং নিষিদ্ধ হলেও আপনাকে আমি বৃষ্টি দেখাবো কথা দিচ্ছি। তবুও বেঁচে থাকুন। এরকম দোলনচাঁপা হাতে আপনাকে আমি আরো বহু বছর দেখতে চাই। “
চলবে…
[ কপি করা কঠিনভাবে নিষিদ্ধ ]